User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বইটা যখন পড়া শুরু করলাম মনে মনে ভাবছিলাম এটা কি কোন ব্রোসিয়ার নাকি?এখান থেকে ওখানে গেলাম,রাতে ঘুমালাম আর এভাবেই শেষ হয়ে গেল "কলোম্ব থেকে এল্লা"।০ "ওলন্দাজের শহরে" পড়ার পর একঘেমী লাগছিলো। এবার ভীতরে কিছুটা সংকা কাজ করলো। পুরো বইটা এমন একঘেয়েমীতে ভরা নয়তো?০ এবার নড়েচড়ে বসলাম। কারণ গল্পটা "সীমানা ছাড়াতে চাই"। অন্নপুর্ণা ব্যাস ক্যাম্প এর খুটিনাটি তুলে ধরা হয়েছে। এবার প্রথম মনে হলো আমিও লেখক ফুয়াদ বীন উমর এর সাথে অন্নপুর্ণা্র দিকে হেটে যাচ্ছি। লেখকের অক্সিজেন কমে যাওয়া, মাথা ঝিম ঝিম করা ঘটনা আমাকেও মনে করে দিল ২০২০ এ কেওক্রডাং ট্রেকিং করার কথা। দার্জিলিং পাড়া থেকে ভরপেট খেয়ে হাটা শুরু করেছি ।আর মাত্র ১০ মিনিট পর কেওক্রাডাং চূড়া। হাটতে হাটতে হটাত চোখে হাজার তাড়া দেখতে লাগলাম সাথে মনে হচ্ছে মাথার ভীতরেই ঝি ঝি পোকা অনবরত দেকে চলছে। সেলাইন খেয়ে অল্প কিছু সময় বিশ্রাম করে পুনরায় শুরু করি।৫ খরচের ভয় নিয়ে যে দেশে এসেছিলাম সেখানে থাকা খাওয়া নিয়ে খরচ হলো মাত্র ছয়হাজার চারশত টাকা-"অবিশ্বাস্য মালদ্বীপ" পড়ে এই সুক্ষ বার্তাটি লেখকমাথায় ঢুকিয়ে দেয়।২.৫ কাস্মির নিয়ে মুভী দেখা হলেও কখনো বই পড়া হয় নি। "ভূসর্গ ভংকর সুন্দর" পড়ার পর সত্যজিৎ রায় এর লেখা বইটি পড়ার তীব্র আগ্রহ জন্মায়।৫ বাঙ্গালির প্রথম নোবেল জয়ী অর্মত্য সেন সম্পর্কে সংক্ষেপে জানা যায়"নোবেল জয়ীর সাইকেল" অংশটা পড়ে। অর্থাৎ এক সাইকেলেই সুইডেন ভ্রমণ গল্প শেষ।২ "একই ফ্রেমে দুই শ্ত্রু"পৌরানিক গল্প দিয়ে মিশর ভ্রমণ শেষ।০ কিছুটা তথ্য নির্ভর লেগেছে "চলতি পথের বিড়ম্বনা"। সতর্ক না হলে পৃথিবীর সব জায়গায় প্রতারনার স্বিকার হতে হয়। আনলিমিটেড খাবার,ট্রেকিং আর নোনা জ্বলের স্বাদ নেওয়ার জন্য সময় সুযোগ পেলে "স্বপ্নিল ক্রাবি" যাওয়ার ইচ্ছা। ২য় বার কল্পনার চোখে সহযোদ্ধা কে নিয়ে তুরস্কের অলিগলিতে ঘুরছি। আর নানা রকম কাবাব এর স্বাদ নিচ্ছি। "অনন্য ইস্তাম্বুল" এই অনুভুতিটা দিয়েছে।৪ চারিদিকে সবুজ ঘাস,স্বচ্ছ পানি, পাহাড়। আমি ছুটে ব���ড়াচ্ছি। পিছন পিছন আমার সহযোদ্ধা।ধেড়ে গলায় গাচ্ছি ~চলো যাই চলে যাই দূর বহুদু্র~~~~~~~বাস্তবে ফেরত আসি "বার্ণিল স্টকহোম" পড়া শেষ করে।৫ পতাকায় শুধু সাদা আর সবুজের পার্থ্যক্য হলেও আর কোন কিছুতেই কোন মিল নেই। অতিথিপরায়ন হলেও স্বভাবে আমরা নোংরা জাতীই হিসেবে নিজেকে পরীচয় দিতে গর্বোবোধ করি।"নিঁখুত মানুষের দেশে" পার্থ্যক্যটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখার মতো।
Was this review helpful to you?
or
Good writing by the writer.
Was this review helpful to you?
or
#বইয়ের নাম: ইতিউতি হাঁটাহাঁটি #লেখক: ফুয়াদ বিন ওমর #ঘরানা: ভ্রমণকাহিনী #প্রকাশনী: বইপোকা প্রকাশনা #পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৬০ #মুদ্রিত মূল্য: ২৫০ টাকা "একজন প্রকৌশলী, একজন ডাক্তার বা উদ্যোক্তাকে আমি পরম শ্রদ্ধা করি, কিন্তু তাদেরকে আমার ঠিক হিংসা হয়না। আমার হিংসা হয় একজন কবীর সুমনকে, একজন বব ডিলানকে, একজন হুমায়ূন আহমেদকে, একজন জীবনানন্দ দাসকে অথবা একজন নিকোলা টেসলার মতো মানুষকে" বইয়ের মুখবন্ধে লেখা এই অংশটুকু আমি কয়েকবার পড়লাম। আরে! এই কথাটা তো আমার। একজন প্রকৌশলী, একজন ডাক্তারকে আমিও শ্রদ্ধা করি কিন্তু হিংসা হয় একজন হুমায়ূন আহমেদকে, একজন জীবনানন্দ দাসকে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার তো রোজই সৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু একজন হুমায়ূন আহমেদ? একজন হুমায়ূন আহমেদ সৃষ্টি হচ্ছে কালেভদ্রে। #বইয়ের বিষয়বস্ত: বইয়ের নাম "ইতিউতি হাঁটাহাঁটি" চলুন আমরাও ইতিউতি হাঁটাহাঁটি করে আসি। প্রথমে কই যাওয়া যায়? আচ্ছা আমিই বলি,,, প্রথমে যাবো "কলম্বো থেকে এল্লা" ইংরেজিতে একটা কথা আছে,,,Sometimes, journey can be more beautiful than the destinations. "কলম্বো থেকে এল্লা" যাওয়ার সময় আপনার শুধু এটাই মনে হবে। বারবার মনে হবে,,আচ্ছা এই রাস্তা যদি শেষ না হয়! শ্রীলংকার এই রাস্তাগুলো ভীষনরকম সুন্দর হলেও ট্রেনটা কিন্তু হুট করে আপনাকে একটা অচেনা স্টেশনে নামিয়ে দেবে। একজন বাঙালী হয়ে একটা অপরিচিত স্টেশনে কি করবেন আপনি? একদম ভাববেন না। শ্রীলংকার প্রতিটা মানুষই ভীষন অতিথিপরায়ণ। অইতো অনিল নামের ছেলেটা এসে গেলো। তার সাথে চলে যান তার বাসায়। তার বউটাও ভালো, বউটার নামটাও সুন্দর "ধেনু" এরপর সারাদিন একা একা ঘুরবেন কিভাবে? এই রাস্তা তো আপনার চেনা নয়। সেটাও ভাববেন না, গাইড হিসেবে হুট করেই দেখা হবে "লরেন হাবেরফিল্ডের সাথে। ভীষন মিশুক এই মেয়েটার সাথে কিভাবে কাটাবেন সময় তা বই পড়েই জেনে নিবেন। আর হ্যা,,ফেরার সময় মেয়েটাকে জম্পেশ একটা হাগ দিয়ে আসবেন কিন্তু,,,, শ্রীলংকা সম্পর্কে দুটো মজার তথ্য দেই,,, ১. শ্রীলংকায় মানুষ আছে আড়াই কোটি আর হাতি আছে বিশ হাজার। অর্থাৎ, একশো মানুষের সাথে দেখা হওয়ার পরই আপনার একটা হাতীর সাথে দেখা হয়ে যাওয়া উচিত। ২. শ্রীলংকার অধিবাসীদের নাম বড় হয়। উদাহরনস্বরুপ বিখ্যাত বোলার চামিন্দা ভাসের পুরো নাম-- "অয়ারনাকুলাসুরিয়া পাতাবেন্দিগে উসান্থা জোসেফ চামিন্দা ভাস!!! কলম্বো থেকে এল্লা তো ঘুরলাম, এবার? এবার চলে যাবো সরাসরি নেদারল্যান্ডস, ওলন্দাজদের দেশে। "ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর" নাম শুনেছেন তো নিশ্চয়ই। লেখক এখন দাঁড়িয়ে আছে সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সদর দপ্তরের সামনে, আপনিও আসুন। রাস্তাঘাট সব অচেনা লাগছেতো? একদম ভাববেন না, ট্যুরিস্ট গাইড আছে। গাইড আপনাকে নেদারল্যান্ডস এর রাজধানী আমস্টারডাম ঘুরে ঘুরে দেখাবে। এইতো ছোট্ট গলির মাঝখানে একটা ছোট্ট ক্যানেল তার ওপর একটা ছোট্ট ব্রীজ। মাঝেমাঝে রাস্তার পাশে দোকানে সাজানো দেখবেন মানুষের দেহাবশেষ, তার পাশেই হয়তো কোনো বৈধ পতিতালয়। আর পতিতালয় থেকে বেরিয়েই দেখবেন গীর্জা। পাপ করেছেন, মাফ তো চাইতেই হবে। এ গীর্জার একমাথা দিয়ে ঢুকে অন্যমাথা দিয়ে বেরিয়ে আসলেই সমস্ত পাপ সাফ হয়ে যাবে! আমি এতোটুকুই বলি, বাকিটা পথ নাহয় বই পড়েই ঘুরে আসবেন। নেদারল্যান্ডস সম্পর্কে একটা তথ্য: ১. নেদারল্যান্ডস শব্দের অর্থ Low land অর্থ্যাৎ নিচু জায়গা।নেদারল্যান্ডস এর বেশিরভাগ জায়গাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক নীচু হওয়ার দরুন এই নাম। এবার? এবার একটু সীমানা ছাড়িয়ে আসি। প্রথমে নেপালে প্যারাগ্লাইডিং এরপর মালয়েশিয়ায় পানির নিচে ডুবোডুবি। প্যারাগ্লাইডিং করা একজন বাঙালীর পক্ষে কতোটা কষ্টের সেটা লেখকের কাছ থেকেই জেনে নিবেন সাথে এটাও জেনে নিবেন লেখক কেন থাইল্যান্ডের ছোট্ট দ্বীপে অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠে চড়িয়ে ডুব দিয়েই মনে মনে বললেন,,,এরচাইতে তো প্যারাগ্লাইডিং বেশ ভালো ছিলো! নাহ,,প্যারাগ্লাইডিং আর সাতারু হয়ে কাজ নেই। চলুন এইবেলা বাংলাদেশের সবচাইতে উঁচু পর্বত জয় করে সমস্ত অভিযান ক্ষান্ত দেই। বাংলাদেশের পর্বত সম্পর্কে ছোট্ট একটা তথ্য: ১.কাগজে কলমে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কেওকারাডং হলেও, আসলে সবচাইতে উঁচু হলো সাকা হাফং। অভিযান ক্ষান্ত হয়নি! লেখক বড্ড বেশি কেমন জানি। অভিযান ক্ষান্ত দেবেন বলে আবার শুরু করলেন! তাও এবারের অভিযান যেনতেন জায়গায় না। একেবারে সাগরমাতা অন্নপূর্ণার কোলে। শূন্যতম দিনের অভিযান ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু যাত্রা শুরু করে অষ্টম দিনে লেখকের সাথে চলে গেলাম একেবারে পোখারা। এই অতীব সুন্দর আটদিনের ভ্রমন সম্পর্কে আমি কিচ্ছু না বলি। আপনারাই পড়ে নিবেন। বইয়ের সবচাইতে ভালোলাগা অংশ হচ্ছে অন্নপূর্ণা ভ্রমন। অন্নপূর্ণা'য় আট দিনের ভ্রমন কাটিয়ে লেখকের একটুও মন ভরেনি। মন ভরেনি আমারো। তাই এবারের অভিযান সরাসরি "ভিউ কার্ডের দেশে"। চেনেননি তো?! ভিউ কার্ডের দেশ হচ্ছে মালদ্বীপ। মালদ্বীপে ঢোকার আগেই সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি। এদেশে খাবারের দাম কিন্তু প্রচুর। নিজের ব্যাকপ্যাকে অবশ্যই খাবার দাবার পর্যাপ্ত রেখে তারপর মালদ্বীপে ঢুকবেন। তানাহলে হলে লেখকের মতো ছাপড়া হোটেল খুজে ফিরতে হবে! মালদ্বীপ দেশটা অনেকগুলা দ্বীপের সমষ্টি। সারাদেশে প্রায় চারলাখ মানুষের বাস। এই চার লাখ মানুষই মুসলিম। তার মানে মালদ্বীপ শতভাগ মুসলিমের দেশ। কিভাবে এইদেশ শতভাগ মুসলিমের দেশ হলো তা নিয়ে এক সুন্দর রুপকথা আছে,,,,একবার শ্রীলংকা থেকে এক রাজকন্যা আর তার স্বামী এলো মালদ্বীপে। এরপর? এরপর কি হলো সেটা বই পড়েই জেনে নিবেন। শুধু এটুক বলছি,, এই রুপকথায় এক দৈত্যের আবির্ভাব ঘটে,,,, মালদ্বীপ সম্পর্কে দুইটা তথ্য ১. মালদ্বীপের মোট জনসংখ্যা চারলাখ। এরমধ্যে বাঙালী আছে।পঞ্চাশ হাজার। ২. মালদ্বীপের সীবিচে আপনি বিকিনি পরে লম্পঝম্প দিতে পারবেন না। শুধু বিকিনি কেন, হাফপ্যান্ট পরলেও পুলিশ পেদিয়ে পশ্চাৎদেশ লাল করে দেবে। আচ্ছা আপনারা ফেলুদা পড়েছেন না? ফেলুদার "ভূস্বর্গ ভয়ংকরে" গল্পটায় কোন জায়গার কথা বলা হয়েছিলো খেয়াল আছে? হ্যা একদম ঠিক ধরেছেন। লেখকের সাথে এবারের অভিযান সরাসরি "পৃথিবীর স্বর্গ" কাশ্মীরে। কাশ্মীর ঘুরতে গিয়ে আপনি একবারও চাইবেন না ফিরে আসতে। আপনি মানতে বাধ্য হবেন এইটাই পৃথিবীর স্বর্গ। আপনার শুধু এটুকুই মনে হবে,,,, ইশ! সারাটাজীবন যদি এখানে থেকে যেতে পারতাম। কেন হবে এই আফসোস, সেটা নিজেই দেখে নেবেন। অনেক ঘোরাঘুরি হলো এবার একটা সাইকেল দেখে আসি চলুন। ভাবছেন, সাইকেল আবার দেখার কি হলো? আরে,,এই সাইকেল যেনতেন সাইকেল না। সর্বপ্রথম নোবেলজয়ী বাঙালী অমর্ত্য সেন এর সাইকেল এটা। এটা এক নোবেল জয়ীর সাইকেল!! এই সাইকেল ও যেনতেন জায়গায় রাখা নেই। সাইকেলটি রাখা আছে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের নোবেল জাদুঘরে। এবার লেখাটাকে একটু খাটো করে ফেলি। অল্পকয়টা জায়গার মোটামুটি বর্ননা দিলাম। বাকি জায়গা গুলোর বর্ননা দিতে গেলে রিভিউ আর রিভিউ থাকবেনা বই হয়ে যাবে তাই অল্পতে বর্ননা দিচ্ছি। নোবেল বিজয়ীর সাইকেল দর্শন শেষে সোজা চলে গেলাম মিশর। এখানেই আপনি একই ফ্রেমে দুই চিরশত্রুর দেখা পাবেন। এই দুইজন কিন্তু আপন দুই ভাই। মিশর পুরান অনুযায়ী "সেব" ছিলো পৃথিবীর দেবতা আর আকাশের দেবী হচ্ছে নাট। এই দম্পতির আপন ছেলে কেন শত্রু বনে গেলো তা জানার পর সেখানে আর থাকিনি। লেখকের হাত ধরে সোজা চলে গেলাম "সমস্যায়" নাহ,,,এটা কোনো জায়গার নাম না। চলতি পথে কি কি বিড়ম্বনায় পড়েছেন লেখক সে সম্পর্কে খানিক আলোচনা করলাম, এই আর কি! আলোচনা সেরে হাওয়াই জাহাজ ধরে সোজা চলে গেলাম থাইল্যান্ড। সেখানে পাঁচদিনের ভ্রমন সেরে কোথায় রওনা হলাম সেটা বলার আগে থাইল্যান্ড সম্পর্কে একটা তথ্য দেই, ১.ব্যাংকক- ক্রাবি- ব্যাংকক বিমান ভাড়া মাত্র ষাট ডলার। যতো আগে টিকেট কাটবেন ততো কমে পাবেন। থাইল্যান্ড ছেড়ে লেখকের শার্টের কোনা চেপে ধরে রওনা হলাম ইস্তাম্বুলে। ইস্তাম্বুল সম্পর্কে বেশি কিছু না বলে এতোটুকুই বলছি,,,যুবক ভাইয়েরা চোখ সাবধানে রাখবেন। ইস্তাম্বুলের প্রতিটা মেয়েই ভীষনরকম সুন্দরী। ইস্তাম্বুল ঘোরা শেষ। চলে গেলাম স্টকহোমে। স্টকহোম ঘোরাঘুরি করে নিখুঁত মানুষের দেশে যাওয়ার আগে একটা কথা বলে নিচ্ছি। স্টকহোমে যাবেন গ্রীষ্মকালে। আরেকটা প্রশ্ন বলুম তো,,পৃথিবীর ইতিহাসে মাত্র দুইজন ব্যক্তি একই সাথে নোবেল আর অস্কার পুরষ্কার জেতার বিরল গৌরবের অধিকারী। বলুন তো তারা কারা? উত্তর খোঁজেন সেই ফাঁকে আমরা চলে যাই "নিখুঁত মানুষের দেশে" নিখুঁত মানুষ কারা? যারা সবার আগে সূর্যোদয় দেখে। হ্যা ঠিক ধরেছেন। এবারের ভ্রমন জাপানে। সুর্যোদয়ের দেশ কে বিদায় জানাতে জানাতেই শেষ হলো আমার আর লেখকের এক অভূতপূর্ব ভ্রমন। লেখক এই ভ্রমন উপভোগ করেছেন লাখ লাখ টাকা খরচ করে অনেক কষ্ট সহ্য করে। আর আমি? আমি বইয়ের পাতায় চোখ বুলিয়ে লেখকের সাথে ঘুরে আসলাম এতোগুলো জায়গায়!! #অনুরোধের সুরে একটা উপদেশ: বইয়ের শেষ অংশে লেখক যেসমস্ত জায়গায় ঘোরাঘুরি করেছেন সেইসব জায়গার কিছু রঙীন ছবি দেওয়া আছে। আপনারা বইটা পড়ার সময় প্রতিটা অংশ পড়ে সেই অংশের সাথে সম্পর্কিত ছবি গুলো দেখে নিবেন। এতে করে যে জায়গা সম্পর্কে পড়েছেন সে জায়গার একটা সুন্দর বাস্তব চিত্র চলে আসবে মাথায়। #ব্যক্তিগত মতামত: উপরের লেখা পড়ে যেকেউই সহজে আন্দাজ করতে পারবেন বইটা সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত মতামত কি। তবুও বলতেছি। সবার আগে লেখক সম্পর্কে বলি,,,, নতুন লেখকদের লেখা পড়ার আগ্রহ পাইনা আমরা। এর কারন হচ্ছে,,পুরাতন নামকরা লেখকদের মাস্টারপিস পড়ে পড়ে পাঠকদের মাথায় লেখা সম্পর্কে একটা সুস্থ আইডিয়া জন্মে। আর সেই আইডিয়ার কারনেই একজন পাঠক যখন কোনো নতুন লেখকের বই পড়ে তখন তার অবচেতন মন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন লেখকের লেখাকে পুরাতন বড় বড় লেখকের লেখার সাথে তুলনা করা শুরু করে দেয়। আর তখনই দেখা যায় বিপত্তি। পাঠকের মন সব নতুন লেখকের লেখনীতে ভরেনা। ফুয়াদ বিন ওমর ভাই বইটি লেখার ক্ষেত্রে খুব দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বইটি একটানা পড়ার সময় এক ফোঁটা বিরক্ত হইনি। মনে হয়নি এই অংশটুকু না লিখলেও চলতো, মনে হয়নি লেখকের এই বর্ননাটা আমার মনের মতো হয়নি। অসাধারন দক্ষতায় লেখক আপনাকে ঘুরিয়ে আনবেন পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়। ভ্রমন কাহিনী আমি খুব বেশি পড়িনি তবে এটুক জানি,,, লেখকের বর্ননায় আপনি যদি বর্নিত জায়গাগুলোকে স্পষ্টভাবে চোখের সামনে দেখতে পান তবেই লেখা স্বার্থক। আর সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ফুয়াদ বিন ওমর ভাই শতভাগ স্বার্থক। লেখক সম্পর্কে আরেকটা মজার কথা। ছোটবেলায় "সিন্দাবাদের সমুদ্র অভিযানে" পড়েছিলাম, সিন্দাবাদ প্রতিটা অভিযানেই বিপদে পড়তো। এরপর বিপদ কাটিয়ে দেশে ফিরে প্রতিজ্ঞা করতো, নাহ, আর যাবোনা অভিযানে। কিন্তু আবার সাগরের ডাকে ঠিকই ছুটতেন। ফুয়াদ ভাইকে কিছুটা সিন্দাবাদের মতো মনে হয়েছে! বইয়ের প্রচ্ছদ নিয়ে বলার কিছু নেই। প্রচ্ছদ টা অসাধারন লেগেছে। পুরো বইয়ে বিশেষ কোনো বানান ভুল চোখে পড়েনি। সবদিক থেকে বইটাকে আমি কতো রেটিং দেবো সেটা আর না বলি। পাঠকরা বুঝতেই পারছেন।
Was this review helpful to you?
or
বুঝ হবার পর থেকে একজন মানুষের আমি অনেক বড় ভক্ত। সেই মানুষটি হলেন ইবনে বতুতা। তার জীবনের সামান্য যতটুকু জেনছি তাতেই বুক থেকে দীর্ঘশ্বাসে বেরিয়ে এসেছে। আমার নিজের ভ্রমন ভাগ্যে কুফা থাকলেও ইচ্ছার কখনো কমতি ছিলো না। ঋত্তিক, ফারহান আক্তার অভিনিত জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা মুভিটা বারবার দেখার একটা কারন হলো মুভির মধ্যে স্পেন দেখে চোখ জুড়ানো। সবাই যেখানে অসংখ্যবার দেখা মুভির নাম জিজ্ঞাস করলে থ্রি ইডিয়েটসের নাম বলে, সেখানে আমি বলি "জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা"। স্কাই ডাইভিং বারবার দেখি। ইচ্ছা করে কখন যে লাফ দিবো!! কিন্তু ভ্রমনের ইচ্ছা থাকলেও ভ্রমন কাহিনী নিয়ে কখনো তেমন আগ্রহ হয় নি। ঘরে বিখ্যাত দুইটা ভ্রমন কাহিনী পরে থাকলেও ধরে দেখা হয়নি। তবে প্রথম পড়া ভ্রমন কাহিনীতেই বাজিমাত। লেখক অল্প বয়সেই বিশ্বের ৩২ টা দেশ ভ্রমন করে ফেলেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ১০ টা দেশের ১৩ টা শহরের বর্ণনা দিয়ে সাজিয়েছেন বইটা তবে বইটা শেষ করার পরে মনে হচ্ছিলো লেখক কেন সব এলাকার বর্ণনা দিলেন না! কারন লেখকের সাথে আমিও ওই শহরগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। লেখক আরেকটু বেশি লিখলে আমার আরেকটু বেশি ঘোরা হতো। ভ্রমন কাহিনী গুলো এলাকা ভিত্তিক ছোটছোট গল্পে বিভক্ত। নামগুলোও চমৎকার। ★কলম্বো থেকে এল্লা ★সীমানা ছাড়াতে চাই ★অন্নপূর্ণার কোলে (এটা পড়ার পরে ঘরে থাকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।) ★ ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর সুন্দর ★ অনন্য ইস্তানবুল ★ বর্ণিল স্টকহোম গল্পগুলোর মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, নেপাল, মালদ্বীপ, ভারত, সুইডেন, মিশর, থাইল্যান্ড, তুরষ্ক আর জাপানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। বইয়ের এক একটা অধ্যায় এক একটা নতুন জগত খুলে দেবে পাঠকের সামনে। মুগ্ধ হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের রূপের বর্ণনা পড়বেন। লেখকের লেখার ধরনে একঘেয়ে লাগার কোনো সুযোগ ছিলো না। মনে হচ্ছিলো আমি লেখকের সামনে চোখ বুজে বসে কল্পনা করছি আর লেখক আমার সামনে বসে গল্প বলছে। কোথাও কোথাও লেখকের অভিজ্ঞতা পড়ে হা হা করে হেসেছি। কেউ যদি মনে করেন ভ্রমন কাহিনী পড়তে হয়ত বোরিং লাগবে, তাদের জন্য বলি; আমিও এমন ভেবেই এতদিন ভ্রমন কাহিনী পড়ি নাই। ভ্রমনের গল্পের পাশাপাশি লেখন কিছু ইতিহাসও বর্ণনা করেছেন। বলেছেন পৌরাণিক কাহিনী। নিজের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন। ইতিহাস কি! ইতিহাসের বই পড়ে কি মজা! এটা বুঝেছিলাম হুমায়ূন আহমেদের "বাদশাহ নামদার" পড়ে। ভ্রমন কি! ভ্রমন কাহিনী পড়ে মজা কি! এটা বুঝলাম ফুয়াদ ভাইয়ে "ইতিউতি হাঁটাহাঁটি" পড়ে। এবার একটু বইয়ের কোয়ালিটি নিয়ে বলি। বইয়ের কাগজ, বাইন্ডিং কভার সব ছিলো দেখার মত। বইয়ের শেষে ছবিগুলো ছিলো কল্পনার সাথে বাস্তবতার আচড়। এমন একটা বই এত কম দামে কিভাবে দিলেন প্রকাশক সেটা ভেবে অবাক হচ্ছি। বহুদিন ধরে রিডার্স ব্লকে থাকার পরে বইটা এক নিমিশে শেষ করলাম। লেখকের কাছে কৃতজ্ঞ। আর অনুরোধ থাকবে পরবর্তী ভ্রমন কাহিনীটা একটু তারাতারী আনবেন। সবশেষে লেখককে মনের গভীর থেকে জানাই "আরিগাতো গোজাইমাস"। "As long as this exists, this sunshine and this cloudless sky, and as long as I can enjoy it, how can I be sad?" - Anne Frank, The Diary of a Young Girl
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ ইতিউতি হাঁটাহাঁটি লেখকঃ ফুয়াদ বিন ওমর ধরনঃ ভ্রমণকাহিনী প্রথম প্রকাশঃ আগস্ট ২০১৭ প্রকাশনীঃ বইপোকা প্রকাশনা পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৬০ লিখিত মূল্যঃ ২৫০ টাকা, ক্রয়মূল্যঃ ২০০ টাকা (২০% ছাড়ে) “Traveling- it leaves you speechless, then turns you into a storyteller.” Ibn Battuta লেখক ফুয়াদ বিন ওমর হয়তো ভ্রমণ করার সময় পৃথিবীর রূপে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু উক্তিটা সত্যি প্রমাণ করার জন্য পরে storyteller হয়ে গেলেন! আর সেজন্যই আমরা পেলাম “ইতিউতি হাঁটাহাঁটি”। লেখক বিশ্বের ৩২ টা দেশ ভ্রমন করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ১০ টা দেশের ১৩ টা শহরের বর্ণনা দিয়ে সাজিয়েছেন বইটা। তারিখের ক্রমবিন্যাস না থাকলেও বইটা শুরু হয়েছে শ্রীলংকা সফর দিয়ে এবং শেষ হয়েছে জাপান ভ্রমণের গল্প দিয়ে। লেখক শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, নেপাল, মালদ্বীপ, ভারত, সুইডেন, মিশর, থাইল্যান্ড, তুরষ্ক আর জাপানে ভ্রমণের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বইটিতে তুলে ধরেছেন। বইয়ের এক একটা অধ্যায় এক একটা নতুন অভিজ্ঞতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে। লেখক আপনাকে নিয়ে যাবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। আপনি মুগ্ধ হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের রূপের বর্ণনা পড়বেন। লেখকের বর্ননায় আপনি যদি বর্নিত জায়গাগুলোকে স্পষ্টভাবে চোখের সামনে দেখতে পান তবেই লেখা সফল। আর সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ফুয়াদ বিন ওমর শতভাগ সফল। ভ্রমণকাহিনীতে স্বাভাবিকভাবেই লেখক যে স্থানে ভ্রমণ করেছেন সে স্থান সম্পর্কে নানা তথ্য বা ইতিহাস লেখা থাকে। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। তবে তথ্য বা ইতিহাসগুলো ছিল অনেক মজার এবং মোটেও কাঠখোট্টাভাবে লেখা হয় নি। মূলত পুরো বইটাই হাস্যরসাত্বক, সাবলীল। একদম গুরুগম্ভীর মানুষকেও লেখকের নানা অভিজ্ঞতা হাহা করে হাসতে বাধ্য করবে। বইয়ের কাগজ, ছবিগুলো এবং অবশ্যই প্রচ্ছদ- সত্যিই অসাধারণ। তবে সবচেয়ে ভাল লেগেছে বানান ভুল প্রায় না থাকার বিষয়টা। এক কথায় “ইতিউতি হাঁটাহাঁটি” চমৎকার একটা বই। পার্সোনাল রেটিংঃ দশে বারো ভ্রমণকাহিনী পড়তে আমার সবসময়ই ভালো লাগে। চুপচাপ বসে বসে কত সহজেই দেশ বিদেশে ঘোরা যায়! লেখক হয়তো সুন্দর কোন দৃশ্যের বর্ণনা দিচ্ছেন আর আমি কল্পনায় সে দৃশ্য দেখছি। মাঝেমাঝে মনে হয় আমি হয়তো লেখকের সাথেই নানা দেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি। কোন রকম কষ্ট না করে ঘুরে বেড়াতে কার না ভালো লাগে! পড়ার জন্য ধন্যবাদ :) রকমারি লিংকঃ https://www.rokomari.com/book/150610/%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%9F%E0%A6%BF
Was this review helpful to you?
or
যারা ভ্রমণকাহিনী পছন্দ করেন , তাদের আর দুইবার ভাববার অবকাশ নেই বইটা পড়বেন কিনা। আর যারা পছন্দ করেন না বা এখন পর্যন্ত জানেন না ভ্রমণকাহিনীর স্বাদ কেমন তারাও বইটা পড়ে দেখতে পারেন। আশা করা যায় খারাপ লাগবে না। পাণ্ডুলিপি পড়ার পরে সৈয়দ মুজতবা আলীর "দেশে বিদেশে" এবং মুহাম্মদ আবদুল হাই এর "বিলেতে সাড়ে সাতশো দিন"-এর সাথেই কেবল তুলনা করতে পেরেছি ফুয়াদ বিন ওমরের লেখা "ইতি উতি হাঁটাহাঁটি"র। যারা পড়বেন তাদের জীবনের অন্যতম সেরা একটা ভ্রমণকাহিনী হয়ে থাকবে - এই আশাবাদটা আমি রাখবো নির্দ্বিধায়। ভ্রমণকাহিনীগুলো যতোটা তথ্যবহুল ঠিক ততোটাই রসালো। লেখকের সাবলীল বর্ননায় মনে হবে লেখক নয় , পাঠকই ঘুরে বেড়াচ্ছেন পৃথিবীর দূর দূর দেশের পথে প্রান্তরে। লেখক এখন পর্যন্ত ৩২টা দেশে তার পদরেখা রেখে এসেছেন। তারমধ্যে দশটি দেশেরসহ মোট তেরোটি ভ্রমনকাহিনী নিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি।