User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
হরর মিশ্রিত থ্রিলার উপন্যাস। ভালো লিখেছেন। একটানেই পড়েছি। কালোবাজারির একটা কেসের উপর ভিত্তি করে লেখা কিন্তু জোরালো করতে পারেননি লেখক। তবুও সামির, পিয়ন রহমত, ডাক্তার মালেক, বড় সাব ডাক্তার খলিলুল্ল্যাহ, ডোম হান্নান, মর্গের লাশ বাহক রাতুল, ডিটেকটিভ রয়, ডিটেক্টিভ খালিদ এদের পরপর উপস্থিতি ছোট্ট উপন্যাসটিতে ভালোভাবে এসেছে। নেক্সটে আরও ভালো কিছুর আশা করছি।
Was this review helpful to you?
or
"এই বিংশ শতাব্দীতেও যৌতুকের দাবীতে মেয়েরা ঘরে ঘরে নির্যাতিত হচ্ছে। মার খাচ্ছে, গালাগাল খাচ্ছে। যৌতুক দিতে না পেরে মার খেয়ে মরেও যাচ্ছে"। সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে একদিন মানুষের মৃত্যু হয়। থেমে যায় তার সকল ক্রিয়াকলাপ। শেষকৃত্য শেষে তার কাছের মানুষগুলো তাকে ভুলে যাওয়ার জন্য কেঁদে কেঁদে বাড়ি ফিরে। কিন্তু তারা কি জানে যাকে এই তিন হাত গভীর ঘরে রেখে গেলো সে কি লাশ হয়েও নিরাপদ কিনা..? মানুষ মরে গেলে পচে যায়। এই কথাটা যেমন সত্যি ঠিক তেমনি একদল প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে যাচ্ছে লাশের দাম লাখ টাকা। প্রতিনিয়ত খবরের কাগজ বা টিভি চ্যানেলে পাওয়া যাচ্ছে এরকম অহরহ ঘটনা। রাতের আধার ঘন হওয়ার সাথে সাথে একদল চলে আসে কবরস্থানে। সদ্য কবর দেয়া কিংবা ২/৩ দিন আগে দেয়া কবর খুঁড়ে তারা লাশের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ - দাঁত, নখ, চোখ, কিডনি এমনকি পুরো লাশটা তুলে নিয়ে ১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ফুটন্ত পানিতে ডুবিয়ে শরীরের মাংস ও চর্বি আস্তে আস্তে আলাদা করা হয়। এরপর ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করে পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল হিসেবে তৈরী করছে কয়েকটি চক্র। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ/হাসপাতালের ডাক্তার বা স্টাফ থেকে শুরু করে একেবারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানেই চলে এসব কুকর্ম। সত্যিকার অর্থেই মানুষ মরেও শান্তি পায় না। ক্যানিবল। যার বাংলা প্রতিশব্দ রাক্ষস, স্বগোত্র ভোজী কিংবা সহজ ভাষায় মানুষখেকো। এখনও পৃথিবীর বুকেই এমন কিছু গোত্র বা গোষ্ঠী আছে যারা মানুষের মাংস ভক্ষণ করাটাকে সংস্কৃতির একটা অংশ হিসেবেই ধরে। পৃথিবী ঘুড়ার দরকার নেই। আমাদের বাংলাদেশেই এমন ঘটনা ঘটেছিল যাতে পুরো দেশ ছিলো আতংকে। সময়টা ১৯৭৫ এর দিকের কথা। দৈনিক বাংলার একটি নিউজ পড়ে শিউরে ওঠে গোটা বাংলাদেশ। ছবিতে দেখা যায় এক যুবক মরা একটি লাশের চেরা বুক থেকে কলিজা খাচ্ছে! ‘সে মরা মানুষের কলজে মাংস খায়!’ শিরোনামে খবরটি ছাপা হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়তে দুদিন লেগে যায়। অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয় খলিলুল্লাহ নামের এই মানুষখেকোকে এবং মানসিক চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় পাবনা মানসিক হাসপাতালে। সুস্থ হওয়ার পর একদিন কাকতালীয়ভাবে এক সাংবাদিকের কাছে নিজের সকল অতীতের কথা স্বীকার করে খলিলুল্লাহ। সে খলিলুল্লাহ মরে গেছে ২০০৫ সালে। কিন্তু মুহাম্মদ এফ রশীদ এর লেখায় ফিরে এসেছ খলিলুল্লাহ 'দ্য ডায়েরী অফ আ ক্যানিবল' থ্রিলার বইটার মধ্যে। "কলিজা দে, কলিজা খাবো। কলিজা দে কলিজা, মানুষের কলিজা"। কাহিনীপ্রসঙ্গ : শহর থেকে বেশ দূরে হাইওয়ের পাশে নির্জন এক হাসপাতাল। লোকালয় থেকে বেশ খানিকটা দূরে হওয়াতে এখানে রোগীদের তেমন যাতায়াত নেই খুব অল্প। শুধুমাত্র রোড এক্সিডেন্ট বা অপঘাতে বা অস্বাভাবিকভাবে মৃত লাশগুলোই বেশী আসে এখানে। এই হাসপাতালেই ডাক্তারি প্র্যাকটিস এর জন্য আসে সামির মল্লিক। রোগীদের সংখ্যা কম হওয়াতে বেশীরভাগ সময়ই সামির বই পড়ে কিংবা তার ব্যক্তিগত পিয়ন যে কিনা এই হাসপাতালের সবচাইতে পুরানো স্টাফ তার সাথেই গল্পগুজব করে কাটায় যার নাম রহমত। একদিন হাসপাতালের কোয়ার্টার থেকে হাসপাতালে ডিউটিতে আসার সময় হঠাৎ একটা ভারী কিছুর সাথে সামিরের পায়ে ধাক্কা লাগে। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায় উঠে ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বোঝার চেষ্টা করে কিন্তু অতিরিক্ত অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়াতে ঠিক ঠাহর করতে পারে না। পকেট থেকে ফোনটা বের করে টর্চ জ্বালিয়ে যা দেখে তাতে ঠান্ডা একটা ভয়ের স্রোত নেমে যায় সামিরের শিরদাঁড়া বেয়ে, গলা শুকিয়ে কাঠ। গতকাল মর্গে প্র্যাকটিস করার সময় এক অল্প বয়সী মেয়ের নতুন যে লাশটা এনেছিলো ডোম বয় রাতুল সেই লাশটা। কিন্তু শরীরে অসংখ্য আচঁড়ের দাগ, দেখে মনে হয় কোন হিংস্র জন্তু জানোয়ার খুবলিয়ে খেয়েছে আর বুকের ঠিক মাঝখানে কাটা গর্ত। সামির কোনমতে নিজেকে সামলে চেম্বারে এসে এ হাসপাতালের পুরানো স্টাফ রহমতকে জিজ্ঞেস করে এ ব্যাপারে। রহমত জানায় এক দৈত্যের কথা যার শরীরভর্তি লোম, ইয়া বড় বড় নখ প্রায় প্রায়ই মর্গে এসে লাশ নিয়ে যায় এমনকি অনেকেই নাকি দেখেছে নিজ চোখে। অবিশ্বাসী হয়ে সামির তার সিনিয়র ডাক্তার মালেক কে একথা জানায়। ডাক্তার মালেক হেসে উড়িয়ে দিয়ে নিজের কাজ করতে বলে এবং কয়েকদিনের মধ্যে সামিরকে রাতের শিফট বদলিয়ে দিনের শিফটে আনা হয়। সামিরের খটকা লাগে। কিছুদিন পর সবকিছু মেনে নিয়ে চলতে থাকে সামির। এরিমধ্যে সামিরের কাছে ছুটি কাটাতে আসে ছোটবেলার বন্ধু রয় যে এখন গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা। রয় আর সামিরের থাকা অবস্থায় একদিন হাসপাতালের আয়া মাসুমাখালা জানায় সে আবার দৈত্যটাকে দেখেছে। রয়ের বেশ খটকা লাগে। এ যুগে দৈত্য। সামির রয়কে পুরানো ঘটনাটা খুলে বলে। রয় ভাবে এ হয়তো কোন পেশাদার লোকদের কাজ যারা লাশের কালোবাজারি করে। রয়ের কাছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য শুনে বেশ অবাক হয় সামির। দুজনে মিলে ফন্দি আটে কিভাবে ধরা যায় ওদের। রয়ের পাতানো চালে ধরা পড়ে সেই দৈত্য। কিন্তু দৈত্যকে দেখে স্তব্ধ হয়ে যায় সামির। দৈত্যটি আর কেউ নয় নামকরা বড় ডাক্তার খলিলুল্লাহ। গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় খলিলুল্লাহকে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে রয় এবং তার বস খালিদ মাহমুদ। কিন্তু কোনভাবেই নিজেকে কালোবাজারি স্বীকার করে না খলিলুল্লাহ। এরিমধ্যে সামির একদিন ফোন দিয়ে জানায় ও নিজে সেই দৈত্যটাকে এবার দেখেছে। রয় আর খালিদ মাহমুদ দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করলে রয় এবং খালিদ মাহমুদ নিজেও সেই দৈত্যটাকে দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়। জ্ঞান ফেরার পর বেশ অবাক হয় নিজেরাই। কিভাবে সম্ভব...? খলিলুল্লাহ তো জেলে তাহলে অন্য কেউ কি..? ঠিক সেই রাতেই দোতলার ছাদ থেকে স্বেচ্ছায় লাফ দিয়ে নিজের পা ভেঙ্গে ফেলে ডিটেকটিভ খালিদ মাহমুদ। কিন্তু কিছুই মনে করতে পারে না সে। ঢাকা থেকে ফোন আসে। খলিলুল্লাহ হিংস্র হয়ে উঠেছে। মুখ থেকে লালা পড়ছে আর এক ধরনের গোঁ গোঁ শব্দ বের হচ্ছে। এক পুলিশকে জেলের ভিতরে ঢুকলে এক খাবলায় তার হাতের মাংস ছিড়ে নিয়ে অট্টহাসি হেসে বিকট শব্দে বলে, 'কইলজা দে, কইলজা খাবো, মানুষের কইলজা'। কিন্তু যদি খলিলুল্লাহ হয় মানুষখেকো তাহলে দৈত্য...? তাহলে সামির, ডিটেকটিভ রয় আর খালিদ মাহমুদ কি সত্যি সত্যিই সেই দৈত্যটাকে দেখেছিলো..? তাছাড়া খালিদ মাহমুদই বা কেন সেই দোতলা কোয়ার্টার থেকে নিজেকে ফেলে দিয়েছিলো..? তাহলে কি সত্যিই অশুভ কিছু আছে এই হাসপাতালে যা লাশ নিয়ে খুবলে খেয়ে ফেলে...? সন্দেহজনক আচরণকারী ডাক্তার মালেক কি তবে এসবের পেছনে আছে..? নাকি মর্গে ঢুকা প্রত্যেকটা লাশের হিসাব রাখে যে ডোম হান্নান সেইই আছে এসবের পেছনে..? খলিলুল্লাহ ই বা কেন কলজে খেতে চাচ্ছে..? সেইই কি তাহলে সেই মানুষখেকো দৈত্য..? কিন্তু তাও যদি হয় তাহলে সামির, রয় আর খালিদ কোন দৈত্যকে দেখলো..? নাকি এই ঘোলাটে আর বিভ্রান্তকর দৈত্য দিয়ে কেউ চাচ্ছে তার লাশের কালোবাজারির ব্যবসাটা আড়াল করতে..? কিন্তু এই কেউটা কে..? এই কেউটাকে খুঁজতে আর জানতে হলে এবং কেনইবা খলিলুল্লাহ এর মত একজন নামকরা ডাক্তার মানুষখেকোতে পরিণত হলো তা জানতে আপনাকে মাত্র ৭২ পৃষ্ঠার বইটি এক নিমেষে পড়ে শেষ করতে হবে। মুহাম্মদ এফ রশীদের প্রথম থ্রিলার বই 'দ্য ডায়েরী অফ আ ক্যানিবল'। লেখকপ্রসঙ্গ : মুহাম্মদ ফারুকুর রশীদ। জন্ম আর বেড়ে উঠা ঢাকার মিরপুরে। বইপড়া ও লেখালেখির আগ্রহ থাকায় বেশকিছু দৈনিকে লেখা ছাপা হয়। তবে কবিতাপ্রেম থাকায় চারটা কবিতা সংকলন এর সম্পাদনায় ছিলেন। 'দ্য ডায়েরী অফ আ ক্যানিবল' তার প্রথম মৌলিক থ্রিলার। 'দ্য ডায়েরী অফ আ ক্যানিবল' যেহেতু লেখকের প্রথম থ্রিলার তাই পাঠক হিসেবে বই সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয়। প্রথম কথা, যা সবাইকেই বলতে হয় বলে লজ্জিত আর দুঃখিত থাকি তা হলো টাইপো মিস্টেক। মৌলিক বলে খুব বেশীই চোখে লাগে। দ্বিতীয় কথা, গল্পের পটভূমি, আবহ আর ধারা ঠিক থাকলেও কিছু জায়গায় অপরিপক্বতা চোখে লেগেছে। শব্দচয়ন, বাক্যগঠনরীতি কিংবা চরিত্রের উত্তেজনায় লেখকের নিজের আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার পড়ার সময় মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। তৃতীয় কথা, চরিত্রের স্টাবলিশমেন্টটা শুরুতে অনেক ভালো লাগলেও পরবর্তীতে কেমন থেমে থেমে গেছে। তবে হ্যা গল্পের প্রয়োজনে চরিত্র আর আর তার পারিপার্শ্বিকতার বিবরণ কিংবা গল্পের আবহ গড়তে দৃশ্য তৈরীতে লেখকের বর্ণনার স্টাইলে খুব আদিমতা বোধ ছিলো। আদিমতা বোধ বলতে বুঝিয়েছি পুরানো দিনের লেখার একটা স্টাইল আছে আলাদা। বর্ণনাগুলোও ঠিক তেমনি লেগেছে আমার কাছে। একটু পুরানো ধাচে লেখা। চতুর্থ কথা, লেখক যে মৌলিক বাংলা থ্রিলার মানে ব্যোমকেশ, ফেলুদা, কাকাবাবু থেকে অনুপ্রাণিত তা গল্পের জট খুলার সময়ই আপনি টের পাবেন। ভালো করে মনোযোগ দিলে নিজেই টের পাবেন কি জন্য বললাম লেখক এই লেখকদের লেখাগুলো থেকে অনুপ্রাণিত। শেষ কথা, গল্পের প্লটটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। যারা থ্রিলার লেখে মোটামুটি সবার গল্পের শেষেই একটা ভালো শিক্ষণীয় বিষয় থাকে কিংবা খুব বড়সড় একটা অপরাধ উন্মোচিত হয়। এই বইটাতেও তেমনি একটা গল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে, একজন ক্যানিবলের জীবনী, একজন ভদ্রবেশী মুখোশধারী শয়তান, আর এক বিশাল অপরাধ চক্র। তবে চাইলে লেখক এতটুকুতে শেষ না করে আরো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতের পর শেষ করতে পারতো। মনে হয়েছে শুধুমাত্র 'মূল আসামীকে খুঁজে বের করা' তত্ত্বে বিশ্বাসী লেখক। লেখক সাহেব একদিন আমার বাসায় এসে একটা ছোট গল্প শুনালেন। শুনে ভালোই লাগলো তারপর থেকেই গল্পটা নিয়ে টুকটাক আড্ডা হতো কথা হতো। এই আড্ডা-কথার মাঝে কিভাবে যে এই পর্যায়ে চলে এলো তা আমি নিজেও টের পাইনি। লেখক আমার ছোটবেলার বন্ধু বলে ভাববেন না বাড়িয়ে লিখেছি। যে কথাগুলো আপনারা পড়লেন ঠিক একই কথা কিন্তু সেও পড়বে। একবিন্দুও এদিকওদিক হবে না। ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটো দিকই তুলে ধরে আলোচনা করেছি। তাই বইটি কিনে পড়বেন কি পড়বেন না তা একান্তই আপনার ইচ্ছা। তবে হ্যা লেখক তার দ্বিতীয় থ্রিলার নিয়ে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা বলেছে তাতে বুঝেছি এই বইয়ের ভুলগুলোকে শুধরে আরো মজবুত গাঁথুনিতে নিজেকে পাকাপোক্ত করে ফিরছে। শুভকামনা লেখকের প্রথম আর সামনের বইগুলোর জন্য। হ্যাপি রিডিং।