User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বই: ঘরে ফেরা সোজা নয় ( কাব্যগ্রন্থ) কবি: আসাদ চৌধুরী প্রকাশক: মিজান পাবলিশার্স প্রচ্ছদ: ফেরদৌস খান গায়ের মূল্য: ৬০ টাকা . কবি আসাদ চৌধুরী সম্পর্কে চুম্বক আলোচনা: . সহজ ও সরলভাষ্যের কবি আসাদ চৌধুরীকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো দুঃসাহস আমার নেই। তিনি ‘তবক দেওয়া পান’ এর কবি। তাঁর নামটি উচ্চারণ করতেই চোখের সম্মুখে সদা ভেসে উঠে সুন্দরে পরিস্রু তাঁর সাদা দাড়ি ও চুল সমেত হাসোজ্জ্বল মুখটি। তিনি এক সদালাপি ও মিষ্টভাষী। সেই সাথে মারুত সমুদ্রে অনুরণিত হয় [তখন সত্যি মানুষ ছিলাম] কবিতাটির বিশেষ পঙক্তিগুলো ‘ নদীর জলে আগুন ছিল/ আগুন ছিল বৃষ্টিতে/ আগুন ছিল বীরাঙ্গনার/ উদাস করা দৃষ্টিতে।’ . ‘ঘরে ফেরা সোজা নয়’ কাব্যগ্রন্থের পাঠ আলোচনা: . কবিতা কবির নিরীক্ষিত জীবনের অনুগামী। সহজ, সরল পঙক্তিতে জীবনবোধ থেকে অকপটে ফুটিয়ে তুলেন গভীর ব্যঞ্জনা। কবিতার ভাব, ভাষা, শিল্পবোধ ও মননশীলতা যখন প্রাঞ্জলতা পায়। চিন্তনে থাকে সুস্পষ্ট কল্পচিত্র। আর সেই চিত্রটি কথামালায় ফুটিয়ে তোলার নিপুণ দক্ষতা কবিকে করে আরোও ঋদ্ধ। আলাওল সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত: ‘ঘরে ফেরা সোজা নয়’ কাব্যগ্রন্থটিতে কবি আসাদ চৌধুরী’র কবিতা পেয়েছে তেমন ঋদ্ধতার সংস্পর্শ। পঁতাল্লিশটি কবিতায় সুসজ্জিত হয়েছে তাঁর ‘ঘরে ফেরা সোজা নয়’ কাব্যগ্রন্থটি। কবিতার শিরোনামেও রয়েছে সহজ ও সরলতার নান্দনিক শিল্প প্রয়াস। পাঠকৃত কয়েকটি কবিতার শিরোনাম তুলে ধরছি: ‘ঘরে ফেরা সোজা নয়’, ‘সময় বসেছে গোড়ালির পাশে’, ‘স্মৃতি আর স্বপ্ন ছড়িয়ে দিলেন’, ‘প্রাণপাখি করে আইটাই’, ‘সর্বত্র সংযম, শুধু’, ‘ শহীদ হবার করেছি ভান’, ‘ বিস্ময়’, ‘এই গল্প বেঁচে রবে চিরকাল’, ‘অবসরের গান’, ‘গানের পাখি, বর্ণমালা’, ‘মজহারের উদ্দেশে’, ‘তোমার জানালায়’, ‘মেঘের, চাঁদের ব্যবহার’, ‘গোলাপেরা কার সাথে প্রেম করে?’, ‘সাবেকি পদ্য’, ‘দুঃখ, তোমার বয়েস কতো হলো?’, ‘কণ্ঠে যার বিষণ্নতা, কাঁপানো যৌবন’, ‘ পথ ভুলে, ভুল পথে চলে’ , ‘নবী দিবসের একটি বিকেলের ঘটনা’ এবং ‘ তুমিই তো দেখে আসছ আমাকে’ প্রভৃতি। . এবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করি ‘ঘরে ফেরা সোজা নয়’ কাব্যে কবির নিজস্ব অভিব্যক্তি, শিল্পবোধ ও বাক্য বিন্যাস। আর কথার জাদুতে কিভাবে বিমোহিত করেছেন। বাংলা ও খাঁটি বাংলা শব্দের পাশাপাশি আরবরি, ফারসি, ইংরেজি শব্দ ব্যবহারের দক্ষতা কবিতাকে করেছে ঋদ্ধ। কবিতায় টেনে এনেছেন ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে। সেই সাথে দৃশ্যত করেছেন আবহমান বাংলার বৈচিত্র্যময় দৃশ্য। কবি মানস শব্দের মাধুরী দিয়ে টেনে এনেছেন কিছু কবি ও কবিতার দৃশ্যাবলি। সব সুন্দর ও মহৎ দৃষ্টিপ্রিয় হয়ে উঠেছে কবির আরাধ্য কবিতার পঙক্তিমালায়। . জলে, স্থলে ও অন্তরীক্ষে যাঁর অপার করুণা অবাধে বিছানো কৃতজ্ঞতা শব্দটি কেবল তাঁর জন্য। নিঃশ্বাসে বিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি অবলোকন করার প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিজেকে করে বিনম্র। যখন বিনয়বোধ থেকে একাগ্র হৃদয়ে প্রবল শ্রদ্ধাবোধ ও ভক্তি সৃষ্টি হয়। তখন শব্দ প্রয়োগের নিপুণ দক্ষতায় প্রগাঢ় বিশ্বাসে - কৃতজ্ঞতায় কবিতার পঙক্তিমালায় অনুরণিত হয়। ‘ তোমার কৃপা আর অনুগ্রহ প্রফুল্ল শস্যক্ষেত্রে অবাধ বিছানো মাটির অন্তরে, জলে, অন্তরীক্ষে সবখানে পাতা- কৃতজ্ঞতা শব্দটি তোমার জন্যই ধুয়ে মুছে রেখেছি।’ [তুমিই তো দেখে আসছ আমাকে] . অবিরাম বহমান স্রোতস্বিনীর মতো এগিয়ে চলছে সময়। তার গতি নিজেকে খাপখাওয়ানোর মধ্যেই যাপিত জীবন স্পষ্ট হয়ে উঠে। কখনো হিসেবের খেরোখাতায় সমুজ্জ্বল হয়ে উঠে জীবন। কখনো বা মলিন। কখনো একাকিত্বে বিমর্ষকাতরাতা স্থবির করে দেয় সময়। অবসর হলেই স্মৃতিচারিত হৃদয়ে- সময় ভাবতে শেখায়। যদিও কবিদের অভিধানে অবসর শব্দটি আজও ঠাঁই নেই। ‘বার্ধক্যের ছুটে চলা নেই, গালে হাত দিয়ে ভাবা নিপুণ মেধাবী বেলা যে গড়ায় হায়, সময়ের থাবা।’ [সময় বসেছে গোড়ালির পাশে] . কবি আসাদ চৌধুরীর কবিতায় রয়েছে বোধ ও বিশ্বাসের জাগরণ। শুদ্ধতার চর্চায় জীবন ও জীবনের উপাদান স্বচ্ছ দর্পণে প্রতিবিম্ব ঘটানোর জন্য কবি কবিতাকে প্রথমত বেছে নিয়েছেন। এ রকম এক দুঃসাহসিক অভিযাত্রী কবিতা পাঠে ও পঠনে হৃদয় হবে পরিস্রুত। বিশ্বাসীদের বুকে জাগাবে স্বপ্ন ও ভেসে উঠবে সুন্দরের প্রতীমা। সময়ের প্রতিনিধিত্বকারী কবির এই কবিতাগুলো শুধু রূপবৈচিত্রে বিমোহিত করবে না পাঠকদের হৃদয়। সেই সাথে হৃদয় ছুঁয়ে যাবে কবির আরাধ্য কবিতার পঙক্তিমালা। . লেখক: আহমেদ ইউসুফ