User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার,দাবী ছিলো বইটির। অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
বই : চোরাগলি। লেখক : মোহিত কামাল। মূল্য : ২৫০টাকা। পৃষ্টা : ১২৭। প্রচ্ছদ : মাসুক হেলাল। প্রকাশনী : প্রথমা। "চেনা অনুরাগে বুকের চোরাগলিতে পথ খুঁজি; আঁধারে গুঁজে দিয়ে মুখ, শুঁকে নেই বুনো ঘ্রান অতৃপ্ত উচ্ছাসে হৃদয়ে হৃদয় উন্মুখ হয় সম্মূখে বসে" কবি হাসানুল করিম বুকের চোরাগলিতে পথ খুঁজলেও চোরাগলিতে গল্পের নায়িকা ইথা কিন্তু বাস্তবের চোরাগলিতেই পথ খুঁজে পেতে মরিয়া। ইথাও হৃদয়ে হৃদয় উন্মুখ হয়ে খোঁজে আলোর দিশা। #কাহিনী_সংক্ষেপ অসময়ে ইথাকে বাইরে বেরোতে দেখে চাচা হাসমত উল্লাহ প্রশ্ন করে, কোথায় যাচ্ছো ইথা? বাইরে বেরুচ্ছি বলেলেও ইথার কথায় এমন গভীর কিছু ছিল যে, তিনি আর বারণ করার সাহস করলো না। অসম্ভব আদরে বড় হওয়া ইথা জেদি মেজাজের মেয়ে। তাই তিনি কথা না বাড়িয়ে শুধু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে বললেন। পিতৃমাতৃহীন ইথা চাচা হাসমত উল্লাহ আর ফুফু জিনাত আরার কাছেই মানুষ হয়েছে। এক এক্সিডেন্টে মারা যায় ইথার বাবা। বেঁচে যাওয়া অল্পবয়সী ইথার মা ইথার তিন বছর বয়সে বিয়ে করে পরবাসী হয়। তারপর থেকে ফুফু জিনাত আরাই ওর পালন-লালন করেছেন। ফুফুর বিয়ের পরে ইথার দেখভালের দায়িত্ব এসে বর্তায় চাচার কাঁধেই। হাসমত উল্লাহ ভাবেন, এই তো সে দিনের কথা! দেখতে দেখতেই যেনো ইথা বড় হয়ে গেল। ইথা গেছে তার প্রেমিক তন্ময়ের খোঁজে। সে তন্ময় সম্পর্কে যা শুনেছে তা সত্যতা প্রমাণ করে দেখতেই ঐ জায়গায় যাওয়া। ইথার গাড়ি পৌঁছতেই গার্ড প্রশ্ন করে, আপনি কি নতুন? ইথা মিথ্যা বলে, না পুরাতন কিন্তু অনেক দিন পরে আসা। আবার প্রশ্ন আসে, " ডাল না বাবা?" ইথা জবাব দেয়, বাবা! "তাহলে সিঁড়ি বেয়ে সোজা দোতলায় উঠে যান।" খোলা দরজা দিয়ে ভেতরটা দেখেই গা গুলিয়ে উঠে ইথার। তার সমবয়সের বা দু'চার বছর এদিক ওদিক হবে, এমন বয়সী সব তরুণ তরুণীরা প্রায় একে অপরের গায়ে গা ঘেঁষে দলা পাকিয়ে বসে মাদক সেবন করছে । কেউ কেউ নেশায় বুদ হয়ে ঢলে পড়েছে পাশের জনের উপর। কেউবা তখনও খানিকটা সজাগ রয়েছে। ইথার গলা শুনে তন্ময় ঘুরে ইথাকে দেখেই অবাক হয়। চলতে থাকে দুজনের বাকবিতণ্ডা। ঠিক সেই সময় পুলিশ এসে উপস্থিত হয় বাড়ির নিচে। আর ক্রোধে গর্জে উঠে তন্ময় প্রশ্ন করে, " তুমি টিকটিকি? র্যাবের এজেন্ট? তুমি পুলিশ সাথে করে নিয়ে এসেছো?" ওই দিকে হতবিহ্বল ইথা পুরোনো স্মৃতি হাতড়াতে লাগে! এই ছেলেকেই আঁকড়ে ধরে জীবন সাজাতে চেয়েছিল সে! এই সেই ছেলে, যার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষারত তার মন আকুলিবিকুলি করতো শুধু একটিবার তাকে দেখার জন্য! আবার রাগে ফুঁসে উঠে তন্ময়। ইথাকে গালাগালি করতে করতে পালিয়ে যায় সে। পুলিশ এসে পায় ইথাকে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। ইথাকে দেখে নেশাগ্রস্থ মনে হয়নি। তাই পুলিশ কিছুটা ভদ্র ব্যবহারই করে তার সাথে। কল করে জিনাত আরাকে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। আলাপ আলোচনায় পুলিশ সব বুঝতে পেরে সসম্মনে যেতে দেয় ওদের। কিন্তু তন্ময়ের চোখে বিষ হয়ে গেছে ইথা! ইথার ফোনে আসতে থাকে একের পর এক হুমকি! ছাড় পায়না তার বন্ধু পুনমও। কলেজ, বাসায় রাস্তায় সবখানেই বিপদ ওৎ পেতে আছে ইথা আর পুনমের জন্য। পুলিশ যদিও ওদের ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতেও রক্ষা পাচ্ছে না ইথা! ইথার কারণে ভাঙ্গতে বসছে মায়ের সমান ফুফুর সংসার! চোরাগলিতে আটকে গেছে ইথা! প্রাণাধিক প্রিয় বোন পৃথাকে চাচী তার সাথে মিশতে বারণ করে দিয়েছেন! কারণ? কারণ ইথা নাকি নষ্টা মেয়ে! আসলেই কি ইথা নষ্ট মেয়ে? সমাজ সংসারের অনিয়ম আর অনাচারের বিরুদ্ধাচরণ করতে গেলেই তোমাকে হতে হবে নষ্ট মেয়ে? নিজের আত্মমর্যাদা আর অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য লড়াই করতে গেলে তুমি হবে নষ্ট মেয়ে? ইথা কি পারবে এই অন্ধকারাচ্ছন্ন চোরাগলি থেকে বের হয়ে আলোতে আসতে? পারবে কি নিজের মর্যাদার গৌরব সমুন্নত রাখতে? ইথা কি পারবে মাতৃস্নেহে আগলে রাখা ফুফুর সংসার ভেঙ্গে যাওয়া রোধ করতে? পারবে কি তার প্রিয় ছোট বোনকে আগের মত জড়িয়ে ধরতে? ইথার জন্য পুনমের ত্যাগের মূল্যই বা ইথা শোধ কিভাবে করবে? আর বন্ধুত্বের ঋণ কি কখনো শোধ করা যায়? #পাঠপ্রতিক্রিয়া : গল্পটা এক ইথার গল্প। এক সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসার গল্প। মায়ের জন্য মেয়ের উদ্বিগ্ন হবার গল্প। বন্ধুর জন্য বন্ধুর স্নেহ আর মায়ার, বোনের প্রতি বোনের গভীর আবেগময় ভালোবাসার গল্প। ফুফু হয়ে মায়ের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের সংসার বিসর্জন দেয়া এক মায়ের গল্প। বন্ধু জন্য এক বন্ধুর জীবন বাজি রাখার গল্প। অন্ধকার ভেদ করে আলোতে আসার দৃঢ় প্রত্যয়ী এক তরুণীর সংগ্রামের গল্প। বর্তমান সমাজের তরুণ প্রজন্ম আধুনিকতার নামে জড়িয়ে যাচ্ছে মাদকের মত ভয়ঙ্কর এর চোরাগলিতে। সেখান থেকে সবাই মুক্তি পায় না। যে নিজেকে মুক্ত করতে চায় তার পিছু টেনে ধরে মাদকের অদৃশ্য হাত। এমন এক পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে আনা সহজ ব্যাপার নয়। আর মাদকাসক্ত প্রিয়জন কে ফিরিয়ে আনা বা ছেড়ে যাওয়াও এক ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ। লেখক খুব সাবলীলভাবে তরুণ প্রজন্মের মাদক সমস্যা ও সমাধান নিয়ে লিখেন চোরাগলি উপন্যাসটি। সমাজকে সচেতন করতে নিজেকে সচেতন করতে জানা দরকার মাদকের কুফল। সুতরাং পাঠক, নির্দ্বিধায় পড়তে পারেন এই সচেতনতা মূলক উপন্যাসটি। প্রিয়জনকে উপহার দিয়ে তাকেও সচেতন হতে সাহায্য করতে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ উপন্যাস- চোরাগলি লেখক- মোহিত কামাল। আমাদের দেশের একটি ভয়ানক সত্য হল তরুণদের একটি বড় অংশ আজ মাদকাসক্ত!বিশেষ দিনে বিশেষ আনন্দের নামে মাদকের পথে গিয়ে অনেকেই পথহারা!মাদকাসক্ত তরুণদের ভিতর খোঁজ মিলে শুধুই হিংস্রতার।এই উপন্যাস ইথা নামের মেয়েকে ঘিরে।ইথার যখন দু বছর বয়স তখন সে তার বাবা মা হারায়।বড় হয় তার ফুফু জিনাত আরা’র কাছে।ফুফুকে সে মা বলে ডাকে।জিনাত আরাও ইথার জীবন ঘিরে রাখে মায়ের মমতা ভালবাসায়। গল্প একটু আগাতেই ইথা জেনে যায় তার প্রেমিক তন্ময় মাদকাসক্ত,বিশাল মাদক চক্রের সদস্য।হাতেনাতে ধরবে বলে ইথা চলে যায় তন্ময়ের ভয়ানক আড্ডার জায়গায়,বাহির থেকে দেখতে যা একটি সাধারণ বাড়ি!কিন্তু সেখানে মাদক দেহব্যবসা সব হয় অবলীলায়!ইথাকে দেখেই চিনে ফেলে তন্ময়!তার কিছুক্ষন পরই পুলিশ সেই বাড়ি ঘিরে ফেলে,সবাই ভাবে ইথাই পুলিশ নিয়ে এসেছে,সে হয়তো পুলিশের সোর্স!তন্ময় রাগে ইথার মুখে থুঃ দিয়ে পালিয়ে যায়!দু’জনের সম্পর্কের অবসান হয়ে যায় এখানেই। ইথাকে মাদকের আড্ডায় পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে!এরপর ধীরেধীরে চলে আসে নানান ঘটনা,পারিবারিক টানাপোড়ন তবে ফুফু জিনাত আরা আর চাচা সব সময়ই থাকেন ইথার পাশে।এর ভিতর শুরু হয় ফুফু জিনাত আরা’র সাথে তার স্বামীর দ্বন্দ্ব সংঘাত,ইথার প্রতি গভীর ভালবাসা দেখে জিনাত আরা’র স্বামী দাবি করে বসে ইথার বাবা মা মারা যাওয়ার কথা মিথ্যে!ইথা জিনাত আরা’র ই সন্তান কিন্তু সত্যটি গোপন করা হয়েছে! ইথা সংকল্প করে তন্ময়কে শাস্তি দিবে,আইনের হাতে তুলে দিবে।তন্ময় আর তার দলের সদস্যরা মাদকের সাথে বহু মেয়ের জীবনও নষ্ট করেছে ভালবাসার ফাঁদে ফেলে।অন্যদিকে ইথার বান্ধবি পুনমের জীবনেও আসে একই সমস্যা!নানান ঘটনার জন্ম হয় সেখানেও! ইথার প্রতি মারমুখি হয়ে উঠে মাদক ব্যবসায়ী চক্র।ফুফু জিনাত আরা’কে কিডন্যাপ করার চেষ্টা করে!একজন সৎ পুলিশ সদস্য ইথার পাশে দাড়ায়!পুরো চক্রটিকে ধরার মিশন নিয়ে কাজ শুরু করে। গল্পটি এগিয়ে যেতে থাকে।নিরাপত্তার জন্য ইথা গৃহবন্দি হয় কয়েকবার।একদিন মাদক ব্যবসায়ী চক্র পুনম’কে ক্যাম্পাসে এলোপাতারি কুপিয়ে জখম করে!এই মর্মান্তিক পরিবেশে নানান ঘটনায় ইথা আর পুনমের বন্ধুত্বের গাঢ় ভালবাসা ফুটে উঠে। অন্যদিকে চলতে থাকে ইথাকে নিয়ে ইথার চাচার পরিবারের দ্বন্দ্ব সংঘাত আর জিনাত আরা’র স্বামী আর ননদের সাথে দ্বন্দ্ব! গল্প আরও এগিয়ে যায়।তন্ময় গ্রেফতার হয় কিন্তু চক্রের অনেকে থেকে যায় ধরা ছোয়ার বাহিরে। ইথার দিকে এসিড নিক্ষেপ করা হয়!তাকে বাঁচাতে গিয়ে জিনাত আরা তার দু চোখ হারায়!ভালবাসার চাচাতো বোন পৃথার মুখের কিছু অংশ পুড়ে যায়!অজানা এক অন্ধকার ইথার জীবনের সব আলো যেন কেড়ে নিতে চায় বার বার! দুজন ভালবাসার মানুষের বিপদে ইথার গল্প করুণ হতে থাকে।হাসপাতালের বেডে শুয়ে জিনাত আরা বলেন, ‘আমি চাই চোরাগলির সমস্ত চিহ্ন মুছে যাক।আমাদের সন্তানদের চলার পথের মরণফাঁদগুলো উপড়ে ফেলা হোক।আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।আমি ইথার চোখে পৃথাকে দেখব আর পৃথার চোখে দেখব ইথাকে।ওদের দুজনের চোখে দেখব পৃথিবীটাকে।’ গল্প এভাবেই প্রায় শেষ দিকে এগিয়ে যায়।গল্পের শেষের কিছুটা পাঠকের আগ্রহের জন্য তোলা থাক! সমাজের তরুণদের মাদকের সাথে জড়িয়ে যাওয়ার নানামুখি বাস্তব ঘটনা পুরো উপন্যাস জুড়ে দারুণ ভাবে বিস্তার করিয়েছেন লেখক মোহিত কামাল।এই উপন্যাস চরিত্রগুলোর দ্বন্দ্ব সংঘাত জট জটিলতার ভিতর দিয়ে দারুণভাবে বেড়ে উঠেছে।উপন্যাসের কাহিনির ডাল পালা বিস্তার করেছে বহুদূর অবধি। পাঠক পড়তে পড়তে ডুবে যাবেন দারুণ এক উপন্যাসে,যার নাম ‘চোরাগলি’।।দেখা মিলবে অনেক জট জটিলতা ভালবাসা ঘৃণা মান অভিমানের সাথে।এই উপন্যাস শুধুই যে ভালো লাগবে তা নয় গভীর ভাবনায় স্পর্শ করবে। পাঠকমন এমন গল্পেরই অপেক্ষায় থাকে।দেখা জানা গল্পগুলো শক্তিশালী সাহিত্যকের হাত ধরেই অন্যভাবে হাজির হয় আমাদের সামনে আর আমাদের ভাবতে বাধ্য করে।আমাদের ভাবনায় নিয়ে যাওয়া সাহিত্য অমর হোক, অমর হোক ‘চোরাগলি’।পাঠকের স্পর্শে চোরাগলি অমর হোক। সাজ্জাদ হোসাইন খান। ঢাকা,বাংলাদেশ। ১৬-০৪-২০১৮