User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#পল্লীসমাজ_শরৎচন্দ্র_চট্টোপাধ্যায় - প্রধান চরিত্র (রমা, রমেশ, বেনী ও মা বিশ্বেশ্বরী) ছোট বেলায় স্কুলে যখন রচনা লিখিতাম অনেক সময় লিখিতে হইতো মানুষ সামাজিক জীব, কোন মানুষ একা বাস করিতে পাড়েনা তাই সমাজ কে লইয়াই মানুষের জীবন অতিবাহিত হয়। তখন ইহার মানে বোধগম্য ছিলো না শুধু মুখস্ত পড়িয়া এবং লিখিয়া যাইতাম। কিন্তু সময়ের সংজ্ঞে সেই সমাজ, সেই জীবন কে উপলব্ধি করিতে শিখিতেছি। যাই হোক শরৎ বাবুর ভাবনা হইতে একটু ঘুরিয়া আসি। বইখানি পড়িতে শুরু করিলে পাঠকগন হয়তো নাম করনের স্বার্থকতা খুজিতে চাহিবেন (আমি চাহিয়াছিলাম)। কিন্তু সমস্ত বই শেষ করিলে এই ধারনা পরিষ্কার হইয়া যাইবে। লেখক এইখানে এমন এক সমাজ কে উপস্থাপন করিয়াছেন যাহা কেবল কলহ, বিবাদ, অহংকার ইত্যাদি দ্বারা পরিপুর্ন। কিন্তু ইহার মধ্যেও রহিয়াছে অগাধ ভালোবাসা (শরৎ বলিয়া কথা)। একজন নারীকে কত মোহনিয় ভাবে তুলিয়া ধরা যায় তাহা শরৎ পড়িলেই বুঝিতে পারা যায়। ভালোবাসায় সিক্ত মানুষের কাছেই হয়তো অন্যমানুষটির ত্রুটি-বিচ্যুতি ভালোবাসার চাদরের তলায় আড়াল হইয়া যায়। কিন্তু সেই ভালোবাসায় কি কখনো ঘুন ধরিতে পাড়ে? সেই ভালোবাসার ভয়াবহতা কি একে অপরের সহিত চির শত্রুতায় পরিনীত করিতে পারে? সমাজ দ্বারা প্রভাবিত হইয়া ভালোবাসার মানুষটিকে গ্রহন করিয়া লওয়া উচিত নাকি ত্যাগ করিয়া দেওয়া উচিত? লেখক তাহার এই লেখনির দ্বারা এই ঘৃণ্য সমাজের প্রতি নিরব প্রতিবাদ করিয়া গিয়াছেন। আমাদের শিক্ষিত সমাজ কেহ বুঝিতে পারে আবার কেহ বুঝিতে পাড়িয়াও নিছক গল্প বলিয়া উরাইয়া দেয়। ততকালিন সময়ের চাইতে আমাদের অগ্রগতি বিস্তর বৃদ্ধি পাইয়াছে ঠিকই কিন্তু আমাদের সমাজ ব্যাবস্থার অবনতি ব্যাতিত উন্নতি সাধন হয় নাই। উপলব্ধিঃ একজন মানুষ ভুমিষ্ট হইবার পরই কেবল জানিতে পারে সে মুসলমান নাকি হিন্দু, কুলিন ব্রাম্মন নাকি নমশুদ্দুর, ধনী নাকি গরিব। ইহার সমস্ত কিছুই মনুষ্য সৃষ্ট। পরম ঈশ্বরের কাছে সকলেইতো এক। ঈশ্বর কাছে যদি সকলেই এক হন তাহা হইলে আমরা কেন পারছিনা এক হইতে? কেন পারছিনা পরের সন্তান কে আপন করিয়া বুকে টানিয়া লইতে? কেন পারছিনা পর্যাপ্ত থাকিবার পরেও খুধার্থের মুখে অন্য তুলিয়া দিতে? কেন? এই বিভেদ কেবল একদল মানুষের স্বার্থ উদ্ধার করিবার জন্য তৈরি করিয়া রাখিয়াছে। যাচিয়া কাহারো উপকার করিতে গেলে তাহাকে সমাজ আর চোখে দেখে। সমাজের মাথা হইয়া যাহারা বসিয়া রহিয়াছে তাহাদের দ্বারাই সমাজের ক্ষতি সাধন হইতেছে। ইহা হয়তো মানুষ কখনোই বুঝিবেনা আবার কেহ বুঝাইতে গেলে তাহাকে সমাজ থেকে বিতারিত করা হইবে। এই ভাবেই হয়তো সমাজ চলিতে থাকিবে। পরিবর্তন হয়তো দেখিতে পারিবোনা তবে বই পড়িবার পর নিজ যায়গা হইতে পরিবর্তন হইলেই তো বই পড়া স্বার্থক। ভালোবাসার কথা আর কি বলিবো - যাহাকে ভালোবাসা যায় তাহার সংগে কলহ হইলে তাহার চেয়ে বড় শত্রু এই পৃথিবীতে আর কেহ হইতে পারেনা (চারিপাশে তাকাইলেই বুঝিতে পারিবেন)। এ শিক্ষাই সমাজ আমাদের দেয়। তবে এ কথা জোর দিয়া বলিতে পাড়ি সত্যিকারের ভালোবাসার বন্ধনে যদি কেহ বাধা পরে সেই ভালোবাসা হইলো জন্ম-জন্মান্তরের। সেই প্রেমের আদি নাই অন্ত নাই, সেই প্রেমে কলঙ্কীত হইবার ভয় নাই। সমাজ তাহাকে গ্রহন করুক আর নাই করুক সেই প্রেম "অমর"। শরৎ বানীঃ ১. যে যেখানে যন্মেছে সেই তার ভালো। ২. সমাজ যাইহোক তাকে মান্য করতেই হবে। নইলে তার ভালো করবার মন্দ করবার কোন শক্তিই থাকেনা-এ রকম হলে কোনমতে চলতে পাড়েনা। ৩. যাহারা এতই সঙ্কীর্ণ ভাবে স্বার্থপর যে, যথার্থ মঙ্গল কোথায় তাহা চোখ মেলিয়া দেখিতেই জানেনা। শিক্ষার অভাবে যাহারা এমনি অন্ধ যে, কোনমতে প্রতিবেশীরর বলক্ষয় করাটাকেই নিজেদের বল সঞ্চয়ের শ্রেষ্ঠ উপায় বলিয়া মনে করে, যাহাদের ভালো করিতে গেলে সংশয়ে কণ্টকীত হইয়া উঠে, তাহাদের উপর অভিমান করার মত ভ্রম আর ত কিছুই হইতে পারেনা। ৪.পরের কাজে আলস্য করলে ভগবানের কাছে জবাব দিহিতে পরিতে হয়। নিজের কাজেও হয়তো হয়। কিন্তু নিশ্চয় অত নয়। ৫. পৃথিবীতে ভালো করার ভার যে নিজের উপর নিয়েছে চিরদিনই তার শত্রুর সংখ্যা বেড়ে উঠেছে। ৬.যারা অধর্ম কে ভয় করেনা, লজ্জার ভয় যাদের নেই, প্রানের ভয়টা যদিনা তাদের তেমনি বেশি থাকে, তাহলে সংসার ছারখার হয়ে যায়। বিঃ দ্রঃ যাহারা শিক্ষিত বলিয়া নিজেদের দাবি করিয়া আপন সত্ত্বা কে বিসর্জন দিয়াছে বই খানি তাহাদের জন্যই। সমাজ কে খাটো করিয়া দেখা আমার উদ্দেশ্য নহে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে চোখে আঙুল দিয়া দেখাইয়া দেবার পর না দেখিয়াও আর উপায় নাই। বাকিটা বই খানা পড়িয়া বুঝিয়া লইবেন।