User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বই - হরর গল্প সংকলন প্রকাশনী - বইপোকা প্রকাশনী সম্পাদনায় - ওয়াহিদ অনঘ মোট গল্প সংখ্যা - ২০ পৃষ্ঠা - ১৭৬ মূল্য - ২৪০/- (মুদ্রিত) রেটিং - ৩.৮/৫ ********** কয়েক প্রস্থ সমালোচনা শোনার পর আজ হাতে পেলাম বইপোকা প্রকাশনীর ২য় বই ওয়াহিদ অনঘ সম্পাদিত 'হরর গল্প সংকলন।' বই হাতে পেয়েই মন ভরে গেল। ১৯ লেখকের সবকটা চেনা মুখ। সমালোচনা মাথায় রেখেই আস্তে আস্তে পাতা ওল্টাই। কিন্তু এগুতে ইচ্ছা হয়না। কারণটা প্রচ্ছদ। সত্যি বলতে আমি আমাদের ছোটভাই তুল্য অয়নের প্রচ্ছদ দেখে অভিভূত। সত্যি! অসাধারণ প্রচ্ছদ। এখানে একটা কথা বলে রাখা দরকার, হরর মানেই ভয়ে মুখ লুকানো না। হরর মানেই কাঁথার নিচে গুটিসুটি হয়ে থাকা না। হরর আপনাকে বিষ্মিত করবে, কৌতুহলী করবে। হরর আপনাকে ফেলে দিবে সংশয়ে। একটা হরর স্বার্থক হবে যখন পাঠক হতবাক হয়ে নিজেকে প্রশ্ন করবে 'এটা কি হলো? এও কি সম্ভব?' **** যাহোক, প্রচ্ছদের মায়া কাটিয়ে পাতা ওল্টাতেই প্রথম গল্পে হাজির মিঠুন দা! গল্প 'দি টমাস টেলিফোন।' শুরুটা বেশ দারুণ। হিস্ট্রি দিয়ে শুরু। আর গল্পটা আধুনিক যুগে প্রাচীন একটা টেলিফোন নিয়ে। সত্যি বলতে আমি এই গল্পে সবচে বড় চমক পেয়েছি লাস্ট লাইনে। ক্রিং... ক্রিং... ক্রিং... হ্যা। এটাই লাস্ট লাইন। কিন্তু দেবদূত বাবুর কাজের পর সেই টেলিফোন বাজার কথা ছিল না। কি আছে অকশনে পাওয়া টেলিফোনে? জানাবে মিঠুনদার 'দি টমাস টেলিফোন।' সবকটা গল্পের বর্ণনা দিতে গেলে আমাকেই আরেকটা গল্পের আসর বসাতে হবে। তাই খুব বেশি ভালো লাগার কিছু গল্পের কথা বলে যাই। আহমেদ ইশতিয়াক ভাইয়ার পিশাচ গল্পের শুরুটা আমার কাছে বেশ লেগেছে। কথোপকথন না। বর্ণনায়। ঝুম বৃষ্টি। আপনি চায়ের দোকানে। এসময় মন পড়তে পারে এমন কেউ এসে যদি তার নিজের পিশাচ হবার ঘটনা বলে যায়..... আর না। পড়তে থাকুন। চমকে যেতে পারেন শেষটায়। সম্পাদক ওয়াহিদ অনঘ ভাইয়ের "ফটোগ্রাফ" আর প্রিয়মুখ ইয়াসির মনন ভাইয়ার "মেট্রিক পাশ।" পরপর দুটো প্রতিশোধের গল্প। দুটায় দারুণ। তবে অনঘ ভাইয়ের গল্পে 'করতেছে, ধরতেছে' টাইপ চলভাষার কাজ দেখে খানিক মনটা খারাপ হয়। যদিও গল্পের বেশ গভীরে যাবার পর আপনি টের পাবেন না কখন দুটো প্রাণ একসাথে প্রতিশোধের কবলে পড়ে। মাসুম আহমেদ আদি। বড়ভাই তুল্য মানুষটার গল্প পড়ে খানিক সস্তি পেলাম। যাক, কেউ তো হ্যাপি এন্ডিং দিলো। বেশকটা হরর পড়ার পর এই গল্পটা আপনাকে অন্যরকম কিছুর স্বাদ দিবে। আশিক সরকার ভাইয়ের স্টেশন। ব্যক্তিগত জীবনে ইঞ্জিনিয়ার যে মানুষটা, সংখ্যা, প্রতিশোধ আর অতীতের মিলমিশে তার স্টেশন গল্পটা এই বইয়ে আমার সবচে প্রিয় গল্পগুলোর একটা হয়ে আছে। সুমিত শুভ্র দাদার গল্প মৃত্যুধ্বনি। ডেথ মেটাল আর হরর দুয়ের মিশেলে অসাধারণ এক গল্প লিখে বসে আছেন। সুমিতদার কবিতার হাতও যে কতটা ভাল সেটা ৬ লাইনের লিরিক্সে পাঠকরা টের পাবেন অবশ্যই। লিরিক্সটা আসলেই খুব ভাল ছিল। মিলন গাঙ্গুলী দাদার দুটো গল্প। কিছুই বলার নাই। দারুণ। না পড়লে মিস করবেন। রাত্রিবাস লজ বাই জান্নাত চুমকি আপা। গল্প পড়ার পর মনে হল, ইশ! এই রোমান্টিক কাপলের এই দশা করলো কেন লেখিকা? যাহোক, আইডিয়া ভাল ছিলো। যদিও প্রিয় মানুষটার গল্প আরেকটু বড় হবে এই আশা ছিল। বইয়ের লাস্ট গল্প বন্ধুবর সাজ্জাদ হোসাইন ক্ষুদ্রের 'মাস্টারপিস।' গল্প লেখার আগে ক্ষুদ্র বারবার বলছিল, আমি পারবো না বন্ধু। আমার দ্বারা হবেনা। ক্ষুদ্র গল্প তো লিখেছেই সেই সাথে গল্পে তার নিজের জীবনের দুই বন্ধু নবনী এবং আমাকে মানে জুবায়ের কে মেরেই ফেলেছে! ক্ষুদ্র লেখক ভাল হলেও বন্ধুদের খুন করে কাজটা মনেহয় ভাল করেনি। ...... ভালো দিক নিয়ে যদি বলতে চাই, আমি বলল অনেকদিন পর হরর পড়ে আনন্দ পেয়েছি। কিছু কিছু সমালোচনা কানে এসেছে এটা আসলেই হররের দর্পণ হয়নি কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি বেশ কজন নবীন লেখকের লেখা থাকার পরেও হরর হয়েছে হররের মতোই। খারাপ দিকে বলতে গেলে বলব, প্রিন্টিং মিস্টেইক। দুদফা প্রুফ রিডিং করার পরেও বাচ্চাদের মতো কিছু ভুল ছিল। সেই সাথে এক গল্পের সাথে অন্য গল্প জুড়ে যাওয়া, এবং কিছু গল্পে হালকা চলভাষার মিশ্রণ বইয়ের কোয়ালিটি খানিক কমিয়ে দিয়েছে। ..... উৎসর্গ পাতায় লেখা ছিল হুমায়ূন স্যারের একটি বাণী। স্যারের আক্ষেপ বাংলা সাহিত্যে ভৌতিক গল্প কম। স্যারের একঝাঁক পাগল ভক্ত স্যারকে উৎসর্গ করে একটা ভৌতিক গল্প সংকলন করেছে এটা কি স্যারকে খানিক সস্তি দিবে? উত্তরটা অনেকগুলো হররের উপসংহারের মতো অজানা থাকবে সবসময়।
Was this review helpful to you?
or
কেউ বলে ভূত-প্রেত-পিশাচ এসব মানুষের কল্পনাপ্রসুত, মস্তিষ্কের সৃষ্টিমাত্র। কারো আবার এসবে আছে বেজায় ভক্তি-বিশ্বাস। বিশ্বাসের মাপকাঠিতে তর্কও কিন্তু কম নয়, বরং তর্কটা চলছে যুগের পর যুগ। আছে কি নাই নিয়ে তর্ক থাকলেও ভয়টা কিন্তু আছে সদা বিরাজমান। মানুষের মনের অতিপ্রাকৃতিক এই অনুভূতিকে অবলম্বন করে সারাবিশ্বের লেখকেরা লিখেছেন অসংখ্য হরর গল্প। হরর গল্পের অনুবাদ রচনা একটা বড় অংশ দখল করলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মৌলিক হরর গল্প লেখার চর্চাটা খুব একটা চোখে পড়ার মত নয়। মৌলিক হরর গল্পের ক্ষেত্রে সমৃদ্ধির একটি প্রচেষ্টা বা একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলা যায় একদল তরুন লেখকের রচিত এই বইটিকে। ১৯ জন কাঁচা-পাকা লেখকের ২০টি গল্প নিয়ে এই সংকলন সম্পাদিত হয়েছে। গল্পগুলো হলঃ ★ দি টমাস টেলিফোন/ মিঠুন সরকার ★ যন্ত্রণা/মিলন গাঙ্গুলী ★ পিশাচ/আহমেদ ইশতিয়াক ★ স্বীকারোক্তি/রামিম ইসলাম নূর ★ ফটোগ্রাফ/ওয়াহিদ অনঘ ★ ম্যাট্রিক পাশ/ইয়াসির মনন ★ চেয়ারম্যান বাড়ি/মাসুম আহমেদ আদি ★ স্টেশন/আশিক সরকার ★ সেভেন নিডেল/সাদিয়া আফরিন ★ হেলেন/সাইয়্যেদা মোফাখখেরা আহমেদ ★ বোবা আতঙ্ক/জাকিউল অন্তু ★ মৃত্যুধ্বনি/সুমিত শুভ্র ★ ইকারুসের সমুদ্র পতন/রাজীব চৌধুরী ★ একটি অশরীরী গল্প- রুম নং ৪১৯/আসিফ সৈকত ★ সে/সাদিয়া সালসাবিলা ★ পাগলের অভিশাপ/মিলন গাঙ্গুলী ★ ডায়েরি/লায়লা লিজা ★ রাত্রিবাস লজ/জান্নাত চুমকি ★ অস্তিত্ব/রিফাত আহমেদ ★ মাস্টারপিস/সাজ্জাদ হোসেন ক্ষুদ্র #বিষয়সংক্ষেপঃ পাহাড়ে ঘেরা স্বর্গীয় ভূমি বডমিন মুরের নারকীয় বন্দী আত্মার মুক্তির আহ্বান বয়ে আনে অভিশপ্ত টেলিফোন। একজন ব্যবসায়ী এন্টিক সংগ্রাহক ভাগ্যদোষে পড়েই হয়ত এ আহ্বানে সাড়া দিতে বাধ্য হন। ওদিকে, মরে গিয়েও সারারাত শব্দ করে সেলাই মেশিন চালায় মানিক দর্জি। পিশাচের সঙ্গে গল্প করতে করতে ভয়ংকর বিপদে পড়ে যান জনৈক পথচারী। আবার হাসপাতালের গোপন ঘরে ঘটতে থাকে রোমহর্ষক ঘটনা। বিপদে পড়ে কিশোর একটি ছেলেকে খেয়ে ফেলে এক আর্মি। যার পরিণতিতে চরম মূল্যও তাকে দিতে হয় ছোট্ট মৃত মেয়েশিশুটির কাছে। বস্তাবোঝাই হয়ে আসে মানুষের শরীর। রক্তের গন্ধ উন্মাদ করে তোলে অভিশপ্ত অপেক্ষমান খবীসকে। কোমল শিশুর গায়ে বিঁধে থাকা সাতটি সূচ নাকি তার রক্ষাকবচ! আর অন্যদিকে, উদ্ভট অথচ জীবন্ত এক মাস্টারপিস আর্টে লুকিয়ে আছে রক্তের নোনা স্বাদ! #ভাল_লাগাঃ বইটির লেখকদের মধ্যে অধিকাংশের সঙ্গেই বইপোকাদের আড্ডাখানার মাধ্যমে পরিচয় আর অত্যন্ত আন্তরিক সম্পর্ক থাকায় বই প্রকাশের পর থেকেই হাতে পাবার জন্য বেশ আগ্রহভরে অপেক্ষা করছিলাম। চেনাজানা সাধারন মানুষগুলো কেমন জলজ্যান্ত বইয়ের লেখক/লেখিকা হয়ে গেলেন ভাবতে বেশ থ্রিল অনুভব করেছি। তাই হাতে পেয়েই অপেক্ষা করতে পারি নি। এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম হরর নিয়ে লেখা বইটি। বইয়ের সম্পাদক ওয়াহিদ অনঘকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। বই পড়াকে সর্বজনীন করে তোলার স্বপ্ন দেখা এই তরুন সম্পূর্ণ নতুন একজন বা দুজন নয় এতজন লেখকদের লেখা নিয়ে রীতিমত একটা বই বের করার যে সাহস দেখিয়েছেন এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। #মন্দ_লাগাঃ প্রচুর হরর গল্প পড়ুয়া পাঠকের কাছে বইটি খুব ভাল লাগবে একথা বলব না। অর্থাৎ গড় হিসেবে পারফেক্ট হরর বই হিসেবে বইটি পুরোপুরি নিখুঁত নয়। বরং ভৌতিক আবহে লেখা গল্পের প্রচেষ্টা বলা চলে। তবে কয়েকটি গল্প কিন্তু সত্যিই বেশ ভয়ের! কিছু প্রিন্টিক মিস্টেক আছে। মিলনদার একটি গল্পের শেষাংশের এক পাতার জায়গায় অন্যটির শেষাংশ জুড়ে দেয়া। আরেকটি বিষয়, কয়েকটি গল্পে সাধু চলিত ভাষার দৃষ্টিকটু মিশ্রণ আছে যেখানে পাইতেছে, যাইতেছে, যাবা ইত্যাদি কথ্য ভাষার ব্যবহার স্পষ্টতই লেখকের নিজস্ব ত্রুটির পরিচয় দিয়েছে। পরবর্তীতে এই বিষয়গুলো সংশোধন ও পরিমার্জন করার অনুরোধ রইল। #সবশেষ_কথাঃ খুব ভয় পাই নি আবার পড়তে মন্দ লেগেছে তাও নয়। অন্তত, বই পড়া শেষে "ধুর সময়টাই নষ্ট হল!" -একথা বলতে হবে না এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি। সব মিলে সদ্য নতুন প্রকাশনার নতুন বইটা পড়ে আমার ত বেশ ভালই লেগেছে। আপনিও পড়ে ফেলতে পারেন নির্দ্বিধায়।