User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
লেখক বলতে চেয়েছিলেন অনেক কথাই তবে কোনো কথাই ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারেননি। রহস্যগুলো রেখে দিয়েছেন ধোয়াসায়। সাথে রেখে দিয়েছেন অবান্তর অনেক কিছুই।
Was this review helpful to you?
or
প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে আমি এই বইটির মূল অর্থাৎ ইংরেজি ভার্সন টা পাঠ করিনি। কিন্তু এই বাংলা অনুবাদ পড়ে বইটির সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে পেরেছি। ভিন্নধর্মী একটা বই। অনুবাদের কথা বলতে গেলে, লেখক এখানে সাবলীল ভাবে লিখেছেন। তবে বইটি পড়ার সময় আমার পূর্বের কাহিনী রি-কল করতে আবার পূর্বের অংশ পাঠ করতে হয়েছে, বর্তমান অংশের সাথে পূর্বের অংশের মিল টা বোঝার জন্য। তবে এটা বলা যায়, অনুবাদের দিক দিয়ে রেটিং টা ৩.৫ স্টার দেওয়া যেতে পারে বলে আমার মনে হয়।
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ #স্পয়লার_এলার্ট ❝যত দূরেই ভ্রমণ করো না কেন, নিজের কাছ থেকে কখনোই দূরে যেতে পারবে না।❞ কাল্পনিক একটি শহর রয়েছে আমাদের কল্পনায়। শহরটিতে আছে আলফ্যাভিল নামক হোটেল, ক্যাফে ডেনি'জসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই। এখানেরই এক ক্যাফে, ডেনি'জে বসে ভীষণ মনোযোগের সহীত একটি মোটা বই পড়ে যাচ্ছে চারজনের একটি টেবিল সম্পূর্ণ দখল করে রাখা একাকী মেয়েটি। মেয়েটির সবচেয়ে বড় গুণই বোধহয় সকল কাজে মনোযোগ ধরে রাখা! শহরটিতে যাই ঘটছে সেসকল ঘটনার সাথেই কোনো না কোনোভাবে মারি নামক সেই মেয়েটি জড়িয়ে যাচ্ছে, হোক নিজের ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। ক্যাফে ডেনি'জে নতুন একটি লিকলিকে শরীরের ছেলে প্রবেশ করলো। মারির বোন এরির বন্ধু ছেলেটি। কয়েকবছর আগে ডাবল ডেটের সময় মারির সাথে ছেলেটির পরিচয় ঘটে। মারি তখনও পর্যন্ত ছেলেটির নাম জানতে পারেনি, কিন্তু ছেলেটির সাথে এক অদৃশ্য বন্ধনে জড়িয়ে পড়ে সে। একসময় জানতে পারে ছেলেটির নাম তাকাহাশি। সময় সময়ের গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মারি আসাই এখনো সেই একই জায়গায় একই ভঙ্গিতে বই হাতে নিয়ে বসে আছে। যেন ভোর হওয়ার আগপর্যন্ত না উঠার প্রতিজ্ঞা করেছে নিজের কাছে। কিন্তু প্রকৃতি নিরবতা খুব একটা পছন্দ করে না বোধহয়! তাইতো তাকাহাশির সহযোগিতায় কাওরু এসে পৌঁছুলো মারি পর্যন্ত। লাভ হোটেলে এক চাইনিজ মেয়েকে মে-রে র-ক্তাক্ত করে ফেলে রেখে গিয়েছে অজ্ঞাত এক লোক। মেয়েটি চাইনিজ। জাপানিজ কাওরু মেয়েটির কথা বুঝতে পারছে না বলেই সে মারির শরণাপন্ন হয়েছে। মারি চাইনিজটা বেশ ভালোই বুঝে। শিরাকাওয়া! চাইনিজ মেয়েটিকে অমানুষিকভাবে মে-রে তার ব্যবহার্য সকল কিছু নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছে লোকটি। তার ভাষ্যমতে এ সবকিছুই সে বাধ্য হয়ে করেছে। কিন্তু কে বাধ্য করলো তাকে? লোকটির চালচলনেও কেমন যেন সন্দেহের ছাপ স্পষ্ট। নিজের অজান্তেই কোনো অদৃশ্য শক্তির সাথে জড়িয়ে যায়নি তো সে? মারির বোন এরি এক গভীর ঘুমে নিমগ্ন। শরীরের একটি পেশিও যেন নড়ছে না। শুধুমাত্র গলার নিচটা উঠানামা করে প্রমান করে দিচ্ছে মেয়েটি এখনো জীবিত আছে। দুইমাস আগে সে বাবা-মাকে বলে গিয়েছিল, ‘আমি ঘুমাতে যাচ্ছি।’ এরপর আর কেউ তাকে উঠতে দেখেনি। শুধু মাঝে মাঝে এরির রুমের টিভির স্ক্রিনটা বৈদ্যুতিক প্রভাব ছাড়াই ঝিরঝির করে উঠে। সেখানে এক অজ্ঞাত লোককে একটি চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়। লোকটি একদৃষ্টিতে ঘুমন্ত এরির বিছানার দিকে তাকিয়ে থাকে। যেন টিভি স্ক্রিনের ওপাশটা এক দুনিয়া আর এরির রুমটা হচ্ছে অন্যকোনো দুনিয়া। মাঝখানে টিভির পর্দাটি পাতলা কাগজের মতো দুই দুনিয়াকে সূক্ষ্ম উপায়ে আলাদা করে রেখেছে। প্রতিটি ঘটনাই তাদের নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলেছে। ঠিক রেললাইনের দুই পাতের মতন। কিন্তু কোথাও গিয়ে কি সূক্ষ্ম যোগসূত্র আন্দাজ করা যায়? এতসব ঘটনা ঘটার পেছনে কি অদৃশ্য কোনো কারণ রয়েছে? রয়েছে কোনো উদ্দেশ্য? কে জানে? হয়তো হ্যাঁ, নয়তো না! ?️পাঠপ্রতিক্রিয়া— আমার হারুকি মুরাকামির পড়া প্রথম বই এটি। স্বাভাবিকভাবেই পড়তে ও বুঝতে তুলনামূলক বেশিই বেগ পেতে হয়েছে। পড়ার পর মনে হচ্ছে উনার অন্য কোনো বই দিয়ে এ যাত্রা শুরু করাটা সবচেয়ে ভালো ছিল। অবশ্য এমনটা মনে হওয়ারও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। উনার লিখা এই বইটিকে আমরা রূপক অর্থে ধরে নিতে পারি। যেহেতু সম্পূর্ণ নতুন একজন পাঠকের তার লিখা সম্পর্কে কোনোপ্রকার ধারণা থাকা সম্ভব নয়, তাই বইটির মূলভাবটিও বোঝা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। যা আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে! ‘আফটার ডার্ক’ বইটি কাল্পনিক এক শহরকে ঘিরে। যেখানে আমাদের চিন্তাভাবনা থেকে শুরু করে অন্ধকার এক পৃথিবীকে রূপকার্থে তুলে ধরা হয়েছে। তাই বইটির আসল মানে ধরতে না পারলে পাঠক এর সঠিক রসও আস্বাদন করতে পারবে না। স্বীকার করতে লজ্জা নেই, আমিও বেশ কয়েকটা ব্যাপার ধরতে পারিনি। আমি আমার মতো একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে নিয়েছি ঠিকই, জানি না তা কতটুকু সঠিক হয়েছে। তবুও নিজের সর্বস্বটা দিয়ে বোঝার চেষ্টা করেছি। এটুকু চেষ্টা তো করাই যায়...! আমার বিশ্লেষণ থেকে কয়েকটি ব্যাখ্যা নিচে উল্লেখ করা হলো— ১. এক্ষেত্রে প্রথমেই যে কথাটা মাথায় আসে তা হলো ‘অপ্রয়োজনীয় তথ্য’। অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় বর্ণনা ছিল প্রচুর। একটি চরিত্র কি খাচ্ছে, কয় টুকরো খাবার সে ইতোমধ্যে খেয়ে ফেলেছে, গ্লাসে রাখা তরলে সে কয়বার ঠোঁট ছুঁইয়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে চরিত্রটি কি পরে আছে, এরপর আসে ড্রেসটির বর্ণনা! ড্রেসের সাথে সে জ্যাকেট ব্যবহার করছে কিনা, থাকলেই বা কোন কালারের জ্যাকেট, তার সাথে ব্যাগ আছে কিনা, ব্যাগটি নতুন নাকি পুরাতন, এমনকি চরিত্রটির পরিধান করা জুতোর কালারটা পর্যন্ত উল্লেখ করা আছে। এরপর চরিত্রটি তার চারপাশের কোনদিকে কতটা মনোযোগ দিয়ে তাকালো, টেবিলে কয়বার নখ ঘষেছে, নখে নেইলপালিশ আসে কিনা, এমন আরো অনেক কিছু! আমার তো মনে হয়েছে বইয়ের বেশ অনেকটা অংশই এসকল বর্ণনা একাই দখল করে নিয়েছে। ২. এবার আসি মূল চরিত্র মারির কাছে। বইটিতে মারির সর্বপ্রথম পরিচয় ঘটে তাকাহাশির সাথে। তাকাহাশিকে আমার অনেকটা বাচাল প্রকৃতির মনে হয়েছে। অপরপাশের মানুষটা কতটুকু গ্রাহ্য করলো সেদিকে বিন্দুমাত্র খেয়াল না করে নিজের মতোই বকে যেতে থাকে সে। যদিও শেষদিকে এসে তাকে এতোটাও উজবুক মনে হয়নি। বইটিতে মারি ও তাকাহাশির মধ্যকার সম্পর্কটাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কোনো তাড়াহুড়ো না করেই লেখক একটু একটু করে, খুব সময় নিয়ে মারি ও তাকাহাশির মধ্যকার বন্ধন দৃঢ় করেছেন। এদিকটা ভালো লেগেছে আমার। ৩. পুরো বইটিতে শুধুমাত্র এক রাতেই ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিবরণ দেওয়া হয়েছে। একটি শহরের প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রায় কতটা ভিন্নতা থাকতে পারে তা লেখক এখানে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। এমনকি একই বাবা-মায়ের তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠা দুটি সন্তানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, জীবনযাত্রায়ও থাকে বিপুল ব্যবধান। লেখক এখানে একটি শহরের আলাদা আলাদা মানুষের আলাদা আলাদা জীবনযাত্রা তুলে ধরেছেন। এখানে লেখক একটি কাল্পনিক শহর তৈরি করে সেখানকার অন্ধকার দিকটি তুলে ধরেছেন। রহস্যগুলোকে এক সাইডে সরিয়ে রাখলে প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা জীবনকাহিনী ভালো লাগার মতোই। কিন্তু আমার কাছে বরাবরই মনে হয়েছে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা একই সূত্রেই গাঁথা আছে কোথাও না কোথাও। ৪. বইটিতে দুইপক্ষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। একপক্ষ হলো ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে সম্পর্কিত সকল চরিত্র। আর অন্যপক্ষ হলো ‘আমরা’। এখন প্রশ্ন হলো এই ‘আমরা’-টা আবার কারা? আমিও এ বিষয়টা নিয়ে অনেক ভাবলাম। এরপর একটা বিষয় মাথায় খেলে গেলো। এখানে 'আমরা' বলতে আমরা নিজেদের মানে পাঠকসমাজকে ভেবে নিতে পারি অথবা স্বয়ং লেখককেও। যেখানে লেখকের সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। বাস্তবে যেভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটে যেতে থাকে,কারো পক্ষে থামানো বা স্লথ করা সম্ভব হয় না অনেকটা তেমনই। এমনকি লেখক হিসেবে একটি চরিত্র মনে মনে কি ভাবলো তা লেখকের জানা উচিত। এই বইয়ে সেসকল বিষয়েরও পর্যন্ত কোনো বর্ণনা দেওয়া নেই! যা ঘটেছে তার সকলই নিজের গতিতে। এখানে পাঠক ও লেখক দুজনেই সমান জ্ঞান রাখেন। পাঠকদের যেমন চরিত্রগুলোর পোশাক-আশাক, চালচলন, কথোপকথন পর্যন্তই দৌঁড়, লেখকেরও তাই। লেখক ও পাঠক উভয়ই এখানে দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। ব্যাপারটা কিন্তু মজারও বটে! ৫. এবার ১ নং-এ পুনরায় ফিরে যাই আবার। সেখানটায় বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় ব্যাপার তুলে ধরেছি আমি। যদি স্বাভাবিক ছন্দে ভাবি তবে এতো এতো বর্ণনা সত্যিই অপ্রয়োজনীয়। কিন্তু যদি আমরা এই বইয়ের আলোকে ভাবি তবে ব্যাপারগুলো একদমই অপ্রয়োজনীয় ঠেকবে না। অর্থাৎ আমাদের ভাবনার কারণেই এই অপ্রয়োজনীয় ঘটনাগুলো প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে নিমিষেই। উপরোক্ত বর্ণনা থেকে একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, লেখক ও পাঠক কারোরই চরিত্রগুলোর চিন্তাভাবনার উপর বিন্দুমাত্র জানাশোনা নেই। তারা কি চিন্তা করছে, কেন করছে এগুলো সম্পর্কে ’আমরা’ মানে লেখক ও পাঠক উভয়ের জ্ঞানই শূন্যের কোটায়। তাহলে একটা চরিত্রের সাথে আমরা নিজেদের রিলেট করবো কি করে? চরিত্রটি সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা বাড়বে কি করে? ঠিক এ জায়গায় এসেই এতো এতো অপ্রয়োজনীয় ব্যাপারগুলো হঠাৎ করে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠে, হয়ে উঠে জীবন্ত। বইটিতে যেহেতু ’আমরা’ চরিত্রগুলোর চিন্তাভাবনা বা কল্পনা কোনোটাই পড়ার বা বোঝার ক্ষমতা রাখি না, এমনকি লেখক নিজেও তার হাতে কোনোরকম ক্ষমতা রাখেননি, তাই আমাদের চরিত্রগুলোর পোশাক-আশাক, চলনবলন, কথাবার্তা থেকেই তাদের ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র সম্পর্কে ধারণা নিতে হয়। একারণেই লেখকের এতো এতো অপ্রয়োজনীয় বর্ণনা। ৬. বইটির ফ্ল্যাপে যে রহস্যের গন্ধ পেয়েছি বা প্রথম থেকে যেভাবে রহস্যের সৃষ্টি করা হয়েছে শেষে গিয়ে সেগুলোর একটিরও উত্তর পাইনি আমি। ভেবেছিলাম এই সবগুলোর ঘটনার যোগসূত্র মারির বোন এরির অস্বাভাবিক রোগের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু শেষটায় কি হলো? কিছুই না! লেখক হয়তো রূপক অর্থে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, যেটা আমি পাঠক হিসেবে বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি। তবুও কিছু রহস্যের আদৌও কোনো যুক্তি থাকতে পারে কিনা আমার জানা নেই। i. বইটিতে দেখানো হয়েছে আয়নার সামনে দাঁড়ানো কোনো চরিত্র সেখান থেকে সরে গেলেও আয়নার ভেতরের প্রতিবিম্ব সে জায়গায়ই স্থির থাকে। তার কোনো নড়নচড়ন থাকে না। কেন? এর কোনো ব্যাখ্যা আছে কি? বা লেখক এ রহস্যের দ্বারা কি বুঝাতে চেয়েছেন? ii. এরির এই অদ্ভুত রোগের নাম কি? কেন সে গত দুইমাস একনাগাড়ে ঘুমিয়েই যাচ্ছে? এখানে কি অতিপ্রাকৃতের কোনো ছোঁয়া আছে? নাকি এখানেও লেখক লুকায়িত কোনো মেসেজ রেখে গেছেন? iii. টিভির ওপাশের দুনিয়া এবং এ পাশের দুনিয়ার মাঝে কিসের যোগসূত্র রয়েছে? দুটো কি কোনো মাধ্যমের দ্বারা একসূত্রে গেঁথে গিয়েছে? নাকি এ-ও কোনো অজানা কোটেশন? iv. টিভির ভেতর চেয়ারে বসে থাকা সেই অজ্ঞাত লোকটি কে? আমাদের জানাশোনা কোনো চরিত্র? নাকি সম্পূর্ণ ভিন্ন কেউ? তার সাথে এরির অসুস্থতারই বা কি সম্পর্ক? v. শিরাকাওয়ার ব্যবহারকৃত পেন্সিল টিভির পর্দার ওপাশে গেলো কি করে? ওই রুমটাই বা শিরাকাওয়ার রুমের মতোই দেখতে কেন? ঠিক কোন মাধ্যমে এরি, সেই অজ্ঞাত লোক ও শিরাকাওয়ার পথ এক হয়ে গেছে? ৭. পুরো বইয়ে অনেকগুলো ঘটনা রয়েছে। তবে আমাদের ভাবনা একটি এঙ্গেল থেকে ঘটনাগুলোর বিচ্ছিন্নতাকে একসূত্রে গাঁথতে পারে। সম্পূর্ণ বইটি এক রাতের ঘটনা নিয়েই নির্মিত। সেই রাতে মারির সাথে বেশ অনেকগুলো চরিত্রের সাক্ষাৎ হয়। পরিচয়, আলাপ, বহুল ঘটনার ঘনঘটা, মারির বোন এরির অস্বাভাবিক ঘুমকাতুরে হয়ে উঠা, দু’মাস একটানা ঘুমানো সবটাই উঠে আসে। মারি ও এরির মধ্যকার দূরত্বও দৃশ্যমান হয়। চরিত্রগুলোর সাথে মারির সখ্যতা বাড়ে। তাদের কষ্ট মারি জানতে পারে, নিজের কষ্টও বাকিদের সাথে ভাগাভাগি করে সে। মারিও সাক্ষাৎ হওয়া সেই সকল চরিত্রের দ্বারাই বোন সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবতে শিখে, দূরত্ব গুছাতে চায়। এগিয়ে যেতে চায় বোনকে সাহায্য করতে। হয়তো এরিকে জাগিয়ে তোলার জন্যই প্রকৃতি নিজ উপায়ে এতোগুলো ঘটনা ঘটালো, মারির সাথে দেখা করিয়ে দিলো এতোগুলো লোকের। হতেই পারে, তাই নয় কি? ৮. এ বইটি অনেকটা অমীমাংসিত। আমরা এর এন্ডিং ধরে নিতে পারি। হয়তো মারি অন্যসকল চরিত্রদের থেকে পাওয়া শিক্ষাকে লুফে নেয়। বোনের সান্নিধ্যে যায়, বোঝার চেষ্টা করে। আর এ চেষ্টাই তার বোন এরিকে নতুন করে জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করে। অন্ধকার দূর হয়ে আলোর দেখা পায় তারা। এভাবেই হয়তো সেই কাল্পনিক শহরটির সমাপ্তি ঘটে! জানি না আমার ব্যাখ্যা কতটা যুক্তিনির্ভর। তবুও কেন জানি মনে হচ্ছে সম্পূর্ণ ফেলনাও নয়! ?️অনুবাদ— অনুবাদ প্রথমদিকে খানিকটা কাঠখোট্টা লাগলেও সময়ের সাথে সাথে সেই ভাবটা মিলিয়ে গেছে। একসময় গিয়ে আর অনুবাদ বইয়ের মতো মনে হয়নি আমার। বানানের ভুলও চোখে পড়েনি তেমন। সবমিলিয়ে অনুবাদ মোটামুটি ভালোই হয়েছে। খুব বেশি ভালো না আবার খারাপও না। পড়া যায় মজা করে। বই- আফটার ডার্ক লেখক- হারুকি মুরাকামি জনরা- অনুবাদ উপন্যাস অনুবাদক- তানজীম রহমান, ওয়াসি আহমেদ প্রকাশনী- বাতিঘর পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৬১ মুদ্রিত মূল্য- ২২০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
আমার বোঝার সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে কিন্তু এই বই আর তার ইনুবাত, দুইটাই ১ স্টার লেভেল এর। যারা হারুকি এর অন্য বই অথবা বাতিঘর এর অনুবাদ এর উপর বিশ্বাস রেখে এই বই টা কিনতে চাচ্ছেন, তারা সময় ও টাকা দুইটাই বাচান। গুডরিডস এ ৩.৪ রেটিং দেখেও কিনেছিলাম, ভেবেছি আজেবাজে বই নিশ্চই বাতিঘর অনুবাদ করবে না, আমার ধারণা সম্পূর্ণ ভূল।
Was this review helpful to you?
or
অনেক চমৎকার হইসে,লেখকের উচিৎ আরো জাপানি বই অনুবাদ করা,বিশেষ করে ফ্যান্টাসি আর হরর এবং থ্রিলার,অনেক সুভকামনা রইল।
Was this review helpful to you?
or
"সত্যিটা হচ্ছে ছায়ার মতো, আলো আর অন্ধকারের মাঝামাঝি। বুদ্ধিমান, সুস্থ মানুষ এই ছায়াকে চিনতে পারে। আর বুদ্ধিমান আর সুস্থ হতে সময় লাগে। চেষ্টাও লাগে।" দিনের শুরুটা হয় সূর্য উঠা দিয়ে। সূর্যের ঝকঝকে আলোয় প্রকৃতি থেকে শুরু করে মানুষও পর্যন্ত ফিরে পায় নতুন প্রাণ। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে সূর্য অস্ত যায়। আঁধারের চাদরে ঢেকে যায় পুরো শহর। কর্মব্যস্ততা কমে আসে ধীরে ধীরে। শহরটা নিঃশ্বাস বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে আঁধারের কোলে আর নিশাচর প্রাণীগুলোও তখন নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসে শিকারের সন্ধানে। কিছু কিছু মানুষও তেমনি আঁধারের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে নিজেকে ছুঁড়ে দেয় আঁধারের গহীনে নিজস্বতার বাহিরে। আঁধারের প্রকোটে নিশাচর সে সব মানুষেরা দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পাপ করে বেড়ায়। নিশাচর তাদের রক্তে আর হৃদপিন্ডে তখন আঁধার নিঃশ্বাস নেয়। একটা সময় আঁধার কেটে যায় শহরটা নতুন দিনের সূর্যের আলোয় আবার প্রাণ ফিরে পায়। ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলে জেগে উঠে পুরো শহর। কিন্তু তবুও মানুষের মনের গহীনে যে আঁধার বাস করে তাতে সূর্যের আলো পৌঁছতে পারে না। সে আঁধারে গান গায় নিঃসঙ্গতা। আর নিঃসঙ্গতাপ্রিয় মানুষের নিজের উপর নিজেরই ক্ষোভ জন্মে তখন। বাস্তবতা তখন পরাবাস্তবতায় রূপ নেয়। হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে এই আলোময় দুনিয়া থেকে। আঁধারের গহীনটা তখন আপন করে কাছে টানে। কিন্তু বিবর্ণ দুনিয়ায় যেমন যাওয়া যায় কিন্ত আর ফেরা যায় না তেমনি আঁধার একবার গিলে নিলে আর সূর্যের আলোর দেখা পাওয়া যায় না। এভাবেই এগিয়ে চলে জীবন। "মানুষের স্মৃতি হচ্ছে অনেকটা ফুয়েলের মতো। গাড়ির যেমন তেল পোড়াতে হয় চলার জন্য, আমরা বেঁচে থাকার জন্যে সেভাবে স্মৃতি পোড়াই। এই স্মৃতিগুলো জরুরী কিনা তাতে তেমন কিছু আসে যায় না। কিন্তু এগুলো ছাড়া জীবন চলে না।" আফটার ডার্ক। বিশ্ববিখ্যাত জাপানিজ লেখক হারুকি মুরাকামির এক অদ্ভুত সুন্দর উপন্যাস। মুরাকামির অন্যান্য লেখার চাইতে এটা একটু আলাদা। এই বইটাতে একটা কাল্পনিক শহর তৈরী করে সে শহরের মানুষগুলোর রাত-দিনের জীবনগুলো প্রতীকী রূপে দেখিয়েছেন লেখক। বাস্তবতা, পরাবাস্তবতা, রহস্য, নিঃসঙ্গতা, মনের বিষণ্ণতা সহ বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। বইটার প্রচ্ছদে ডিলান সাহেবের ছোঁয়া বইটাকে আরো রহস্যময় করে তুলেছে। বাইন্ডিং, পেইজ, প্রচ্ছদ বরাবরের মতোই ভালো লেগেছে। "জানো, এই ফুয়েলটা যদি আমার ভেতরে না থাকতো, যদি স্মৃতিগুলো না থাকতো, তাহলে বোধহয় পাগল হয়ে যেতাম। হয়তো আত্মহত্যা করে ফেলতাম। যখন ইচ্ছা তখন স্মৃতিগুলোকে ড্রয়ার খুলে বের করে আনতে পারি দেখে এখনও বেঁচে আছি।" কাহিনীপ্রসঙ্গঃ গল্পের শুরুটা আপনাকে দিয়েই। জ্বি এই পুরো গল্পে লেখক আপনাকে এক জোড়া চোখ হিসেবে প্রতিস্থাপন করেছেন। আপনার কেবল চোখ দিয়ে দেখা এবং পড়ার শক্তিই আছে আর কোনকিছু করার শক্তি নেই আপনার। তো যাইহোক, লেখকের বর্ণনায় বাতাসে ভর করে পুরো শহর ঘুড়ে এসে একটা ক্যাফেতে আপনার চোখ থামবে। সেখানে একটা মেয়ে বসে বসে বই পড়ছে। একটা ছেলে আসলে আমরা মেয়েটার নাম জানি- মারি। আর পরে ছেলেটারও নাম জানা যায়- তাকাহাশি। তাকাহাশি মূলত মারির বোন এরির বন্ধু তবুও সে খানিকক্ষণ কথাবার্তা চালিয়ে যায় মারির সাথে। মারি জানায় সারারাত বাইরে থাকবে। একাকীত্ব দরকার। তাকাহাশি চলে গেলে কাওরু নামের এক মহিলা এসে মারিকে জানায় তাকে সাহায্য করতে হবে আর সাহায্যের জন্যে পাঠিয়েছে তাকাহাশি। কাওরু একটা লাভ হোটেলের ম্যানেজার। সেখানে কেউ একজন একটা চাইনিজ মেয়েকে মেরে রক্ত বের করে দিয়েছে এবং মেয়েটার চাইনিজ ভাষা কেউ বুঝে না তবে মারি চাইনিজ বলতে জানে। কাওরুর সাথে মারি চলে যায় আলফ্যাভিল হোটেলে। মারি ভাষাগত সমস্যার সমাধান করলে পরে একটা বাইকার এসে মেয়েটাকে নিয়ে যায়। কিন্তু মেয়েটাকে মারলো কে আর কেনইবা মারলো? আর মারিই বা কেন সারারাত বাইরে একাকীত্বে কাটাতে চায়? তাকাহাশি- নিঃসঙ্গতা আর একাকাত্বী যার চিরকালের সঙ্গী। সাত বছর বয়সে মা মারা গিয়েছে আর বাবা তখন জেলে। একা একা নিজে নিজেই বেড়ে উঠেছে ছেলেটা। বাবা আরেকটা বিয়ে করেছিল। সৎ মা অনেক আদর করলেও তাকাহাশি ব্যাপারটা মেনে নিতে পারেনি। নিজে থেকেই এতিম হয়ে গিয়েছিল। বাবার বাসা ছেড়ে একা একা থাকা শুরু করে। টুকিটাকি কাজ করে নিজের খরচা চালায়। এক রাতে ট্রাম্বোন বাজানোর জন্যে বের হয়ে ক্যাফেতে দেখা হয় পুরানো বান্ধুবী এরির ছোট বোন মারির সাথে। মেয়েটাকে ধীরে ধীরে ভালো লাগা শুরু হয়। কিন্তু মারি জেনে যায় তাকাহাশি হোটেল আলফ্যাভিলে একটা মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিল? কিন্তু মেয়েটা কি মারির বোন এরি? নাকি অন্য কেউ? শিরাকাওয়া। ভেরিটেক কোম্পানির কর্মকর্তা। যার বেশীরভাগ কাজই থাকে রাতে। অফিস শেষে সকালে বাসায় ফিরলে স্ত্রী ঘুম থেকে উঠে যায় নিজের অফিসে আর রাতে অফিসের জন্যে বের হওয়ার সময় স্ত্রী থাকে ঘুমে। জৈবিক চাহিদায় প্রায়শই রাত কাটায় হোটেলে। নিঃসঙ্গতা, বিষণ্ণতায় শিরাকাওয়ার ভেতরটা ছেয়ে গেছে। শিরাকাওয়া নিজের অজান্তেই পরিণত হয় দ্বৈত সত্তায়। অন্যদিকে, মারির বোন এরি আসাই নিজের সৌন্দর্য আর গুণের উপর অতি আস্থায় মায়ার জালে জড়িয়ে যায়। নিখুঁত ঘুমের কোলে হারিয়ে যায় এরি। যে ঘুম থেকে জেগে উঠা যায় না, যে ঘুম ভাঙ্গে না, যে ঘুমের কোন শেষ নেই কিন্তু সে ঘুমে চিন্তা করা যায়। এরি আসাই তাই ভাবে, 'এটা কি পরকাল? আমি কি মারা গেছি?' মারি কেন সারারাত বাইরে বাইরে কাটায়? তাকাহাশির সাথে কি ওর সম্পর্কটা হয়েছিল শেষমেশ? চাইনিজ মেয়েটালে মেরেছিল কে? এরি আসাই কি তবে সত্যি সত্যিই শুধু ঘুমিয়েই ছিল নাকি অন্য কিছু? শিরাকাওয়ার কি হয়েছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে পড়তে হবে মাত্র ১৬০ পৃষ্ঠার মুরাকামি অদ্ভুত সুন্দর উপন্যাস আফটার ডার্ক। লেখকপ্রসঙ্গঃ বিশ্ববিখ্যাত জাপানি লেখক হারুকি মুরাকামি সারা পৃথিবী জুড়েই তুমুল জনপ্রিয়। ৫০ টিরও বেশি ভাষায় অনুদিত হয়েছে তার লেখা। সমালোচকদের প্রশংসার পাশাপাশি অসংখ্য পুরষ্কার জিতেছেন তিনি। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিসহ বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। ২০১৫ সালে 'টাইম ম্যাগাজিন' বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করে। তার মৌলিক রচনার মধ্যে- নরওয়েজিয়ান উড বেশি বিখ্যাত এবং পাঠকপ্রিয়। এছাড়া, অ্যা ওয়াইল্ড শিপ চেইজ, দ্য উইন্ড-আপ বার্ড ক্রনিকলস, কাফকা অন দি শোর এবং ওয়ান-কিউ-এইট-ফোর পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ইংরেজী সাহিত্যের কিছু বই জাপানি ভাষায় অনুবাদও করেছেন তিনি। ক্ল্যাসিকাল আর জ্যাজ সঙ্গীতের প্রতি আছে বিশেষ আগ্রহ। অনুবাদপ্রসঙ্গঃ এটি একটি যৌথ অনুবাদগ্রন্থ। তানজীম রহমান এবং ওয়াসি আহমেদ। অনুবাদের ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হয়, আপনি বইটা পড়তে বসলে একটা সময় শেষে বুঝতেই পারবেন না বইটা অনুবাদ করা হয়েছে। কেননা এর সহজ, সাবলীলতা, সুখপাঠ্যতা আপনাকে এসব ভাবার সময় দিবে না। সেজন্যে অবশ্যই দুইজন অভিজ্ঞ অনুবাদককে ধন্যবাদ জানাতে হয়। কিছু ইংরেজি শব্দের সরাসরি প্রয়োগ অনেকেরই চোখে লাগতে পারে কিন্তু সেখানে বাংলা ব্যবহার করাটা কাটখোট্টা হয়ে যেত বলেই মনে হয়। তবে একদমই সহজ শব্দচয়নে লেখাটা খানিকটা হাল্কা মনে হয়েছে। কিছু ভারী শব্দ ব্যবহারে হয়তো লেখাটা আরো ভারী করা যেত। আর একদমই টুকিটাকি ৩/৪ টা শব্দগত ভুল/ছাপার ভুল চোখে পড়েছে। "আমাদের পায়ের নীচে যে মাটি আছে, সেটাকে হয়তো আজ শক্ত মনে হচ্ছে। সলিড মনে হচ্ছে। কিন্তু এই মাটির সরে যেতে বেশি সময় লাগে না। আর যখন সেটা হয়, তারপরে আর আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব না। অন্ধকারে একা থাকার অভ্যাস করে নেয়া বাদে আর কিছুই করার থাকে না।" আগেও বলেছি এখনও বলছি হারুকি মুরাকামির লেখা সবার জন্যে নয়। বেশীরভাগ মানুষই এই বইটা পড়ে বলবে সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই না। তারা বলবে গল্পটা যখনই শুরু হয়েছে আর জমেছে তখনই গল্পটা শেষ। কিন্তু আমার মতে ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। রহস্যোপন্যাসে কোন শেষ থাকে না। এখানে একেকটা চরিত্রের অন্ধকার দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন লেখক। এই বইতে মুরাকামি কাল্পনিক একটা শহর তৈরী করেছেন যেখানে আছে- বাড়িঘর, উঁচুনিচু শ্রেণী, মধ্যবিত্ত পাড়া, হোটেল আলফ্যাভিল, ক্যাফে ডেনিজ সহ আর বিভিন্ন চরিত্র। যে শহরে সন্ধ্যার সময় আঁধার ঘনালেও আফটার ডার্কের সময়কাল রাত ১১:৫৩ থেকে ভোর ৬:৫৫ পর্যন্ত। যে শহরে চলে আঁধারের রাজত্ব। যে শহরে মাতাল, গ্যাং, বেশ্যা এমনকি সাধারণ কর্মজীবী মানুষকেও নিজের খোলস ছেড়ে আঁধারের পোশাক পড়তে বাধ্য করা হয়। যে শহরের আপনিও একজন বাসিন্দা তবে শুধুমাত্র চোখজোড়া দিয়ে অবলোকন করা ছাড়া আপনার কোন কাজ নেই। যে শহরে রাতের আয়নার প্রতিবিম্ব রাতের আয়নাতেই থেকে যায়, দিনের আলোয় সে প্রতিবিম্বের কোন স্থান নেই। যে শহরে নিখুঁত হবার মনোবাসনাকে আটকে রাখা হয় কোন সুদৃশ্যে বাক্সে, ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয় যতক্ষণ না বাস্তবতা তাকে ছুঁয়ে জাগিয়ে না দেয়। এমনই এক রহস্যময় শহরের দ্বৈত সত্তার অধিকারী চরিত্রসমূহের মাঝে খেই হারাতে চাইলে আফটার ডার্ক বইটা পড়তে হবে। আর হ্যা আগেও বলেছি এখনও বলছি এমন দুইটা ব্যাপার হচ্ছে, মুরাকামি পড়তে হলে কোন ধরনের আশা না করাই ভালো। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, মুরাকামি পড়ার পর বেশী ভালোও লাগে না আবার বেশী খারাপও লাগে না। মাঝামাঝিতে থাকতে হয়। তবে এই বইটা পড়া শেষে পাঠকের মনে অনেকগুলা প্রশ্ন ঘুরপাক খাবে। তাই চাইলে নিজ দায়িত্বে পড়তে পারেন। ভালো লাগা উক্তিগুলোঃ "দেখতে নরমাল মানুষগুলোই সবচেয়ে বেশী বিপজ্জনক হয়।" "একবার এতিম হয়ে গেলে সারাজীবন এতিম হয়েই থাকতে হয়।" "সেক্সের জন্য সবসময় ভালোবাসা দরকার হয় না। নিয়তির সারপ্রাইজেরও জায়গা নেই।" "লাভ হোটেলে আবেগের কোন জায়গা নেই। কোনো ভালোবাসা নেই, প্রতিবাদ নেই, নিয়তির সারপ্রাইজ- কিছুই নেই। সেখানে সব অঙ্কের মতো হিসাব মিলিয়ে করতে হয়।" "সকালবেলা ঝাঁক বেঁধে কাকেরা আসে। ঠুকরে খায় আবর্জনা। তেলতেলে ডানায় ঝিকমিক করে সকালের রোদ। মানুষের মতো বিভিন্ন পরিচয় নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না পাখিদের। ওদের একমাত্র চিন্তা হচ্ছে বেঁচে থাকার জন্য খাবার যোগাড় করা।"