User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের নিয়ন্ত্রণে নয় বছর যাবত দেশ গণতন্ত্রের লাশের উপর দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নয় বছর যাবত আর্মির শাসনে থাকার কারণে মানুষের ধৈর্য্যের বাধ ভেঙে গেছে। বিপদগামী, ক্ষমতালোভী, উচ্চাভিলাসী কোনো আর্মি প্রধান রাষ্ট্রনায়ক সেজে বছরের পর বছর দেশ পরিচালনা করবে, এটা জনগণ আর মেনে নিবে না। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই ভূ-খন্ডের পবিত্র মসনদ স্বৈরশাসক নামক কীট অপবিত্র করবে বাংলাদেশের মানুষ সেটা আর সহ্য করবে না। সকলের মুখে একটাই কথা, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তিপাক। এরশাদ বিরোধী আন্দোলন যখন সারাদেশে সুনামীর মতো ছড়িয়ে যায়, তখন এরশাদ কিছুটা চালাকির আশ্রয় নিয়ে লাগাতার ১৪৪ ধারা জারি করে কারফিউ দিয়ে দেয়। সাধারণ মানুষ সারাদিন বাসায় থেকে যেন বিরক্ত না হয় সেজন্য দিনের বেলাতেও বাংলাদেশ টেলিভিশন সম্প্রচার চালু রাখে। নাটক, পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি, ছায়াছবির গান এমনকি সদ্য সমাপ্ত হওয়া ৯০’ এর বিশ্বকাপ ফুটবলের ধারণকৃত খেলা দেখানো শুরু করে। প্রথম প্রথম কয়েকদিন সাধারণ মানুষের বাসায় বসে এসকল অনুষ্ঠান দিন দু-ঘন্টার জন্য কারফিউ শিতিল থাকতো জুমআর নামাযের জন্য। মাঝে সকাল-বিকাল ১/২ ঘন্টার জন্য কারফিউ শিতিল করা হতো বাজার করার জন্য। এ যেন সিনেমার হলে মুভি দেখতে গিয়ে ৩০ মিনিটের পানি বিরতি আর কি। এরশাদ তার নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য আবাল-বৃদ্ধা-বণিতা সকলকেই সীমাহীন কষ্ট দিচ্ছে। এই কুলাঙ্গার শাসক মনে হয় জানে না, বাঙালীকে কখনও দাবাইয়া রাখা যায় না। ব্রিটিশরা পৌনে দু’শো বছর বাংলাকে শাসন করেও বাঙালীদেরকে দাবাইয়া রাখতে পারেনি। ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্ত নিয়েও পাকিস্তানিরা বাঙালীদের থামাতে পারেনি। বাংলার দামাল ছেলেদের নিকট যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মাথায় পরাজয়ের মুকুট পড়ে লেজ গুটিয়ে পাকিস্তানিরা পালিয়ে গিয়েছে। এভাবে একদিন বাংলাদেশের মসনদের কীট এরশাদও বাঙালীর যাতাকলে দেশ ছেড়ে পালাবে।
Was this review helpful to you?
or
বাংলার আকাশ সমুদ্রসীমা আজ সম্পূর্ণভাবে শত্রুমুক্ত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও যেন বাংলাদেশের মানুষ পরিপূর্ণভাবে বিজয়ের স্বাদ নিতে পারছে না। কি যেন নেই, যার দরুণ কেউই ঢেকুর তুলে বিজয়ের স্বাদ খুশি মনে নিতে পারছে না। কর্তা যদি বাড়ির বাহিরে থাকে, পোলাও মাংস যতই খাওয়া হোক না কেন, সেগুলো খেতে ভাল লাগবে না। দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু দেশের অভিভাবক পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। অভিভাবক ব্যতীত বাঙালি জাতি বিজয় উৎযাপন করে কিভাবে! সকলের প্রাণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা বলা হচ্ছে। অবশেষে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সব ধরণের জল্পনা-কল্পনা-চালাকির অবসান হয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্ত হয়েছেন। আজ ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরছেন। লক্ষ লক্ষ বাঙালী সকলেই দলে দলে তেজগাঁও বিমান বন্দরের দিকে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানাতে। বড় রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বঙ্গবন্ধুর হাস্ব্যেজ্জ্বল ছবি শোভা পাচ্ছে। দিল্লী থেকে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বৃটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীর কমেট বিমানটি ঢাকার আকাশ সীমানায় দেখা দিতেই জনসমুদ্র উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। মাল্যভূষিত করার সাথে সাথেই বঙ্গবন্ধুর সংযমের সকল বাঁধ ভেঙ্গে যায়। তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বিমানের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু জনতার মহাসমুদ্রের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন। তার চোখ তখন স্বজন হারানোর বেদনা-ভারাক্রান্ত অশ্রুর নদী, আর জৌতির্ময় দ্র্যুতি ছড়ানো মুখাবয়ব জুড়ে বিজয়ী বীরের পরিতৃপ্তির হাসি।