User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
গোধূলিরগান, শহীদ কাদরীর শেষতম কবিতার বই। এ কবিতার ক্যানভাসজুড়ে নিসর্গের সঙ্গে নগরের মিতালিতে যে ঘনঘোর আবহের জন্ম হয়, তা বোধ করি মনকে একধরনের প্রশান্তির কাছে নিয়ে যায়, নাকি নিয়ে যায় কবিতায় উল্লিখিত সেই হ্রদের কাছে, স্থিতির কাছে? এই ধাঁধাই ছন্দোবদ্ধ ও অন্ত্যমিলসম্পন্ন কবিতাটিকে অনবদ্য করে তোলে শেষমেশ। ১৯৬৭-তে কালবেলায় প্রকাশিত আরেকটি কবিতা ‘মত্ত দাদুরি ডাকে’। চাকরি পাওয়ার আনন্দে উল্লসিত কবি গদ্যে আঙ্গিকে লেখা এ কবিতায় বিদায় জানাচ্ছেন নানা কিছুকে: ‘বিদায়! অস্তগোধূলি, সূর্য, রাশি, জলতরঙ্গ, রেশম, গম, তিসি।...বিদায়! মধ্যরাতের দীর্ঘ রাস্তা, উঁচু স্তম্ভের আলো, সস্তা রেস্তোরাঁর ম্লান টেবিল, কান্নার করাত, বৃষ্টি, শিলা।...’ গোটা কবিতা শুধু কিছু প্রাণী, বস্তু আর অবস্তুগত উপাদানে ঠাসা। নেই একটিও উপমা।হানাহানি, অস্ত্রমুখরতা, দুঃসময়, যুদ্ধ, প্রেম, শান্তির আকাঙ্ক্ষা-শহীদের কবিতার এসব চেনা অনুষঙ্গের সঙ্গে এ বইয়ে বেশি মাত্রায় স্পষ্ট হয়েছে কবির ক্লান্তি, বেদনাবোধ, নৈরাশ্য ও ঘরে ফেরার আকুতি। তবে কবিতাটি বলার মতো হয়ে ওঠে এর ছোট ছোট বাক্য, নির্মেদ প্রবহমানতা এবং অবশ্যই অভাবনীয় শিরোনামের জন্য। মধ্যযুগের কবি বিদ্যাপতি একদা তাঁর কবিতায় ব্যবহার করেছিলেন ‘মত্ত দাদুরি, ডাকে ডাহুকী’। তার অনেক পরে এসে শহীদ যখন আলোচ্য কবিতার শিরোনাম দিলেন ‘মত্ত দাদুরি ডাকে’ (আনন্দিত ব্যাঙ ডাকে), মুহূর্তে নাগরিক মানসে পৌঁছে বদলে গেল কবিতাটির কাল-পাত্র; এমনকি ভাব, অর্থ আর অনুভূতিও। বিদ্যাপতির সেই ‘ভরা মাহ ভাদর’-এর আবহ পাল্টে গিয়ে এখানে রচিত হলো নগরের প্রেক্ষাপট। আর রূপান্তরের এই খেলা অতঃপর কবিতাকে করে তুলল অনন্য, নতুন।