User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মে আবার দেশভাগ। না, নতুন করে কোন দেশ ভাগ হয়নি, তবে যে বইটা নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি তার বিষয়বস্তু দেশভাগ নিয়ে। দেশভাগের সময়ের মানুষের অবস্থা, মনোভাব, ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে এই বই। কিন্তু সেসব খুব বড় পরিসরে নয় বরং একটি চরিত্রের দেখা এবং তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে সাজানো। শ্রীমন্ত নামে ছেলেটির বয়স তখন কেবল ১৮ বছর। দেশভাগের ডামাডোলে সে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসে একটা ‘মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট’-এর আশায়। সে কাগজতা যোগাড় করতে পারলে ভারতে গিয়ে সহজে বসবাসের, কাজের জায়গা পাওয়া যাবে। গ্রামের ছেলে শ্রীমন্তের ঢাকায় আসা, চোখের সামনে নতুন এক দিগন্ত খুলে যাওয়া, পৃথিবী অনেক বড় হয়ে ধরা দেয় তার কাছে। পুরনো ঢাকার আরমানিটোলায় এক আত্মিয়ের বাসায় ওঠার কথা শ্রীমন্তের। সেখানে গিয়ে দেখলো তারা মাসখানেকের জন্য অন্যত্র চলে গেছে। তখন থেকে শুরু হয় অজানা অচেনা ঢাকা শহরে তার একার সংগ্রাম। সে সময়ের ঢাকা আজকের ঢাকার মতো স্বার্থপর, খরুচে শহর না হলেও একটা গ্রামের ছেলের টিকে থাকা সহজ ছিল না। তবু মানসিক শক্তিতে টিকে থাকে শ্রীমন্ত কিন্তু তার মন ভেঙে যায় যখন দেখে মাইগ্রেশন অফিসে বহু মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু আনুলুল্য পাচ্ছে ঢাকার কালু মাস্তানের কাছে যারা টাকা দিয়েছে কেবল তারাই। ঢাকায় শ্রীমন্তের অবস্থান, পথে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি তার স্মৃতির মাঝে ঢুকে পরে আমরা দেখতে পাই তার জীবনের পুরনো দিনগুলো। তার বাবা পণ্ডিত ব্রাহ্মণ যার খ্যাতি আশেপাশের অনেক গ্রামে। কিন্তু সে পরিবারটির অবস্থা কেমন করে পড়ে যায়। পাশাপাশি গ্রামের অন্যান্য মানুষের গল্প। শ্রীমন্তের হিন্দু/মুসলমান মানুষের সহ ও বিপরীত অবস্থানের কথা। মূলত কমলেন্দু ভট্টাচার্য তার নিজের জীবনের গল্পই তুলে এনেছেন ‘যখন কুয়াশা’ উপন্যাসে। শ্রীমন্ত আর কেউ না, বরং শরিয়তপুরের ধানুকা গ্রামের ছেলে কমলেন্দু, যাকে এক সময় এই ভূখণ্ড ছেড়ে ভারতে চলে যেতে হয়েছিল। তিনি দেখেছেন সে সময়ের গ্রামীণ সমাজের মানুষের মধ্যে পরিবর্তন। দেখেছিলেন হঠাৎ ক্ষমতা পাওয়া মানুষের দাপট। ভেঙে পড়া সমাজ ব্যবস্থায় মানুষের অবক্ষয়। সে গল্পই তিনি লিখেছেন। ধোঁয়া ধোঁয়া সময়ের উপখ্যানের নাম দিয়েছেন ‘যখন কুয়াশা’। সে সময়টা বুঝি কুয়াশা ঢাকা সকালের মতোই ছিল যেখানে কোন দিশা পাওয়া যায় না। কমলেন্দু ভট্টাচার্যের লেখনী ভালো। গল্প বলেন খুব স্বাভাবিক গতিতে। শ্রীমন্তের চলমান গল্পের চেয়ে তার স্মৃতি থেকে বা পরবর্তীতে গ্রামে গিয়ে দেখা ঘটনাগুলো গভীর মনোযোগ দাবি করে। দেশভাগ নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ দারুণ, কিন্তু সে পর্যবেক্ষণ যা তিনি এই বইয়ে রেখেছেন তা গ্রামীণ সমাজের। কেন জানি না কমলেন্দু বাবুর গল্পগুলো মিলে যায় মিহির সেনগুপ্তর ‘বিষাদবৃক্ষ’-র সাথে। একথা সত্য, দুটো বইয়েই গ্রামীণ সমাজের কথা এসেছে কিন্তু কোথাও কোথাও মনে হয় কমলেন্দু বাবু একদম বিষাদবৃক্ষ থেকেই কথা বলছেন। বইটির বাংলাদেশ সংস্করণ করেছে ‘দ্যু প্রকাশন’। পেপারব্যাক সাইজের ২৭২ পাতার বইটির দাম ৩৫০ টাকা কোন যুক্তিতে হয় সেটা বোধগম্য না।
Was this review helpful to you?
or
জীবনের ওপর নেমে আসা কুয়াশার অন্ধকার মানব যাত্রার গতিকে সাময়িক রোধ করলেও সময়ান্তরে তার অবসান ঘটবেই। অন্ধকারের শেষে আলো আসবে। রুদ্ধ পথ মুক্ত হবে। মানবিক জীবনের নতুন উত্তরণের কথাই মানব সমাজের চিরন্তন ইতিহাস। ‘...কেয়ই ভালো নাই। আইজ আর কাইল হগলেই চইলা যাইবো। আমি দুর্বল মানুষ, আমারে সাহায্য করণের কেউই আছিল না। তাই জুলুমটা পরথম আমার উপুর আইছে। আমার জমিজমার উপুর লোভ থিকাই এই জুলুম। একদিন যখন এই জুলমের রাজ কায়েম হইয়া যাইব, তখন সগলের উপুর তা হইব। তারপর যখন আর হিন্দুরা থাকব না, এই জুলুম হইব দুব্বল মোছলমান যারা, তাগো উপুর।...’ লেখক কমলেন্দু ভট্টাচার্য বর্তমান বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার ধানুকা গ্রামে জন্ম। পিতা স্বনামখ্যাত প-িত রোহিনীকান্ত সাঙ্খ্যতীর্থ-লেখক হর্ষবর্ধনের সভাপতি ময়ূর ভট্টের উত্তরপুরুষ। সংস্কৃত সাহিত্যের প্রথিতযশা কবি বৈজয়ন্তী, লেখকেরই উর্ধ্বতন পুরুষের কন্যা। দেশভাগ ও তৎপরবর্তী উত্তাল সময়ে ওপারে চলে যাওয়া। পরবর্তী সময়ে এক ছিন্নমূল উদ্বাস্তুর অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। প্রাণান্তকর জীবনসংগ্রামের মধ্যেও হারিয়ে যায়নি শৈশব-কৈশোর থেকে গড়ে ওঠা লেখকের সাহিত্যানুরাগ। প্রচারবিমুখ লেখকের লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন দৈনিক ও মাসিক পত্রিকায় ‘বসুমতী’, ‘কিশোরভারতী’ ও অন্যান্য পত্রিকায়। বর্তমান উপন্যাসও লেখকের কৈশোর-যৌবন থেকে লালন করে রাখা অভিজ্ঞতারই ফসল।
Was this review helpful to you?
or
জীবনের ওপর নেমে আসা কুয়াশার অন্ধকার মানব যাত্রার গতিকে সাময়িক রোধ করলেও সময়ান্তরে তার অবসান ঘটবেই। অন্ধকারের শেষে আলো আসবে। রুদ্ধ পথ মুক্ত হবে। মানবিক জীবনের নতুন উত্তরণের কথাই মানব সমাজের চিরন্তন ইতিহাস। ‘...কেয়ই ভালো নাই। আইজ আর কাইল হগলেই চইলা যাইবো। আমি দুর্বল মানুষ, আমারে সাহায্য করণের কেউই আছিল না। তাই জুলুমটা পরথম আমার উপুর আইছে। আমার জমিজমার উপুর লোভ থিকাই এই জুলুম। একদিন যখন এই জুলমের রাজ কায়েম হইয়া যাইব, তখন সগলের উপুর তা হইব। তারপর যখন আর হিন্দুরা থাকব না, এই জুলুম হইব দুব্বল মোছলমান যারা, তাগো উপুর।...’ লেখক কমলেন্দু ভট্টাচার্য বর্তমান বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার ধানুকা গ্রামে জন্ম। পিতা স্বনামখ্যাত প-িত রোহিনীকান্ত সাঙ্খ্যতীর্থ-লেখক হর্ষবর্ধনের সভাপতি ময়ূর ভট্টের উত্তরপুরুষ। সংস্কৃত সাহিত্যের প্রথিতযশা কবি বৈজয়ন্তী, লেখকেরই উর্ধ্বতন পুরুষের কন্যা। দেশভাগ ও তৎপরবর্তী উত্তাল সময়ে ওপারে চলে যাওয়া। পরবর্তী সময়ে এক ছিন্নমূল উদ্বাস্তুর অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। প্রাণান্তকর জীবনসংগ্রামের মধ্যেও হারিয়ে যায়নি শৈশব-কৈশোর থেকে গড়ে ওঠা লেখকের সাহিত্যানুরাগ। প্রচারবিমুখ লেখকের লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন দৈনিক ও মাসিক পত্রিকায় ‘বসুমতী’, ‘কিশোরভারতী’ ও অন্যান্য পত্রিকায়। বর্তমান উপন্যাসও লেখকের কৈশোর-যৌবন থেকে লালন করে রাখা অভিজ্ঞতারই ফসল।
Was this review helpful to you?
or
বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। সাতপুরুষের ভিটে-মাটি। আজও জীবনের প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে রক্তের মধ্যে বুকের গভীরে অনুভব করি স্মুতির উত্তাল ঢেউগুলো। সেই হারানো স্মৃতির গভীর থেকে তুলে এনেছি কিছু বেদনার কথা। সেই স্মৃতিরই প্রতিফলন ‘যখন কুয়াশা‘-য়। উপন্যাসের বিষয়- কাহিনি মূলত উদ্বাস্ত জীবনের কথা নয়। বর্ণিত হয়েছে বহুপুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে গিয়ে উদ্বাস্ত হওয়ার ছাড়পত্র সংগ্রহের বেদনার কথা। এই উপন্যাসে হতাশা ও বেদনার মধ্যে আছে নতুন প্রত্যাশার স্বপ্ন দেখার কথাও। জীবনের প্রতি অনাস্থা, অবিশ্বাসই শুধু নয়; ভবিষ্যতের জন্য আস্থা সৃষ্টির বিশ্বাস নিয়ে উপন্যাসে উপস্থিত হয়েছেন নতুন প্রজন্মের নতুন বার্তাবহ বরেণ্য মানুষ।ভবিষ্যতের প্রতি এক আস্থা ও বিশ্বাসই এই বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।