User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
জাযাকাল্লাহু খায়রান جَزَاكَ ٱللَّٰهُ خَيْرًا
Was this review helpful to you?
or
excellent for everything
Was this review helpful to you?
or
great work on both trade
Was this review helpful to you?
or
balo
Was this review helpful to you?
or
.
Was this review helpful to you?
or
শরীর খারাপ হলে, যেমন আলসার কিংবা কোন ধরনের অপারেশনের পরে, আমাদের বলা হয় মসলা ছাড়া খাবার খেতে। আমরা অনেকেই তা পারিনা, আবার অনেককে দেখেছি বেশি মসলা দেয়া খাবার খায় না।এই যে ধরুন, গোলমরিচ, আমরা প্রতিদিন কতটুকু ব্যবহার করি? খুব কম, হয়তো কেউ ব্যবহার করিও না। কিন্তু এমন এক সময় ছিল যখন এই গোলমরিচের জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। অবাক লাগছে? আশচর্য হলেও সত্য। লেখকের মতে মণি-মুক্তার চাইতেও দামী ছিল গোলমরিচ।১৪৮৮ সালে এদেশে আগমন ঘটল এক আরবের, যদিও দেখতে আরবের মত নয়। কিন্তু তাঁর ভাষা-পোশাক ছিল আরবদের মতই। তাই সহজেই মিশে গেলেন এদেশের আরবদের সঙ্গে।সালটা ১৪৯৭। ভারত বর্ষে এল ভাস্কো-দা-গামা, এক পর্তগীজ বণিক দলের অধিনায়ক।আসলে এমন অনেক তথ্য পেলাম, আমি জানতাম না।যেমন ভারত আর গ্রীসের সুসম্পর্ক বহু আগে থেকে ছিল, এমনকি আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের ও বহু আগে থেকে। একটা সময় এই সম্পর্কে ছেদ পড়ে। বাঙালিদের চাইতে তখন ইউরোপিয়ানদের মধ্যে মসলার প্রচলন বেশি। চড়া দামে মসলা বিক্রি করছে একদল।অন্যদিকে ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ হচ্ছে ইতালির ভেনিস। কীভাবে?ভাবুন তো মসলা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য ৭৫ বছর ধরে পরিকল্পনা চালাচ্ছে একদল মানুষ। কারা তাঁরা? কেন এই দীর্ঘ পরিকল্পনা? কী হল শেষমেশ?বইটা যতনা বাস্তব, তার চাইতে থ্রিলিং। এক এক পরিচ্ছদে এমন এমন কথা বার্তার মুখোমুখি হতে হয়েছে, যেটা থ্রিলার/সাস্পেন্স এর বইতে পাওয়া যায়। লেখক অনেক পরিশ্রম করে এই তথ্য জোগাড় করেছেন। যা প্রশংসনীয়। আমি বইটা পড়ে অবাক, আসলেই এরকম কিছু ঘটেছিল ধারনায় করিনি। ৭৫ বছর ধরে পরিকল্পনা করল মসলার জন্য। কীভাবে সম্ভব? লেখক এবং লেখা সার্থক। বইতে কেবল মসলা না ইতিহাসের এমন সব বিষয় আছে, যেটা বোধহয় আমি-আপনি জানতাম না।জানি মসলার অনেক ওষধি গুণ আছে, কিন্তু এর পেছনে যে রক্তক্ষরণ আছে সেটা কি আমরা জানতাম?
Was this review helpful to you?
or
Good Historical Books
Was this review helpful to you?
or
মসলার জন্য যুদ্ধ! হ্যাঁ, এখন রান্নায় যা রোজ চোখ বুজে ইচ্ছেমতো দিই, সেই মসলাই একসময় ছিল মণিমুক্তোর মত দামী। এর জন্য হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ; হিংস্র, বীভৎস যে যুদ্ধ! ইসলামের স্বর্ণযুগ তখনও। সালাউদ্দিন আইয়ুব খ্রিস্টানদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন জেরুজালেম। আরব সাগর মুসলিমদের দখলে। ভারতে কালিকট বন্দরে তখন চৈনিক, গুজরাটি আর আরব বণিকদের আনাগোনা।কিন্তু জলবানিজ্যে কেউ পেরে উঠে না আরবদের সাথে। এদিকে ক্রুসেডের পর খ্রিস্টান - মুসলমানদের সম্পর্ক মোটেই ভালো নয়। তাই আরব সাগর পেরিয়ে ভারতে এসে বানিজ্য করা সম্ভব ছিল না ইউরোপীয়দের পক্ষে। কালিকট রাজ্য সেসময় মসলা বানিজ্যের কেন্দ্র। ইন্দোনেশিয়া, মালয় এবং পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে দুষ্প্রাপ্য মসলা সব এসে জড়ো হতো এই বন্দরে, তারপর আরব বণিকরা মসলা নিয়ে বিক্রি করে ভেনিসে। সেখান থেকেই গোটা ইউরোপের মসলার চাহিদা মেটে। কিন্তু ইউরোপীয়রা তা মানবে কেন? শুরু হলো মসলার বাজার দখলের অভিযান! ভাবা যায়, এই মসলা না থাকলে রান্নার স্বাদ যেমন ফিকে থেকে যেত, তেমনি আমাদের উপমহাদেশেও নাক গলাতো না পর্তুগীজ, ডাচ বা ইংরেজরা। উপমহাদেশের ইতিহাস আমরা যা পড়েছি, তার অনেকটাই ইউরোপীয়দের শেখানো বুলি। নয়তো যে ভাস্কো দা গামাকে 'ভারত আবিষ্কারক' খেতাব দিয়ে নায়ক বানানো হয়, সে যে বর্বর এক পর্তুগীজ দস্যুপ্রায় কে জানত! এই ভাস্কো দা গামা আরব সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল, পুড়িয়ে মেরেছিল এক জাহাজ ভর্তি মুসলিম হজ্জযাত্রীদের। গোয়া দখলের পর অপর পর্তুগীজ অ্যালবুকার্ক গোয়ার রাস্তার প্রতিটি মুসলিমকে হত্যা করে, বাকিদের মসজিদে আটকে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে কি এই নৃশংস যুদ্ধ ধর্মের জন্য? তা নয়। এই সংঘর্ষ ছিল ব্যবসা আর রাজনৈতিক স্বার্থের। কিন্তু যেকোনো অমানবিক আচরণকে ধর্মের মোড়কে পেশ করলে তা যে নায্য হয়ে যায়! সেজন্যই খ্রিস্টানদের ধর্মনেতা পোপের আশীর্বাদ নিয়ে পর্তুগীজ রাজা ডোম হেনরি নিজেকে জলরাজ্যের অধিপতি দাবি করে বসলেন, ইতিহাসে যার স্থান হওয়া উচিত ছিল জলদস্যু রূপেই। রুখে দাঁড়িয়েছিল নিপীড়িতরাও। আরব, ভারতীয়, চৈনিকরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে কলোনিয়াল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। সাহায্য এসেছে মিশরের সুলতানের পক্ষ থেকে। কিন্তু মীরজাফররা জন্ম নিয়েছে সব যুগেই, তাই খোদ উপমহাদেশীয়দেরই বিশ্বাসঘাতকতায় স্বাধীনতা লুন্ঠিত হয়েছে ইউরোপীয়দের হাতে। ইতিহাস ভুলে গেছে মসলা-চাষীদের অধিকার আদায়ের জন্য করা রক্তাক্ত লড়াইয়ের আখ্যান। সত্যেন সেনের লেখা 'মসলার যুদ্ধ' বইটি ছোট্ট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ছোট নয়টি অধ্যায়ে রচিত বইটিতে সংক্ষিপ্ত আকারে তিনি সুবিন্যস্ত করেছেন উপমহাদেশের অব্যক্ত ইতিহাস।
Was this review helpful to you?
or
অনেক উপকৃত হলাম রেজিেস্ট্রশন করতে পেরে । শুক্রিয়া ঘরে বসেই পছন্দের বই গুলো কিনতে পারবো ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, গোলমরিচ, জায়ফল - আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য। তুর্কি-মোগলদের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে যে রন্ধনশৈলী আমরা পেয়েছি, এই মসলাগুলো ছাড়া সেই রন্ধনশৈলী এক প্রকার অচল বলা চলে। ভারতীয় রান্নায় মসলার ব্যবহার অবধারিত। মধ্য এশিয়া, আরব এবং তুরস্কেও মসলা খুবই জনপ্রিয় উপাদান। আমাদের মতো ব্যাপক হারে মসলা ব্যবহার না করলেও, ইউরোপের বিভিন্ন রান্না এবং মদ প্রস্তুতির কাজে মসলা ব্যবহার করা হয়। আজ থেকে প্রায় ৬ শতাব্দী আগে ইউরোপে মসলার ব্যবহার ছিল আরো ব্যাপক। শীতপ্রধান অঞ্চল হওয়ার কারণে বছরের একটা উল্লেখযোগ্য সময় তাদের বিস্বাদ নোনা মাংস খেয়ে কাটাতে হতো। নোনা মাংসে স্বাদ আনার জন্য মসলার কোনো বিকল্প ছিল না। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মসলা উৎপন্ন হতো প্রশান্ত মহাসাগরীয় ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। শ্রীলঙ্কা ও ভারতবর্ষেও প্রচুর মসলা উৎপন্ন হতো। এশিয়ায় উৎপন্ন সব মসলা এসে জড়ো হতো দক্ষিণ ভারতের কালিকট বন্দরে, সেখান থেকে আরবের বণিকদের মাধ্যমে আরব হয়ে ইতালির ভেনিসে পৌঁছাতো মসলা। ভেনিস থেকে মসলা কিনতে হতো অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিগুলোর। এভাবে ইন্দোনেশিয়া-ভারত-আরব-ভেনিস হয়ে ইউরোপে মসলা সরবরাহের কারণে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে মসলা কিনতে হতো ইউরোপীয়দের। এই অবস্থা উত্তরণের জন্য প্রয়োজন ছিল আরব বণিকদের থেকে মসলার একচেটিয়া বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নেয়া৷ ভ্যাটিকানের পোপের অনুমতি নিয়ে পর্তুগিজরা সর্বপ্রথম ভারতের কালিকট বন্দর আক্রমণ করে। তাদের আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল আরবদেরকে ভারত থেকে বিতাড়িত করে মসলা সরবরাহের সামুদ্রিক রুট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। কালিকটে হিন্দু-মুসলিম সম্মিলিত প্রতিরোধে পর্তুগিজরা ব্যর্থ হয়। কালিকটের রাজার সাহায্যে এগিয়ে আসেন মিসরের মামলুক সুলতানরা। পরাজিত হয়ে পিছু হটে পর্তুগিজ বাহিনী। তবে গুজরাটের শাসনকর্তার বিশ্বাসঘাতকতায় বিরক্ত হয়ে মিসরীয়রা ফিরে যাওয়ার পর দক্ষিণ ভারতে ঘাঁটি গেড়ে বসে পর্তুগিজরা। মসলা বাণিজ্যের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ তখন তাদের হাতে। আরব সাগর ও ভারত সাগরে ব্যাপক লুটপাট অব্যাহত রেখে মুসলিমদের কোণঠাসা করে ফেলে। মুসলিমদের বিরোধিতায় একজোট হয় ইউরোপীয়দের সাথে ভারতীয় হিন্দু রাজারাও। ফলে মসলার ব্যবসা করে ফুলেফেঁপে ওঠে ইউরোপ। অটোম্যান খলিফা সুলতান সুলেমান ভারতীয় মুসলিমদের সাহায্যে নৌবহর প্রেরণ করলেও সফল হতে পারেননি বর্বর ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে। একসময় ডাচরা মসলার গন্ধে ইন্দোনেশিয়া আক্রমণ করে। পর্তুগিজদের বিতাড়িত করে নিজেরা নিয়ন্ত্রণ নেয় প্রশান্ত মহাসাগরের। ইন্দোনেশিয়ান কৃষিজমির একচ্ছত্র মালিক হয়ে তারা শোষণ করতে থাকে সেখানকার মুসলিম চাষিদের। একসময় মসলার বদলে ইউরোপ জুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কফি। নীলকররা যেমন ভারতীয়দের নীল চাষে বাধ্য করত, তেমনি ডাচ বণিকরা কফি চাষে বাধ্য করতে লাগল ইন্দোনেশিয়ানদের। ক্রমাগত শোষণে ভেঙে পড়ে সমৃদ্ধ সালাতানাতের অর্থনীতি। দুই শতাব্দী ধরে চলা এই মসলার যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে ইংরেজদের হাতে, যখন তারা ডাচদের বিতাড়িত করে এই এলাকা থেকে। তবে ইংরেজদের ভারতবর্ষে আগমনের পর শুরু হয় শোষণের আরেক ইতিহাস। মসলার জন্য ইউরোপিয়ানদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে জন্ম নেয় সাম্রাজ্যবাদী চেতনা। ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর আর আরব সাগর জুড়ে জলদস্যুতার রাজত্ব কায়েম করে ইউরোপিয়ান ক্রুসেডাররা। তাদের বর্বরতা থেকে রক্ষা পায়নি এমনকি হজযাত্রীরাও। এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে মিসরের মামলুক এবং তুরস্কের অটোম্যানরাও। বাণিজ্যযুদ্ধ আর ধর্মযুদ্ধকে একাকার করে ফেলা ইতিহাস, মসলা নিয়ে রেষারেষির ইতিহাস। পড়তে পারেন সত্যেন সেনের মসলার যুদ্ধ। ইতিহাসের বই হলেও, অত্যন্ত সহজ ভাষায় লেখা বলে বিরক্তি ধরবে না এক রত্তিও। বই: মসলার যুদ্ধ লেখা: সত্যেন সেন পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৬৪ মুদ্রিত মূল্য: ১২৫ টাকা
Was this review helpful to you?
or
মসলার জন্য যুদ্ধ! হ্যাঁ, এখন রান্নায় যা রোজ চোখ বুজে ইচ্ছেমতো দিই, সেই মসলাই একসময় ছিল মণিমুক্তোর মত দামী। এর জন্য হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ; হিংস্র, বীভৎস যে যুদ্ধ! ইসলামের স্বর্ণযুগ তখনও। সালাউদ্দিন আইয়ুব খ্রিস্টানদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন জেরুজালেম। আরব সাগর মুসলিমদের দখলে। ভারতে কালিকট বন্দরে তখন চৈনিক, গুজরাটি আর আরব বণিকদের আনাগোনা।কিন্তু জলবানিজ্যে কেউ পেরে উঠে না আরবদের সাথে। এদিকে ক্রুসেডের পর খ্রিস্টান - মুসলমানদের সম্পর্ক মোটেই ভালো নয়। তাই আরব সাগর পেরিয়ে ভারতে এসে বানিজ্য করা সম্ভব ছিল না ইউরোপীয়দের পক্ষে। কালিকট রাজ্য সেসময় মসলা বানিজ্যের কেন্দ্র। ইন্দোনেশিয়া, মালয় এবং পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে দুষ্প্রাপ্য মসলা সব এসে জড়ো হয় এই বন্দরে, তারপর আরব বণিকরা মসলা নিয়ে বিক্রি করে ভেনিসে। সেখান থেকেই গোটা ইউরোপের মসলার চাহিদা মেটে। কিন্তু ইউরোপীয়রা তা মানবে কেন? শুরু হলো মসলার বাজার দখলের অভিযান! ভাবা যায়, এই মসলা না থাকলে রান্নার স্বাদ যেমন ফিকে থেকে যেত, তেমনি আমাদের উপমহাদেশেও নাক গলাতো না পর্তুগীজ, ডাচ বা ইংরেজরা। উপমহাদেশের ইতিহাস আমরা যা পড়েছি, তার অনেকটাই ইউরোপীয়দের শেখানো বুলি। নয়তো যে ভাস্কো দা গামাকে 'ভারত আবিষ্কারক' খেতাব দিয়ে নায়ক বানানো হয়, সে যে বর্বর এক পর্তুগীজ দস্যুপ্রায় কে জানত! এই ভাস্কো দা গামা আরব সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল, পুড়িয়ে মেরেছিল এক জাহাজ ভর্তি মুসলিম হজ্জযাত্রীদের। গোয়া দখলের পর অপর পর্তুগীজ অ্যালবুকার্ক গোয়ার রাস্তার প্রতিটি মুসলিমকে হত্যা করে, বাকিদের মসজিদে আটকে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে কি এই নৃশংস যুদ্ধ ধর্মের জন্য? তা নয়। এই সংঘর্ষ ছিল ব্যবসা আর রাজনৈতিক স্বার্থের। কিন্তু যেকোনো অমানবিক আচরণকে ধর্মের মোড়কে পেশ করলে তা যে নায্য হয়ে যায়! সেজন্যই খ্রিস্টানদের ধর্মনেতা পোপের আশীর্বাদ নিয়ে পর্তুগীজ রাজা ডোম হেনরি নিজেকে জলরাজ্যের অধিপতি দাবি করে বসলেন, ইতিহাসে যার স্থান হওয়া উচিত ছিল জলদস্যু রূপেই। রুখে দাঁড়িয়েছিল নিপীড়িতরাও। আরব, ভারতীয়, মালয়ি, চৈনিকরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে কলোনিয়াল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। সাহায্য এসেছে মিশরের সুলতানের পক্ষ থেকে। কিন্তু মীরজাফররা জন্ম নিয়েছে সব যুগেই, তাই খোদ উপমহাদেশীয়দেরই বিশ্বাসঘাতকতায় স্বাধীনতা লুন্ঠিত হয়েছে ইউরোপীয়দের হাতে। ইতিহাস ভুলে গেছে মসলা-চাষীদের অধিকার আদায়ের জন্য করা রক্তাক্ত লড়াইয়ের আখ্যান। সত্যেন সেনের লেখা 'মসলার যুদ্ধ' বইটি ছোট্ট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ছোট নয়টি অধ্যায়ে রচিত বইটিতে সংক্ষিপ্ত আকারে তিনি সুবিন্যস্ত করেছেন উপমহাদেশের অব্যক্ত ইতিহাস।
Was this review helpful to you?
or
ভারতীয় উপমহাদেশের খাবার খুবই বিখ্যাত । আর এর মূলে আছে বিভিন্ন প্রকারের মসলা। কিন্তু আমরা কি জানি যে এই মসলার জন্য যুদ্ধ হয়েছিল এই উপমহাদেশে। শুধু তাই নয় ইন্দোনেশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মসলা চাষ হতো , কিন্তু পর্তুগীজরা তাদেরকে বাধ্য করে কফি চাষে। ব্রিটিশদের মতো তারাও কফির সঠিক মূল্য দিত না। যাই হোক, পর্তুগীজরা নিজেদের সমুদ্রের অধিপতি মনে করত। পর্তুগীজ বণিকদল কালিকট বন্দরে ব্যাবসার জন্য আসে, সে দলের নেতা ছিলেন ভাস্কো দ্য গামা। ইউরোপীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম আফ্রিকা মহাদেশ প্রদক্ষিণ করে ভারতবর্ষে এসেছিলেন।পর্তুগীজের দুই রকমের জাহাজ ছিল । একটি ক্যারাভেল অন্যটি গ্যালিওন। গ্যালিওন ভারী এবং ধীরগতিসম্পন্ন। মূলত যুদ্ধের কামান বয়ে নিয়ে যায় এই জাহাজগুলো। পর্তুগীজরা কালিকট বন্দরে এসে যুদ্ধ ঘোষণা করে। কালিকট বন্দরের মানুষ নিরস্ত্র। আর পর্তুগীজদের ভারী কামান। কিন্তু পরিশেষে কি হয়! জানা যাবে বইটি পড়লে। ভাস্কো দ্য গামা সেদিনই পরিচয় পেলেন ভারতীয় উপমহাদেশের হার না মানা মানুষ সম্পর্কে। ১৫০৯ সাল থেকে ১৫৯৯ সাল পর্যন্ত দুর্দম প্রতিরোধের ইতিহাস বর্ণিত রয়েছে বইটিতে। আর ইন্দোনেশিয়ার পতনের জন্য তার নিজের মানুষই দায়ী। তাদের সম্পদ তাদের অভিশাপ হয়ে দাড়িয়েছে- আপনা মাংসে হরিনা বৈরী।
Was this review helpful to you?
or
আমাদের দৈনন্দিন খাবারে যেই বস্তুটা না হলে চলে না, তা হলো মসলা। মসলার মত একটা জিনিসকে নিয়ে কত তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যেতে পারে তা হয়ত জানা হতো না সত্যেন সেনের "মসলার যুদ্ধ" না পড়লে। বইটিতে যে সময়ের কথা বলা হয়েছে তখন দক্ষিণ ভারতের একটি উন্নত বন্দর কালিকট। মূলত মসলার জন্যই বিখ্যাত কালিকট বন্দর। চারিদিক থেকে শত শত জাহাজ আসছে প্রতিনিয়ত। কালিকট বন্দরের বিশ্রামের সুযোগ নেই। কয়েক শতাব্দি পর্যন্ত কালিকট মসলার বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ছিলো। মসলার বাজার সারা বিশ্বব্যাপি থাকলেও সে সময় ইউরোপ ছিলো মসলার সবচেয়ে বড় বাজার। ইউরোপে ছিলো মসলার প্রচুর চাহিদা। আবার এই মসলার বাণিজ্যে আরব বণিকদের অধিপত্য ছিলো সবচেয়ে বেশি। তাদের সাথে কোনো দেশের বণিকেরাই পেরে উঠতো না। মসলার এই বাণিজ্যে একক আধিপত্য বিস্তারের স্বপ্ন ছিলো পোর্তুগালের। তারা কিভাবে তাদের স্বপ্নের দিকে অগ্রসর হলো সেটা নাহয় বইটা পড়েই জেনে নিবেন। পোর্তুগীজদের পরে ওলন্দাজ। তাদেরও পরে ইংরেজরা এদেশে আসলো মসলার বাণিজ্য করতে। একদিকে উপনিবেশ স্থাপন ও সম্রাজ্য বিস্তার, কুৎসিত লোভ ও বর্বর অন্যায়, মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণের ঔপনিবেশিক প্রচেষ্টা; অন্যদিকে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম, দেশীয় শক্তি ও সম্পদ বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা, বেচে থাকার প্রয়াস। "মসলার যুদ্ধ" তারই ইতিবৃত্ত। বর্তমানে ইতিহাস পশ্চিমা বিশ্ব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বিধায় অনেক ইতিহাস আমাদের কাছে ভিন্ন রূপে আসে। ছোটবেলা থেকে জেনে আসা ভাস্কর দ্য গামার মত বিখ্যাত মানুষ কতটা নিষ্ঠুর ও হিংস্র ছিলেন সেটা লেখক চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সেই সাথে নিজেদের সভ্য দাবি বরা অসভ্য জাতিগুলোর স্বরূপ জানিয়েছেন। সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, এত ছোট একটা বইতে এত বিস্তারিত তথ্য দেওয়া। এই বইটা অন্য কোনো লেখকের লেখা হলে হয়ত অনায়াসে ২৫০/৩০০ পৃষ্ঠা হতে পারত। সত্যেন সেন মাত্র ৬৪ পৃষ্ঠায় যা বলে গেছেন তা আমাকে মুগ্ধ করে রাখবে অনেকদিন। জন্মদিন উপহার পাওয়া বইটি দিয়েই আমার বছর শুরু হলো। আশা করি নতুন বছর এমন অসাধারন বই নিয়ে কাটিয়ে দিতে পারবো।