User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
☆☆☆☆
Was this review helpful to you?
or
প্রাচীন মিশরের এক সর্পপূজারী ওয়াজেথ। ভাগ্যের ফেরে সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে হাজির হলো উপমহাদেশে। সাথে ছিল কালো পাথরের তৈরী মিশরীয় সর্পদেবীর মূর্তি - শরীরটা যার নারীর, মাথা সাপের। ওয়াজেথ অবাক হয়ে জানলো, মিশরীয় দেবী ওয়াজেঠথের সাথে অদ্ভুত মিল ভারতীয় মনসা দেবীর! বাংলার এক নারীপ্রধান আদিম জাতির অংশ হয়ে গেল ওয়াজেথ, মিশর আর বাংলার যোগসূত্র হয়ে। হাজার বছর পর, এই একবিংশ শতাব্দীতে রাজধানীর এক আধা সরকারি গবেষণা সংস্থায় ঘটে গেল জোড়া খুনের ঘটনা। খুন হয়েছেন সেখানকার এক নিরাপত্তাকর্মী ও একজন তরুনী গবেষক। প্রতিষ্ঠানটিতে অনেক বিদেশীরাও কাজ করেন, তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বেশ কড়াকড়ি ছিল। কঠিন সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙ্গে আততায়ীর হামলার মূল লক্ষ্য যে ছিলেন গবেষক উমা চক্রবর্তী, তাতে সন্দেহ নেই। উমা চক্রবর্তী, পেশায় একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট। সম্প্রতি তার বস সাজিদ রহমানকে জানিয়েছিল, চিকিৎসা বিজ্ঞানকে পালটে দেওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর কিছু আবিষ্কার করেছে সে। দু'দিন পরেই বিষয়টি উন্মোচিত করার কথা ছিল আন্তর্জাতিক এক সেমিনারে। তার আগেই খুন হয়ে গেলো মেয়েটা, অফিসের টেবিল থেকে গায়েব গবেষণাপত্রের ফাইলটাও। ডন ওয়াসি আনুকে ঘায়েল করার পর (লেখকের নীলনক্সা বই দ্রষ্টব্য) , সব ছেড়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে মনোনিবেশ করেছিল রাফসান ইবনে সেলিম। উমা যে সংস্থায় কাজ করছিল, সেখানেই গবেষণার কাজে ছিল রাফসান। সে কারণেই এবং তার আগের পুলিশি দক্ষতার সুবাদে পুলিশ উপ কমিশনার সৈয়দ মারুফ কেসটা সঁপলেন রাফসানের দায়িত্বে। তদন্তে উঠে এল উমার অতীত। তার একসময়ের প্রিয় বান্ধবী নিয়তির বাসার পাশে দুদিন আগে নৃশংসভাবে হত্যা করা এক লাশ পাওয়া গেছে। ঢাকা শহরের বর্তমান ডন শিকদার কিভাবে যেন জড়িয়ে পড়েছে কেসটায়। কলকাঠি নাড়ছে এক গুপ্ত সংগঠন, নিজেদের পরিচয় দেয় তারা 'অহিংশ' নামে। রাফসান জানতে পারলো, নিয়তির সাথে সুন্দরবন সফরের পর থেকে উমার আচরণে অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটে। নিয়তিকে এড়িয়ে চলা শুরু করে, প্রচন্ড আস্তিক ও শাকাহারী হয়ে যায়। এমন কি ঘটেছিল সুন্দরবনে? পুরাণের সাথে মিলে গেল বর্তমান, যার শেষটা হতে হবে শুরু যেখানে হয়েছিল - সেখানেই। গল্পের অনেকটা জুড়ে আছে পুরাণ আশ্রিত বর্ণনা। তবে লেখক শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছেন, সবটাই কল্পনাপ্রসূত। মিশরীয় দেবী ওয়াজেঠথ, ভারতের মনসা দেবী এসবের মধ্যে লেখক কাল্পনিক মেলবন্ধন তৈরী করেছেন। এনেছেন হিন্দু পুরাণ থেকে, বিখ্যাত লখিন্দরের পিতা চম্পক নগরীর চাঁদ সওদাগরকে। ওয়াজেথের অতীতকাহিনীর সাথে বর্তমানকে সমানতালে এগিয়ে নিয়ে, চমৎকার ভাবে মূল কাহিনীর সাথে যুক্ত করা হয়েছে। তাই গল্পের ধারাবাহিকতায় কোনো সমস্যা হয়নি। সুন্দরবনের একটা বড় ভূমিকা ছিল গল্পে। যদিও লেখক জানিয়েছেন, উল্লেখিত টিয়ার চরের নামটা বাদে আর কোনো কিছুই বাস্তব নয়, তবু পড়তে পড়তে সুন্দরবন সফরের একটা অদম্য ইচ্ছা জেগে উঠলো মনে। সুপ্রাচীন উরগ গোত্রের অবতারণাও করেছেন লেখক দারুণভাবে। গোত্রপ্রধান অগ্নি থেকে সালেহা বেগম - তারা দু'টি ভিন্ন সময়ের মানুষ হয়েও একই রকম বনের সঙ্গে একাত্ম আর তেজস্বিনী। যারা লেখকের 'নীলনক্সা' পড়েছেন, 'চন্দ্রাহত' উপন্যাসটির মূল চরিত্র রাফসানকে চিনতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না। এই উপন্যাসে এসে লেখকের লিখনী এবং প্লট আরো অনেক পরিপক্ক হয়েছে নিঃসন্দেহে। 'নীলনক্সা'র মতোই লেখকের পেশাগত জীবনের প্রতিফলন ছিল এবারও। মেডিকেল এবং সায়েন্টিফিক টার্মগুলো সহজভাবে বুঝিয়ে বলা তো ছিলই, গল্পের ধর্মীয় এবং অলৌকিক ব্যাপারগুলোকে একটা পর্যায়ে গিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করাটা আকর্ষণীয় লেগেছে। উপন্যাসটি তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে, উন্মেষ - যেখানে রহস্যের সুত্রপাত, সংশ্লেষ - উমার ডায়েরী এবং উদ্ভাস - যেখানে রাফসান ও নিয়তি রহস্যভেদ করে। উমার ডায়েরীর অংশটিতে হাতের লেখা বোঝাতে কাটাকুটি ও প্যাঁচানো হরফ ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে পড়তে কষ্ট হচ্ছিলো, এরকম অক্ষর না দিলেই বোধহয় ভালো ছিল। পুরো বইয়ে ছাপার ভুল খুব কম হলেও, এই অংশে বাক্যের মাঝে অনেক শব্দ বাদ পড়েছে, সেটা ইচ্ছাকৃত কি না জানি না। তবে ভিন্নধর্মী করতে গিয়ে পড়ার মজা নষ্ট হচ্ছিলো কিছুটা। লেখকের শব্দের ব্যবহারে কিছু কিছু ভুল চোখে পড়েছে। যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ (আশা)- প্রবাদের ব্যবহারে বারবার 'আঁশ' (মাছের শল্ক) লেখা হয়েছে। সালেহাকে হরবোলার জায়গায় ডাক- হরকরা লেখা হয়েছে। আদনান আহমেদ রিজনের করা প্রচ্ছদটি চমৎকার এবং বইয়ের সাথে মিল রেখে করা। গল্পের আবহকে খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছে প্রচ্ছদটি। বইয়ের পাতার মান ভালো হলেও, বাঁধাই আরো উন্নত হওয়া প্রয়োজন ছিল। পুরাণ আর থ্রিলারের মেলবন্ধনের এই দারুণ উপন্যাসটি বাংলাদেশের থ্রিলারপ্রেমী পাঠকরা অনেকেই পড়ে নিয়েছেন নিশ্চয়ই, যারা এখনো পড়েননি তারাও আশা করি দেরী করবেন না। বইঃ চন্দ্রাহত লেখকঃ মো. ফুয়াদ আল ফিদাহ প্রকাশনায়ঃ আদি প্রকাশনী প্রকাশকালঃ ২০১৮ প্রচ্ছদঃ আদনান আহমেদ রিজন পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৮০ মুদ্রিত মূল্যঃ ৩৩০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
দান দান তিন দান। তৃতীয় মৌলিক উপন্যাসে এসে বাজি মাত করলেন লেখক। সত্যি আকর্ষণীয় উপন্যাস। অতীত এবং বর্তমানের দুইটি ঘটনাকে পাশাপাশি নিয়ে এক বিন্দুতে মিলিয়ে দিলেন সার্থকতার সাথে। পড়ে আনন্দ পেয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
নামকরা এক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থায় কর্মরত তরুণ মাইক্রবায়লজিস্ট উমা চক্রবর্তী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাৎসরিক সম্মেলনের আগে খুন হলো নিজের অফিসে। তার মৃত্যুর আগেই কানাঘুশা চলছিলো যে, বিরাট কিছু একটা আবিষ্কার করেছে সে। পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থা পাল্টে দিতে পারে এই আবিষ্কার। তাহলে ধারনা করে নেয়া যেতে পারে এই গবেষনার জন্যই প্রাণ দিতে হলো উমাকে। তদন্তের ভার এসে পড়লো রাফসানের উপর। রাফসানকে চিনতে পেরেছেন? নীলনক্সা পড়া থাকলে নতুন করে আর পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। ডাক্তারি পুলিশ বনে যাওয়া রাফসান যে আবার ডাক্তারি পেশায় ফিরে গেছে সেটা তো নীলনক্সার শেষেই দেখেছি। এবার সেই রাফসান পুরোদস্তু গবেষক। তবে ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে। রাফসান পুলিশের চাকরি ছাড়লেও পুলিশ তাকে ছাড়ে নাই। উমার মৃত্যুর পরে রাফসানের একাডেমিক জ্ঞানের জন্য তদন্তের জন্য রাফসানের সরনাপন্ন হলেন সৈয়দ মারুফ। সহযোগী শিহানকে নিয়ে তদন্ত শুরু করলো সে। কিন্তু এবার সে কোনো সাধারন গ্যাঙের পিছনে লাগে নাই। বিপুল ক্ষমতার অধিকারি এক রহস্যময় সংগঠন- অহিংশ। একদিকে উমার খুনিকে ধরতে হবে, অপরদিকে তার আবিষ্কার খুজে বের করে সেটা খারাপ লোকের হাতে পরা থেকে রক্ষা করতে হবে। তদন্তের শুরু কোনো ক্লু না পেলেও পরে যা ঘটতে শুরু করলো তার জন্য কে প্রস্তুত থাকে? ওদিকে কয়েক হাজার বছর আগে মিসরের মরুভূমিতে জন্ম নেওয়া এক যুবক ভাগ্যের তাড়নায় পারস্য, চম্পক ঘুরে অবশেষে সুন্দরবনে এসে ঠাই হলো। আমাদের রাফসানকেও কিন্তু তদন্তের জন্য সুন্দরবন যেতে হচ্ছে। ফ্লাপের লেখার মতই বলতে হচ্ছে, কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে এলো ‘সাপ’! থ্রিলারের মধ্যে যদি ফ্যান্টাসি যুক্ত হয় তাহলে তার মজা কয়েকগুন বেড়ে যায়। আবার সেই ফ্যান্টাসি বা অতিপ্রাকৃতিক ঘটনার যদি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকে তাহলে তো সোনায় সোহাগা। যেটা চমৎকারভাবে এই বইতে করেছেন লেখক। সামান্য কিছু জায়গায় ব্যাকরণগত সমস্যা মনে হয়েছে। তাছাড়া সব ঠিকঠাক। আদীর বইয়ের পেজ আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। তবে বইটার বাইন্ডিং ভালো লাগে নাই। বাইন্ডিং এর জন্য পেজ ভাজ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে কিছু জায়গা থেকে পেজ খুলে আসবে। বাইন্ডিং কিছুটা খারাপ হলেও পেজ আর কাভারে মন ভালো হয়ে যাবে। এবার মেলায় এই একটা বই ছিলো কেনার লিস্টে। কেনা শেষ, পড়া শেষ। এখন সারামাস কি করুম?