User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জানুয়ারি রিভিউ নংঃ২ উপন্যাসঃ শেষের কবিতা লেখকঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্যাটাগরিঃ চিরায়ত উপন্যাস, মূল্যঃ ৯০ টাকা প্রকাশনীঃবিশ্বসাহিত্য ভবন লেখক পরিচিতিঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট, ১৯৪১)(২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ - ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয় রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়।রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ,৩৮টি নাটক,১৩টি উপন্যাসও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তাঁর সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান।যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত।এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন।রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কাহিনী সংক্ষেপেঃ অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস । উপন্যাসের প্রধান চরিত্র- অমিত রায় ব্যারিস্টার। ইংরেজি ধাঁচে রায় পদবীকে “রয়” ও “রে”তে রূপান্তর যে কিনা নিজের নামের মূল বক্তব্যটাই বদলে ফেলেছে। নামের অসামন্যতা কামনা করে অমিত এমন একটি বানান বানিয়ে ফেলেছে যাতে ইংরেজ বন্ধু ও বন্ধুনীদের মুখে নামতার উচ্চারণ দাঁড়িয়ে গেছে-অমিট রায়ে। লাবণ্যের বাবা অবনীশ দত্ত এক পশ্চিমি কলেজের অধ্যক্ষ। মাতৃহীন মেয়েকে এমন করে মানুষ করেছেন যে, বহু পরীক্ষা পাসের ঘষাঘষিতেও তার বিদ্যাবুদ্ধিতে লোকসান ঘটাতে পারে নি। এমন কি, এখনো তার পাঠানুরাগ রয়েছে প্রবল। বাবার একমাত্র শখ ছিল বিদ্যায়। মেয়েটির মধ্যে তাঁর সেই শখটির সম্পূর্ণ পরিতৃপ্তি হয়েছিল। তাঁর আর একটি স্নেহের পাত্র ছিল। নাম শোভনলাল। অল্প বয়সে পড়ার প্রতি এত মনোযোগ আর কারো দেখা যায় না। প্রশস্ত কপালে, চোখের ভাবের স্বচ্ছতায়, ঠোঁটের ভাবের সৌজন্যে, হাসির ভাবের সরলতায়, মুখের ভাবের সৌকুমার্যে তার চেহারাটি দেখবামাত্র মনকে টানে। মানুষটি নেহাত মুখচোরা, তার প্রতি একটু মনোযোগ দিলে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শিলং পাহাড়ের পথে বিপরীতমুখী দুটি গাড়ির পরস্পর আকস্মিক দুর্ঘটনায় পরিচয় হয় বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার অমিত রায় ও লাবণ্যর। নির্জন পাহাড়ের সবুজ অরণ্য ঘেরা দুর্লভ অবসরে দু'জন দু'জনকে দেখে মুগ্ধ হয়। যার পরিণতি দাঁড়ায় শেষ পর্যন্ত ভালোবাসায়। যেখানে নির্ধারিত ছিল যে লাবণ্য বই পড়বে আর পাশ করবে, এমনি করেই তাঁর জীবন কাটবে। সে হঠাৎ দেখতে পেল সে-ও ভালোবাসতে পারে। আর অমিত যেখানে মেয়েদের কাছে সোনার রঙের দিগন্ত রেখা- ধরা দিয়েই আছে, তবু ধরা দেয় না। রুচির তৃঞ্চা মিটিয়ে কত সুন্দরী মেয়েদের পাশ কাটিয়ে এসেছে এতকাল। সেই বন্দি হলো লাবণ্য প্রেমে। শিলংয়ের পাহাড়ি পথে ঘুরে ঘুরে ওদের বেশ ভালোই সময় কাটে- গান গেয়ে, আবৃত্তি শুনে, পাখি দেখে। প্রকৃতি যেন ওদের ভালোবাসার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে। এমন সময় অমিত লাবণ্যকে বিয়ে করতে অস্থির হয়ে উঠে। কিন্তু লাবণ্যর মন তাতে সায় দেয় না। লাবণ্য ও অমিতের মধ্যে তখন শুরু হয় ব্যক্তিত্বের সংঘাত। অনেক তর্ক-বিতর্ক, মান-অভিমানের পর অমিত লাবণ্যর ভালোবাসা যখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে দুলছে হঠাৎ করেই তখন ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। এবং সেই সময় অমিতের বোন সিসি ও তাঁর বন্ধু কেতকী শিলং এসে উপস্থিত হয়। কেতকীর সঙ্গে বিলেতে থাকার সময় অমিতের একটা গভীর মুগ্ধতার সম্পর্ক ছিল। এবং সে সময়টাতে অমিত কেতকীকে ভালোবেসে যে আংটি পরিয়েছিল, লাবণ্যর সঙ্গে অমিতের বিয়ের খবর শুনে কেতকী সে আংটি খুলে অশ্রুসিক্ত নয়নে শিলং ছেড়ে চেরাপুঞ্জি চলে যায়। অমিত যে আংটিটি লাবণ্যকে পরিয়ে ছিল সেটিও সে খুলে দেয় অমিতের হাতে। অমিত কি করবে ভেবে পায় না। লাবণ্যর পরামর্শে অমিত চেরাপুঞ্জি যায় কেতকীদের ওখানে। কদিন পর ফিরে এসে দেখে লাবণ্য চলে গেছে শিলং ছেড়ে। কোনো ঠিকানা রেখে যায়নি। এক সময় অমিত ফিরে যায় কলকাতায়। অমিতর নিজে মুখে একদিন ও যতি এ প্রসঙ্গে শোনে নি। অমিতর ব্যবহারেও অনেকখানি বদল ঘটেছে। পূর্বের মতোই যতিকে অমিত ইংরেজী বই কিনে উপহার দেয়, কিন’ তাকে নিয়ে সন্ধেবেলায় সে সব বইয়ের আলোচনা করে না; যদি বুঝতে পারে আলোচনার ধারাটা এখন বইছে এক নতুন খাদে। আজকাল মোটরে বেড়াতে সে যতিকে ডাক পাড়ে না। যতির বয়সে এ কথা বোঝা কঠিন নয় যে, অমিতর ‘ নিরুদ্দেশ যাত্রার পার্টিতে তৃতীয় ব্যক্তির জায়গা হওয়া অসম্ভব। কি থাকে সেই বিষয়?? কেনই বা এতো রেশারেশি? কাকেই বা বেছে নেবে অমিত?? প্রেম কি শুধু একটা সময়ে একজনের জন্যই আসে? আর যদি কারো মন একই সময়ে দুজনের জন্য দুভাবে নাড়া খায়? ভালোবাসাকে নির্দিষ্ট সংখ্যা বা গণ্ডিতে বেঁধে রাখা যায় না। তাকে বয়ে যেতে দিতে হয়, উড়তে দিতে হয় আকাশের মুক্ত বিহঙ্গের মতোই। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে ভালোবাসার আচরণ একটু অন্যরকম, অনেকটাই আটপৌরে। আটপৌরে বলে তার গুরুত্ব কমে যায় না, বরং জীবনটাকে বেঁধে রাখে এই আটপৌরে প্রেমের অভ্যেস। অন্যদিকে থাকে সীমাহীন বিস্তৃত প্রেম, নিজেকেই যাতে হারিয়ে ফেলা যায়। এ প্রেমের তল পাওয়া যায় না, আকণ্ঠ নিমজ্জনে তাতে শুধু সাঁতরে বেড়ানো যায়। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ একটি মনস্তাত্ত্বিক রোম্যান্টিক উপন্যাস এবং এতে প্রেমের দুটি স্বরূপকে খুব স্পষ্ট করে প্রকাশ করা হয়েছে। একদিকে অমিত রায়ের উচ্চমার্গীয় সমাজের নাকউঁচু লোকের সভা, অপরদিকে স্বমহিমায় বিরাজিত শিলং পাহাড়ের প্রকৃতিকন্যা লাবণ্য। দুটো মেরু মুখোমুখি দাঁড়ায়, মাঝখানে সুবিস্তৃত অঞ্চল। বহুদূর, তবু অবিরাম স্বচ্ছতা মনে করায়, তারা কাছেই আছে। খুব ভালো লেগেছে উপন্যাস টি। মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ যেন সবকিছু কে উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে গেছে।।