User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
akhn porjonto pora ata amr shera oponnash...
Was this review helpful to you?
or
This is the best book I ever read
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি এ মিষ্ট্রি অফ ফোর্থ সেঞ্চুরি বইয়ের দ্বিতীয় পর্ব। তাই কাহীনীর প্রথম দিক বোঝার জন্য পাঠকের এ মিষ্ট্রি অফ ফোর্থ সেঞ্চুরি বইটি পড়ার অনুরোধ রইলো। কাহীনী সংক্ষেপ: প্রায় ষোলশ বছর পূর্বের ঘটনা।রোমের শাসন তখন ইথান মিরিউলাস থেকে ইথান অরিটাসের হাতে।অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে।ইথান মিরিউলাস আর বেঁচে নেই।তার ভ্রাতৃসম প্যারিস মৃত্যু শয্যায়।ইথান অরিটাস ও সানভীর তারই নাতী।শেষ সময়ে পিতামহের আবদার রাখতে দুই ভাই লিও আর অ্যালেক্সের খুঁজে ছদ্ধবেশে রওনা দেয় গ্রিস নগরীতে।কিন্তু হায়! ঘটনার পরিক্রমাতে জানতে পারে লিও আর তার প্রিয়তমা অ্যালেক্স আর বেঁচে নেই।সেখানে ইথান খুঁজে পায় লিও এর স্মৃতিসংরক্ষণ একটি দিনলিপি। স্পার্টায় বাস করতো মিশরীয় বংশোদ্ভূত অনিন্দ্য সুন্দরী তরুনী অ্যালেক্সন্দ্রা।নিজের মায়ের করা ভুলের জন্য যে বয়ে বেড়াচ্ছিলো দেবতা প্রমিথিউসের অভিশাপ। কি সেই অভিশাপ? যার জন্য প্রতি পূর্নিমা রাতে তাকে দুগ্ধসান করানো হতো আর পুরোহিতের সর্তকবানী অনুসারে তাকে কোন পূর্নিমারাতেই বাইরে বের হতে দেওয়া হতো না। মায়ের মৃত্যুর পর কন্যা অ্যালেক্সান্দ্রা কে নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকতেন বাবা আরিসাম।একদিন বানিজ্যে জাহাজে রোমের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে প্রিয় কন্যাকে সাথে নেন আরিসাম। সেই জাহাজেই তিনি দেখা পান দরিদ্র ফিদেলের।ভ্রাতা হেন্সেলকে হারিয়ে কাজের খুঁজে সেই জাহাজে করেই রোমে যাচ্ছিলো সেও।সেখানে ফিদেলের সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠায় মুগ্ধ হয়ে নিজের প্রিয়তম মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করেন তিনি ফিদেলের।তবে দিয়ে দেন একটি শর্ত। কি সেই শর্ত? ফিদেল কি সেই শর্ত মেনে রুপবতী অ্যালেক্সান্দ্রা কে বিয়ে করতে রাজি হয়? এর মাঝেই ভয়াবহ দূর্যোগে সেই জাহাজডুবি হয়।সেখান থেকে অ্যালেক্সান্দ্রাকে উদ্ধার করে ফিদেল।দশ পনেরজন স্পার্টানের সাথে একটি নির্জন দ্বীপে আটকা পড়ে অ্যালেক্সান্দ্রা। ভাগ্যদেবতার সহায়ে কয়েকদিন পরে সেই দ্বীপের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলো ইথানের রাজজাহাজ।সেই জাহাজে ঠাঁই মিলে অ্যালেক্সান্দ্রা সহ সকলের।কিন্তু পিতাকে হারিয়ে কান্না আর বিলাপে অবুঝ অ্যালেক্সান্দ্রা শোকাহত। জাহাজে সানভীরের কাছে ফিদেল প্রার্থনা করে বছরখানেকের জন্য অ্যালেক্সান্দ্রাকে রোমের রাজ প্রাসাদে কাজ দিতে।কারন তার সাথে অ্যালেক্সান্দ্রাকে নিয়ে যাওয়ার কোন জায়গা নেই তার। দয়ালু সানভীর তখন অ্যালেক্সান্দ্রা কে রাজপ্রাসাদে থাকার ব্যাবস্থা করে দেয়।ফিদেল অ্যালেক্সান্দ্রাকে আশ্বাস দেয় কিছুদিন পর পর এসে সে তাকে দেখে যাবে এবং টাকা জমিয়েই তাকে নিয়ে আবার স্পার্টায় ফিরে যাবে।ফিদেলের এমন আচড়নে রুষ্ট হয় অ্যালেক্সান্দ্রা। রোমে ফিরে প্যারিসের সাথে দেখা করতে গিয়ে দুই নাতি জানায় লিও আর নেই,তবে লিও এর দিনলিপিটি ইথান তার প্রিয় দাদুকে দেয়।সেটি পড়ে একটু হলেও স্বান্তনা পান প্যারিস। একদিন দুই পুত্রকে বুকে নিয়েই বৃদ্ধ প্যারিস চিরনিদ্রায় যান। সময় অতিবাহিত হতে থাকে।ফিদেল তার মামার ব্যবসায় একটি কাজ জুটিয়ে নেয়।আর মাঝে মাঝে দেখা করে অ্যালেক্সান্দ্রার সাথে।অ্যালেক্সান্দ্রা প্রতি সপ্তাহে গির্জায় প্রার্থনা করতে যেতো।সেখানেই ফিদেলের সাথে দেখা হতো তার।ফিদেল অ্যালেক্সান্দ্রার প্রনয়ে বাধা পড়লেও সে কখনো প্রিয়তমার চোখে তার প্রতি ভালোবাসা দেখেনা।এতে ভীষন আক্ষেপ ফিদেলের। এদিকে বিলগ্রেডের রাজকন্যা ভেনাস ইথানের প্রতি দূর্বল হলেও,ভেনাসের প্রনয় বারেবারেই প্রত্যাখান করেন ইথান অরিটাস! রাজপ্রাসাদে কাজ পায় অ্যালেক্সান্দ্রা।তার সময় গুলো ভালো ই কাটতে থাকে।এর মাঝেই তার রুপে মুগ্ধ হয়ে যায় ইথান।প্রনয় যেনো তার মনে দোলা দিতে থাকে। হটাত একদিন ফিদেল গির্জায় এসে অ্যালেক্সান্দ্রাকে জানায় তার একটি ভুল হয়ে গেছে। কি সেই ভুল? যার জন্য অ্যালেক্সান্দ্রা তার বাবার ঠিক করা বিয়ে ভেঙে দেয়? ফিদেল অ্যালেক্সান্দ্রা কে বুঝাতে ব্যর্থ হয়ে রাগে অ্যালেক্সান্দ্রাকে ছেড়েই আবার স্পার্টায় ফিরে আসে। এদিকে ইথান অরিটাসের মনে ধীরে ধীরে স্থান পেতে শুরু করে অ্যালেক্সান্দ্রা।রোমের সবচেয়ে বড় উৎসব পারিলিয়াতে সকলের সাথে সাথে অংশ নেয় অ্যালেক্সান্দ্রা।সেখানে মল্লযুদ্ধে ভয় পেয়ে জ্ঞান হারায় সে।যুবরাজ ইথান নিজে কুলে করে ঘোড়ার গাড়িতে নিয়ে আসে তাকে।পুরো উৎসবে ইথানের দৃষ্টি যে অ্যালেক্সান্দ্রার উপর ছিলো তা চোখ এড়ায় না ভ্রাতা সানভীরের স্ত্রী আরিষ্টার।প্রাসাদে ফিরেই সব জানায় সম্রাজ্ঞী কে। একদিন নিভৃতে অ্যালেক্সান্দ্রা কে প্রেম নিবেদন করে।অ্যালেক্সান্দ্রা তা প্রত্যাখান করে।ভ্রাতা সানভীর অনেক বুঝালে ইথানের প্রতি তার মনেও ভালোবাসা উঁকি দিতে থাকে। কিন্তু সম্রাট বোহেম ইথানের এই প্রনয় মেনে নিতে নারাজ।তিনি যেনো ইথান মিরিউলাসের প্রতিচ্ছবি দেখতে পান পুত্র ইথান অরিটাসের মাঝে। তমিসের সাথে যুদ্ধে যেতে ইথান আর সানভীর প্রস্তুত।তবে তার অনুপস্থিতি তে কেউ তার ক্ষতি করতে পারে ভাবে প্রিয়তমাকে রেখে আসে ইকো সার্জেসের বাড়ি। সেখানে অ্যালেক্সান্দ্রা জানতে পারে লিও ছিলো ইকোর ভ্রাতাসম।ইকোর মুখে অতীত শুনে ইথান মিরিউলাসের প্রতি তার ভুল ধারনা ভেঙে যায়। তমিস রাজ্য জয় করে যুবরাজ প্রাসাদে না গিয়ে চলে যায় ইকো সার্জেসের বাড়ি প্রিয়তমাকে আনতে।প্রাসাদে এসেই অ্যালেক্সান্দ্রা কে আংটি পড়িয়ে বাগদত্তা করেন।যদিও এতে সম্রাট বোহেম বেশ ক্ষিপ্ত। এদিকে স্পার্টায় এসেও ফিদেল ভুলতে পারেনা অ্যালেক্সান্দ্রা কে।ঠিক করে মুদ্রা জমিয়ে রোমে গিয়ে ফিরিয়ে আনবে প্রিয়তমাকে।কাজের খুঁজে গিয়ে দেখা পায় মির্নাভার।মির্নাভার বাবা মিরাকাস ফিদেল কে কাজ জুটিয়ে দেন আর বলেন প্রতিদিনের খাবার যেনো সে মিরাকাসের বাড়িতেই করে।প্রতিনিয়ত মির্নাভা ফিদেলকে দেখে মুগ্ধ হয়ে প্রনয় নিবেদন করলে ফিদেল তা প্রত্যাখান করে এবং জানিয়ে দেয় অ্যালেক্সান্দ্রার কথা। টাকা জমিয়ে সে রোমে পাড়ি জমায় তার অ্যালিকে আনতে। রোমে যাবার পর পূর্নিমারাতে একদিন ও দুগ্ধস্নান করা হয়নি অ্যালেক্সান্দ্রার। একদিন পূর্নিমাতে রোমে জেগে উঠে এক আগ্নেয়গিরি। তবে কি পুরোহিতের অশুভবানী সত্যি হতে চলেছে? রোম রাজ্যের পুরোহিত স্বপ্ন দৈব বানী পান যুবরাজের সবচেয়ে প্রিয়তম কিছু উৎসর্গ করলেই এই আগ্নেয়গিরি শান্ত হবে। যুবরাজের সেই প্রিয়তমা আর কেউ না তার বাগদত্তা অ্যালেক্সান্দ্রা! যুবরাজ প্রিয়তমাকে উৎসর্গ করতে অস্বীকৃতি জানালে পুরো রোম তার বিরুদ্ধাচরন করে,এমন কি সম্রাট নিজেও! ভ্রাতা সানভীরের বুদ্ধিতে ইথান ঠিক করেন পূর্নিমার পূর্বেই প্রিয়তমাকে নিয়ে রোম সাম্রাজ্য ছাড়বেন দুজনে। ঠিক এই সময়ে ফিদেল রোমে এসে পৌঁছে, আর সকল ঘটনা শুনে ভয়াবহতা আঁচ করতে পারে।সে অ্যালেক্সান্দ্রাকে ফিরিয়ে নিতে এসে শুনে ইথানের বাগদত্তা আর কেউ নয় স্বয়ং অ্যালেক্সান্দ্রা! যেদিন রোম ছাড়বে ইথান তার প্রিয়তমা কে নিয়ে সেদিন রাতেই সম্রাট ও তার সেনাপতি সহ সকল পুরোহিতরা অ্যালেক্সান্দ্রাকে জোড় করে নিয়ে যেতে আক্রমন করে।ইথান সেখান থেকে প্রিয়তমাকে বাঁচাতে যুদ্ধ শুরু করে।একসময় নিজের গলায় ছুড়ি ধরলে সম্রাট ও বাধাগ্রস্ত হয়।এমন বিপত্তি তে যুদ্ধ করতে করতে পালাবার সময় একজন অ্যালেক্সান্দ্রা কে অপহরন করে।লুকিয়ে সেই অপহরন কারিকে দেখে ফেলে ফিদেল।সে ইথান ও ভ্রাতা সানভীর কে নিয়ে যেতে চায় অপহরণকারীর নিকট।অপহরণকারী ইথানকে জানায় তার বাগদত্তাকে বাঁচানোর জন্যই সে তাকে অপহরন করে।নিজের পরিচয় দেয় অ্যাজাক্স নামে। কে এই অ্যাজাক্স? যে নিজের প্রানের বিনিময়ে হলেও অ্যালেক্সান্দ্রাকে বাঁচাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ! ঘটনাক্রমে ইথান,ভ্রাতা সানভীর আর অ্যালেক্সান্দ্রা পালিয়ে এসে ঠাঁয় নেয় স্পার্টায় ফিদেলের বাড়িতে। সেখানে মির্নাভা ফিদেলকে পাওয়ার বাসনায় যুবরাজ ইথানকে জানায় ফিদেল যার খুঁজে রোমে গিয়েছিলো সে আর কেউ নয় অ্যালেক্সান্দ্রা!তাদের গভীর প্রনয় ছিলো।যার জন্যেই মির্নাভাকে বারবার প্রত্যাখান করে ফিদেল। কষ্টে,ঘৃনায় বিষাক্ত হয়ে উঠে ইথানের মন।যার জন্য নিজ রাজ্য ছেড়ে এসেছে সে কিনা এমন চরিত্রের!রাজ রক্ত টগবগ করে উঠে।অ্যালেক্সান্দ্রার প্রতি গভীর প্রেম মুহূর্তকালেই তিক্ততায় পরিনত হয়।শুরু হয় অ্যালেক্সান্দ্রার প্রতি ইথানের অন্যায় আচড়ন,অবহেলা। তারই মধ্যে ঘটতে থাকতে একের পর এক চমকপ্রদ ঘটনা। এরই মাঝে ইথান জানতে পারে সে বাবা হতে চলেছে।মন খুশিতে ভরে গেলেও প্রিয়তমার প্রতি অবহেলা কমে না তার। সময় অতিবাহিত হলে অ্যাজাক্স খবর নিয়ে এলো রোমের সম্রাট বোহেম পুত্রশোকে ইহলোক ত্যাগ করেছেন।আর ইথানের রোমে ফিরে যাবার আগ অবধি তার ভগ্নিজামাতা ফিরোডাস আর মাহিনাসের হাতে রাজ্যভার দিয়ে গেছেন। কিন্তু ফিরোডাস রাজ্যে অবতরন করেই ইথানকে রাজদ্রোহী বলে ঘোষনা দেয় এবং ইথান ও ভ্রাতা সানভীর কে দেখা মাত্রই হত্যার আদেশ দেয়! সব শুনে ক্রোধান্বিত হয়ে ইথান নিজের রাজ্য আক্রমনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সাহায্যের জন্য বিলগ্রেডের রাজার নিকট পত্র পাঠায় অ্যাজাক্সেরর মাধ্যমে। এরই মধ্যে অ্যালেক্সান্দ্রা পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।ইথান অরিটাস নিজ সন্তানের মুখ দেখে পুলকিত হোন।পুত্রের নাম রাখা হয় এ্যাথেন্স অরিটাস। বিলগ্রেড থেকে সম্রাট লাইনাস জানায় তিনি ইথানকে সাহায্য করবেন তবে সে যদি অ্যালেক্সান্দ্রা কে ত্যাগ করে তার কন্যা ভেনাস কে বিয়ে করে। কি করবে এবার ইথান? নিজের রাজ্যে যাওয়ার জন্য তবে কি সম্রাট লাইনাসের প্রস্তাব মেনে নিবে? কি হবে অ্যালেক্সান্দ্রার? সেই হটাত জেগে উঠা আগ্নেয়গিরি কি শান্ত হয়? তবে শেষ অবধি যার জন্য রাজ্য ছাড়ে ইথান তাকে বাঁচাতেই রোমে ফিরে আসেন।কিন্তু কিভাবে ফিরেন তিনি? বাঁচাতে পেরেছিলেন কি তিনি তার প্রিয়তমাকে? সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে পাঠককে যুদ্ধ,মিথ,বীরত্ব, প্রেম বিশ্বাসঘাতকতা,রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং আত্মত্যাগের শ্বাসরুদ্ধকর উপখ্যান এ ফায়ার অফ ফোর্থ সেঞ্চুরি
Was this review helpful to you?
or
প্রতি পূর্নিমায় দুধ দিয়ে স্নান করতে হয় সুন্দরী অ্যালেক্সান্দ্রার। এক প্যাগান পুরোহিত ওর মা'কে বলেছিল, অ্যালেক্সান্দ্রার উপর দেবতা প্রমিথিউসের অভিশাপ আছে। পূর্নিমার রাত তার জন্য অশুভ। শাপ কাটাতে এই সমাধান, অন্যথায় অ্যালির জীবনে নেমে আসবে চরম দূর্ভোগ। যিশুর মৃত্যুর প্রায় চারশো বছর কেটে গেছে তখন। রোম আর স্পার্টায় ছড়িয়ে পড়েছে খ্রিষ্টধর্মের বাণী, কিন্তু ধর্মান্তরিত অনেকেই তাদের পূর্বপুরুষের প্যাগান ধ্যানধারণা এখনো ছাড়তে পারেনি। অ্যালেক্সান্দ্রাও শান্তি খুঁজে পেয়েছে সবসময় বাবার খ্রিষ্টধর্মেই। মা'র প্যাগান রীতিনীতিও মেনে চলেছে। তাও দুর্ভোগ পিছু ছাড়লো না অ্যালির। ষোলোতে পা দিতেই মা মারা গেলেন। অ্যালির বাবা স্পার্টার ধনবান ব্যবসায়ী সিনর আরিসাম রোমে যাবেন ব্যবসার কাজে, একমাত্র মেয়েকেও সাথে নিলেন। মাতৃহীনা মেয়েকে একা তো রেখে যাওয়া যায় না। রোমগামী জাহাজে ওঠার সময় আরিসামের পকেট থেকে স্বর্ণমুদ্রার থলেটা পড়ে গেল। খেয়ালই করতেন না, যদি না এক অল্পবয়সী যুবক থলেটি ফিরিয়ে দিত। মুহূর্তেই ছেলেটির দিকে মনোযোগী হলেন আরিসাম, নাম তার ফিদেল। এতিম, দরিদ্র কিন্তু অন্তরে লোভ নেই - ছেলেটিকে দেখেই অ্যালির জন্য মনে ধরলো তার। দেরি করলেন না আরিসাম। প্রস্তাব দিয়ে বসলেন ফিদেলকে। ঘরজামাই থাকার প্রস্তাবে কিছুটা দোনোমোনো করলেও, অনিন্দ্য সুন্দরী অ্যালেক্সান্দ্রাকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্খা ফিরিয়ে দিতে পারলো না ফিদেল। অ্যালিও বাবার মুখ চেয়ে মেনে নিল অপছন্দের এই সম্পর্ক। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। রোমে পৌঁছানোর আগেই দুর্ঘটনায় জাহাজডুবী হলো। আরিসামকে বাঁচাতে পারলো না ফিদেল, অ্যালিকে সঙ্গে নিয়ে অল্প আরো ক'জনের সাথে এক দ্বীপে এসে উঠলো। তাদের উদ্ধার করলো রাজকীয় রোমান জাহাজ। রাজমন্ত্রীর পুত্র সানভীরের অনুগ্রহে ফিদেল অ্যালিকে রেখে গেল রোমান রাজপ্রাসাদে। রোমের সম্রাট বোহেম অনেকদিন থেকেই চাইছেন বিলগ্রেডের রাজকন্যা ভেনাসের সাথে একমাত্র পুত্র ইথান অরিটাসের বিয়ে দিতে। সুদর্শন ইথানের শৌর্যবীর্য নিয়ে গর্ব করে রোমানরা, যদিও বৃদ্ধরা তার মধ্যে দেখতে পান মৃত রাজা অত্যাচারী ইথান মিরিলাউসের ছায়া। কিন্তু আপন খেয়ালে চলা ইথানকে বিয়ের জন্য রাজি করায় কে! চিরসঙ্গী ও চাচাতো ভাই সানভীরকে তো সে বলেই রেখেছে, প্রায়ই স্বপ্নে হানা দেওয়া মেয়েটিকেই কেবল নিজের করে গ্রহন করবে ইথান। ইথান তার সেই স্বপ্নের রাজকন্যাকে খুঁজে পেল অ্যালির মধ্যে। অ্যালিও তদ্দিনে ফিরিয়ে দিয়েছে ফিদেলকে, ইথানের তীব্র সর্বগ্রাসী ভালোবাসায় সাড়া দিলো সে-ও। কিন্তু এই প্রেম কি অ্যালির জীবনে প্রমিথিউসেরই অভিশাপ? একদিকে রাজপুত্রের খামখেয়ালের সাথে মিলে না অ্যালির ভালোবাসার সংজ্ঞা, অন্যদিকে অসম এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে স্বয়ং সম্রাটও। রোমের অদূরের ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলো সহসা। প্যাগান পুরোহিতরা রায় দিলেন, বলি চাই অগ্নিদেবতা ভালকানের। যুবরাজ যদি তার প্রিয়তমাকে আসছে পূর্নিমার রাতে আগ্নেয়গিরিতে নিক্ষেপ করেন, তবে রক্ষা পাবে রোম! বলির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠলো ভীত রোমবাসী। সম্রাট পক্ষ নিলেন এই নৃশংস দাবির - রোমও বাঁচবে, আপদও বিদেয় হবে! বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো ইথান! পালালো অ্যালেক্সান্দ্রাকে নিয়ে, সাথে যোগ দিলো সানভীর ও ফিদেল। বিশাল রোম রাজ্যের হবু শাসক প্রেমের জন্য সব ছেড়ে পাড়ি জমালো স্পার্টায়। কি হবে এই ভালোবাসার পরিণতি? দুর্ভাগ্য কি পিছু ছাড়বে অ্যালেক্সান্দ্রার? রাজ্য ফিরে পাবে নির্বাসিত ইথান? নাকি অসম প্রেম, ভুল বোঝাবুঝি আর অপরাধ বোধের ভার কুরে কুরে খাবে কতগুলো জীবন? সমসাময়িক উদীয়মান লেখিকা জিমি হাইসনের উপন্যাস 'এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি'র পটভূমি ছিল ৪৫৩ খ্রিস্টাব্দের প্রাচীন রোম। রোমান সাম্রাজ্যের আবহ ফুটিয়ে তুলেছেন লেখিকা সুনিপুণতার সাথে। যুদ্ধ, রাজনীতি, মিথ, খ্রিষ্ট আর প্যাগান ধর্মের প্রেক্ষাপট পড়তে ভালো লাগছিল বইটিতে। তবে রোমান আবহটুকু যদি সরিয়ে নিই, তবে গল্পটির মধ্যে ভালো লাগার মতো খুব বেশি কিছু পাইনি আমি। একজন অত্যাচারী একগুঁয়ে যুবকের সাথে এক হরিণশাবকের মত দূর্বল নারীর সম্পর্ক, ত্রিভুজ প্রেমের উত্থান-পতন, আর একই ভুল বোঝাবুঝির দীর্ঘ পুনরাবৃত্তির মধ্যে নতুন কিছুই ছিল না। গল্পের মূল চরিত্র তিনজন - ইথান, অ্যালেক্সান্দ্রা ও ফিদেল। ইথান পাগলের মতো ভালোবাসে অ্যালিকে, কিন্তু প্রতিনিয়ত তাকে শারীরিক ও মানসিক আঘাত করে যায়। তৃতীয় পক্ষের কাছে শোনা তথ্যের ভিত্তিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে দিনের পর দিন দুর্ব্যবহার করে যায় প্রিয়তমার সাথে, কোনোরকম যাচাই ছাড়াই। অ্যালিও সীমাহীন অত্যাচার সহ্য করে যায়, কেবল চিৎকার করে কাঁদা আর বারবার ইথানের কাছে ফিরে যাওয়াই তার কর্তব্য। ফিদেলের চরিত্রটিও এক মেরুদণ্ডহীন, ভাগ্যবিড়ম্বিত যুবকের। চরিত্রগুলোর গতানুগতিকতা এবং তাদের মধ্যে কোনো ধরণের মোড় না থাকা হতাশ করেছে। কিছু কিছু বিষয় লেখিকা অবতারণা করে পরে ভুলে গিয়েছেন কি না জানি না। কোথায় লুকিয়েছিল - বোকার মতো দাসী থাইসার সামনে বলে ফেলে অ্যালি, কিন্তু পরবর্তীতে তার কোনো ফলাফল গল্পে ছিল না। তবে এর উল্লেখ কেন করা? ফিদেলের স্পার্টায় ইথানদের আনা এবং লুকিয়ে স্পার্টান প্রাসাদে খবর দিতে যাওয়ার ইচ্ছার কোনো প্রতিফলন পরে আর তার চরিত্রে ছিল না। এদিকে স্পার্টান সৈনিকদের হত্যা করার পরও দীর্ঘদিন নির্বিঘ্নে স্পার্টায় কাটালো ইথান। সানভীরকে স্পার্টান সৈন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করার ঘটনার উল্লেখ করলেন লেখিকা, পরে সেটাও গুরুত্ব পেল না। সবমিলিয়ে ঐতিহাসিক পটভূমি ব্যতীত উপন্যাসটির ঘটনাপ্রবাহে কোনোরকম টুইস্ট না থাকায় নিদারুণ একঘেয়েমি পেয়ে বসেছিল একসময়। ভালোবাসা, অবিশ্বাস, আত্মত্যাগের একটি সরল প্রেমকাহিনী হিসেবেই দেখা যায় উপন্যাসটিকে। ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে ছাপা হওয়া বইগুলো মানের দিক থেকে ইতোমধ্যেই স্বতন্ত্র হয়ে উঠেছে। 'রক্ততৃষ্ণা'র মত এই বইটিও আকারে অন্যরকম। উন্নত প্রচ্ছদ, বাঁধাই আর ভারী পাতার পাশাপাশি ছাপার ভুল না থাকাটা ছিল পরম পাওয়া। বইঃ এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি লেখকঃ জিমি হাইসন প্রকাশনায়ঃ ঐতিহ্য প্রকাশনী প্রকাশনায়ঃ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ প্রচ্ছদঃ রেড কোলস পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩২৭ মূল্যঃ ৫৫০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
বই: এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি লেখক: জিমি হাইসন প্রকাশনী : ঐতিহ্য প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০১৮ প্রচ্ছদ : রেড কোলস পৃষ্ঠা : ৩২৭ মূল্য : ৫৫০৳ কাহিনী সংক্ষেপ: মিসরীয় বংশোদ্ভূত অনিন্দ্য সুন্দরী তরুণী এলেক্সান্দ্রা। বাবা মায়ের অতিশয় অাদরের কন্যা। কিন্তু এ কন্যার উপর অাছে দেবতা প্রমিথিউসের অভিশাপ। এলেক্সান্দ্রা যখন মায়ের গর্ভে তখন এক পুরোহিত তার মাকে সতর্ক করে বলেছিল, পূর্ণিমা রাত তার অনাগত সন্তানের জন্য অশুভ। এ রাতে যেন তাকে দুগ্ধস্নান করানো হয় এবং বাইরে বেরুতে না দেয়া হয়। ষোল বছর অন্যথা হয়নি এ নিয়মের। স্পার্টা থেকে রোম। সামুদ্রিক সফর, এলেক্সান্দ্রা তার বাবা আরিসামের সাথে অনেক আকাঙ্খিত সাম্রাজ্য রোমে যাচ্ছে। সফরের শুরুতে এলেক্সান্দ্রার মনে যে আনন্দানুভূতি ছিল ভয়ঙ্কর ঝড়ের কবলে তা নিমিষেই মিলিয়ে গেল! ঝাপটে ধরা অন্ধকার মনে গ্রাস করল আতঙ্ক আর ভয়। শান্ত স্নিগ্ধ সাগর মুহুর্তেই রুপ নিল ভয়ঙ্কর ঝড়ে! ভরাডুবি হলো জাহাজের, অধিকাংশ যাত্রীই মারা গেল, সলিলসমাধি হয়ে গেল তাদের। বেঁচে যাওয়া অল্প ক'জনের মাঝে এলেক্সান্দ্রার সাথে রয়েছে আরেক ভাগ্যান্বেষী যুবক ফিদেল। ভাগ্যের বিড়ম্বনায় এলেক্সান্দ্রা জড়িয়ে পড়েন ফিদেল নামের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন যুবকের সাথে। যাকে আলেক্সান্দ্রার বাবা আরিসাম মেয়েজামাতা হিসেবে পছন্দ করেন। অন্যদিকে গ্রীস থেকে নিজ দেশ রোমে ফেরার পথে যুবরাজ ইথান অরিটাস উদ্ধার করেন আলেক্সান্দ্রা, ফিদেল সহ আরও অনেক কে একটা নির্জন দ্বীপ থেকে। ঘটনার নতুন রূপ অাবার শুরু হয় এখানে। এলেক্সান্দ্রার ভাগ্য জড়িয়ে পরে যুবরাজ ইথানের সাথে এবং এর পরিনতি হয় ভয়াবহ। ভালোবাসা যেন এখানে গোলক ধাঁধার মতো। কেউ কেউ ভালোবাসা পাওয়ার জন্য অাকুল হয়ে কেঁদে মরে অাবার কেউবা ভালোবাসার পুজোর ফুল পায়ের কাছে ফেলে রাখে। প্রিন্সেস ভেনাস যখন অশ্রু সংবরণ করে বলছিল, "পার্থিব অপার্থিব সুখ বলতে আপনাকেই বুঝেছি। যেকোন উপায়েই পেতে চেয়েছি আপনায়। তবে ভেতরে পরাজয়ের গ্লানি মেখে বিজয় গৌরব শোভা পায় না।" তখন চোখের অশ্রু সংবরন করা সত্যিই কঠিনন সত্যিকারের ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়। রোমের যুবরাজ এবং ভাবী সম্রাট ইথান অরিটাস তার বাগদত্তাকে নিয়ে নিশুতি রাতের তারা গুণছেন। এমন সময় আকাশ লাল রক্ত বর্ণ ধারণ করল। জানা গেল রোমের এক পাহাড় থেকে উদগিরণ হচ্ছে আগ্নেয়গিরি। পুরোহিতরা প্রস্তাব দেন রোমের হিতার্থে এ আগ্নেয়গিরি থামাতে বিসর্জন দিতে হবে যুবরাজের প্রিয়জনকে অর্থাৎ তার একমাত্র বাগদত্তাকে। শুনে বিরুদ্ধাচরণ করলেন যুবরাজ! তার বিরোধী হয়ে গেল পুরো রোমবাসী! যে রোম রাজ্যের বিস্তৃতির জন্য তিনি জয় করেছেন কতগুলো সাম্রাজ্য! বিরোধী হয়ে গেল সিনেট, মন্ত্রী পারিষদ, সেনাবাহিনী এমনকি সর্বদা ছায়াতুল্য মহান পিতা! বাধ্য হয়ে নিজ মাতৃভূমির বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিতে হল যুবরাজকে! চিরকালের জন্য রুদ্ধ হয়ে যায় রোমে ফেরার পথ। কিন্তু যাকে বাঁচাতে রোম ত্যাগ করতে হয়েছিল আবার তাকে বাঁচাতেই রোমে ফিরে আসতে হয় যুবরাজকে। তবে আবারো কি রোমবাসীদের উপর নেমে আসছে ঘোরতর কালো অধ্যায়? ইতিহাস কি সত্যিই বারবার ফিরে ফিরে আসে? এ কি তবে ফিরে আসা এক ইতিহাসের গল্প। পুনরাবৃত্তি কি ঘটবে রোমান ইতিহাসের পুরনো অতীত ইতিহাস যেটার সূচনা করে গিয়েছিলেন এলেক্সকে না পাওয়া ভাগ্যহত সম্রাট ইথান মিরিউলাস? নিয়তি কি একই কথা বলবে রোমানদের সাথে? প্রেম,যুদ্ধ,আর ষড়যন্ত্রের মায়াজালে বিস্তৃত এ উপন্যাস পাঠককে মুগ্ধ করবে নিশ্চিত! নিজস্ব মতামত: সাধারণ থেকে অনেক ঊর্ধ্বের, ভালো ও মন্দের মাঝামাঝি এক মানবের দৈবপীড়িত বা নিয়তি লাঞ্ছিত হয়ে ক্রমশ হেরে যাওয়ার গল্প। কিংবা গল্পটা এক অভিশপ্ত নারীর। যুদ্ধ, মিথ ও বীরত্বের সংমিশ্রণে ভরপুর এক রহস্য রোমাঞ্চকর অনুভূতি। আরও আছে প্রেমের কারনে সাম্রাজ্য সিংহাসন আত্মীয় পরিজনকে ত্যাগ করে নিরুদ্দেশ হওয়া, বিশ্বাসঘাতকা, সন্দেহের কারনে প্রিয়জন হারানো ভালোবাসার গল্প। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এর কাহিনী। স্বচ্ছ সময়ে সত্ত্বার সাধন, সায়াহ্নে সংশয়ে সম্যক সম্ভাষণ। সাধে সানন্দে সাগ্রহ সদালাপ, সংকটে সচ্চরিত্রের সঙ্গোপন সংলাপ। সম্বল সঁপে সন্তর্পণে সৎকার, সম্পূরক সম্মিলনে সকরুণ সম্ভার। সেচ্ছা সাজায় সমাপণী সারথি, সুদূররের সমুদ্রে সলিল সমাধি। ------জিমি হাইসন ইতিহাস নির্ভর মিথলজি ভিত্তিক দুর্দান্ত এ ক্লাসিকাল থ্রিলারের ৩২৭ পৃষ্ঠার বইয়ের পুরো কাহিনী অাছে ছোট এই কবিতার মধ্যেই। প্রথমে বুঝতে না পারলেও পুরো বই শেষ করে যখন চোখ বুজে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেলাম তখনই এ লাইনগুলোর মর্মার্থ বুঝতে পারলাম।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ বই - এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি লেখিকা - জিমি হাইসন প্রাচীন রোমান উপনিবেশিক আবহে রচিত উপন্যাস 'এ মিস্ট্রি অব ফোর্থ সেঞ্চুরি' এর পরবর্তী পর্ব 'এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি'। প্রথম পর্বে অসমাপ্ত কাহিনীর কয়েক বছর পরের সময় থেকে এই পর্বের গল্প আরম্ভ হয়েছে। প্রায় ষোড়শ বছর পূর্বে, স্পার্টায় বাস করতো দেবতা প্রমিথিউসের অভিশাপ বয়ে বেড়ানো অনিন্দ্য সুন্দরী তরুণী অ্যালেক্সান্দ্রা। পিতৃসূত্রে যে ছিল মিসরীয়। তার ডাকনাম অ্যালি। বাবা খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী, মা প্যাগান। অ্যালির মায়ের ধর্মমতে পূর্নিমার রাতে মাংস খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু অ্যালি যখন মার্তৃগর্ভে তখন এক পূর্ণিমার রাতে তার মা ভুলবশত মেষ শাবকের মাংস ভক্ষণ করে। এক পুরোহিত তার মা'কে সর্তক করে বলেছিল, প্রতি পূর্ণিমারাতে অ্যালিকে দুগ্ধস্নান করাতে এবং বাইরে না বেরোতে। এভাবেই ষোল বছর বয়স অবধি তাকে নিয়মিত পূর্ণিমারাতে দুগ্ধস্নান করানো হতো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে পরবর্তীতে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। অ্যালেক্সান্দ্রার বাবা জনাব আরিসাম স্পার্টার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসার কাজে প্রায়শই রোমে যান। মায়ের মৃত্যুর পর অ্যালি যখন ভেঙে পড়েছে তখন আরিসাম ভাবলো মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে রোমে যাবে। সেই ছোটবেলা থেকে যাওয়ার জন্য বায়না করতো। দুর্ঘটনায় তাদের বহনকারী জাহাজ ডুবে যায়। কোনরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে এক নির্জন দ্বীপে তারা পৌঁছায়। তার সাথে সেখানে আটকা পড়ে আরো ১৫/১৬ জন স্পার্টান। যাদের মধ্যে রয়েছে ফিদেল নামের এক ভাগ্যবিড়ম্বিত যুবক। জনাব আরিসাম ফিদেলকে মেয়েজামাতা হিসেবে পছন্দ করেছিল। রোমান যুবরাজ গ্রীস হতে রোমে ফিরছিল অ্যালেক্সান্দ্রাদের আটকে পড়া দ্বীপের কাছ দিয়ে। যুবরাজকে বহনকারী রাজজাহাজ তাদের উদ্ধার করে রোমে নিয়ে যায়। ভাগ্যক্রমে অ্যালির জায়গা হয় রাজপ্রাসাদে আর ফিদেলের হয় মামার বাড়িতে। ফিদেল কথা দিয়েছিল, অ্যালিকে স্পার্টায় তার বাড়িতে পৌঁছে দিবে। কিন্তু দায়িত্বজ্ঞানহীন ফিদেল তাকে ছেড়ে একাই চলে যায় স্পার্টায়। রোমের রাজপ্রাসাদে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে একা পড়ে রইলো অ্যালেক্সান্দ্রা। অ্যালি কি শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পেরেছিল? নাকি ভাগ্যের চাকা তাকে ঘুরিয়েছে বারংবার? তরুণ উদীয়মান লেখিকা জিমি হাইসনের দ্বিতীয় উপন্যাস 'এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি'। প্রথম উপন্যাস 'এ মিস্ট্রি অব ফোর্থ সেঞ্চুরি' দিয়ে তিনি পাঠক হৃদয় জয় করেন। দ্বিতীয় উপন্যাসের মাধ্যমে সে অবস্থান আরো পাকাপোক্ত হয়। লেখিকা উপন্যাসের প্লট হিসেবে বেঁছে নিয়েছেন প্রাচীন রোমান উপনিবেশ। এছাড়াও ঘটনাপ্রবাহে স্পার্টা, গ্রীস এসেছে। প্রাচীন কালের মানুষের জীবন ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, রাজনৈতিক বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আর উপন্যাসের মূল অংশ বিস্তার লাভ করেছে রোমান সাম্রাজ্যকে ঘিরে। এক্ষেত্রে বলব, লেখিকা যথাযথ প্লট তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন। পড়ার সময় পাঠকের মনে হবে তারা যেনো ষোড়শ বছর পূর্বের রোমে আছেন। এ এক অন্যরকম অনুভূতি। যেকোন উপন্যাসের সুন্দর প্লট চরিত্রবিহীন অচল। উপন্যাসকে সার্থক রূপে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কিছু শক্তিশালী চরিত্র থাকা চাই। এই উপন্যাসে যুবরাজ ইথান, তার বন্ধু সানভীর, অনিন্দ্য সুন্দরী অ্যালেক্সান্দ্রা, ভাগ্যবিড়ম্বিত যুবক ফিদেল, সম্রাট বেহোম এর মতো বেশ কিছু শক্তিশালী চরিত্র আছে। এছাড়াও আরো অনেক চরিত্র আছে উপন্যাসে যাদের অবস্থান লক্ষনীয়। সব চরিত্রের সুন্দর বিকাশ লাভ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে একজন ঔপন্যাসিকের কাজ। এক্ষেত্রে লেখিকা জিমি হাইসন প্রসংশার দাবীদার। 'এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি' উপন্যাসের শব্দচয়ন ও বাক্যের গঠন যেকোন পাঠককে মুগ্ধ করবে। কোন কাহিনিকে কিভাবে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করা হয় তা ফুটে উঠে শব্দচয়ন, বাক্য গঠন ও সংলাপের মাধ্যমে। এর প্রতিটি শব্দ, বাক্য যেনো পাঠকের হৃদয়ে সরাসরি আঘাত করে। বর্ণনা ভঙ্গি স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। উপন্যাসের নামকরণ ও কাহিনি প্রসঙ্গে বলব, এটিকে অনুবাদ গ্রন্থ ভেবে ভুল করবেন না। এটি সম্পূর্ণ মৌলিক একটি বই। প্রচলিত ক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে গিয়ে একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপট ও ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা এই উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে নতুন সংযোজন এবং নতুন মাত্রা যোগ করবে। আগের পর্ব পড়া না থাকলেও স্বতন্ত্র গ্রন্থ হিসেবে এটি পড়তে অসুবিধা হবে না। পরবর্তীতে আরেকটি বই প্রকাশের মাধ্যমে এই সিরিজ সমাপ্ত হওয়ার কথা আছে। বাকিটা লেখিকা ও পাঠকের মর্জি। যুদ্ধ, মিথ, বীরত্ব, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং আত্মত্যাগের এক শ্বাসরুদ্ধকর উপাখ্যান - 'এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি'।
Was this review helpful to you?
or
লেখিকার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। বইয়ের কিছু বাংলা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যা বর্তমানে অপ্রচলিত, যেমনঃ ভ্রাতা, কেদারা। মধ্য যুগের সময়ে কাহিণী আবর্তিত হয়েছে বলেই যে কাহিণীর বর্ণনাতে এমন শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করতে হবে তা কিন্তু ঠিক নয়। গল্পের ব্যপ্তি ছোট করার সুযোগ ছিল। কিছু কিছু সময় গল্পের গাঁথুনি আলগা হয়ে গেছে; সে সব জায়গাগুলোতে পড়তে গিয়ে বিরক্ত লেগেছে। অ্যালির প্রতি ইথানের উপেক্ষার বর্ণনা কম হলেও পাঠকের বুঝতে সমস্যা হতো না। স্পার্টা আর রোমের ভৌগলিক বর্ণনা ছিল চমকপ্রদ। আশা করছি ভবিষ্যতে লেখিকার কাছ থেকে সুন্দর কিছু বই পাবো। লেখিকার জন্য রইলো শুভকামনা। সুন্দর প্রচ্ছদ, মজবুত বাঁধাইয়ের জন্য প্রচ্ছদ শিল্পী, বাঁধাই কর্মী আর সবশেষে প্রকাশককে ধন্যবাদ জানাই নবীন লেখককে সুযোগ দেয়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
আমার এখন পর্যন্ত পড়া বইয়ের মধ্যে সেরা একটি বই
Was this review helpful to you?
or
বইটার ব্যাপারে যতটুকুই বলা হোক কম বলা হবে। আমি শুধু এইটাই বলব আমার এখন পর্যন্ত পড়া সমস্ত উপন্যাসের থেকে অসাধারণ। বইটা পড়ে আসলে মনে হয় নাই যে আমি বই পড়ছি মনে হলো পুরো জিনিসটা আমার সামনে বাস্তব রুপ ধারণ করছে। সবারই এই বইটা পড়ে দেখা উচিৎ।
Was this review helpful to you?
or
এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি তরুন উদীয়মান লেখিকা জিমি হাইসন এর প্রথম বই " এ মিস্ট্রি অব ফোর্থ সেঞ্চুরি", যা প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে। এর পর একই প্রেক্ষাপটে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় লেখিকার দ্বিতীয় উপন্যাস " এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি"। যা প্রাচীন রোমান উপনিবেশিক আবহে রচিত। এ উপন্যাসের মাধ্যমে লেখিকা অত্যান্ত সফল ভাবে পাঠকদের স্পার্টা থেকে রোম, রোম থেকে স্পার্টা সাম্রাজ্যে, ১৬০০ বছর আগের সময়ে ঘুরিয়ে নিয়ে এসেছেন। নাম দেখে কোন ভাবেই এটাকে অনুবাদ গ্রন্থ বলে ভুল করা যাবে না। এটা সম্পূর্ন একটি মৌলিক বাংলা উপন্যাস। মূলত লেখিকা "এ মিস্ট্রি অব ফোর্থ সেঞ্চুরি" এর কাহিনী যেখানে শেষ করেছেন, তার কয়েক বছর পরের সময় থেকেই শুরু করেছেন "এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি" এর কাহিনী। বইটা পড়া শুরু করলে প্রথমে মনে হতে পারে এটি আগের বইয়ের কাহিনীর সাথে অনেকটা না পুরাপুরি মিল, কিন্তু দুই পাতা পড়ার পরেই বোঝা যাবে এটি পরিবেশ এবং ভূখন্ডের মিল থাকলেও কাহিনী বা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে কোন মিল নাই। দেবতা প্রমিথিউসের অভিশাপ বয়ে বেড়ানো রুপে গুনে অতুলনীয় অনিন্দ্যসুন্দরী তরুনী আলেক্সান্দ্রা। তিনি মিশরীয় বংশোদ্ভুত হলেও বাস করতেন স্পার্টায়। যা ঘটে ১৬০০ বছর পূর্বে। ভাগ্যের বিড়ম্বনায় যিনি জড়িয়ে পড়েন ফিদেল নামের এক দায়িত্বজ্ঞানহীন যুবকের সাথে। যাকে আলেক্সান্দ্রার বাবা জনাব আরিসাম মেয়েজামাতা হিসেবে পছন্দ করেন। অন্যদিকে গ্রীস থেকে নিজ দেশ রোমে ফেরার পথে যুবরাজ ইথান অরিটাস, সম্রাট বোহেমের যিনি এক মাত্র পুত্র, উদ্ধার করেন আলেক্সান্দ্রা, ফিদেল সহ আরও অনেক কে একটা নির্জন দ্বীপ থেকে। এর পর থেকে আলেক্সান্দ্রার ভাগ্য জড়িয়ে পরে যুবরাজ ইথানের সাথে এবং এর পরিনতি হয় ভয়াবহ। কাহিনীর পরতে পরতে যুদ্ধ, মিথ ও বীরত্বের প্রকাশ দেখা যায়। আরও আছে প্রেমের কারনে সাম্রাজ্য সিংহাসন আত্মীয় পরিজনকে ত্যাগ করে নিরুদ্দেশ হওয়া। আছে বিশ্বাসঘাতকা, আছে সন্দেহের কারনে প্রিয়জন হারিয়ে যাওয়া। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এর কাহিনী। যা নিখুঁত ভাবে লেখিকা কলমের আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। আলেক্সান্দ্রা, যুবরাজ ইথান অরিটাস, সম্রাট বোহেম, সম্রাজ্ঞী হেরা, প্রিন্সেস ইসাবেল, জেপিডের যুবরাজ মাহিনাস, মন্ত্রী সেনেক, প্রিন্সেস রোজালিন, ফিরোডাস, সেনাপতি বারমাইজ, আরিসাম, ফিদেল, সানভির। এছাড়াও অনেক ছোট ছোট চরিত্র লেখিকা জীবন্ত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, উপন্যাসের কাহিনীকে যারা নানা ভাবে গন্ডোগোল পাকিয়ে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। লেখিকা জিমি হাইসন এর পড়া এটা আমার দ্বিতীয় উপন্যাস। প্রথম উপন্যাসে ভাবের গভীরতা সামান্য কম থাকলেও এ উপন্যাসে তা পূরন করে দিয়েছেন এবং পাঠক হিসেবে আমার হৃদয়ে ছুয়ে দিয়েছেন। পৌছে দিয়েছেন ১৬০০ বছর পূর্বের সময়টাতে। নতুন লেখিকা হিসেবে কোন ভাবেই উপেক্ষা করা যায় না বরং অসংখ্য ভালো বইয়ের মাঝ থেকে আমার পড়া অল্প কিছু ভালো বইয়ের সাথে যোগ হলো লেখিকার বই দুটি। অসম্ভব সুন্দর অনুভূতি ছুয়ে আছে বইটা শেষ করার পরও।
Was this review helpful to you?
or
ইতিহাস কি সত্যিই বারবার ফিরে ফিরে আসে? এ তবে ফিরে আসা এক ইতিহাসের গল্প। অথবা সাধারণ থেকে অনেক ঊর্ধ্বের, ভালো ও মন্দের মাঝামাঝি এক মানবের দৈবপীড়িত বা নিয়তিলাঞ্ছিত হয়ে ক্রমশ হেরে যাওয়ার গল্প। এবং গল্পটা এক অভিশপ্ত নারীর...। কিন্তু কোনভাবেই নিজেকে বোঝাতে না পেরে বারবার শুধু নিজেকেই প্রশ্ন করছি- এ গল্প কি তবে অন্য এক জাতিস্মরের ?!!! আলেকজান্দ্রা, মায়ের অভাব বুঝতে না দেয়া বাবাই ছিলো তার সব। বাবাও মেয়ের কাছে কাছে থাকতেই গুটিয়ে এনেছিলেন সবকিছু। কিন্তু জীবন গুটিয়ে থাকে না, সেজন্য আবার তাকে বাইরে বের হতে হয়। কিন্তু তাই বলে তিনি মেয়েকে চোখের আড়াল করবেন?! মোটেই না, মেয়েও থাকে তার সংগেই। কিন্তু নিখাদ ভালোবাসাগুলো হয়তো খুব অল্প সময় নিয়ে আসে পৃথিবীতে। তাই আলেকজান্দ্রার কপালে তার বাবার স্নেহ বেশীদিন সয়নি। আর এ সময়েই তার জীবনে প্রকট হয়ে আবির্ভূত হয় প্রচ্ছন্ন হয়ে থাকা ফিদেল, আরেক ভাগ্যবিপর্যস্ত যুবক। কিন্তু তাতেই কি তার জীবন বদলে যায়? না, সে যে বয়ে বেড়াচ্ছে দেবরাজ জিউসের অভিশাপ! ভাগ্য তাকে নিয়ে যায় রোমান রাজপ্রাসাদে, যেখানে তার সামনে সবটুকু প্রগাঢ় ভালবাসা নিয়ে হাজির হন যুবরাজ ইথান... ইথান অরিটাস। ভালবাসার জন্য তিনি বিসর্জন দেন ক্ষমতা, সম্রাজ্য, মাতৃভূমি! কিন্তু ইথানের এই এক আকাশ ভালবাসা কেনো হঠাৎ ঢেকে যায় ঘৃণার মেঘে?!!! আসলেই? এবারের প্রচ্ছদটা আরো দারুণ লেগেছে, আরো বেশী রাজকীয় একটা অনুভূতি ছিলো। বইটা শেষ করার পর প্রচ্ছদটা আরো বেশী অর্থবহ লেগেছে, যে আগুনে পুড়েছে রোম, পুড়েছে ভালবাসা... প্রচ্ছদে যে সে আগুনটাই আঁকা ছিলো ।।। বইটা শেষ করে মনে হচ্ছিলো আমি যেন রোমান কলোসিয়ামের স্তব্ধ হয়ে যাওয়া এক দর্শক। ইথান-আলেকজান্দ্রা ভীষণ ই নিষ্ঠুর ভাবে স্তব্ধ করে দিয়েছেন গ্যালারি। সেই নিস্তব্ধতার হুংকার ছুটছে চারপাশ বিদীর্ণ করে। আমার নিস্তব্ধতায় সেই নিস্তব্ধতা যেনো ফেটে পড়ছে বুনো উল্লাসে!!! ফোর্থ সেঞ্চুরি ট্রিলজির ২য় বই এটা। প্রতিটা খন্ডই স্ট্যান্ড অ্যালোন হলেও বইটা নিখুঁতভাবে প্রথম খন্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছে এবং পাঠকের মনে যে অসম্পূর্ণতা ছিলো, যে প্রশ্নগুলো মনে নিয়ে পাঠক প্রথম খন্ড শেষ করেছিলেন, সবগুলোই সমাপ্তি পেয়েছে এই খন্ডে। বইটাতে লেখিকার সবচে বড় মুন্সিয়ানা হচ্ছে সুন্দর ও সাবলীল বর্ণনা আর আপনার সবচে ভাল লাগবে এতো বড় একটা বই আপনি নিমেষেই শেষ করে ফেলবেন। এই বই পড়তে যেয়ে বোরিং নামক শব্দ আপনার মাথায়ই আসবে না। আমরা প্রায়শই আমাদের প্রিয় জনরার বই পড়তে পছন্দ করি, কিন্তু এই বইটার সবচে আশ্চর্যজনক ব্যাপারটা হলো একে আপনি কোন সার্বক্ষণিক জনরায় ফেলতে পারবেন না। নিখুঁত একটা ঐতিহাসিক আদলে শুরু হওয়া বইটা ৬৯ পৃষ্ঠায় এসে হঠাৎ ই ভোল পাল্টে হয়ে যায় এক নিটোল শুভ্র প্রেমের গল্প! এভাবে চলতে চলতেই ভোজবাজির মত এটি হয়ে যায় দুর্দান্ত গতিময় এক থ্রিলার!! কিন্তু বইটা শেষ করে আমার ঐ জনরাগুলোর কোনটিতেই তাকে আবদ্ধ করতে ইচ্ছে হলো না। ' এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি'র ' জনরা তাই আমার কাছে এক মিস্ট্রি হয়েই থাকলো। সত্যিকারের ভালবাসা বলতে আমি যা বুঝি, প্রিন্সেস ভেনাসের ভালবাসাটা আমার কাছে ঠিক তাই মনে হয়েছে। ভেনাস যখন অশ্রু সংবরণ করে বলছিল- " পার্থিব অপার্থিব সুখ বলতে আপনাকেই বুঝেছি। যেকোন উপায়েই পেতে চেয়েছি আপনায়। তবে ভেতরে পরাজয়ের গ্লানি মেখে বিজয় গৌরব শোভা পায় না। " আমার মনে হচ্ছিলো- এটাই ভালবাসা। কখনো ফুটবেনা যে অচিন বৃক্ষের ফুল- তাতে জল ঢালাই তো ভালোবাসা। কক্ষনো ফিরে আসবে না জেনেও ফাঁদে আটকা পাখি কে খাঁচা খুলে মুক্ত করে দেয় যে ব্যাধ-- সে-ই তো প্রেমিক, সে-ই তো প্রেমিকা! প্রিন্সেস ভেনাস, আসলে কাউকে পেতে হলে সত্যিকারের ভালবাসার পাশাপাশি সত্যিকারের ভাগ্যও প্রয়োজন। আপনার ভালবাসার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালবাসা থাকবে। আপনি আমার ভালবাসা জানবেন প্রিন্সেস... লেখিকা তার প্রত্যেকটি বইয়ে বইয়ের সম্পূর্ণ গল্পটা একটা আট লাইনের নকশায় একে দেন। দুটো বইয়ের নকশাই কাব্যগুণে, সৌন্দর্যে, বানানে-ব্যাকরণে ছিলো অসাধারণ। তবে আমার কাছে প্রথম বইটারটা অনবদ্য ও অতুলনীয় লেগেছিলো। এই বইয়ের বাইন্ডিংটা আগের বইয়ের বাইন্ডিয়ের চেয়ে নিম্নমানের লেগেছে। বইটা সম্পূর্ণ খুলে পড়তে সমস্যা হয়েছে, নিচের দিকটা ছিলো বেশী চাপা ও জোড়া লাগেনো। যদি তুলনা করতে যাই, তবে এলেক্সের যে অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলো সেখানে কিছুটা ফিকে লেগেছে আলেকজান্দ্রাকে, লিও এর ভালবাসার তুলনায় ম্রিয়মাণ ছিলো ফিদেল, ইথান মিরিউলাসের অসাধারণ সংলাপগুলোকে মিস করেছি খুব।।। শেষে শুধু একটা কথাই বলতে চাই-- আপনি রোমান্টিক, মিথলোজি, থ্রিলার কিংবা হিস্টোরিক্যাল ফ্যান্টাসি যাই পছন্দ করেন না কেনো, এই বই আপনার জন্যে মাস্টরিড