User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By মুক্তমনা

      25 Feb 2014 05:59 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      ডারউইন : বিশ্বে ও মহাবিশ্বে দ্বিজেন শর্মা আমি অনেক দিন থেকেই প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে লিখছি। যখন শুরু করেছিলাম তখন একা ছিলাম। এখন অনেকেই লিখছেন। কেউ কেউ আমার লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে থাকবেন এবং তাতে আমি আনন্দিত। কেননা সবাই নিজের কাজের ফল দেখতে চান। একসময় ডারউইন ও বিবর্তনবাদ নিয়েও অনেক লিখেছি; শুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রজীবন থেকে। আমরা সেখানে পড়েছি বিবর্তনবাদের ঢাউস সব বই এবং ইংরেজিতে। পরে কর্মজীবনে কলেজে ডারউইন ও তাঁর তত্ত্ব পড়িয়েছি এবং আশা করেছি, আমার পাঠদান বা বই পড়ে কেউ উদ্বুদ্ধ হয়ে এ বিষয়ে প্রবন্ধ ও বইপত্র লিখবেন। কেননা বিষয়টির পরিসর বিজ্ঞানের ক্ষেত্র অতিক্রম করে দর্শন, সমাজতত্ত্ব, রাজনীতি, সাহিত্যসহ মানববিদ্যার প্রায় সব শাখায়ই বিস্তৃত। কিন্তু আমার সেই আশা পূরণ হয়নি। ইদানীং উচ্চ মাধ্যমিক থেকে ডারউইনবাদ বাদ পড়েছে, বদলি হিসেবে এসেছে জীবপ্রযুক্তিবিদ্যা। কেন এই পরিবর্তন জানি না, তবে ডারউইনবাদের প্রতি আদ্যিকালের অনীহা যদি কারণ হয়ে থাকে, তবে বলতেই হয়, পরিকল্পকেরা ভুল করেছেন। কেননা জীবপ্রযুক্তি আসলে ডারউইনবাদেরই সম্প্রসারণ, খোদার ওপর খোদকারির জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। আমার কর্মজীবনের গোড়ার দিকের ছাত্ররা এখন অবসর নিয়েছেন, তাঁরা আমাকে জানিয়েছেন, কলেজে জীববিদ্যার অনেক শিক্ষক নাকি ডারউইনবাদ পড়াতে চান না, কিংবা পড়ালেও শুরুতেই ছাত্রদের এই তত্ত্বটি বিশ্বাস না করতে বলেন। অথচ পাকিস্তানি জামানায় আমরা ডারউইনবাদ পড়েছি। আমাদের কোনো শিক্ষক এমন কথা বলেননি। বরং তাঁরা এই তত্ত্বের যথার্থতা প্রমাণের চেষ্টাই করেছেন। তাঁরা কেউ নাস্তিক ছিলেন না। ডারউইনের সহযোগী সমর্থকেরাও (লায়েল, হুকার, ওয়ালেস প্রমুখ) প্রায় সবাই ছিলেন ধার্মিক। তাহলে আমাদের এই পশ্চাদ্গতি কেন? উত্তরটি আমাদের শিক্ষাপরিকল্পকেরা জানতে পারেন। ডারউইনবিষয়ক আমার প্রথম বই ডারউইন: পিতামহ সুহৃদ সহযাত্রী’ বেরোয় ১৯৭৫ সালে। তারপর আরও দুটি। আমার বন্ধু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম. আখতারুজ্জামান যিনি বিবর্তনবিদ্যা (১৯৯৮) নামের একটি মৌলিক পাঠ্যবইয়ের লেখক ও ডারউইনের অরিজিন অব স্পেসিজ (প্রজাতির উৎপত্তি, ২০০০) গ্রন্থের অনুবাদক। তিনি এক সভায় দুঃখ করে বলেছিলেন, গোটা কর্মজীবনটাই ছাত্রছাত্রীদের বিবর্তনবাদ পড়িয়ে কাটালেন, অথচ আজও তারা বলে, প্রজাতি সৃষ্টি হয়েছে, উৎপন্ন হয়নি। আমি অতঃপর ধরেই নিয়েছিলাম, আমাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ, দেশ উল্টো পথে চলছে। ভুলটি ভাঙল অকস্নাৎ, মার্কিন মুলুকের তিন বাঙালির লেখা বিবর্তনবিষয়ক দুটি বই হাতে এলে। আরও বিস্নয়ের ব্যাপার, তাঁদের দুজন প্রকৌশলী, একজন সমাজবিজ্ঞানী। আমি অভিভুত ও আনন্দিত। তাঁরা কেউই আমার বই পড়েননি, আমার প্রভাববলয়ের মানুষও নন, কিন্তু তাঁরা নিশ্চিত আমার উত্তরসুরি। তাঁরা বাংলাদেশে পড়াশোনা করেছেন; দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তবে তাঁদের জন্য সম্ভবত আমেরিকায় একটি ‘শক’ অপেক্ষিত ছিল, আর তা হলো, জ্ঞানেবিজ্ঞানে অত্যুন্নত একটি দেশে বিদ্যমান পশ্চাৎমুখিনতা, সমাজের একটি অগ্রসর অংশের বিবর্তনবাদ তথা ডারউইনবিরোধিতা। ব্যাপারটা আসলে ওই দেশের পুরোনো ব্যাধি। অনেক বছর আগে স্কুলে বিবর্তনবাদ পড়ানো নিয়ে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়, শাস্তি হয়। শেষে তিনি মুক্তিও পান এবং এ নিয়ে নাটক লেখা ও চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। কিন্তু সবই এখন ইতিহাস। সৃষ্টিতত্ত্বেও বিশ্বাসের এই ধারা যে আজ সেখানে আইডি (ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন) নামে একটি নতুন তত্ত্বের আশ্রয়ে বেশ পাকাপোক্ত হয়েছে এবং স্কুলে বিবর্তনবাদের পাঠদানে বাধা সৃষ্টি করছে বিভিন্ন স্কুল বোর্ড, অভিভাবক ও সৃষ্টিবাদী গোষ্ঠীরা, সেই খবরটি জানান আমার আরেক বন্ধু, যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো রাজ্যের মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিদ্যার অধ্যাপক জ্ঞানেন্দ্র কুমার ভটাচার্য । তিনি আরও জানান, তাঁরা তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যাটি মোকাবিলার জন্য স্কুল-শিক্ষকদের সামার কোর্সে বিবর্তনবিদ্যার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, ডারউইনবাদের পক্ষে ক্লাসিক্যাল সাক্ষ্যপ্রমাণের সঙ্গে বংশানুবিদ্যার অধুনাতম আবিষ্ককারগুলো শেখাচ্ছেন। এবার মূল প্রতিপাদ্যে ফেরা যাক। যে দুটি বইয়ের কথা বলেছিলাম সেগুলো হলো বিবর্তনের পথ ধরে এবং মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে ; লিখেছেন যথাক্রমে বন্যা আহমেদ এবং অভিজিৎ রায় ও ফরিদ আহমেদ; প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০০৭, প্রকাশক ঢাকার অবসর। দুটি বই পরস্পর সম্পুরক। প্রথমটির প্রধান আলোচ্য বিবর্তনবাদ, দ্বিতীয়টির প্রাণের উৎপত্তি। সম্ভবত তাঁরা পরস্পর ঘনিষ্ঠ এবং প্রকল্পটি যৌথ। তাতে আমাদের লাভই হলো, একত্রে জানা গেল পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি, বিবর্তন এবং গ্রহান্তরে প্রাণের উৎপত্তি, বিকাশ ও সভ্যতার সম্ভাব্যতা নিয়ে বিস্তারিত। দুটি বইই তথ্যসমৃদ্ধ, আধুনিক আবিষ্ককারের নানা সহযোগী সাক্ষ্যে ভরপুর। বিবর্তনের পথে বইয়ের লেখক বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন বিবর্তনের সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর এবং নৃতত্ত্বে, বিশেষত মানুষের উৎপত্তি বিষয়ে। এটা সহজবোধ্য, কেননা আমরা যদিওবা জীববিবর্তনের সত্যতা স্বীকারও করি, কিন্তু অভিন্ন ধারায় মানুষের উৎপত্তি মানতে রাজি নই। মানুষের সঙ্গে বানরসদৃশ বন্যজীবের আত্মীয়তা স্বীকারে আমাদের অপার লজ্জা। অথচ বিশ্বখ্যাত জীববিজ্ঞানী ও লেখক গেলর্ড সিস্পসন এই সহজ সত্যটি বোঝাতে বলেছেন যে, আমাদের পূর্বপুরুষ খুঁজতে বাইরে চোখ মেলে তাকানোই যথেষ্ট। কিন্তু সেখানেই যত ঝামেলা। স্বয়ং ডারউইন, আমরা সবাই জানি, প্রজাতির উৎপত্তি (১৮৫৯) লেখার পর অনেক চাপ সত্ত্বেও মানুষের উৎপত্তি (১৮৭১) লিখেছেন আরও বারো বছর পর। আর রাচেল ওয়ালেস, যিনি প্রজাতির উৎপত্তিতত্ত্বের অন্যতম শরিক, তিনিও মানুষের উৎপত্তিতে প্রাকৃতিক নির্বাচনের বদলে আইডিকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। আসলে এটা আমাদের একটা দৃঢ়বদ্ধ সংস্কার এবং তা থেকে মুক্তি সুকঠিন। বন্যা সমস্যাটি ভালোই বোঝেন, যে জন্য মানব বিবর্তনকে সর্বজনগ্রাহ্য করার জন্য প্রদত্ত বিবরণের সঙ্গে হাজির করেছেন প্রচুর ছবি, আমাদের মানবসদৃশ পূর্ব পুরুষদের সম্ভাব্য দেহকাঠামো ও নানা চার্ট। বইতে আইডি তত্ত্বের সমর্থকদের কার্যকলাপের বিস্তারিত আলোচনা আছে। ইউরোপে এটি নেই, অথচ আমেরিকায় আছে, সে এক রহস্য। আমেরিকা কি তাহলে ইউরোপীয় ঐতিহ্যের সম্প্রসারণ নয়, কিংবা আমেরিকার ইতিহাসের এমন কোনো দুর্বলতা আছে, যেজন্য সেখানে এমন পশ্চাৎপদতা স্থান করে নিতে পেরেছে? নাকি সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বদাতা এ দেশের এখন আত্মিক অবক্ষয় শুরু হয়েছে? বন্যাও তাই ভাবছেন। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বাস্তু-চারিত্র্যও অন্যতম কারণ হতে পারে। পাঠকদের সুবিধার জন্য বইয়ের অধ্যায়গুলোর নাম উল্লেখ করছি, কেননা বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ এখানে নেই: এলাম আমরা কোথা থেকে?, বিবর্তনে প্রাণের স্পন্দন, অনন্ত সময়ের উপহার, চোখের সামনেই বিবর্তন ঘটছে!, ফসিল এবং প্রাচীন উপাখ্যানগুলো, ফসিলগুলো কোথা থেকে এল, এই প্রাণের মেলা কত পুরোনো?, মিসিং লিঙ্কগুলো আর মিসিং নেই, আমাদের গল্প, ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন: সৃষ্টিতত্ত্বের বিবর্তন, যে গল্পের শেষ নেই, বিবর্তনতত্ত্ব সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলো। এসব নাম থেকেই স্পষ্ট যে বন্যার বইটি শুষ্ককং কাষ্ঠং নয়, অত্যন্ত সহজবোধ্য শৈলীতে সুললিত ভাষায় লেখা। মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে বইটি পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, আমরা যখন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, সেই পঞ্চাশের দশকে, এমন কোনো বই বাংলায় ছিল না। বন্যার মতো আমিও দেবীপ্রসাদের জনপ্রিয় বিজ্ঞানলহরী পড়েছি। আর ইংরেজি পেপারব্যাক, সেও সহজলভ্য ছিল না। ওপারিনের হোয়াট ইজ লাইফ পেয়েছি অনেক পরে। ওয়াটসন বা ক্রিকরা সৌভাগ্যবান, তাঁরা ছেলেবেলায়ই শ্রোডিংগারের বই পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। পশ্চিমে বিখ্যাত বিজ্ঞানীরা পাঠ্যবই ও জনপ্রিয় বিজ্ঞানের বই লেখেন। আমাদের দেশ তথা ভারতেও এমন দৃষ্টান্ত দুর্লভ। একটি গ্রন্থ একজন মানুষকে অবশ্যই বদলে দিতে পারে; একজন তরুণকে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে। তবে এটুকুই যথেষ্ট নয়, চাই অনুকুল পরিবেশ, যা আমাদের নেই। বন্যা, অভিজিৎ, ফরিদ কি দেশে থাকলে এসব বই লিখতেন? আমি ৯৯ ভাগ নিশ্চিত যে লিখতেন না। প্রাণ যেহেতু পদার্থের শুষ্কক কাঠখড় দিয়ে তৈরি, হয়তো সে জন্য লেখকেরা তাঁদের বইটি শুরু করেছেন মৃত্যুর সজ্ঞার্থ ও নানা কৌতুহলজনক কাহিনী দিয়ে এবং পরে এসেছেন জড় থেকে জীবনে, জীবনের ধর্ম ব্যাখ্যা এবং শেষ পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানী ও কেলাসবিদ জেডি বার্নালের সজ্ঞার্থে: "‘জীবন হচ্ছে একটি অতিজটিল ভৌত-রাসায়নিক তন্ত্র যা একগুচ্ছ সুসংহত বা একীভুত ও স্বনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিক ও ভৌত বিক্রিয়ার মাধ্যমে তার পরিপার্শ্বের বস্তু ও শক্তিকে স্বীয় বৃদ্ধির কাছে ব্যবহার করে।’" এই পঙ্ক্তিমালা একটু জটিল বটে, তবে গোটা অধ্যায়টি এতটাই সহজ ও সরলভাবে লেখা যে বিজ্ঞানের দশম শ্রেণীর ছাত্রের পক্ষেও বোঝা কঠিন হবে না। শুধু একটি কেন, গোটা বইটি এভাবে লেখা। প্রাণের উৎপত্তি বিষয়ে ডারউইনের ধারণার একটি উদ্ধৃতি বইতে আছে, যা আমাদের অনেকেরই অজানা এবং সেই সঙ্গে বিস্নয়করও। ডারউইন তাঁর বন্ধু ডালটন হুকারকে এক চিঠিতে লিখেছেন: ‘একটা ছোট উষ্ণ পুকুরে বিভিন্ন ধরনের অ্যামোনিয়া, ফসফরিক লবণ, আলো, তাপ, তড়িৎ সবকিছু মিলেমিশে... প্রোটিন যৌগ উৎপন্ন হয়েছে।’ অর্থাৎ অজৈব পদার্থ থেকেই জৈব পদার্থ উৎপন্ন হয়ে প্রাণের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটছে। অনুমেয়, গ্রহান্তরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকলে তাও ঘটেছে এই এক ও অভিন্ন প্রক্রিয়ার। পরের ঘটনা আমরা জানি, ওপারিন ও হালডেন প্রাণের সজ্ঞার্থ দেন, ইউরে ও মিলার ডারউইনের ধারণারই যেন বাস্তবায়ন করেন পরীক্ষাগারে অ্যামাইনো এসিডের সংশ্লেষ ঘটিয়ে। বইয়ের ৫৮ পৃষ্ঠা পর্যন্ত আছে প্রাণের উৎপত্তির আলোচনা, বাকি ৫০ পৃষ্ঠায় রয়েছে ভিন গ্রহে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার সন্ধান। এই কাহিনী বড়ই চিত্তাকর্ষক, গল্পের মতোই সম্মোহক। এতে আছে কার্ল সাগানসহ বিজ্ঞানীদের নানা পরীক্ষার কথা, এনরিকো ফার্মির গোলকধাঁধা, ড্রেকের সমীকরণ, ইউ এফ ও বা উড়ন্ত চাকি ইত্যাদি। বিস্তারিত নিষ্কপ্রয়োজন। বাকিটা পাঠকের জন্য। পরিশেষে সেই পুরোনো প্রসঙ্গ: বইগুলোর প্রভাব কি ঈপ্সিত ফল ফলাবে, আমাদের ক্ষেত্রে যা ঘটেনি, অন্তত দৃশ্যত, সেটা কি ওদের ক্ষেত্রে ঘটবে? বইগুলো কি নতুন প্রজন্ন লুফে নেবে? আমি নিশ্চিত নই, কেননা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অবক্ষয়ের চরম সীমায় পৌঁছেছে। শিক্ষকেরা বাইরের বইয়ের খোঁজ রাখেন না, ছাত্ররা কোচিংয়ের ঘুর্ণাবর্তে দিশেহারা। এই তরুণ লেখকদের তবু আশা না হারাতে বলি। তাঁদের যেতে হবে অনেক দুর, মাইলস টু গো... এবং বিঘ্নসংকুল পথে। বিবর্তনের পথ ধরে; বন্যা আহমেদ; ফেব্রুয়ারি ২০০৭; অবসর, ঢাকা; প্রচ্ছদ: প্রতীক ডট ডিজাইন; ২৫৬ পৃষ্ঠা; ৩৫০ টাকা। মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে; অভিজিৎ রায় ও ফরিদ আহমেদ; ফেব্রুয়ারি ২০০৭; অবসর, ঢাকা; প্রতীক ডট ডিজাইন; ১১২ পৃষ্ঠা; ১৩০ টাকা। জুন ২৯, ২০০৭ প্রথম আলোর সাহিত্য সাময়িকী বিভাগে প্রকাশিত।

      By Mohammad Rayhan Mollik

      20 Jun 2013 10:52 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      Dhorme jemon biswas korte hoi, evalution tar theke beshi dabi kore.Fossil gulu jotto dhappabaji ar jaliati kom hoini.kotha holo porikkha na kore tattik porle rupkothar moto sob sotti mone hoi.if truth mixed with false,you'll be in illusion.tai boli darwin er bibortonbad goteni,tobe biborton kototuku ghoteche ta porikkha sapekkho. http://www.creation-facts.org/scientists/colin-patterson/

      By forhadredoy

      27 Jun 2012 04:34 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      manos dene dene bodlay apne jodi aro sondor vave jebon chalate chan tahole ai book ta pore dekhte paren.

      By Not Buying Anything from Rokomari

      27 Jun 2013 04:00 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      “Nothing in Biology makes any sense except in the light of evolution.” -থিওডসিয়াস ডাবঝানস্কি বিগত পাঁচশ’ বছরের আবিষ্কারগুলোর মধ্যে যে দু’টো আবিষ্কার মানুষের চিন্তাভাবনার জগত এবং পৃথিবীকে দেখার চোখকে পালটে দিয়েছিলো সেগুলো হলো- কোপার্নিকাসের সৌরকেন্দ্রিক বিশ্ব তত্ত্ব এবং ডারউইনের বিবর্তনের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব। দুটো তত্ত্বই মধ্যযুগের রক্ষণশীল সমাজের জন্য ছিলো বিশাল আঘাত, যা চুরমার করে দিয়েছিলো সনাতন দৃষ্টিভঙ্গিকে। সময়ের সাথে সৌরকেন্দ্রিক মডেল বিবাদমান সব পক্ষই মেনে নিলেও আজো বিবর্তনবাদ মেনে নিতে চরম আপত্তি আমাদের রক্ষণশীল গোষ্ঠীগুলোর। আমাদের চারপাশের প্রকৃতি ও প্রাণ সংক্রান্ত বিজ্ঞানের বুনিয়াদ হলো এই বিবর্তন তত্ত্ব। গত শতাব্দীতেই বিবর্তনবাদ জীববিজ্ঞানের মূল শাখা হিসেবে জীববিজ্ঞানীদের স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই এ বিষয়ে সারা পৃথিবীর মানুষের কৌতুহল ও আগ্রহ রয়েছে। বিবর্তনবাদ নিয়ে সারা পৃথিবী জুড়েই বহু জনপ্রিয় বই বের হলেও বাংলায় এমন জনপ্রিয় বিজ্ঞান বইয়ের ঘাটতি রয়েই গিয়েছিলো। বিবর্তনবাদ ও প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কাজ বাংলা ভাষায় হলেও তা পর্যাপ্ত ছিলো না। প্রয়োজন ছিলো সাধারণ পাঠকদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বইয়ের। বন্যা আহমেদ সে প্রয়োজন মাথায় রেখেই লিখে ফেলেছেন তাঁর প্রথম বই “বিবর্তনের পথ ধরে”। অবসর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটি পাঠক-মহলে বেশ আলোড়ন তুলেছে, বিশেষ করে তরুণ সমাজে। বইয়ের অধ্যায়গুলো নিয়ে এক এক করে আলোচনা করা যাক। বইয়ের প্রথম অধ্যায় ‘‘এলাম আমরা কোথা থেকে?’” শুরু হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ ‘ফ্লোরস’ এ পাওয়া বামন মানবদের ফসিল হদিশ পাওয়ার খবর জানিয়ে। ওখানকার বাসিন্দাদের রূপকথার গল্পে যে বামনদের কথা শোনা যেত তা সত্য হয়ে ধরা দিলো বিজ্ঞানীদের কাছে। ১২ হাজার বছর আগে এক বিশাল অগ্নুৎপাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিলো ওরা। ধারণা করা হয় মানুষেরই আরেক প্রজাতি Homo erectus এর কোনো ছোটো একটি দল বিবর্তিত হয়ে ওই দ্বীপে পরিবেশে বামন নরমানবে পরিণত হয়েছিল। এ ঘটনার ফলেই বিজ্ঞানীদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে অল্প ক’দিন আগেও আধুনিক মানুষের সাথেই এই বসুন্ধরায় একই সাথে হেঁটে বেরিয়েছে মানুষেরই আরো একাধিক প্রজাতি। ভাবা যায়! সাধারণত বিজ্ঞানভিত্তিক বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে পাঠক প্রত্যাশা করে যে বইয়ের বিষয়বস্তুর প্রাথমিক অংশটুকুর ধারণা দিয়েই আলোচনা শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু এ বইয়ে লেখক যেন চমক দিলেন। প্রথম অধ্যায়টি শুরু করলেন- বিবর্তন কেন আমাদের জানা প্রয়োজন-তা দিয়ে। এ ধরনের বইয়ের পাঠের সময়ই স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন জেগে উঠতে পারে পাঠকের মনে- বিবর্তন নিয়ে এতো মাথাব্যথা কেন? বিবর্তন না জেনেই তো কোটি কোটি মানুষ কাটিয়ে দিয়েছে তাদের পুরোটা জীবন, তাহলে আমরা জেনেই বা কী করবো? লেখক যেন আগে থেকেই জানতেন যে এমন ধরনের প্রশ্নের উদ্ভব হতে পারে, তাই তিনি বইয়ের শুরুতেই এ ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করলেন। লেখকের বক্তব্য জেনে নিলেই বইটি লেখার এবং পাঠকের পড়ার উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যায়- “বিবর্তনবাদকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে শেখার মাধ্যমে আমরা নিজেরা যেমন আমাদের চারদিকের প্রকৃতি ও পরিবেশকে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করতে শিখব, তেমনিভাবে বুঝতে ও অন্যদের বুঝাতে পারবো বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও সমাজে হাজার হাজার বছর ধরে টিকে থাকা বহু স্থবির চিন্তাধারার মধ্যে পার্থক্য কোথায়”। ‘বিবর্তনে প্রাণের স্পন্দন’ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে উনিশ শতকের প্রথম দিককার বিজ্ঞান মহলে চর্চিত বিবর্তন ও পৃথিবীর বয়স নিয়ে গবেষণাগুলোর ইতিহাস। অনেকেই ভাবেন যে বিবর্তনবাদ চার্লস ডারউইন ‘বিবর্তনবাদ তত্ত্ব’ আবিষ্কার করেছেন, আসলে তা ঠিক নয়। ডারউইনের অনেক আগেই জীববিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন যে প্রজাতির বিবর্তন হয়, কিন্তু প্রমাণ করতে পারেন নি। ডারউইন শুধু প্রজাতির বিবর্তনের পক্ষেই প্রমাণ তুলে ধরেন নি, কীভাবে বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন প্রজাতির উদ্ভব ও পুরনো প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে থাকে- তাও বর্ণনা করেছেন যা জীববিদ্যার ইতিহাসে অভূতপূর্ব। এই অধ্যায়ে ডারউইনের ‘বিগল’ জাহাজের সেই বিখ্যাত বিশ্ব-ভ্রমণ সম্পর্কে সামান্য আলোচনা রয়েছে। এ অধ্যায়ের বিশিষ্টতা হলো এখানে ডারউইনের ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব’ আবিষ্কারের পটভূমি বিস্তৃতভাবে আলোচিত হয়েছে। পাঠক বেশ ভালোভাবেই ডারউইনের মনোজগতকে উপলব্ধি করতে পারবেন, বুঝতে পারবেন ঠিক কোন পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর আবিষ্কারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিলেন। জীববিজ্ঞানের আধুনিক সব শাখা যেমন- জেনেটিক্স, জিনোমিক্স, মাইক্রোবায়োলজি ইত্যাদি প্রতিনিয়ত বিবর্তনতত্ত্বের পক্ষে অগুনতি প্রমাণ সংগ্রহ করে যাচ্ছে। ভাবতে অবাক হতে হয়, দেড়শ’ বছর আগে ডারউইনের যুগে এসব আধুনিক জ্ঞানের কিছুই ছিলো না, তারপরও স্রেফ পর্যবেক্ষণ ও অসাধারণ চিন্তাভাবনার মাধ্যমে ডারউইন বিবর্তনের পেছনের কারণটুকু সঠিকভাবে খুঁজে বের করে ফেলতে পেরেছিলেন। “বিবর্তনের পথ ধরে” গ্রন্থের তৃতীয় অধ্যায় ‘অনন্ত সময়ের উপহার’এ মূলত ডারউইনের ‘’প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব’’’ নিয়েই আলোচনা এগিয়েছে। এ অধ্যায়ের প্রথম অংশটুকুতে ডারউইন কীভাবে তাঁর প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বে উপনীত হয়েছিলেন সে বিষয়ে বিশদ বর্ণনা রয়েছে। তাছাড়া ল্যামার্কিয় ভুল দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ডারউইনিয় দৃষ্টিভঙ্গির একটি মনোজ্ঞ আলোচনা রয়েছে। অধ্যায়ের শেষাংশে প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বের খুঁটিনাটি নানা টার্ম ও টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে ছোটো আলোচনা আছে যা বিবর্তনের পেছনের কারণটি জানার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। “বিবর্তনের পথ ধরে” গ্রন্থের সবচেয়ে চমকপ্রদ, সুখপাঠ্য ও আকর্ষণীয় অধ্যায় সম্ভবত এর চতুর্থ অধ্যায়টি- ‘চোখের সামনেই ঘটছে বিবর্তন’। এ অধ্যায়ে ভুরি ভুরি উদাহরণের মাধ্যমে বিবর্তনের পক্ষে নানা যুক্তি উপস্থাপন করেছেন লেখক। আধুনিক জীববিজ্ঞানের জগতে বিবর্তন নিয়ে এতো বেশি পরিমাণ গবেষণা হয়েছে যে তা থেকে বিবর্তনের পক্ষে হাজার হাজার প্রমাণ উপস্থাপন করা যায়। বিবর্তনের পক্ষে আজ যে প্রমাণগুলো হাজির করা যায় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: প্রাণ-রাসায়নিক প্রমাণ, কোষবিদ্যা-বিষয়ক প্রমাণ, শরীরবৃত্তীয় প্রমাণ, সংযোগকারী জীবের প্রমাণ, ভৌগোলিক বিস্তারের প্রমাণ,তুলনামূলক অঙ্গসংস্থানের প্রমাণ, শ্রেণীকরণ সংক্রান্ত প্রমাণ, বিলুপ্তপ্রায় অঙ্গের প্রমাণ।তাছাড়া ফসিলের পরমাণ তো আছেই। উদাহরণ হিসেবে বেশ কিছু প্রমাণ লেখক উপস্থাপন করেছেন পাঠকের সামনে । এর মধ্যে মাইক্রো-বিবর্তনের উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছে এইচআইভি ভাইরাসের বিবর্তন। কেন বিজ্ঞানীরা এইডসের জন্য কোনো প্রতিষেধক বা ভ্যাক্সিন উদ্ভাবন করতে পারছে না তার উত্তর লুকিয়ে আছে ডারউইনের ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বে’। কেন বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন তা নিয়ে বলতে গিয়ে লেখক একেবারে মোক্ষম যুক্তিটি ছুঁড়ে দিয়েছেন- “বিবর্তনবাদকে গভীরভাবে বোঝা ও তার যথাযথ প্রয়োগ ছাড়া এই মারাত্মক এইডস রোগের চিকিৎসা কি করে সম্ভব, বলুন তো? আজকে বিবর্তনবাদ-বিরোধী যদি এই ওষুধ তৈরির কাজে নিয়োজিত হন তাহলে কোটি কোটি এইডসের রোগীর কপালে কী আছে তা তো আর বলে দেবার অপেক্ষা রাখে না”। এছাড়া বিবর্তন তত্ত্বকে ভালোভাবে বোঝার মাধ্যমেই আমরা বুঝতে পারব কেন বার্ড ফ্লু ভাইরাস বিশ্বব্যাপী এমন মহামারী আকারে ছড়িয়ে গেল, কেন বর্তমানে ডিডিটি দিয়ে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না, কেন জমিতে অধিক কীটনাশক প্রয়োগে পোকাগুলো অর্জন করছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ম্যালেরিয়া অধ্যুষিত আফ্রিকায় কেন ভয়াবহ সিকেল রোগের জিনের ছড়াছড়ি। আর ব্যাকটেরিয়ার বিবর্তন ও এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলে আমাদের পড়তে হবে স্বাস্থ্য-ঝুঁকির সামনে। শুধু মাইক্রো-বিবর্তনই নয়, লেখক হাজির প্রকৃতিতে ঘটে যাওয়া নানা ম্যাক্রো-বিবর্তনের উদাহরণও। একবার প্রখ্যাত জীববিজ্ঞানী জে বি হ্যালডেনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো কীভাবে বিবর্তনবাদকে ভুল প্রমাণ করা যায়। তিনি প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন যে, কেউ যদি প্রিক্যাম্ব্রিয়ান যুগে একটি খরগোশের ফসিল খুঁজে বের করে দিতে পারে তাহলেই বিবর্তনবাদ ভুল বলে প্রমাণিত হবে। কিন্তু আজো কেউই তা করতে পারে নি। কারণ বিবর্তন তত্ত্ব ঘোষণা করছে যে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির প্রাণীর ফসিল কখনোই ভুল শিলাস্তরে পাওয়া যাবে না, নয়তো পুরো বিবর্তন তত্ত্বই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়তো। তাই বিবর্তন-বিদ্যার জগতে ফসিল-বিদ্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফসিল নিয়েই লেখক তাঁর গ্রন্থের ৫ম অধ্যায়- ‘ফসিল ও প্রাচীন উপাখ্যানগুলো’ এবং ৬ষ্ঠ অধ্যায়- ‘ফসিলগুলো কোথা থেকে এলো’ সাজিয়েছেন। প্রাচীনকাল থেকেই যদিও মানুষ ফসিল সম্পর্কে জানত, তারপরও সেগুলো সম্পর্কে যথাযথ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানতে আমাদের আঠারো শতাব্দী পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। লেখকের প্রাঞ্জল বর্ণনায় আমরা দেখতে পাই কীভাবে প্রাচীনকালে মানুষেরা বিভিন্ন অতিকায় বিলুপ্ত প্রাণীর ফসিল দেখে নানা ধরনের মিথ এবং কল্পকাহিনী তৈরি করেছে। বর্তমানে খুঁজে পাওয়া এসব বিশালাকার ফসিলগুলোর সাথে মানুষের কল্পিত দৈত্যগুলোর মিল দেখে খুব অবাক হতে হয়। আর ষষ্ঠ অধ্যায়ে ফসিল কীভাবে গঠিত হয় তার বিশদ বর্ণনা আছে। একই সাথে আছে মহাদেশীয় সঞ্চারণ এবং প্লেট টেকটোনিক্স তত্ত্ব নিয়ে কিছু আলোচনা। বিবর্তনের মাধ্যমে কীভাবে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীগুলো সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল তা বুঝতে হলে মহাদেশীয় সঞ্চারণ তত্ত্ব বুঝে নেয়া অতীব জরুরী। এরপর ৭ম অধ্যায়ে লেখক ফসিলের বয়স ও ভূ-তাত্ত্বিক বিভিন্ন স্তরের বয়স কীভাবে নির্ধারণ করা হয় তা নিয়ে সূক্ষ্ম বর্ণনা দিয়েছেন। এ অধ্যায়ে এসে সাধারণ পাঠক সামান্য অমনোযোগী হয়ে উঠতে পারেন অধিক পরিমাণ টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহারের কারণে। তবে বিজ্ঞানের মনযোগী পাঠকদের জন্য এটি একটি বড়ো পাওয়া। বিবর্তন তত্ত্বের ইতিহাসে Missing link বা মধ্যবর্তী ফসিলগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ মিসিং লিংকগুলো খুঁজে না পেলে বিবর্তন তত্ত্বের সত্যতা হুমকির মুখে পড়তো। মিসিং লিংক আসলে এমন ধরনের ফসিল যা আধুনিক প্রজাতি ও তাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যবর্তী স্তরের বিবর্তনের ধাপ বা খোয়া যাওয়া ফাঁক পূরণ করে। এই মিসিং লিংকগুলোই বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানীদের অনুমানগুলোর সত্যতা প্রমাণ করেছে। যদিও সঙ্গত কারণেই খুব বেশি পরিমাণ ফসিল বা মিসিং লিংক খুঁজে পাওয়া যায় নি, তারপরও যা পাওয়া গেছে তা যথেষ্ট বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এসব মধ্যবর্তী ফসিলগুলোর মাধ্যমেই বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন কীভাবে ডাইনোসর থেকে উদ্ভব ঘটেছে আধুনিক পাখির, কীভাবে ডাঙ্গার চারপেয়ে ভালুক জাতীয় প্রাণী থেকে বিবর্তন ঘটেছে আধুনিক তিমির আর কীভাবেই বা পানিতে বসবাসকারী মাছগুলো থেকে ক্রমান্বয়ে আবির্ভাব ঘটেছে সরীসৃপ এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীর। এই গ্রন্থের অষ্টম অধ্যায়ে উপস্থাপিত হয়েছে মিসিং লিংক বিষয়ক কৌতূহলোদ্দীপক প্রবন্ধ। প্রজাতির বিবর্তন নিয়ে বই লেখা হবে আর তাতে আমাদের তথা মানুষের বিবর্তনের ইতিহাস থাকবে- তা তো হয় না। সেই গল্পই আমরা খুঁজে পাই ”বিবর্তনের পথ ধরে’’ গ্রন্থের নবম অধ্যায়ে। আমাদের কাছে বিবর্তনের ইতিহাসে মানুষের যাত্রার খুঁটিনাটি জেনে নেয়াটা নিজেদের স্বার্থেই প্রয়োজন। বিবর্তনের ধারায় যেমন অগুনতি জীবের উদ্ভব পৃথিবীতে ঘটেছিলো তেমনি বেশিরভাগ প্রজাতিই কালের পরিক্রমায় পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে। ফসিল রেকর্ড থেকে দেখা যায়, Homo গণেরও বিভিন্ন প্রজাতি উৎপত্তি ঘটেছে, একটি প্রজাতি ছাড়া বাকিরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর আমাদের জন্য রেখে গেছে ফসিল ও জিন-তাত্ত্বিক প্রমাণ। অন্যান্য প্রজাতির প্রাণীদের ফসিল খুঁজে পাওয়া রীতিমতো দুঃসাধ্য হলেও এপ বা নরমানবদের ফসিলের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্টো। বিজ্ঞানীরা Homo গণের অন্তর্ভুক্ত প্রজাতিগুলোর এতো বেশি-সংখ্যক ফসিল খুঁজে পেয়েছেন যে তাদের আলাদা করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। এসব নিয়ে লেখক এই অধ্যায়ে মানুষের বিবর্তনের রূপরেখা তুলে ধরেছেন বিস্তারিতভাবে। প্রাসঙ্গিক ছবিগুলো পড়ার আনন্দ বাড়িয়ে দেবে কয়েক গুণ। ডারউইনের বিবর্তনবাদ ও প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বকে বলা যায় এক ধরনের Paradigm shift । স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো বিপ্লবাত্মক ধারণাকেই সমাজে প্রতিষ্ঠা পাবার জন্য লড়তে হয় দীর্ঘ লড়াই। সে লড়াইয়ে জয়ী হয়ে বিবর্তনবাদ এখন বৈজ্ঞানিক মহলে সুপ্রতিষ্ঠিত।যদিও সাধারণ জনমানসে এখনো অনেকটাই অপাংক্তেয় রয়ে গেছে। সৃষ্টিতত্ত্ব-বাদীরাও বসে নেই। তারা বিজ্ঞানের মোড়কে হাজির করছে নানা ছদ্ম-বিজ্ঞান, যা দিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে মানুষকে। সম্প্রতি নতুন এক আর্গুমেন্ট এ মহলে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, যার নাম বুদ্ধিদীপ্ত অনুকল্প বা ইন্টেলিজেন্ট আইডি। এই ইন্টেলিজেন্ট আইডি দিয়ে সৃষ্টি-তাত্ত্বিকরা কী বুঝাতে চান, তাদের কী কী ধরনের দাবি আছে এবং সর্বোপরি তাদের দাবির অসারতা প্রমাণ করেছেন লেখক তাঁর বইয়ের দশম অধ্যায়ে। এ বিষয়ে বাংলা ভাষায় সম্ভবত এটি প্রথম লেখা। এই অধ্যায়টি বন্যা আহমেদ এবং বিজ্ঞান-লেখক অভিজিৎ রায় যৌথভাবে লিখেছেন। আর তাছাড়া পরিশিষ্টে বিবর্তন সম্পর্কে প্রচলিত নানা ভুল ধারণাগুলোর যুক্তি খণ্ডন করা হয়েছে। এ অংশটি বিবর্তন বিষয়ক যেকোনো বিতর্কে বিশেষভাবে কাজে লাগবে বলেই আমার ধারণা। আমাদের দেশে প্রচলিত বিজ্ঞানভিত্তিক বইয়ের ভাষা সাধারণত খুব কঠিন হয়, আর নয়তো পাঠকদের বুঝাতে গিয়ে একেবারেই তরল একটি ভাষা সৃষ্টি করা হয়। আমি আনন্দের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, বিষয়বস্তুর গুরুত্ব বিচার করে লেখক তাঁর ভাষায় গাম্ভীর্য যেমন বজায় রেখেছেন তেমনি একই সাথে রক্ষা করেছেন প্রাঞ্জলতা। এ এক বিরল গুণ। এজন্য লেখককে অভিনন্দন জানাতে হয়। আর বিজ্ঞান বিষয়ক টার্মগুলো এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে যাতে মাধ্যমিক পড়ুয়া শিক্ষার্থীও এতে কামড় বসাতে পারে। বিজ্ঞান-বিষয়ক বইয়ে যেমনটা আশা করা হয় যে, প্রচুর প্রাসঙ্গিক ছবি থাকবে, এ বইয়েও ঠিক তেমনটিই আছে। বইয়ের শেষে যুক্ত হওয়া কালার প্লেটগুলো যেন বাড়তি পাওয়া। বিজ্ঞানে আগ্রহী পাঠকদের জন্য এটি অবশ্যপাঠ্য একটি বই। বইটি যেকোনো রেটিং এ দশে দশ পাবার মতো যোগ্য। সাজেদুল ওয়াহিদ

      By Pranjal Chakraborty

      30 Mar 2013 02:06 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমাদের দেশে বিবর্তন নিয়ে প্রচুর ভুল ধারণা আছে,কারণ এই তত্ত্ব অনুযায়ী প্রচলিত বিভিন্ন ধর্মের অনেক বিষয় নাকচ হয়ে যায় । অথচ এটি একটি প্রমাণিত সত্য । আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ছাত্রদের বিবর্তন নিয়ে যেভাবে অন্ধকারে রেখেছে,তাতে এই ধরণের বইয়ের প্রকাশ জরুরী হয়ে পড়ে । অত্যন্ত সহজ ভাষায় এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে তুলে ধরায় লেখিকাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!