User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বইটি দ্রুত ডেলিভারীর জন্য রকমারিকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বই আসলেই অনেক ভালো।
Was this review helpful to you?
or
গল্পটা অনেক আগেই করেছি তবে এটা সংগ্রহ করতে পারেন অনেক সুন্দর একটা গল্প ও উপন্যাস
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
ভ্রাম্যমান লাইব্রেরি থেকে নিয়ে দু'বার পড়েছি। এখন রকমারি থেকে নিয়ে নিজের বুকসেলফে সাজিয়ে রাখবো,সময় পেলেই পড়বো♥️♥️
Was this review helpful to you?
or
একাত্তর... একটি মাত্র শব্দ কিন্তু বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট! ❝একাত্তরের দিনগুলি❞- শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ডাইরির অংশবিশেষ যা তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় লেখেন, আছে কিছু চিঠিও। বইটিতে ফুটে উঠেছে সেসময়ের বাঙালিদের করুন আর্তনাদ। একদিকে হায়েনারা আক্রমণ করে একের পর এক ধ্বংসযজ্ঞের পৈশাচিক দামামা বাজিয়ে চলছে তো অপরদিকে একে একে কেড়ে নিচ্ছে কারো প্রিয়জনদের। এমনি এক সংকটকালের বেদনা এক মায়ের। যিনি মাতৃভূমি আর সন্তানের ভালোবাসার বাঁধনে আটকে পড়েছেন। হায়েনারা দেশ খুবলে খাচ্ছে যেমন দেখতে পারছেন না তেমনি যুদ্ধে যদি সন্তানকে হারিয়ে ফেলেন এই ভয় তিলেতিলে যেন অস্থির করে তুলে শহীদ জননীকে। কিন্তু দেশপ্রেমের কাছে নতিস্বীকার করে সন্তানপ্রেম। কিন্তু মায়ের মন কি সন্তানের চিন্তা থেকে কখনও মুক্ত হয়? উৎকন্ঠিত দিন পার করেন, অপেক্ষায় থাকেন রুমি স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে ফিরে আসবে। কিন্তু কোনো বড় অর্জনের পিছে কি কোনো বড় ত্যাগ থাকে না? কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা কি এত সহজেই পেয়েছি আমরা? লাখো শহীদের আত্মত্যাগ, কোটি স্বজনের আর্তনাদ, শত শত বীরাঙ্গনার আহাজারি কি ছিলো না মহান স্বাধীনতার মূল্য? কম করে হলেও তিন-চারবার পড়া হয়ে গেছে। কিন্তু যতবারই পড়ি কষ্ট-আতংক যেন নতুন করে ছুঁয়ে যায়। কি ভয়ানক-বীভৎসই না ছিল সেদিনগুলো! কল্পনাকেও যেন হার মানায়। যাঁদের উপর সে নিদারুণ ঝড় বহে গেছে তাঁরাই জানেন কী ছিলো ❝একাত্তরের দিনগুলি❞... যদিও ডায়েরি আকারে লেখা তবুও সহজ-সাবলীল লেখনশৈলী কথাসাহিত্যিক জাহানারা ইমামের। লেখনী এতটাই জীবন্ত যেন পাঠক নিজেই অনুভব করতে পারবেন বিভীষিকাময় সেই দিনগুলি। ভালোমন্দ বহু ঘটনার বিবরণ রয়েছে বইয়ে। রাতের পর যেমন দিন আসে তেমনি কালো রাত পেরিয়ে স্বাধীনতার সূর্য উদয় পর্যন্ত ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনা বলে গেছেন শহীদ জননী। তিনি হারিয়েছেন অনেককিছুই। প্রিয়জনদের হারানোর কষ্ট একদিকে এবং অন্যদিকে দেশকে নতুনভাবে ফিরে পাওয়ার আনন্দ! আমরাও হারিয়েছি আমাদের বীরদের কিন্তু অমরত্ব লাভ করেছেন তাঁরা তাঁদের সীমাহীন ত্যাগের জন্য। চিরস্থায়ী আবাস গড়েছেন তাঁরা কোটি কোটি হৃদয়ে। বাংলাদেশের সাহিত্যের এক অমর সৃষ্টি ❝একাত্তরের দিনগুলি❞। যা শুধু পাঠককে ভাবাবেই নয় বরং নিয়ে যাবে দেশ গঠনের সেই সময়ে যাঁদের অবদানেই পেয়েছি আমরা কাঙ্ক্ষিত দেশ ও স্বাধীনতা। বই: একাত্তরের দিনগুলি লেখক: জাহানারা ইমাম জনরা: মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্মৃতিকথা প্রচ্ছদ: কাইয়ুম চৌধুরী প্রকাশনী: সন্ধানী প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬ পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৬৮ মুদ্রিত মূল্য: ৩০০/- রিভিউয়ার: রাফিয়া রহমান
Was this review helpful to you?
or
বইটা ভালো
Was this review helpful to you?
or
বইটা সবার পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বই , ১৯৭১ সালকে বুঝার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
অনেক ভাল একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
বইটিতে তিনি অনেক তথ্য উল্লেখ করেন নাই যা এ প্রজন্মের জন্য জানা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছি।
Was this review helpful to you?
or
সত্যি অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
100
Was this review helpful to you?
or
শুধু জাহানারা ইমাম নয় শহিদ জননী জাহানারা ইমাম নাম লিখা উচিত
Was this review helpful to you?
or
very very good
Was this review helpful to you?
or
বইটি বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাসের সাক্ষ্য দেয়
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের front panel এর নিচের দিকে সামান্য মুচডে গিয়েছে।এটা আশা করি নি। বাকিসব ঠিক আছে। ধন্যবাদ
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ ও অনবদ্য একটি বই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রস্ফুটিত করতে বইটি পাঠক হৃদয়ের গভীরে স্থান করে নিয়েছে। একজন মায়ের আত্মত্যাগ, একটি ছেলের গভীর দেশপ্রেম, একটি পরিবারের দেশের প্রতি ভালবাসা লেখিকা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত ঘটনা ডায়েরী তে স্পষ্ট। বইটি পড়ার অনুরোধ রইল সকল কে।
Was this review helpful to you?
or
Valo
Was this review helpful to you?
or
Must read
Was this review helpful to you?
or
সুন্দর বই।মনে করিয়ে দেই সেই একাত্তরের দিনগুলির কথা।
Was this review helpful to you?
or
The book was good and delivery was very smooth,
Was this review helpful to you?
or
Great book
Was this review helpful to you?
or
This is the best book about the life in Dhaka during the liberation war it covers from the guerrilla operations to the hellish atrocities committed by the Pakistani forces and its collaborators Overall a must read for any reader who is interested on our liberation war
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর বই
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
#সপ্তর্ষি_রকমারি_বুকরিভিউ_প্রতিযোগ প্রতিযোগির নাম-শেখ আব্দুল্লাহ পাভেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান - ক্যান্টনমেন্ট কলেজ,যশোর জেলা- গোপালগঞ্জ ই মেইল- [email protected] ◾বইয়ের নামঃ একাত্তরের দিনগুলি ◾লেখকঃ জাহানারা ইমাম ◾প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ ◾প্রকাশনীঃ চারুলিপি প্রকাশন ◾পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৩১২ ◾জনরাঃ মুক্তিযুদ্ধের ডায়েরি, চিঠি ও স্মৃতিচারণ কিছু বই এমন হয় যে মনে দাগ কেটে যায়৷ আজীবন থেকে যায় সে দাগ। ঠিক এমনই একটি বই শহিদ জাহানারা ইমামের "একাত্তরের দিনগুলি"। একজন মা নিজের দেশকে কতটুকু ভালোবাসতে পারলে আপন ছেলেকে দেশের জন্য কুরবানী করতে পারেন!!! ◾প্রেক্ষাপট:- -------- একাত্তরের দিনগুলি মূলত একটি দিনলিপি। জাহানারা ইমামের জীবনে,মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালের ও সময়ের ঘটনাবলি ডায়েরিতে দিনলিপি আকারে লিপিবদ্ধ। বইটি জাহানারা ইমামের একজন সাধারণ মা থেকে শহীদ জননী হয়ে উঠার দিনলিপি। পুরোটা বই জুড়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার মা,এক সংগ্রামী দেশপ্রেমিকের স্ত্রী, এক দৃঢ়চেতা বাঙালী নারী হিসেবে উপস্থিত তিনি। এই দিনলিপির প্রতিটা অক্ষরে রয়েছে যন্ত্রণা,রয়েছে বারুদে শেষ হওয়া রক্তের গন্ধ। বইটিকে মুক্তিযুদ্ধের দিনপঞ্জি বলা যেতে পারে। এক সাধারণ বাঙালি নারীর ব্যক্তিগত ডায়েরি,বাংলাদেশের ইতিহাসের,মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় দলিল হয়ে উঠার গল্প। ◾পাঠ সংক্ষেপ:- ---------- ১৯৭১ সালের এক মার্চ থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিনলিপি সংযুক্ত করেছেন শহীদ জননী। পরিচ্ছেদের প্রথমেই বিভিন্ন দিনের তারিখ দেওয়া এবং নিচে সেই দিনের ঘটনাপ্রবাহ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তিনি যখন দিনলিপি শুরু করেন তখন বাঙালি তার স্বাধীকার ও স্বাধীনতার জন্য সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল সমুদ্র করে রেখেছিল।যখন দিনলিপি শেষ হয় তখন পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের নতুন মানচিত্র রচিত হয়। তিনি যখন শুরু করেন তখন তার রুমী ছিলেন, রুমীর মতো তুখোড় মেধাবী হাজার হাজার তরুণ ছিলেন,যখন উপসংহারে যান তখন তারা হারিয়ে গিয়েছেন মহাকালের অতল গহব্বরে,বেঁচে আছে তাদের হিমালয় সমান কৃতিত্ব। গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ভাষণ নিয়ে জনগণের মধ্যে যে উদ্দীপনা ছিল তার বর্ণনা পাওয়া যায়। অপারেশন সার্চ লাইটে পাক বাহিনী ঢাকা শহরে যে নারকীয় তাণ্ডব চালাই তার যাবতীয় বর্ণনা,বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার সবই আছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনের হত্যাকাণ্ড,পুরান ঢাকার হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ছোঁয়াও পাওয়া যাবে এই বইটিতে। এরপরেই বইটিতে চলে আসে জাহানারা ইমামের বড় ছেলে রুমী ব্যাপারে। যুদ্ধের শুরু থেকেই পাকিস্তানি অত্যাচারী শাসকদের প্রতি রুমী তীব্র ঘৃণা অনুভব করতো। চেনা মানুষগুলোকে নরপিশাচদের হাতে খুন হতে দেখে যুদ্ধে যাবার ইচ্ছা পোষণ করে। যুদ্ধে যাবার আগে আগে মায়ের কাছে অনুমতি নিতে যায়। আর জাহানারা ইমাম পড়লেন জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি। একদিকে দেশের প্রতি দায়,অন্যদিকে মায়ের ভালবাসা। শেষ পর্যন্ত দেশপ্রেম জয়ী হলো। যুদ্ধে যোগদান করলেন রুমী। রুমী যেহেতু দুই নম্বর সেক্টরের অধীন যুদ্ধ করেছিলেন সেহেতু এই সেক্টর এবং সেক্টর কমাণ্ডার খালেদ মোশাররফ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা সম্ভব হবে। রুমীসহ অন্যান্য গেরিলা যোদ্ধারা যাদেরকে বিচ্ছু বলা হয়েছে তাদের ঝটিকা আক্রমণের কথা লিপিবদ্ধ করেছেন লেখিকা।ঐ সময় পাক বাহিনী ঢাকার গেরিলা যোদ্ধাদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে। 'Hit and Run' পদ্ধতিতে হামলা করে ব্যতিব্যস্ত রাখে মিলিটারিদের।রইসুল ইসলাম আসাদ,শিল্পী আজম খান, ক্রিকেটার জুয়েল,নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু,বদি,আজাদ,আলমসহ অনেক তরুণ তুর্কির নাম উঠে এসেছে বর্ণনায়। ◾পাঠ প্রতিক্রিয়া- ----------- এই বইটির মাধ্যমে একটা রুমে বসে আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখে এসেছি! মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে মানুষের জীবনের যে পরিবর্তন তা যেন বইটিতে অনেকটা জীবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিটা পাতায় যেন দেখতে পাচ্ছিলাম ইতিহাসকে নতুন করে। এক একবার মনে হচ্ছিল গেরিলা বাহিনীর আক্রমণ দেখছি চোখের সামনে!আর সেই ধরে নিয়ে যাওয়ার পর অত্যাচারের বর্ণনা! একজন মায়ের ডায়রীর পাতায় এভাবেও পুরো দেশের অবস্থা ফুটে উঠতে পারে! পুরোটা না পড়লে বোঝা সম্ভব নয়। আগুনের শিখা,রক্তে রাঙানো রাজপথ,শহর জুড়ে কয়েক ঘন্টা পর পর কারফিউ জারি সবকিছু যেন চোখের সামনে ভাসছিলো।এটাকে শুধু দিনলিপি বললেও হয়তো ভুল হবে। কারণ এই বইয়ের মাধ্যমেই জাতির হৃদয়ছবি ফুটে উঠেছে নিদারুণ যন্ত্রণায়,দিনশেষে মিশে গেছে পাওয়া না-পাওয়ার ঘন বাষ্পে। ছোটবেলায় আবেগময় কোন উপন্যাস বা গল্প পড়লে চোখ ছলছল করতো।এই বইটা পড়তে গিয়ে কতবার চোখ ভিজে উঠেছে বলতে পারবোনা। মাঝে মাঝে হারিয়ে যাচ্ছিলাম।খানিক পরেই মনে পরছিলো,এতো কোন গল্প নয়! ◾প্রিয় লাইন: --------- "কেন যে বললাম তোকে দেশের জন্য কোরবানী করে দিলাম যা,এই কথা মনে হয় আল্লাহ কবুল করে নিয়েছেন;যদি বলতাম যা বাবা যুদ্ধ করে ওদের থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে তবেই মায়ের কাছে ফিরে আসিস,তাহলে হয়তো ছেলেটা এখন কাছেই থাকতো" ◾বইটির তাৎপর্য- ----------- জাহানারা ইমাম তিনি শুধু তার সন্তানকে হারাননি, পাকিস্তানের অযত্ন অবহেলায় নিজের স্বামীকেও হারিয়েছেন। একদিকে বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন, অন্যদিকে রুমী,বদি,আজাদ,জুয়েলের মতো হাজার তরুণের রক্তগঙ্গা। তাইতো বইটিকে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক দলিলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আর লেখককে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে 'শহীদ জননী' হিসেবে। ◾বইটি কেন পড়বেন- -------------- মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমরা কম বেশি সবাই জানি।কিন্তু আমরা যারা যুদ্ধ দেখিনি,আমরা কতটুকু উপলব্ধি করতে পারি সে সময়ের অবস্থার কথা?এত মানুষের ত্যাগ এর কথা?আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহীদ হন আমরা সবাই জানি। কিন্তু ব্যাপারটা কে কতটুক উপলব্ধি করতে পারি আমরা? বইটি পড়লে সেই উপলব্ধিটুকু হবে। দেশের প্রতি আমাদের যে দায়বদ্ধতা আছে উপলব্ধি করতে হলেও বইটি পড়তে হবে। ◾ব্যক্তিগত রেটিং- ০৫/০৫ শহীদ জননীর প্রতি এবং তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা রইলো।শ্রদ্ধা রইলো সে সময়ের প্রতিটা মানুষের প্রতি যাদের জন্য আজ একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বসে অহংকার করতে পারি..জোর গলায় বলতে পারি আমরা বাঙালি।আমরা বাংলাদেশী! ©Abdullah Pavel
Was this review helpful to you?
or
❤️❤️❤️❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
এই বইটা পড়ার পর আমার দু'চোখ অশ্রু ভরা ছিল। একজন মা কিভাবে তার দেশের জন্য তার ছেলেকে তট্যাগ করতে পারে
Was this review helpful to you?
or
Good book.
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি ... এবং এক কথায় বইটি অসাধারণ...
Was this review helpful to you?
or
অত্যন্ত সুন্দর একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
মনোমুগ্ধকর একটি বই। পড়তে পড়তে মনে হয়েছিলো আমি বুঝি ঠিক সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় চলে গিয়েছি। আর সুবর্ণ জয়ন্তি উপলক্ষে বইটির নতুন সংস্করণ চমৎকার লেগেছে। ধন্যবাদ রকমারিকে।।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে এতটা ভালো লেগেছে বলে বুঝাতে পারবো না।আর রকমারি ডেলিভারী অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
বইটি অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
I recommend
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের বর্বরতা অনেক সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েেছে।
Was this review helpful to you?
or
?
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে হলে বইটা পড়তে হবে। এই বই পড়া ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা অসম্পূর্ণ।
Was this review helpful to you?
or
Very good
Was this review helpful to you?
or
অত্যন্ত ভালো একটি বই। সবাই বইটা পড়তে পারেন। খুবই ভালো লাগবে বইটা।
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১ এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় এই বইটা থেকে|
Was this review helpful to you?
or
বইটি এক কথায় চমৎকার
Was this review helpful to you?
or
ভাল লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
onek valo
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
Good Book
Was this review helpful to you?
or
Shundor boi.. Jahanara mam shundor Kore tule dhoresen.
Was this review helpful to you?
or
Osadharon boi,Muktijuddo somporke janar jonno.. Khub valo boi
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার একটা বই। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে চান তাদের অবশ্যই পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
বইঃ একাত্তরের দিনগুলি লেখিকাঃ জাহানারা ঈমাম প্রকাশনিঃ চারুলিপি প্রকাশন---- রিভিউঃ আমরা এই প্রজন্মের অনেকেই আমাদের দাদা-বাবাদের কাছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুনে থাকি। কিন্তু মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলো যারা নিজ চোক্ষে দেখেছিলো আমরা তাদের সেই অনুভূতি কখনোই অনুভব করতে পারবো না। "একাত্তরের দিনগুলি" বইয়ে লেখিকা শহিদ জননী জাহানারা ঈমাম প্রত্যেকটা বিষয় যেনো চোখের সামনে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমি মনে করি এই প্রজন্মের প্রত্যেকটা ছেলে-মেয়েদের এই বইটি পড়া উচিৎ। কোনো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নয়, বইটি একন্তই নিজের ভাবে লিখেছেন লেখিকা। '৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালী তরুণ তরুণীদের অবদান, মুক্তিবাহিনী ও গেরিলা বাহিনীর আত্মত্যাগ। দেশপ্রেম বুকে নিয়ে একঝাক তরুনের রক্তের সাগরে ডুব দেয়া, পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন, গনহত্যা, লুটপাট, এসব কিছু নিজের চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম বইটি পড়ার সময়। আপনজন হারানোর বেদনা তারাই বোঝে যারা আপনজন হারিয়েছে, কিন্তু লেখিকা তার এই বইয়ের মাধ্যমে তার সন্তান হারানোর বেদনাটা মনে হচ্ছে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিলেন। অনেক সুন্দর সাবলিল লিখার ধরন, অনেক তথ্যবহুল লিখা, অনেক সৃতি গেথে রয়েছে তার লিখার মধ্যে। আশা করি সবাই পড়বেন। ব্যাক্তিগত অভিমতঃ ১০/১০
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই বইটি মুগ্ধ করার মতো।জ্ঞ্যানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বইটি যথেষ্ট উপযোগী।শুধু এই বিষয়ের ছাত্র না, সবাই এই বইটি সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে।শিখতেও পারবে অনেক কিছু।বইটি পড়ার পর ভালো লাগা কাজ করবেই।অনেক চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি।আমি সবাইকে রেফার করবো বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
কিছু বই বেঁচে থাকে চিরদিন মানুষের হৃদয়ে । একাত্তরের দিনগুলি আমার হৃদয়ে দাগ কেটেছে । যখন বইটি পড়ছিলাম তখন কখনো কেদেছি। কখনো শরীরের লোম দাড়িয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমরা দেখতে পড়িনি । কিন্তু আমাদের কি ভাগ্য ! আমরা জাহানারা ইমামের মতো একজন লেখিকা পেয়েছি যিনি কিনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন আমার দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ আর তা ছড়িয়ে দিয়েছেন আমাদের মাঝে। ধন্যবাদ লেখিকা কে। পাঠকরা বইটি পড়ে উপকৃত হবেন আশা করি।
Was this review helpful to you?
or
একাত্তরের দিনগুলি, জাহানারা ইমাম। মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্মৃতিচারণমূলক এই অসাধারণ গ্রন্থটি অনেক দারুন। এই গ্রন্থে জাহানারা ইমাম সত্যিই একজন সাহসী ছেলের জননী। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে বইটি পড়ার অনুরোধ রইল, পাঠকদের কাছে!!!
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার একটা বই। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে চান তাদের অবশ্যই পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি মূলত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের প্রত্যেকদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তার ডাইরিতে লেখার সংকলন। যদি সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের সময়টা অনুভব করতে চান তাহলে এই বইটি পড়বেন। বইটি দেখলাম জাহানারা ইমাম এর ছেলে রুমীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরও সে রুমীর জন্য প্রাণ ভিক্ষা চান নি। এরাই প্রকৃত মানুষ।
Was this review helpful to you?
or
Book that make me cry
Was this review helpful to you?
or
"একাত্তরের দিনগুলি" শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ব্যক্তিগত দিনলিপি আকারে রচিত একটি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ। বইটির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র, গেরিলা যোদ্ধা শহীদ শফী ইমাম রুমি। উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে রুমি আইএসসি পাস করে বিদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যাওয়ার দিনক্ষণও ঘনিয়ে এসেছিল। তখন মার্চ মাস, দেশ উত্তাল হতে শুরু করেছে। রুমির মা চাইছেন, ছেলে বাইরে চলে যাচ্ছে, ভালোই হলো। কিন্তু রুমির মনে অন্য কিছু। তিনি ঠিক করে ফেললেন, যুদ্ধে যাবেন। এই প্রস্তাব মা-বাবার সামনে তুলতেই প্রথমে বেঁকে বসেন মা জাহানারা ইমাম নিজেই। তুখোড় তার্কিক, মেধাবী, চৌকস এ তরুণ কিনা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানিতে সাড়া না দিয়ে যাবেন যুদ্ধে? মায়ের মনে কাঁটা দেবে—এটাই তো স্বাভাবিক।কিন্তু ছেলের জেদের কাছে শেষমেশ রাজি না হয়ে উপায় ছিল না। ছেলেকে ছেড়ে দিলেন দেশের ময়দানে। এর পরের বিভীষিকাময় দিনগুলো, প্রতিটি মুহূর্ত তার যেমন কেটেছে ,মুক্তিযুদ্ধে সন্তান বিয়োগের বেদনা বিধুর মাতৃহূদয় এবং যাতনা মূর্ত হয়েছে ‘একাত্তরের দিনগুলি’তে। বইটি সত্যিই অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতিচারণার ফসল এই বইটি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে জানতে হলে বইটি অবশ্যপাঠ্য। জাহানারা ইমাম এর বড় সন্তান শাফী ইমাম (রুমী)'র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীকালে তার শহীদ হওয়া বইটির প্রধান কাহিনী। তবে বইটি শুধুমাত্র এই জায়গায় থেমে থাকেনি, ওই সময়ের আরো অনেক ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ডায়েরি হিসেবে লেখা হলেও বইটি খুবই সুপাঠ্য।
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১এর দুঃসহ দিনগুলি শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এ বইটিতে তুলে ধরেছেন। এ বইটা আমি আমার চাচাতো বোনের থেকে ধারে পড়ি। বইটা পড়ে আমার প্রায় কান্না চলে আসে। জাহানারা ইমাম থেকে শহীদ জননী কারা বানিয়ে ছিলেন উনাকে? আমরা অনেকেই জানি না। যুদ্ধ শেষে অনেক মুক্তিযোদ্ধা ফিরে আসে। কিন্তু ফেরে না রুমি, ফেরে না আজাদ, ফেরেনা আরও অনেকে। যারা ফিরে এসেছিল তারাই জাহানারা ইমামকে শহীদের মা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। শহীদ রুমির মা থেকে তিনি হয়ে উঠেন শহীদজনণী। যেসব মুক্তিযোদ্ধা ফিরে এসেছিলেন তারা সকলেই বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। কিন্তু রুমিরা কখনও বৃদ্ধ হবেন না। ওরা সবসময় সেই ২০-২১ বয়সটিতেই থেকে যাবে। শহীদজননী জাহানারা ইমাম পেশায় ছিলেন শিক্ষক। দু সন্তানকে গড়ে তুলেছিলেন স্বাধীনচেতা করে। এই নারী নিজে যেমন দেশ নিয়ে ভাবতেন তেমনি ছেলেদেরও ভাবতে শিখিয়ে ছিলেন। ছেলেদের খুব আদর করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর কাছাকাছি যেতে পেরেছিল তারা সকলেই শহীদজননীর আদর, ভালবাসার ভাগ পেয়ে ছিল। একাত্তরের দিনগুলি,বইটির প্রথম দিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক পটভুমি ফুটে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই মায়ের সাথে দুভাইয়ের তর্ক হত যুদ্ধে যাওয়া নিয়ে।এর মধ্যে রুমীর স্কলারশীপ হয়ে যায়। কিন্তু সেসময় স্কলারশীপ নিয়ে পড়তে যাওয়ার চিন্তা রুমির মাথায় একদমই ছিল না। তার চােখে ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন, দেশ স্বাধীন করার স্বপ্ন। একটা সময় মা তাকে যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেন। শহীদজননী জাহানারা ইমাম তাঁর ছেলেকে যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেয়ার সময় একটি চমৎকার কিন্তু ভীষন বেদনাদায়ক কথা বলেছিলেন “যা তোকে দেশের জন্য কোরবানী করে দিলাম”। একজন মা তার সন্তানকে তখনই কোরবানী দিতে পারেন যখন সন্তানের চেয়ে দেশ বড় হয়। সে সময় বাংলাদেশের হাজার হাজার মা তার সন্তানকে দেশের জন্য কোরবানী দিয়েছেন।
Was this review helpful to you?
or
I read this book maybe more than 10 times .But, i never get bored reading this book .This book is written by a mother whom son rumi was a freedom fighter.Jahanara imam was a very selfrespected woman.In this book a incident is stated which touch my heart is that during war,rumi was arrested by pak soldiers.But jahanara imam did not give petition to pak soldiers saying that she cann't seek perdon to those pepole whom his son are fighting against.
Was this review helpful to you?
or
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুন বইয়ের নামঃ একাত্তরের দিনগুলি; লেখকঃ জাহানারা ইমাম; প্রকাশক: চারুলিপি প্রকাশন ধরন: মুক্তিযুদ্ধের ডায়েরি,চিঠি ও স্মৃতিচারণ শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার কথা আমরা প্রায়ই বলে থাকি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দিনলিপি"একাত্তরের দিনগুলি"র লেখক জাহানারা ইমামের জীবনে এটি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। ৭১ এ সর্বস্ব হারিয়ে তিনি নতুন শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করেছেন। তাঁর বইটি পাঠ করা রীতিমতো একটি অভিজ্ঞতা। ওই দিনলিপির প্রথমেই তিনি তাঁর ভয় ও শোকের যাত্রা শুরু করেন এবং এই বইয়ের শেষের পৃষ্ঠাগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে তিনি তাঁর পুত্র ও স্বামীকে হারিয়ে আপন শক্তিতে জ্বলে উঠেছেন। তাঁর দিনলিপির প্রথম পৃষ্ঠা শুরু হচ্ছে ১৯৭১-এর পয়লা মার্চ সোমবার, আর শেষ হচ্ছে ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর শুক্রবার। রমনার মাঠে যেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে তার পরের দিন। এই নয় মাসের মধ্যে একদিন আগস্ট মাসে পাক হানাদার বাহিনী তাঁর স্বামী এবং পুত্রদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। কয়েক দিন পর অনেক নির্যাতনের শেষে তাঁর স্বামী শরিফ ইমাম এবং দ্বিতীয় পুত্র জামী এবং অন্য কয়েকজন ফিরে আসেন। কিন্তু রুমি আর ফিরে আসেনি। যুদ্ধের শেষের দিকে তাঁর স্বামী হূদযন্ত্রের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ১৪ ডিসেম্বর যেদিন পাকিস্তানের দোসর রাজাকার আল-বদরেরা ঢাকার বাড়ি বাড়ি থেকে দেশের বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে হত্যা করে, সেদিন শরিফ ইমামের লাশ দাফন করতে বের হয়ে যায় জাহানারা ইমামের আত্মীয়স্বজনেরা। দুই দিন পরে দিনলিপি শেষ হওয়ার এক দিন পর সাতমসজিদ রোডের রায়েরবাজারে বধ্যভূমিতে ১৪ তারিখে ধরে নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিজীবীদের গলিত লাশ পাওয়া যায়। রুমির দেহ সেখানে বা অন্য কোথাও পাওয়া যায়নি। আরও পরে তিনি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রধান হয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হন। যাই হোক, ফিরে যাই আবার বইটির মূল কথায়। কীভাবে আবেগবর্জিত ভাষায় একেকটি দুঃখের দিনের কথা লিখে যাচ্ছেন লেখক যে পাঠকের পক্ষে আশ্চর্য হওয়া ছাড়া আরও কিছু করার থাকে না। একটি দিনের বর্ণনা এ রকম, ‘১৪ই ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ১৯৭১: শরিফকে বাসায় আনা হয়েছে সকাল দশটার দিকে। মঞ্জুর, মিকি… এরা দু’জন ওদের পরিচিত ও আত্মীয় পুলিশ অফিসার ধ’রে গাড়িতে আর্মড পুলিশ নিয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে একটা পিকআপ যোগাড় করে হাসপাতাল থেকে ওকে নিয়ে এসেছেন। ‘সকাল বেলা প্লেনের আনাগোনা একটু কমই ছিল। আজ কারফিউ ওঠে নি। তবু আমাদের গলিটা কানা বলে, খবর পেয়ে সব বাড়ির লোকেরা এসে জড়ো হতে পেরেছেন। খবর পেয়ে আনোয়ার তার বোর্ড অফিসের মাইক্রোবাসটা অনেক ঝঞ্ঝাট করে নিয়ে এসেছে। সঙ্গে এসেছে শেলী আর সালাম। ওই মাইক্রোবাস পাঠিয়ে মা আর লুলুকে আনা হয়েছে ধানমন্ডীর বাসা থেকে। মঞ্জুর তার গাড়িতে কয়েকটা ট্রিপ দিয়ে এনেছেন বাঁকাকে, ফকিরকে, আমিনুল ইসলামকে। ডব্লিউ আর খান যোগাড় করে দিয়েছেন…’। এ পর্যন্ত বোঝাই যাচ্ছে না যে মৃত শরিফকে আনা হয়েছে, না জীবিত কিন্তু অসুস্থ শরিফকে আনা হয়েছে। এমন নির্মোহ ভাষায় লেখা বইটি। সত্যিকার বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস আমরা যারা দেশে ছিলাম, ভারতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারিনি, প্রতিদিন মধ্যরাতে দরজায় কড়া নাড়া শোনার ভয়ে কাটিয়েছি, এই বইয়ে আমাদের প্রত্যেকের কথাই বলা হয়েছে। আজ যাঁরা এই বইটি পড়েননি তাঁদের প্রতি অনুরোধ, রুমির মায়ের এই দিনলিপি পড়ুন—তাহলেই পরিষ্কারভাবে জানতে পারবেন সেদিনের পরিস্থিতি। এটা শুধুমাত্র আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বই না, এটা ফ্রেমে বাধানো এক কান্না ও প্রাপ্তির লিখিত ইতিহাস।
Was this review helpful to you?
or
কিছু গল্প আছে যার ধারা পাঠককে বইয়ের ভেতর টেনে নিয়ে যায়। যে বইটি সম্পর্কে বলতে চলছি তা এমনি একটি গল্প যার ধারা আপনাকে মোহিত করবে। হৃদয়ের কোণে লুকিয়ে থাকা মুক্ত সত্তাকে নাড়া দেবে, নিঃশব্দে বলে যাবে অনেক কিছু ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ বইয়ের নামঃ একাত্তরের দিনগুলি লেখকের নামঃ জাহানারা ইমাম ব্যাক্তিগত রেটিংঃ ৯/১০ প্রথম প্রকাশঃফেব্রুয়ারি ১৯৮৬ (সন্ধানী প্রকাশনী) অনলাইন পরিবেশকঃ rokomari.com/ প্রকাশনীঃ চারুলিপি চারুলিপি প্রকাশনায় প্রথম প্রকাশঃ২০১৮ ধরনঃ মুক্তিযুদ্ধের ডায়েরি,চিঠি ও স্মৃতিচারন মুদ্রিত মুল্যঃ৩৫০ টাকা রকমারি মুল্যঃ২৬৩ টাকা পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ৩১২ প্রচ্ছদশিল্পীঃ ধ্রুব এষ ভাষাঃবাংলা ISBNঃ 9789845982306 *প্রাথমিক কথাঃ ১৯৭১ সালের প্রতিটি দিনে লেখিকার জীবনের এবং তার দেখা ঘটনা গুলোর স্মৃতিচারনে একটি বই, "একাত্তরের দিনগুলি"। মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কেও একটি সম্যক ধারনা অর্জন করা সম্ভব, শহীদ গেরিলা শাফী ইমাম রুমির মাতা জাহানার ইমামের এই বইটি থেকে। ১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সাথে জাহানারা ইমাম একাত্নতা প্রকাশ করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মৃত্যু,দুঃস্বপ্নভরা বিভীষিকার মধ্যে তার ত্যাগ ও সতর্ক সক্রিয়তা দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ উদাহরণ হয়ে আছে। শহীদ রুমির মা পরিণত হন শহীদ জননী তে। মুক্তিযুদ্ধে সন্তান বিয়োগের বেদনাবিধুর মাতৃহৃদয় এবং যাতনা মুর্ত হয়েছে তাকে কেন্দ্র করে। *কাহিনী সংক্ষেপেঃ বাঙালীর স্বাধিকার আন্দোলন প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকার কবি সাহিত্যকরা।এই কমিটি গঠনের আগে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।বিভিন্ন মিছিল চলতে থাকে একাডেমির প্রাঙ্গণে। সেখানে অংশগ্রহণ করে দেশের বরেণ্য ব্যাক্তিত্ব, তাদের মধ্যে কিছু হলেন- শামসুর রাহমান, আহমেদ শরীফ, সিকান্দার আবু জাফর,আব্দুল গাফফার চৌধুরী, জহির রায়হান, সুফিয়া কামাল ইত্যাদি ব্যাক্তি। একাত্তরের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র ও অপ্রস্তুত দেশবাসীর ওপর নজিরবিহীন বর্বরোচিত হামলা শুরু করার পর অসহায় বাঙালি সেই হামলার প্রথম ধাক্কা সামলে যেভাবে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলে এবং ক্রমশ তা বাংলার মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামে পরিণত হয় এবং দেশের অধিকাংশ মানুষই এতে কোন-না-কোনভাবে অংশগ্রহণ করে — সেই ইতিহাসের একটি স্বচ্ছ চিত্র,জাহানারা ইমাম এই পুস্তকে তাঁর ব্যক্তিগত দিনলিপির মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন।১৯৭১ সালের দীর্ঘ মাসগুলোতে বাঙালিদের আশা — নিরাশা — যন্ত্রণাকে সজীব করে তুলেছে এই গ্রন্থ এবং যে পরীক্ষার তাঁরা সম্মুখীন হয়েছেন ও যে ত্যাগ তাঁরা স্বীকার করেছেন, সেগুলোর গভীরে দৃষ্টি ফেলতে আমাদের সাহায্য করেছে। ছেলেরা ঘরে বসে গেরিলা পরিকল্পনা করছে আম্মা তাদের জন্য চা-নাশতার ব্যবস্থা করছেন। নিজের ছেলে জীবন হাতে নিয়ে যুদ্ধ করছে তার মা তাকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। মাতৃস্নেহের চেয়ে দেশপ্রেমকে বড় চোখে দেখে, এমন দেশপ্রেমিক দৃঢ়চেতা একজন নারী শহীদ জননী জাহানারা ইমাম।এমনকি তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সাধারন ক্ষমার আওতায় ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ থাকার পরেও এই মা তার ছেলের জন্য ক্ষমা চাননি পাকিস্তানী হানাদার শাসকগোষ্ঠির কাছে, কারন তাতে তার ছেলের অসম্মান হয়। ছেলে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেছে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে গেরিলা পুত্রের মাথা নিচু করেননি জাহানারা ইমাম। জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বইটি খুব সাধারণ এক গল্পের অসাধারণ আখ্যান হয়ে উঠার কাহিনী,এক সাধারণ বাঙালি নারীর ব্যক্তিগত ডায়েরীর, বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় দলিল হয়ে উঠার গল্প, এটি জাহানারা ইমামের একজন সাধারণ মা থেকে শহীদ জননী হয়ে উঠার দিনলিপি। "একাত্তরের দিনগুলি" বইটিতে জাহানারা ইমাম মায়ের মমতা নিয়ে, বাঙালি নারীর শাশ্বত মহিমা নিয়ে, দেশপ্রেমিকের ভালোবাসা নিয়ে একাত্তরের দিনগুলোর গল্প আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। "একাত্তরের দিনগুলি" বইটি ডায়েরীর আদলে লেখা। এখানে পরিচ্ছেদের প্রথমেই বিভিন্ন দিনের তারিখ দেয়া এবং নিচে সেই দিনের ঘটনাপ্রবাহ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ডায়েরীর তারিখ শুরু হয়েছে মার্চের প্রথম দিক থেকেই আর শেষ হয়েছে ডিসেম্বরের একদম শেষে গিয়ে। এর মাঝে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রায় সব বড় ঘটনাই দিন অনুযায়ী অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উঠে এসেছে। ডায়েরীতে যেমন ৭ মার্চের শেখ মুজিবর রহমানের রেসকোর্স ময়দানের ভাষণের কথা বলা হয়েছে, তেমনি ভাষণ পরবর্তী মার্চের দিনগুলোতে কীভাবে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন অশুভ আশঙ্কা ঘনীভূত হয়েছিলো সেই গল্পও একান্তভাবে উঠে এসেছে। তারপর ২৫শে মার্চের কাল রাতের বর্ণনা বেশ বিস্তৃতভাবে এসেছে। জাহানারা ইমাম বিভিন্ন জনের কাছে থেকে ২৫ মার্চ রাতের যে সব ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা শুনেছিলেন সে সবও তিনি "একাত্তরের ডায়েরী" বইটিতে লিপিবদ্ধ করেছেন। তাই সে রাতের নৃশংসতার প্রায় সব দিকই এখানে উঠে এসেছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনের হত্যাকাণ্ড, পুরান ঢাকার হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে সদরঘাট,লঞ্চ, টার্মিনালের হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ছোঁয়াও পাওয়া যাবে এই বইয়ে। তার পরপরই চলে আসে এই ডায়েরীর মূল আলোকপাত যেই ব্যাপারে, সেই রুমীর কথা। রুমী জাহানারা ইমামের বড় ছেলে। অত্যন্ত রাজনীতি সচেতন এবং মেধাবী ছেলে সে। যুদ্ধের শুরু থেকেই পাকিস্তানী অত্যাচারী শাসকদের প্রতি সে তীব্র ঘৃণা অনুভব করতো। তারপর যুদ্ধ যখন শুরু হল তখন পরিচিত ঢাকাকে এই ভয়ানক তাণ্ডবলীলায় বিপর্যস্ত হতে দেখে, চেনা মানুষগুলোকে নরপশুদের হাতে খুন হতে দেখে রুমী আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলো না। অবশেষে তার যুদ্ধে যাবার সুযোগ এসে গেল। সে বন্ধুদের মাধ্যমে একদিন ট্রেনিংয়ে যাবার সুযোগ পেল। কিন্তু রুমী মাকে না জানিয়ে কোন কিছু করার ছেলে না। তাই সে মায়ের কাছে আসলো যুদ্ধে যাবার অনুমতি নিতে। আর জাহানারা ইমাম পড়লেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি। একদিকে দেশের প্রতি দায়, অন্যদিকে মায়ের ভালোবাসা। শেষ পর্যন্ত জাহানারা ইমামের বিবেকবোধ জয়ী হল, দেশপ্রেম জয়ী হল। তারপর রুমীদের মেলাঘরে ট্রেনিং নেয়া, ঢাকার মধ্যে করা দুঃসাহসী অপারেশনের গল্প আর একদিন অসতর্কতার কারণে হানাদারদের হাতে ধরা পড়ে যাওয়া সবই এই বইয়ে বিস্তৃতভাবে উঠে এসেছে। অবশেষে ১৬ই ডিসেম্বরে বিজয় আসে। কিন্তু রুমী আর ফিরে আসে না। তাছাড়া ১৪ই ডিসেম্বর গভীর রাতে জাহানারা ইমামের স্বামীও না ফেরার দেশে চলে যান সবাইকে রেখে। যে কোন মহান আখ্যানের মত এই দুঃখবোধ সাথে নিয়েই ডায়েরীটি শেষ হয়। যে সব পাঠক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ব্যাপারে জানতে আগ্রহী, কিন্তু শুধু শুধু খটমটে ইতিহাস পড়তে যাদের অনীহা তাদের জন্যে জাহানারা ইমামের "একাত্তরের দিনগুলি" একটি অবশ্যপাঠ্য বই। এখানে দিনলিপির ছলে গভীর মমতায় যুদ্ধদিনের কথাগুলো দক্ষ শিল্পীর কলমের আঁচড়ে উঠে এসেছে। *গুরুত্বপূর্ন চরিত্র বিশ্লেষণঃ জাহানারা ইমামঃউনি লেখিকা হলেও মুল চরিত্র বিশ্লেষণে ওনার ভুমিকা অপরিসীম। ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, তিনি দেখছেন। কিন্তু দেখছেন দূর থেকে। যদিও এই গল্প একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত গল্প। জননীর তীব্র শোক ও বেদনার গল্প। নিজের গল্প দূর থেকে দেখতে পারেন তাঁরাই, যাঁরা বড় শিল্পী। গভীর আবেগকে সংযত করবার জন্য প্রযোজন হয় একটি পাষাণ হৃদয়ের। সত্যিকার শিল্পীদের হৃদয় হয় পাথরের, নয়ত এত দুঃখকে তাঁরা কোথায় ধারণ করবেন? জাহানারা ইমাম হৃদয়কে পাথর করে লিখলেন তাঁর ডায়রি। কী অসম্ভব আন্তরিকতার সঙ্গেই না তাঁর গল্প বলে গেছেন। সেই গল্প তাঁর একার থাকেনি। কোন এক অলৌকিক উপায়ে হয়ে গেছে আমাদের সবার গল্প। 'মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়' — এই অমর উক্তির মর্মার্থ সামনে রেখে আমরা স্মরণ করতে পারি এক বাঙালি নারী, গৃহবধূ, লেখিকা এবং লড়াকু জননী জাহানারা ইমামকে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে এক জাহানারা ইমাম মুক্তিযুদ্ধ পক্ষের মানুষের কাছে হয়ে ওঠেন প্রেরণা ও আস্থার ধ্রুবলোক। তাঁর মধ্য দিয়ে সব অপূর্ণতা পূর্ণ, খন্ড অখন্ডের সঙ্গতি পেয়ে থাকে; আর তিনি জীবনবেদ থেকে উৎসারিত জায়মান চেতনা ছড়িয়ে দেন দুঃসময়ে অসহায় মানবাত্মার সম্পূর্ণ মুক্তির উদ্দেশ্যে। শরীফ ইমামঃ জাহানারা ইমামের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা "একাত্তরের দিনগুলি"-তে প্রকাশ পেয়েছে স্বামী শরীফ ইমামের দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধে অবদান, প্রখর ব্যক্তিত্ব, নির্ভীক মানসিকতা, মুক্তিযোদ্ধা পুত্র শহীদ রুমীর জন্য তীব্র ভালোবাসা।জাহানারা ইমাম তাঁর স্মৃতিকথায় স্পষ্ট তুলে ধরেছেন শরীফ ইমামের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা প্রদানের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার বিষয়গুলো। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চলাচল ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে ২ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ তাঁর কাছে বাংলাদেশের ব্রিজ ও কালভার্টের তালিকা চেয়ে পাঠান। সারা দেশের সবগুলো ব্রিজ আর কালভার্টের তালিকা তৈরি করা সহজসাধ্য ছিল না। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তাঁকে এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করতে হয়েছিল। রোডস অ্যান্ড হাইওয়েজের ডিজাইন ডিভিশনে অবাঙালি এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত থাকায় সেখান থেকে ব্রিজের ফাইলগুলো বের করে আনা ছিল অত্যন্ত দুরূহ কাজ। সুকৌশলে ফাইলগুলো সরানোর পর শরীফ ইমাম একপ্রকার আহার-নিদ্রা পরিত্যাগ করে লাগাতার তিন দিন ধরে ৩,৫০০টি ব্রিজ আর কালভার্টের তালিকা তৈরি করেন সহকর্মী এস আর খান বাঁকা এবং সামাদ সাহেবকে নিয়ে। শরীফ ইমাম নিজে বাজার করে গেরিলাযোদ্ধাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন। ২৫ আগস্ট ’৭১-এ ধানমন্ডিতে দুর্ধর্ষ অপারেশন সেরে আসা রুমী এবং তাঁর দলের অস্ত্রশস্ত্র নিজ বাসভবনে রাখার ব্যাপারে শরীফ ইমাম সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া শরীফ ইমাম এবং জাহানারা ইমাম মুক্তিযোদ্ধাদের তাঁদের সাধ্যমতো আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করতে থাকেন। শাফী ইমাম রুমীঃ রুমী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫১ সালের ২৯ মার্চ। ভাষা আন্দোলনের উত্তাল সময়ের সন্ধিক্ষণে যাঁর জন্ম, একাত্তরের নিবিড় প্রশান্তিতে তাঁর চলে যাওয়া। মাঝখানে দৃপ্ত জীবনের এক অনিমেষ অধ্যায়। আদমজী স্কুল এ- কলেজ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন তিনি। তারপর ভর্তি হন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমান বুয়েট)। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থাতেও তিনি বিশেষ অনুমতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির ক্লাশ করেন। ফলে সে-ই সময়ের উত্তাল পরিস্থিতি তাঁকেও স্পর্শ করে এবং বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের জন্য তিনিও তৈরি করতে থাকেন নিজেকে। এর মধ্যে রুমীর স্কলারশীপ হয়ে যায়। কিন্তু সেসময় স্কলারশীপ নিয়ে পড়তে যাওয়ার চিন্তা রুমির মাথায় একদমই ছিল না। আর সে কারণেই ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পড়ার সুযোগ পেয়েও যুদ্ধ শুরু হবার দরুণ সে সুযোগটি তিনি গ্রহণ করেননি।মুক্তিযুদ্ধে যাবার বিষয়ে রুমী শুরু থেকেই পরিবারের সাথে আলোচনা শুরু করেন।একাত্তরের দিনগুলি,বইটির প্রথম দিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক পটভুমি ফুটে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই মায়ের সাথে দুভাইয়ের তর্ক হত যুদ্ধে যাওয়া নিয়ে। রুমীর চােখে ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন,দেশ স্বাধীন করার স্বপ্ন। একটা সময় মা তাকে যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেন। শহীদজননী জাহানারা ইমাম তাঁর ছেলেকে যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেয়ার সময় একটি চমৎকার কিন্তু ভীষন বেদনাদায়ক কথা বলেছিলেন “যা তোকে দেশের জন্য কোরবানী করে দিলাম”। একজন মা তার সন্তানকে তখনই কোরবানী দিতে পারেন যখন সন্তানের চেয়ে দেশ বড় হয়। সে সময় বাংলাদেশের হাজার হাজার মা তার সন্তানকে দেশের জন্য কোরবানী দিয়েছেন।রুমী যুদ্ধে চলে যায়। ২ নম্বর সেক্টরে যোগ দেয়। এর পরে থেকে যুদ্ধের বর্ননা শুরু হয়। সেই বর্ননায় প্রতিমুহূর্তে চোখ ভিজে উঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোন জয়ে মন প্রফুল্ল হয়ে উঠে। যুদ্ধের ফাঁকে রুমি বাসায় আসে। যুদ্ধের বিবরন শোনায়। যে রুমি গ্লাসে একটু ময়লা দেখলে পানি খেত না, সেই রুমি যুদ্ধে গিয়ে পোকা খাওয়া রুটি খেত। এসব ঘটনা শুনতে শুনতে মায়ের চোখ অশ্রুতে ভরে য়ায়। *যে কথোপকথন গুলো খুব মন কেড়েছেঃ ০১.আম্মা, দেশের এ অবস্থায় তুমি যদি আমাকে (রুমী) জোর করে আমেরিকায় পাঠিয়ে দাও, আমি হয়তো যাব শেষ পর্যন্ত। তাহলে কিন্তু আমার বিবেক চিরকালের মতো অপরাধী করে রাখবে আমাকে। আমেরিকা থেকে হয়ত বড় ডিগ্রি নিয়ে এসে বড় ইঞ্জিনিয়ার হবো, কিন্তু বিবেকের ভ্রুকুটির সামনে কোনদিনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব না। তুমি কি তাই চাও আম্মা? আমি (জাহানারা ইমাম) জোরে দুই চোখ বন্ধ করে বললাম ঠিক আছে, তোর কথাই মেনে নিলাম। দিলাম তোকে দেশের জন্য কোরবানি করে। যা, তুই যুদ্ধে যা। ০২."সারা ঢাকার লোক একই সঙ্গে হাসছে আর কাঁদছে । স্বাধীনতার জন্য হাসি। কিন্তু হাসিটা ধরে রাখা যাচ্ছে না। এত বেশী রক্তে দাম দিতে হয়েছে কান্নার স্রোতেও হাসি ডুবে যাচ্ছে,ভেসে যাচ্ছে। " ০৩."৩ মে জাহানারা ইমামের জন্মদিনে এসে রুমি জানাল- ‘তোমার জন্মদিনে একটি সুখবর দিই আম্মা।’ সে একটু থামল, আমি আগ্রহে তাকিয়ে রইলাম, ‘আমার যাওয়া ঠিক হয়ে গেছে। ঠিকমতো যোগাযোগ হয়েছে। তুমি যদি প্রথমদিকে অত বাধা না দিতে, তাহলে এক মাস আগে চলে যেতে পারতাম।’ আমি বললাম, ‘তুই আমার ওপর রাগ করিসনে। আমি দেখতে চেয়েছিলাম, তুই হুজুগে পড়ে যেতে চাচ্ছিস, না, সত্যি সত্যি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে যেতে চাচ্ছিস।’ ‘হুজুগে পড়ে?’ রুমীর ভুরু কুঁচকে গেল, ‘বাঁচা-মরার লড়াই, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার যুদ্ধে যেতে চাওয়া হুজুগ?’ ০৪." পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেয়ে বাংলার নায়ক হওয়া অনেক বেশী গৌরবের " ০৫."যদি কখনো কোন বিষয়ে আমাদের মতের সাথে তোমার মত না মেলে,তাহলে আগে আমাদেরকে বুঝিয়ে তোমার মত ফেরাবে তারপর সেই কাজটা করবে" ০৬."কেন যে বললাম তোকে দেশের জন্য কোরবানি করে দিলাম যা, এই কথা মনে হয় আল্লাহ কবুল করে নিয়েছেন; যদি বলতাম যা বাবা যুদ্ধ করে ওদের থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে তবেই মায়ের কাছে ফিরে আসিস,তাহলে হয়তো ছেলেটা এখন কাছেই থাকতো" *বইটির নামকরনঃ বইটিতে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানী বাহিনী কর্তৃক নির্যাতনের করুন বেদনা সম্পর্কে সরাসরি জানতে পারি। ২৫ মার্চ ভয়াল কাল রাত্রিতে যে হত্যা যজ্ঞ চালানো হয় সেই ঘটনা এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের গর্জে উঠা সর্ম্পকেও বলা হয়েছে। এ শুধু একাত্তরে মানুষের আর্তনাদের চিত্র নয় এতে রয়েছে দীপ্ত যৌবনের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। বিভিন্ন ভয়াবহ দিনের বর্ননা করেছে লেখিকা অবলীলায়, আর বইটি লেখাও হয়েছে দিনলিপি আকারে। একে একে উঠে এসেছে পুরো ৯ মাসের বিভৎস বর্ননা।তাই নামটি যথার্থ মনে হয়েছে। *প্রচ্ছদ বিশ্লেষণঃ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করার ক্ষেত্রে একাত্তরের দিনগুলির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এটা কেবল একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই নয়, এটা একজন মায়ের চোখে, মায়ের আবেগ মিশ্রিত মুক্তিযুদ্ধের অকাট্য দলিল। মুক্তিযুদ্ধের ওপরে লেখা বইগুলোর মধ্যে পাঠকের কাছে চাহিদায় এটি শীর্ষস্থানীয়। সেই অনুযায়ী প্রচ্ছদ টা হয়তো আরো অন্যরকম হতে পারতো।। প্রচ্ছদ টা যে একেবারেই অসুন্দর সেটা বলছিনা।কিন্তু বইয়ের ভেতরের কাহিনীর সাথে প্রচ্ছদ টা অমিল ই বেশী মনে হয়েছে। তবে বইয়ের ভেতরের লেখা দিনলিপির কাছে, বইয়ের মুল কাহিনীর কাছে, এই ভুল টা তেমন কিছু না। *প্রুফ রিডিংঃ পুরো বইয়ে এই বিষয় টা ছিলো নজরকাঁড়ার মতো। বইটি পড়ার সময় আমি কোথাও এতোটুকু বানান ভুল পাইনি, পুরো বইটির এই দ্বায়িত্ব যার হাতে ছিলো সে খুব দ্বায়িত্ব বোধ নিয়ে কাজটি সম্পন্ন করেছে। এতো ভালো একটা বইতে কোনরকম বানানের অসংগতি আমার চোখে পড়েনি। *বইটির সাথে জড়িত গল্পঃ ১.প্রথমদিকে জাহানারা ইমাম কে লিখতে বলা হলে উনি লিখতে চান নি। বলেছেন সে এটা সম্ভব করতে পারবেনা, কিভাবে কোনদিক দিয়ে শুরু করবে, তারপরও অনেকের অনুরোধে অবশেষে তিনি লিখতে বসেন এবং আমাদের উপহার স্বরুপ দিয়ে যায় চমৎকার এই বইটি। বইটি প্রথমে প্রকাশের ভার নিয়েছিল সন্ধানী প্রকাশনী। বই প্রকাশের আগ মুহূর্তে তিনি মহা উত্তেজিত। ঠাট্টা করে মুনতাসীর মামুন বলেছিলো, ‘আমরা লাইন দিয়ে বই কিনব।’ যেদিন বই প্রকাশিত হলো সেদিনই গিয়েছিলো বইটি কিনতে। সঙ্গে আরো কয়েকজন। বইটি কেনার পরে মুনতাসীর মামুন বললেন,বইটি কিনলাম এবং তাঁর সামনে তুলে দিলাম। হেসে তিনি লিখলেন, ‘পরম স্নেহাস্পদ মুনতাসীর মামুনকে, জাহানারা ইমাম, ১৭-০২-৮৬’। ২.জাহানারা ইমামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সরদার ফজলুল করিম, কীভাবে তিনি লিখেছিলেন ‘একাত্তরের দিনগুলি’। উত্তর দিতে গিয়ে তিনি কেঁদেছিলেন। তারপর বলেছিলেন, “এটা আমার একটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। নিজের খাতায় টুকিটাকি লিখে রাখা। দিনাদিনের ঘটনা। কিন্তু একাত্তরের ঢাকায় বসে এসব লেখার বিপদ আমি জানতাম। তবু অভ্যাস ছাড়তে পারিনি। কেবল নিজের বুদ্ধিতে আজেবাজে খাতার পাতায়, একোণা-ওকোণা করে, আঁকাবাঁকা লাইনে, কখনো কালো কালিতে, কখনো রঙিন কালি দিয়ে প্রায় ছবির মতো করে দিনের ঘটনাকে ইঙ্গিতে লিখে রাখার চেষ্টা করেছি। রুমীর নাম উল্লেখ করতে হলে উল্টে লিখেছি ‘মীরু’। মুক্তিযোদ্ধাদের যদি পাঁচশ টাকা পাঠিয়েছি তো লিখেছি, পাঁচখানা কাপড় লন্ড্রিতে দেয়া হয়েছে। বুদ্ধিতে যেমন কুলিয়েছে তেমন করে লিখে রেখেছি। ভেবেছি, যদি হামলা হয়, যদি এ কাগজ হানাদারদের হাতে পড়ে, তবে এরা একে পাগলের আঁকাবুঁকি ছাড়া আর কিছুই ভাববে না।” *পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ লেখিকা যখন উত্তাল মার্চের কথা বলেন তখন উত্তপ্ত বাতাস হালকা ছুঁয়ে যায় আমাকেও। জননী যখন ৭ই মার্চের কথা লেখেন তখন আমিও যেন নিজেকে আবিষ্কার করি রুমী-জামী-শরীফ কিংবা কাজের লোক সুবহান-বারেকের পাশে, অধীর আগ্রহে বসে থাকি ‘শেখের’ বক্তৃতা শুনব বলে। স্পষ্ট দেখতে পাই সেই মানুষগুলোকে যারা চব্বিশ ঘণ্টার পথ পায়ে হেঁটে গামছায় চিড়ে-গুড় বেঁধে সেদিন হাজির হয়েছিল রেসকোর্স ময়দানে। তখন আমার জন্মও হয়নি। অথচ বইটি পড়তে গিয়ে ২৫ শে মার্চের কালো রাত আমার সামনে মূর্ত হয়ে ওঠে। নিজের কাছে প্রশ্ন করি, আসলে কি কালো ছিল রাতটা? নাকি আগুনের লেলিহান শিখা আর রক্তের ফাগুন ধারায় সেজেছিল সে রক্তকরবী! বইয়ের পাতা উল্টাতেই পুড়ে যেতে দেখি ঘরবাড়ি, বস্তি, কাঁচা-বাজার। সেই সাথে মানুষও। মুহুর্তে মুহুর্তে গুলিতে কেঁপে উঠতে দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। আরও এগোলে আঁৎকে উঠি পাকিস্তানী নরপিশাচদের হাতে নির্মমভাবে নিরস্ত্র বাঙালিদের জবাই হতে দেখে। বইয়ের পাতায় পাতায় দেখতে পাই বিহারিদের নৃশংসতা, ধারালো ছুরির দেবে যাওয়া তাজা মানুষের গলায়। বইটা শেষ করার পর আমার অবস্থাও এরকম যে,বেশী খুশী হতে পারছি না, শেষের দিকের বিজয়ের দিনগুলার বর্ণনা পড়েও। এর জন্যে যে মূল্য দিতে হয়েছে তা যে একটু বেশীই চড়া।এমন অনেক অনেক আত্ম উৎসর্গের হাত ধরে এসেছে আমাদের স্বাধীনতা। কত মা যে তাঁর সন্তানকে যুদ্ধে পাঠিয়েছেন, তার সবটুকু লেখা নেই সেভাবে। কিন্তু আমরা জানি, আমাদের আত্মার অংশ সবুজের বুকের লাল অংশটুকু কত কত বুকের রক্তে লাল হয়েছে। কত লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া সে পতাকা, স্বাধীনতা। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তাঁর আশ্চর্য নির্মোহ লেখনী দিয়ে লিখে গেছেন ১৯৭১ এর সেই উত্তাল দিনের ঘটনাচক্র। তাঁর শোক, তাঁর কষ্টের হাহাকারকে শব্দের আড়ালে রেখেই তিনি লিখে গেছেন দিনপুঞ্জীর মত এই অনন্য সাধারণ বইটি, যার নাম "একাত্তরের দিনগুলি"। যে সন্তানকে তিনি দেশ মাতৃকার জন্য উৎসর্গ করেন, তাঁর নাম শহীদ শাফি ইমাম রুমী। কী প্রখর সম্ভাবনাময় এক তরুণ ছিলেন রুমী। যাঁর পড়তে আসবার কথা ছিল ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে। কিন্তু দেশে তখন যুদ্ধের ডামাডোল শুরু হয়ে গেছে। স্বার্থপরের মত রুমী পালিয়ে না গিয়ে যুদ্ধে যাবার জন্য তৈরি হন, বাকিটা তো ইতিহাস। সে ইতিহাসের ধারাবাহিকতার এক নিবিড় প্রামান্য দলিল "একাত্তরের দিনগুলি।" এই বই বার বার পড়া যায়। আবারও পড়বো নিশ্চয়ই। *লেখক পরিচিতিঃ জাহানারা ইমাম জন্ম : ৩ মে ১৯২৯ সুন্দরপুর, মুর্শিদাবাদ। ব্যক্তিত্বময়ী জাহানারা ইমাম দীর্ঘ সময় স্কুলকলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। একজন সংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বিভিন্ন সংগঠনের মধ্য দিয়ে মানুষের মনোজগতে তিনি পৌছে দিয়েছিলেন তার অধীক জ্ঞান সম্ভার। একাত্তরে বাঙালীর স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সঙ্গে তিনি একাত্বতা ঘোষণা করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে চরম মৃত্যু, দুঃস্বপ্নভরা বিভীষিকার মধ্যে জাহানারা ইমামের ত্যাগ ও সতর্ক সক্রিয়তা দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ উদাহরণ হয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধের শহীদের বেদনা বিধুর মাতৃহৃদয় এবং ইমামকে কেন্দ্র করে,শহীদ রুমীর মাতা পরিণত হয় শহীদ জননীতে । নব্বই দশকে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির উত্থানে জনমনে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় তার পটভূমিতে ১৯৯২-এর,১৯ জানুয়ারী ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ গঠিত হলে জাহানারা ইমাম এর আহবায়ক নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবীতে দেশব্যাপী ব্যাপক গণআন্দোলন পরিচালনা করেন। তাঁরই নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী ময়দানে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়,গণআদালত।সাহিত্যকৃতির জাহানারা ইমাম বিভিন্ন সময় নিম্নোক্ত পুরস্কার /পদকে ভূষিত হন- •বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) •কমর মুশতরী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) •বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১) •আজকের কাগজ হতে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা পুরস্কার (বাংলা ১৪০১ সনে) •নারী গ্রন্থ প্রবর্তনা (১৯৯৪) •স্বাধীনতা পদক (১৯৯৭) •রোকেয়া পদক (১৯৯৮) •অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার (২০০১) •রোটারাক্ট ক্লাব অব স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ জন্য ১৯৯০ সালে তিনি বাঙলা একাডেমী পুরস্কার পান। গ্রন্থসমূহ : গজ কচ্ছপ, সাতটি তারার ঝিকিমিকি, নিঃসঙ্গ পাইন, ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস, প্রবাসের দিনগুলি, অন্য জীবন, বুকের ভিতরে আগুন (১৯৯০) নাটকের অবসান (১৯৯০), দুই মেরু (১৯৯০),জাগ্রত ধরিত্রী (১৯৬৮),তেপান্তরের ছোট্ট শহর (১৯৭১),নদীর তীরে ফুলের মেলা (১৯৬৬) ইত্যাদি। --------মৃত্যু : ২৬ জুন ১৯৯৪ *নিজস্ব মতামতঃ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় লেখিকা জাহানারা ইমামের পুরো পরিবার কি পরিমান সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে যোদ্ধাদের সাহায্য করার জন্য সেটা এই বই পড়লে সবার ই বুঝতে পারার কথা। অন্য সব পরিবারের মতো এই পরিবারের পার্থক্য ছিলো এটাই যে, চাইলেই পুরো পরিবার দেশ ত্যাগ করে ভালোভাবে থাকতে পারার সামর্থ্য থাকার পরেও তারা এই দেশের জন্যই ছিলেন। নিজেদের টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য তো করেছেন ই আরো প্রস্তুত ছিলো অগ্রীম সব ব্যবস্থার সাথে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকারের উচিত ছিলো এদের স্মৃতিচারনে কোন কিছু প্রতিষ্ঠা করা যেন দেশের মানুষ আরো বিস্তৃতভাবে জানতে পারে পুরো পরিবার কে, কিন্তু এটা তারা করেন নাই। অবেশেষে রুমির ছোট ভাই জামি নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন স্মৃতি জাদুঘর। তবে এটার পুরোপুরি উদ্যোক্তা সরকার হলে বেশী ভালে হতো যা আমার মনে হয়।। *রকমারি লিংকঃ https://www.rokomari.com/book/155283/akattorer-dinguli
Was this review helpful to you?
or
'তুমি ছেলে হারা মা, জাহানারা ইমাম এর একাত্তরের দিনগুলি।', জেমসের গাওয়া গান 'আমার সোনার বাংলা এর বিখ্যাত এই লাইনটি মুগ্ধ করে দেয় সকলকে। আমার জাহানারা ইমামের কেনা প্রথম বই এটি। এই বইটির এক্কেবারে ছোট্ট একটি অংশ দেওয়া ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য বই তে। সেই থেকেই আমার এই বইটি কেনা। আমি যখন এই কথা গুলো লিখছি, আমি ইতোমধ্যেই বইটির ২০পৃষ্ঠার মতো পড়েছি। যতটুকুই পড়েছি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বইটি আপনারা কিনতে পারেন। রেকমেন্ডেড টু বাই।
Was this review helpful to you?
or
Those who are interested to know about Dhaka's history of 1971 , they should read this book . Here something about our liberation war and sacrifice of a mother .
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের দিনলিপি এই বই। যুদ্ধ শুরুর আগ থেকে জাহানারা ইমাম এই ডায়েরি লিখতে শুরু করেন, যা পরবর্তীতে বই আকারে প্রকাশিত হয়। এই বইটিতে একাত্তর, মুক্তিযুদ্ধ, সেই সময়ে ঢাকার অবস্থা এবং জাহানারা ইমামের নিজের পরিবারের কথা উঠে এসেছে। এই ডায়েরি থেকে আমরা জানতে পারি তাঁর ছেলে রুমির কথা, যে যুদ্ধে শহীদ হয়েছিল। আর রুমির মুখ থেকে জানতে পারি রণাঙ্গনের কথা। সেই সঙ্গে জানতে পারি মেজর খালেদ মোশাররফ, মেলাঘর ক্যাম্প, মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাস্তবতার কথা। জাহানারা ইমামের এ বইটি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ঢাকা শহরের অবস্থা এবং এখানকার মানুষের জীবন বাস্তবতার দলিল। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, তথ্য, উপাত্ত। সব ছাপিয়ে একটি পরিবারের কথা, যা ১৯৭১ সালে এই দেশের প্রায় প্রতিটি পরিবারের প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধ এবং সেই সময়ের কথা জানতে অবশ্যপাঠ্য একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা শ্রেষ্ঠ বই। বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হচ্ছে রুমির অপারেশন ও গেরিলা আক্রমণের বর্ণনা। তবে রুমি ধরা পড়ত না যদি সে অপারেশনের এক সপ্তাহের মধ্যে বাড়ি থেকে অন্য কোথাও চলে যেত। এত বড় অপারেশনের পর ওই এলাকাতে থাকাই ঠিক হয়নি।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের এক একটি পাতা হতে আমাদের দেশ ও জাতির সংগ্রাময় দিনগুলোতে নিয়ে সাহায্য করে। কত ত্যাগ তিতিক্ষার এবং কত মা বোনের ইয্যতের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এই সাধিনতা। বইটি আমি আগেও পরেছি। এখন পরি। বইটি সবসময় আমার কাছে রাখব। তরুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে বইটির গুরুত্বপূর্ণতা আছে
Was this review helpful to you?
or
বইটি আমার প্রিয় ছিল খুব আগে থেকেই, টিচার্সরা প্রায়শই বলতেন তখন শুনে শুনেই এক অন্য রকম ভালো লাগা তৈরী হয়ে ছিল বইটিকে ঘিরে। পড়তে গিয়ে যেন মায়ায় পরে গেলাম। জামি, রুমি, চুল্লু- নাম গুলো যেন কত দিনের পরিচিত! কখনও মা- ছেলের অভিমান- ভালোবাসা, কখনও আবার গেরিলাযুদ্ধের টানটান উত্তেজনা! কখনওবা রক্ত হিম করা পাক বাহিনীর আগমন! সাত রাজার মানিককে মায়ের কাছ থেকে ছিন্ন করে তুলে নিয়ে যাওয়া! সব মিলিয়ে যেন আবার মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নতুন করে মনের চোখে দেখলাম।
Was this review helpful to you?
or
অল টাইম ক্লাসিক বই বোঝেন? যে বই পড়তে কখনো ক্লান্তি আসবে না, যে পুস্তক পড়ে নিজের শেকড়কে চিনতে শিখবেন, তেমনই বই হলো ' একাত্তরের দিনগুলি'। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের দিনলিপি শুধু নিত্যদিনের রোজনামচা মাত্র নয়৷ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক অক্ষত, অবিনশ্বর দলিলও বটে। এক মায়ের আকুতি তার সন্তানের জন্য, একদল যোদ্ধার সংগ্রামের কাহিনি, একটি অবরুদ্ধ জনপদকে শত্রমুক্ত করার মহাকাব্যিক আখ্যানের নামই ' একাত্তরের দিনগুলি '৷
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের রিভিউ অন্য কোনোদিন লিখবো। আজ শুধু দুটো কথা বলি। ১। বাংলা সাহিত্যের অবশ্যপাঠ্য বইয়ের লিস্টে এই বইটা না থাকাটা রীতিমতো ক্রাইম। আমি খুব উদার মনের মানুষ। পাঠকের নিজস্ব রুচির ভিন্নত্বে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। কিন্তু এই বই যারা পছন্দ করেনি তাদের আমি জাজ করি। ২। মিউজিয়ামের মধ্যে স্মৃতি ধরে রাখার ব্যাপারটা অসাধারণ! কোনো একটা স্পেশাল ইভেন্ট কিংবা মানুষকে খুব সহজে মনে রাখা যায় সেইসব স্মৃতির মধ্য দিয়ে। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম- "চলে গেলে আমারও অধিক কিছু থেকে যাবে আমার না-থাকা জুড়ে"। এলিফ্যান্ট রোডে ইষ্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বিপরীতে ছোট্ট একটা গলি আছে। সেই গলিকে চিনতে হয় গ্রামীণ সুইটমিটের গলি পরিচয়ে। অথচ গলির শেষ মাথায় একটা জাদুঘর আছে। গলিটা জাদুঘরের নামেও পরিচিতি পেতে পারতো। জাদুঘর ব্যাপারটা শুনলে আমার কল্পনায় চলে আসে অনেকটা জায়গা জুড়ে দাড়িয়ে থাকা প্রাচীর ঘেরা সাদা দালান। বাইরে বিশাল বড় একটা গেইট থাকবে। বড় বড় হরফে গেইটের উপরে প্লেকার্ডে জাদুঘরের নাম লেখা থাকবে। কল্পনার সাথে কখনওই বাস্তবের মিল থাকেনা। তাই শহীদ জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘরের বাইরের পরিবেশ দেখে কিছুটা মন খারাপ হয়েছিল। জননীর স্মৃতি সংরক্ষিত জাদুঘর একটা গুপচি গুলির ভেতর এমন অনাড়ম্বরভাবে পড়ে থাকবে এমনতো কথা ছিলনা! জাহানারা ইমামের পুরোনো দোতলা বাড়ি "কণিকা" আর নেই। বাড়ির সামনে লন নেই। বাগানজুড়ে ফুল নেই। খুব সাদামাটা একটা ফ্লাটবাড়ি আছে। ফ্লাটবাড়ির ফার্স্ট ফ্লোরকে করা হয়েছে ঘরোয়া ধাঁচের একটা জাদুঘর। সেখানে খুব শান্তি শান্তি ভাব আছে। মুক্তিযুদ্ধের সাহসী সন্তান রুমী, তার ভাই জামী, দেশপ্রেমিক পিতা শরিফুল আলম ইমাম, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের অসংখ্য স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের ডকুমেন্ট আর বই দিয়ে সাজানো খুব সাদাসিধে অথচ কি অসাধারণ একটা জাদুঘর! ব্যাকগ্রাউন্ডে সবসময় জাগরণের গান বাজতে থাকে। জাদুঘরে রুমীর সিগনেচার পোজে দাঁড়ানো সেই বিখ্যাত ছবিটা আছে, নিচে ক্যাপশন- "আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে"। জন্মদিনে গিফট পাওয়া তার প্রিয় এয়ারগানটি দেয়ালে ঝোলানো। তার ছোটবেলায় লেখা শপথবাক্য বাঁধানো আছে যেটা পাঠ করে বোঝা যায় কি অসাধারণ একজন সন্তান ছিল রুমী! রুমীর চাইতে অসাধারণ কোনো সন্তান আর কোনো মায়ের গর্ভে জন্মাতে পারেনা! জাহানারা ইমামের বিয়ে হয়েছিল খুব সাদাসিধে ভাবে। কোনো সোনার অলংকার ছাড়াই শুধু রজনীগন্ধার মালা পড়ে যৌতুক বিহীন একটা বিয়ে হয়েছিল। সম্ভবত সে যুগের প্রথম যৌতুকবিহীন বিয়ে ছিল তাদের বিয়েটা। তাদের বিয়ের সেই সুখী সুখী ছবিটা দেখলে মন ভরে যায়। ছোট্ট একটা লাল টেলিভিশন আর একটা লাল ক্যাসেট প্লেয়ার ছিল আম্মার। একটা সাইকেল রানার ছিল যেটা দেখে বোঝা যায় যুগের চাইতেও কত আধুনিকমনা ছিলেন তিনি! সেগুলো খুব যত্নে জাদুঘরে সংরক্ষীত আছে। এবার একটা মন খারাপের কথা বলি। জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৭ সালের ২৪ জুন। সাইফ ইমাম জামীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে। অথচ প্রতিষ্ঠার এতগুলো বছর পরেও জাদুঘরকে নিয়ে কোনো প্রচারণা নেই। কিন্তু এটা তো হতে পারেনা! কেন "শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর" কে সবাই এক নামে চিনবে না?? দেশের জাতীয় সম্পদ ছোট একটা গলির মধ্যে অনাদরে পড়ে থাকবে অথচ কেউ সেটার খোঁজ পাবেনা এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না! যারা জননীকে ভালবাসে, রুমীকে ভালবাসে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, দেশকে নিয়ে কোনোদিন একটু হলেও ভেবেছে তাদের সবার শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে আসা উচিত। N.B. জাদুঘর খোলা থাকে প্রতি শনিবার দশটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত। ১টা থেকে ২টা এই সময়টা বিরতি।
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সঙ্গে জাহানারা ইমাম একাত্মতা ঘােষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মৃত্যু, দুঃস্বপ্নভরা বিভীষিকার মধ্যে তার ত্যাগ ও সতর্ক সক্রিয়তা দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ উদাহরণ হয়ে আছে। শহীদ রুমীর মা পরিণত হন শহীদ জননীতে। মুক্তিযুদ্ধে সন্তান বিয়ােগের বেদনাবিধুর মাতৃহৃদয় এবং যাতনা মূর্ত হয়েছে তাকে কেন্দ্র করে। গত শতকের নব্বই দশকে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির উত্থানে জনমনে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় তার পটভূমিতে ১৯ জানুয়ারি ১৯৯২ সালে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হলে তিনি আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী ব্যাপক গণআন্দোলন পরিচালনা করেন। তারই নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয় গণআদালত। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম সংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বিভিন্ন সংগঠনের মধ্য দিয়ে মানুষের মনােজগতে পৌঁছে দিয়েছেন তার অধীত জ্ঞান সম্ভার।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর_২০১৮ উপন্যাসঃ একাত্তরের দিনগুলি লেখকঃ জাহানারা ইমাম ধরনঃমুক্তিযুদ্ধের ডায়েরি, চিঠি, স্মৃতিচারন প্রকাশনঃ চারুলিপি মুল্যঃ ৩৫০ টাকা একাত্তরের দিনগুলি বইটি একটি দিনলিপি বলা যায়, যে দিনলিপির সাহায্যে লেখিকা জাহানারা ইমাম খুব সুন্দর একটা মনছোয়া মুক্তিযুদ্ধের গল্প তুলে এনেছেন। এই দিনলিপির প্রতিটা অক্ষরে রয়েছে যন্ত্রনা, রয়েছে বারুদে শেষ হওয়া রক্তের গন্ধ। আরো রয়েছে গুলির তোরজোড় শব্দ তার সাথেও মিশে আছে বিশ্বাসঘাতকদের বিশ্বাসঘাতকতার গল্প। রুমি আর জামি এই দুইটি নামের সাথে পরিচয় টা অনেক আগেই হইছে কোন একটা ক্লাসের বাংলা বইয়ে।। অনেকদিন ধরে ইচ্ছা ছিলো বইটি পড়ার।। অবশেষে পড়ে ফেললাম। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি যে নৃশংস অত্যাচার চালায় সেগুলোর লোমহর্ষক বর্ননা বইটিতে আছে।যুদ্ধরত দিনগুলিতে,বাঙালির প্রতিটা রাত কতোটা আতঙ্কে কেটেছিল, তার খুব সূক্ষ ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।। আগুনের শিখা,রক্তে রাঙানো রাজপথ,যুদ্ধ শুরুর সময় পুরে শহর জুড়ে কয়েক ঘন্টা পর পর কারফিউ জারি,কাঁচাবাজারে মানুষের কোনরকম ঘরের খাবার জোগাড় করে জীবন নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরা,বিহারীদের মানুষ জবাই করার দৃশ্য সবকিছু যেন চোখের সামনে ভাসছিলো।। :( :( বইয়ের একটা লাইন মন ছুয়েছিল।। "কেন যে বললাম তোকে দেশের জন্য কোরবানি করে দিলাম যা, এই কথা মনে হয় আল্লাহ কবুল করে নিয়েছেন; যদি বলতাম যা বাবা যুদ্ধ করে ওদের থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে তবেই মায়ের কাছে ফিরে আসিস,তাহলে হয়তো ছেলেটা এখন কাছেই থাকতো" কিছু কুসংস্কার মনে হয়েছিলো,যেমন ছেলে বেঁচে থাকবে কিনা, কোন বিপদ আছে কিনা সামনে,এগুলো যখন পীড়ের কাছ থেকে বারবার শুনছিলো। পরে মনে হয়েছে,হয়তো মায়ের মন একটু সাহস যোগানোর জন্য ভরসা খুজেছিল। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ অসম্ভব ভালো লেগেছে,শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।। কোথাও এক মুহুর্তের জন্য একাগ্রতা আসেনি...কেউ যদি আমাকে যেকোন ৫ টা মাস্ট রিড বইয়ের নাম জিজ্ঞেস করে, আমি তার মধ্যে এই বইটা রাখবো।হাতে সময় নিয়ে বইটি পড়ে ফেলুন।।
Was this review helpful to you?
or
পড়ছিলাম জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি। পুরোটা বই জুড়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার মা, এক সংগ্রামী দেশপ্রেমিকের স্ত্রী, এক দৃঢ়চেতা বাঙ্গালী নারী হিসেবে উপস্হিত তিনি। বুকচেরা আর্তনাদ নয়, শোকবিহ্বল ফরিয়াদ নয়, তিনি গোলাপকুঁড়ির মত মেলে ধরেছেন তার দুঃখ আর অনুভূতিগুলো। তাঁর ব্যক্তিগত শোকস্মৃতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় আমাদের সকলের দুঃখবোধের অভিঙ্গতার সাথে। তার মাধ্যমেই পরিচিত হই রুমির সাথে। রুমি যেন কোন অলক্ষ্যে আমার ভাই হয়ে যায়। রুমি জাহানারা ইমামের ছেলে। ঘটনা পড়তে পড়তে তাঁকে স্হান দেই আমার ভাইয়ের জায়গায়। শাফী ইমাম রুমি । একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাহসী এক গেরিলা যোদ্ধার নাম। ২৯ মার্চ - তার জন্মদিন। আদমজী স্কুল এণ্ড কলেজ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন তিনি। তারপর ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ভর্তি হন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমান বুয়েট)। তিনি ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে সুযোগ পেলেও যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবার পর আদর্শগত কারণে দেশকে যুদ্ধের মধ্যে রেখে বিদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে নিজের ক্যারিয়ারের জন্য পড়তে যাননি।