User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর "চাঁদের অমাবস্যা" পড়লাম। এই উপন্যাসের কাহিনীটা চমৎকার হলেও বর্ণনাশৈলী ভালো লাগেনি। একই কথা বারবার পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়েছি। পড়ব না, পড়ব না বলেও কয়েক দিনে অনেক কষ্টে পড়া শেষ করলাম । আমার মনে হলো গল্পটি একটি ছোট গল্প হলেই চমৎকার হত। উপন্যাসটির প্রথমে একটি থ্রিলার ভাব নিয়ে শুরু হয়। আরেফ আলী মাস্টার বাঁশঝাড়ে একটি লাশ দেখতে পায়। সেখান থেকে বাহির হয়ে দেখতে পায় সে যে বাড়িতে আশ্রিত সেই বাড়িওয়ালা দাদুর ছোট ভাই দরবেশ কাদেরকে। তারপর তার উদ্দেশ্যহীন দৌড়াদৌড়ি ছেলেমানুষির পরিচয় দেয় এবং সে যে মেরুদণ্ডহীন, কল্পনাপ্রবণ তা প্রকাশ পেতে বেশি দেরি হয় না। অবশ্য আরেফ আলী মাস্টারের বিভিন্ন দ্বিধাদ্বন্দ্বই গল্পকে টেনে নিয়ে যায়। আরেফ আলী সকল লোভ ত্যাগ করে নিজের চাকরি ও আশ্রয়ের তোয়াক্কা না করে মেরুদণ্ড সোজা করে দাদা সাহেব আলফাজ উদ্দিন চৌধুরীকে তার ছোট ভাই কাদের সমর্কে বলেন। এবং তিনি যে বিদায় নিতে এসেছেন তা বলে আর দেরি করেন না। তার টিনের সুটকেস নিয়ে দৌড় দেন থানার দিকে। থানায় সবকিছু জানাতে গেলে পুলিশ তার দিকেই সন্দেহ এবং পুলিশেরর সাথে হওয়া কথা-বার্তা যেনো আগে থেকেই মুখস্থ বুলি মনে হয় আরেফ আলীর। এখানেও সে চুপ করে থেকে যেনো এই উপন্যাসের কোন নায়ক নন বরং পার্শ্বচরিত্র হিসেবে নিজেকে জাহির করেন। শেষ অবধি পুলিশের বিরক্তি পাঠকেরই বিরক্তির প্রকাশ। বইটা পড়ার পর একটি প্রশ্ন থেকে যায় এরপর কি হলো? হতে পারে এটাই লেখক হিসেবে ওয়ালীউল্লাহর স্বার্থকতা।
Was this review helpful to you?
or
“ শীতের উজ্জ্বল জ্যোৎস্নারাত তখনো কুয়াশা নাবে নাই। বাঁশঝাড়ে তাই অন্ধকারটা তখনো জমজমাট নয়। সেখানে আলো অন্ধকারের মাঝে যুবক শিক্ষক একটি যুবতি নারীর অর্ধ উলঙ্গ মৃতদেহ দেখতে পায়। অবশ্য কথাটা বুঝতে তাঁর একটু দেরী লেগেছে, কারন তা ঝট করে বুঝা সহজ নয়। পায়ের উপর এক ঝলক চাঁদের আলো, যুবতি নারীর হাত- পা নড়ে না, চোখটা খোলা মনে হয়।বাঁশঝাড়ের সামনেই পূর্ণ জ্যোৎস্নালোকে সে তাঁকে দেখতে পায়। ধীরপদে হেঁটেই যেন সে তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো, নিরাকার বর্ণহীণ মানুষ। হয়তো তাঁর দিকে কয়েক মুহূর্ত সে তাকিয়ে ছিলও। তারপর সে দৌড়তে শুরু করলো”! মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায়, কথাটি মিথ্যা নয় কিছুতেই। তারপরও বাঁচবার আকুলতা বুকে নিয়ে আর অমরতা লাভের ওষুধের দোকান খুঁজতে খুঁজতে সাড়ে তিন হাত নিরাপদ ও আপন প্লটের দিকে আমাদের নিবিড় নিশ্চিত অভিযাত্রা। মানুষের বাঁচবার এই অশেষ আকুলতার কারণেই গোরস্থানের সামনের ফ্ল্যাটের চেয়ে লেকের পাশের ফ্ল্যাটটির দাম দাঁড়ায় অনেকটা বেশী। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র “চাঁদের অমাবস্যা” বইটি তে প্রকৃতি, রাত,চাদ,অন্ধকার, আলো, কুয়াশা, নদী, বাঁশির শব্দ, বাতাসের আওয়াজ, ব্যাক্তির সংশয়, সারল্য, আত্মনিমগ্নতা- এই সব বিষয় ও অনুভব সারিবদ্ধভাবে হাজির হয়েছে পাঠকের সামনে। সর্বোপরি বলা যায়, ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসে আমাদের আমাদের চির পরিচিত সমাজকে আরেফ আলী মাস্টারের মনোজাগতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এতে সমাজের ইতির দিকটা যেমন উঠে এসেছে তেমনি ভাবে নেতির দিকটাও প্রাধান্য পেয়েছে। ফলে আমরা এমন একটা ঘুণে ধরা সমাজব্যবস্থাকে প্রত্যক্ষ করি যা ঔপন্যাসিকের সমকালীন সমাজমনস্কতার পরিচয় বহন করে।