User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসের শুরু হয়েছিল ফয়েজ নামের একজন মানুষের ব্যর্থতার কিছুটা নমুনা দিয়ে যে একসময় ছিল সম্ভাবনাময় লেখকদের দলে। পূর্বপরিচিত একজনের সাথে দেখা হওয়ার পর তার জীবনে অতীত হয়ে যাওয়া ২০ বছরের গল্প পাঠকের কাছে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকে। রুম্মান নামের সেই পূর্বপরিচিত লোক, ফয়েজের সামনে তার গত জীবনের প্রেমিকা ঝিলমিলকে নিয়ে বাজে একটি মন্তব্য করে বসে। ২০ বছর পরেও কেন ঝিলমিলকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হয়? আবার অন্যদিকে, ফয়েজের জীবনে আপনজন বলতে একমাত্র মানুষ তার ছেলে সম্বল। লেখকের এই সম্পর্কিত উদ্ধৃতিটি ছিল, "তার ছেলে, সম্বল- তার বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল।" সেই একমাত্র সম্বলকেই কেন ফয়েজ এত মারধোর করে বা বাথরুমে আঁটকে রাখার মতোন ভয়াবহ কাজ করে? সম্বলকে নিজে অনেক মারধোর করলেও সম্বলের সহপাঠী তাকে মেরেছে এটা শুনে শান্ত না থাকতে ফয়েজ যায় সম্বলের স্কুলে হেডম্যাডামের কাছে অভিযোগ করতে। কিন্তু হেডম্যাডামের সামনে কিছুই বলে উঠতে পারেনা সে। তবে কি হেডম্যাডামও ফয়েজের গত হয়ে যাওয়া জীবনের কেউ ,যে জীবন ফয়েজ অনেকদিন আগেই ছেড়ে এসেছে? এমন অনেক রহস্য নিয়ে পুরো উপন্যাসটি। পাঠ প্রতিক্রিয়া : উপন্যাসের নাটকীয়তা খুব বেশি মনে হয়েছে। কোনো একটি নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে ভেবে দেখবার মত সময় পাঠককে দেওয়া হয়নি। বরঞ্চ সাথে সাথেই আরও একটি ঘটনার সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে পাঠককে। পুরো উপন্যাস জুড়ে ফয়েজকে ব্যর্থ, মাতাল হিসেবে দেখানো হলেও তার ব্যর্থতার জায়গাটুকু লেখালেখি ছিল না। তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনার টানাপোড়েনে খাপ না খাওয়াতে পেরে উচ্ছন্নে যাওয়া একজন মানুষ মনে হয়েছে তাকে। উপন্যাসে আমাদের নিত্যকার জীবনের অনেকগুলো খারাপ বিষয়াদিকে হাইলাইট করেছেন লেখক। ঘুষ, শিশু নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় নিরাপরাধী কাউকে ফাঁসানো, প্রশ্নফাঁস এবং এর পরিণতি বা আত্মহত্যার মত সেনসিটিভ কিন্তু দৈনন্দিন ঘটনায় পূর্ণ ছিল পুরো বই। ভালো লাগার মত বিষয় ছিল বইয়ের নামকরণ এবং এর কারণ যা পুরো বইটা পড়লেই জানা যাবে। এবং নামকরণের দিক থেকে বইয়ের ঘটনাবলীর চলমান ধারাটুকু ভাল লেগেছে। সবশেষে উপন্যাস পড়ে যে বিশেষ ব্যাপারটা উপলব্ধি করেছি তা হল, মানুষের এই চলমান জীবনে প্রায়ই যে ঘটনাগুলো ঘটে সেগুলো যত খারাপই হোক, তা আমাদের অভ্যাসে ঢুকে পড়ে। ওগুলোতে আমরা বিশেষত্ব খুঁজে পাইনা। তাই সহজেই সেগুলো ভুলে গিয়ে মানিয়ে নিতে পারি। কিন্তু যারা তা পারেনা তাদের জন্যে জীবন বিষময় হয়ে যায়।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মে গল্প শুরু হয়ে ফয়েজ নামের এক ‘ছেলেকে’ দিয়ে। অন্তত শুরুতে তাঁকে ছেলে বলেই মনে হয়। বৃষ্টির রাতে হঠাৎ সিগারেট ধরানো থেকে গল্পের শুরু। এবং ধীরে ধীরে জানা যায় ফয়েজ আসলে ছেলে না, বরং পুরুষ। দুটোতে পার্থক্য আছে। ফয়েজ এক ফুরিয়ে যাওয়া লেখক, যে কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য সংসদের সভাপতি ছিল। লেখার হাত ছিল তার দারুন। কিন্তু অবশ্যম্ভাবী সে আর এখন লেখালেখি করে না। ফয়েজের একটা ছেলেও আছে, যে কিনা ক্লাস টেনে পড়ে। ফয়েজ প্রায় রোজ রাতে বাংলা মদ খেয়ে আসে। এসে ছেলেকে মারধোর করে আঁটকে রাখে বাথরুমে। স্বভাবতই ফয়েজের ছেলেটা ‘ব্রিলিয়ান্ট’। সে রাঁধতে পারে, চুলত হয়ত আঁচড়াতে পারে। ‘সাইকোপ্যাথ’ বাবার সাথে থেকেও পড়াশোনা ভালোই চলে যাচ্ছে। অবশ্য ফয়েজ ছেলের পড়াশোনা নিয়ে আগ্রহী। ইদানীং যারা লিখছে, তারা কি লিখছে, পড়ার একটা ইচ্ছা তৈরি হয়েছে। সেই ইচ্ছা থেকে বইটা হাতে নেওয়া। লেখকের এর আগেও দুই একটা বই বেড়িয়েছে। উপন্যাস পড়ে মনে হলো, পরিচিত এক প্লটে এক অতি নাটকীয় এক উপস্থাপনা। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে উজ্জ্বল একটি ছেলে, ব্যর্থ হয়ে বিষণ্ণ এবং উচ্ছন্ন জীবনযাপন করবে। একদা তার পেছনে পড়ে থাকা মানুষেরা তাকে টপকে যাবে। হ্যাঁ, এটাই বাস্তব জীবন। কিন্তু তার উপস্থাপনা বরাবর একই রকম হলে একঘেয়ে লাগে। উপন্যাসের প্লট, সম্ভাবনাময়। কিন্তু তা প্রতি পদে ব্যর্থ হয়ে যায় উপন্যাসের মূল চরিত্রের মতো। এমনকি স্বল্প পরিসরে লেখা এই উপন্যাসে কোন চরিত্র পুরোপুরি নিজেকে প্রকাশ করতে পারে না। একটা তাড়াহুড়ার মাঝে উত্তরপত্রে দেওয়া বর্ণনার মতো সংক্ষেপে আমরা ফয়েজ, সম্বল, ঝিলমিল, বীথিকে দেখতে পাই। ভাষা এবং বর্ণনার ভঙ্গির দিকে মনোযোগ দিলে মনে হয় লেখক এদিকে আরেকটু মনোযোগ দিতে পারতেন। কেননা, নবীন লেখকদের হৃষ্টপুষ্ট বই প্রকাশে প্রকাশকদের অপারগতার কাছে তারা বন্দী হলেও ভাষাটা লেখকের নিজস্ব। বাস্তবতা এবং তা প্রকাশের ক্ষেত্রে সরাসরি বলাই উচিত কিন্তু লেখক যখন প্রতিটা চরিত্রকে শুদ্ধভাবে ‘আসসালামু আলাইকুল’, ‘ওয়ালাইকুমুস সালাম’ বলান, তখন ব্যপারটা মেকি লাগে। কেননা, বঙ্গদেশের আমজনতা সালামটা খুব দ্রুত আর সংক্ষেপে সারে। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। সংলাপে এমন আরও অনেক বিষয় ছিল। সঙ্গে কিছু হুমায়ুনিয় টোটকা। বইটা পড়ার পর কতগুলো প্রশ্ন আসলো মাথায়। একজন লেখকের জীবন আসলে কেমন হয়? মদ খাওয়া আর বেশ্যাগমন ছাড়া কি একাকীত্ব দেখানো যায় না? খুব এলোমেলো হওয়া কি জরুরি? নাকি গোছানো মানুষেরা শিল্পী হতে পারে না?
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ: #বইয়ের নামঃ মন জাংশন #লেখকঃ মোস্তফা মনোয়ার #প্রকাশনীঃ অনিন্দ্য প্রকাশ #পৃষ্ঠাঃ ১১২ উপন্যাসটি শুরু হয়েছিল একজন প্রাক্তন লেখকের জীবনের ব্যর্থতার গল্প দিয়ে। ফয়েজ, একজন প্রাক্তন লেখক। একসময় লেখালেখি করতো।তার প্রাক্তন প্রেমিকা ঝিলমিলের জন্যে কবিতা টায় ছিল তার শেষ লিখা।বর্তমানে ফয়েজ আর লেখালেখি করে না।না করার কারণটা ছড়িয়ে আছে পুরো উপন্যাসজুড়ে। ফয়জের একমাত্র ছেলে সম্বল, এই ছেলেই তার আপনজন,তার বেঁচে থাকার সম্বল।প্রকৃতির প্রতি প্রচণ্ড উপেক্ষা ফয়েজের। কারণ এই প্রকৃতি কখনও তাকে কিছু দেয়নি। বরং এক এক করে কেড়ে নিয়েছে আপন সবাইকে, সবকিছুকে।কেউ তার কাছে ফিরে আসেনি-স্ত্রী, প্রেমিকা, ভাই,ছেলে সম্বল। #প্রিভিউঃ -মানুষের জীবনের গল্পে সবসময় পরিণতি চায় সুখের,কখনও সেটা অর্বাচীন অসত্য হলেও।কিন্তু দিনশেষে খুব কম মানুষই হয়তো এমন কোন গল্পের চরিত্র হিসেবে নিজেকে খুঁজে পায়।সূর্য ডুবে গেলে হিসেব মেলাতে বসে সবাই প্রাপ্তির খাতায় হয়তো শূন্যতাকেই হাসতে দেখে।কিন্তু সেই শূন্যতার গোলকধাঁধায় হারিয়ে যাওয়া সুখও কিন্তু সেখানেই লুকিয়ে থাকে। -এমনিতেও ফয়েজের মতো অত আবেগ তার কখনো ছিল না।সে তো আর লেখক ছিল না,লেখক ছিল ফয়েজ।সে ছিল পাঠক,লেখকের আবেগের দরকার হয়,পাঠকের না।লেখক আবেগ তৈরি করে আর পাঠক লেখকের তৈরি সেই আবেগে ডুবে যায়।একসময় ঝিলমিল ডুবে গিয়েছিল সেই আবেগে।কিন্তু সেটা বিশ বছর আগের কথা। -সম্বল আবিষ্কার করে,এ শহরে ভালোবাসার চেয়ে ধুলাবালিই হয়ত বেশি। -ঝিলমিলের জীবনে সবচাইতে ঘনিষ্ঠদের মাঝে অন্যতম হচ্ছে দুঃখ।সবাই এসেছে,আবার চলে গেছে।কিন্তু দুঃখ কখনো তাকে ছেড়ে চলে যায়নি। -মাঝে মাঝে কষ্টকে ফয়েজের নারী মনে হয়।কষ্ট মানে নারী,কষ্ট মানে ঝিলমিল,কষ্ট মানে বীথি,কষ্ট মানে খুশবু।তবে তার জীবন থেকে তার জীবনের কষ্টরা চলে যাচ্ছে এক এক করে।কিন্তু তারপরও ফয়েজ কষ্ট পাচ্ছে,আরো বেশি। -মানবমনকে ফয়েজের রেলগাড়ির মতো মনে হয়। তার মনে হয়,মানবমনের জন্যও তেমন কোনো লাইন নিশ্চয়ই ঠিক করা আছে।সেই লাইন ধরে আগাতে থাকে মন।রেলগাড়ির জন্যে যেমন রেলওয়ে জাংশন থাকে,তেমনি ফয়েজের মতে মনগাড়ির জন্যেও জাংশন আছে,মন জাংশন। -'এই পৃথিবীর কারো কি কিছু যায় আসে তার বেঁচে থাকাতে,মরে যাওয়াতে?ফয়েজ ভাবে তার জীবনের তিন নারীর কথা।কখনো রবীন্দ্রপ্রেমী ঝিলমিলের দুরন্ত ঠোঁট ছুঁয়েছে সে।কখনো নদীর মতো শান্ত বীথির চুলের গন্ধে ক্লান্তি মুছেছে।কখনো বেশ্যা খুশবুর সাথে এক খাটে শুয়ে গল্প করেছে। #পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ লেখকের প্রথম উপন্যাস 'বদলে যাবার আগে' শেষ করেই তার লিখা দ্বিতীয় উপন্যাস 'মন জাংশন' পড়ে শেষ করলাম। প্রথম উপন্যাসটির থেকেও বেশি ভালো লেগেছে দ্বিতীয় উপন্যাস টি। ব্যর্থ,অবহেলিত,ভালোবাসার কাঙ্গাল ,মাতাল ফয়েজ একসময় অন্ধকারে তলিয়ে যায় ।আর এই অন্ধকারের,বিষাক্ত জীবনের একটু খানি আলো হয়েছিল তার ছেলে সম্বল।সেই আলোও একদিন নিভে যায়।শুধু রয়ে যায় অন্ধকার জাংশন।