User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
১৯২১ সালের গুজরাটের মুসলিম এবং পার্সি জীবন ধারার উপর লেখা একটা থ্রিলার পড়লাম গত সপ্তাহে "দ্য উইডোজ অভ মালাবার হিল"। সাসপেন্স, মার্ডার মিস্ট্রি আর লিগ্যাল থ্রিলারের মিশ্রণে লেখা গল্পটা। খুব ধীর লয়ের রহস্যোপন্যাস। একজন পার্সি নারী আইনজীবী এবং তার ক্লায়েন্ট তিনজন বিধবা মুসলিম নারীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে প্লট। তাদের জীবনের লড়াই, হত্যার সাথে জড়িয়ে পড়া, আইনের মারপ্যাঁচ, তৎকালীন সমাজের জীবন ধারা- অনেক কিছুই ছিলো গল্পে। যারা টানাটান উত্তেজনার অ্যাকশন, সিরিয়াল কিলিং এগুলোর বাইরে ক্লাসিক ধরনের বই পড়তে আগ্রহী, তারা পড়ে দেখতে পারেন। ভিন্ন স্বাদের থ্রিলার হওয়ায় বইটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। বই- দ্য উইডোজ অভ মালাবার হিল লেখক- সুজাতা ম্যাসি
Was this review helpful to you?
or
Not bad
Was this review helpful to you?
or
Each time a woman stands up for herself, without knowing it possibly, without claming it, she stands up for all women. -Maya Angelou একবিংশ শতাব্দীতে এসে যদি প্রশ্ন করা হয় আমাদের সমাজে নারীরা কতটুকু স্বাধীন? সম্ভবত বড়সড় বির্তকের জন্য একটা ভালো টপিক হয়ে যাবে সেটা। কিন্তু আজ থেকে ঠিক একশো বছর আগে যদি একই প্রশ্ন করা হতো? উত্তরটা খুব একটা কঠিন হবার কথা না। পর্দার নামে নারীদের চার দেয়ালের মধ্যে পুরো জীবন কাটিয়ে দেয়া কিংবা অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে পুরো সংসারের ভার বাচ্চা বয়সে কাঁধে চাপিয়ে দেয় তখনকার দিনের সাধারণ একটি চিত্র। সেই সময়েরই বোম্বের প্রথম আইনজীবী পারভিন মিস্ত্রিকে নিয়ে সুজাতা ম্যাসির উপন্যাস 'দ্য উইডোজ অফ মালাবার হিল'। বোম্বে ১৯২১… বইটি হাতে নেবার জন্য পেছনের লেখা ফ্ল্যাপের এই অংশটুকুই যথেষ্ট। সত্যি বলতে লেখিকা কিংবা অনুবাদক কেউই আমাকে বইটা পড়ার জন্য প্রভাবিত করেননি। ফ্ল্যাপটাই যথেষ্ট ছিলো আগ্রহ জাগানোর জন্য। বোম্বে ১৯২১… সম্ভ্রান্ত জোরোস্ত্রিয়ান পরিবারের মেয়ে পারভীন মিস্ত্রি। অক্সফোর্ড ফেরত, বোম্বের একমাত্র নারী আইনজীবী। পারিবারিক ল-ফার্মে সাহায্য করছে বাবাকে। তিন বিধবা স্ত্রী আর অগাধ রেখে মারা গেলেন মি. ওমর ফরিদ। প্রয়াত মক্কেলের সম্পত্তির মীমাংসার দায়িত্ব চাপল মিস্ত্রি-ল-র উপর। কাগজ ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে পারভীনের চোখে অদ্ভুত একটা ব্যাপার চোখে পড়ল- তিন বিধবাই তাদের সম্পত্তির অংশ দান করে দিতে চাইছে। সদ্য স্বামী হারা স্ত্রীদের এহেন আচরণে খটকা লাগে ওর। যেখানে পর্দার আড়ালে বাস করা নারীদের আবলম্বন বলতে কিছুই নেই, কেন তারা কপর্দকহীন হয়ে যেতে চাইছে। পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছে না তো কেউ? নিজে গিয়ে খোঁজ নেবে- সিদ্ধান্ত নিল ও। আর তারপরই ঘটতে শুরু করল ঘটনা- খুন হয়ে গেল ফরিদ হাউজের এক সদস্য, হারিয়ে গেল এক শিশু। এদিকে পারভীনকে তাড়া করে ফিরছে ওর অতীত। বর্তমানে এসেও হানা দিচ্ছে সেই ফেলে আসা স্মৃতি। কোনদিক আগে সামলাবে ও? মূলত ১৯১৬ এবং ১৯২১ এই দুই টাইমলাইনে গল্প এগিয়েছে। আমার কাছে দুই টাইমলাইনে গল্প বলা খুবই কঠিন একটা কাজ মনে হয়। দুটি টাইমলাইনে গল্প বলে একটি এন্ডিংয়ে আনা যেমন কঠিন তার থেকেও কঠিন দুটি টাইমলাইনেই সাসপেন্স আর থ্রিল ধরে রাখা। তবে এ গল্পে শুধু সাসপেন্স, থ্রিল আর টুইস্ট খোঁজলে ভুল করা হবে। ১৯২১ সালের টাইমলাইন যেমন সাসপেন্সে ভরপুর ছিলো ঠিক তার উল্টো চিত্র ছিলো ১৯১৬ সালের টাইমলাইনে। ভালোবাসা, কুসংস্কার আর বিশ্বাসঘাতকার চরম নিদর্শন ছিলো গল্পের এই অংশটা। থ্রিল, সাসপেন্সের সাথে একটুখানি প্রেম-ভালোবাসা-বিশ্বাসঘাতকতার ছোঁয়া উপন্যাসকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তবে যারা পিউর থ্রিলার পড়েন তাদের কাছে পারভীন অতীতের গল্পটা হয়তো বোরিং লাগতে পারে। আমার কাছে সাধারণ থ্রিলার থেকে এই বই কেনো আলাদা লেগেছে তার আরো কিছু কারণ আছে। ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট আমার অন্যতম পছন্দের একটা জিনিস। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে প্রায়ই দেখা যায় এন্টাগোনিস্ট বা প্রোটাগনিস্ট যাই করে তার পিছনে কোনো অতীত থাকে। ঠিক এমনটাই ঘটেছে পারভীন মিস্ত্রির ক্ষেত্রে। ও কেনো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিধবাদের সাহায্য করতে চায়? শুধুই কি প্রফেশনাল রেসপন্সিবিলিটি? এসব প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে পারভীনের অতীতে। ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টের আরেকটা কারণ হলো প্রোটাগনিস্ট বা এন্টাগনিস্টকে নিয়ে সিরিজ বানানের পূর্ব পরিকল্পনা থাকা। বুঝাই যাচ্ছিলো লেখিকার পারভীন মিস্ত্রিকে নিয়ে বড়সড় প্ল্যান আছে। প্রথম বইয়ে প্রোটাগনিস্টের ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট পরের বইগুলোতে তার কাজকর্মের দিকনির্দেশনা দিবে। সেটা যেমন লেখকের জন্য সুবিধার তেমনই পাঠকের বুঝার জন্য ভালো যে সিরিজের পরবর্তী বইটি আমি পড়বো কি না। বইয়ের আরেকটা উল্লেখযোগ্য দিক হলো নতুন নতুন গড়ে উঠা বোম্বে, বর্তমানের মুম্বাই। ঘোড়ায় টানা টাঙ্গা থেকে ধীরে ধীরে মোটর চালিত গাড়ির দিকে আগানো কিংবা ভিক্টোরিয়ান স্টাইলের বাড়ি থেকে আধুনিক ডিজাইনের বাড়ি বানানো সবকিছুতেই বোম্বের আধুনিক হওয়ার ছাপ রয়েছে। লেখিকা খুটিনাটি বর্ণনা করেছেন যেনো পাঠক বুঝতে পারে ঐ সময়টায় কিভাবে ভারতবর্ষ পরিবর্তিত হচ্ছিলো। একই সাথে পরদেশে ইংরেজদের দাম্ভিকতাও ছোট ছোট দু'এক লাইনের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন। অনুবাদ কেমন ছিলো? এক কথায় উত্তর দেয়া কঠিন। এ ধরনের বই অনুবাদ করা সহজ না। মাঝেমাঝে খাপছাড়া লাগছিলো। তখন ভাবছিলাম আমি কিভাবে অনুবাদ করতাম এই বাক্যটা? তখন আবার মনে হচ্ছিলো অনুবাদ ঠিকই আছে। বেশ কয়েকবার এমন হবার পর মনে হয়েছে অনুবাদক বেশ ভালো কাজ করেছেন। সেকেলে ভারতের গাম্ভীর্য যেমন বজায় রেখেছেন তেমনই তখনকার দিনের পুরুষের প্রতি নারীদের অতিরিক্ত সম্মানের ভাবটা জুড়ে ছিলো পুরো বইয়েই। বানান ভুল ছিলো। তবে পড়তে কোনো সমস্যা হয়নি। বাঁধাই, ছাপা, কাগজ সবই স্ট্যান্ডার্ড। প্রচ্ছদ ডিসেন্ট। এখন কেউ প্রচ্ছদ করলে আরো সুন্দর হতো। তখনো মেবি প্রচ্ছদ এস্থেটিক করার ট্রেন্ডটা আসেনি। মার্ডার মিস্ট্রি হিসাবে হয়তো বইটি হয়তো এভারেজের কাতারেই পড়বে। তবে কোনো জনরা হিসেব না করলে পড়লে এটা একটা মাস্টারপিস। একটা বই যা দীর্ঘদিন মনে থাকবে। আ বুক টু রিমেম্বার… বইয়ের একটা লাইন আমার খুব মনে গেঁথেছে। পারভীন বান্ধবী অ্যালিস পারভীনকে ওর বিয়ে করতে বাধ্য করার আশঙ্কার কথা বলছিলো। তখন পারভীনের উত্তর ছিলো -" এটা ১৯২১ সাল। তুমি না চাইলে কেউ তোমাকে বাধ্য করতে পারবেনা বিয়ে করতে।" এই লাইনটা পড়ে আমার হাসি-কান্না একই সাথে এসেছে। হাসি কারণ লেখিকার সেন্স অফ হিউমার স্ট্রং। আর কান্না কারণ আজ একশো বছর পরে এসেও আমরা মেয়েদের একই কথা বলি। নারী স্বাধীনতা দূরের মরীচিকা… অনেক কথা বললাম। শেষ করছি তসলিমা নাসরীনের কবিতার ক'টা লাইন দিয়ে… শুকোতে দাও স্যাঁতস্যাঁতে এ জীবন রোদের পিঠে, আলোর বিষম বন্যা হচ্ছে দেখ, নাচছে ঘন বন… সঙ্গে সুখী হরিণ। ও মেয়ে হাসো, নিজের দিকে দু’চোখ দাও, নিজেকে ভালোবাসো।
Was this review helpful to you?
or
সন ১৯২১। এক অন্য সময় এক অন্য জগৎ। ভারত শাসনে ইংরেজরা যখন বিস্তার করেছিল বটবৃক্ষের শিকড় ছড়িয়ে। ভারতীয় নারী শিক্ষা নারী শক্তি তখন নাই বললেই ঠিক হবে। এমন সময় বোম্বের এক মিস্ত্রি বংশে জন্ম নিল এক মেয়ে যার বাবা তার পূর্বপুরুষ এর পরম্পার বাইরে গিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক সফক আইনজীবী হিসেবে। তার স্বপ্ন তার মেয়ে, "পারভীন মিস্ত্রি" হবেন ভারতের প্রথম মহিলা আইনজীবী। উপন্যাসটি একটি থৃলার উপন্যাস মিস্ত্রি পারভীন তার প্রথম মোকদ্দমা পান তিনজন বিধবার উইলকৃত সম্পদ বন্টনের। পর্দানশিন এই মুসলিম বিধবাদের ধোকার শিকার হতে হচ্ছিল হাউজহোল্ড এজেন্ট মুকরি সম্বোধনে যাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন তাদের স্বামী ফরিদ সাহেব। পারভীন যখন জানতে পারেন তারা তাদের সম্পদ পারিবারিক ওয়াকাফ যা কিনা দাতব্য সংঠন সেনাদের বস্ত্র ও চিকিৎসা খাতে দানের জন্যে গঠিত। বিনিময়ে তারা মিল হতে আগত মুনাফা আর বাংলোতে দিনানিপাতের সুযোগ পাবেন। সেই ওয়াকাফ এর বিকল্পে মাদ্রাসার নামে টাকা আর সম্পদের আত্মসাৎ এর কথা ধরে ফেলেন পারভীন। আর তারই প্রেক্ষিতে ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত এক হত্যা। যার উদঘাটনে অতলে তলিয়ে যান পারভীন মিস্ত্রি। লেখিকা প্রতিটি পাতায় আপনাকে নিয়ে যাবে সেই রহস্যময় বাড়ীর বিশাল করিডরে যেখানে প্রতিটি দেয়ালে হয়ত লুকিয়ে আছে খুনের রহস্য। আরো আছে নারী শক্তির অনবদ্য এক দিক৷ আছে কুসংস্কার আর প্রথার নামে নারীদের উপর চালান নিপীড়ন আর শোক গাথা। প্রেক্ষাপট পুরোনো কিন্তু এখনো এপার ওপার দুই বাংলায় আজো ঘটে যাচ্ছে শত বছর পুরোনো এই ঘৃন্য বাতস্তবতা। এলিফ শাফাকের পর আরেকজন মহিয়সিকে পেলাম সুজাতা ম্যাসি, ধন্যবাদ আশিকুর রহমান ভাইকে তার সাবলীল ভাষায় চমৎকার লেখাটি আমাদের উপহার দেবার জন্যে। অনেক শুভ কামনা রইল তবু এর মাঝে লেখিকা ফুটিয়ে তুলেছেন, ভালোবাসা স্বপ্ন আর নতুন জীবনের দীপ্ত আভা। শেষ লাইনের আগের লাইনের কথাটা দিয়ে শেষ করলাম, "নারী শক্তির উদ্দেশ্যে"