User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগ বই-তিনটি সেনা অভ্যূত্থান এবং না বলা কথা লেখক-এম এ হামিদ পি এস সি পৃষ্ঠা-১৯২ মূল্য-২৫০ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪ বছর পর যখন যুদ্ধবিদ্ধস্ত অঞ্চল গুলো একটু একটু করে সংস্কার হচ্ছিলো ঠিক তখনি বাঙালি জাতির উপর এসে পরে এক বজ্রাঘাত। তা হলো ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এক নারকীয় হত্যাকান্ড। যা রচিত হয় বাংলাদেশ সেনাবাহীনির কিছু উর্ধতন কর্মকর্তা দ্বারা। এই হত্যাকান্ডে নিহত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যবৃন্দ। এই থেকে শুরু। এই হত্যাকান্ড সহ ১৯৭৫ সালে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সংগঠিত হয়েছিল তিন তিনটি সেনা-অভ্যুত্থান। অভ্যূত্থান তিনটি হলো, ১৫ আগস্ট এবং ৩ ও ৭ নভেম্বর। এবং এর প্রতিটি অভ্যুত্থানই যুগান্তকারী ঘটনা, শতাব্দীর অন্যতম ঐতিহাসিক ঘটনা, যেগুলোর মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক পরিমন্ডলে ঘটে ব্যাপক উত্থান-পতন। এমন কি সরকার পরিবর্তনের মত অবিশ্বস্য ঘটনাও ঘটে যায়। কিন্তু ঘটে যাওয়া এই হত্যাকান্ডের পিছনে রয়ে গেছে অনেক কথা যার কোন অংশই সাধারণ মানুষের কর্ণগোচর হয় নি। এই তিনটি ছাড়াও ১৯৭৫ থেকে ৮১ পর্যন্ত মোট ১৮ টি ছোট বড় অভ্যূত্থান সংঘটিত হয়। সব থেকে দুঃখের বিষয় এটাই, ক্ষমতা আর লোভে পড়ে এই সকল সংঘটিত অভ্যূত্থানে যারা জড়িত তারা এবং যারা নিহত হয়েছে এই দুপক্ষেরই অধিকাংশ অফিসারই মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের এই অস্থির সময়ে সংঘটিত এসকল অভ্যূত্থান নিয়ে রয়েছে অনেক অস্পষ্টতা। "তিনটি সেনা অভ্যূত্থান এবং কিছু না বলা কথা " বইয়ের লেখক এম এম হাকিম অভ্যূত্থান গুলো সংঘটিত হবার সময় ঢাকার "স্টেশন কমান্ডার" হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওনার ভাষ্য মতে, "সৌভাগ্যবশত : তিনটি ঐতিহাসিক অভ্যূত্থানই অতি নিকট থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি ঘটনার সাথে কমবেশি প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সংযুক্ত ছিলাম।" তিনি এই বইয়ে সে সকল প্রতক্ষ ঘটনা সমূহের বিবরণ দিয়েছেন। এ বিষয়েও তিনি বলেন, অন্যরা যেখানে শুনে শুনে লিখেছেন, আমি সেখানে নিজে প্রত্যক্ষ করে লিখেছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু লেখক অভ্যুত্থান ঘটনাগুলো না দেখেই শুধু শুনে শুনেই রং চং দিয়ে বিভিন্নভাবে অতিরঞ্জিত করে গল্পাকারে অলংকরন করে লিখেছেন। এতে প্রকৃত তথ্য বিকৃত হয়েছে।" এছাড়া ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর,৭ নভেম্বর অভ্যূত্থানের প্রধান নায়কদের প্রায় সবার সাথে লেখকের ঘনিষ্ঠ পরিচয় ও সরাসরি জানাশোনা ছিলো। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের আড়াই মাস পর, নভেম্বরের শুরুতে। ৩ নভেম্বর সেনাবাহিনীর ঢাকাস্থ পদাতিক রেজিমেন্টগুলোর মাধ্যমে এবং বিমানবাহিনীর একটি অংশের সক্রিয় সমর্থনে বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অবস্থানরত চক্রের বিরুদ্ধে সামরিক অবস্থান গ্রহণ করা হয়। ফলে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর ৩নভেম্বর ঘটে যায় আরেকটি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড। আর তার পরের সেই ৭ নভেম্বর। এই তিনটি সংকটময় সময়ের চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা লেখক তার বইটিতে তুলে ধরেছেন। পুরো বইটিতে ছোট ছোট অধ্যায়ে বিভক্তত করে বিষদভাবে আলোচিত হয়েছে ১৫ আগস্ট রক্তাক্ত সেনা অভ্যুত্থান, ৭১-৭৪ পর্যন্ত সময়কার পর্যালোচনা, মুজিব হত্যাকান্ড, ১৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে ফারুক-রশিদের সাফল্যের প্রধান কারণসমূহ, রাষ্ট্রপতি মুজিবের সাফল্য ও ব্যর্থতা, আগস্ট পরবর্তী অবস্থা, ক্ষমতার লড়াইয়ে চরম মুহুর্ত, ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন সহ মুজিব হত্যা প্রসঙ্গে ফারুক-রশিদের সাক্ষাৎকার, কর্ণেল ফারুক ও রশিদের চাঞ্ছল্যকর সাক্ষাৎকার, আইজি নুরুজ্জামানের জেল রিপোর্ট সহ আরো খুটিনাটি অনেক কিছু। ১৯৭৫ সালে যে তিনটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছিল তা দেশের ১৯৭৫-পরবর্তী সময়কে ভিন্নতর করতে ভূমিকা রেখেছে। এই অভ্যুত্থানসমূহ নিয়ে লেখালেখি এবং আলোচনা হয়েছে, কিন্তু অভ্যুত্থানগুলির বিভিন্ন দিক নিয়ে এখনও অনেক অস্পষ্টতা বিদ্যমান। সেই সময়ের ঘটনাধারা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্নসমূহ স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে কখনও তার উত্তর আলোচিত হয়নি, আবার কখনও তা পাওয়া গিয়েছে বিভিন্নভাবে। ফলে সেই ঘটনাগুলি নিয়ে টিকে থাকছে নানা বিতর্ক, অস্পষ্টতাও দূর হচ্ছে না। প্রয়োজন সেই সময়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে নৈর্ব্যক্তিক ও বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ। এই লেখায় সেই সামরিক অভ্যুত্থানগুলির বিভিন্ন দিক তুলে ধরার পাশাপাশি কিছু জরুরি প্রশ্ন বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে, সেই সময়ের ঘটনাধারা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য। সদ্দ্য স্বাধীনতা পাওয়া একটি দেশ, যার শিরায় শিরায় যুদ্ধের ছাপ। যখন সকলে মিলে এসব ছাপ মুছে নতুন করে রাষ্ট্র গঠনের চিন্তা করবার পালা তখনি যুদ্ধের ছাপের উপর আবারো কতোগুলো লোভী ব্যক্তি জাতির পিতার রক্তের ছাপ লাগিয়ে দিলো। বিধস্ত একটা দেশের ক্ষতি সামলে উঠার আগেই পরপর তিনটি সেনা অভ্যুত্থানে যে কি পরিমাণ অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অনেক বছর পর্যন্ত বোধহয় এর ঘানি টেনে চলতে হবে।
Was this review helpful to you?
or
The book is very interesting, informative and well written. To me, the information presented in the book seems credible, because it was written by an Army Officer who was the first hand witness of those incidents described in the book. However, there are some printing mistakes.
Was this review helpful to you?
or
এই বইটির সবচেয়ে যে দিকটি না বললেই নয়, ইতিহাসের বইগুলো লেখা হয়ে থাকে গবেষণালব্ধ তথ্য হতে,প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা হতে, অথবা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কথোপকথন হতে। কিন্তু, এ বইটি এখানেই ব্যতিক্রম যে, এটি তিনিই লিখেছেন, যিনি প্রত্যেকটি অভ্যুত্থানকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। অভ্যুত্থানের নেতা কিংবা নিহতরা সবাই ছিলেন লেখকের পূর্বপরিচিত। তাই, আমি কর্নেল হামিদের এ বইটি সংগ্রহ করেছিলাম এবং পড়ে নিরপেক্ষ বিবরণই পেয়েছি বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহ তিনটি সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট,৩রা নভেম্বর এবং ৭ই নভেম্বর: যাতে প্রাণ হারান রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য,অসংখ্য সেনা অফিসার, তাদের পরিবারের লোকজন। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়টি হলো ক্ষোভ-ক্ষমতার দ্বন্ধকেন্দ্রিক এসব অভ্যুত্থানে জড়িত আর নিহত দুপক্ষেরই অধিকাংশ অফিসারই মুক্তিযোদ্ধা। অভ্যুত্থানের সময়কালে লেখক ছিলেন ঢাকার ষ্টেশন কমান্ডার। তিনটি সেনা অভ্যুত্থানেই তিনি প্রত্যক্ষদর্শী থাকলেও অংশগ্রহণ করেননি কোনটাতেই ফলে বইটিতে নিরপেক্ষ ও সত্য তথ্যই উঠে এসেছে বলে আমার মনে হয়েছে। বইটি তিনটিভাগে বিভক্ত এবং নিম্নোক্তভাবে সাজানো- ১. পনের আগস্ট রক্তাক্ত সেনা অভ্যুত্থান। - ৭১-৭৪ পর্যন্ত সময়কার পর্যালোচনা। - অভ্যত্থান দানা বাধা: আগস্ট ৭৫ - মুজিব হত্যাকান্ড। - ৪৬ ব্রিগেডে উল্লাস। - ট্যাংক মিছিল ও মোশতাকের শপথ গ্রহণ। - ভারতীয় হস্তক্ষেপ। - চীফ অফ স্টাফের গদী দখল। - অভ্যুত্থানের সময় রাষ্ট্রপ্রধানকে কি বাচাঁনো যেত? - ক্যান্টনম্যান্ট থেকে কোন সৈন্য মুভ করলো না কেন? - ১৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে ফারুক-রশিদের সাফল্যের প্রধান কারণসমূহ। - ১৫ আগস্ট অভ্যুত্থান: একটি পর্যালোচনা। - রাষ্ট্রপতি মুজিবের সাফল্য ও ব্যর্থতা। ২. তেসরা নভেম্বর অভ্যুত্থান:খালেদের উত্থান পতন - আগস্ট পরবর্তী অবস্থা - ভগহৃদয় খালেদ, নাখোশজিয়া। - জিয়া বনাম মোশতাক-ওসমানী - জিয়াবন্ধী: পাল্টা অভ্যুত্থান। - মেজরদের দেশত্যাগ:কুখ্যাত জেল হত্যা। - খালেদের ব্যর্থ অভ্যুত্থান:একটি পর্যালোচনা। - কেন সংঘটিত হলো এবং ব্যর্থ হলো এই অভ্যুত্থান। ৩.সাত নভেম্বর এতিহাসিক সিপাহী বিদ্রোহ। - যেভাবে বন্দী জিয়াকে উদ্ধার করা হলো। - ক্ষমতার লড়াইয়ে চরম মুহুর্ত। - ৭-৮ নভেম্বর: রক্তাক্ত রাত। - এবার সিপাহি-অফিসার ভাই-ভাই। - এরশাদের আগমন। - আমার পদত্যাগ। - ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন। - জিয়ার শুদ্ধি অভিযান। - জিয়া হত্যাকান্ড:চট্টগ্রাম সেনা অভ্যুত্থান। ৪. পরিশিষ্ট: - মুজিব হত্যা প্রসঙ্গে ফারুক-রশিদের সাক্ষাৎকার। - কর্ণেল ফারুক ও রশিদের চাঞ্ছল্যকর সাক্ষাৎকার। - আইজি(প্রিজন)নুরুজ্জামানের জেল রিপোর্ট। - গুরুত্বপূর্ণ ছবি,সাক্ষর,রিপোর্ট,নোট। বইটি বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও বারবার ক্ষমতার মেরু বদলের সময় হিসাবে বিবেচিত ৭৫-৮১ পর্যন্ত সময়ের ঘটনাপ্রবাহ ধারণ করেছে, ক্ষমতার নাগপাশে ক্যান্টনমেন্টের নড়াচড়া এবং তার কারণও যুক্তির কষ্টিপাথরে অনুসন্ধান ও যাচাইয়ের প্রচেষ্টাও এতে পরিলক্ষিত হয়। তাই, সঠিক ইতিহাস জানতে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।