User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ আচ্ছা, যদি একদিন ঘুম থেকে জেগে দেখেন আপনার প্রিয় কদমফুল গাছটা আর আগের জায়গায় নেই। আগের জায়গায় নেই কি বলছি? কোত্থাও নেই! সেই স্থান দেখে মনেই হচ্ছে না কখনো এখানে কোনো গাছ ছিল। এর কয়েকদিন পর দেখলেন আপনার প্রিয় সেই আড্ডাখানাটাও আর নেই। সেই জায়গায় এসে স্থান করে নিয়েছে একটি বড়সড় জলাশয়। এরও কিছুদিন পর দেখলেন আপনার খুবই প্রিয় একটা মানুষ উধাও। উধাও মানে উধাও! এই পৃথিবীর কোথাও তার কোনো অস্তিত্বই নেই। আর এই যে সব পরিবর্তন, এ পরিবর্তনগুলো শুধুমাত্র আপনার কাছেই ধরা দিচ্ছে। বাকি কেউই এর অভাববোধ করছে না। আরো সহজ করে বলতে গেলে ওদের অস্তিত্ব সকলের কাছ থেকে বিলীন হয়ে গেছে। এই সত্যিটা জানতে পেরে কেমন লাগবে তখন আপনার? নিজেকে কি উন্মাদ মনে হবে? নিজের অতিরিক্ত ভারী মাথাটাকে বয়ে কি অ্যাসাইলামে ছুটবেন? নাকি এসকল কিছুর পিছনে ঘটা রহস্যের সমাধানে উন্মত্ত হবেন? আর তেমনই এক ঘটনা এবং প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল এক পৃথিবী ও তার রহস্যকে নিয়েই লিখা হয়েছে আশরাফুল সুমনের ‘কুয়াশিয়া’। ◾কাহিনিসংক্ষেপ— ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে পৃথিবী। পৃথিবীর থেকে খুবই ধীরগতিতে মুছে যাচ্ছে একের পর এক প্রাণের অস্বিত্ব। স্রেফ মুছে যাওয়া যাকে বলে! অন্যকেউ তাদের অস্বস্তিকে এতোটুকুও অনুভব করতে পারছে না। শুধুমাত্র একজন বাদে। অ্যারন! তার পরিচিত পৃথিবীটা চোখের সামনে পরিবর্তিত হচ্ছে দিনকে দিন। চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না সে। প্রতিনিয়ত নিজেকে পাগল ভাবতে শুরু করেছে। তবুও সে জানে, এই পরিবর্তন পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ শুধু আশংকা নয়, বরং তার বিশ্বাস। এরইমাঝে পৃথিবী এক ভয়ানক ও অপরিচিত জন্তুর আক্রমনের শিকার হয়েছে। অদ্ভুত এই জন্তুটি কোনো এক অজানা কারনে অ্যারনের বাবা ব্রেইলিয়াসের উপরই বারবার তার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। বাবার এই শোচনীয় সময়ে বাবার নিষেধাজ্ঞা ভেঙে ঘরের বাহিরে পা রাখলো অ্যারন। তাকে যে করেই হোক বাবাকে বাঁচাতেই হবে। কিন্তু বাবার সংগঠনের এতোগুলো মানুষ থাকার পরেও তারা কেন বাবাকে এগিয়ে গিয়ে সাহায্য করছে না, সে জানে না। এমনকি অ্যারনকে সামনে এগুতে দিতেও নারাজ সংগঠনটির সদস্যরা। সকল বারণ উপেক্ষা করে অ্যারন এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। ভয়ানক যুদ্ধের পর সে জন্তুটিকে হত্যা করতে সক্ষম হলেও অবাক হয়ে খেয়াল করলো জন্তুটি ধীরে ধীরে কুয়াশায় পরিণত হচ্ছে। আর কোনো এক দৈব বলে কুয়াশার এ উড়ন্ত পিন্ডটি ওর বাবাকেও চুম্বকের মতো নিজের মধ্যে টেনে নিচ্ছে। একসময় তার বাবাকেই নিয়েই অদৃশ্য হয়ে গেলো এই ভয়াবহ জন্তুটি। বইটিতে দুটো ঘটনা সমানতালে এগিয়েছে। একদিকে সামারলান ও অন্যদিকে অ্যারন। চলতে চলতে দুজনের পরিচয় আর এরপর একইসাথে নিজেদের পথচলা শুরু। সামারলান হলো অ্যারনের বাবার বন্ধুর ছেলে। পরিচয়ের প্রারম্ভে এ ব্যাপারটা জানতে পারে উভয়েই। অ্যারনের পৃথিবী বদলে যাওয়া, ওর বাবার বিলীন হয়ে যাওয়ার ঘটনার সমান্তরালে সামারলানের জীবনেও অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটছিল। সে নীলাচলে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসেছে হুমকির মুখ থেকে নীলগিরিকে বাঁচাতে। আর এতোসব ঘটনায় ওকে সর্ব সময় সাহায্য করছে ওর বাবা আইসেলিয়ান ও চাচা মিরাজ। যারা নীলগিরির উর্ধ্বতন কর্মকতা ও অ্যারনের বাবার বন্ধুও বটে। তাদেরকে জাদুকরও বলা চলে অবশ্য। আর এই জাদুর বলে ও স্পেলের সাহায্যেই এতোদূর থেকেও তারা সামারলানকে সাহায্য করতে পারছে। সামারলান একজন রূপান্তৃক; যে প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো রূপ ধারণ করতে পারে। কখনো গরিলা, কখনো ঘোড়া, কখনো মেন্টিকোর বা যেকোনো কিছু। এই রূপান্তরের ব্যাপারটা ওর নিয়ন্ত্রণে নেই। কিন্তু সে নিজের ইচ্ছে মতো রূপান্তরিত হতে পারে। অন্যদিকে, জন্মগতভাবেই অ্যারন তার ভেতরে এক অদ্ভুত ক্ষমতা বয়ে বেড়াচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে ক্ষমতাটিকে জাদুকর বলা হলেও সে একজন পৃথুর্ভিক। যে নিজের ইচ্ছায় সবরকম ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারে না। বরং এরজন্য তাকে উপরমহল থেকে অনুমতি ও স্পেলমেকারদের দিয়ে স্পেল তৈরি করে নিতে হয়। কিন্তু কেন এই সীমাবদ্ধতা? রূপান্তৃক, নিকোম্যান, স্বপ্নদর্শী, ঋভিক, বিবৃ এদের কাউকে তো নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে কারো অনুমতি নিতে হয় না। তাহলে উইজার্ডদের জন্যই কেন এতো আইন? এ কি কোনো ভুলের শাস্তি? নাকি অপরাধের? সামারলান ও অ্যারনের লক্ষ্য এক, তবে কিছুটা ভিন্নতা আছে। অ্যারন চায় তার বাবাকে উদ্ধারের মাধ্যমে পুরো পৃথিবীকে এক কালো ছায়া কুয়াশিয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে। অন্তত বাবাকে ফিরে পাওয়ার জন্য হলেও তাকে সফল হতে হবে, এটাই তার প্রতিজ্ঞা। অন্যদিকে, সামারলান কুয়াশিয়া ও পৃথিবীর সমতা রক্ষা করে চিরদিনের জন্য যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চায়। যার জন্য তার অ্যারনের সফলতা ও সাহায্যের প্রয়োজন। আর তবেই এতো বছর পর ফিরে আসবে প্রাচীন এক রহস্য। ওই প্রফেসিটা তো সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে। যদিও সামারলানের কাছে সবার উপর তার বন্ধুত্বই স্থান পায়। যার ফলে তাদের চিন্তাধারার ভিন্নতা হলেও কর্ম ও ফলাফল একই। ভ্রমণে বের হওয়ার পূর্বমুহুর্তে নতুন এক সঙ্গীর সাথে আলাপ হয় অ্যারনের। মেয়েটির নাম এলিস। যে নিজেও একজন বিতাড়িত স্পেলমেকার ও সামারলানের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। সামারলানের জোরাজুরিতে সেও যোগ দিয়েছে এই জীবন-মরণ এডভেঞ্চারে। তবে এই পুরো ঘটনায় এলিসের ভূমিকা একদমই কম নয়। বরং সমানে সমানে। কিন্তু এতো যুদ্ধ, র-ক্ত, রহস্যময়তা, প্রাণ এসবের মূল্যে কি অবশেষে মিলবে শান্তি? সিত ও অসিতের অসমতা দূর হয়ে কি পৃথিবী ও কুয়াশিয়ার মধ্যকার যু-দ্ধ বন্ধ হবে? কিন্তু সিত ও অসিত তো পয়সার এপিঠ-ওপিঠ। কোনোটাকেই সম্পূর্ণ বিলীন করা সম্ভব নয়। কিন্তু সমতা প্রদান তো সম্ভব! আর সেটা করতে পারে একমাত্র প্রাচীন সেই রহস্য, শৃঙ্খলার প্রতীক। কিন্তু হিতে বিপরীত হবে না তো? কোনোভাবে সামারলান, অ্যারন ও বাকি সবাই ভুল পথে পা বাড়ায়নি তো? প্রফেসিটার অন্য কোনো মানে নেই তল? তবে কি পৃথিবীতে ঘটতে চলেছে পরবর্তী মহাযু-দ্ধ? ◾পাঠপ্রতিক্রিয়া— প্রতিনিয়ত যুদ্ধ, ষড়যন্ত্র, রাজনীতি করে টিকে থাকা দুনিয়া এটি। যেখানে আছে জাদুর মেলা ও জাদুকরেরা। স্পেল দিয়ে তারা নিজেদের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারে। তবে তা অনুমতি সাপেক্ষে। নয়তো আছে শাস্তির বিধান। আর তাই পৃথুর্ভিকরা নিজেদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করার সুযোগ কখনই পায় না। কেননা এতে ধ্বংস ছাড়া নতুন কিছুই হবে না। ‘কুয়াশিয়া- স্পেলমেকারের অনুসন্ধান’ নামটা থেকেই খানিকটা রহস্যের গন্ধ টের পাওয়া যায়। সাথে এ-ও অনুমান করা যায় যে, স্পেল ও উইজার্ডরাই এ বইয়ের মূল উপজীব্য বিষয়। বইটি আপনাকে মুহূর্তের মধ্যে নতুন এক পরিবেশ, নতুন এক পৃথিবীতে নিয়ে যাবে। যদি ঘটনাগুলো ঠিক মন থেকে উপলব্ধি করতে পারেন আর আপনার কল্পনাশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারেন তবেই। প্রতিটি মুহূর্তে যেন এক উত্তেজনা কাজ করবে তখন। এরপর কি হবে, এরপর কি হবে এ ভাবনা থেকে বেরুতে পারবেন না। একের পর এক টুইস্ট আর নতুন রহস্য এসে ভিড়বে সামনে। তবে অতিরিক্ত যু-দ্ধ ও একশন সীনগুলো নিতে পারছিলাম না আমি। বলতে গেলে ঠিক হজম হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল হৃৎপিন্ডটা লাফাতে লাফাতে গলায় এসে আটকে যাবে। এসব ঘরানার বইতে সাধারণত মূল চরিত্রে দুই থেকে তিনজনকে দেখা যায়। তবে এরমধ্যেও একজন থাকে প্রধান আর বাকিরা সাপোর্টিভ। এখানে সামারলান ও এলিসকে সাপোর্টিভ চরিত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে আমি এদের দুইজনকে কোনো অংশেই প্রধান চরিত্র থেকে কম দেখতে পাইনি। বইটিতে শুধু যে যুদ্ধ-বিগ্রহ আর হানাহানি দেখানো হয়েছে ব্যাপারটা তেমন নয়, বরং আমি বেশ কিছু বন্ধন দেখতে পেয়েছি বইটিতে। বাবা-ছেলের বন্ধন, একাকী এক ছেলের হঠাৎই নতুন বন্ধু হওয়া এবং নতুন বন্ধুদের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দেওয়া। বইটিতে আছে বন্ধুত্ব, প্রেম, ভালোবাসা, স্নেহ, মমতার এক অফুরন্ত ভান্ডার। কোথাও কোনো ত্রুটি পাইনি আমি। আমার মনে হয়েছে যেখানে যতটুকু প্রয়োজন, লেখক তার ভান্ডার থেকে ঠিক ততটুকুই ঢেলে দিয়েছেন। ওহ্! এতোগুলো চরিত্র সৃষ্টির পেছনের কারিগরিকে নিয়েই তো এখনো কিছু বললাম না... ঠিক কিভাবে বললে আমার মনের সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করতে পারবো জানি না। তবুও কিছু বলা উচিত, নয়তো অবিচার হবে। সত্যি বলতে লেখকের প্রতিভা, তার পরিশ্রমের কথা যেন কুয়াশিয়া বইটি নিজে থেকে জানান দিচ্ছিল। লেখকের লিখনশৈলী, প্রতিটা চরিত্রের বিল্ডআপ, ঘটনার সামঞ্জস্যতা ও প্রবাহমানতা, শব্দের প্রয়োগ সবটাই আমার কাছে অন্তত জটিল মনে হইনি। প্রথম পৃষ্ঠা থেকে যেরকম উত্তেজনা নিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম, শেষ পর্যন্ত লেখক সেটা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। বরং মাঝে মাঝে এক্সাইটমেন্ট তার সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। কারন, একশন সীনগুলো খুব দ্রুতই একের পর এক আসছিল। আরেকটা ব্যাপার যেটা হলো, ইউনিক প্লট। বইটিতে লেখক যে তার কল্পনার সর্বাংশ ঢেলে দিয়েছেন তা বলতে দ্বিধা নেই। জাদুকর, রূপান্তৃক, কুয়াশিয়া, কুয়াশিন, পৃথুর্ভিক, পৃথালিক, নিকেম্যান, স্বপ্নদর্শী, বিবৃ, ডলোসাস, ঋভিক মিলিয়ে বড়সড় ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডটিকে লেখক একটু একটু করে তৈরি করেছেন। প্রতিটা লাইন লিখতে যে লেখকের অসীম পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়েছে তা তার লেখনীতেই স্পষ্ট এবং প্রত্যেকটা ঘটনার বর্ণনা ভঙ্গি ছিল অসাধারণ। বইটিতে চরিত্রের ছড়াছড়ি। আর আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিটি চরিত্র তাদের নিজ নিজ জায়গায় সেরা। যাকে বলে মেদহীন লেখা আরকি! ◾আমার বিশ্লেষন— এতো বড় বইটা আর ঘটনাগুলো যেভাবে একটার সাথে অন্যটা সম্পর্কযুক্ত, তাই পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে মনে রাখাটা একটু কঠিনই বটে। তবুও যেটুকু মনে আছে তা থেকেই কিছু বিশ্লেষণ করতে চাই। ১.যেহেতু বইটা একটা সিরিজের অন্তর্ভুক্ত এবং সামনে এর আরো চারটি বই আসবে, তাই এটায় সব রহস্যের সমাধান পাবো তা ভাবাও বোকামি। তবুও বইয়ের এন্ডিংটা আমাকে হতাশ করেছে। এমন জায়গায় এসে শেষ হলো যেন মাত্র গল্পের মাঝে আছি আমরা। অথচ অনেকগুলো পথ বাঁচিয়ে আমরা এ পর্যন্ত এসেছিলাম। আমার ধারণা সর্বশেষ সভাটিতেই যেকোনোভাবে এন্ডিং দেওয়া যেতো বা সভাটার পূর্বেই একটা সুন্দর এন্ডিং দেওয়ার মতো সময় ছিল। ২. অ্যারন বস্তুগুলোর গায়েব হওয়া অনুভব করতে পারতো, অন্যকেউ পারতো না সেটা মেনে নিলাম৷ কিন্তু কেউ কিভাবে ওগুলোর অস্তিত্বই সম্পূর্ণ ভুলে যেতে পারে? এমনকি নিজের ছেলেকেও? আমরা ধরে নিতে পারি সেটা জাদুর প্রভাবে। কিন্তু বইয়ে এ ব্যাপারটা ক্লিয়ার করা হয়নি। আশা রাখি, পরবর্তী বইয়ে এর উত্তর পাবো। ৩. কিছু কিছু শব্দে জটিলতার ছোঁয়া পেয়েছি। যার কারনে আমার নিজেরও বুঝতে খানিকটা অসুবিধা হচ্ছিল। আর এতো এতো ঘটনা প্রবাহে বারবার আগের পৃষ্ঠাগুলো উল্টিয়ে শব্দগুলোর মিল খুঁজে বের করতে হয়েছে। আমি জানি না এটা আমার অক্ষমতা নাকি লেখকের খানিক দুর্বলতা! ৪. তবে একটা ক্রেডিট লেখককে দিতেই হয়। বইটিতে কিছু কিছু শিক্ষনীয় বিষয় পেয়েছি আমি। অ্যারনকে বলা তার বাবার উপদেশ বা সামারলানকে বলা তার বাবার উপদেশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ৫. আমি অবাক হয়ে দেখছিলাম লেখক কিভাবে নতুন নতুন ম্যাজিকের অবতারণা করেন আর সেগুলো প্রয়োগ ও উদ্ভাবনের নতুন পদ্ধতিও তৈরি করেন। বিশেষ করে এলিসের তিনটি পরীক্ষার কথা মাথায় আসছে। কিভাবে তিনি বাস্তব তিনটি সত্যকে উপজীব্য করে ফ্যান্টাসি আকারে প্রকাশ করেছেন, সত্যিই ব্রিলিয়ান্ট। ৬. বইটির সবচেয়ে ভালো দিক ছিল কাহিনির নিজ গতিতে ছুটে চলা। কখনো এক জায়গায় থম মে-রে থাকেনি। তবে একটা খারাপ দিকও আছে। চরিত্রদের ডেলিভারি করা সংলাপগুলো। কখনো কখনো মনে হয়েছে সংলাপগুলো আরেকটু বুদ্ধিদীপ্ত হওয়া উচিত ছিল। তবে একেবারেই যে কৃত্রিম মনে হয়েছে তা নয়! কাহিনির ভেতর ঢুকে যেতে পারলে এটা ইটস্ ওকে টাইপ ব্যাপার হয়ে যাবে। ৭. আরেকটা হলো অন্ধকার জীবনের দানবরা বা কুয়াশিয়ায় বাস করা জীবেরা যখন ওহ গড, ইটস্ ফাইন টাইপের ইংরেজিগুলো বলছিল তখন খুবই অদ্ভুত লাগছিল। পৃথিবীর জীবেরা বললে সেটা মানা যায়, কিন্তু কুয়াশিয়ার জীবেরা কি করে ইংরেজি শিখলো? যদিও জানি আমি অভিযোগটা অমূলক, তবুও এই ব্যাপারটা আমার মনে খচখচ করছিল। ৮. আমি সবচেয়ে বেশি চমকেছিলাম প্রফেসিটার আসল মানে জেনে। তবে আসল কালপ্রিটকে জানার পর চমকাইনি আমি। কারন, আমার অবচেতন মন বিষয়টাকে ধরে ফেলেছিল। পৃথালিক তৈরি হওয়ার আসল উপায় ও পদ্ধতি জানার পরই আমার সন্দেহ ওটার দিকে ঘুরে গেছিল। তবে সামারলানের বাবা ও চাচাকেও সন্দেহ হতে ছাড়েনি আমার মন। বরং মনে হচ্ছে পরবর্তী বইয়ে এরচেয়ে বড় চমক অপেক্ষা করছে... ◾চরিত্রায়ন— অ্যারন চরিত্রটাকে বাহির থেকে শামুকের মতো শক্ত মনে হলেও ভেতর থেকে মোলায়েম। আর সামারলানের সিরিয়াস মুহূর্তে মজা করার এক অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে। যা সময়ের সাথে সাথে অ্যারনের মাঝেও স্থানান্তরিত হয়েছে। ইহাকে সামারলান ‘মেডলার ইফেক্ট’ নামে অভিহিত করেছে। কারণ, তার নাম সামারলান মেডলার। এছাড়াও এলিস একটু গম্ভীর প্রকৃতির হলেও একটা মনকাড়া চরিত্র সে। যে কিনা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গদের ভীষণ ঘৃণা করে। যদিও তার যথেষ্ট কারণ আছে। আমার প্রিয় চরিত্রটি হলে সামারলান। হাস্যরসে পরিপূর্ণ এই চরিত্রটির টানেই আমি মূলত শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত এতো দ্রুত এসে পৌঁছেছি। বাঘের মুখে বসেও সে বাঘের হুংকারের মিমিক্রি করে তাকে রাগিয়ে দেওয়ার এক অসাধারণ ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে। পুরো বইয়ের মাঝে এলিস, সামারলান ও অ্যারনের বন্ডিংটা দারুন ছিল। পাশাপাশি অ্যারন ও ব্রেইলিয়াসের বন্ডিংও.. ◾ভালোলাগার কিছু উক্তি— ১. বেঈমানী এমন একটা জিনিস যেটা বেশিরভাগ সময় সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকেই আসে। ২. নিজের সর্বোচ্চ ক্ষমতাটা লুকিয়ে রাখার সুবিধা হলো, লোকে যখন তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে, তখন তারা তোমার ক্ষমতা সম্পর্কে না জেনেই করবে। আর যখন তারা আক্রমণ করবে, তারা বিফল হবে। ৩. একজন প্রকৃত বীর সে-ই, যে জানে যে তাকে কখন থামতে হবে। ৪. জীবন কখনো মনমতো হয় না, জীবনকে মনমতো বানিয়ে নিতে হয়। ৫. ইতিহাস লিখা হয় জয়ীদের হাতে, পরাজিতদের হাতে নয়। ৬. প্রকৃত ক্ষমতাবান সে নয় যে তার ক্ষমতার সর্বোচ্চ চূড়াটা ব্যবহার করে ধ্বংস ডেকে আনে, বরং সে, যে নিজের অসীম ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ◾প্রচ্ছদ প্রোডাকশন ও সম্পাদনা— প্রচ্ছদটা দারুণ। প্রথম দেখায়ই ভীতিকর এক অনুভূতির উদ্রেক করছিল। কিন্তু বইটা পড়া শেষে মনে হচ্ছে এটি সত্যিই ভীতিকর আর এই প্রচ্ছদটাই বইটার জন্য যুতসই। তবে বইটার বাইন্ডিং ভালো হইনি। হাতে নিয়ে পড়তে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। মনে হচ্ছিল এই বুঝি পেজ খুলে হাতে চলে আসবে। ভীষণ নড়বড়ে অবস্থা। সম্পাদনার ভুল একদমই নেই। দুই একটা ভুল চোখে পড়েছে কিনা তাও খেয়াল নেই। এমন কোনো ভুল থেকে থাকলেও তা নির্দ্বিধায় ছাপার ভুল হিসেবে ধরে নেওয়া যায়। লেখক সাহেব যেহেতু সম্পাদকও বটে, তাই এলিসের মতো সে নিজেও তার পরীক্ষায় পাশ করেছে। পরিশেষে, যাদের কল্পনাশক্তি যত বেশি তারা এ বইটি পড়ে তত বেশি মজা পাবে বলেই আমার ধারণা। বইটা পড়ার মনে হচ্ছে আমার কল্পনাশক্তি দারুণ! বই: কুয়াশিয়া - স্পেলমেকারের অনুসন্ধান লেখক: আশরাফুল সুমন জনরা: ফ্যান্টাসি প্রকাশনী: রোদেলা প্রচ্ছদ: রিয়াজুল ইসলাম জুলিয়ান পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৪৩২ মুদ্রিত মূল্য: ৪৫০ টাকা
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের মূল তিন চরিত্রঃ অ্যারন, সামারলান এবং এলিস ঠিক যেন হ্যারি পটার সিরিজের হ্যারি, রন আর হারমিওনি। বইটির প্রচ্ছদ নিয়ে রয়েছে হাজারো রহস্য। তবে সব রহস্যের সমাধান পাওয়া যাবে বইয়ের ভিতরে। বইটি পড়ার সময় একবার মনে হচ্ছিলো আমি অ্যারন আবার একবার মনে হচ্ছিলো আমি সামারলান।একবার অবশ্য নিজেকে এলিসও মনে হয়েছে। বইটিতে র্যাভনোটাসকে দেখতে পাবো বলে খুব আশা করেছিলাম। কিন্তু লেখক এক্ষেত্রে আমাকে নিরাশ করেছেন। কুয়াশিয়া নামটা নিয়েও বইটা পড়ার আগে ছিল হাজারো চিন্তা। তবে এই 'কুয়াশিয়া' অর্থ জানতে হলে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে।আশা করি লেখক এই বইয়ের দ্বিতীয় সিকুয়েল লিখবেন।
Was this review helpful to you?
or
the book was world class and one of best fantasy book i ever read. it's been 2 year please publish the next part. I believe this book will make it's way to international readers. please don't stop.
Was this review helpful to you?
or
গল্পের মধ্যে অনেকগুলো ভালো টুইস্ট খুঁজে পেয়েছি। আর এই টুইস্টগুলো বইয়ের সামনের প্রতিটা পাতার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছিলো। বইটি পড়ার সময় প্রথমে আমি কিছুটা আগোছালো হয়ে গিয়েছিলাম, কিন্ত পরে অবশ্য বুঝতে অসুবিধে হয়নি। আমার কাছে পুরো বইটি কাল্পনিকভাবে ভাবতে অনেক ভালো লেগেছে। আশা করি ফ্যান্টাসিকে আমাদের বাংলা সাহিত্যে অনেকদূর নিয়ে যাবেন তিনি।
Was this review helpful to you?
or
f you are looking for world-class fantasy this is the one you should read. The writer was super, and the way of writing was flawless. and the things where describe truly world class. it could be compared with any other New York best seller fantasy novel. this is very rare to find this level of mature writing I really appreciate the way it's written. and really eagerly waiting for the next instalment of the book. I am truly amazed by the writing, thank you very much for such a pleasure and its highly recommended book. If anyone in this group know the writer please ask my gratitude towards him I really appreciate him thank you.