User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
পুরো বইটা পড়ার পর আমার মনে হয়েছে লেখক খুব তাড়াহুড়া করে উপন্যাস শেষ করছে । উপন্যাসের মূল থিমটা অনেক অনেক স্ট্রং থাকলেও উপন্যাসটা অনুধাবন করার জন্য যতটুকু ডিটেইলস দরকার ছিল ততটুকু ছিল না ।। লেখক যখন ইচ্ছা একটা চরিত্র তৈরী করে নিয়েছে , আবার যখন ইচ্ছা তাকে মেরে ফেলেছে । লেখক চাইছিল বন্যা আক্রান্ত মেঘনার আশে পাশের গ্রামের মানুষদের দুর্দশার বর্ননা দিতে এবং এটা করতে গিয়েই তিনি হুটহাট কিছু চরিত্র তৈরী করেছে , তবে চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তুলতে পারে নি । এমনকি সাসপেন্সের জন্য যেসব সমস্যা তৈরী করেছে তা তৈরী হবার আগেই সমাধান করে গেছে । সবকিছু ধরলে উপন্যাসটা পড়েছি কিন্ত গল্পের ভিতরে যেতে পারি নি ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুন ছেলে পতিতালয়ে গেলে সাধারণত বাবা খুব মারধোর করেন কিংবা কঠিন কিছু কথাবার্তা শোনান,এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, কাজলের বাবা যেদিন জানতে পারলেন তার ছেলে পতিতালয়ে গেছে সেদিনই ছেলেকে ঠাণ্ডা গলায় বললেন, "তোমার ব্যাগ গুছাও,আগামী সপ্তাহে তুমি লস এঞ্জেলসে যাবে।" আমেরিকা প্রবাসী কাজল হঠাৎ করে একদিন শুনলো, তার বাবা আর বেঁচে নেই। ছয়তলা ছাদ থেকে মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন।খবর শুনে দীর্ঘ নয় বছর পর যখন সে দেশে ফিরলো তখন আর তার বাবা নেই, আছে বাবার নতুন কবর। তার বাবা ডায়রি লিখতো না কিন্তু টুকরো কাগজে অনেক কিছু লিখতেন। সেসব টুকরো কাগজ থেকে যেসব লেখা উদ্ধার হলো তা এরকম "বাবা, তোকে ছাড়া থাকতে আমার কষ্ট হয়" আরেকটাতে লেখা "তুই দেশে আয়,এবার তোর বিয়ে দিব"। এরপর একটা সাদা কাগজের দুটি লাইন কাজলকে এলোমেলো করে দিলো। যেখানে লেখা -" জলেশ্বরী গ্রামের ইব্রাহিম গাজী আমাকে ঘুমোতে দেয় না। মাঝে মাঝে মনে হয় লাফিয়ে পড়ি ছাদ থেকে" এটা পড়েই কাজল বুঝলো তার শক্ত-সামর্থ্য বাবা মাথা ঘুরে পড়ে যাননি বরং আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু কেন? কে এই ইব্রাহিম গাজী আর কোথায় বা জলেশ্বরী গ্রাম! শুরু হলো জলেশ্বরী গ্রামের খোঁজ। সময়টা ১৯৮৮ সাল। আটাশি সালের বন্যার তাণ্ডবে গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গেছে। শুধু গ্রাম না, মানুষ,পশুপাখি সব ভেসে গেছে, যাচ্ছে। তখন জলেশ্বরী গ্রামের খোঁজে সাতার না জানা কাজল ছোট্ট নৌকা আর দুজন মাঝি নিয়ে যাত্রা করে! মাঝপথে সেই দুজন মাঝি কফির সাথে ধুতরা মিশিয়ে কাজলকে খাইয়ে দেয় এবং জনমানবহীন চরে তাকে ফেলে রেখে জিনিসপত্র নিয়ে ভেগে যায়। তখন কাজল সাক্ষাৎ পায় তাপসীর। হিন্দু, বিধবা মেয়ে। এই জনমানবহীন চরে মেয়েটা কেন এলো কাজল জানে না। তবে এখানে থাকলে যে বেশিদিন বাঁচবে না তা ঠিক জানে।তারা যখন জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে তখন তাদেরকে আশ্রয় দেয় এক বেদে সম্প্রদায়, যাদের গন্তব্য জলেশ্বরী গ্রাম। বেদেদের জীবনযাপনের সাথে অনভ্যস্ত কাজল এবং তাপসী দু'জনে বেশ মানিয়ে নেয়। গ্রামের পর গ্রাম যেখানে ডুবন্ত। দু-মুঠো খাবারের জন্য বউ স্বামীকে ছেড়ে যায়, বাবা কয়েকটা টাকার বিনিময়ে সন্তানকে বিক্রি করে দেয় সেখানে বেদের এই আশ্রয় তো স্বর্গতুল্য। একপর্যায়ে কাজল,তাপসীকে তার সাথে জলেশ্বরী যাওয়ার প্রস্তাব দিলে তাপসী যেতে রাজি হয় না। আলাদা হয়ে যায় তারা। কলেরা তখন গ্রামে গ্রামে মহামারী আকার ধারণ করেছে।শতশত মানুষ রোজ মারা যাচ্ছে। তাপসী শিবপুর গ্রামে সেসব কলেরা রোগীদের সেবায় ব্রতী হয়েছে। ঘটনাক্রমে কাজলের সাথে তাপসীর শিবপুরে আবার দেখা হয়।একপর্যায়ে মহামারী কলেরা তাপসীকে আক্রমণ করলে,তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়ার জন্য কাজল নৌকা নিয়ে ছুটে চলে। মাঝপথে ডাকাতদের কবলে পড়ে নৌকা। শোনা যায় ডাকাতদের কবলে পড়লেই মৃত্যু। তাপসীকে কি কাজল হাসপাতালে নিতে পারবে?কাজল কি ইব্রাহিম গাজীর খোঁজ না পেয়েই মারা যাবে ! তবে, তার বাবার আত্মহত্যার কারণ কি অজানাই থেকে গেলো ? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া কাহিনী সংক্ষেপ করতে যেয়ে যে কী মসিবতে পড়েছি! কোনটা রেখে কোনটা বাদ দেব এরকম অবস্থা। পুরো বইটা না পড়ে শুধু রিভিউ পড়ে এ বইয়ের স্বাদ আস্বাদন করা যাবে না। কারণ প্রতি পৃষ্ঠা সমান গুরুত্বপূর্ণ, কোন পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে এগিয়ে যাওয়া একপ্রকার অসম্ভব বিষয়। 'একটি শাড়ি ও কামরাঙা বোমা' বইটির পিডিএফ পড়ে ওবায়েদ হক'র লেখার পুরোদস্তুর ভক্ত বনে গেছিলাম। আর আজ 'জলেশ্বরী' বইটা শেষ করে পুরোপুরি স্তম্ভিত হয়ে গেছি। মানে উপন্যাসের নাম করে এত দারুণভাবেও জীবন লিখে ফেলা যায়! সামাজিক না সাম্প্রদায়িক উপন্যাস নাকি থ্রিলার পড়লাম! তা নিয়ে দোটানা না বহুটানার মধ্যে পড়েছি আপাতত। এতদিন ধরে যত্ন করে জমিয়ে রাখা বইটা এক নিমেষেই শেষ হয়ে গেলো! বইটা আমি উপহার পেয়েছি অনেকদিন আগে।কিন্তু বইটা পড়িনি। কারণ আমার শুধু মনে হতো পড়লেই তো শেষ হয়ে গেলো।যদিও এ বইটা যে আমাকে ক'দিন পর আবার পড়তে হবে তা আমি জানি এখন। তবে, জমিয়ে রেখে পড়ার মাঝে আলাদা তৃপ্তি আছে। লেখকের দক্ষতার পরিচর বইয়ের পৃষ্ঠা, প্রতিটি চরিত্রে লেগে আছে।লেখক পরিচিতিতে যেমন লেখা আছে, "বইয়ের শেষ পৃষ্ঠা উল্টিয়ে লেখকের পরিচয় পাওয়া সম্ভব নয়... লেখকের পরিচয় পাওয়া যাবে প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠার মাঝের পৃষ্ঠাগুলোতে....'' তেমনি বইটা পড়ে লেখকের পরিচয় পেয়েছি। চরিত্রগুলো যে কী ভীষণ রিয়েলিস্টিক,বইটা না পড়লে বোঝা যাবে না। লেখকের লেখার ধরণ অন্যরকম। অন্যরকম বলতে, তিনি একদম নিজের মতো করে লিখেছেন। জীবন ঘনিষ্ঠ উপন্যাস অথচ পরতে পরতে টুইস্ট লুকোনো। পড়তে নিয়ে শুধু মনে হচ্ছে এরপর কী হবে! আর যা হচ্ছে তা ধারণার বাইরে। যেন থ্রিলার উপন্যাসকেও হার মানায়। আর হ্যাঁ অস্প্রদায়িকতার চর্চা করতেও শেখায় বইটা। পদ্মা নদীর মাঝি বইটা পড়ার পর নদী ভিত্তিক আর উল্লেখযোগ্য তেমন বই পড়া হয়নি। জলেশ্বরী পুরোপুরি নদী ভিত্তিক না হলেও পুরো বইটা জুড়েই নদীর স্থান আছে, যা গল্পটাকে আরো জীবন্ত করে তুলেছে। একতরফা প্রশংসা হয়ে যাচ্ছে, তাইনা? তবে সত্যি বলতে সমালোচনা করার জন্য একটু খারাপ লাগা থাকতে হয়। এই যে,এতটুকু আমার ভালো লাগেনি।কিন্তু আমার তো পুরো বইটাই ভালো লেগেছে, সমালোচনা কী নিয়ে করবো? ওহ হ্যাঁ! প্রকাশনী নিয়ে করা যেতে পারে। হৃদি প্রকাশনীর এই বইটাতে অক্ষরগুলো এত ছোট যে পড়তে একটুখানি অসুবিধা হচ্ছিল প্রথমে কিন্তু বইয়ের চমকপ্রদ কাহিনী সেই অসুবিধা টুকুকে ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেয়নি। বানান ভুল বা প্রিন্টিং মিস্টেক তেমন চোখে পড়েনি।আর প্রচ্ছদটা দেখতে কিউট। যারা এখনকার লেখকদের লেখা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন, দয়া করে 'জলেশ্বরী' বইটা পড়বেন। বই- জলেশ্বরী লেখক- ওবায়েদ হক প্রকাশনী- হৃদি প্রকাশ পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৪৪ মুদ্রিত মূল্য- ২০০৳
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ 'জলেশ্বরী গ্রামের ইব্রাহিম গাজী আমাকে ঘুমাতে দেয় না।' মৃত বাবার পুরনো কাগজপত্রের মধ্যে একটা সাদা চিরকুটে লেখাটা খুঁজে পেয়েছিল কাজল। তার বাবা মাহতাব ভূঁইয়া শুদ্ধ মানুষ ছিলেন, সমাজে অর্থবিত্তে প্রভাবশালী। মার মৃত্যুর পর কাজল যখন প্রায় বখে যেতে বসেছে, বাবা তাকে আমেরিকায় পাঠিয়ে দিলেন উচ্চশিক্ষার্থে। ফিরল বাবার মৃত্যুতে, নয় বছর পর। তখন সাল ১৯৮৮। বানের জলে ভাসছে গোটা দেশ। এরমধ্যেই মেঘনা নদীতে বজরা ভাসালো কাজল, জলেশ্বরী গ্রামে যাবে। সাথে দুই অকর্মা মাঝি বজলু আর লিয়াকত। ডুবন্ত বিষন্ন গ্রামগুলো পার হয়ে যেতে যেতে সুখী সাচ্ছন্দ্যের জীবনের বাইরে নতুন এক জীবন দেখলো কাজল। লোভে পড়ে দুই মাঝি কাজলকে সর্বস্বান্ত করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে গেলো নির্জন এক চরে। সেখানেই দেখা পেলো দা হাতে রুদ্রমূর্তি এক নারী তাপসীর। কাজল কি খুঁজে পাবে জলেশ্বরী গ্রাম? জানতে পারবে কে এই ইব্রাহিম গাজী? বাবার রহস্যটা ভেদ করতে পারবে? পাঠপ্রতিক্রিয়া: 'জলেশ্বরী' উপন্যাসটির কাহিনী সংক্ষেপ পড়ে খুব সাদামাটা মনে হতে পারে, কিন্তু একে অসাধারণ করে তোলার প্রধান চালিকা শক্তি লেখকের বর্ণনাশৈলী। এমনভাবে বন্যার বাস্তবতা, প্রকৃতি, আর মেঘনাপাড়ের মানুষদের জীবনযাত্রা বর্ণনা করেছেন, পাঠক নিজেও কাজলের নৌকার একজন যাত্রী হয়ে যাবেন। মাস্টারের 'তৈলাক্ত চুলে চিরুনীর শৃঙ্খলা' আর 'ষোড়শীর ত্বকের মতো ভাঁজমুক্ত শার্ট' এর কথা পড়লেই গোটা চরিত্রটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। উনত্রিশ দিন ভালোভাবে না খাওয়া চোরের গরম ভাত-তরকারির ধোঁয়ার গন্ধ হাঁ করে বুকের ভিতরে টেনে নেওয়ার বর্ণনা পাঠককেও ক্ষুধার্ত করে তুলবে। বেদেদের জীবনও জীবন্ত লেখকের লেখনীতে। জলের মাঝেই যাদের জীবন, জলের সাথেই বেঁচে থাকা। মৃত্যুও তাদের কাছে অকিঞ্চিৎ। নদীতে যখন প্রবল ঝড় ওঠে তখন তারা বেঘোরে ঘুমায়, শঙ্কাহীন। ঝড় থেমে গেলে মেয়েরা ভিজে শাড়ি ছইয়ে মেলে দিয়ে নিত্যকার কাজে লেগে যায়। পুরুষরা গলুইয়ে বসে হুকো টানে। এই অংশটা আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়েছি। এতোটা পরিপাটি করে গোটা চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন যে, আমার মনে হচ্ছিল লেখক নিজেই হয়তো মেঘনার পাড়ে পাড়ে এভাবে ঘুরে সব সচক্ষে দেখে বেড়িয়েছেন। একই সাথে অসাধারণ ছিল উপমার ব্যবহার। 'নদী সন্ন্যাসী ভিক্ষুকের মতো মানুষের উঠানে গিয়ে উঠেছে। নদীর পানি ছানি পড়া বৃদ্ধের চোখের মতো ঘোলা।' বন্যাকে এতো সহজ উপমায় একেবারে দৃশ্যমান করে এনেছেন লেখক। অনাহারে আর জীবনসংকটে থাকা মানুষগুলোকে দেখা ছিল বৈভবের মধ্যে বেড়ে ওঠা কাজলের জন্য অন্য এক অভিজ্ঞতা। তাই তার চোখ দিয়ে লেখক দারিদ্র্য, বাস্তবতা ধীরে ধীরে উপলব্ধি করিয়েছেন। চরে আটকে পড়ে যখন ক্ষুধার জ্বালায় বইয়ের পাতা চিবুচ্ছে কাজল, তখন সে বুঝতে পারে খিদের কাছে নৈতিকতা কতটা তুচ্ছ। আবার চর্চিত না হলেও স্বার্থের খাতিরে এরা ধর্মকে সহজেই ব্যবহার করে অস্ত্র হিসেবে। জলেশ্বরীর খোঁজে চলতে চলতে কাজলের দেখা হয়েছে বিভিন্ন চরিত্রের সাথে। গল্পের ভিতর গল্প এই চরিত্রগুলোর। কিশোরী কমলা যেখানে জেনে যায় মেয়ে হয়ে জন্মানোই তার পাপ। মুক্তিযোদ্ধা আসাদ উদ্দীন গ্রামে গ্রামে লাশ দাফন করে বেড়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মেজরের কাছ থেকে পাওয়া ওভারকোটটাই যার সার্টিফিকেট। মাস্টার নিতাই জোর করে নৌকায় জুড়ে বসে ভাত খায়। কিন্তু যখন বলে পড়ালেখা করেছে, সম্মান বিসর্জন দিয়ে অন্যদের মত তো শালুক তুলতে পারে না তাই ক্ষিদের পীড়ায় বাড়ি বাড়ি নিমন্ত্রণ ভিক্ষে করে - গোটা চরিত্রটিই যেন বদলে যায় মূহুর্তে। আর সর্বোপরি তাপসী। অসহায় দুঃখের জীবনে ভাগ্যের ফেরে সে কলঙ্কিনী। নিজের অভিশপ্ত জীবন তাই কাজলের সাথে জড়াতে চায় না। কলেরা আক্রান্ত গ্রামে সর্বস্ব দিয়ে সেবা করে। কিন্তু মানুষের সংকীর্ণতা পিছে ফেলতে পারে না। তার গল্পের মধ্য দিয়ে মানুষের ধর্মীয় গোঁড়ামি আর তার স্বার্থপর ব্যবহার ফুটে উঠেছে। 'জলেশ্বরী'র কিছু ঘটনার মোড় অতি নাটকীয় ছিল। শোভা বা তাপসীর সঙ্গে কাজলের দেখা হয়ে যাওয়া বা বজলু-লিয়াকতের পরিণতিকে বেশি কাকতালীয় ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। তবে লেখক তার রচনাশৈলী দিয়ে এসব ছাপিয়ে গেছেন। উপন্যাসটি এর আগে আদী প্রকাশন থেকে প্রকাশ পেয়েছিল। পরবর্তীতে হৃদি প্রকাশ বইটি নতুনরূপে প্রকাশ করেছে। বইয়ে মুদ্রণ জনিত কিছু ভুল ছিল। প্রচ্ছদ দেখতে সুন্দর, কিন্তু গল্পের সাথে একেবারেই খাপ খায় না। নীল পানির সাথে মিল রেখে কিছু হলে হয়তো ভালো লাগতো। বইয়ের আকার সুন্দর, কিন্তু লেখার সাইজ স্বাভাবিকের চাইতে ছোট করায় পড়তে একটু অসুবিধা হয়। আমন্ত্রণ রইলো জীবনের গল্প, জলের গল্প 'জলেশ্বরী' পড়ার। বই: জলেশ্বরী লেখক: ওবায়েদ হক প্রকাশকাল: ২০১৮ (২য় সংস্করণ) প্রকাশনায়: হৃদি প্রকাশ পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৪৪ মূল্য: ২০০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
#কাহিনি_সংক্ষেপ মাহতাব ভূঁইয়ার ছেলে নয় বছর পর দেশে এসেছে বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে। মাহতাব ভূঁইয়া ছিলেন অনেক বিত্তবান একজন মানুষ। নয় বছর তিনি তার ছেলেকে আমেরিকাতে রেখে পড়াশোনা করিয়েছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তাদের মাঝে যোগাযোগ প্রায় হতোনা বললেই চলে। কিন্তু কেন? বাবা তার ছেলের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতেই পারে, এবং এটাইতো নিয়ম ছিলো। কিন্তু তাদের মাঝে তা হয়নি কেন? ছেলেকে খবর পাঠালো যে তার বাবা বাড়ির ছাদ থেকে মাথা ঘুরে পরে মারা যান, কিন্তু ছেলে বিশ্বাস হয়না, কারন তার বাবার ড্রয়ার ঘাটতেই সে একটি চিঠি পায়, সেখানে লিখা ছিলো ‘জলশ্বরীর ইব্রাহিম গাজীর জন্য তার ঘুম হয়না। তার জন্যই সে মারা যাবে।’ ছেলেকি আর স্বাভাবিক থাকতে পারে? ম্যানাজারকে বলে ঠিক করলো সে ‘ জলেশ্বরী’ গ্রামে যাবে। লেয়াকত আর বজলু দুই বাচাল মাঝিকে সাথে নিয়ে রওনা হয় জলেশ্বরী গ্রামের দিকে। কিন্তু তারা ভুলে জলছর গ্রামে চলে যায়। তখন চলছে ১৯৮৮ বন্যা। ছেলেটি খু্ব কাছথেকে দেখতে পায় গ্রামিন মানুষ গুলোর কি দুর্বিসহ জীবন যাপন। যেখানে ক্ষুদার কাছে মানুষ পরাজিত। যার জন্য নিজের মান সম্মান বিকিয়ে দিতে এতটুকু কার্পন্য করেনা। পানির উপর মানুষগুলোর ভাসমান জীবন। ঘুড়তে ঘুড়তে তারা ঐ গ্রামের এক ইব্রাহিম গাজীর সাথে দেখা হয়, কিন্তু ঐ দেখাই সার। সে আসল ইব্রাহিম না। সেখান থেকে চলে আসার সময় ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। ইব্রাহিম গাজী তার মেয়েকে বিক্রি করতে আনে তার কাছে। সেতো ঘটনার আকস্মিকতায় কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থা। কি হয় পরে? বাচাল দুই মাঝি দারুন এক চাল তৈরী করে মনিবকে অজ্ঞান করে বিরান এক চরে ফেলে রেখে চলে যায় তার টাকা ভরা সিন্ধুকটা নিয়ে এই বিরান চরেই দেখাহয় আরেক অজনা মেয়ে তাপসির সাথে। কিন্তু এই তাপসি মেয়েটা এই বিরান চরে কি করতে আসলো? আর তার হাতে দাঁ কেন? সে এক করুন কাহিনি পাঠক। আর এখান থেকেই শুরু তার দুর্যোগপূর্ন বন্যাকবলিত নদীর পাশের গ্রামিন মানুষের দুঃখের সময়ের স্বাক্ষী হবার। সে এক কষ্টের, আনন্দের, চাওয়ার, পাওয়ার, হারানোর এক গল্প। আচ্ছা তাপসী কি হিন্দু না মুসলিম? তাপসী এতো ওলা উঠা রোগীর (কলেরা রোগ) সেবা করলো, কিন্তু তার কি হলো? ইব্রাহিম গাজী আসলে কে? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া কথা সাহিত্যিক(আমি বললাম। আমার তাই মনে হলো) ওবায়েদ হকের পড়া আমার দ্বিতীয় বই এটি। প্রথম বই পড়েছি “নীল পাহাড়”। এই দুইটা বই পড়েই আমি বলে দিলাম তিনি কথা সাহিত্যিক। তাহলে বুঝতেই পারছেন তার লেখার শক্তি কতটুকু। কি ভাবে পারলেন এতে আবেগ দিতে। বারবার চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিলো পড়তে পড়তে। এতো সুন্দর ভাবে সহজ করে ফুটিয়ে তুলেছেন গ্রামের মানুষদের সামাজিক অবস্থা। তারা কতটা উঁচু মানের বা নিন্ম মানের বা নিকৃষ্ট মনের মানুষ হতেপারেন। রিভিউতে আমি প্রধান চরিত্রের নাম উল্লেখ করিনি।, কারন আমি নিজেই নামটা জেনেছি বইটার ১০২ নং পেজে এসে। আমাকে যখন এতো কষ্ট করতে হয়েছে তখন আমিও বলবোনা।? জেনে নিয়েন আপনারা। #বই_সম্পর্কে_ কিছু কথা। বইটি সুন্দর লেগেছে আমার কাছে। ভানান ভূল আমার চোখে পড়েনি। ছোট বই হওয়াতে অনেক স্মাটর্ লেগেছে আমার কাছে। তবে ফন্টটা একটু ছোট এই যা। ?বই হোক আপনার, আপনি বইয়ের?
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_ডিসেম্বর বই - জলেশ্বরী লেখক - ওবায়েদ হক প্রকাশনী - হৃদি প্রকাশ প্রচ্ছদ - হানিফ সরকার মুদ্রিত মূল্য - ২০০ টাকা। ভূমিকা - পৃথিবীর তিন ভাগের দুই ভাগ জল ও এক ভাগ স্থল। প্রাচীন বিভিন্ন সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়েছে নদীর আশেপাশে বা পানিকে কেন্দ্র করে। এই পানি বা জল আমাদের জীবনের সাথে অতোপ্রতভাবে জড়িত। কিন্তু কখনো জলের অবাধ বিচরণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার গতিপথ পাল্টে দেয়। স্থলচরী মানুষ তখন জলচরী হয়ে যায়। সব মিলিয়ে উভচর। জল যেমন তার আপন ক্ষমতা বলে যেখানে খুশি প্রবাহিত হতে পারে তেমনি 'জলেশ্বরী' উপন্যাসের গল্প জীবনের নানান দিক দেখিয়ে বয়ে গেছে এক অজানার পথে। লেখক পরিচিত - নিভৃতচারী তরুণ লেখক ওবায়েদ হক। তার সম্পর্কে বেশি কিছু জানা সম্ভব হয়নি। লেখক তার বইয়ের কালো হরফ গুলোকে সন্তান মনে করেন, সন্তানের পরিচয়েই তিনি পরিচিত হতে চান। তার উল্লেখযোগ্য পাঠক প্রিয় উপন্যাস হলো নীল পাহাড়, তেইল্যাচোরা, নেপথ্যে নিমক হারাম (গল্পগ্রন্থ)। কাহিনী সংক্ষেপে - কাজল শিল্পপতি বাবার একমাত্র সন্তান। আমেরিকায় পড়াশোনা করে। কিশোর বয়সে তাকে পড়াশোনার জন্য আমেরিকায় পাঠানো হয়। যাবার পর সে আর দেশে আসেনি। হয়তো আসা হতো না, সারাজীবন সেখানেই থেকে যেতো। কিন্তু হঠাৎ তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে দেশে এলো। অদ্ভুত ভাবে মারা গেলেন কাজলের বাবা। ছয় তলা বাড়ির ছাদ থেকে মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন। তৎক্ষনাত মৃত্যু। কাজলকে বিষয়টা ভাবিয়ে তুললো। তার শক্তসমর্থ বাবা এভাবে হঠাৎ মারা যাবে সে ভাবতেও পারেনি। ছোটবেলায় কাজলের মা মারা যায়। তখন থেকে সে বাবার কাছে মানুষ। তাদের দুজনের মধ্যে বিশেষ কথা হতো না। একজন আরেকজনকে সেভাবে জানতে পারেনি। বাবা ছেলের মাঝে অদৃশ্য এক দেয়াল ছিল। কাছাকাছি থেকেও তাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়। আমেরিকা যাওয়ার পর সে দূরত্ব আরো বৃদ্ধি পায়। আচমকা বাবার মৃত্যুর পর এই দূরত্ব যেনো সীমাহীন রয়ে গেলো। কাজলের বাবা ডায়েরি না লিখলেও ছোটছোট কাগজে তার মনের কথা লিখে রাখতেন। এরকম কাগজ ঘাটাঘাটি করার সময় কাজল একটা কাগজ পায় যেটার লেখা পড়ে তার মনে তোলপাড় শুরু হয়। কাগজটিতে জলেশ্বরী ও ইব্রাহিম গাজীর কথা লেখা আছে। এই নাম দুটো সে আগে কখনো শোনেনি। কাজলের কৌতুহলী মন উদগ্রীব হয়ে উঠলো। সে জলেশ্বরী যাবে এবং ইব্রাহিম গাজীর সাথে দেখা করবে বলে মনস্থির করলো। সময়টা ১৯৮৮ সাল। সারা দেশ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ। মানুষের খাবারের অভাব, থাকার জায়গা নেই। মহামারী রোগে হাজারো লোক মরছে প্রতিনিয়ত। এমনই দুঃসময়ে কাজল একটা দাঁড়া টানা নৌকা ও দুজন মাঝি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো জলেশ্বরীর উদ্দেশ্য ইব্রাহিম গাজীর খোঁজে। শহুরে পরিবেশে বড় হওয়া আমেরিকায় পড়াশোনা করা কাজল সাঁতার জানে না। কিন্তু তার বিগত কয়েকদিন কাটছে পানির উপরে। জীবনের নানা দিক দেখে, বিপদ মাড়িয়ে সে এগিয়ে চলল অজানার উদ্দেশ্য কিছু না জানা কথা জানতে। পাঠ প্রতিক্রিয়া - সামাজিক ঘরানার উত্তম পুরুষে লেখা উপন্যাস 'জলেশ্বরী'। উপন্যাসের নামকরণ প্রসঙ্গে আসা যাক। কাহিনী নির্ভর অত্যন্ত চমৎকার একটি মানাসই নাম রাখা হয়েছে। উপন্যাস শেষ করে মনে হবে লেখক যথার্থ নামই দিয়েছেন। উপন্যাসের প্লট তৈরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মনোরম এক প্রকৃতি নির্ভর প্লট চিত্রায়িত হয়েছে। লেখক প্রকৃতির যে অপরূপ বর্ণনা দিয়েছেন তাতে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। প্লটের পাশাপাশি সঠিক চরিত্রায়নও জরুরি। কিছু শক্তিশালী চরিত্র থাকা চাই। এই চাহিদা পূরণেও লেখক সক্ষম হয়েছেন। পাঠক পড়বার সময় বর্ণিত দৃশ্য বিচরণ করবেন উপন্যাসের চরিত্র গুলোর মাঝে। যেনো কল্পনার সাগরে ভেসে যাওয়া। সুন্দর শব্দ চয়ন ও সহজবোধ্য সংলাপ উপন্যাসের প্রানঞ্জলতা দান করেছে। উপমার ব্যবহার প্রশংসনীয়। উপন্যাসের পরিব্যপ্তি ছোট হলেও সমাপ্তি অংশে কোন তাড়াহুড়ো করেনি। খুব ধীরে পরিপূর্ণ এক সমাপ্তি হয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়। পাঠকের কল্পনার জন্য লেখক সুযোগ করে দিয়েছেন। পাঠক নিজের মত সমাপ্তি ভেবে নিতে পারবে। পড়ার সময় এতটাই মুগ্ধ ছিলাম যে ভুলত্রুটি তেমন খেয়াল করতে পারিনি। পরে ভেবেও লেখা জনিত কোন বিষয় খুঁজে পেলাম না। বইটি ছোট সাইজের হওয়ায় অক্ষর গুলো বেশ ছোট ছিল। আরেকটু বড় সাইজ হলে ভালো হতো। জলেশ্বরী এক অন্য জীবনের গল্প যেখানে মানুষ, প্রকৃতি ও নিয়তি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।