User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Mirza Abrar Daiyan

      07 May 2022 11:44 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ লেখনী, লেখকের কল্পনাশক্তি আর জ্ঞানের বিশালত্বের প্রশংসা না করলেই নয়। ইতিহাসের বাস্তব ও রহস্যঘেরা ঠগীদের অস্তিত্ব নিয়ে অসম্ভব সুন্দর ও রোমাঞ্চকর এক থ্রিলার বই

      By Zubair

      04 Sep 2021 09:30 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      চমৎকার

      By Kamruzzaman Ansari

      23 Jun 2021 08:37 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      nice

      By shakeel ahmed

      23 Jun 2021 12:48 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      Very good.

      By Fahmida Haque Protikkha

      10 Jun 2021 10:11 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      সপ্তরিপু বইটি পড়া যখন শুরু করেছিলাম তখন আমার মনে হয়েছিল এখানে মনে হয় সাতটি শত্রুকে দেখানো হবে। কিন্তু বইটি পড়তে পড়তে যখন অনেক গভীরে গেলাম তখন বুঝতে পারলাম সপ্তরিপুর অর্থ আসলে কি। বইটির প্রধান চরিত্র বাশার আর ম্যাকফির পাশাপাশি আমার ফিরিঙ্গিয়াকেও ভালো লেগেছে। খল চরিত্র হলেও ফিরিঙ্গিয়ার চরিত্রটা বেশ শক্তিশালী ছিল। বইটি পড়ার পর থেকে মনে হচ্ছে কত তাড়াতাড়ি ব্ল্যাকবুদ্ধা পড়তে পারবো।

      By Shahriar Nafis

      06 Jun 2021 07:34 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ এক থ্রিলার।একসাথে দুটো কাহিনী নিয়ে গল্প এগিয়েছে।প্রথমে কিছুটা ধীর লাগলেও তা ছিল অল্প সময়ের জন্য।গল্প যতো এগিয়েছে ততোই থ্রিলিং এসেছে।লেখনি যথেষ্ট মার্জিত ছিল। থ্রিলার গল্প সম্পর্কে যা বলবো তাই স্পয়লার হয়ে যায়।শুধু বলবো বইটা কিনলে ঠকবেন না,সময়ও নষ্ট হবে না।

    • Was this review helpful to you?

      or

      ওয়ান অফ দা বেস্ট বুক ওফ রবিন জামান খান

      By অনন্যা হক

      20 Apr 2021 09:34 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দুর্দান্ত!

      By Israt Mustafa

      26 Feb 2021 11:57 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ একটি থ্রিলার। প্রতিটি পৃষ্ঠায় ছিল টানটান উত্তেজনা। সেই সাথে অনেক নতুন কিছু জানতে পারলাম।

      By Kumkum

      19 Feb 2021 10:00 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      This is one of the best book in my life I ever read

      By আরিয়ান শুভ

      20 Nov 2020 11:25 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      So fast delivery

      By Rasel Alam Chowdhury Rajib

      05 Oct 2020 01:38 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      good book

      By nakib

      23 Aug 2020 02:17 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ

      By M S Khokon

      07 Mar 2020 11:45 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইঃ সপ্তরিপু__কাহিনি সংক্ষেপঃ ঠগী। ভারতীয় উপমহাদেশের সম্ভবত সবচেয়ে প্রাচীন খুনে দল। এরা দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করতো। পথিকদের সাথে মিশে গিয়ে এক পর্যায়ে বিশেষ এক রুমালের সাহায্যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাদেরকে খুন করে সাথে থাকা সমস্ত দামী মালামাল ও অর্থকড়ি হাতিয়ে নিতো তারা। এই ভয়াবহ খুনে দলকে নিয়েই বিশাল কলেবরের উপন্যাস 'সপ্তরিপু'-র কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। ১৮২৮ খৃষ্টাব্দ। অবিভক্ত ভারতের বৃহত্তর ময়মনসিংহ-মধুপুর অঞ্চলে পাঠানো হলো ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ম্যাকফিকে৷ কারণ, কিছুদিন আগেই এই এলাকা থেকেই রাতারাতি গায়েব হয়ে গেছে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ছোট্ট একটা দল। কি ঘটেছে দলটার ভাগ্যে, সেটা জানার জন্যই ম্যাকফিকে পাঠানো হয়েছে। তার সঙ্গী হয়েছে বিশ্বস্ত মহাবীর সিং ও জোনাথন। তদন্ত করতে গিয়েই অদ্ভুত এক অন্ধকার জগতের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো ক্যাপ্টেন ম্যাকফি'র দল। রাজা সূর্যকান্তর নির্মানাধীন শশীলজ থেকে এলাকার সবচেয়ে বড় ঘোড়ার হাট - সবখানেই দৌড়ে বেড়াতে হলো ওদেরকে। ধীরে ধীরে ম্যাকফিদের এই গল্পে যুক্ত হলো ডোংরু মহারাজ নামের এক পুরোহিত, প্রভাবশালী তালুকদার পরিবারের মাথা জোহরা, লাল পাগড়ি বাহিনী এবং স্বয়ং কিংবদন্তিতুল্য কর্নেল হেনরি স্লিম্যান। ধীরে ধীরে পুরো ব্যাপারটা আশ্চর্য এক মোড় নিতে লাগলো। যে মোড়ের ওই মুখে অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর এক ঠগী দল, যার মাথা হিসেবে আছে ফিরিঙ্গিয়া। বর্তমান সময়। হতাশাগ্রস্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর আহমেদ বাশারের পোস্টিং হয় নিজ শহর ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায়। কখনোই সে চায়নি নিজের ছোটবেলার শহরে ফিরে আসতে। কিন্তু আসতেই হলো। এককালের বন্ধু এখন ওর সুপিরিয়র। আর সেই সুপিরিয়র ওসি মন্ডলও বাশারের সাথে শুরু করলো নোংরা শত্রুতা। এদিকে ময়মনসিংহ শহরের এক পরিত্যক্ত পুকুরের তলা থেকে আবিস্কৃত হলো একটা গাড়ি। আর সেই গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে থাকা এক কঙ্কাল তো আছেই৷ ব্যক্তিগত জীবনে প্রায় সব হারিয়ে দিশেহারা ইন্সপেক্টর বাশারের কাঁধে এসে পড়লো অদ্ভুত এই কেসের তদন্তের দায়িত্ব। কঙ্কালটার পরিচয় খুঁজতে গিয়েই একের পর এক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে লাগলো বাশার। তাকে অনুসরণ করতে লাগলো একটা সাদা মাইক্রোবাস। এসবের সাথে হঠাৎ করেই জড়িয়ে গেলো রহস্যময়ী এক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জয়া সরকার ও ময়মনসিংহ জাদুঘরের সাবেক কিউরেটর রিফাত। বাশার ও তার এই ছোট্ট দল ছোট ছোট সূত্রগুলোর সাহায্য নিয়ে পৌঁছে গেলো এমন এক উপসংহারের কাছাকাছি, যা শুরু হয়েছিলো শতাধিক বছরেরও আগের এক সময়ে। প্রাচীন এক মূল্যবান আর্টিফ্যাক্ট, ঠগী কালচার, ষড়যন্ত্র, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া - সব যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো। পুরোনো একটা দেহাবশেষের পরিচয় জানার তদন্ত থেকে শুরু হওয়া এই গল্প ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ এক অন্য রূপ নিলো। আর এটাই বোধহয় হওয়ার ছিলো। অতীত ও বর্তমান। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা সময়কে পাশাপাশি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দুটো গল্প একটা সময় মিশে গেলো একই ধারায়। আর এই অভিন্নতার পেছনে রয়ে গেলো শুধু একটামাত্র শব্দ - ঠগী। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ রবিন জামান খানের সুবিশাল পরিসরের 'সপ্তরিপু' মূলত একটা ইতিহাস আশ্রিত উপাখ্যান। প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের কুখ্যাত খুনে দল ঠগীদেরকে নিয়ে লেখক স্বতস্ফূর্তভাবে অবতারণা করেছেন এমন এক গল্পের, যার প্রায় অনেকটাই ঐতিহাসিকভাবে সত্য। কর্নেল হেনরি স্লিম্যানের অক্লান্ত পরিশ্রমে উপমহাদেশে ঠগীদেরকে সমূলে উৎপাটন করা সম্ভব হয়েছিলো। সেই ঐতিহাসিক চরিত্র স্লিম্যানকেও লেখক তাঁর কল্পনার রঙে মিশিয়ে দারুন চিত্তাকর্ষক ভাবে উপস্থাপন করেছেন পাঠকের সামনে। ঠগী দল ও তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে লেখকের গবেষণা রীতিমতো মুগ্ধ করেছে। পুরোনো সময়টাকে বেশ সফলভাবে ফ্রেমে বন্দী করতে পেরেছেন তিনি, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ঐতিহাসিক অতীতের সাথে সাথেই সমান্তরালে এগিয়ে গেছে বর্তমানের এক পুলিশ ইন্সপেক্টরের গল্প। ধীরে ধীরে একটা সময় দুটো গল্প একই ধারায় মিলে গেলেও নানা চড়াইউৎড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে পুরো ব্যাপারটাই। বিস্তৃত একটা প্লট ভালোভাবে ডেভেলপ করা এমনিতেই কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। সেই সাথে প্রত্যেকটা চরিত্রের নির্মাণ ও ধীরে ধীরে এগুলোকে পারফেক্ট ব্লেন্ডে মিক্সচার করে একটা জমজমাট থ্রিলারে রূপান্তর করাটা সত্যিই অনেক সাধনার ব্যাপার। লেখক রবিন জামান খান দারুনভাবে ব্যাপারটা সম্ভব করেছেন। উনার প্রথম মৌলিক থ্রিলার উপন্যাশ '২৫শে মার্চ'-কেও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি এই ব্যাপারে। ৪২৯ পৃষ্ঠার বিশাল এই উপন্যাসটা শুরু থেকেই পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখবে। ইতিহাসের সাথে রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা মিশে এমন এক আবহ সৃষ্টি করবে, যার ঘোর থেকে যাবে বইটা পড়া শেষ করার পরও আরো কয়েকদিন। 'সপ্তরিপু'-এর মতো এমন বিস্তৃত প্লটের উপন্যাসের রিভিউ লেখাটা আসলে খুব বেশি সহজ কাজ না। তারপরও চেষ্টা করলাম। বইটা সম্পর্কে কতোটা ধারণা দিতে পেরেছি, জানিনা। তবে ঐতিহাসিক কাহিনি প্রেমীদের জন্য বইটা দারুন সময় কাটানোর দারুন একটা মাধ্যম হতে পারে। ছোটখাটো অনেক বানান জনিত সমস্যা ও বেশ কিছু টাইপিং মিসটেক ছিলো। ভবিষ্যতে এই ব্যাপারে লেখককে সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। ডিলান সাহেবের প্রচ্ছদটা চমৎকার লেগেছে। আগ্রহীরা চাইলে পড়ে ফেলতে পারেন 'সপ্তরিপু'।

      By RASHIKUR RAHMAN RIFAT

      26 Nov 2019 12:45 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইয়ের নাম- সপ্তরিপু লেখক- রবিন জামান খান প্রকাশনী- বাতিঘর পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৪২৯ মুদ্রিত মূল্য- ৪৫০ টাকা গল্পটি অতীত ও বর্তমান এর দারুণ মেলবন্ধন নিয়ে। গল্পটা একজন ডিমোশন হওয়া পুলিস অফিসার। যার বদলি হয় ময়মনসিং। হঠাৎ করে পানির নিচে থেকে উদ্ধার হয় এক গাড়ি। তদন্তে বেরিয়ে আসে দশ বছর আগের কিছু তথ্য। গাড়িটিতে পাওয়া যায় এক বিদেশি আগুন্তক এর লাশ। ১৮২৮ এর বাঙ্গালমুল্লুক । হঠাৎ করে হারিয়ে যেতে লাগলো সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয় স্বয়ং ইংরেজরাও নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। উড়ো খবর শোনা যাচ্ছে কোনো এক ডাকাত গোষ্ঠী এসব করছে। কারা তারা যারা ইংরেজদের গায়ে হাত দেয়। ম্যাকফি কি পারবে এসবের রহস্য উন্মোচন করতে? দুইশ বছর আগের ঘটনার সাথে গাড়ির ভেতরের লাশের সম্পর্ক কি? পাঠ পতিক্রিয়া- থ্রিলারপ্রেমীদের অবশ্য পাঠ্য। এবছরের পড়া অন্যতম সেরা বাংলা মৌলিক থ্রিলার।

    • Was this review helpful to you?

      or

      বই-কথা বইয়ের নাম:-সপ্তরিপু ধরন:-ইতিহাস অাশ্রিত 'থ্রিলার' লেখক:- রবিন জামান খান প্রকাশনী :- বাতিঘর প্রকাশনী প্রকাশকাল:-বইমেলা ২০১৮ পৃষ্ঠা:- ৪২৯ মূল্য:-৪৫০/= "মহাপুরুষ তিনিই যিনি তাঁর ভিতরের ছয়টি রিপু (কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য) কে দমন করতে পারেন " --- আহমেদ ছফা। কিন্তু অ্যানথ্রপলজি ফিলোসফিতে প্রচলিত রিভার্স থিউরিতে মানুষের রিপু ছয়টি নয় বরং সাতটি, এই সপ্তম রিপুটি হলো "ভক্তি/অাসক্তি"। এই সপ্তরিপু থেকেই উৎপত্তি নৃশংসতার... কখনো কখনো ধর্মীয় গোঁড়ামি,অন্ধবিশ্বাস বিপদ ডেকে অানে সমাজের। সাধারণত 'ঠগ' কথাটা অামরা ব্যবহার করি কেউ প্রতারণা করলে, ছল চাতুরিতে কোনো কিছু অাত্মসাৎ করলে কিন্তু মূলত এই "ঠগ" শব্দটি এসেছে সংস্কৃত "ঠগী" থেকে, ইংরেজি thug শব্দটিও এই ঠগী থেকেই অাসা। কারা এই ঠগী? উপমহাদেশে তখন চলছে করুণ এক নিয়তির খেল। ভারতের অপার সম্পদে ভরপুর ইংরেজ কুঠিবাড়িগুলোর অালো অারো উজ্জ্বল হচ্ছে,অপর দিকে ক্রমশ এদেশের রাজা,জমিদারদের কুঠির অালো নিভতে শুরু করেছে।ছোট - খাটো যুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত ভারতে তখন ইংরেজরা ব্যবসায়ী থেকে শাসক, শাসক থেকে শোষক... তখনো রেলপথ হয় নি। বাহন তখন ঘোড়া,সকট(গরুর গাড়ি),পালকি কিংবা পা দু'টিই সম্বল। এক সাবেক কর্ণেল অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ইংরেজ অাবিষ্কার করলেন, পথে প্রান্তরে দলে দলে মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে... কেঁচো খুঁজতে যেন বের হয় সাপ! বের হয়ে অাসে ভয়ঙ্কর এক খুনে দল! রিপোর্ট অনুসারে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষ গায়েব হয়েছিলো এদের হাতে! " সপ্তরিপু " উপন্যাসটি দুটি সময়কাল নিয়ে অাবর্তিত। একটির সময়কাল অাঠারোশতকের শেষভাগ ময়মনসিংহের ভাওয়াল-মধুপুর অঞ্চল ঘিরে, যখন তমিস্রাময় ভারতে ইংরেজরা গ্যাঁট হয়ে জেঁকে বসেছে । যখন ইংরেজ অফিসার স্লিম্যান খুঁজে ফিরছেন অদ্ভূত ঠগী গোষ্ঠীকে। হাজির হয়েছেন বাংলার বুকে। অারেকটি হলো বর্তমান সময়কালের অাধুনিক ময়মনসিংহ শহর ঘিরে.... নিতান্ত ডিউটির খাতিরেই পুকুরে পাওয়া গাড়ি ও কংকাল হওয়া গাড়ির মালিককে দেখতে গিয়েছিলো ইন্সপেক্টর বাশার। কিন্তু দেখতে দেখতে জমে ওঠে কাহিনী, একে একে সঙ্গী হয় সাংবাদিক জয়া অার এক প্রত্নতত্ত্ববিদ রিফাত মজুমদার। দেখা গেল, ঘটনা ১১ বছর অাগের এক র্দুঘটনায় থেমে নেই, এর গভীরতা অারো প্রাচীন অারো রহস্যময় কারন এতে জড়িয়ে অাছে এক পরিবারের কালো অধ্যায়, কারো অাছে শুধুই অাগ্রহ অার কারো অপরিসীম লোভ সর্বপরি একটা নাম - " ঠগী" দুটি সময়কালকে এক সুতোয় গেঁথে পাঠকের কাছে নিখুঁত ভাবে উপস্থাপনা অাগেও করেছেন লেখক তাঁর " ২৫ শে মার্চ" বইটিতে। কিন্তু, সপ্তরিপুতে লেখণিতে অারো পরিণতর ছাপ স্পষ্ট দেখা গেছে। দুইটি সময়কালকে একই গতিতে প্রবাহিত করতে বেশ মনোযোগের প্রয়োজন অার এতে লেখকের ঘাটতি ছিলো না। একদিকে স্লিম্যানের ঠগীদের পিছু নিয়ে জোড়াকালি মন্দির খুঁজে বের করা, অপরদিকে জোড়াকালির মূর্তি খুঁজে পেতে বাশারের অভিযান খাপেখাপে মিলেছে এক বিন্দুতে। অভাবনীয় টুইস্ট,স্লিম্যানের সাথে ঠগী দলপতির কাল্পনিক ফাইটিং, স্থানীয় ইতিহাস,আঞ্চলিক ভাষা, নিখুঁত ভৌগলিক অবস্থান, মিথ , স্থাপনার ব্যবহার সবকিছুর মিক্সড "সপ্তরিপু"। গতিশীল লেখনী, বিষয়বস্তু, প্রেক্ষাপট সবকিছু মিলিয়ে দারুণ একটি বই। উপন্যাস যদিও জীবনের অংশ তবুও অামরা সাধারণত যেভাবে কথা বলি, সেভাবে বলা যায় না। ৪২৯ পৃষ্ঠার বিশাল কলেবরের বইয়ে শুধু ২/১ টি শব্দ ব্যবহারে অাপত্তি ছাড়া, যতটুকু অামি জানি ঠগীদের মূল তীর্থস্থান কলকাতার কালীঘাট, ইলোরা নয়, তবে ইলোরাতে ঠগীদের অাচার-অনুষ্ঠানের অনেক ছবি অাঁকা অাছে, যেমনটা অাছে সব পেশার সব ধর্মের মানুষের। এতটুকু ছাড়া পুরো বইটি একটা মাষ্টার পিস। এবার বইয়ের সাজসজ্জা ও নামের কথা বলা যাক। উপরের কাভারে ঠগীদের বাস্তব ছবির(ছবিটি ১৮৯৪সনে তোলা) ব্যবহারই কাভারটিকে জীবন্ত করেছে। মিথ অনুযায়ী ঠগিরা বিশ্বাস করতো, তারা মা ভবানীর সন্তান, রেশমি রুমাল মায়ের দেয়া উপার্জনের হাতিয়ার, মন্ত্রপূত কোদাল পথ নির্দেশক... এককথায় হিন্দু মুসলিম সবাই কালীর অার্শীবাদপুষ্ট ঠগী.. যাদের অাছে দেবীর প্রতি অতিরিক্ত ভক্তি/অাসক্তি। কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামিই যে মানুষকে নৃশংস করে তোলে তা অাজ এতো বছর পরেও কি অামরা অাদৌ অনুধাবন করতে শিখেছি? সপ্তরিপু যা অতীতে ছিলো এবং এখন এই বর্তমানেও বিদ্যমান। বইয়ের কাহিনীতেও দুই সময়কালের ক্ষেত্রেই পারফেক্ট একটি নাম। রবিন জামান খান মানেই ভিন্ন কিছু... মিথ, কাল্ট, ইতিহাস অার রোমাঞ্চের মিশ্রণ। ★যারা ঠগীদের নিয়ে অারো পড়তে চান, নিচের বইগুলো ট্রাই করতে পারেন। *মৃত্যুদূত(কর্ণেল ফিলিপ মেডোউস টেলরের Confessions of a thug অবলম্বনে)-নাজিমুদ্দিন অাহমেদ(UPL,বাংলাদেশ) *ঠগী-শ্রীপান্থ (দে'জ, ভারত) *ফিরিঙ্গি ঠগী( পত্রভারতী, ভারত)

      By Sultan

      31 Oct 2019 10:10 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      স্বপ্নের শহরটাতে এমনভাবে ফিরে আসতে হবে কখনও ভাবেনি বাশার। জীবনের একমাত্র অবলম্বন, প্রিয় বন্ধু আর পদমর্যাদা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে ফিরেছে সে। আর ভাগ্যের কি পরিহাস! আসতে হল কিনা এমন একজনের অধীনে যাকে একদিন সেই যোগ্য করে তুলেছিল। লোকটার ভেতরে কৃতজ্ঞতার ছিঁটেফোটাও নেই। তার এই অবস্থা দেখে সে যেন খুব মজা পাচ্ছে। ময়মনসিংহের শানকিপাড়ার সাঈদ কন্ট্রাক্টরকে চেনে না অত্র এলাকায় এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। লোকটা টাকার কুমির। বাবা ছিল শান্তি কমিটির চর। সদ্য স্বাধীন দেশে ফুলে ফেঁপে উঠতে বেশি সময় লাগে নি। এখন বাবার সাম্রাজ্য বাড়িয়ে চলছে সাঈদ আলী। শানকিপাড়া শেষমোড়ে হাইওয়ের পাশের পুকুরটা বহু কষ্টে সে কব্জা করেছে। কিন্তু কাজ শুরু হতেই দেখা গেল বিপত্তি। পুকুরের পানি সেঁচতে গিয়ে পাওয়া গেল একটা আস্ত গাড়ি! দেখে মনে হয় বহু আগের। এই জায়গায় লোকজনের অগোচরে এতদিন কিভাবে পড়ে ছিল গাড়িটা? বাশারকে সহযোগিতার কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না ওসি মল্লিকের। যেন তাকে বিপদে ফেলতে পারলেই সে খুশি। এত বড় ঘটনার পরও সে নিজে না গিয়ে বাশারকে পাঠাচ্ছে। সাঈদ কন্ট্রাক্টরকে চটাতে চায় না সে। বাশার গাড়িটা পরীক্ষা করে খুব অবাক হয়ে গেল। আরও বড় চমক তার জন্য অপেক্ষা করছিল। গাড়ির ভেতরে পাওয়া গেল আস্ত একটা কঙ্কাল। যদিও ব্যাপারটা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছিল সাঈদ আলী। কিন্তু বাশার ব্যাপারটাকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে খোঁজ খবর শুরু করল। ওসির পক্ষ থেকে যে তেমন কোন সহযোগিতা পাওয়া যাবে না সে আগেই জানত। কিন্তু এতটা খারাপ পরিস্থিতিও সে আশা করে নি। তার সাথে সহযোগী হিসেবে দেয়া হল অকর্মণ্য রমিজ দারোগা আর অনভিজ্ঞ আবদুল্লাহকে। খোঁজ খবর করতে গিয়ে বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার খোঁজ পেল। আর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গাড়িটা ঠিক কতদিন আগে থেকে পানির নিচে আছে সেটার সম্ভাব্য সময় বের করা হল। এবার শুধু চমকের পালা। যেসব তথ্য তার হাতে এসেছে সেগুলো বর্তমানের হলেও এর শেকড় বিস্তৃত হয়ে আছে সুদূর অতীত থেকে। আর এর সাথে জড়িয়ে আছে মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি, শশীলজ! সময়টা ছিল ইংরেজদের শাসনকাল। সে সময়ই গোপনে বেড়ে উঠতে থাকে একটি দল। যার অস্তিত্বকে কেউ বিশ্বাস করতে চাইত না। কেবল মাত্র বইয়েই বর্ণনা পাওয়া যেত। তবে একজন এ ব্যাপরটা বিশ্বাস করত। উইলিয়াম হেনরী স্লিম্যান। ভারতবর্ষের পথঘাট থেকে প্রতিনিয়ত রহস্যজনকভাবে হারিয়ে যায় বহু মানুষ। আর তাদের এই পরিণতির জন্য সেই বিশেষ দলটাই দায়ী। দলটাকেই খুঁজে বেড়াচ্ছে স্লিম্যান। অন্যদিকে ক্যাপ্টেন ম্যাকফি, জোনাথন আর মহাবীর সিং এসেছে মধুপুরে। কিছুদিন আগে রাজা সূর্যকান্তের সাথে দেখা করতে এসে হারিয়ে গেছে একটি দল। তাদের খোঁজেই এসেছে তারা। খুঁজতে গিয়ে অনেকগুলো অসঙ্গতি বেরিয়ে এল। কিছু অশুভ একটা ঘটছে এখানে। বনের মাঝে দেখা হওয়া ডোংরু মহারাজ আর তার শিষ্যদের কর্মকান্ড, সাংকেতিক ভাষা সব মিলিয়ে কিসের যেন একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে। যাদের ধরতে এত আয়োজন তারা বহাল তবিয়তেই আছে। সবার চোখে ধূলো দিয়ে নিজেদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষ তাদের কাছে স্রেফ শিকার। এক টুকরো কাপড় আর একটা সিকি তাদের অস্ত্র। জোড়া কালির শক্তিতে বিশ্বাসী দলনেতা নিজেকে দেবীর আর্শিবাদপুষ্ট মনে করে। স্বপ্ন দেখে একদিন এই বাঙলায় তাদের একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তাদের সাথে আছে জমিদার বংশের উত্তরাধিকার। এই ভয়াবহ খেলা যে ভবিষ্যতকেও সংক্রমিত করবে তা কি কেউ কল্পনা করতে পেরেছিল? তদন্ত শুরু করতেই বাশার বুঝতে পারল কেউ তার পিছু নিয়েছে। সাদা একটা গাড়িকে প্রায়ই অনুসরণ করতে দেখা যায়। একজন বিদেশী কেনো এই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে? গাড়ির পিছু নিয়ে ঘটনাচক্রে পরিচয় হল সাংবাদিক জয়া সরকারের সাথে। তার কাছে পাওয়া গেল আরও কিছু চমকপ্রদ তথ্য। এবার কিছুটা আশার আলো দেখতে পেল সে। তাদের সঙ্গী হল আর্কিওলজিস্ট রিফাত মজুমদার। কিন্তু এটা নিয়ে যে জীবন-মরণ খেলা শুরু হবে সেটা কি ভুলেও জানত? সপ্তরিপু বইটা শেষ করার পর পছন্দের তালিকায় আরো একটি বই যোগ হল। আমরা সবাই ষড়রিপুর সাথে পরিচিত। তবে সপ্তরিপু কেন বলা হচ্ছে? ভক্তি বা আসক্তি যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যায় সেটা ধ্বংসাত্মক অস্ত্রে পরিণত হয়। আর ঠগীরা এই সপ্তরিপুতেই আক্রান্ত ছিল। মানুষ হত্যাকে তারা ভাবত দেবীর আদেশ। আর তার বলি হত নিরীহ মানুষ। দেবীশক্তির প্রতি অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার তাদের অন্ধ করে তুলেছিল। আর তারা এতটাই সংঘবদ্ধ ছিল আর পরিচয় গোপনে দক্ষ ছিল যে তাদের প্রতিহত করা এক প্রকার অসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। লেখক যেভাবে সুদূর অতীতের এই রোমহর্ষক ঘটনাবলির সাথে বর্তমানের সংযোগ স্থাপন করেছেন তাতে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। ইতিহাসের সাথে কল্পনা মিলেমিশে পাঠকের চোখে জীবন্ত হয়ে ধরা দেয়। বর্তমান আর অতীত বর্ণনা পাশাপাশি চলেছে আপনগতিতে। তবে তাতে ছন্দপতন ঘটে নি। বর্তমানে একদল গাড়ি ধাওয়া করছে, আড়ি পাতছে, অন্যদিকে অতীতে ঘোড়সাওয়ার ছুটছে শত্রুর পেছনে, চর মারফত আগে থেকেই খবর পেয়ে যাচ্ছে শত্রুপক্ষ। টানটান উত্তেজনায় কোথাও ভাটা পড়ে নি। আর চরিত্রের কথা বলতে গেলে বলা শেষ হবে না। বর্তমান, অতীত মিলিয়ে এত এত চরিত্রের সমাবেশ ঘটার পরও কারও গুরুত্ব কম ছিল না। অসৎ ওসি, লোভী কন্ট্রাক্টর, ডেভিড, বিজয়াচার্য, জয়া, রিফাত, বাশার, টমি, তৌফিক, এসপি আমজাদ প্রতিটি চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে প্রয়োজনের তাগিদে। টেনে বড় করার প্রবণতা দেখা যায় নি। অন্যদিকে স্লিম্যান, ম্যাকফি, জোনাথন, মহাবীর, ডুম্বুর, শঙ্কর, জোহরা, মানিক, ফিরিঙ্গিয়া, সূর্যকান্ত, রমাকান্ত এদের উপস্থিতি অতীতকে করেছে প্রাণবন্ত। ময়মনসিংহের এত সুন্দর বর্ণনা আর স্থানীয় ভাষায় চরিত্রদের কথপোকথন পড়ার ইচ্ছেটাকে আরো উস্কে দেয়। তবে কিছু জায়গা চোখে লেগেছে। বিশেষ করে ভিনদেশী লোকের মুখে স্থানীয় ভাষা, চরিত্রের বয়স, বাশারের অকারণ ভাবাবেগ, অলস লোকের হঠাৎ মতিগতি পাল্টে যাওয়া এই ব্যাপারগুলো আরেকটু ধীরে সুস্থে ঘটলে বোধহয় আরো উপভোগ্য হত। এমনিতে মোটের উপর যতটুকু আশাবাদী ছিলাম বইটা নিয়ে সেদিক থেকে বইটা প্রত্যাশা পূরণ করেছে। থ্রিলারপ্রেমী হলে অবশ্যই বইটা পড়া উচিত।

      By BookHunter

      10 Jun 2021 05:45 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ☆☆☆☆

      By Ataur Rahman

      21 May 2019 10:18 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দারুন থ্রিলার বই, নিঃসন্দেহে পড়ে ফেলতে পারেন।

    • Was this review helpful to you?

      or

      আজকে রিভিউ বাদ দিয়ে চলুন ঠগীদের নিয়ে একটা গল্প বলি। তার আগে একটা কথার জবাব দিন তো, "মৃত মানুষ কি কখনো পুনরায় জীবিত হতে পারে?" ১৮২৮ সালে এই উপমহাদেশে ব্রিটিশ রাজ চলাকালীন উইলিয়াম হেনরি স্লিম্যান নামক এক কর্নেলের উপর নাখোশ ছিলেন উপরমহল। উইলিয়াম হেনরির আগ্রহ ছিল ভারত নিয়ে গবেষণা। এজন্যে তিনি সেনাবাহিনী ছেড়ে ফোর্ট উইলিয়ামে পড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোম্পানির চাপে পড়ে শেষপর্যন্ত নর্মদা এলাকার ম্যাজিস্ট্রেটের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ফরাসি এক ভদ্রলোকের বই এসে পড়ে হেনরির হাতে। সে বইয়ে ফরাসি ভদ্রলোক সম্পূর্ণ ভিন্ন এক গোত্রের কথা উল্লেখ করেন। ভারতের অনেক প্রাচীন এই গোত্র ফাঁসুড়ে নামে পরিচিত। রুমাল দিয়ে গলায় ফাঁস পরিয়ে ওরা খুন করতো বলে ওদের এই নামকরণ। তারও অনেক পরে গিয়ে হেনরি জানতে পারেন এই গোত্রের আসল নাম হলো ঠগী। এই ঠগীদের আলাদা কোনো ধর্ম নেই। ঠগী ধর্মই সবার ধর্ম। দেবী কালীর আরাধনা করে এরা। বিভিন্ন ব্যবসায়ী কিংবা তীর্থযাত্রীদের সাথে সাধারণ মানুষের বেশ ধরে ওরা মিশে যায়। তাদের আপ্যায়নও করে, গান বাজনা করে আনন্দ দেয়। কিন্তু সময় সুযোগ বুঝে গলায় রুমালের ফাঁস পরিয়ে সবাইকে খুন করে। একজন যখন গলায় ফাঁস পরায় আরেকজন তখন পা চেপে ধরে যেন নড়াচড়া করতে না পারে। রুমালের এক কোনায় একটা পয়সা বাধা থাকে। ঐ রুমাল দিয়ে ফাঁস দিয়ে টান দিলে জিব আর চোখ বের হয়ে যায়। খুন করার পর মৃত ব্যক্তির পেট চিড়ে ফেলা হয় ছুরি দিয়ে। এরপর মাটি খুড়ে সবগুলো লাশ একসাথে কবর দেয়া হয়। এই সব কাজ হয়ে যায় এক ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে। এক ঘন্টা পর কোনোভাবেই বোঝার উপায় থাকেনা এখানে আলাদা একটা কাফেলার দল ছিল। একদম নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয় ওদের সব অস্তিত্ব। কোনো প্রমাণ ছাড়া এই গোত্রের কথা বলার কারণে ব্রিটিশ রাজ নাখোশ ছিল হেনরির উপর। অবশেষে উপায় না দেখে এই ঠগীদের বিরুদ্ধেই উঠে পড়ে লাগেন উইলিয়াম হেনরি স্লিম্যান। ইতিহাসে এখনো তিনি বিখ্যাত ঠগী নির্মূলের কারণে। এবার আসি সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘটনায়। আচ্ছা, কর্মক্ষেত্রে যদি আপনাকে ডিমোশন দিয়ে আপনারই কোনো সহকর্মির অধীনে কাজ করতে পাঠানো হয় কেমন লাগবে আপনার? যে ময়মনসিংহ শহর ছেড়ে গিয়েছিল আহমেদ বাশার, যেখানে ফেরার কোনো ইচ্ছাই ছিল না সেখানেই তাকে ফিরতে হয় তাও অপদস্থ হয়ে। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় ইনস্পেক্টর হিসেবে ডিমোশন পেয়ে জয়েন করতে হয় আহমেদ বাশারকে। এসেই এলাকার প্রভাবশালী সাঈদ কন্ট্রাক্টরের রোষানলে পড়তে হয়। ময়মনসিংহ শহরের একটা পুকুরের উপর লোভ ছিল সাঈদ কন্ট্রাক্টরের বাবার। নিজে দখল করতে না পেরে মৃত্যুর সময় নিজের ছেলেকে বলে যান ওটা দখল করার জন্য। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে যখন পুকুরের দখল পাওয়া গেল তখন মোটর দিয়ে পানি সেচে তা ভরাট করতে চেয়েছিল সাঈদ কন্ট্রাক্টর। কিন্তু পানি সেচে পুকুর শুকিয়ে ফেলার চাঞ্চল্যকর একটা ব্যাপার ঘটে গেল। পুকুরের তলায় কাদায় ডোবা অবস্থায় একটা গাড়ি পাওয়া গেল। শুধু গাড়ি হলেও ব্যাপারটা সামান্যই ছিল। কিন্তু গাড়ির ভেতর একটা লাশের কংকালও পাওয়া গেল! আর যায় কোথায়, ক্রাইম সিন ঘেরাও করে সব রকম কাজ বন্ধ করে দিল বাশার। কোটি টাকার প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে গেল সাঈদ কন্ট্রাক্টরের। এদিকে ঐ গাড়ি আর কংকাল পরীক্ষা করে এমন সব তথ্য পাওয়া গেল যা শুনে বাশার একদম থ। বহুবছর ধরে পুকুরের তলায় পড়ে আছে গাড়ি আর লাশটা!! বাশার তদন্ত করতে থাকুক, এই সুযোগে আগের গল্পটা শেষ করি। ১৮২৮ সালেরই কোনো এক সময় মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ির জমিদারিত্ব পায় জমিদার বাড়ির ছোটছেলে সূর্যকান্ত আচার্য। লোকমুখে শোনা যায় বড় ভাই রমাকান্ত আচার্যকে ষড়যন্ত্র করে জমিদারি থেকে সরিয়ে নিজে জমিদার হয় সূর্যকান্ত। নিজে জমিদার হওয়ার সাথে সাথেই ব্রিটিশ রাজের সাথে আতাত করতে চেয়েছিল সূর্যকান্ত। পার্শবর্তী মধুপুরের তালুকদার পরিবারের সাথে তাদের অনেকদিনের বিরোধ রয়েছে। একদিকে তালুকদার পরিবার অপরদিকে বড়ভাই রমাকান্ত, দুদিক সামাল দিতে হলে ব্রিটিশ রাজের সাহায্য দরকার। এজন্য ব্রিটিশ রাজের পক্ষ হতে ছয়জন সৈন্য এসেছিল সূর্যকান্তের সাথে কথা বলতে। বৈঠক শেষে তারা আর ফিরে যায়নি। একদম লাপাত্তা। তাদের ঘোড়া পর্যন্ত পাওয়া যায়নি, এমনকি কোনো চিহ্ন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছেনা। তদন্ত করতে পাঠানো হলো ক্যাপ্টেন জেমস ম্যাকফি ওর তার দলকে। তারা এসে তদন্ত শুরু করার পর এমন কিছু তথ্য পেল যা হজম করতে বেগ পেতে হলো। তবে কি ঠগীরা এই এলাকায় চলে এসেছে? অসম্ভব কিছু নয়। কথিত আছে ঠগীদের এই দলটা ভারতের সেরা। এবং তাদের কাছে জোড়া কালী মূর্তি আছে। এই কালীমূর্তি যাদের কাছে থাকবে তাদের কেউ দমাতে পারবেনা। এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন পুকুরে পাওয়া গাড়ি ও লাশের সাথে ব্রিটিশ আমলের ঠগীদের একটা সম্পর্ক আছে। কী সম্পর্কে, কোন সুতায় দুটা অধ্যায় বাধা সেটা আপনারাই বের করে নিবেন। প্রথম থেকে দুটো আলাদা টাইমলাইনের গল্প বলা হয়েছে। ব্রিটিশ রাজের সময়কার এবং বর্তমান সময়কার। একটা অধ্যায় ব্রিটিশ রাজের, পরের অধ্যায়টা বর্তমানের। আবার এর পরেরটা ব্রিটিশ। এভাবেই আস্তে আস্তে সুতা ছেড়েছেন লেখক। দুটো টাইমলাইনকে সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিতে নিতে শেষ দিকে দুটো বিন্দু এক করে দেয়ার কাজটা খুবই সুন্দর ও সাবলীলভাবে করেছেন। সবথেকে ভালো লেগেছে বইয়ের নামকরণ। কাহিনী সংক্ষেপ পড়ে আপনাদের মনে হতে পারে, কাহিনীর সাথে নামের কোনো সম্পর্ক নেই। দাঁড়ান, ব্যাখ্যা করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। কাম, ক্রোধ, লোভ, মদ, মোহ ও মাৎসর্য। আমরা সাধারণত এই ছয়টি রিপুর কথা জানি। এই ছয়টি রিপুকেই ষড়রিপু বলা হয়ে থাকে। তাহলে সপ্তম রিপু আসলো কোথা থেকে? অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল ফিলোসফিতে রিভার্স থিউরি নামে একটা থিউরি আছে। রিভার্স থিউরি অনুযায়ী মানুষের রিপু আসলে সাতটা। সপ্তম রিপুটা হলো আসক্তি। না বুঝে অতিরিক্ত ভক্তির প্রতি আসক্তিই হল সপ্তরিপু। এই যে জঙ্গীবাদ, এই জঙ্গীরা অতিরিক্ত ভক্তির আসক্তিতে না বুঝেই দাঙ্গা ফ্যাসাদ করছে। এটাই সপ্তরিপু। এবার নিশ্চয় গল্পের সাথে নামকরণের মিল পেয়েছেন। ওই যে, কালীর সাধনা! প্রথম দিকে সাধারণ একটা থ্রিলার ভেবে পড়া শুরু করেছিলাম। সাধারণ বলতে আমি গতানুগতিক থ্রিলার মনে করেছিলাম। এই বই নিয়ে তেমন কোনো রিভিউ আমার চোখে পড়েনি বলে এমনটা হতে পারে। তবে এতটুকু জানতাম যে এই বইটা ঠগীদের কেন্দ্র করেই লেখা হয়েছে। পড়া শুরু করার পর যখন বেশ কয়েক অধ্যায় পড়ে ফেলেছি তখন বইয়ের পাতাগুলোয় আঠার মত লেগেছিল আমার চোখ। দুদিন একটানা পড়ে শেষ করেছি চারশো পৃষ্ঠারও উপরের একটা বই। গল্পটা আমার মাথায় এমনভাবে ঢুকে গেছিল যে বিকেলের আড্ডার সময়ও ভাবছিলাম জেমস ম্যাকফি, উইলিয়াম হেনরি কিংবা বাশারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে। এটাই বোধহয় একজন লেখকের সার্থকতা। এর আগে রবিন জামান খানের কোনো বই আমি পড়িনি। সেই হিসেবে খুবই ভালো একটা বই দিয়েই তার লেখার সাথে আমার পরিচয় হলো। এই বই নিয়ে কেন এত আলোচনা হয়নি সেটা আমার মাথায় ঢুকেনি। আলোচনা এবং প্রসংসার দাবিদার এই বই। তবে। এত প্রসংসার পর আবার তবে কেন? বইটার কাহিনী বা গল্প যতটাই ভালো লেগেছে ঠিক ততটাই বিরক্তিকর লেগেছে প্রচুর পরিমাণে ভুল বানান দেখে। ভুল বানানের কথা বাদ দিলাম, নরমাল টাইপিং মিস্টেক এত পরিমাণে ছিল যে বারবার মনোযোগ ছুটে যাচ্ছিল। আমি জানিনা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কেন এই ব্যাপারগুলোয় নজর দিচ্ছেন না। বানান ভুলের আধিক্য না থাকলে গত বছরের সেরা থ্রিলার বই বলা যেত সপ্তরিপুকে। লেখকেরও বেশ কিছু তথ্যগত ভুল রয়েছে। আশা করব এগুলো আস্তে আস্তে কাটিয়ে উঠবেন লেখক। তবে তিনি এমনই গল্প ফেঁদেছেন যে ঐসব ছোটখাটো ভুল নজর এড়িয়ে যায়। যারা এখনো সপ্তরিপু পড়েননি তারা দারুণকিছু মিস করেছেন। যারা কিনে রেখেছেন, আমার মত দেরি করে পড়ছেন তাদের বলব, আর দেরি করা ঠিক হবেনা মোটেও। হ্যাপি রিডিং। বইঃ সপ্তরিপু লেখকঃ রবিন জামান খান প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ প্রচ্ছদঃ ডিলান পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪৩০ মূল্যঃ ৪৫০ টাকা মাত্র

      By Ishtiak Ahmed

      14 Jul 2018 09:17 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অনেক দিন পর আবার বই পড়া শুরু করলাম "সপ্তরিপু" দিয়ে। মন্ত্রমুগ্ধের মত শেষ করলাম। রহস্য আর ইতিহাসের অসাধারণ এক কম্বিনেশনে উপন্যাসটি এক কথায় অসাধারণ! লেখকের অন্যান্য বইও পড়ে দেখার আগ্রহ অনুভব করছি।

      By Shamim Hossain

      06 Apr 2021 11:20 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      One hell of a book!

      By Nahid

      12 Mar 2018 05:31 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বেশ বড় একটা থ্রিলার উপন্যাস শেষ করলাম – সপ্তরিপু। বড় বললাম এইজন্য যে মোট ৪৪টি অধ্যায় কয়েকটা ছোট ছোট অধ্যায় মিলিয়ে এই মৌলিক থ্রিলার। ভালোই দক্ষতা দেখিয়েছেন লেখক বইয়ের নামকরণে। কাহিনী সংক্ষেপ সবাই জানেন ফেবুর কল্যাণে। তাই সেদিকে না যাই। অধ্যায় #... এর আগে বোঝার কোনও উপায় নেই উপন্যাসের নামকরণ এমন কেন। আর যদি শুধু গোগ্রাসে গিলতেই থাকেন তাহলে আরও পরে বুঝতে পারবেন। উনিশশো শতকের ছোট্ট একটা ঘটনা নিয়েই যত বিপত্তি। উইলিয়াম হেনরি স্লিম্যান আর তার ইনফেন্ট্রির এক কর্নেল, এক অপরিচিত ফরাসী লেখক এম. থিভেনট –র ভ্রমণ কাহিনী, ডাঃ রিচার্ড শেরউডের পান্ডুলিপি... আরও কত কি মেলাতে হয়েছে এই রহস্য সমাধানে। ভয়ংকর ছিল সেই রহস্য কিন্তু বেশ সাবলীলভাবে পাঠকের সামনে মলাটবন্দী করে হাজির করেছেন লেখক। আবার শেষেও টুইস্ট রাখতে ভোলেননি। তবে লেখক কি আরও একটা মৌলিক থ্রিলারের ক্লু দিয়ে রাখলেন নাকি? ময়মনসিংহের লোকাল ভাষা বেশ মজার। রমিজ দারোগাতো আরও এককাঠি সরেস, অন্যতম মজার ক্যারেক্টার বইয়ের। ছোট খাটো বানান ভুলগুলো উহ্য করতে পারলে সবাই তৃপ্তি পাবেন আশা করি। তবে মাঝখানে অন্য কোনও বই পড়বেন না। তাহলে ছন্দ পতন ঘটবে। তবে মনে রাখবেন বই পড়ুয়ারা কিন্তু কিন্তু ভালো রকমের রহস্যভেদী হয়। তাহলে নিজেই খুঁজুন রহস্যের শেষ কোথায়? #হ্যাপি_রিডিং

      By Ridwan Siddik

      30 Apr 2019 11:02 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_এপ্রিল বই:সপ্তরিপু। লেখক:রবিন জামান খান। বইয়ের ধরণ:ইতিহাস আশ্রিত থ্রিলার উপন্যাস। পৃষ্ঠা সংখ্যা:৪২৯ মুদ্রিত মূল্য:৪৫০ টাকা। প্রকাশনী:বাতিঘর। প্রথম প্রকাশ:ফেব্রুয়ারি ২০১৮। প্রচ্ছদ:ডিলান। #লেখক_পরিচিতি: রবিন জামান খান ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন।তবে তার পৈত্রিক নিবাস নেত্রকোনার কেন্দুয়ায়। তার মৌলিক-থৃলার উপন্যাস গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সপ্তরিপু।তার অন্যান্য মৌলিক-থৃলার উপন্যাসগুলো হলো ২৫ শে মার্চ,ফোরটি এইট আওয়ার্স,দিন শেষে,আরোহী,অন্ধ প্রহর ও ব্ল্যাক বুদ্ধা।এছাড়াও তিনি অনুবাদ করেছেন নো ইজি ডে,দ্য লাস্ট টেম্পলার,ম্যাপ অব বোনস্ ও অ্যালং কেইম অ্যা স্পাইডার। বর্তমানে তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। #গুরুত্বপূর্ণ_চরিত্রসমূহ: জেমস ম্যাকফি,মহাবীর সিং,জোনাথন,আহমেদ বাশার,জয়া সরকার। #কাহিনী_সংক্ষেপ: ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দ,কোম্পানির শাসনামলে বাঙ্গালে প্রদেশের মধুপুরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যরা রাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরির সাথে দেখা করে ফেরার পথে হঠাৎ গায়ের হয়ে যায়।তাদের সাথে কি ঘটেছে কেউ ঠিকমত জানে না।তাই জেমস ম্যাকফিকে তার অধীনে কর্মরত মহাবীর সিং ও জোনাথন এর সাথে পাঠানো হয় তদন্তের জন্য।তদন্তের সময় বেরিয়ে আসে ভারতবর্ষের বুকে বিচরণ করে বেড়ানো হিংস্রতম খুনে ডাকাতের দল - ইতিহাসে যারা 'ঠগী' নামে পরিচিত,যাদের মানুষ হত্যা করা পেশা নয় নেশা। অপরদিকে বর্তমান সময়ে ইন্সপেক্টর আহমেদ বাশার ময়মনসিংহ শহরের পরিত্যক্ত এক পুকুরের নিচ থেকে উদ্ধার করে একটি পুরনো গাড়ি এবং গাড়ির ভেতরে একজন মানুষের লাশ।এই ঘটনার রহস্য সমাধান করতে বাশার যখন দিশেহারা তখন তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে সাংবাদিক জয়া সরকার।তাদের সাথে ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়ে এক আর্কিওলজিস্ট।তারা জানতে পারে রহস্যের সমাধান লুকিয়ে আছে অতীতের এক অন্ধকার সময়ে এবং তার সমাধান করতে হলে তাদের যুক্ত হতে হবে প্রায় দুইশত বছরের আগের ক্যাপ্টেন ম্যাকফি আর তার অধীনে কর্মরত মহাবীর সিং ও জোনাথন এর সেই অভিযানে। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া_এবং_ব্যক্তিগত_মতামত: এমন অসাধারণ একটি বই লেখার জন্য রবিন জামান খান অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।বইটির নামকরণও চমৎকারভাবে করা হয়েছে।সপ্ত এর আভিধানিক অর্থ হলো সাত ও রিপু এর আভিধানিক অর্থ হলো শত্রু,সপ্তরিপু অর্থ হলো সাত শত্রু।মানুষের সাতটি শত্রু হলো যথাক্রমে মোহ,লোভ,কাম,ক্রোধ,অহংকার,পরশ্রীকাতরতা এবং নেশা।বইটিতে ফুটে উঠেছে নেশার কথা।কোনো নেশাই ভালো নয়,আর সেই নেশা যদি মানুষ হত্যা করা হয় তবে তার ভয়াবহতা কল্পনার বাইরে।বইটি ৪৪টি ছোট ছোট অধ্যায়ে বিভক্ত।লেখক একই সাথে দুইটি ঘটনাকে সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।বইটি পড়া শুরু করলে পাঠকদের বইটি পড়ার আগ্ৰহ বৃদ্ধি পেতে থাকবেই,এ ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত।এক কথায় বইটি মাস্টারপিস। ধন্যবাদ ব্যাক্তিগত রেটিং-৪.৮/৫ রিদওয়ান সিদ্দিক

    • Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুন ময়মনসিংহ শহর সরগরম! শানকিপাড়ার পরিত্যক্ত পুকুরের তলায় একটি পুরোনো কাদামাখা গাড়ি পাওয়া গেছে, ড্রাইভিং সিটে বসে আছে হলদে কঙ্কাল। ঘটনাটা ধামাচাপা দেওয়ার ইচ্ছে ছিল এলাকার প্রভাবশালী কন্ট্রাক্টর সাঈদ আলীর। সুবিধা হলো না, ইন্সপেক্টর আহমেদ বাশারের জন্য। ময়মনসিংহ থানার ওসি আহসান মল্লিক কেসটা সোপর্দ করেছে বাশারের হাতে। সাথে গছিয়ে দিয়েছে বাপের বয়সী রমিজ দারোগা আর সদ্য গোঁফ গজানো আব্দুল্লাহকে। এদের নিয়েই তদন্তে নেমে পড়লো বাশার। রহস্য জটিল হয়ে উঠলো ক্রমশ। গাড়িটা যে সময়ের হতে পারে, তখনকার সব দলিল - কাগজপত্র হাওয়া হয়ে গেছে। এদিকে বাশারকে ধাওয়া করে বেড়াচ্ছে রহস্যময় সাদা গাড়ি। ঘটনাক্রমে বাশারের সাথে জড়িয়ে পড়লো সাংবাদিক জয়া সরকার ও আর্কিওলজিস্ট রিফাত মজুমদার। জানতে পারলো রহস্যভেদ করতে হলে উন্মোচন করতে হবে দু'শো বছর আগের অন্ধকার অতীতের। এই ময়মনসিংহেরই মুক্তাগাছার জমিদার রাজা সূর্যকান্ত আচার্য এর কাছে এসেছিল ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধি দল। রাজার সঙ্গে দেখা করে সরকারের জন্য উপঢৌকন নিয়ে ফেরার পথে, রহস্যজনকভাবে উধাও হয় যায় সৈন্যদলটি। কি হলো তাদের - খোঁজ করতে পাঠানো হলো ক্যাপ্টেন ম্যাকফিকে, সাথে তার দুই বিশ্বস্ত অনুচর মহাবীর সিং ও লিউক জোনাথন। কাজটা সহজ নয়। একে তো ব্রিটিশদের উপস্থিতি তেমন ভালো চোখে দেখে না স্থানীয়রা, তার ওপর ছয়জনের দলটি যেন বাতাসে উবে গেছে, এমনকি ঘোড়াগুলোও গায়েব। ম্যাকফি জানতে পারলো এক ভয়ংকর কিন্তু সুশৃঙ্খল ডাকাত দলের কথা। জোড়া কালীর উপাসক তারা, স্থানীয় লোকেরা চেনে এক নামে - 'ঠগী'! কথিত আছে পারস্যের রাজা জেরেক্সিসের সৈন্যদলের একাংশ ছিল এশীয়, তারা চামড়ার ফালি দিয়ে শ্বাসরোধ করে মানুষ খুন করতে পারদর্শী ছিল। পারস্যের যুদ্ধ শেষ হলে সেই দলটি চলে আসে ভারতবর্ষে। গোড়াপত্তন করে ভয়ংকর ঠগী বাহিনীর। পঞ্চাশ জনের বড় দল নিয়ে পথেঘাটে ঘুরে বেড়ায় তারা। সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ী ও তীর্থযাত্রীদের দলের সাথে ভীড়ে যায়। কাপড়ের ফাঁস পেঁচিয়ে খুন করে লুটে নেয় সর্বস্ব। গুপ্ত এই দলটির খোঁজে অনেক বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল কর্নেল উইলিয়াম হেনরি স্লিম্যান। কিন্তু পর্যাপ্ত কোনো প্রমাণ না থাকায়, ব্রিটিশ সরকার তার কথা শুনতে নারাজ।একলাই ঠগীদের নির্মূল করার শপথ নিল হেনরি স্লিম্যান। উনিশ শতকের কর্নেল স্লিম্যান, ক্যাপ্টেন ম্যাকফি ও একবিংশ শতাব্দীর ইন্সপেক্টর বাশারের তদন্ত গেঁথে গেল এক সুতোয়। 'সপ্তরিপু' উপন্যাসে ব্রিটিশ আমলের ম্যাকফি ও বর্তমান সময়ের বাশারের গল্প চলেছে সমান্তরালে। দুটি ভিন্ন সময়ের টানটান কাহিনী বর্ণনার সময়ে, লেখক দক্ষতার সাথে পরিস্থিতিতে সামঞ্জস্য রেখেছেন। বাশার যখন থানায় খুঁজছে পুরনো ফাইল, ম্যাকফি হাটে সন্ধান করছে কোম্পানির ঘোড়ার। একটি অধ্যায় শেষ হয়েছে যে বাক্য দিয়ে, পরের অধ্যায় শুরু হয়েছে একইভাবে। শেষ অবধি এগিয়ে নিয়ে লেখক নিপুনতার সাথে দুটি সময়ের গল্পকে একসাথে জুড়ে দিয়েছেন। চরিত্রগুলোর মধ্যেও একধরনের মিল পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ের নায়ক বাশার তার ভুলের কারণে চাকরিতে ডিমোশন পেয়ে ময়মনসিংহ সদর থানায় এসে যোগ দেয়। তার অধীনে কাজ করে দুজন, রমিজ ও আব্দুল্লাহ। অন্যদিকে ম্যাকফিকেও মাদ্রাজ থেকে ব্রিটিশ সরকার একরকম নির্বাসন দেয় ভারতীয়দের পক্ষ নিয়ে কাজ করার জন্য, ময়মনসিংহে সে হাজির হয় দুই অনুচর নিয়ে। উপন্যাসের চরিত্রের গঠনে লেখক কোনো ছাড় দেননি। তাই ভুঁড়িওয়ালা রমিজ, আঞ্চলিক মেশানো শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা আব্দুল্লাহ, ফরেনসিক ল্যাবের টমি পোদ্দার, জমিদারের সহিস ডুম্বুর আলী, ডংরু মহারাজ, জোহরা - প্রতিটি চরিত্রের বৈচিত্র্য পাঠককে আলাদা স্বাদ দিবে। পুরো গল্পটি এগিয়ে গেছে ময়মনসিংহ শহরকে কেন্দ্র করে। স্থানীয় চরিত্ররাও অনেকে কথা বলেছে ময়মনসিংহের ভাষায়। যেসব পাঠক এই শহরের সাথে কোনোভাবে পরিচিত, তাদের কাছে ভালো লাগবে বইয়ের বর্ণিত শহরের অলিগলি, ব্রহ্মপুত্র নদী, শশীলজ, মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ির উল্লেখ। দড়ির খেলা, অস্ত্র আর পশুর হাটের বর্ণনায় প্রাচীন ভারতবর্ষের চিত্রায়ণও লেখক করেছেন চিত্তাকর্ষকভাবে। বইটির নামকরণও প্রাসঙ্গিক। মানুষের ষড়রিপুর কথা তো সকলেই জানে, এর বাইরে সপ্তম একটি রিপু রয়েছে - আসক্তি। অতিরিক্ত ভক্তির প্রতি অন্ধের মতো আসক্তিই হলো সপ্তরিপু, যাতে আক্রান্ত ছিল ঠগীরা। কালীর সাধনায় উন্মত্ত হয়ে, ঠগী ধর্ম বানিয়ে নির্বিচারে মানুষকে বীভৎস ভাবে হত্যা করতো তারা। ঠগীদের ইতিহাস লেখক গল্পে ভেঙে ভেঙে এমনভাবে এনেছেন যে, বিস্তৃত ইতিহাসও আরোপিত মনে হয়নি। দারুন থ্রিলারটিতে খারাপ লাগার মতো একটিই দিক ছিলো, অতিরিক্ত ছাপার ভুল। প্রুফরিডিং এর ক্ষেত্রে বাতিঘর প্রকাশনীর চরম অনিহা যথারীতি ফুটে উঠছিলো এই বইটিতেও। বাদবাকি বইয়ের বাঁধাই ও প্রচ্ছদ, সবই সন্তোষজনক। প্রায় চারশো পৃষ্ঠার ইতিহাস-আশ্রিত উপন্যাসটি জটিল প্লট, পাশাপাশি প্রবাহিত দুটি কাহিনী ও একের পর এক চমকের কারনে পাঠককে পাতায় একেবারে আটকে থাকতে বাধ্য করবে নিঃসন্দেহে। সাম্প্রতিক সময়ে পড়া সেরা থ্রিলার হিসেবে বইটি প্রিয় হয়ে থাকবে। বইঃ সপ্তরিপু লেখকঃ Robin Zaman Khan প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ প্রকাশনায়ঃ বাতিঘর প্রকাশনী প্রচ্ছদঃ ডিলান পৃষ্ঠাঃ ৪২৯ মুদ্রিত মূল্যঃ ৪৫০ টাকা

      By Nivea Haque

      25 Nov 2018 12:38 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বই : সপ্ত রিপু। লেখক : রবিন জামান খান। মূল্য : ৪৫০ টাকা। প্রচ্ছদ : ডিলান। পৃষ্ঠা : ৪২৮। প্রকাশনী : বাতিঘর। রিপু শব্দের আভিধানিক অর্থ শত্রু। মূলতঃ ইন্দ্রিয়গত ছয়টি দুষ্ট প্রবৃত্তিকে ষড়রিপু বলা হয়। ১. কাম - যৌন সঙ্গকামনা, রিরংসা, যৌনক্ষুধা। (Sex urge) ২. ক্রোধ - রাগ, উত্তেজনার বশীভূত হওয়া। (Anger) ৩. লোভ - লালসা । (Cupidity) ৪. মোহ - মায়া, বিভ্রম । (Illusion) ৫. মদ - অহংকার, গর্ব, আত্মগৌরব। (Arrogance) ৬. মাৎসর্য - পরশ্রীকাতরতা, অন্যের ভালো দেখতে না পারা। (Envy) সপ্ত রিপু কি তা জানতে হলে পাঠক আপনাকে পড়তে হবে রবিন জামান খানের সপ্ত রিপু বইটি। আসুন পাঠক তবে আমরা সপ্ত রিপুর কাহিনীটা সংক্ষেপে জেনে নেই। #কাহিনী_সংক্ষেপ : ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়াম, কোলকাতায় উইলিয়াম হেনরি স্লিলম্যানের হাত ধরে যে কাহিনী শুরু হয়, তার প্রভাব এসে পড়ে বর্তমানেও। স্লিম্যান তার জীবন বাজি রেখে যে ইতিহাসের পাতায় যে অধ্যায় রচানা করেছিলেন বর্তমান ঘোলা হচ্ছে সেই অতীত নিয়েই । বর্তমানে দেখা যায়, পারিবারিক বিপর্যয় আর ক্যারিয়ারে ব্যর্থ এক ডিমোশন প্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ইন্সপেক্টর আহমেদ বাশার বদলি হয়ে আসে নিজ শহর ময়মনসিংহে। তাকে কাজ করতে হচ্ছে ওসি সাবের আহসান মল্লিকের আন্ডারে, যে কিনা একসময় বাশারের বন্ধু ও ব্যাচমেট ছিল। এখানে আসাতেই মল্লিক বাশারকে গছিয়ে দেয় এক অদ্ভুত রহস্যময় কেস। ময়মনসিংহ শহরের পরিত্যক্ত এক পুকুরের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় এক পুরনো গাড়ি, ভেতরে পাওয়া যায় এক লাশ। বুড়ো রমিজ দারোগা আর অল্প বয়সী ড্রাইভার আব্দুল্লাহকে করা হয় বাশারের সহকারী। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ধারে মরিয়া বাশার যখন এদিকওদিক ছুটোছুটিতে দিশেহারা, তখনই তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে সাংবাদিক জয়া সরকার। রুক্ষভাষী হলেও জয়া ভীষণ কাজের। ওদের সাথে একসময় ঘটনাক্রমে জড়িয়ে পড়ে জয়নুল আবেদিন জাদুঘরের সাবেক কিউরেটর, আর্কিওলজিস্ট রিফাত মজুমদার। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে একে একে বেরিয়ে আসে সাপ। প্রতি পদক্ষেপে প্রতিবন্ধকতা, রয়েছে বিপদ, চলে ওদের উপর হামলা। বতর্মান ওদের টেনে নিয়ে যায় দেড়শত বছরের অতীত ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর অধ্যায়ে। ইংরেজ শাসন আমলে প্রতিষ্ঠিত ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির এক কর্নেল উইলিয়াম হেনরি স্লিম্যানের আবিষ্কার ; ভারতবর্ষের বুকে বিচরণকারী হিংস্রতম খুনি ডাকাত দল, যারা পরিচিত ছিল ঠগী নামে। যাদের আক্রমণে পড়ে মরতে মরতেও বেঁচে ফেরেন অনুসন্ধানকারী বৃটিশ অফিসার ক্যাপ্টেন জেমস ম্যাকফি। আর বাশারকে উন্মোচন করতে হবে বর্তমানের সাথে এর রহস্য। বাশার কি পারবে ইতিহাসের লুকিয়ে রাখা সত্য তুলে আনতে? পারবে কি তার ধ্বংস প্রায় ক্যারিয়ার পুনঃপ্রতিষ্ঠ করতে? জানতে হলে পড়তে হবে রবিন জামান খানের সপ্ত রিপু। #ভালোলাগা_মন্দলাগা প্রথমেই বলি মন্দলাগাটুকু। এত্ত জঘন্য ভুলে ভরা বই আমি আমার জীবনে দ্বিতীয়টি আর পড়িনি। আদি প্রকাশনীর একটা বই পড়ে তাদের উপর খুব রাগ হচ্ছিল। কিন্তু এই বইয়ে তার চেয়েও বেশি ভুল। রাগ হচ্চিল না, প্রচণ্ড কষ্ট লেগেছে আর হতাও হয়েছি। এমন একটা বই এরা এত দায়িত্বহীন ভাবে কি করে ছাপালো? প্রিয় বাতিঘর, দয়া করে এই ব্যাপার টা নজরে রাখবেন আশা করি। এখন আসি আমার মুগ্ধতায়। ইয়া আল্লাহ্‌ ইয়া আল্লাহ্‌ I can't imagine that a Bangladeshi writer could write such a book! আমি যাই বলবো তাই যেনো কম হবে। প্লট নির্মাণ, কাহিনী বিন্যাস, ঘটনার সুশৃঙ্খলিত বর্ণনা! উফফফ! কি নেই এই বইতে? ময়মনসিংহের শশীলজ, মুক্তাগাছার জমিদারবাড়ি, জয়নুল আবেদিন জাদুঘর, ব্রহ্মপুত্র নদ ছাড়াও রয়েছে আমাদের মময়মনসিংহের জানা অজানা বিখ্যাত সব স্থান। লেখক একই সাথে দুইটা সময়কে সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিয়েছে গেছেন। দেড়শত বছর আগের ভারতবর্ষ আর বর্তমান সময়ের ময়মনসিংহ শহর। বাশার, আব্দুল্লাহ, রমিজ দারোগা, জয়া আর রিফাত মজুমদারের সাথে আমিও দাপিয়ে বেড়িয়েছি সারা ময়মনসিংহ। আমি আর কিছু না বলি পাঠক নিজেই পড়ে দেখবেন আশা করি। প্রিয় বাতিঘর তোমার কপালে আরও ইয়ে ছিল, শুধু এত সুন্দর বইটা উপহার দেয়ার জন্য মাফ করে দিলাম। তবে ভবিষ্যতে অবশ্যই এই ব্যাপারগুলা খেয়াল রাখবেন। বই হোক ভালোবাসার প্রতীক।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!