User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ok
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশের কবিতায় রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ হাংরি জেনারেশনের মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ছিলো হুমকি ছিলো জ্বলন্ত ত্রাস। রুদ্র ছাড়া সত্তর দশকের অন্য কোনো কণ্ঠস্বর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছিলো কি এতটা উচ্চকিত- আগ্রাসী? মনে হয় না। কিন্তু কেনো! কারণ রুদ্র, শামসুর রাহমানের মতো তার সময়কে তুলে ধরেছিলেন। শুধু এইটুকুতেই থেমে থাকেনি রুদ্রের পদচারণা, তিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন দ্রোহ রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আমরা পাঠ করেছি রুদ্রের স্মরণযোগ্য পঙ্ক্তিসমূহ যেখানে তিনি স্পষ্ট করেছেন একাত্তরের দেশদ্রোহী রাজাকারের ঘৃণ্য চারিত্র। সেইসব বিশ্বাসঘাতক সম্প্রদায় আজো দাপিয়ে বেড়ায় বাঙলার বুকে : আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই, আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি, ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে- এ-দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়? রুদ্র বিখ্যাত হয়েছিলেন ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ লিখে তবে তার মহৎ রচনা হলো ‘মানুষের মানচিত্র’র কবিতাগুলি। এই কাব্যে রুদ্র বাংলা কবিতায় নতুন ভাষা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিলেন যা রুদ্রকে ‘বিশিষ্ট’ করে রেখেছে। রুদ্র’র কবিতার শৈলী আবুল হাসানের কথা মনে করিয়ে দেয়। হাসানের মতো রুদ্র তার কবিতাকে অমীমাংসিত রেখে চলে গেছেন। তবে রুদ্র আর হাসানের নাম অনিবার্য ভাবেই উচ্চরিত হবে শামসুর রাহমান শহীদ কাদরী আল মাহমুদ নির্মলেন্দু গুণ রফিক আজাদ হুমায়ুন আজাদ হেলাল হাফিজের সঙ্গে। রুদ্র’র কণ্ঠস্বরে উচ্চারিত হয় বস্তুত দ্রোহ ও প্রেম। তিনি দ্রোহকে শিল্পে রূপায়িত করতে পেরেছিলেন : বাইরে লুট হচ্ছে রোদ্দুর- এখন সময় নয় ভালোবাসা বৃক্ষের স্বভাব, পাখি কিংবা হরিনের নমনীয় জীবনযাপন ছুঁয়ে থাকা এখন সময় নয়। এবং ‘প্রেম’ তার কাছে উত্তরাধিকার যা রক্তে প্রবহমান প্রাগৈতিহাসিককাল ধরে : ভাঙনের ক্ষত বুকে রেখে দেবো আমি, আমার উত্তরাধিকারী যেন দ্বীপখানি পায় ফিরে। ব্যথার শ্মশানে প’ড়ে থাক প্রিয় মন চিতার আগুনে পুড়–ক আমার নষ্ট বুকের হেম, পুড়–ক ব্যর্থ তিমিরে আমার হৃদয়ের নীল ব্যথা- ‘যৌনতা’ নিয়েও রুদ্র বেশ কিছু কবিতা লিখেছিলেন তবে সে-সকল কবিতা রুদ্রের উল্লেখযোগ্য কীর্তি নয়। এই সংকলনে আমি রুদ্রের অপেক্ষাকৃত কম আলোচিত কবিতাও সন্নিবেশিত করেছি যাতে করে পাঠক সহজেই রুদ্রের কবিতার ক্রমবিবর্তন উপলব্ধি করতে পারেন। রুদ্র ক্রমশ ছুঁয়ে দিচ্ছিলেন কবিতার সেই উচ্চতা যা কেবল একজন প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ কবির পক্ষেই সম্ভব। রুদ্র কবিতায় যাপিত জীবন উপস্থাপন করেছিলেন─ জীবন যে-রকমের─ ঠিক সেইভাবে। রুদ্র মূলত প্রকাশ করেছিলেন সেই জীবন যা বেঁচে থাকে তার নিজস্ব গানের মধ্যে দিয়ে─এমনকি শ্মশানেও─ যে-শ্মশান মৃত্যু ও পুনর্জন্মের। রুদ্র হলো সেই কবি যার উচ্চারণ এখনো প্রাসঙ্গিক : সুবিনয়, এদেশের কোনো মধুদের ঘরে ভাত নেই এদেশের সব রহিমের ভাই মিথ্যের জেলঘরে জীবন কাটায়।