User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ফালতু বই,ভালো লাগেনাই
Was this review helpful to you?
or
বইঃ ত্রিলয় লেখকঃ সুমিত শুভ্র, আরিফ হোসাইন রুদ্র, আর্য্য প্রকাশনীঃ বইপোকা প্রকাশন প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ জনরাঃ কবিতা সংকলন প্রচ্ছদঃ ওয়াহিদ অনঘ পৃষ্ঠাঃ ৮০ মূল্যঃ ১৮০ টাকা 'কবিতা' সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। যখন কোনো ব্যাক্তি তার হৃদয়ের আবেগানুভূতি গুলোকে ছন্দ, তাল আর লয়ের ব্যঞ্জনায় ব্যক্ত করেন তখনেই তা কবিতাতে রূপ পায়। মূলত কবিতা হচ্ছে সুন্দর্য্যের প্রকাশ। প্রাণ আর মন যখন একই মোহনায় মিলিত হয়ে গান গেয়ে উঠে, যেখানে স্বর্গের সব শান্তির আলোরা একত্রিত হয়, একে অন্যের শান্তিময় পরশ পেতে তখনেই তা কবিতা হয়ে ঝড়ে পরে। #বইয়ে_কবিতা_সম্পর্কে_আলোচনাঃ 'ত্রিলয়' নামটা শুনলেই অন্যরকম একটা ভাবানুভূতি কাজ করে, তিন লয়ের মিলনেই হয় ত্রিলয়। বইটিতে তিন জন কবির ভিন্ন ভিন্ন সাধের মোট ৪৭ টি কবিতা রয়েছে। প্রথমে সুমিত দা'র মোট ১৮ টি কবিতা রয়েছে। সেগুলো শুধু যে কবিতা তা নয়, সেগুলোর একেকটাকে সুখ, ভালোবাসা, দুঃখ, কান্না আর আশা বলা যায়। দাদার প্রথম কবিতা "কান্না"। কবিতাটা আমার হৃদয় ছোঁয়ে গেছে... মনে হলো আমি আমার জীবনের একেকটা মুহূর্ত কোনো চাপা অক্ষরে পড়ছি। "কান্না হল রক্ত বোনা মলিন ফিকে জামার ! জন্ম থেকে আজ অবধি কান্না সঙ্গি আমার... ♥♥♥ "তিলকাব্য " কবিতাটা অসম্ভব ভালো লেগেছে আমার, এই কবিতার প্রতিটা লাইল ভালোবাসার শিহরণ জাগায় অন্তত এতটুকু মানতে হবে। "তোমার ঐ গালের তিল প্রতিবাদীর জ্যান্ত মিছিল বুকপকেটে রক্ত সিল তোমার এই গালের তিল" ♥♥ তাছাড়াও দাদা'র অন্যান্য কবিতাগুলো যেমনঃ 'আমার হাতে পাঁচটা গোলাপ , দুঃখ বেশি দিন থাকে না, এখন যেমন স্বাধীনতা, ভুলে যাও, অমানুষ, আমার খুব খুব ভালো লেগেছে। কবিতা দিয়েও যে হৃদয় স্পর্শ করা যায় এটা দাদা ঠিক প্রমান করলেন। বইটির দ্বিতীয়তে আছে আর্য্য দা'র ১২টি কবিতা। তার প্রথম কবিতা "অনুকাব্য " " আমি মানুষকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি, আমি মানুষকে সবথেকে বেশি ভালোবাসি। আমি মানুষকে বলি, ছুঁসনে তুই অভিশপ্ত, আমি মানুষকে বলি, ফেলে যাসনে আমায় আমি অনুতপ্ত। :O শুরুতেই যদি এমন পঙক্তিমালার দেখা মেলে তখন কি আর তার কবিতাকে অগ্রাহ্য করার কোনো ক্ষমতা কারো আছে... আমার ছিল না, বাকিটা আপনাদের জন্যই রইলো। দাদা'র কবিতা গুলোর মধ্যে আমার যে কবিতা গুলো খুব বেশি পছন্দ হয়েছে তা হলোঃ পূজারিণী, চোখের জলটা মুছে নাও, জন্মদিন, এখনো বাতাসে শুনতে পাবে, এক মুঠো ভাত, মাংসপিণ্ড, কেউ দেয়নি হাত বাড়িয়ে। এই কবিতা গুলোর মধ্যে সমাজে নারীর যে অবস্থাটা সেটাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, দেখিয়েছে সমাজের অসংগতিকে। যা একটু হলেও আপনার হৃদয়কে নাড়া দিয়ে যাবে। পুরুষ হিসাবে আর্দশবান হবার উপলদ্ধি জন্মাতে সাহায্য করবে। ক্ষুধায় কাতর ছেলেটির আর্তনাদ করবে বিহ্বল। "শোন মেয়ে, প্রতিরাতে তোমার করতে হবে আপোষ, মুখ বুজে থাকাটা শিখে নাও। প্রতিদিন তোমাকে পরতে হবে মুখোশ, চুপ থাকাটা জেনে নাও। :'( "সুহাসিনী " সব থেকে বেশি পছন্দের কবিতা। কবিতার প্রতিটি শব্দে যেন শুধু ভালোবাসাতেই টইটম্বুর। বইটির শেষের দিকে আছে 'আরিফ হোসাইন রুদ্র ' ভাইয়ের মোট ১৭ টি কবিতা। এগুলো যেন শুধু কবিতা না সতেরো রকমের ভালোবাসা নিবেদন। একটি কবিতা থেকে একটি কবিতাকে আলাদা ভাবে প্রিয় বলা যায় না, সবগুলোতেই প্রিয় শব্দটি যেন লেপটে আছে। জোর করেও তাকে ছড়ানো যাবে না। "আবির মাখা বিকেল গুলো যাচ্ছে দিয়ে ফাঁকি, আচ্ছা চলো দুজন মিলেই বিকেল কিনে রাখি। ♥♥♥ আহাঃ! কি না চাওয়া আর স্বপ্ন দু'জনের। এমন পঙক্তি গুলো পড়লে মনে হয় এখনেই প্রেমে পরি। এমনি ভাবেই আমরাও স্বপ্ন আঁকি, বিকেল কিনি। রুদ্র ভাইয়ের কথোপকথন -১'২'৩ সবগুলোই অসাধারন ছিল। একেকটাই ৩-৪ বার করে পড়েছি। #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ কবিতা কখনোই আমার প্রিয় বিষয় ছিল না, আগে কবিতা পড়লেই যেন কেমন বিরক্ত লাগতো, মনে হতো লুতুপুতু টাইপ কিছু প্রলাপ ছাড়া কিছুই না। তবে নির্মেলেন্দু গুণের কিছু কবিতা পড়ে কবিতার প্রতি একটু বিশ্বাস সৃষ্টি হলেও তার ভিত্তি ছিল ঠিক নড়বড়ে । তবে কিছুদিন ধরে অন্যদের কবিতা পড়লেও কেমন জানি একটা ভালো লাগা কাজ করছে, হয়তো কবিতার মত কবিতা পড়ছি বলেই। সেই প্রেক্ষিতেই কিছু কবিতার বই কেনা। সেখানে ছিল "ত্রিলয়" বইটাও। সুমিত'দা আর রুদ্র ভাইয়ের টাইমলাইনে তাদের কিছু কবিতা পড়েই তাদের প্রতি একটু ঝুক । তাই নির্দ্বিধায় তাদের বইটি কেনা। বই হাতে পাওয়ার পরেই এই ' ত্রিলয় ' দিয়েই শুরু করলাম। মধ্যরাতে আলস্য তন্দ্রায় বইটা পড়া শুরু করলেও, মুহূর্তে চাঞ্চল্যকর হয়ে উঠে চোখজোড়া। ভেবেছিলাম দু'চারটে কবিতা পড়েই রেখে দিবো কিন্তু তার সাধ্য আর আমার হলো না। কোনো এক অজানা মুগ্ধতায় যেন আটকে গেছিলাম নিমিষে। সম্মোহিত হয়ে পড়েছিলাম তিন জনের কবিতার মন্ত্রে। পড়া শেষে তবে আমি আমাতে ফিরে এলাম। বলা যায় মোট ৪৭ টা কবিতা যেন ৪৭ রকমের সম্মোহন, সে তার নিজস্য রাজ্যেই আমায় যেন তার মত করে বিচরণ করেছিল। তিন লয় যখন এক মলাটে আবদ্ধ হয়েছে তখন এমটা হওয়াই স্বাভাবিক। কি নেই বইটাতে ? প্রেম, ভালোবাসা, আশা, হতাশা , অভিমান, অনুযোগ, বিরহ,.... সব ধরনের হৃদয়ানুভূতি প্রবহমান এই বইয়ে পাঠক সব সাধ পাবে এক মলাটে। বইটার এত এত গুণাবলীর সত্ত্বেও এর সামান্য কিছু ত্রুটি চোখে পড়েছে, তা হলো বানানের ভুল। বেশি হলে দুই থেকে তিনটে বানান ভুল পেয়েছি। হয়তো সেটা টাইপিং মিস্টেক হলেও হতে পারে। আর বইটার মলাট মূল্যের কথা না বললেই নয়, ৮০ পেইজের একটা বই ১৮০ টাকা দাম নির্ধারণ করাটা একটু জুলুম হয়ে গেছে। আরেকটু কমও করা যেত। সবশেষে বইয়ের বাইন্ডিং, পেইজ, প্রিন্টিং আর শব্দ ডেকোরেশনে ছিল বেশ দক্ষ হাতের ছোঁয়া, তা বইটা হাতে নিয়েই বুঝা যায়। বইটার সব থেকে বেশি আকৃষ্ট করে তার প্রচ্ছদ। এর জন্য প্রকাশনাকে আর প্রচ্ছদ শিল্পিকে ধন্যবাদ না দিলেই নয়। কৃতজ্ঞতা বইপোকা প্রকাশনের সকল কলাকুশলীদের, তাদের এই মহৎ প্রচেষ্টার ফলেই হয়তো পাঠক একটি ভালো বই হাতে পেয়েছে । #ব্যাক্তিগত_রেটিংঃ ৯/১০