User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
সমরেশ মজুমদারের লেখা ‘এত রক্ত কেন’ উপন্যাসের শুরু হয় ভারতের আগরতলায়, কিন্তু একপর্যায়ে কাহিনি ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশেও। ২০০১ সালের পটভূমিতে আবর্তিত হয়েছে কাহিনি, যখন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ত্রিপুরা রাজ্যকে ভারত সরকারের থেকে স্বাধীন করতে কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠি সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে বাঙালি ও ত্রিপুরাবাসীদের মধ্যে বিভেদ আরও জোরালো করে তোলে। এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের কবলে পড়েই অপহৃত হয় সাংবাদিক বাসুদেবের শ্যালক সৌমিত্র। ‘টাইগার’ নামক যে জঙ্গিগোষ্ঠি সৌমিত্রকে অপহরণ করে তারা ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু টাকা দিলেও যে সৌমিত্র জান নিয়ে ফিরে আসতে পারবে, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তাই দুঃসাহসী ও গোঁয়ার সাংবাদিক বাসুদেব একার উদ্যোগে ঝাপিয়ে পড়ে শ্যালককে উদ্ধারের মিশনে। তদন্তের একপর্যায়ে সে জানতে পারে, টাইগার নামক জঙ্গিগোষ্ঠি অবস্থান করছে বাংলাদেশে। বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে যায় বাসুদেব। সে জানতে পারে, চলমান সন্ত্রাসবাদে টাইগারদের সাহায্য করছে বিডিআর ও বিএসএফের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং টাইগারদের সাথে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের কিছু মানুষও নিজ দেশের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতায় অবতীর্ণ হচ্ছে। এ কথা বাসুদেব বাংলাদেশের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে জানালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যারা তারাও লড়াইয়ে নামে তাদের দেশ থেকে দেশদ্রোহী রাজাকার আর ভারতীয় জঙ্গিদের উৎখাত করতে। এ কাহিনির মাধ্যমে লেখক মূলত বলতে চেয়েছেন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান জাতিগত বিভেদের কথা। এ উপন্যাসের বাড়তি সংযোজন কাহিনির একটি বড় অংশ বাংলাদেশের মাটিতে সংগঠিত হওয়া। নিজ দেশকে বিরুদ্ধ শক্তির হাত থেকে বাঁচাতে মুক্তিযোদ্ধারা কীভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে, সেটাও লেখক আসলে তুলে ধরেছেন ভারতীয়দের একইভাবে ঐক্যবদ্ধ করতেই। নিজের ব্যক্তিগত পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে গেলে প্রথমে বলবো যে, এ উপন্যাসটি একটি রাজনৈতিক থ্রিলার উপন্যাস। যা সমরেশ মজুমদারকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। ভারতের ভৌগলিকতা বিষয়ে যে রাজনৈতিক সমস্যা, সেটা বেশ সাহসিকতার সাথে লেখক এ উপন্যাসে তুলে ধরেছেন। উপন্যাসের অনেকটা জায়গা জুড়ে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধারা। যদিও লেখক ত্রিপুরার রাজনৈতিক চিত্রকে তুলে ধরেছেন, তবুও ভারতে যে এই সমস্যাটি ক্রমে বেড়ে চলছে তার বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছেন এবং সমস্যাটি সমাধান করতে গিয়ে যে সেটা আরো গুলিয়ে যাচ্ছে, তারও আভাস দিয়েছেন। উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠাগুলো থ্রিলারপ্রেমীদের জন্য অসম্ভব ভালো লাগবে। শুরু করলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে তারা ডুবে থাকবে। পড়ার মাঝে মনে হবে, বাসুদেবের সাথে পাঠকও চলছে রোমাঞ্চ আর ভীতিকর অবস্থার মধ্য দিয়ে। সমরেশ মজুমদারের ভয়াবহ লোমর্ষক এ উপন্যাসটি যে পড়েনি, সে আনন্দ ও পরিতৃপ্তির অনুভূতি নিয়ে জলদ উপন্যাসটি পড়ে ফেলুন।
Was this review helpful to you?
or
কৈলাস নগরে ভালো কলেজ থাকতেও, অজয় জেদ করেই আগরতলার মহারাজা স্থাপিত কলেজে ভর্তি হয়। বাবার সায় না থাকলেও অজয় এর মামার আদেশে তিনি বাধ্য হন।'অজয় দেববর্মা' ত্রিপুরা উপজাতি। আগরতলায় যাওয়ার প্রথম দিনেই অজয় হোস্টেলের বাঙালি ছেলেদের দ্বারা নির্যাতিত হয়। এটা মূলত ভারতীয় বাঙালি এবং ত্রিপুরার উপজাতিদের মধ্যকার বিভেদ এবং বৈষম্য থেকে সৃষ্ট। ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরার রাজা 'বীর বিক্রমমানিক্য' এর মৃত্যুর পর ভাবী রাজা 'কীরাট বিক্রমমানিক্য' নাবালক ছিলেন। আর তাই ভারতবর্ষের সাথে ত্রিপুরার অন্তর্ভুক্তি রানী মেনে নিতে বাধ্য হয়। তবে এখন পর্যন্ত ত্রিপুরার উপজাতিরা এটা মেনে নিতে পারে না।আর তাই, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে সন্ত্রাসবাদ সীমা অতিক্রম করতে থাকে। ত্রিপুরা রাজ্যকে ভারত সরকারের থেকে বিচ্ছিন্ন ও স্বাধীন করতে, কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠি সন্ত্রাসবাদের শুরু করে। আর তাদের অস্রশস্র এর নিদৃষ্ট জোগান এবং অর্থ না থাকায়, তারা তা রোজগার করতে সহজ পথ টাই অনুসরন করে। এর মাধ্যমে বাঙালি ও ত্রিপুরাবাসীদের মধ্যে বিভেদকে আরও জোরালো হয়ে উঠে। আর এই সন্ত্রাসিদের কবলে পড়েই অপহৃত হয়, সাংবাদিক 'বাসুদেবের' শ্যালক ডাক্তার 'সৌমিত্র'। এবং অপহৃত কারীরা ২৫ লাখ টাকা মৃত্যুপণ দাবী করে। তাকে অপহৃত করে টাইগার নামক এক জঙ্গিগোষ্ঠী। এত টাকা দেওয়া সৌমিক এর পরিবার এর পক্ষে সম্ভব ছিল না। কেন না, তার বাবা একজন সৎ পুলিশ অফিসার ছিলেন এবং সম্প্রতি তিনি অবসর নিয়েছেন।আর তাই সৌমিত্র কে উদ্ধার করতে দুঃসাহসী সাংবাদিক বাসুদেব বুদ্ধি ও কৌশলে একাই এগিয়ে যান।সে জানতে পারে টাইগারদের সাহায্য করছে বিডিআর ও বিএসএফ এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এবং টাইগারদের সাথে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের কিছু স্বার্থন্বেষী মানুষ। 'এত রক্ত কেন' এটা মুলত পলিটিকাল থ্রিলার উপন্যাস। এই কাহিনীতে লেখক ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান জাতিগত বিভেদের তুলে এনেছেন। উপন্যাসের অনেক টা জায়গা জুড়ে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ও তার মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধারা। যদিও লেখক ত্রিপুরার রাজনৈতিক চিত্রকে তুলে ধরেছেন তবুও ভারতে যে এই সমস্যাটি ক্রমেই বেড়ে চলছে তারই বহিপ্রকাশ দিয়েছেন এবং সমস্যাটার সমাধান করতে গেলে যে সেটা আরো গুলিয়ে যাচ্ছে তারও আবাস দিয়েছেন, উপন্যাসের শেষ পৃষ্টা গুলোই।থ্রিলার প্রেমীদের জন্য অসম্ভব ভালো একটি বই। শুরু করলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে ডুবে থাকতে হবে। ভাল না লাগার প্রশ্নই আসে না। পড়ার মাঝে মনে হবে বাসুদেব এর সাথে আপনিও চলছেন রোমাঞ্চ আর ভীতিকর অবস্থার মধ্য দিয়ে।যারা পড়েন নি তাদের জন্য আমন্ত্রন ভয়াবহ লোমোর্ষক এই উপন্যাসটি পড়ার জন্য।আমার মনে হয়ে আমার মতই আনন্দ ও পরিতৃপ্তি অনুভূতি হবে, একটা অসাধারণ থ্রিলার পড়ার বদৌলতে।
Was this review helpful to you?
or
সমরেশ মজুমদারের লেখা অসাধারণ পলিটিক্যাল থ্রিলার 'এত রক্ত কেন', যার শুরুটা হয় ভারতের আগরতলায় কিন্তু এক পর্যায়ে কাহিনী ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তি দেশ বাংলাদেশেও। ২০০১ সালের পটভূমিতে আবর্তিত হয়েছে কাহিনী যখন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ত্রিপুরা রাজ্যকে ভারত সরকারের থেকে স্বাধীন করতে কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠি সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে বাঙালি ও ত্রিপুরাবাসীদের মধ্যে বিভেদকে আরও জোরালো করে তোলে। এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসিদের কবলে পড়েই অপহৃত হয় সাংবাদিক বাসুদেবের শ্যালক সৌমিত্র। টাইগার নামক যে জঙ্গীগোষ্ঠি সৌমিত্রকে অপহরণ করে তারা ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু টাকা দিলেও যে সৌমিত্র জান নিয়ে ফিরে আসতে পারবে তার কোন গ্যারান্টি নেই। তাই দুঃসাহসী ও গোঁয়ার সাংবাদিক বাসুদেব একার উদ্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে শ্যালককে উদ্ধারের মিশনে। তদন্তের এক পর্যায়ে সে জানতে পারে টাইগার নামক জঙ্গীগোষ্ঠি অবস্থান করছে বাংলাদেশে। বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে যায় বাসুদেব। সে জানতে পারে চলমান সন্ত্রাসবাদে টাইগারদের সাহায্য করছে বিডিআর ও বিএসএফ এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং টাইগারদের সাথে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের কিছু মানুষও নিজ দেশের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতায় অবতীর্ণ হচ্ছে। এই কথা বাসুদেব বাংলাদেশের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে জানালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যারা তারাও লড়াইয়ে নামে তাদের দেশ থেকে দেশদ্রোহি রাজাকার আর ভারতীয় জঙ্গিদের উৎখাত করতে। এই কাহিনীর মাধ্যমে লেখক মূলত বলতে চেয়েছেন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান জাতিগত বিভেদের কথা। রূপক অর্থে লেখক ত্রিপুরা ও বাংলার রাজনৈতিক চিত্রকে তুলে ধরলেও, ভারতে যে এই সমস্যাটি ক্রমেই বেড়ে চলছে এবং সমস্যাটার সমাধান করতে গেলে তা যে আরও বেড়ে যাচ্ছে সে ইঙ্গিত লেখক দিয়েছেন এই উপন্যাসে। এই উপন্যাসের বাড়তি সংযোজন কাহিনীর একটি বড় অংশ বাংলাদেশের মাটিতে সংগঠিত হওয়া। নিজ দেশকে বিরুদ্ধ শক্তির হাত থেকে বাঁচাতে মুক্তিযোদ্ধারা কিভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে, সেটাও লেখক আসলে তুলে ধরেছেন ভারতীয়দের একইভাবে ঐক্যবদ্ধ করতেই। পরিশেষে বলা যায়, ভারতের ভৌগলিকতা বিষয়ে যে রাজনৈতিক সমস্যা, সেটা বেশ সাহসিকতার সাথে তুলে ধরেছেন লেখক। তবে ভারতের আভ্যন্তরীন রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে যারা ইন্টারেস্টেড নন তাদেরও অনেক ভাল লাগবে 'এত রক্ত কেন'। বাংলা সাহিত্যে বাসুদেবের মত চরিত্র বিরল। পাশাপাশি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধাদের এই উপন্যাসে যেভাবে হাইলাইট করা হয়েছে তাও বেশ আকর্ষন করবে বাংলাদেশী পাঠকদের।