User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
So nice and informative
Was this review helpful to you?
or
বইটা সম্পন্ন শেষ করেছি। দিনশেষে বলবো বইটা পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারেন।
Was this review helpful to you?
or
Good book and Good translation
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের সাথে বাস্তবতার মিল আছে। এপ্লাই করার জন্য অনেক টু দ্যা পয়েন্ট এ কথা বলা হয়েছে। আমার খুব ভালো লেগেছে যে গল্পের ভেতর থেকে শিক্ষাটা দেয়া হয়েছে। আমার মাথার গেছে গেল বইটা। আমিও এরকম অনেক্ট টিম ভেংগে যাওয়ার সাক্ষী। কেন ভেংগেছিল তা এই বই পড়ে বুঝতে পারলাম। মাথা নষ্ট বই.... হাহাহা
Was this review helpful to you?
or
Leadership er jono valo boi ❤
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার বই! চমৎকার অনুবাদ!
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
বইটা অত্যন্ত সুন্দর ছিল। ??
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
There are many temptations. Here are the great five.
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার বই৷ শুধুমাত্র সিইও না, সবার ই বইটি পড়া উচিত
Was this review helpful to you?
or
BEST BOOK
Was this review helpful to you?
or
বইটিকে আমি 5।4 দিব।
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
Excellent Book
Was this review helpful to you?
or
good book, must-read book is you are a leader
Was this review helpful to you?
or
WOW very nice book. really i am satisfit.
Was this review helpful to you?
or
Excellent Book.
Was this review helpful to you?
or
Good work! Well done!
Was this review helpful to you?
or
রকমারিতে বইটার যতটা প্রশংসা শুনেছি। অতটা ফাটাফাটি মনে হয়নি। লিডারশীপের পাচটি বৈশিষ্ট্য নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তবে আলোচনার প্রসেসটা অসাধারণ। আমি ৪/৫ রেটিং দেবো।
Was this review helpful to you?
or
Valoi
Was this review helpful to you?
or
বইটি খারাপ না আবার আহামরি কিছু না, অন্যদের কমেন্ট পড়ে ভাবছিলাম যে বিশেষ কিছু আছে।তবে এটা বলতে হবে বইয়ের দাম বেশি নিয়েছে ১৪০ পৃষ্ঠার বইতে ১০-১৫ পৃষ্ঠা কোন লেখা ছাড়াই ঢুকাইছে মনে হচ্ছে প্রকাশক ইচ্ছা বইটাকে একটু মোটাতাজা করার।
Was this review helpful to you?
or
Just awesome
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে। তবে আরো একটু তাড়াতাড়ি বই গুলো পাঠানোর জন্য চেষ্টা করা উচিত।ধন্যবাদ
Was this review helpful to you?
or
আমি AIS group এর president . এই বই পড়ার সময় বুঝতে পেরেছি যে কোন টেম্পটেশন এ ভুগছি । ধন্যবাদ, প্যট্রিক লিঞ্চিওনি লিডারশীপ এর সঠিক ধরণ দেখিয়ে দিয়েছেন।
Was this review helpful to you?
or
sobaike porar onorud roilo,ei budh golo akta desher karmo ketro k samne agia niya jay. khub sabolib anubad, pore khub bhalo laglo
Was this review helpful to you?
or
বইটির বিষয়বস্তু ভিন্ন ধরনের।একজন মানুষের নেতৃত্বর গুনাবলি বিকাশের জন্য তার টেম্পটেশন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।একজনের পেশাগত সফলতাও অনেকটা তার টেম্পটেশনের উপর নির্ভর করে।বইটি তা নিয়েই।বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে কিভাবে ব্যক্তির পক্ষে তার টেম্পটেশন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।এর ফলে পেশাদারিত্বও উন্নত করা সম্ভব।
Was this review helpful to you?
or
I really like the book.The book consist of some great writing skill to learning soft skill.A general bookreader may not have find the book interesting but a corporate professional surely love to read this book.I really like the sohag vais writing.
Was this review helpful to you?
or
pore onk kisu sikhlam
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ লেখনির চমৎকার অনুবাদ!
Was this review helpful to you?
or
ভালোমানের একটি মোটিভেশনাল বই। ভালো কিছু করা বা অর্জেনের জন্য অনন্য অনুপ্রেরনা হতে পারে বইটি।
Was this review helpful to you?
or
একটি দলকে লিড করতে হলে, কি ধরনের কোয়ালিটি থাকতে হয় তা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
খুব সুন্দর একটি বই
Was this review helpful to you?
or
I appreciated Mr Maruf for its fascinating explanation about the often baffling subject of CEOTemtetions. We have purchased this book for our Bangladesh employers and given them to Read it. They said they gained a box of knowledge. http://swedishit.com
Was this review helpful to you?
or
‘দ্য ফাইভ টেম্পটেশনস অব এ সিইও’ খুবই অসাধারণ একটি বই। সম্প্রতি আমার বইটি পড়ার সুযোগ হয়েছে। বইটির ওপর আমি একটি ‘গ্রন্থ-পর্যালোচনা’ লিখেছি, যা একুশে টিভি অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। পুরো লেখাটি এখানে দিয়ে দিলাম। আশা করি, পর্যালোচনাটি পড়লে বইটি সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। ‘গ্রেট টিম লিডার’দের যে পাঁচ প্রলোভনে পা ফেললেই বিপদ...! রায়হান আরিফুর রহমান জীবনে সাফল্য পেতে চায় না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া রীতিমতো দুঃসাধ্য। তবে ‘সাফল্য ছেলের হাতের মোয়া নয়, যে চাইলেই পাওয়া যাবে। সাফল্যের জন্য চাই অক্লান্ত পরিশ্রম ও কঠোর অধ্যবসায়। যাঁরা জীবনে সাফল্য পেয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের সাফল্যের পেছনেই লুকিয়ে আছে এক একটি গল্প। যে জীবনযুদ্ধের গল্পগুলো মোটেই সুখকর নয়। অনেক কণ্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়েই পৌঁছতে হয় সত্যিকারের সাফল্যের বন্দরে। জীবনসাফল্যের অভিযানে প্রতি পদক্ষেপেই ওঁৎ পেতে থাকে একের পর এক প্রলোভনের ফাঁদ। জীবনের কোনো এক অসতর্ক মুহূর্তে যে প্রলোভনসমূহের কোনো একটি ফাঁদে পা ফেললেই আর রক্ষে নেই। তখন তাকে নিশ্চিতভাবে নিমজ্জিত হতে হয় চোরাবালির চরে। গড়পড়তা মানুষের জন্য যেমন, তেমনি একজন টিম লিডারের ক্ষেত্রেও কথাগুলো সমানভাবে প্রযোজ্য। একজন টিম লিডারকে সাধারণত যে প্রলোভনগুলো হাতছানি দিয়ে ডাকে, যে প্রলোভনগুলোর ফাঁদে পা দিয়ে নিজের অজান্তেই একজন টিম লিডার তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে জলাঞ্জলি দিতে বাধ্য হয়, সেগুলোকে লিপিবদ্ধ করে একটি চমৎকার বই লিখেছেন (২০০২) বিশিষ্ট আমেরিকান লেখক প্যাট্রিক লিঞ্চিওনি (জন্ম : ১৯৬৫)। বইটির শিরোনাম দিয়েছেন- ‘The Five Temptations of a CEO’| প্যাট্রিক লিঞ্চিওনি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক স্বনামধন্য ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং ফার্ম ‘দ্য টেবিল গ্রুপে’র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। তিনি বহু আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কোম্পানিতে সহস্র সিনিয়র এক্সিকিউটিভের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি গত পনের বছর ধরে একজন পরামর্শদাতা ও বক্তা হিসেবে পৃথিবীর বহু আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বক্তৃতা দিয়েছেন, এবং দিয়েই চলছেন। মূলত সেই অভিজ্ঞতার সারাৎসার বাণীবদ্ধ করেই লিখেছেন ‘দ্য ফাইভ টেম্পটেশনস অব এ সিইও’ বইটি। বইটিতে ‘সিইও’ (CEO or Chief Executive Officer) বলতে তিনি বুঝিয়েছেন কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তথা দলপ্রধানকে; এবং ‘টেম্পটেশনস’ বলতে বুঝিয়েছেন এমন সব প্রলোভনকে, যেগুলো একজন শ্রেষ্ঠ দলপ্রধান হওয়ার পথে প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীকে যে বা প্রলোভনগুলো প্রতিমুহূর্তে হাতছানি দিয়ে ডাকে, যেসব প্রলোভনসমূহ একজন দলপ্রধানকে তার অজান্তেই আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরে, যেগুলো থেকে প্রতিমুহূর্তে সতর্ক না-থাকলে বিপদ অবিসম্ভাবী, সেগুলোকেই রূপক গল্পের মোড়কে ‘দ্য ফাইভ টেম্পটেশন অব এ সিইও’ বইটিতে তুলে ধরেছেন লেখক। লিঞ্চিওনি ‘সিইও’ তথা ‘টিম লিডার’ বা দলপ্রধানদের কথা মাথায় রেখে বইটি লিখলেও এই প্রলোভনগুলো যেকোনো মানুষের সাফল্যযাত্রার পেছনেই অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। সম্প্রতি প্যাট্রিক লিঞ্চিওনি’র বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন (২০১৭) বাংলাদেশের স্বনামধন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘রকমারি ডট কম’-এর হিউম্যান রিসোর্স টিমের কো-অর্ডিনেটর জনাব মোঃ মারুফ হাসান মনবীর (জন্ম : ১৯৮৭)। স্মরণীয় যে, বইটির অনুবাদক জনাব মারুফ সাহেবও একজন টিম লিডার। তিনি যে লিঞ্চিওনি’র বক্তব্যগুলো স্বয়ং আত্মস্থ করেই অনুবাদকর্মটি সম্পাদন করেছেন, তা অনূদিত বইটির প্রাঞ্জল ঝরঝরে গদ্য আর প্রকাশভঙ্গির স্বতঃস্ফূর্ততার দিকে লক্ষ করলেই বোঝা যায়। বইটি সম্পর্কে তিনি তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেছেন এভাবে : “লেখক এই বইটির নাম দিয়েছেন ‘The Five Temptations of A CEO’। তিনি এই ‘সিইও’ শব্দটি দিয়ে আসলে একজন ‘লিডার’ কে বুঝানোর প্রয়াস পেয়েছেন। একজন লিডার যখন তার দায়িত্ব ও ক্ষমতা পেয়ে যান, তখন তিনি নিজেকে একটু আলাদা ভাবতে শুরু করেন। অনেক সময় এই আলাদা ভাবাই তাকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। যে লিডার তার ফলোয়ারদের কাতারে দাঁড়িয়ে নিজেকে ভাবতে পারেন না, সে খুব দ্রুতই ফলোয়ারদের নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা হারান। গ্রেট লিডার হতে হলে পাঁচটা টেম্পটেশনের উর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হয়। ...লেখক একটি রূপক গল্পের মাধ্যমে সুন্দরভাবে ঐ টেম্পটেশনগুলোকে ফুটিয়ে তুলেছেন। ...কিশোর বয়স থেকেই এই টেম্পটেশনগুলো জেনে নিয়ে সেগুলো ওভারকাম করার ক্রমাগত প্রাকটিস করতে থাকলে গ্রেট লিডার হওয়ার পথ কেউ রুখতে পারবে না। (‘অনুবাদকের কথা’ অংশ : দ্য ফাইভ টেম্পটেশন অব এ সিইও)” লেখক মোট চারটি প্রধান খণ্ডে ভাগ করে তাঁর বক্তব্যগুলোকে গ্রন্থবন্ধ করেছেন। প্রথম খণ্ডে স্থান দিয়েছেন এগারোটি অধ্যায়ের। প্রথম অধ্যায়ে পাঠকের সাথে সাক্ষাৎ মিলবে “এন্ড্রু ও’ব্রেইন”, সংক্ষেপে “এন্ড্রু” নামধারী এই গল্পের নায়কের। সে ‘ট্রিনিটি সিস্টেম’ নামক একটি টেকনোলজি কোম্পানির সিইও। ‘গত এক বছরের কাজের রিপোর্ট আর জবাবদিহি নিয়ে আগামীকাল তার প্রথম বোর্ড মিটিং’। এ-নিয়ে সে খুবই চিন্তিত। সাধারণত সে অফিস থেকে দেরি করে না বের হলেও সে আজ অফিস থেকে সবার শেষে বেরিয়েছে; অফিসের হলরুমে হাঁটার সময়ও আজ তার খুব অস্বস্তি বোধ করছিল; বিচলিত মনে সে ভাবছে, কাল সদস্যদের কাছ থেকে তার কতই না নেতিবাচক কথা শুনতে হবে, কেউ হয়তো তার কাঁধ চাপড়ে বাহবাও দেবে না; এক কথায় বলা চলে সিইও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত এক বছরে তার তত্ত্বাবধানে কোম্পানি যে খারাপ ফলাফল করেছে তা নিয়ে সে খুবই উদ্বিগ্ন। তার তখন মনে পড়ে একটি প্রবাদ— ‘যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ’। এভাবেই এগিয়ে চলে গল্পের গতি। পাঠকরাও এন্ড্রু’র সাথে সাথে এগিয়ে যায়। দ্বিতীয় অধ্যায়ে এসে দেখা যাবে, যে পথ দিয়ে এন্ড্রু গাড়ি নিয়ে যাত্রা করেছে, সে পথ দিয়ে আর কোনো গাড়ি-ই যাচ্ছে না। যদিও ‘মেরামতের জন্য সেই রাস্তাটি বন্ধ থাকবে’ এমন নোটিশ এন্ড্রু গত দু’সপ্তাহে বহুবার দেখেছে, তা-সত্ত্বেও আগামীকালের বোর্ড-মিটিংয়ের দুশ্চিন্তায় ভুল করে সেই পথেই সে চলে এসেছে। এন্ড্রু যেন আজ এক উদ্ভ্রান্ত পথিক। সে আজ কোনো সিদ্ধান্তও নিতে পারছে না! তার এই উদ্ভ্রান্তদশাকে লেখক উপস্থাপন করেছন এভাবে— “একবার ভাবল, অফিসের কাছে ভালো একটা হোটেলে থাকবে। রাতে জামা কাপড় লন্ড্রি সার্ভিসে দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে নেবে। হোটেলে বসেই মিটিংয়ের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেবে। কিন্তু নাহ্! পরক্ষণেই তার মনে হলো নিজের বাড়িতে গিয়ে অন্তত দু’ঘণ্টা শান্তিতে ঘুমানো দরকার। যদিও এন্ড্রু নিজের বউ বাচ্চাদের সামনে খুব ভাব নিয়ে থাকে, তবুও তার মনে হল- নৈতিক ও মানসিক সাপোর্টের জন্য বউ-বাচ্চাদের সঙ্গ তার একান্ত প্রয়োজন। (পৃ. ২৫)” অতঃপর এন্ড্রু দরকারি কাগজপত্র ব্রিফকেসে ঢুকিয়ে, কোট হাতে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে যায়। উঠে গিয়ে একটি লোকাল ট্রেনে। সেখানে বিধ্বস্ত এন্ড্রু’র সাথে দেখা হয় ধূসর শার্ট পরিহিত এক বয়স্ক ভদ্রলোকের। যার নাম— “চার্লি”। চার্লি গল্পের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। চার্লি একরকম গায়ে পড়েই এন্ড্রুর সাথে গল্প করতে চায়। চার্লিকে প্রথমে বিশ্বাস করতে না পারলেও পরবর্তীতে চার্লির ইচ্ছাতেই এন্ড্রু তার সাথে কথোপকথন শুরু করে। চার্লি নিজেকে পরিচয় দেয় একজন রেইলরোড কোম্পানির প্রেসিডেন্টের ছেলে হিসেবে। চার্লির সাথে পাঠকদের সাক্ষাৎ মিলবে তৃতীয় অধ্যায়ে। চতুর্থ অধ্যায়ে এসে দু’জনের মধ্যে গল্পটা জমে ওঠে। চার্লি ও এন্ড্রুর মধ্যকার কথোপকথনের শুরুর অংশটি চমৎকার নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করেছেন লেখক। বইটি না-পড়ে সে নাটকীয়তার নাট্যরস আস্বাদন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যা-ই হোক, শুরুর দিকে চার্লিকে এন্ড্রু বিশ্বাস করতেই পারছিলো না। তবুও একটা অবজ্ঞামিশ্রিত সংশয়াচ্ছন্নতার মধ্য দিয়েই চার্লিকে সে তার সমস্যাগুলো বলতে শুরু করে। লেখক এন্ড্রুর মানসিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে— “...অবশ্য এন্ড্রুর মনের মধ্যে সংশয় কাজ করছিল। সে ভাবল, ‘আমি একটা কোম্পানির সিইও। আর আমি আমার সমস্যার কথা এক পাগল বুড়োর কাছে বলতে যাচ্ছি। আমার মাথা কি খারাপ হয়ে গেছে? মনে তো হয় কিছুটা হলেও খারাপ হয়েছে। এ কারণেই তো তাঁকে এসব কথা বলতে যাচ্ছি।’ (পৃ. ৩৫)” আলোচনার প্রারম্ভেই চার্লি বুঝে ফেলে এন্ড্রুর বিপর্যস্ত মানসিক পরিস্থিতির কথা : “চার্লির জবাব, “ও! তাই নাকি! তুমি কি জান, তুমি যে টেম্পটেশনের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছো। ভাবছ, কী করে বুঝলাম? আর তা বুঝা একেবারেই সহজ কাজ। ঐ যে তুমি জানো যে, তোমার কোম্পানির দুর্দিন যাচ্ছে, কিন্তু তুমি নাকি তার জন্য দায়ী না। সিইও’দের সাধারণত পাঁচটা টেম্পটেশন থাকে। তুমি কিন্তু ইতোমধ্যে এক বা একাধিক টেম্পটেশনের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছ।” (পৃ. ৩৮)” এরপর চার্লি এক এক করে সিইও’দের পাঁচটি টেম্পটেশন নিয়ে এন্ড্রুর সাথে আলোচনা করে। পঞ্চম অধ্যায়ে আলোচনা করে প্রথম টেম্পটেশন নিয়ে। চার্লি এন্ড্রুর কাছে জানতে চায়, এন্ড্রুর ক্যারিয়ারের সেরা দিন কোনটি, সে-সম্পর্কে। এন্ড্রু দু’সেকেন্ড ভেবেই জানিয়ে দেয়— সে যেদিন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিল, সেটাই ছিল ক্যারিয়ারের সেরা দিন। কিন্তু এখানেই আপত্তি চার্লির। সে এন্ড্রুর বক্তব্যকে ‘হাউ ফানি’ বলে উড়িয়ে দেয়। সে একের পর এক যুক্তি উপস্থাপন করে জানায়, আমেরিকার একজন প্রেসিডেন্ট কখনোই নির্বাচিত হওয়ার দিনকে ক্যারিয়ারের সেরা দিন বলবে না, বলবে— যেদিন সে দেশের জন্য অনেক ভালো কিছু করে দেখাতে পারবে সেই দিনকে; একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান কখনো সরকারি অনুদান পাওয়ার দিনকে তার ক্যারিয়ারের সেরা দিন ভাববে না, ভাববে— যেদিন সে অনুদানের টাকাগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারবে সে-দিনকে; একজন বাস্কেটবল কোচ কখনো যেদিন কোনো দলের সাথে বড় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সে-দিনকে ক্যারিয়ারের সেরা দিন ভাববে না, ভাববে— যে-দিন দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারবে, সে-দিনকে; ঠিক একইভাবে, একজন সিইও’রও উচিত যে-দিন সিইও হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে সে-দিনকে ক্যারিয়ারের সেরা দিন না-ভেবে যে-দিন কোম্পানির জন্য ভালো কিছু করে দেখাতে পারবে, সে-দিনকে ক্যারিয়ারের সেরা দিন ভাবা এবং সব সময় নিজের ক্যারিয়ারের চেয়ে কোম্পানির সাফল্যের ব্যাপারে সচেতন হওয়া। চার্লির ভাষায় : “...মূলত যাঁরা গ্রেট সিইও তাঁরা এসব ব্যাপার নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না। তাঁরা শুধু তাঁদের কাজের মাধ্যমে সবাইকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তাঁরা চান কোম্পানির আরো উন্নতি হোক, নিজের ইগো নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা নেই। (পৃ. ৪৪)” এমনিভাবে কীভাবে একজন সিইও নিজের ক্যারিয়ার, পদমর্যাদা, ভাবমূর্তি ও ইগোর কবলে পড়ে প্রথম টেম্পটেশনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েন, তা চার্লি ও এন্ড্রুর সুবিস্তৃত কথোপকথনের মধ্য দিয়ে নাট্যিক আবহে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। বইটির ঘটনাপ্রবাহ পড়তে গিয়ে পাঠকদের জন্য সবচেয়ে পরিতৃপ্তির বিষয় হচ্ছে— বর্ণনাগুলোকে কখনো একঘেয়ে বা ক্লান্তিকর মনে হবে না। লেখক মোটেই নিরস তত্ত্বকথা উপস্থাপন করেননি, অত্যন্ত সরসভাবে একেবারে গল্পের ভঙ্গিতে দুটি চরিত্রের মধ্য দিয়ে বর্ণনাটি ফুটিয়ে তুলেছেন। ভাষারূপ দিয়েছেন চারপাশের অনিন্দ্যসুন্দর প্রকৃতির। হঠাৎ করেই ট্রেনের বগিতে আলো চলে যাওয়া, আলো চলে যাওয়ার পরের ভূতুরে পরিবেশ, আবার আলো জ্বলে ওঠার রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির বর্ণনা প্রভৃতি বিষয়গুলো খুবই চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই বইয়ে। বইটির প্রথম খন্ডের ‘ছয়’সংখ্যক অধ্যায়ে চার্লি আলোকপাত করে দ্বিতীয় টেম্পটেশন সম্পর্কে। চার্লির মতে, সিইও হিসেবে দায়িত্ব পাওয়াটা কঠিন হলেও সিইও’র কাজগুলো পরিচালনা করা মোটেই জটিল নয়। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই এন্ড্রু তা মেনে নিতে পারে না। এন্ড্রুর যুক্তি : কোম্পানিগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা, নতুন নতুন টেকনোলজি, বিভিন্ন ধরনের বৈদেশিক পরিবর্তন, ব্যবসার নিয়ম কানুনের অদল-বদল, সস্তা শ্রমবাজার, ট্যাক্স, ভ্যাট, ঘুষ ইত্যাদি কত ধরনের ব্যাপার স্যাপারের কারণে বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক জটিল হয়ে গিয়েছে। চার্লিও নাছোড়বান্দা! এন্ড্রুর এসব যুক্তি মানতে সে পুরোপুরি নারাজ। এভাবেই জমে ওঠে গল্প। এন্ড্রু তার জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ে অফিসের অধস্তনদের কাছ থেকে কাজের জবাবদিহিতা আদায় করে নিতে পারেনি, সে টেরিকে (টেরি ছিল এন্ড্রুর কোম্পানির ‘মার্কেটিং বিভাগে’র প্রধান, তাকে এন্ড্রু কোনো রকমের পূর্ব-সতর্কতা ছাড়াই চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে) সঠিক উপায়ে চাকরিচ্যুত করেনি, যদি তাকে পূর্ব-সতর্কতা ব্যতীত চাকরিচ্যুত করে দেয়া হয় তাহলে এন্ড্রুর কেমন লাগবে- এমনি নানা প্রশ্নে এন্ড্রুকে জর্জরিত করে চার্লি। যুক্তির পর যুক্তি উপস্থাপন করে চার্লি এন্ড্রুকে বুঝিয়ে দেয় যে, সে আসলে নিজের জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ে অধস্তনদের কাছ থেকে কাজের সঠিক জবাবদিহিতা আদায় করে নিতে পারেনি; আর এটিই হচ্ছে একজন সিইও’র দ্বিতীয় টেম্পটেশন। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর ভাবনাগুলো, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একজন সিইও কী করে থাকে, অথচ তার কী করা উচিত বা কী করা উচিত নয় প্রভৃতি নানা বিষয় এন্ড্রু ও চার্লির কথোপকথনের মধ্যে ফুটে উঠে। তাদের আলোচনায় পাঠকের সামনে বেরিয়ে আসে মজার মজার সব তথ্য। নাট্যরসে ভরপুর সেসব তথ্যাবলি সত্যি-ই খুব উপভোগ্য এবং শিক্ষণীয়। পরবর্তী অধ্যায়ে তৃতীয় টেম্পটেশন ‘দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যর্থতা’সম্পর্কে আলোকপাত করে চার্লি। কেন একজন সিইও স্বল্প তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সঠিক সময়ে দ্রুততার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না, তার দুর্বলতাগুলো কী কী, এন্ড্রু-ই বা কী কী ভুল করেছিল, একজন সিইও হিসেবে এন্ড্রুর কী করা উচিত হয়নি বা কী করা উচিত সে-সব সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করে চার্লি। গল্পের শুরুতে চার্লির প্রতি এন্ড্রুর যে বিরক্তি ও সংশয় ছিল, এ-পর্যায়ে এসে তা আর অবশিষ্ট থাকে না। এখন সে নিজের আগ্রহ থেকেই চার্লির কাছে তার সমস্যা তুলে ধরতে শুরু করে, এবং সমাধানের পথ জানতে চায়। আর চার্লিও দিয়ে চলে একের পর এক উপদেশ। একটি দৃষ্টান্ত : “...একজন সিইও’র ‘I was wrong’ এ তিনটি শব্দের বাক্যটি বলার সৎ সাহস থাকতে হবে। শুধু পাশ কাটিয়ে চলে যাবার জন্য বললে হবে না বরং এমনভাবে বলতে হবে, যেন অন্য টিম মেম্বাররা বুঝতে পারে, সিইও সাহেব সত্যিই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ...একজন সিইও তাঁর সিদ্ধান্ত হতে ভুল প্রমাণিত হলে কখনোই অস্বস্তিতে পড়বেন না। তিনিই ‘গ্রেট সিইও’ যিনি ওই ধরনের অবস্থায়ও খুবই স্বাভাবিক থাকতে পারেন। তাহলে পরবর্তীতে কোম্পানির মারাত্মক দুর্দিনেও অল্প তথ্যের সাহায্যে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে সৎ সাহস পাবেন। (পৃ. ৭০)” অষ্টম অধ্যায়ে পাঠকদের সাক্ষাৎ মিলবে আরও তিনজন বৃদ্ধ লোকের সাথে- একজন লম্বু লোক, একজন টেকো লোক ও অপরজন ফিটফাট বাবু। লোকগুলোর নামের দিকে খেয়াল করলেই বোঝা যায়, তাদের সাথে এন্ড্রু ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো কতোটা হাস্যরসাত্মক ও উপভোগ্য হতে পারে। তাদের মধ্যে আলোচনা হয় চতুর্থ টেম্পটেশন নিয়ে। ঘটনার ধারাবাহিকতায় এন্ড্রু জানতে পারে তারা সকলেই এক একজন সিইও ছিলেন; এবং সকলেই কোনো না কোনো টেম্পটেশনে জড়িয়ে পড়েছিলেন। গল্পের এই অংশটিও বেশ চমৎকার। এন্ড্রু কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই তার সামনে ঘটনাগুলো ঘটে যায়। এন্ড্রু যেন একটি গোলকধাঁধাঁর মধ্যে পড়ে যায়। তবুও সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলোচনায় অংশ নেয়। কারণ আলোচনায় বেরিয়ে আসছে এক একজন সিইও’র এক একটি দুর্বলতার কথা। যেমন— “...তখনই লম্বুটা উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল, “ঠিক এই কাজটি না করার কারণেই আমার অধপতন হয়েছে। টিম মেম্বাররা একজন আরেক জনকে চ্যালেঞ্জ করবে, এটা আমি মোটেও মেনে নিতে পারতাম না। আমি তাদের মাঝে তীব্র বা কড়া ভাষার যুক্তিতর্ক হতে দিতে ভয় পেতাম। আমার ভয় করত তারা যদি একে অপরকে খুবই ঘোরতর আক্রমণ করে বসে তাহলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।” (পৃ. ৮০)” এই যে নিজে সমালোচিত হওয়ার ভয়ে টিম মেম্বারদের মধ্যে ‘প্রোডাক্টিভ আইডিওলজিক্যাল কনফ্লিক্ট’ হতে না-দেয়া, এটাই চতুর্থ টেম্পটেশন। কোম্পানির উন্নয়নের জন্য এবং অপেক্ষাকৃত ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মিটিংয়ে টিম মেম্বারদের মধ্যে গঠনমূলক তর্কবিতর্ক হওয়ার সুযোগ দেয়া উচিত। তাহলে সকলের মতামত যেমন জানা যাবে, তেমনি কোম্পানির জন্য অপেক্ষাকৃত ভালো সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা যাবে। সময় গড়িয়ে যায়। ট্রেন চলতে থাকে তার আপন গতিতে। চতুর্থ টেম্পটেশন সম্পর্কে কথোপকথন শেষ হতে-না-হতেই ট্রেন পৌঁছে যায় গন্তব্যে। এন্ড্রুকে রেখে চার্লিসহ অন্যান্যরা ট্রেন থেকে নেমে পড়ে। পঞ্চম টেম্পটেশন সম্পর্কে জানার জন্য এন্ড্রু অনেক চেষ্টা করেও চার্লিদের নেমে যাওয়া থেকে বিরত করতে পারে না। এ-পর্যায়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো খুবই চমকপ্রদ ও রহস্যাবৃত। চার্লিদের অনুরোধ করে ব্যর্থ হয়ে এন্ড্রু হন্তদন্তভাবে চার্লিদের পিছু পিছু ট্রেন থেকে নেমে যায়। সে তখন পঞ্চম টেম্পটেশন সম্পর্কে জানার জন্য এতোটা উদগ্রীব হয়ে উঠেছিল যে ট্রেন থেকে নামার সময় নিজের মূল্যবান ব্রিফকেসটি নিতেও ভুলে যায়, যে ব্রিফকেসে ছিল তার পরবর্তীদিনের বোর্ড-মিটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসমূহ। যা-ই হোক, এভাবে ট্রেন থেকে নেমে অনেক অনুনয়-বিনয় করে চার্লির কাছ থেকে এন্ড্রু জেনে নেয় পঞ্চম টেম্পটেশন সম্পর্কে। পঞ্চম টেম্পটেশনের মূলকথা হচ্ছে : সিইও’রাও যেহেতু মানুষ, তাই তাদেরও ভুল হতে পারে; সিইও’র কোনো কাজে যদি ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে সিইও’র উচিত বিন্দুমাত্র লজ্জা অনুভব না-করে ভবিষ্যতে আরও ভালো ফলাফল করার প্রত্যাশায় নিজের ভুলগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরা এবং সবার কাছ থেকে গঠনমূলক পরামর্শ চাওয়া। নিজের দুর্বলতাগুলোকে লুকিয়ে না-রেখে টিম মেম্বারদের ওপর বিশ্বাস রেখে তাদেরকে গঠনমূলক সমালোচনার সুযোগ করে দেয়া উচিত, যা অনেক সিইও’-ই নিজের মর্যাদার কথা ভেবে টিম মেম্বারদের সামনে পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে এবং গঠনমূলক তর্ক করা সুযোগ দিতে ভয় পায়। এভাবেই উদ্ভ্রান্ত এন্ড্রু চরিত্রের ট্রেনযাত্রার মধ্য দিয়ে শত-সহস্র যুক্তি-তথ্য উপস্থাপন ও আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে লেখক পাঠকদের সামনে তুলে ধরেন সিইও’দের পাঁচটি ‘টেম্পটেশন’ তথা ‘প্রলোভন’ সম্পর্কে, যে পাঁচ প্রলোভনের ফাঁদে নিজের অজান্তেই পা দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েন একজন সিইও। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে- এন্ড্রুর এ-ট্রেনভ্রমণ তথা মানসভ্রমণ এবং তার সাথে ঘটে যাওয়া উপর্যুক্ত ঘটনাবৃত্ত ঘটে যায় মাত্র ২০ মিনিটে। এমনকি চার্লিদের সাথে তাড়াহুড়ো করে ট্রেন থেকে নামার সময় এন্ড্রু তার যে ব্রিফকেস ফেলে এসেছিল, পরে দেখা গেল সেটাও আগের যায়গাতেই আছে। তবে কী তার সাথে কিছুই ঘটেনি! সত্যি-ই লেখক এক অদ্ভুত চমৎকারিত্বপূর্ণ রহস্যজাল তৈরি করে সাজিয়েছে ঘটনাবৃত্ত, যে রহস্যজাল উন্মোচনের জন্য গ্রন্থপাঠের কোনো বিকল্প নেই। গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে শেষ হতে বইয়ের আরও দুটি অধ্যায় বাকি থেকে যায়। দশম অধ্যায়ে লেখক পরবর্তী দিনের বোর্ড-মিটিংয়ের ঘটনাবৃত্ত উপস্থাপন করেছেন। কীভাবে একটি মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানির বাৎসরিক বোর্ড-মিটিং অনুষ্ঠিত হয়, কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রাখা হয়, কর্মী নিয়োগে সময় কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিত, কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার সময় কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিত, অন্য কোম্পানির সাথে কোনো চুক্তি কীভাবে সম্পন্ন করা হয়, কীভাবে একজন সিইও’র কাছ থেকে তার কাজের জবাবদিহিতা গ্রহণ করা হয়, কীভাবে প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড ও কর্মপরিকল্পনাকে বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়, কীভাবে কোনো কোম্পানির ভবিষ্যৎ কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় প্রভৃতি মিটিংয়ের প্রতিটি মুহূর্তের অতিসূক্ষ্ম বর্ণনা তুলে ধরেছেন লেখক। এমনকি চরিত্রসমূহের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মানসিক পরিস্থিতি এবং চিন্তাভাবনাগুলোও বাণীবদ্ধ করতে ভুল করেননি। শুধু সিইও’দের জন্যেই নয়, যেকোনো পাঠকের জন্যেই এসব ঘটনাক্রম নিঃসন্দেহে অত্যন্ত শিক্ষণীয় একটি অনুষঙ্গ। একাদশ অধ্যায়ে তিন বছর পরের আর একটি বোর্ড-মিটিংয়ের বর্ণনা উপস্থাপন করা হয়, যেখানে দেখানো হয় গত দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে সাফল্যের যাত্রায় অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে। বইটির দ্বিতীয় খন্ডে লেখক এন্ড্রুর মতো বহু লিডার কীভাবে নিজেদের সামান্য ভুলের কারণে, কখনও বা নিজের অজান্তে এক বা একাধিক প্রলোভনে পা দিয়ে ব্যর্থতার আস্তাকুঁড়ে নিমজ্জিত হন, তার ইতিবৃত্ত তুলে ধরেন। পাশাপাশি কীভাবে সে-সব কাটিয়ে ওঠা যায় সে-সম্পর্কে পরামর্শ দেন। তৃতীয় খন্ডে উপস্থাপন করেন একটি রোল মডেল, যেখানে ব্যাখ্যা করে দেখান ‘কেন এক্সিকিউটিভরা বিফল হয়’তার ইতিবৃত্ত। এ-পর্যায়ে প্রতিটি টেম্পটেশনের মূল বক্তব্যগুলো পুনরায় তুলে ধরেন লেখক, এবং এক একটি টেম্পটেশন থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য একজন সিইও’র কী করা উচিত, সে-সম্পর্কে একটি একটি করে ‘সিইও’দের জন্য সহজ-সরল দিকনির্দেশনা’ উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি একটি চার্ট তৈরি করে ‘পাঁচটি টেম্পটেশন দূরীকরণের উপায়’ও লিপিবদ্ধ করেছেন। একজন সিইও কোনো টেম্পটেশনে আক্রান্ত হচ্ছেন কিনা, কীভাবে তা নিজে নিজে মূল্যায়ন করবেন, সিইও’দের আত্মমূল্যায়নের এমনি একটি মডেল উপস্থাপন করে লেখক সাজিয়েছেন বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়টি। নিজেকে প্রশ্নকরণের মাধ্যমে কীভাবে একজন সিইও তার মধ্যে কোনো টেম্পটেশন ভর করেছে কিনা তা মূল্যায়ন করতে পারবে, এমন উপযোগী কিছু কার্যকরী টুলসের উল্লেখ করা হয়েছে বইয়ের এই শেষ অংশে। সর্বোপরি, প্যাট্রিক লিঞ্চিওনি যদিও দ্য ফাইভ টেম্পটেশন অব এ সিইও বইটি কেবল সিইও’দের কথা বিবেচনা করে লিখেছেন, তা-সত্ত্বেও বইয়ের বক্তব্যসমূহ যেকোনো মানুষের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। জীবনসাফল্যের পথযাত্রায় যেকোনো মানুষেরই জীবনপথে ওঁৎ পেতে থাকা নানা প্রলোভনের ফাঁদ, যে-সব থেকে বাঁচাতে এই বইয়ের বক্তব্যগুলো নিঃসন্দেহে সকলের উপকারে আসবে। প্যাট্রিক লিঞ্চিওনি’র ইংরেজি ভাষায় রচিত এই মহামূল্যবান বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য খুবই উপকার সাধন করেছেন জনাব মোঃ মারুফ হাসান মনবীর। তাঁর অনুবাদের ভাষা অত্যন্ত প্রাঞ্জল, ঝরঝরে ও সহজবোধ্য। ছোট ছোট বাক্যে বক্তব্যগুলোকে তিনি এতোটা সরলভাবে বাণীবদ্ধ করেছেন যে কোথাও গদ্যের স্বাভাবিক গতিময়তা বিঘ্নিত হয়নি। যেহেতু তিনি নিজেও একজন টিম লিডার, একজন টিম লিডার হিসেবে তিনি যে মূল লেখকের বক্তব্যগুলো গভীরভাবে আত্মস্থ করেই অনুবাদকর্মটি সম্পন্ন করেছেন, তা গ্রন্থটি পাঠ করলে সহজেই অনুধাবন করা যায়। এতো সুন্দর একটি অনুবাদকর্মের জন্য বাংলাভাষী পাঠকদের পক্ষ থেকে অনুবাদককে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ ‘অন্যরকম প্রকাশনী’ কর্তৃপক্ষকে, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বই প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য।
Was this review helpful to you?
or
বইটি সম্পর্কে এককথায় বলতে গেলে বলতে হবে অসাধারণ!!! বইটি পড়ে নিজেকে অন্যরকম লাগছে, সত্যি বইটি প্রশংসার দাবীদার। অর্ডার করার পরদিনই বইটি হাতে পাই এবং বইটির কোয়ালিটি (কাগজ,বাধাই,ছাপা) যথেষ্ট মানসম্পন্ন ও মজবুত। সন্তুষ্টজনক সার্ভিসের জন্য রকমারিকে ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
A great book for professional CEO. But it can be a guide for personal life too. How to be a great leader and what is obstacle in path- you can understand these by a beautiful story.
Was this review helpful to you?
or
A must read book.. অনুবাদ খুবই মজাদার ও উপভোগ্য ছিল... আশা করি অনুবাদকের আরো বই পাবো....
Was this review helpful to you?
or
কেউ জীবনে জয়ী হবার জন্য বাঁচে না কিংবা হারার জন্য বাঁচে না.... বাঁচে নিজের জন্য কারন বাঁচতে হবে..... বাঁচতে হলে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে একজন লিডার হিসাবে, যাতে আপনি সব সময় সঠিক কাজ ও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সঠিক সময়ে..... আমরা প্রত্যকে নিজের জায়গাতে লিডার, তবে সেই লিডারশীপ কে আরো ভালো ভাবে গড়ে নিতে হলে পড়তে পারেন "দ্য ফাইভ টেম্পটেশনস অব এ সিইও"
Was this review helpful to you?
or
No doubt this is an excellent book I have ever read! Explain a hard issue through a nice story. Helpful for all guys who are now leaders or want to become a leader.
Was this review helpful to you?
or
বই বিক্রি করে মানুষকে ঠকানোর ধান্দা বন্ধ করুন, আপনারা চাইলে বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে দাম ১০০ টাকার ভিতর রাখতে পারতেন, ফাকা পৃষ্ঠা গুলো কি ধুয়ে ধুয়ে পানি খাবো? এই প্রকাশনীর বই আমি বর্জন করলাম।
Was this review helpful to you?
or
দ্য ফাইভ টেম্পটেশন অব এ সিইও বইটি মুলত কোন প্রতিষ্টানের একজন লিডারের প্রতিনিয়ত করা ভূল গুলোকে ধরিয়ে দেয়ার উদ্যেশ্য নিয়ে লেখা। লিডার বা সিইও রা সাধারণত কোম্পানি থেকে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে বেশী আগ্রহী থাকে ফলে কোম্পানি তার লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয় এবং সে তার নিজের সাফল্য হারায়।মুলত সে জানলেও মানতে রাজি না যে টিমের স্বার্থকতার উপর প্রতিষ্টানের স্বার্থকতা এবং প্রত্যেকটি টিম মেম্বারের স্বার্থকতা নির্ভর করে। এজন্য প্রেট্রিক লিঞ্চিওনি তার বইটিতে একজন সিইও বা লিডারের ৫টি টেম্পটেশন এর কথা বলেছেন। ১ম টেম্পটেশন: প্রতিষ্টানে লক্ষ্য অর্জনের চেয়ে নিজের ক্যারিয়ারকে বড় করে দেখা।এটা একজন সিইওর প্রথম টেম্পটেশন। সে নিজের ক্যারিয়ারকে বেশী গুরুত্ব দেয় বিধায় কোম্পানি একটা সময় যেয়ে থেমে যায় অর্থাৎ আর গ্রোথ হয় না।গ্রেট সিইও হতে হলে তাকে অবশ্যই ১ম টেম্পটেশন দুর করা জরুরী।প্রতিষ্টানকে বড় করে দেখতে হবে কারণ প্রতিষ্টান বড় হলেই নিজে বড় হওয়া সম্ভব। ২য় টেম্পটেশন: নিজের পপুলারিটি ধরে রাখতে টিম মেম্বারদের কাজের জন্য অ্যাকাউন্টেবল না করতে পারা। সিইওরা তাদের যারা রিপোর্ট করে তাদের সাথে খুব ভাল ভাবে মিশে যায় ফলে তাদের কাজের গ্রোথ না থাকলেও সিইও রিপোর্ট দাতাকে জবাবদিহি করাতে বাধ্য করে না কারণ তার পপুলারিটি নষ্ট হবে সেই ভয়ে। যা একটা সময় প্রতিষ্টানের জন্য বিপদ বয়ে আনে।সিইওদেরকে তাদের অধস্তনদের রির্পোটিংয়ের মাধ্যেমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৩য় টেম্পটেশন: স্বচ্ছতার অভাব অর্থাৎ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্বান্ত না নিতে পারা।সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সিইওরা অনেক তথ্য বহুল জিনিস নিয়ে চিন্তা করে ফলে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সময় লেগে যায়।এখানে সেনাবাহিনীতে চলে এমন একটা কথা বলা যায় A bad decision is better than no decision. সিইওরা অনেক ক্ষেত্রে তাদের এক্সিকিউটিভদের চেয়ে কম জানে তাই অস্বচ্ছ সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয় যাতে করে এক্সিকিউটিভরা নিজেদের মতো করে তাদের কাজের পথ তৈরী করে নিবে। এই টেম্পটেশন দূর করতে হলে সিদ্ধান্তে দ্রুততা এবং স্বচ্ছতা আনতে হবে। ৪র্থ টেম্পটেশন: ফনস হারমনি বা প্রোডাক্টিভ আইডিওলজিক্যাল কনফ্লিক্ট না করা।সিইওরা সাধারণত মিটিং এর মধ্যে যুক্তিসংগত তর্কবিতর্ক করতে ভয় পায়।কারণ সে মনে করে তার সিদ্ধান্তই যতার্থ এবং তর্কবিতর্ক এর ফল কখনো ভাল হয় না এতে করে অন্যদের থেকে কোন ভাল আইডিয়া আসে না এবং সবাই মিটিং এ বোরিং ফিল করে।এই টেম্পটেশন দুর করতে পারলে সকলের আলোচনায় এবং যুক্তি তর্কের মাধ্যেমে ভাল সিদ্ধান্তটি বেরিয়ে আসে। ৫ম টেম্পটেশন: ভালন্যারেবল না হওয়া। সিইও রা নিজেদের অনেক ক্ষমতামীল মনে করেন এবং অন্যদের বিশ্বাস করতে পারেন না ফলে তারা অন্যদের সাথে খোলাসা কথা বলতে পছন্দ করে না। তারা মনে করেন সবার সাথে মিশলে তারা মাথায় উঠে যাবে।ফলে সে সব সময় দুবত্ব বজায় রেখে চলতে চায়। এজন্য এক্সিকিউটিভরা তাদের মতামত প্রকাশ করতে ভয় পায়। সিইওর উচিত প্রত্যেকের সাথে খোলাসা কথা বলা এবং মতামত নেয়া এতে করে হবে কি প্রত্যেকেই তাকে সম্মান করবে এবং নিজেদের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে সহকর্মীদের সাথে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। পরিশেষ: গ্রেট সিইও হতে হলে এই পাচঁটি টেম্পটেশন দুর করতে হবে।প্রত্যেকটি টেম্পটেশন একেকটির সঙ্গে যুক্ত বিদায় এগুলো দুর করা সহজ হবে না। তবে চর্চার মাধ্যেমে টেম্পটেশনগুলো দুর করতে হবে তবেই কেবল মাত্র কোম্পানি লক্ষ্যমাত্রায় পৌছাবে এবং আপনিও সিইও হিসেবে সফল এবং আইডল হতে পারবেন।
Was this review helpful to you?
or
মানুষ তার লিডারশিপ বাড়ানোর জন্য হয়ত ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিন্তু এই টেম্পটেশনের ফাঁদে পড়ে তার সব কষ্ট বৃথা হয়ে যাচ্ছে। লেখক একটি রূপক গল্পের মাধ্যমে সুন্দরভাবে ঐ টেম্পটেশনগুলোকে ফুটিয়ে তুলেছেন। একজন সত্যিকারের লিডার এই গল্পের নাটকীয়তায় নিজেকে স্পষ্ট দেখতে পাবেন। তিনি নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করতে পারবেন। ইগো, ফলোয়ারদের সাপোর্ট হারানোর ভয়, নিজেকে পারফেক্ট প্রমাণের চেষ্টা, ফলোয়ারদের সাথে ফলস হারমনি, ভালনার্যাবল হতে ভয় পাওয়া এই টেম্পটেশনগুলোয় জর্জরিত হয়ে গ্রেট লিডারশিপ মাথা ঠুকে মরছে। কিশোর বয়স থেকেই এই টেম্পটেশনগুলো জেনে নিয়ে সেগুলো ওভারকাম করার ক্রমাগত প্রাকটিস করতে থাকলে গ্রেট লিডার হওয়ার পথ কেউ রুখতে পারবে না।
Was this review helpful to you?
or
একজন পাঠক হিসেবে সবার আগে আমি চিন্তা করি বইটা হাতে নিলে বা দূর থেকে দেখলেই পড়ার আগ্রহ তৈরি হয় কিনা.. ?? হ্যাঁ... "দ্য ফাইভ টেম্পটেশনস অব এ সিইও : এ লিডারশিপ ফ্যাবল(হার্ডকভার)" - মূল লেখক প্যাট্রিক লিঞ্চিওনির বইটির অনুবাদক মোঃ মারুফ হাসান মনবীরের বইটা হাতে নিয়ে দেখলেই মনে হয় ভিতরে কি আছে একটু পড়ে দেখি। কাভার পেজ থেকে শুরু করে বইয়ের সহজ সরল শব্দ চয়নের মাধ্যমে পুরো জটিল বিষয়টি এতো সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যা আসলে খুব সহজেই যে কোন পাঠক কে পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি করে এবং পড়া শুরু করলে এক বসাতেই বইটা পড়ে ফেলা সম্ভব। যে কোন টিম বা দল বা প্রতিষ্ঠান বা ইনস্টিটিউট বা সংখ্যাগরিষ্ঠ বেশ কিছু মানুষের দায়িত্ব নিয়ে তাদের পরিচালনা করার সব ধরনের গুণাবলী থাকলেই আমরা তাদেরকে লিডার হিসেবে আখ্যায়িত করে দায়িত্ব দিয়ে থাকি। কিছু কিছু মানুষ লিডার হওয়ার গুণাবলী নিয়েই জন্মান বা পৃথিবীতে আসেন। কিন্তু ম্যাক্সিমাম মানুষই জানেন না লিডারশিপ সফল ভাবে ধরে রেখে একটি সুখী টিম বা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কৌশল। নিঃসন্দেহে এই বইটিতে একজন সফল লিডার হওয়ার জন্য যে বিষয়গুলো পরিত্যাগ করা অপরিহার্য সে বিষয়গুলো প্রতীকী ভাবে গল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবং পাশাপাশি গল্প শেষ হওয়ার পর বিষয়গুলো পয়েন্ট বাই পয়েন্ট আলোচনা করে দূর করার জন্য কি করতে হবে তার সুন্দর ব্যাখ্যাও দেয়া হয়েছে। লিডারশিপের মনোভাব যার মধ্যে একটু হলেও কাজ করছে বা যিনি অলরেডি লিডারশিপের দায়িত্বে আছেন তাদের সবাইকে বইটা পড়ার জন্য উৎসাহিত করছি। আশা করছি নিরাশ হবেন না...!!!! :-)
Was this review helpful to you?
or
একজন লিডার এবং বস এর মধ্যে পার্থক্য বুঝার জন্য বইটার কন্টেন্ট খুবই ভালো।
Was this review helpful to you?
or
লেখক এই বইটির নাম দিয়েছেন ‘দ্য ফাইভ টেম্পটেশনস অব এ সিইও’। তিনি এই ‘সিইও’ শব্দটি দিয়ে আসলে একজন ‘লিডার’ কে বুঝানোর প্রয়াস পেয়েছেন। একজন লিডার যখন তার দায়িত্ব ও ক্ষমতা পেয়ে যান, তখন তিনি নিজেকে একটু আলাদা ভাবতে শুরু করেন। অনেক সময় এই আলাদা ভাবাই তাকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট হয়ে দাড়ায়। যে লিডার তার ফলোয়ারদের কাতারে দাড়িয়ে নিজেকে ভাবতে পারেন না, সে খুব দ্রুতই ফলোয়ারদের নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা হারান। গ্রেট লিডার হতে হলে পাঁচটা টেম্পটেশনের উর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হয়। কোন একটা টেম্পটেশনের ফাঁদে পা দিলেই তার আর রক্ষে নেই। সবাই ভালো লিডার, সিইও, ম্যানেজার, সুপারভাইজর বা বস ইত্যাদি হতে পারেন না। এর মূল কারণ হলো, তাঁরা এক বা একাধিক টেম্পটেশনের মধ্যে ডুবে আছেন। মজার ব্যাপার হলো, তিনি মনের অজান্তেই ঐ টেম্পটেশনগুলোর মধ্যে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যান। সচেতন বা অচেতন অবস্থায় ঐ টেম্পটেশনগুলোয় ক্রমাগত একজন লিডারের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়। একজন মানুষ তার লিডারশিপ বাড়ানোর জন্য হয়ত ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিন্তু এই টেম্পটেশনের ফাঁদে পড়ে তার সব কষ্ট বৃথা হয়ে যাচ্ছে। লেখক একটি রূপক গল্পের মাধ্যমে সুন্দরভাবে ঐ টেম্পটেশনগুলোকে ফুটিয়ে তুলেছেন। একজন সত্যিকারের লিডার এই গল্পের নাটকীয়তায় নিজেকে স্পষ্ট দেখতে পাবেন। তিনি নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করতে পারবেন। ইগো, ফলোয়ারদের সাপোর্ট হারানোর ভয়, নিজেকে পারফেক্ট প্রমাণের চেষ্টা, ফলোয়ারদের সাথে ফলস হারমনি, ভালনার্যাবল হতে ভয় পাওয়া এই টেম্পটেশনগুলোয় জর্জরিত হয়ে গ্রেট লিডারশিপ মাথা ঠুকে মরছে। কিশোর বয়স থেকেই এই টেম্পটেশনগুলো জেনে নিয়ে সেগুলো ওভারকাম করার ক্রমাগত প্রাকটিস করতে থাকলে গ্রেট লিডার হওয়ার পথ কেউ রুখতে পারবে না।
Was this review helpful to you?
or
শুরুটা করি এক গল্প দিয়ে। রিকি একদিন বাসায় ফিরে দেখে তার বউ লুসি ড্রয়িং রুম এ তন্ন তন্ন করে কি যেন খুঁজছে। রিকি বলে – “কি খুঁজছো সোনা?” “ কানের দুল পরে গেছে”- লুসির জবাব। “কোন দিকটাতে পরছে বলোতো, আমিও খুঁজি” “ পরছে তো বেড রুমে”। রিকির পালা মাননীয় স্পিকার হবার। “মানে?” “আরে, বেডরুমে তো ডিম-লাইট, ঐ আলোয় কি খুঁজবো, তাই এখানে এসে খুঁজছি”... ... ... হাসছেন? হাসার কিছু নাই বন্ধুরা। Five Temptation Of A CEO বইটা লিঞ্চিওনি শুরু করেছেন এই গল্পটা দিয়েই। বেশির ভাগ সিইও তাদের বেশি আলোর জায়গা অর্থাৎ মার্কেটিং, স্ট্রেটেজি, প্লানিং, অপারেশন ব্লা ব্লা ব্লা জায়গাতে খুঁজতে গিয়ে কেন যেন একটু অন্ধকারের “সেলফ-এক্সামিনেশনের” জায়গাটাতে খুব একটা উঁকি ঝুঁকি মারতে পারেন না। কিন্তু সবথেকে জরুরি সত্যটা হচ্ছে যদি একটি কোম্পানীর সিইও-র ব্যবহার বা স্বভাব চরিত্র ৯৫% ঠিক থাকে ( আমাদের সোহাগ ভাই এর ৯৯% ই ওকে শুধু বিয়েটা করছেনা আর কি :P ), আর কোম্পানীর অবস্থা ৫০% ঠিক থাকে তাহলে কোম্পানীর ৫০% ঠিক করার আগে সিইও-র ৫% ঠিক করাটা বেশি জরুরি। আশা করি এই ব্যাপারটা ব্যখ্যা করার দরকার নাই। লিডারশিপের গুরুত্ব আপনারা সবাই জানেন। আমি বরং বই নিয়ে আলোচনায় আগাই। প্যাট্রিক লিঞ্চিওনি সম্পর্কে বলার কিছু নাই। এই ব্যাটা আম্রিকার বে-এরিয়ার সবথেকে নামকরা কনসালটেন্ট। ওনার ফাইভ ডিসফাংশনস অফ এ টিম আপনারা পড়ছেন। এর বাইরে ডেথ বাই মিটিং, ফোর অবসেশন অফ অ্যান এক্সট্রা অর্ডিনারি এক্সিকিউটিভ, থ্রী সাইনস অফ এ মিজারেবল জব- ওনার এরকম অনেক বইয়ের নাম আমরা অনেকদিন থেকেই সোহাগ ভাই এর কাছ থেকে শুনেছি। সবগুলোই ওয়ার্ল্ড এর সেরা বিজনেস বুক । উনি ওনার অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন- একজনের ক্যারিয়ারে সবথেকে ডিফিকাল্ট চ্যালেঞ্জ গুলোর একটা হলো সিইও (পড়ুন লিডার, মানে আমরা যা হতে চাই) হওয়া। কিন্তু সেই সাথে এটাও বলেছেন যে এটা আসলে খুব কঠিন কিছু না। যারা আসলে বিভিন্ন কারনে ফেইল করে বলে যে, সিইও হওয়ার মায়রে আন্টি, তারা আসলে ভুল জায়গায় ভুল ভাবে তাদের মেধা-পরিশ্রম দিয়ে সমস্যা কাটাবার চেষ্টা করে সমস্যা বাড়িয়েছেন। সমস্যা আর কিছুই ছিলো না, শুধু মাত্র তাদের মধ্যে থাকা ৫টি Temptation ( কোন কিছুর ইচ্ছে/ আকাঙ্ক্ষা/ বাসনা/ কামনা যাই বলেন) এর জন্য তারা সফল হতে পারেননি কিংবা সফল হয়েও সফলতা ধরে রাখতে পারেননি। ফাইভ ডিসফাংশন অফ এ টিম বইটির মতই গল্পের মত করে লিঞ্চিওনি খুব সুন্দর ভাবে ৫ টি Temptation ব্যাখ্যা করেছেন। আসেন আমরা এবার গল্পে প্রবেশ করি... ... গল্পের প্রধান চরিত্র মানে আমাদের দুর্ভাগা সেই সিইও হচ্ছে এন্ড্রু। সে এক নামকরা টেকনোলজি ফার্মের সিইও। বইয়ের শুরুতে দেখা যায় বর্তমানে তার কোম্পানীতে খুব একটা ভালো পরিস্থিতি যাচ্ছেনা। আবার এতটা খারাপ ও না সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে কোয়ান্টামের মেডিটেশন শুরু করতে হবে :P । সে ভাবছে মার্কেটিং- বিভিন্ন স্ট্রাটেজিকাল সমস্যার জন্য এমন হচ্ছে। পরের দিন বোর্ড অফ ডিরেক্টররা মিটিং এ বসবে। সে রাতে বাসায় ফিরে মিটিং এর এজেন্ডা আর সমস্যার ব্যাখ্যা নিয়ে কিছু পেপার তৈরি করে ঘুমাতে যাবে। বাসার পথে রওনা দিয়ে দেখে যে যে ব্রীজ এর উপর দিয়ে যাবে সেখানে কাজ চলছে। ফলে গাড়ি রেখে সে মেট্রোরেল এ উঠে ঘুরপথে বাসায় ফেরার প্রস্তুতি নেয়। রাত হয়ে যাওয়ায় ট্রেনে সে একাই ছিলো। হঠাত করে এক বৃদ্ধ উদয় হয় পাশের বগি থেকে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় সে ট্রেনের পরিচ্ছনতা কর্মী। নিজের চিন্তায় ব্যস্ত থাকায় প্রথমে সে খুব একটা পাত্তা দেয়না বুড়োকে। ট্রেন চলতে থাকে। হঠাত করে নিভে যায় সব আলো, খুলে যায় পাশের কামড়ার দরজা। আবছা আলোয় দেখা যায় বুড়ো লোকটিকে... ... ... এইখান থেকে গল্পটাকে আমি অতি উচ্চমানের হরর কাহিনী বানাতে পারতাম। কিন্তু সেই উদ্দেশ্য আপাতত , হ্যা আপাতত আমার নেই। এই বুড়ো লোক যার নাম চার্লি পরের এক বা দুই ঘন্টায় কিছু একটা করে ( জানতে হলে পুরো বই পড়ুন :P ) এন্ড্রুকে বুঝিয়ে দেয় সে সাধারন কেউ না। সেই সাথে এন্ড্রুকে তার জীবনের কঠিনতম সত্যের সামনে দাঁড় করিয়ে প্রমাণ করে দেয় তার কোম্পানীর খারাপ অবস্থার কারন ঐ সব ভকি-চকি কিছু না বরং এন্ড্রুর মধ্যে থাকা ৫ Temptation। চলুন, আমরাও জানি সেই Temptation গুলো... ... Temptation 1 : আদনান ভাইকে প্রশ্ন করলাম ভাই রকমারিতে আপনার সেরা দিন কোনটি? উনি বললেন যেদিন ওনাকে ডেলিভারির পাশাপাশি আরো বড় একটা ডিপার্টমেন্ট প্রোডাক্ট টিম এর দায়িত্ব দেয়া হলো। মালেক ভাই এই প্রশ্নের উত্তরে বললেন যেদিন ওনাকে এসিসট্যান্ট ম্যানেজার করা হলো। কিংবা আমি নিজে এই প্রশ্নের উত্তরে বললাম যেদিন আমাকে মেন্টর বানানো হলো। ভাইরা আমার, আমার উদাহরণের কোন আগা-মাথা নাই, জাস্ট মনে আসছে তাই বললাম, ধরেই নেই আমরা এই উত্তরগুলো দিলাম। এবং সবথেকে বড় ব্যাপারটা হলো- এই উত্তরের সাথে সাথেই প্রমাণ হলো আমরা Temptation ১ এ ভুগছি... ... Temptation ১ হচ্ছে- ফলাফলের থেকে নিজের অবস্থানকে বেশি গুরুত্ব দেয়া। অনেক লিডার আছেন যারা দিনশেষে কোম্পানীর রেজাল্টের থেকে নিজের এচিভমেন্টকে বড় করে দেখেন। ওনারা ফলাফলের থেকে পার্সোনাল ইগোর দিকে বেশি নজর দেন। তখন যা হবার তাই হয়, কোম্পানীর পাশাপাশি নিজের জন্যও বাঁশ রেডি হইতে থাকে। এখন কথা হচ্ছে ব্যক্তিগত অর্জন কিংবা ইগো দ্বারা পজিটিভলি কি মটিভেটেড হয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না? অর্থাৎ আমি সিইও হতে চাই কিংবা আমি লিডার হতে চাই। এখন সেটা হলে আমাকে খুব ভালোভাবে ব্রান্ডিং করতে হবে, সেলস আনতে হবে, কাস্টমার কেয়ার ভালোভাবে চালাতে হবে, আরো অনেক অনেক কাজ করতে হবে। এইগুলো ঠিক মত করলে আল্টিমেটলি তো রকমারিরই লাভ হচ্ছে তাই না? ব্যাপারটা আসলে সহজ না। আমি ঐসব করলাম, রকমারি প্রফিটে আসলো, আমার কাজে খুশি হয়ে আমাকে সিইও করা হলো। কিন্তু ভাই, আদম (আঃ) ফল খাইয়া দুনিয়ায় নাইমা আসার শাস্তি পাইছিলেন, আমি তো তারই বংশধর। ভুল আমি করবোই- ম্যান ইস মর্টাল। আমি যে মুহূর্তে বলবো যে রকমারিতে আমার বেস্ট দিন হইলো আমি যেদিন সিইও হইলাম সেই মুহুর্তেই প্রমাণ হইলো যে আমি রকমারির রেজাল্টের থেকে নিজের ইগো বা স্ট্যাটাস কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমি যদি সেইটা না দিতাম তাহলে বলতাম আমার সবথেকে সুখের দিন যেদিন রেকর্ড সেল হইলো কিংবা যেদিন টেলিমার্কেটিং এ ৫০০ অর্ডার আসলো কিংবা যেদিন থেকে রকমারিকে আর সিস্টার কনসার্ন লোন নেয়া লাগলো না... ... আমি যেহেতু নিজের স্টাটাসে বেশি গুরুত্ব দেই, সিইও হবার পর থেকেই শুরু হবে আমার Temptation এর নেগেটিভ ফলাফল আসা। আমার লাইফে ভার্সিটিতে প্রথম টার্মে ক্লাসের মোটামুটি সবাই ক্লাস টেস্টে ফেল করার পর স্যার জিজ্ঞেস করছিলেন- তোমাদের সমস্যা কি? তোমরা পড়না ক্যান? আমার এক অতি প্রিয় বন্ধু উত্তর দিছিলো- স্যার, বেহেশতে গিয়া কি কেউ নামাজ পড়ে? এত কস্ট কইরা পইড়া ঢাবি-তে চান্স পাইছি কি পড়াশুনা করার জন্য? :P ঠিক এভাবেই আমার মধ্যে Temptation ১ থাকলে আমি সিইও হবার পর থেকেই তার মিস্টি ফল খাওয়া শুরু করবো। আমার আলাদা রুম লাগবে, সুন্দরী পিএস লাগবে, আলাদা গাড়ি লাগবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন আমার কাজ হবে রকমারির গ্রোথ আরো ভালো করা না, নিজে কীভাবে আমরণ সিইও থাকি সেইটা নিশ্চিত করা। ফলাফল বুঝছেন? আপনারা বলতে পারেন যে এরকম হবেনা কিন্তু নিশ্চিত থাকেন যদি কোম্পানীর ফলাফল থেকে নিজের অবস্থানকে বেশি মূল্য দিয়ে আমি সিইও হই আর যাই হইনা কেন, সেই সিইও হবার পথের সকল অর্জন সাময়িক। সহজ করে বললে কোন ফাউন্ডেশন না করেই ১০ তলা বাড়ি করলাম- রানা প্লাজার কাহিনী হবেই। ঐ ১০ তলা সাময়িক ইল্যুশন মাত্র... ... Temptation 2: আমার টিম এ ১৫ জন আছে। তাদের নিজেদের নির্ধারিত কাজ আছে। এখন তাদের কাছ থেকে আমি ফলাফল পাচ্ছিনা। আমি কি করছি, খুব সুন্দর করে মাথায় হাত বুলিয়ে কিংবা ভদ্রভাবে তাদের বলছি যে –ভাইরা আমার বোনেরা তোমার, কাজ তো আগাচ্ছে না তোমরা তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পরে চেষ্টা করো। তারপরেও কাজ হলো না। আমি হয়তো এখন সবাইকে ঝাড়ি মাইরাই বললাম- টার্গেট এচিভ হচ্ছেনা, কোন ছাতার কাজ করেন আপনারা। মনযোগী হন... কিন্তু লাভ হচ্ছেনা। লাভ হবে কেমনে? আমার কাস্টমার কেয়ারের এপ্রুভ করে বনী আপু, আদার্স করে রকি, ফরেন অর্ডার দেখে জিল্লুর ভাই এরকম এক এক জন এক এক কাজ করেন। হয়তো সব জায়গায়ই সমস্যা কিন্তু আমি নির্দিষ্ট করে কেউকে কিছু বলছিনা কারন তাহলে তার সাথে আমার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। ঠিক এইখানেই আমি Temptation ২ এর শিকার যেটা হচ্ছে নিজের সুখ্যাতি ধরে রাখতে আমি জবাবদিহিতার অভাব তৈরি করছি। সোজা ভাষায় Popularity over Accountability। জবাবদিহিতা কিন্তু সোহাগ ভাই এর সেই প্রস্তাবিত চাবুক মারা কিংবা পিস্তল নিয়ে ধাবরানি দেয়া না। যার যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে পরিপূর্ণ ভাবে বুঝিয়ে দেয়া এবং সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তার সাথে থাকা, সেই ইস্যু নিয়ে কাজ করা, মনিটরিং এর মধ্যে থেকে তাকে সময় দেয়া ইত্যাদি। কিন্তু অস্বীকার উপায় নেই আমি যদি খুব সুন্দর করে মিস্টি ভাষাতেও কেউকে বলে যে আপনার কাজটি ঠিক হচ্ছেনা কিংবা কাজটিতে ব্যর্থ হবার দায়ভার তো আপনার, তাহলে সে যত মহামানবই হোক আমার আর তার সম্পর্কে একটু হলেও শীতলতা আসবে। এখন আমি যদি সেই সম্পর্ক নষ্ট হবার ভয়ে কিংবা সবার কাছে ভালো থাকার জন্য জবাবদিহিতার অভাব রাখি তাহলে কি হবে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আমি টিম মেম্বারদের কাছে ভালো থাকবো, তাদের পছন্দের পাত্র হবো কিন্তু আমার ব্যক্তিত্বের জন্য শ্রদ্ধা পাবোনা। পছন্দ আর শ্রদ্ধা কিন্তু আলাদা জিনিস- খুব খিয়াল কইরা... :P । আর এই পছন্দ আর শ্রদ্ধার মাঝের পার্থক্যটুকুই নির্ধারন করে একজন নেতার ভবিষ্যত। এই Temptation কাটিয়ে উঠে আমরা যদি স্বচ্ছ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারি তাহলে উপরে যে সাময়িক শীতল সম্পর্কের কথা বললাম তা আপনিই কেটে যাবে। ব্যক্তিত্ববান এবং সৎ নেতাকে কে অপছন্দ করবে বলেন? Temptation 3: ওকে, শুরু করার আগে বলে নেই যে এখানে আমি যেভাবে বুঝেছি সেটা ঠিক লিঞ্চিওনি যেটা বোঝাতে চেয়েছিলেন সেটাই কিনা আমি শতভাগ নিশ্চিত নই। গুগল মামার সাহায্য নিয়ে আর কিছু ফোরাম ঘেটে মনে হয়েছে ভুল করিনি তারপরেও এই Temptation নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে চা খেতে খেতে একটা আলোচনা হলে বেসম্ভব ভালো হবে। আই মিন ইট। সেখানে সোহাগ ভাই থাকলে ত সোনায় সোহাগা। Temptation ১ আর ২ আপনার মধ্যে না থাকলেও টিম এ কাজ করার ক্ষেত্রে কিংবা আপনার যারা ডিরেক্ট রিপোর্ট তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আপনাকে সমস্যায় পড়তে হবে যদি আপনার মধ্যে ৩ নম্বর Temptation টি থাকে। যেটি হচ্ছে Choosing Certainty over Clarity. মানে স্বচ্ছতার বদলে আপনি নিশ্চিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছেন। ব্যাখ্যায় আসি। মনে করেন আমি কাস্টমার কেয়ারে ফোন রিসিভ করিনা। আমি জানিনা কাস্টমার কি কি বলে, কোন কোন পরিস্থিতিতে কোন কোন ব্যবহার করে, কি করলে সে সন্তুষ্ট হবে ইত্যাদি। এইখানে হয়তো আমার কমন সেন্স আছে যে কাস্টমারের সাথে সুন্দর করে কথা বললে সে খুশি হয়, সে খুব উত্তেজিত হলে তাকে স্যরি বলে যাই হোকনা কেন ভুল স্বীকার করলে সে খুশি হয় –এরকম। কিন্তু আমি যেহেতু এই ব্যাপারে এক্সিকিউশন লেভেলে নাই কিংবা আমার অভিজ্ঞতা নাই তাই হয়তো আমি জিল্লুর ভাইকে বলবো না যে ভাই আপনি এরকম না বলে এরকম ভাবে বলেন। কেন বলবো না জানেন? আমার মধ্যে ৩ নম্বর Temptation থাকলে আমি বলবোনা। ক্লীয়ার করি। একজন সিইও Temptation ৩ এর স্বীকার হচ্ছেন তখন, যখন তিনি সবকিছুতেই নিশ্চিত হয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চাইবেন কিংবা ভুল করতে চাইবেন না। নিজের অবস্থান বা মান ইজ্জতের কথা চিন্তা করে হয়তো তিনি ভুল করতে চাইবেন না যে পাছে লোকে বলদ বলে... :P এইখানেই সবথেকে বড় সমস্যা। টিম লিড করতে হলে বা সিইও হতে হলে বিভিন্ন টিম বা ডিপার্টমেন্টের এক্সপার্টদের আপনাকে হ্যান্ডেল করতে হবে। এখন সবার সব কাজ সম্পর্কে আপনি জানবেন না, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রকমারির ব্রান্ডিং ভালো হচ্ছেনা এইটা নিয়ে আমার সাথে কথা বলতে হলে সোহাগ ভাইকেও জানতে হবে কীভাবে ফেসবুক/গুগল/ অন্যান্য অনলাইন মিডিয়াতে অ্যাড দেয়, সেটা সম্ভব না। এখন যদি উনি চিন্তা করেন যে রানার সাথে কথা বলার আগে আমাকে শিখতে হবে এইগুলা কেমনে কি করে তাহলে প্রোসেসটা কত লম্বা হবে বুঝতে পারছেন? এই লম্বা প্রোসেসে রকমারির ব্রান্ডিং এর যে ১২টা বাজবে সেইটা তো অন্তত বুঝতেছেন। এখন কথা হচ্ছে সোহাগ ভাই কেন ঐটা ডিরেক্ট আমাকে বলবেন না? কারন ঐ যে, Temptation ৩ এর শিকার হয়ে তিনি সবসময় সঠিক হতে চাইবেন। ফেসবুক নিয়ে কথা বলার আগে উনি ফেসবুক অ্যাড এর চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে তবেই আসতে চাইবেন কারন উনি যে পয়েন্টে বলবেন সেই পয়েন্টে আমি যদি ঠিক হই আর উনি যদি ভুল হন, তাহলে ওনার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠার ভয় ওনার মধ্যে কাজ করবে। উনি চাইবেন নিশ্চিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। ফলে উনি সেই ডাটা যোগাড় আর শেখার কাজেই থাকবেন আর অন্যদিকে আমিও ভুল-ভাল অ্যাড দিয়ে যাবো। চার্লি নামের বুড়োর মুখ দিয়ে লিঞ্চিওনি আর্মিতে প্রচলিত একটি প্রবাদের উল্লেখ করেছেন- “Any decision is better than no decision..” । আপনার শুধু এই জোরটুকু থাকতে হবে যে আপনার কথা ভুল হলে আপনি এইটুকু বলার সাহস রাখেন- “I was WRONG”. কোম্পানী এগিয়ে নিতে হলে আপনাকে অনেক লিমিটিশনের মধ্যে থেকে, অনেক অল্প তথ্য নিয়ে মাঝে মধ্যে বিশাল বিশাল সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে যে আপনি ভুল করতে পারেন। ভুল করা কোন ব্যাপার না, কিন্তু ভুল না করলে কিন্তু আপনি শিখবেন না, আগাতেও পারবেন না। আবার এইভাবে নিয়েন না যে আপনাকে আগাতে হলে আগে ভুল করতে হবে :P । কথা হচ্ছে, আপনি কাজ করে যাবেন, সিদ্ধান্ত নিয়ে যাবেন যদি ভুল হয়, “আমার ভুল ছিলো, জিন্দেগীতে এই ভুল আর করতাম না” এইটা বলে ভুল থেকে আসলেই শিক্ষা নিয়ে আপনাকে কাজে আগাতে হবে। আপনার অধিনস্তদের কাছ থেকে কাজ বের করতে হলে তাদের কাছে সবজান্তা শমসের সেজে বসে থাকলে হবেনা, তাদের কাজে আপনার মতামতের প্রতিফলন ঘটিয়ে কাজ বের করতে হবে। মনে রাখবেন সেই অমর বাণী- “Key to your success is hiring people who are more smarter than you…” :D । মনে আছে সেই হরর কাহিনীর কথা যেটা শুরুতে “আপাতত” Pause রেখেছিলাম? চার্লি এই তিন Temptation ব্যাখ্যা করার পর ঠিক যখন বলছিলো- “ এন্ড্রু, এতক্ষনের তিন Temptation কাটিয়ে উঠতে পারলেও তুমি সফল হবেনা যদি তোমার মধ্যে বাকি ২ Temptation থাকে” , ঠিক তখনই ট্রেনের আলো আবার ফিরে আসে এবং হঠাৎ করে ট্রেনটি এক স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে। ঠিক তখনই দরজা খুলে আবির্ভাব হয় রহস্যময় এক তৃতীয় ব্যক্তির যিনি কিনা চার্লিকে চেনেন। শুধু তাই না, এরপর বইয়ে উদ্ভব হয় আরো ৩ চরিত্রের যারা কিনা একসাথে... ... ... থাক ভাই, এইখানে ক্ষ্যামা দেই। সব রহস্যের সমাধান আমিই দিলে আপনি করবেন কি ঘন্টা? পড়ে ফেলেন The Five Temptations of a CEO । আমার মত আপনিও অনে..............ক কিছু শিখতে পারবেন সেই গ্যারান্টি আমার। আর যদি প্রথম তিনটি Temptation সম্পর্কে জেনেই সিদ্ধান্ত নেন অনেক কিছু জেনে গেছেন তাহলে কিছু বলার নাই। শুধু বলি, পিকচার আবিভি বাকি হেয় মেরা দোস্ত। আর সবশেষে কিন্তু রয়েছে এই ৫ Temptation কাটিয়ে ওঠার তরীকা। তো কবে পড়ছেন বইটি? ? ?