User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ বই : কনফেশন্স লেখক : কানায়ে মিনাতো অনুবাদ স্বত্ব : বাতিঘর প্রকাশনী জনরা : ক্রাইম থ্রিলার প্রথম প্রকাশকাল: আগষ্ট, ২০১৭ অনুবাদ : কৌশিক জামান ⏩ তুমুল জনপ্রিয় এক লেখক "কানায়ে মিনাতো" যাকে বলা হয় "কুইন অফ ইয়ামিসু"! তার লিখা প্রথম থ্রিলার উপন্যাস " কনফেশন্স"! অসাধারন এক রহস্য জট পাকানো লিখা এই উপন্যাস বের হওয়ার কিছু দিন পরেই স্থান করে নেয় বেস্ট সেলার উপন্যাসের মর্যাদা। ২০১৪ সালে সেরা ১০ থ্রিলার উপন্যাসের তালিকায় স্থানও পেয়ে যায়। ⚠️ [বই সারসংক্ষেপ] ⏩ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র এক মাধ্যমিক স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক, যার নাম "মরিগুচি" যিনি কিনা একজন "সিঙ্গেল মাদার" হিসেবে পরিচিত এবং মানামি নামের ৪ বছর-বয়সী একটা মেয়ে আছে । একজন শিক্ষক হিসাবে তার চাকরির চাহিদার সাথে তার সন্তানের চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন সব সময়। মানামির বাবার সাথে মরিগুচির বাগদানের সমাপ্তি ঘটে যখন তিনি মানামির বাবার শরীরে আবিষ্কার করেছিলেন যে তার দুঃসাহসিক এক অতীত তাকে এইচআইভি পজিটিভ ছেয়ে দিয়েছে সমস্ত শরীরে, রক্তে। এর পর থেকেই মরিগুচি সে তার মেয়ে কে নিয়ে একা থাকার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এক মাত্র মেয়েকে নিয়েই তার সকল কেন্দ্রবিন্দু গড়ে উঠে। ⏩ একদিন মরিগুচি স্কুলের মিটিং শেষে তার মেয়েকে নিতে অফিসে রুমে যায় কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে মানামি নেই সেখানে! মরিগুচি তার মেয়েকে অফিস রুমে না পেয়ে, চারদিকে সমস্ত খোজাখুজি শুরু করে দেয় এবং এক পর্যায়ে অনুসন্ধান করে দেখে তারই স্কুলের পিছনের এক সুইমিং পুলে মৃত অবস্থায় খুজে পায় তার মেয়ে মানামি কে । তদন্ত করে পুলিশ রায় দেয় মানামি সুইমিং পুলের পানিতে ডুবে মারা গেছে । এক মাত্র মেয়েকে হারানোর পরে তিনি অনেক বেশি ব্যথিত হন । মেয়ের মৃত্যুর শোকাহত রেশ কাটানোর বেশ কিছু দিন পরই স্কুলের শিক্ষাবর্ষের শেষ দিনে তার মিডল-স্কুল ক্লাসের শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষকতা থেকে পদত্যাগের দীর্ঘ এক বক্তৃতা দেন এবং অবসরের কথার এক পর্যায়ে এইটাও বলেন যে কেনো তিনি অবসরে যাচ্ছেন। কথার এক পর্যায়ে মরিগুচি সকল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, তার মেয়ে মানামি কোনো সুইমিংপুলের পানিতে ডুবে মারা যায় নি, তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং যারা হত্যা করেছে তারা মরিগুচির ক্লাসেরই দুইজন ছাত্র এবং সেই দুইজন কে সেটা তিনি ভালো করেই জানেন। সব কিছু জানেন তিনি তারপরেও পুলিশের শরণাপন্ন হন নি মরিগুচি! কিন্তু কেনো?? এর রহস্য কি? ⏩ রহস্যের জট পাকানো মুহুর্তকর অবস্থায় মরিগুচি এক পর্যায়ে সবার উদ্দেশ্য কথা চলাকালীন সময়, কারো নাম না বলে এক ধরনের কোড ( A & B) ব্যবহার করে সে তার দুই ছাত্রের প্রতি তার এক জটিল প্রতিশোধের ষড়যন্ত্রের প্রথম ধাপটিও প্রকাশ করেন সবার সামনে । অবাক করা বিষয় মরিগুচি এমন একটি পদক্ষেপ নেন ওদের বিরুদ্ধে যা মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রণার সাথে এক ধরনের শারীরিক বিপদকে একত্রিত করে ফেলবে, যা একজন মানুষকে ভেতর থেকে নষ্ট করার জন্য উপযুক্ত এবং ভেতর থেকে একটা মানুষকে কুড়ে কুড়ে খাবে এবং ধীরে ধীরে ধ্বংশের মুখে ঠেলে দিবে!! ⏩ মরিগুচি অবসরে যাওয়ার বেশ কিছু দিন পর থেকে, ধীরে ধীরে ওদের সাথে যা যা ঘটতে থাকে, পারিপার্শ্বিক অবস্থার যেই পরিবর্তন ঘটতে থাকে,যেইভাবে হেনস্থ হতে থাকে, তা খুবই প্রখর ভাবে একধরনের অস্বস্থিকর অবস্থায় ফেলে দেয় ওদেরকে। এক প্রকার চরম বিদ্বেষী হয়ে উঠে এবং এক সমুদ্র পরিমান অসুখী দোলা দিতে থাকে ওদের মনের মধ্যে এবং তারা তাদের চারপাশকে গুমোট অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলে। কিন্তু মরিগুচি কি এমন করেছিলো ওদের সাথে? যার জন্যে ওদের কে এক ধরনের মানসিক অশান্তির ভোগান্তিতে পরতে হয় এবং ভেতর থেকে স্তব্ধ করে একদম বরফের মত জমিয়ে ফেলে। মরিগুচি অবসরে চলে যাওয়ার পরবর্তী ঘটনা বা কথা গুলো খুবই জটিল এবং আকর্ষণীয় করে তোলবে পাঠকে ! জানান দিবে আরও রহস্যময় তথ্য এবং উঠে আসবে পারিবারিক অস্থিরতার হৃদয়বিদারক গল্পও। আর বইয়ের শেষে লেখক আশ্চর্যজনক এক সমাপ্তিও দিয়েছে। যা পাঠক পড়লে জানতে পারবে। ⚠️[ পাঠ প্রতিক্রিয়া ] ⏩ অন্য এক ধাচের উপন্যাস হলো কনফেশন্স। যেখানে লেখক তার ক্রাইম থ্রিলার লিখার প্লট খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে এবং তার চিন্তা ভাবনা ঠিকঠাক ভাবে বইয়ে কাজে লাগিয়ে ঘটনা গুলো মসৃন ভাবে বর্ননা করেছে। লেখক প্রতিটি বর্ণনাকারীর গল্পকে বইয়ের অন্যদের সাথে সংযুক্ত করেছে চমৎকার ভাবে । প্রতিশোধ একটি আকর্ষণীয় বিষয় এবং স্বীকারোক্তি হল এটির প্রভাবের চূড়ান্ত গল্প। তিনি এই জিনিসটাই ফুটিয়ে তুলেছেন সুন্দর ভাবে। যখন বই শুরু করেছি প্রথম একটু বোরিং লাগলেও পদে পদে টুইস্ট না পেলেও এক পর্যায়ে গিয়ে মনে হয়েছে বইটা গল্পের চেয়েও একটি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার উপন্যাস বলা যায়। একজন সিঙ্গেল মাদার তার ছোট্ট এক মাত্র মেয়েকে হারানো পরে ঠান্ডা মাথায় কিভাবে জটিল এক প্রতিশোধের নেশায় হিংস্র হয়ে জেগে উঠা, অন্য দিকে ১৩ বছর বয়সী দুই শিক্ষার্থী খুন করার দায়ে জেলে না গেলেও তারা মানসিক ভাবে কি রকম শাস্তি ভোগ করছে, এসব এর জন্য তার আশেপাশের কি রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তার পরিবারের উপর কেমন চাপ সৃষ্টি হয়। এসব মিলিয়ে সুন্দর এক উপভোগ্য উপন্যাস বলা যায়। স্বীকারোক্তি শাস্তি, হতাশা এবং দুঃখজনক প্রেমের সীমা পরীক্ষা করে, যা শিক্ষক এবং ছাত্রের মধ্যে একটি বীভৎস দ্বন্দ্বে পরিণত হয় যা পুরো স্কুলের বাসিন্দাদের বিপদে ফেলে দেওয়ার দৃশ্যও দেখা যায় । এছাড়াও, এই অল্পবয়সী বিভ্রান্ত ছেলেদের মানসিকতার অন্তর্দৃষ্টি হিসাবে, তাদের নিজস্ব পারিবারিক ইউনিটের মধ্যে সহায়ক বা অবহেলামূলক সম্পর্কের দ্বারা কিভাবে গঠন করা হয়েছে, বইটি তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কের দ্বারা কীভাবে গঠন করা হয় সে সম্পর্কেও বিস্তর মন্তব্য প্রদান করে। তবে লেখক বইয়ের শেষে অদ্ভুত এক ঘটনা দিয়ে সমাপ্ত করেছে উপন্যাস। যা পাঠকের মনে একটু হলেও নাড়া দিয়ে উঠবে। ১৮০ পেইজের এই ক্রাইম থ্রিলার উপন্যাস আশা করি পাঠককে হতাশ করবে না। ⏩ [অনুবাদক] বইয়ের অনুবাদের কথা যদি বলি, তাইলে বলবো আহামরি ভালো হয়নি । কারন "কৌশিক জামান" ভাই অরিজিনাল বইয়ের সঠিক মূল ভাবটা নিজ ভাষায় প্রকাশ করতে পারেনি এই অনুবাদিত বইয়ে । মাঝে মাঝে মনে হয়েছে রচনার মত একাধারে সব পড়তেছি। এক লিখা কয়েকবার পড়ে তারপরে বুঝতে হয়েছে এমনও হয়েছে। আশা করি সামনে আরও অনুবাদ করার মানদন্ড ঠিক করবে। ⏩ ব্যাক্তিগত ভাবে যদি বইয়ের উপর রেটিং দেই তাহলে বলবো রেটিং ৪.৫/৫ ।
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
If you like psychological thriller you will like this book. Translation is much better than the other hyped translators.
Was this review helpful to you?
or
বেশ দুর্দান্ত একটি বই।একবার পড়তে বসলে শেষ না করে ওঠাও কঠিন। আমার পড়া বেস্ট বই এর মধ্যে একটি।?❤
Was this review helpful to you?
or
বইটা খুব ই ভালো।আর অনুবাদ এর কথা তো কিছু না ই বললাম অনেক সহজ এবং সাবলীল অনুবাদ।
Was this review helpful to you?
or
❝ভয়ানক স্পয়লার আছে তবে পড়ুন। আপনার বইটা সম্পর্কে কৌতূহল জাগবে। সাসপেন্সে কোনো স্পয়লার নেই।❞ আমাদের দেশে এখন যদি কোনো মানুষকে জিজ্ঞেস করা হয় আমাদের দেশের অন্যতম একটি সমস্যা কী? তবে নিঃসন্দেহে অনেকের উত্তর হবে উঠতি বয়সের ছেলে মেয়ে অথবা টিনেজারদের আচরণ, ভাব ভঙ্গি, চালচলন, মানসিক বিকৃতি ইত্যাদি ইত্যাদি। এর সমাধান কী? হয়তো অনেকে অনেক কথাই বলবে। তাদের অনেক কথারই হয়তো অনেক গুরুত্ব থাকবে। কিন্তু যদি বলা হয় এই সমস্যাটার মূলে আসলে বাবা-মা অথবা পরিবার খোদ নিজেরাই দায়ী? অনেকেই নাক সিটকাবেন। অনেকেই বলবেন ভাই 'আজগুবি কথাবার্তা বইলেন না।' আচ্ছা বললাম না। চলুন তবে একটু ঘুরে আসা যাক একটা সত্যিকারের গল্পে। ২০১৩ সালের আগস্ট মাস। বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান নির্মমভাবে খুন হন তার নিজ বাসভবনে। ১৮ তারিখ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের ময়না তদন্তে বের হয় মাহফুজুর রহমানকে কেউ গলায় ছুরি চালিয়ে এবং তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে এগারোবার পেটে ছুরিকাঘাত করে। এছাড়া এই দম্পতির সন্তানরা তখন নিখোঁজ ছিলেন। একসময় এই দম্পতির বড়ো মেয়ে ঐশী রহমান থানায় গিয়ে নিজেই নিজের পরিচয় দেন এবং কর্তব্যরত পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে৷ এরপর বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক তথ্য। সেই দম্পতিকে খুন করেন তাদের মেয়ে এবং তার বন্ধুরা মিলে। কারণ সম্পর্কে জানা যায় জনাব মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী মেয়ে ঐশীকে তার মতো চলাচল করতে মানা করায় এবং বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যেতে না দেওয়ায় খুন করেছে সে। প্রথমে কফির ভেতরে ঘুমের ঔষধ দিয়ে অজ্ঞান করে তারপর ছুরি দিয়ে নিজ হাতে এবং কিছু বন্ধু মিলে খুন করে তার বাবা আর মা'কে। পুলিশ আরও জানায় ধানমন্ডির এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছাত্রী ছিল ঐশী। সেখান থেকেই অগাধ টাকা পয়সা এবং অভিজাত শ্রেণির মানুষদের সাথে থাকতে থাকতে চাল চলনে পরিবর্তন আসে তার। বিভিন্ন ছেলেদের সাথে থেকে থেকে ইয়াবার সান্নিধ্যে চলে যায় সে। বাবা পুলিশের সদস্য হওয়ায় এসব টের পেয়ে যায় এবং ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দেন। এটাই কাল হয়েছিল মাহফুজ দম্পতির। আলোচিত এ কেস হয়তো অনেকেরই মনে থাকবে। আমি কোনো বইয়ের রিভিউ দিতে গেলে বাস্তবের সাথে এর কোনো মিল আছে কি না তা পরখ করি। বস্তুত খারাপ এবং অবাস্তব শোনালেও প্রায় বইয়ের সাথেই বাস্তবের একটা করুণ মিল পাওয়া যায়। যেটা দিনশেষে আমাদের সমাজের একটা চিত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় অনেক কিছুই সত্যের মধ্যে আবহমান! ★আখ্যানঃ স্কুলের সুইমিং পুলে একটা বাচ্চা মেয়ের লাশ পাওয়া যায়। সবাই ভাবে এটা নিতান্তই দূর্ঘটনা। এমনকি বাচ্চার মা যে কি না ঐ স্কুলেরই শিক্ষক তিনিও ভাবেন ওটা দূর্ঘটনা। কিন্তু কিছু জিনিস তাকে ভাবতে বাধ্য করায় এটা একটা খুন। এবং খুবই ভয়ানক খুন। কেন করা হলো সেই খুন আর কে করলো তা নিয়েই এই বই। আখ্যান ছোটো করে দেওয়ার কারণ মূল আলোচনায় আখ্যান সম্পর্কে বেশ বিস্তারিত থাকবে। ★মূল রিভিউঃ জাপানিজ এই লেখকের কোনো বই আমি পড়িনি কখনও। আখ্যান দেখে ভেবেছিলাম হয়তো কোনো মার্ডার মিস্ট্রি হবে। অথবা কোনো চাইল্ড রেপ এন্ড মার্ডার কেস যা সচারাচর দেখা যায়। পুলিশ হয়তো উদ্ধার করবে কে খুন করেছে তার ইতিহাস। কিছু কিছু জিনিসও প্রেডিক্ট করে ফেলেছিলাম। কিন্তু বইটা শুরু করার পরে বুঝতে পেরেছিলাম কেন অনুবাদক কৌশিক জামান শুরুতেই বলেছিলেন যে তিনি এক চাপ্টার শেষ করেই ভেবেছিলেন এই বই অনুবাদ করতে হবে। ধন্যবাদ ওনাকে এই বই অনুবাদ করার জন্য। পাঁচ অধ্যায়ের এই বইতে এমন কিছু জিনিস ছিল যার কারণে মিশ্র অনুভূতিতে পড়ে গিয়েছিলাম বারংবার। যার কনফেশনই শুনছিলাম মনে হচ্ছিল সে-ই যৌক্তিক। তার দিক থেকে সে আসলেই ঠিক ছিল। কিন্তু তবুও কোথাও যেন কিছু একটা ঘাটতি থেকে যাচ্ছিল। ঘটনার শুরুতে যখন ক্লাস শিক্ষক মরিগুচি তার বিদায় সম্ভাষণ শোনাচ্ছিলেন তখন ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতো আমারও দুঃখ হচ্ছিল। কারণ তিনি কোনো একটা কারণকে কেন্দ্র করে স্কুল থেকে অবসর নিচ্ছেন। কারণটা আর কিছুই না তার মেয়ের সেই ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনা। দুঃখ পেতে পেতে যখন মানুষ একটু সহজ হয় তখন যদি আরেকটা দুঃখ আসে তবে মানুষের বোধশক্তি কিছুটা লোপ পায়। আমারও পেয়েছিল। কারণ ক্লাস টিচার মরিগুচি জানায় তার মেয়ে দূর্ঘটনার শিকার হয়নি বরঞ্চ সেই ক্লাসেরই কেউ তাকে খুন করেছে। পিন পতন নীরবতা নেমে আসে ক্লাসে। এতক্ষণ ধরে দেওয়া সম্ভাষণে যখন খুনের মতো একটা সাসপেন্স চলে আসে তখন সবারই একটা ভয় কাজ করতে শুরু করে। এটা স্বাভাবিক। পুরো স্কুল ছুটি হয়ে যায়। থেকে যায় মিডল ক্লাসের সেই রুমের ছাত্রছাত্রীরা। ধীরে ধীরে মরিগুচি বলেন তিনি জানেন যে কারা তার মেয়েকে খুন করেছে এবং তিনি এও জানেন যে তারা কেন তাকে খুন করেছে। কারণ খুনিরা নিজেরাই সেই বিবরণ তাকে দিয়েছিল। কিন্তু মরিগুচি একটা গেম খেলেন। তিনি সেই খুনিদের নাম প্রকাশ করেন না সবার সামনে। কিন্তু তিনি কৌশলে তাদের বিবরণ এমনভাবে তুলে ধরেন যাতে ক্লাসের সবাই বুঝে যায় খুন কারা করেছে। এরপর তিনি তার প্রধান টুইস্টটা বলেন যা শোনার পরে পুরো ক্লাস পাথরের মতো স্তব্ধ হয়ে যায়। জাপানের বিভিন্ন স্কুলে পরীক্ষামূলক ভাবে মাঝে মাঝে ফ্রি তে দুধ পান করতে দেওয়া হয় স্কুলের শিক্ষার্থীদের। ঘটনাক্রমে সেদিন সেই ক্লাসেও এরকম দুধ পান করার একটা প্রোগ্রাম ছিল। মরিগুচি সবার দুধ খাওয়ার পরেই তার বিদায় সম্ভাষণ দেওয়া শুরু করেছিলেন এবং শেষে সেই খুনীদের বিবরণ দেওয়ার পরে বলেন যে তাদের দুধের মধ্যে এইচআইভি (HIV) বা এইডস রোগীর রক্ত মেশানো ছিল যা এতক্ষণে তাদের হজম প্রক্রিয়ার সাথে মিশে গিয়েছে। প্রতিশোধের একটা মোক্ষম অস্ত্র কাঁধে তুলে নেন মরিগুচি। এবং চলে যান সেখান থেকে পুরোপুরি ভাবে। এরপরই শুরু হয় গল্প। সেই দুধ খাওয়ার পরে খুনিদের কী অবস্থা হয়েছিল এবং কী রকম টুইস্ট ছিল তা নিয়েই পুরো বই। জাপানিজদের শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যান্য দেশ থেকে ধরতে গেলে অনেক উন্নত। তাদের শিক্ষার জন্য যতটা শিক্ষকরা ত্যাগ স্বীকার করেন ততটা হয়তো অন্য কোনো দেশ করে কি না সন্দেহ আছে৷ কিন্তু এই শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যেও কিছু গলদ থেকে যায়। তৈরী হয় কিছু অমানুষ। তবে অমানুষ হওয়ার পেছনে যদি কোনো কারণ থেকে থাকে তবে হয়তো অমানুষকেও সাধারণ লোকে মনে মনে মানুষ মনে করা শুরু করে দেয়। কিন্তু কোনো অপরাধই ছোটো নয় যদিও তার পেছনে হাজার কারণ থেকে থাকে৷ আমাদের সমাজ অথবা বইয়ের সে সমাজের মধ্যে একটা অগ্রহণযোগ্য মিল পাওয়া যায় যা আদৌ খুশির কারণ না বলেই মনে করি। আমাদের সমাজে এমন অনেক বাবা মা আছেন যাদের রোষানলে পড়ে অনেক ছাত্র ছাত্রী বারংবার আত্মহত্যা করতে চায়। বাবা মায়ের অমিল, পারিবারিক কলহ, সন্তানের সামনেই বাবা মায়ের মারমুখী আচরণ একটা বাচ্চাকে তার মূল পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তার চেয়েও ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে যদি বাবা অথবা মা তাদের সন্তানকে বোঝা মনে করে তবে। প্রশ্ন আসে কোনো বাবা-মা কি সন্তানকে বোঝা মনে করতে পারে? উত্তরে বলবো অবশ্যই পারে৷ কোনো দম্পতির যদি ডিভোর্স হয়ে যায় এবং দুজনেই আলাদা আলাদা করে নতুন সম্পর্কে গড়ায় তবে অবশ্যই সেখানে সেই দম্পতির কাছে সন্তান একটা বোঝা। আর এ জিনিসটা যদি সে সন্তান বুঝে যায় যে সে নিজে তার বাবা মায়ের কাছে বোঝা ছাড়া কিছুই না তবে এটা মেনে নেওয়া তাদের ক্ষেত্রে অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তখন সে চায় এই বোঝা থেকে বের হতে নয়তো এই বোঝাকে নিষ্ক্রিয় করতে। কনফেশন্স বইতে এর উদাহরণ এতটা করুণ ছিল যে আমার চোখ ভিজে উঠেছিল মাঝে মাঝে। চ্যানেল আইতে একটা নিউজ দেখেছিলাম কয়েকদিন আগে। বাবা বিদেশ থাকে, মা দেড় লক্ষ টাকার জন্য আরেকজনের সাথে পালিয়ে যায়। ছোট্টো ছেলেটাকে যখন তার মা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় তখন সে জবাব দেয় সে তার মাকে ঘৃণা করে।' এই ছোট্টো কথাটুকু বলার কারণ হচ্ছে ❝কনফেশন্স❞ বইতেও ঠিক এমনই কিছু হয়েছিল। কিন্তু সেখানে সেই সন্তান তার মাকে ভালোবেসে যায়। কারণ ছিল সে তখনও জানতো না যে তার মা তার বাবাকে ডিভোর্স দিয়েছিল আরেকজনের সঙ্গে ঘর করার জন্য। যখন সে জানতে পারে তখন পৃথিবীর সব বসন্ত তার কাছে কাঁদামাটির বর্ষা অথবা প্রখর খরার মরুভূমির মতো হয়ে যায়। ★চরিত্রায়নঃ বইটা পড়ার পরে আমার যে জিনিসটা রিভিউতে তুলে ধরা উচিৎ বলে মনে হয়েছে তা হলো প্রত্যেকটা চরিত্রের একটা বাস্তবিক রূপ। আমরা সাধারণত ভেবে থাকি গল্পের চরিত্র গল্পেই সীমাবদ্ধ। গল্পের বাইরে সেসবের কোনো যৌক্তিক অস্তিত্ব থাকে না। কিন্তু কনফেশন্স বইটা বারবার পড়ার পরে মনে হয়েছে এর সবগুলো চরিত্র প্রত্যেকটা দেশের প্রত্যেকটা সমাজের প্রত্যেকটা কিশোরের মাঝে লুকায়িত আছে। বইটা জাপানের হলেও প্রত্যেকটা লাইন যেন আমাকে চপেটাঘাত করে বলছিল, 'এটা তোর সমাজেরই চিত্র।' সেই আমাদের সমাজের সাথেই এর একটা তুলনা দিচ্ছি। মানুষের বয়সের সবচেয়ে সুন্দর এবং ভয়ানক মুহূর্ত হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকাল। কিশোর-কিশোরীরা এই সময় নিজেদেরকে অনন্য ভাবতে শুরু করে। নিজেকে অন্যের চাইতে বড়ো ভাবতে শুরু করে। জাহির করতে চায় নিজেকে। বড়ো হতে চায় অথবা বিখ্যাত হতে চায় যে কোনো বিষয়ে। সবাই তার বিষয়ে জানবে, সবাই তাকে নিয়ে একটা আলাদা সমীহ করবে এটা তাদের আচার-আচরণে প্রকাশ পায়। যে কোনো মূল্যেই তারা বড়ো হতে চায়। আর এখানেই বাঁধে গণ্ডগোল! বড়ো হওয়ার জন্য তারা প্লে করে কিছু নেগেটিভ রোল। শুরু করে অনৈতিক কিছু জিনিস। এমন না যে তারা নিরর্থক কিছু করছে। তারা অর্থবোধক কিছুই করছে কিন্তু সেই অর্থটার পজিটিভিটি অনেক কম। তারা এটা চিন্তা করে না যে তারা যা করছে তাতে তারা বড়ো হবে নিঃসন্দেহে কিন্তু তারা যে ভুল পথে বড়ো হচ্ছে তা বুঝতে পারে না। তারা ভাবে তাদের কর্ম লোকে ভয় পাবে। লোকে তাকে ভয়ংকর ভেবে আলাদা সমীহ করবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার কিছু চরিত্র আছে যারা একটু চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে চায় তাদের কেউ সমীহ করুক। অন্যকে হিংসে করে। এরকম চরিত্র অহরহ রয়েছে। ❝কনফেশন্স❞ বইতে এত নিদারুণ ভাবে সবগুলো চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে যেন কোনো লেখক একটা কেস স্টাডি করে তার বিবরণ দিচ্ছে। এতটা বাস্তবিক আর যৌক্তিক চরিত্র কোথাও পাইনি আমি। ★অনুবাদঃ আমি ইংরেজি বইটা পড়িনি অতএব বলতে পারবো না অনুবাদ মূল বইয়ের সাথে যথাযথ ছিল কি না। তবে এই বই পড়তে আমার একবারও মনে হয়নি অনুবাদক কোনো অংশে খারাপ লিখেছেন। আমি মনে করি আমি অনুবাদটি পড়ে সন্তুষ্ট। বিশেষত এই বইয়ের কাহিনিটা এতটাই চমকপ্রদ যে আপনাকে অনুবাদ ভালো হয়েছে না খারাপ হয়েছে তা নিয়ে ভাববার সময়ই দেবে না। এই বইটি আমি রকমারিতে কিছু টাকা বেঁচে যাওয়ায় অর্ডার দিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম কি না কী বই হবে। কিন্তু পড়ার পরে মনে হয়েছে বইটাকে কভার দেখে বিচার করাটা আমার একদমই উচিৎ হয়নি। ★উপসংহারঃ রিভিউ অনেক বড়ো হয়ে গেছে জানি। আরও অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম পারিনি। ছোটোবেলায় একটা স্বপ্নের সমাজ দেখতে চাইতাম যেখানে যারা কোনোকিছু না পারে, যারা তাদের কথা কাউকে বলতে পারে না তাদের কদর করা হোক। বড়ো হতে হতে অনেকভাবে বুঝেছি যে এরকম সমাজ পাওয়া অনেক কঠিন। আমাদের সবার জীবনেই নিজস্ব একটা লক্ষ্য থাকে। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই এটা মূখ্য একটা বিষয়। কেউ যদি এ জিনিসটা করা থেকে তাকে বাধা দেয় তবে সে হয় সেই লোকটাকে ঘৃণা করে নয় তাকে তার জীবন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু এরমধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক যে বিষয়টা তা হলো একজনের স্বপ্ন আরেকজনের জীবনে দেখতে চাওয়া। আমাদের দেশে এই বিষয়টা অত্যন্ত মারাত্মক। আমাদের বাবা মায়েরা তাদের ব্যর্থ স্বপ্ন তাদের সন্তানদের কাঁধে তুলে দিয়ে নাক ডেকে ঘুমান এবং জেগে গেলে তাদের জীবনের কিছু তর্জমা শুনিয়ে দেন। কেউ কেউ আবার সন্তানদেরকে ছেড়ে দেন তাদের নিজ ইচ্ছায়। তারা মনে করতে থাকে তাদের কেউ আর বাধা দিতে পারবে না। বইটিতে বয়ঃসন্ধিকালের যে প্রভাব কত মারাত্মক হতে পারে তা জানা যাবে নিঃসন্দেহে। আমাদের মা বাবারা যদি এই সময়টাতে আরেকটু সতর্ক হন তবে হয়তো রিভিউর প্রথমে দেওয়া সেই দম্পতির মতো অবস্থা হবে না। অথবা বইয়ের সেই করুণ কাহিনির মতোও হবে না। শেষের টুইস্টটা আপনাকে বুঝিয়ে দেবে মানুষ সবসময় যা চায় মানুষ সবসময়ই তা পায় না। এই ব্যতিক্রম হতে দরকার হয় একজন শিক্ষকের। মরিগুচির মতো শিক্ষক প্রত্যেকটা সমাজে দরকার। আই মিন প্রত্যেকটা সমাজে। বইঃ কনফেশন্স লেখকঃ কানায়ে মিনাতো অনুবাদকঃ কৌশিক জামান প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রথম প্রকাশকালঃ ২০১৭ মূল্যঃ ২৪০ টাকা। লেখাঃ বি.এম.পারভেজ রানা
Was this review helpful to you?
or
জাপানিজ এনিমের মতোই অনবদ্য।
Was this review helpful to you?
or
দারুন এক মিস্ট্রি থ্রিলার? অনুবাদক বিশেষ ধন্যবাদ deserve করে❣️
Was this review helpful to you?
or
All the books are outstanding and I must say that your service is very satisfiable.
Was this review helpful to you?
or
this is by far one of the best thrillers i have ever read! just read the book without any prior knowledge about the plot or what it is about. you'll be thrilled, guaranteed.
Was this review helpful to you?
or
বইটি ক্রাইম থ্রিলার ধাচের তবে সচরাচর অন্যান্য থ্রীলার থেকে আলাদা। গল্পটি একজন স্কুল টিচার ও তার মাধ্যমিক স্কুলের ২ জন ছাত্রের। যারা তার চার বছরের একমাত্র কন্যা সন্তানকে হত্যা করে। সেই শিক্ষিকার ওই দুই ছাত্রের প্রতি নেওয়া প্রতিশোধ চমকপ্রদ । উপন্যাসটিতে হত্যা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছয়জন মানুষের প্রেক্ষাপটে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। বইটি পড়ার সময় পাঠক সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবে এটা নিশ্চিত। আমাদের চারপাশে অনেক রকমেরই অপরাধ সংঘটিত হয় তার সাথে সম্পৃক্ত থাকে একাধিক অপরাধী। এই সমস্ত অপরাধীদের তাদের নিজস্ব প্রেক্ষাপটে তাদের কৃত অপরাধ আসলে তাদের কাছে কোন অপরাধ বলেই মনে হয় না। তাদের নিজস্ব যুক্তি এবং চিন্তা থাকে ওই অপরাধটি করার পেছনে। এটা সত্য যে অপরাধের মানসিকতা একদিনে তৈরি হয় না। মানুষ যদিও জন্মগতভাবে অপরাধপ্রবণ তবুও তার অপরাধী মানসিকতা পরিপূর্ণতা পায় তার আশেপাশের পরিস্থিতি থেকে। উপন্যাসটি এইরকমই ইঙ্গিত দেয়। তবে উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্যে কে আসলে অপরাধী এবং কে মানসিকভাবে অসুস্থ? পাঠকের মনে এই প্রশ্ন বারবার জাগরীত হবেই। জাপানে বেস্ট সেলার এই বইটি আসলেই আপনার চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
Was this review helpful to you?
or
এই বইটি আমার জাপানি থ্রিলার হিসাবে প্রথম বই। এবং এটি পড়ার পর আমি দুই দিন শুধু বেছি মানুষ এমনও হতে পারে যাই হোক বইটির অনুবাদখুবই ভালো ।
Was this review helpful to you?
or
স্কুল শিক্ষিকা মরিগুচির একমাত্র মেয়ে মানামি স্কুলের সুইমিংপুলে ডুবে মারা গেছে। সবাই এটাকে দূর্ঘটনা হিসেবে ধরে নিচ্ছে ।সে জানে তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে।মরিগুচি কিভাবে তার মেয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিবে সেটাই হচ্ছে এই বইয়ের কাহিনী। সারাবিশ্বে প্রশংসিত হওয়া জাপানি থৃলার কনফেশন্স ভিন্নধর্মি সাসপেন্সের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।গল্পটা চমৎকার। আমাদের দেশে কবে এরকম ভালো মানের মৌলিক বই বাহির হবে সেটাই ভাবি
Was this review helpful to you?
or
মরিগুচি একজন স্কুল শিক্ষক, তার মেয়ে মানামি স্কুলের সুইমিংপুলে ডুবে মারা যায়। সবাই এটাকে একটা সাধারন দুর্ঘটনা হিসেবে ধরে নেয়। কিন্তু মরিগুচি জানে তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। আর খুন করেছে তার ছাএদেরই একজন। এখানে মরিগুচির দুই দিক রয়েছে এক দিকে সে একজন মা আরেকদিকে সে একজন শিক্ষিকা। তাই মরিগুচি কি খুনিকে ছেড়ে দিবেন? নাকি খুনি উপযুক্ত শাস্তি দিবেন ? যারা জাপানিজ থ্রিলার আগে কখনো পড়েন নি তাদের কাছে প্রথম দিকে বোরিং একটা গল্প মনে হবে। কিন্তু আপনি যদি পড়াটা কনটিনিউ করেন দেখবেন হঠাৎ হঠাৎ চমকে যাবেন ।
Was this review helpful to you?
or
আপনি কতটুকু জানেন আপনার সন্তান ছোট ভাই বা বোন বা ভাগ্নে কিংবা ভাগ্নিটিকে নিয়ে। কি করছে কাদের সাথে মিশছে কি ঘটছে তার মনে কি ভাবছে সে। আত্মহত্যা, কিংবা কিশোর অপরাধ যখন তুংগে। জাপানের এমনিই একটি ছোট্ট শহরের উঠতি বয়সের কিশোরদের মনে তখন হাজারো কষ্ট খোব আর অনাকাঙ্ক্ষিত আকাংখা। নিজেকে উদাহরণ হিসেবে পেতে মানুষের লক্ষ্য বা আকর্ষনের কারণ হতে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে হত্যাযজ্ঞের মত ঘৃণিত কাজ করে সাবলীল ভাবে। আর তারিই ভুক্তভোগী হন এক নিরীহ মা। একজন সিংগেল মা তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে মিডল স্কুলের শিক্ষাকতায় আছেন। ব্যক্তিগত জীবনের কঠরতা তাকে তার সুদিনে নিতে বাধা দিতে পারিনি। যখনি সে সুখের দেখা পাই ঠিক যেন তখনি কোন অদৃষ্টের থাবায় হারিয়ে ফেলে সব কিছু। প্রতিশোধ শুধু। তাদের মনে সেই অনুভূতি আনাতে হলে ঠিক তাদের মতই ভাবতে হবে। নিষ্পাপ চোখের গভীরে বয়সের অজুহাতে লুকিয়ে থেকে যে পশু আছে তাকে শিকার করতে হলে তার মতই ভাবতে হবে। আর মৃত্যু তার উত্তর হতে পারেনা। জীবন যেন শাস্তি হয় এমন কিছু।।।।। থৃলারটি পরতে যথেষ্ঠ সময় নিলাম। ধন্যবাদ লেখক কৌশিক জামান ভাইকে। মুখ বন্ধে লেখিকা এবং তার লেখনীর যে প্রশংসা আর প্রতিমূর্তি তুলে ধরেছেন পড়া শেষে তা যথার্থ বলে দাবী করা যায়। অসাধারণ। যুগোপযোগী এই বইটি আমরা যারা বড়রা আছি তাদের জন্যে অনেক শিক্ষনীয় হবে। আমরা আমাদের সন্তান নিয়ে ভাবতে শিখি সময় দিতে শিখি। এমন কিছু করি যাতে বন্ধু হতে পারি। হয়ত একটু দামী স্কুলে পড়াতে গিয়ে টাকার পিছে ছুটি আর ছেলে বা মেয়ে অপেক্ষা করতে করতে বিছানায় ঘুমিয়ে গেল। মা হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের মানুষ গড়ার কারিগর। স্বশিক্ষিত হন আর সুশিক্ষিত মাতৃত্বের মানে অনেক বড় যা যুগ যুগ আর ইতিহাস ধরে প্রমান দিয়ে আসছে৷ যখন সন্তান আসবে কোলে তখন আপনি অন্য মানুষ যা সিদ্ধানই নিন সন্তানকে নিয়ে ভাবুন। সন্তানের কাছে থাকুন তাকে বুঝতে শিখুন। আপনার ভূল সিদ্ধান্ত শুধু আপনি কিংবা আপনার সন্তান নয় গোটা দেশ ও দশের শংকা হতে দেরি হবেনা।ঠিক যেমনি আপনার পরিচর্চায় সেই সন্তানটি হয়ে উঠবে দেশরত্ন।
Was this review helpful to you?
or
এই গল্পের সব থেকে সুন্দর বিষয় হচ্ছে সবার চিন্তাভাবনা আর কোনো কাজের প্রতিক্রিয়া কেমন হয় সেটার খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা আছে।কেউ দোষ করলে তার বা তার পরিবারের কিংবা যার প্রতি দোষ করা হয় তার মনের অবস্থা বা চিন্তাভাবনা বিস্তারিত বর্ণনা করা আছে।স্কুল টিচার মরিগুচির মেয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেলেও তার মা আসল ঘটনা বের করে।নিছক ছোট্ট ব্যাপার বা ছেলেমানুষীর উপর নির্ভর করে কতগুলো মানুষের জীবন পরিবর্তন হয়ে যায় সেটাই মূল কাহিনি। গল্পের গাথুনি এবং সবার কনফেশন এমন যে আপনাকে একদম শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে।অনুবাদ যথেষ্ট সুন্দর এবং সাবলীল।পারসোনাল রিডিং ৫/৫
Was this review helpful to you?
or
সত্যি বলতে কানায়ে মিনাতোকে যে এমনি এমনি কুইন অফ ইয়ামিসু বলা হয় না তার প্রমাণ এই বইটা পড়ে পেয়েছি... আমার পড়া অন্যতম সেরা ক্রাইম-থ্রিলার বই।প্রথম দিকে একটু tragedy টাইপ ধাঁচে কাহিনী আগাতে থাকলেও ধীরে ধীরে confession গুলো এমন ভাবে মোড় নিতে পারে তা আসলে লেখিকার দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ। শেষের দিকে এমন ভাবে মন্ত্র-মুগ্ধ করে রেখেছিলো যে এক মুহূর্তের জন্য গল্প ছেড়ে উঠতে পারি নি। মানুষের psychology এর দিকগুলো খুব সুন্দর করে প্রকাশ করেছেন। সত্যি বলতে মানামীর মৃত্যুর জন্য দায়ী থেকে শুরু করে মৃত্যুর শিকার কাউকেই যেনো দোষী মানতে পারি নি আমি.... সবার confession এ তাদের নিজেদের চোখে নিজেদের victim হওয়াটা যেনো সব পাঠকদের কেও এক মুহূর্তের জন্য দ্বিধায় ফেলে দিতে বাধ্য। And অনুবাদক এর আরো বেশ কয়েকটা বই পড়েছি আমি এবং প্রতিবারই মুগ্ধ হতে বাধ্য হয়েছি। যায় হোক ক্রাইম থ্রিলার পাঠকদের জন্য অবশ্যই পড়ার মত একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
কানায় মিনাতো একজন তুমুল জনপ্রিয় জাপানি থ্রিলার লেখক ।অনেকদিন খুঁজছিলাম এই ধরনের একটা বই যে বইটা পড়ে মনের মধ্যে একটা তুমুল আন্দোলন সৃষ্টি করা যায় কানাইয়া তো মূলত একজন গৃহিণী কিন্তু তার সৃষ্টি সাহিত্যের একটি অন্যতম দিক তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে ।জাপানের বেস্ট সেলারের মর্যাদা তিনি পেয়েছেন ।2014 সেরা দশটি থ্রিলার উপন্যাসের তালিকায় স্থান করে নেয় এই বইটি ।অনেক দিন সময় নিয়ে বইটি পড়েছি খুব আস্তে আস্তে এবং বুঝতে সক্ষম হয়েছে কিভাবে একজন মানুষের ভেতর একটি খুন বা একটি ঘটনা একটি জীবন ব্যবস্থাকে সমাজব্যবস্থাকে আন্দোলন করে। সর্বোপরি দেখতে গেলে আমার এই বইটিতে যদি স্থান দিতে হয় আমি অবশ্য এটাকে দশে নয় দিবো।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ . অদ্ভুত সুন্দর থ্রিলার । এত সুন্দর করে লিখা . অনুবাদ খুব ই চমৎকার !!!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুলাই #বই_রিভিউ_১৬ #কনফেশন্স #লেখক: কানায়ে মিনাতো (অনুবাদ: কৌশিক জামান) #বইয়ের_ধরণ: থ্রিলার, মার্ডার মিস্ট্রি #প্রকাশনী: বাতিঘর #পৃষ্ঠা: ১৮৯ #মুদ্রিত_মূল্য: ২০০ টাকা #ব্যক্তিগত_রেটিং: ৭/১০ . . জাপানের এক স্কুলের শিক্ষিকা মরিগুচির পিচ্চি মেয়ে মানামি স্কুলের সুইমিংপুল এ পড়ে মারা যায়। কিন্তু সেটা কি আদতে সাধারণ কোনো মৃত্যু ছিল? নাকি ছিল খুন? মরিগুচির স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা আসলে জাপানের তথা বর্তমান বিশ্বের সব টিনেজারদের আসল অবস্থা তুলে ধরেছে। পুরো উপন্যাসটিই আসলে কয়েকজনের কনফেশনের বর্ণনায় লেখা। . . মরিগুচির মেয়ের মৃত্যুর পর সে এটা সাধারণ মৃত্যু বলে মেনে নেয় না। কিছু তদন্তের পর সে জানতে পারে তার স্কুলের দুজন বিপথগামী স্টুডেন্টের হাতেই খুন হয় তার মেয়ে। তিনি এর প্রতিশোধ নিতে সেই দুজন ছাত্রের শরীরে প্রবেশ করায় এইডসের জীবাণু! যে মরণঘাতি রোগে আক্রান্ত স্বয়ং মরিগুচির হাজবেন্ড। . . তার স্কুলের খ্যাপাটে পাগল ধরনের অতি মেধাবী টাইপের এক স্টুডেন্টের মাধ্যমেই মূলত খুন হয় মরিগুচির মেয়ে। যদিও তার সহযোগি ছিল তার অন্য এক সহপাঠী। তারপর মরিগুচি প্রতিশোধের যে সূক্ষ্ম প্লান করে সেটা কিভাবে তিলে তিলে দুজন টিনেজারকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয় তা সত্যিই চমকপ্রদ। . . টিনেজাররা তাদের ওই বয়সে কিভাবে বিপথে যায় বা কিভাবে ওই বয়সটা পার করে সেটা আসলেই ভাবিয়ে তোলে। একজন ডিপ্রেশড কিশোর যে কতটা হিংস্র হয়ে উঠতে পারে কিংবা চাইলে কত কিছুই করতে পারে সেটার নির্মম বর্ণনা পাই এই বইতে। এটাই আমার পড়া প্রথম কোনো জাপানী থ্রিলার। এভাবেও থ্রিলার লেখা যায় আগে ধারণা ছিলনা। ওয়েস্টার্ন বা আমাদের দেশের থ্রিলার লেখকদের মত টুইস্টে পূর্ণ কোনো থ্রিলার ছিলনা এটি। বরং বলা যেতে পারে কাহিনী নির্লিপ্তভাবে এগিয়েছে। . . প্রথম দিকে পড়তে অবশ্যই বোরিং লেগেছে এবং লাগাটাই স্বাভাবিক কারন আমরা সাধারণত থ্রিলার বলতে যা বুঝি 'একটু পর পর টুইস্ট' এটি সেরকম ছিলনা। ভিন্ন স্বাদের থ্রিলার হওয়ায় উপভোগ করেছি কাহিনী। অনুবাদ ও যথেষ্ট প্রাঞ্জল ছিল। সবশেষে হতাশ হইনি। . #হ্যাপী_রিডিং
Was this review helpful to you?
or
বই - কনফেশন্স .............................................................................................................................................................................................................................................................লেখক - কৌশিক জামান ..............................................................................................................................................................................................................................................................প্রাপ্ত নম্বর - ১০০ এর মধ্যে ৪০
Was this review helpful to you?
or
কনফেশন্স অর্থ জবানবন্দি বা স্বীকারোক্তি। বইটি পাঁচ চরিত্রের ছয়টি জবানবন্দিতে লেখা নিয়ে গঠিত এই বই। একটি গল্প যা পাচজন মানুষ তার নিজের দিক থেকে নিজের মতো করে বলেগেছেন এবং শেষে একটি প্লট এর মাধ্যমে রহস্যের সমাধান এ গল্পের শেষ। কীভাবে বাচ্চাদের ভুল থেকে শেখাবেন? শিশু অপরাধীদের সাথে সমাজকে কীভাবে আচরণ করা উচিত? শিক্ষক এবং তাদের ছাত্রদের মধ্যে কোন বাধা থাকা উচিত? এটি এমন একটি সমাজকে চিত্রিত করে যা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যেখানে বাচ্চারা হয় মারাত্মক অপরাধ করে সুনাম ও গৌরব অর্জন করে অথবা তারা হিকিকোমোরি ("শাট-ইনস") হয়ে নিজেকে তালাবদ্ধ করে পুরোপুরি সমাজ ত্যাগ করে। এটা শুধু একটা থ্রিলার বই না এটা কিশোরদের উচ্ছন্নে যাওয়ার গল্প, মায়ের প্রতি সন্তানের ভালবাসার গল্প, আদরে আদরে ছেলেকে বাদর করার গল্প, মায়ের প্রতি সন্তানের অবহেলার ফল কি হতে পারে তার গল্প,প্রতিশোধ ও ঘৃণার গল্প ৷ এটা এমন এক গল্প যা পরা উচিত প্রতিটা বাবা-মায়ের এবং সন্তানের ৷ এই গল্পের আলোকে আমাদের সমাজে কিশোরঅপরাধ প্রবনতা এবং বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের সমস্যাগগুলো তুলে ধরা হয়েছে,বলা যেতে পারে যে এই সময়ে তাদের মানসিক এবং শারিরীক যে পরিবর্ত তা কতটা ভয়ংকর তার একটা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, আবার বাবা মা দের ব্যপারটা নিয়ে সচেতনতার একটি দিকও আছে, সুতোরং বলা যায় অসাধারন একটি গল্প। #কাহিনী সংক্ষেপঃ স্কুল শিক্ষক মরিগুচির একমাত্র মেয়ে মানামি স্কুলের সুইমিংপুলে ডুবে মারা গেলে সবাই এটাকে নিছক একটি দুর্ঘটনা হিসেবেই ধরে নেয়। কিন্তু আসলেই কি তাই, নাকি কেউ মানামিকে খুন করেছে? যদি করে থাকে তাহলে কে বা কারা? আর কেনই বা এরকম একটি খুন সংঘটিত হলো? মরিগুচির পক্ষে কি মানামির মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করে প্রতিশোধ নেয়া সম্ভব হবে? যদি সম্ভব হয় তবে সেটা কিভাবে? যাই হোক না কেন, ঘটনা প্রবাহ এমনভাবে এগোতে থাকে যে, কেউই কনফেশন না করে পার পায় না। সারাবিশ্বে প্রশংসিত হওয়া আরেকটি জাপানি থৃলার ‘কনফেশন্স’ পাঠককে ভিন্নধর্মি সাসপেন্সের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে। বই সুন্দরতম লাইন ★"আমাদের মূলযবোধ কি হবে তা ঠিক করে আমরা কোন পরিবেশে বড় হচছি তার উপর। অনযকে কিভাবে বিচার করবো, তার মানদণড কি হবে, এসব আমরা শিখি পরথম যে মানুষের সাথে পরিচয় হয় তার থেকে। বেশীরভাগ কষেতরেই তিনি হলেন আমাদের মা"। ★"দুর্বল মানুষ তাদের চেয়েও দুর্বল মানুষকে শিকার হিসাবে বেছেনেয়। আর শিকারের সামনে শুধু দুটো পথ খোলা থাকে মরে গিয়ে সব কষ্ট চুকিয়ে ফেলা অথবা কষ্ট সহ্য করে েবঁচে থাকা।"
Was this review helpful to you?
or
ডার্ক থ্রিলার বলতে যা বোঝায় সব এই উপন্যাসে উপস্থিত। ধন্যবাদ জানাই কৌশিক দা কে এত সুন্দর অনুবাদ করার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
একবাক্যে সরল করে বললে গল্পটা প্রতিশোধের। অএথার কনফেশন্স একটি প্রতিশোধের গল্প। কিন্তু সরলীকরণ এ উপন্যাসের ক্ষেত্রে খাটে না। কেননা ঘটনা কতটা জটিল, তা জানাতেই যেন এই উপন্যাসের সৃষ্টি। জাপানের এক স্কুলের শিক্ষিকা মরিগুচি একদিন ক্লাসে একটি গল্প বলতে শুরু করেন। সে গল্প থেকে আমরা উপন্যাসের ভেতরে যেতে থাকি আর দেখি একটার পর একটা ঘটনা। কিন্তু প্রতিটি ঘটনা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। সে কথা আমরা জানতে পারি শেষের দিকে। একটি প্রতিশোধ আমাদের শিক্ষা দেয় অনেক কিছু। জাপানে কিশোর তরুণদের মধ্যে থাকা চাপা অবদমন এবং অপরাধের কথা জানায় এ উপন্যাস। বইটা ভালো, এবং সময়োপযোগী। এই ব্লু হোয়েলের দুনিয়ায়, যখন উঠতি বয়সী ছেলেমেয়ে ভিলেনকে বেশি পছন্দ করে এবং তাদের মতো হতে চায় আর বাবা মা তাদের ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে অজ্ঞ বা নিজেদের চিন্তা নিয়েই খুশি, তখন এমন সব জঘণ্য ঘটনা ঘটতে পারে যা ভাবা কষ্টকর। সাইকোলজি নিয়ে লেখিকা ভালো খেল দেখিয়েছেন। কৌশিক জামানের অনুবাদও চমৎকার ঝরঝরা।
Was this review helpful to you?
or
After calling off her engagement in wake of a tragic revelation, Yuko Moriguchi had nothing to live for except her only child, four-year-old Manami. Now, following an accident on the grounds of the middle school where she teaches, Yuko has given up and tendered her resignation. But first she has one last lecture to deliver. She tells a story that upends everything her students ever thought they knew about two of their peers, and sets in motion a maniacal plot for revenge. Narrated in alternating voices, with twists you'll never see coming, Confessions explores the limits of punishment, despair, and tragic love, culminating in a harrowing confrontation between teacher and student that will place the occupants of an entire school in danger. You'll never look at a classroom the same way again.
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ে আমি কিছুটা হতাশ। একে তো একেবারে স্লো কাহিনী। তার উপর অনুবাদের প্রচুর হাস্যকর ভুলভ্রান্তি। টাকা দিয়ে বই কিনে যদি দেখি বইয়ের কাহিনী ম্যারম্যারে আর অনুবাদ মাঝারি মানের, তাহলে একটু খারাপ লাগাই স্বাভাবিক!
Was this review helpful to you?
or
গল্পকথনের কৌশল খুব চমৎকার। দারুণ বই।
Was this review helpful to you?
or
I think the author works very hard. But still I would have loved some better word choices. ভাষা সাবলীল করতে যেয়ে যদি ভাষার শ্রুতিমধুরতা চলে যায় তাহলে যত ভাল অনুবাদ ই হোক না কেন ভাল লাগে না। আশা করি পরবর্তী অনুবাদে ভাষা আরো ভালো হবে।
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ খুব দ্রুত বইটি পাঠাবার জন্য । বইয়ের শেষের ২০ টি পাতা কোন এক কারনে কুচকে গেছে । লেখা গুলা পড়া মুস্কিল ।
Was this review helpful to you?
or
লেখিকা যেভাবে প্লট সাজিয়েছেন, পাঁচজনের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে- তা অনবদ্য। কোথাও একটুও ঝুলে যায়নি, ভীষণ রকম অ্যাডিক্টিং। আর জাপানিজ থ্রিলার বলতেই প্লট টার্ন আর টুইস্ট থাকে প্রচুর, এটাও ব্যতিক্রম নয়। প্রতি অধ্যায়ে একবার করে ভীষণরকম নাড়া খেতে বাধ্য পাঠক।ভালো লাগা আরো বেড়ে গিয়েছে আমাদের সমাজের কিছু অপ্রিয় দিক উঠে আসায়। আসলেই তো, আমরা কি আগামী প্রজন্মের মূল্যবোধের ওপর কোন প্রকার নজর দিচ্ছি? কিছু চাওয়া মাত্র তাদের অন্যায় আবদার মেটানো, প্রশ্রয়দান -এসবের একটা খারাপ প্রভাব সমাজে পড়তে বাধ্য। লেখিকা মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহার করেছেন সেসবই। জাপানি লিটারেচার আসলে সবদিক থেকে আলাদা; তা আপনি ফিকশন/নন ফিকশন/হরর/থ্রিলার যেকোন আংগিক থেকেই বিচার করুন না কেন! চিরাচরিত অথবা গতানুগতিকতার ধার না ধেরে সম্পূর্ণ নতুন আবহ সৃষ্টি করতে জাপানিজ লেখকরা বরাবরই পারদর্শি। হারুকি মুরাকামি আমার প্রিয় লেখকদের একজন, জুঞ্জি ইতো প্রিয় কার্টুনিস্ট/হরর স্টোরিটেলার। এর বাইরে কাজুয়ো ইশিগুরু, র্যু মুরাকামি, ইয়োকো ওনো আর মিশিও কাকু'র টুকটাক বই পড়া হয়েছে আগে-ব্যস জাপানিজ বই বলতে আমার দৌড় সেপর্যন্তই। প্রথমবারের মতো জাপানিজ থ্রিলারের সাথে পরিচিত হই এবছর। কিয়েগো হিগাশিনোর বিখ্যাত থ্রিলার 'দ্য ডিভোশন অফ সাসপেক্ট এক্স' পড়ে সত্যিকার অর্থেই অবাক হয়েছিলাম, থ্রিলার এভাবেও লেখা যায়! এরপর নিজ দায়িত্বে goodreads ঘেটে বের করেছিলাম বিখ্যাত কিছু জাপানিজ কিছু থ্রিলার/মিস্ট্রি জনরার নভেল লিস্ট। 'জার্নি আন্ডার দ্য মিডনাইট সান' শেষ করার পর ইচ্ছা ছিল আস্তেধীরে একটা একটা করে পড়ব। কানায়ে মিনাতো'র 'কনফেশন্স' এবং 'পেনান্স' রিডিংলিস্টের টপেই ছিল বলা যায়। এবং এরই মাঝে...বিনা মেঘে বজ্রপাত! কনফেশন্স এর অনুবাদের ঘোষণা! আর তাই প্রকাশিত হওয়া মাত্র "গরম বই" পড়ে ফেলা! কৌশিক ভাই জাপানিজ বই ভালো অনুবাদ করবেন, এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল না। হারুকি মুরাকামি অনুবাদ করা জটিল এবং কষ্টসাধ্য কাজ। নরওয়েজিয়ান উড এর অনুবাদে তিনি বেশ সহজ স্বাভাবিক ভাষা ব্যবহার করেছিলেন, মুরাকামি ফ্লেভার তাতে পুরোদস্তুর বিদ্যমান ছিল। 'কনফেশন্স' এর অনুবাদকে এক কথায় নিখাদ বলা যায়, দুই কথায় বললে অলমোস্ট পার্ফেক্ট!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর জাপানিজ থ্রিলার বইগুলোর তালিকা করা হলে সেরা দশ বইয়ের মধ্যে প্রথম দিকে থাকবে কানায়ে মিনাতোর কনফেশন্স। হোম ইকোনোমিক্সের শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরবর্তীতে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঘরকন্না শুরু করেন। সংসার জীবনের দৈনন্দিন জীবনের কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন বলেই লেখালেখির দিকে ঝুঁকে পড়েন৷ তার লেখা প্রথম বই কনফেশন্স, যা প্রকাশ পাবার সাথে সাথেই বেস্ট সেলারের মর্যাদা পায়। বইটির কাহিনী নিয়ে নির্মিত শর্টফিল্ম অস্কারে শর্ট লিস্টে স্থান পেয়েছিলো। কাহিনী সংক্ষেপ গল্পের শুরুটা হয় জাপানি এক স্কুল শিক্ষক মরিগুচির ভাষ্যে। স্কুলের বছর শেষের ক্লাসে, নিজের শেষ ক্লাসে লেকচারের মতো করে মরিগুচি বর্ণনা করে গেছে, কীভাবে এই ক্লাসের দুইজন ছাত্র তার একমাত্র মেয়ে মানামিকে খুন করেছে। যদিও প্রথম অবস্থায় সুইমিংপুলে খুঁজে পাওয়া নিথর মানামির মৃত্যুটা দুর্ঘটনা বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু সত্যিটা জানতে পেরে মরিগুচি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুল ছেড়ে যাবার আগে মেয়ে হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে যাবেন। তাই অপরাধী দুজনের দুধের কার্টনে এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত মিশিয়ে দিয়েছেন। অপরাধীদের একজন হলো সুয়া, যে এই পরিকল্পনার মূল হোতা। এমন একটা ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা করার কারণ, ছোটবেলায় তার নাবা মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর সে তার মার কাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়। তাই সে তার মায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছে কোনোভাবে বিখ্যাত হয়ে। নিজেকে প্রচন্ড মেধাবী হিসেবে ভাবা এই ছেলে খুবই অহংকারী। স্কুলে ভালো গ্রেড পেয়ে সে ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছিল। কিন্তু সে তার নিজের মেধা ভালো কোনো কাজে ব্যবহার করেনি। মরিগুচি যেহেতু ক্লাসের সবার সামনে মানামির মৃত্যুর গল্পটা শুনিয়েছিলেন, তাই ক্লাসের বাকি ছাত্ররা সুয়ার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছিলো। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্য ছেলেটির নাম নাওকি। মূলত সে ই খুন করেছে মানামিকে৷ মরিগুচির লেকচার তাকে খুবই প্রভাবিত করলো। সে মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়লো। নিজেকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দেওয়ার সাথে সাথে আরোও কিছু উল্টাপাল্টা কাজ করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত এমন একটা কাজ করে বসলো, যা সে করতে চায়নি। ক্লাসের অন্যান্যদের বর্ণনাতেও গল্পের কাহিনি এগিয়ে গেছে৷ তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ঘটনাটির প্রভাব বর্ণনা করে গেছে। শেষ পর্যন্ত কী ঘটবে? সুয়া আর নাওকি কি এইডসে মারা যাবে? নাকি অন্য কোনোভাবে মরিগুচি তার মেয়ে মানামি হত্যার প্রতিশোধ নেবেন? পাঠ প্রতিক্রিয়া বর্তমানকালের কিশোর কিশোরীরা খুব অল্পতেই হতাশায় আর হীনমন্যতায় ভোগে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এই ধরণের থ্রিলার তাই পাঠকদের সচেতন করে তুলবে। সেই সাথে পরিবারের কিশোরদের অন্ধকার ভাবনা থেকে বিরত করা যাবে। জাপানিজ থ্রিলারগুলো শুরুর দিকে একটু ধৈর্য্য নিয়ে পড়তে হয়। কারণ এই বইগুলো শুরুতে একটু ধীর গতির হয়ে থাকে। এছাড়াও জাপানিজরা তাদের থ্রিলার সাহিত্যে কেমন অদ্ভুত এক ডার্কনেস তৈরি করে শেষদিকে চমকে দেওয়ার জন্য টুইস্ট রাখে। বইয়ের ডার্কনেস অনেক পাঠককেই মানসিকভাবে অবসাদে ফেলে। বই পড়তে পড়তেই মনে হবে, কেন এরকম একটা পৃথিবীতে জীবনযাপন করছি, যেখানে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা অপরাধীতে পরিণত হয়। কী এক অদ্ভুত ভয় আষ্ট্রেপিষ্ঠে চেপে ধরে। নৈতিকতা আর ন্যায় বিচারের উদাহরণ পাওয়া যাবে এতে। তবে খুব বেশি দুর্বল চিত্তের পাঠক হলে না বইটি পড়াই উত্তম। বিখ্যাতদের বইটি সম্পর্কে মন্তব্য অ্যালেক্স মারউড: জাপানের কিশোরদের উচ্ছন্নে যাওয়ার একটি ডার্ক, ডিপস্টিক গল্প। দ্য ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল: পাঠকদের সাবধান করতে চাই... কানায়ে মিনাতোর কনফেশন্স পড়তে গিয়ে আপনাদের একাধিকবার অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়তে হবে। অনুবাদ প্রসঙ্গ জাপানিজ ভাষায় লেখা কনফেশন্স বইটি ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছে। ইংরেজিতে পড়তে না চাইলে বইটির বাংলা অনুবাদ পড়তে পারেন। বাতিঘর প্রকাশনী থেকে বইটির অনুবাদ করেছেন কৌশিক জামান। ঝরঝরে অনুবাদে বইটি পড়তে বেশ ভালো লাগবে। অনুবাদক কঠিন শব্দ এড়িয়ে সহজ সহজ বাংলা শব্দে বইটি উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। তাই বাংলা অনুদিত বইটি সহজপাঠ্য। লেখক পরিচিতি কানায়ে মিনাতো একজন তুমুল জনপ্রিয় জাপানিজ ক্রাইম ফিকশন লেখক। জাপানিজ ভাষায় ইয়ামিসু হলো থ্রিলারের এক উপধারা, যেখানে মানুষের চরিত্রের অন্ধকার দিকটি তুলে ধরে। কানায়ে মিনাতোকে কুইন অব ইয়ামিসু বলে অভিহিত করা হয়। তার লেখা প্রথম বই কনফেশন্স বের হবার পর কেবল জাপানেই তিন মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। কানায়ে মিনাতোর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বই হলো- গার্লস, দ্য চেইন অব ফ্লাওয়ারস, দ্য এন্ড অব দ্য স্টোরি, দ্য নাইট ফেরিস হুইল ইত্যাদি। লেখালেখির জন্য কানায়ে মিনাতো যেসব পুরস্কার পেয়েছেন, তা হলো- জাপানিজ বুকসেলারস অ্যাওয়ার্ড, মিস্ট্রি রাইটার্স অব জাপান অ্যাওয়ারড এবং অ্যালেক্স অ্যাওয়ার্ড। বই পরিচিতি বই: কনফেশন্স লেখক: কানায়ে মিনাতো অনুবাদক: কৌশিক জামান প্রচ্ছদ: ডিলান পৃষ্ঠা: ১৮৯ মূল্য: ২০০ প্রকাশনী: বাতিঘর প্রকাশনী অনুবাদের প্রকাশকাল: আগস্ট ২০১৭
Was this review helpful to you?
or
"আমাদের মূল্যবোধ কি হবে তা ঠিক করে আমরা কোন পরিবেশে বড় হচ্ছি তার উপর। অন্যকে কিভাবে বিচার করবো, তার মানদণ্ড কি হবে, এসব আমরা শিখি প্রথম যে মানুষের সাথে পরিচয় হয় তার থেকে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তিনি হলেন আমাদের মা"। ক্রাইম থৃলার শব্দটি মানেই প্রথমে যা আসে ভাবনায় তা হলো টান টান উত্তেজনা, গল্পের পিছনে গল্প, একের পর এক টুইস্ট, অসংখ্য সাসপেক্টের মাঝে খুনিকে খুঁজে ফেরা, খুনির মোটিভ জানা এই তো তাই নয় কি...? হয়তো কারো লেখার স্টাইলটা একটু আলাদা ধরনের হয়। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রাইম থৃলার গল্প বা উপন্যাসের শুরুটা একটা খুন দিয়ে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে খুনিসহ খুনির মোটিভটা খুঁজতে বাধ্য করে লেখক পাঠককে। আচ্ছা এবার একটু অন্যভাবে ভাবুন। ধরুন আপনাকে গল্প বা উপন্যাসের শুরুতে বলে দেয়া হলো একটা খুন হয়েছে, খুনি কে তাও আপনি বুঝে গেলেন, কিভাবে খুন করা হয়েছে তাও আপনি জেনে গেলেন, খুন করার জন্য যে অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে সে সম্পর্কেও আপনি জানলেন, এবার আপনি জানলেন এই খুনের প্রতিশোধ কিভাবে নেয়া হয়েছে। তাহলে তো গল্প বা উপন্যাস যাই হোক এখানে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তাই নয় কি...? "দুর্বল মানুষ তাদের চেয়েও দুর্বল মানুষকে শিকার হিসেবে বেছে নেয়। আর শিকারের সামনে শুধু দুটো পথ খোলা থাকে : মরে গিয়ে সব কষ্ট চুকিয়ে ফেলা অথবা কষ্ট সহ্য করে ধুকে ধুকে বেচেঁ থাকা"। কাহিনীচিত্র : মিডল স্কুলের শিক্ষাবর্ষের শেষ দিনে স্কুল শিক্ষক মরিগুচি তার ছাত্র/ছাত্রীদের জানায় তিনি চাকুরী ছেড়ে দিচ্ছেন। তার এতদূর জীবনের গল্পগুলো সে তার ছাত্র/ছাত্রীদের শোনায়। মরিগুচি একজন সিঙ্গেল মাদার তার মেয়ে মানামিকে নিয়ে তার জীবন যাপন। সে তার ছাত্র/ছাত্রীদের আরো জানায় মানামির বাবা আসলে একজন এইডস রোগী এবং এই ব্যাপারটা নিশ্চিত হওয়ার পর মরিগুচি তার মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তাকে মেনে নেয়নি। ছাত্র/ছাত্রীরা ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে থাকে সাথে সাথে বিরক্তও হয় এমনকি তারা ভয়ে থাকে হয়তো এইডস ছোঁয়াচে রোগ। ঠিক এমন একটা সময়ে শিক্ষিকা মরিগুচি জানায় যে কিছুদিন আগে সুইমিংপুলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিলো তার চার বছরের মেয়ে মানামির। এমনটাই সবাই জানে এমনকি পুলিশও এটাকে একটা নিছক দুর্ঘটনা মনে করেছিলো কিন্তু আসলে মানামিকে খুন করা হয়েছিলো এবং সে খুনি দুজন এই ক্লাসরুমে বসেই তার কথা শুনছে। শুধু তাই নয় মরিগুচি আরো জানায় যে, মানামি সুইংমিপুলের পাশে তাদের প্রতিবেশীর কুকুর মুকুকে খাওয়াতে গেলে ক্লাসের দুজন ছাত্র 'এ' আর 'বি' তার পেছন পেছন যায় এবং তার মা'র কথা বলে একটা গিফট দেয় মানামিকে। মানামি গিফট খুলতে গেলেই একটা শক খেয়ে মুহুর্তে নিথর দেহে পরিণত হয়। 'এ' জয়ী হাসি হেসে হেটে চলে যায় 'বি' কে অপমান করে কিন্তু 'বি' আসলে খুন করার মন মানসিকতা নিয়ে এখানে আসেনি। 'বি' ভাবতে থাকে কি করা যায়। এখন মেয়েটার নিথর দেহ আর 'বি' কে কেউ দেখে ফেললে সবাই 'বি' কেই খুনী ভাববে কিন্তু 'বি' তো খুন করে নি। 'বি' সুইমিংপুলের পানিতে তাকায় ময়লা অস্বচ্ছ ঠান্ডা শীতল যেমনটা ওই পিচ্চির দেহটা। চট করে মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে যায় 'বি' এর। যদি এই খুনটাকে কেউ খুন না ভেবে নিছক দুর্ঘটনা ভাবে তাহলে কেমন হয়...? 'এ' তো চেয়েছিলো খুনটা ও করেছে এটা সবাই জানুক আর এজন্য 'বি' কে সে অপমানও করে গেছে। 'এ' এর উপর প্রতিশোধ নিতে 'বি' মেয়েটাকে তুলে সুইমিংপুলের পানিতে ফেলে দেয়। কিন্তু ফেলে দেয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে 'বি' জানতে পারে মেয়েটি আসলে এতক্ষণ অজ্ঞান হয়ে ছিলো মারা যাই নি। মরিগুচির কথা শুনে ক্লাসের ছাত্র/ছাত্রীরা বুঝতে পারে কে বা কারা এই কাজ করেছে। মরিগুচি আরো জানায়, তার ইচ্ছে করে করছে তার মেয়ের খুনিদেরকে এক্ষুনি খুন করতে। কিন্তু তিনি তা করবেন না। কেননা এইসব শাস্তি মানামিকে তার কাছে ফিরিয়ে দেবে না। আর ওরা যদি এখনিই মরে যায় তাহলো অপরাধের মূল্য চুকাবে কিভাবে...? ওরা বুঝুক জীবনের মূল্য। ওরা উপলদ্ধি করুক ওরা কতটা জঘন্য আর নিকৃষ্ট কাজ করেছে। এমনি সময় মরিগুচি ক্লাসে জানায় সেই এইডস রোগী আর কেউ নয় তিনি এম মিডল স্কুলের 'সেইন্ট' খ্যাত সাকুরানোমি এবং তিনিই মানামির বাবা। আর তার এইডস আক্রান্ত রক্তের কিছুটা মরিগুচি আজকের 'এ' আর 'বি' এর দুধের কার্টনে মিশিয়ে দিয়েছিলো যা ওরা কিছুক্ষণ আগেই খেয়েছে আর যাতে তারা বুঝে জীবনের মূল্য কত...? এখানেই ক্লাস শেষ করে মরিগুচি। কি মনে হচ্ছে....? এ আবার এমন কি আহামরি ক্রাইম থৃলার। তাই না...? হ্যা বইটার প্রথম পরিচ্ছেদ পড়ে আমারও এমনটাই মনে হয়েছে। তারপরও মনে হলো পড়ি কেননা একজন শিক্ষকের দ্বারা এমন কাজ কি শোভা পায় যেখানে তার স্বামী সাধু বলে অভিহিত হোক সে এইডস রোগী। মাথায় চিন্তা এলো আচ্ছা ওরা তাহলে জীবনের মূল্যবোধ কি বুঝলো...? আচ্ছা 'এ' এর এমনকি শত্রুতা ছিলো যে মানামিকে খুন করার পরিকল্পনা করলো সে। আর যেহেতু 'এ' খুনটি করতে সক্ষম হয়নি তাহলে তো তার মধ্যে খুনের খিদেটা রয়েই গেলো তবে কি 'এ' আরো অন্য কাউকে খুন করলো...? কিংবা 'বি' এর কি হয়েছিলো যখন সে জানলো সে এইডস আক্রান্ত। আর মরিগুচি...? আসলেই কি সে এতটা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠে মেয়ের শোকে...? এসব কিছু উত্তর জানতে হলে আপনাকে ধৈর্য নিয়ে ১৮৯ পৃষ্টার কানায়ে মিনাতো রচিত ক্রাইম থৃলারটা পড়তে হবে। ধৈর্যের কথা কেন বলছি কারন প্রথম লাইন থেকে শেষ লাইনের আগ অবধি আপনার মনে হবে আপনার চেনা গল্প, জানা গল্প শুধু কিছু মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার স্যাপার জুড়ে দিয়েছে লেখক কিন্তু শেষ লাইনটাতেই বুঝবেন ক্রাইম থৃলার কাকে বলে...? পাঁচটি পরিচ্ছেদের এই বইটির প্রথম পরিচ্ছেদটির মোটামুটি বর্ণনা তো শুনলেন এরপর থেকে শুরু হয় একেকজনের কনফেশন্স। মরিগুচি স্কুল ছেড়ে চলে যাবার পর স্কুলের কি অবস্থা..? খুনিদেরই বা কি অবস্থা...? এসব নিয়ে লেখা ক্লাস ক্যাপ্টেনের চিঠিতে হয়েছে কনফেশন্স। আর বাদবাকি কনফেশন্সগুলো হয়েছে খুনির মায়ের ডায়েরী থেকে, খুনির নিজের ডায়েরী আর ওয়েবসাইট থেকে আর শুরুটা যেমন মরিগুচির ক্লাসে বক্তৃতায় তেমনি শেষ খুনির সাথে ফোনে আলাপচারিতায়। এটি শুধুমাত্র একটি ক্রাইম থৃলার বই ই না এটি সমাজের বাস্তবচিত্রের প্রতিচ্ছবি। এই বইতে প্রকাশ পেয়েছে কিশোর বয়সের ছেলেদের মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার গুলো, মায়েদের ভালোবাসা যেমন সন্তানকে সুশিক্ষিত করে তেমনি মায়েদের অবহেলা সন্তানকে বিপথে ধাবিত করে। এসব মিলিয়েই কনফেশন্স। নাম শুনে আর প্রচ্ছদে চেয়ার টেবিলের ছবি দেখে যদি ভেবে থাকেন সোজা-সাপটা স্বীকারোক্তির বই তাহলে ভুল ভাবছেন। সমাজের চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ রুপ লাভ করেছে এই বইতে। পড়লেই বুঝতে পারবেন খুনির মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো আপনার ভিতরে সহানুভূতির সৃষ্টি ঘটালেও চার বছরের শিশুকে খুন করাটা আপনাকে বড় বেশী ব্যথিত করবে। চরিত্রের মনস্তত্ত্ব গুলো এতোটাই খোলামেলা ছিলো যে প্রত্যেকটি চরিত্রের দর্শন বুঝে নিতে কোন বেগই পেতে হয়নি। বিক্ষিপ্ত বীভৎস ঘটনার জন্য যেমন খুনির উপর জেদ আর ঘৃণা জন্মে তেমনি এই বীভৎসার পেছনের কারণটা জানলে একটু যেন আবার মায়াও ভর করে। জাদুময়ীর স্পর্শে লেখা এই থৃলার আপনাকে আশাহত করবে না। লেখিকা প্রসঙ্গ : কানায়ে মিনাতো'র ক্যারিয়ার শুরু হোম ইকোনোমিক্সের শিক্ষক হয়ে অবশ্য পরবর্তীতে পুরোদস্তুর গৃহিণী ছিলেন তিনি। ছেলেমেয়েদের স্কুল, বাসার কাজ, রান্নাবান্না এসব তার জীবনটাকে একঘেয়েমি আর বিরক্তিতে পূর্ন করে ফেললো তাই ভাবলেন গল্প লিখবেন। আর সেই ভাবনা থেকেই 'কনফেশন্স' বইটি। বের হওয়ার সাথে সাথে বেস্ট সেলারের মর্যাদা পায় বইটি। শুধুমাত্র জাপানেই তিন মিলিয়নের বেশী কপি বিক্রি হয়েছে। তাকে বলা হয় 'কুইন অব ইয়ামিশু'। ইয়ামিশু থৃলার সাহিত্যের একটি ধারা যেখানে মানব চরিত্রের অন্ধকার দিকগুলো তুলে ধরা হয়। অনুবাদ প্রসঙ্গ : অনুবাদক কৌশিক জামান। তার দ্বিতীয় অনুবাদ এটি। একটা ব্যাপার না বললেই নয় সেটা হলো উনি অনুবাদ করতে যেয়ে শব্দচয়ন বাক্যগঠনের উপর এতটা জোড় দেননি বলেই অনুবাদটা এতটা সহজ আর সাবলীল মনে হয়েছে। হ্যা কিছু কথা খুব বোল্ড ছিলো আবার বেশ কিছু ইংরেজি শব্দ ও ব্যবহৃত হয়েছে তবে শুরুতে উনার দেয়া বক্তব্যে আর গল্পের প্রেক্ষাপটে শব্দগুলো বেশ ভালোই লেগেছে তাই বলা যায় অনুবাদটা বেশ ভালো ছিলো। "আগে আমরা হতে চাইতাম ব্যাটম্যান আর এখন জোকার। হিরো হওয়ার মধ্যে মজা নেই, ভিলেন অনেক বেশী আকর্ষণীয়"। -অনুবাদক। কানায়ে মিনাতো'র 'কনফেশন্স' শুধুমাত্র ক্রাইম থৃলার না বরংচ ডার্ক ক্রাইম থৃলার। যেখানে মানুষের চরিত্রের অন্ধকার দিকগুলো ফুটে উঠেছে। সবাই থৃলার লেখার সময় খুন, খুনের ক্লু, ঘটনা সাজানো, খুনের মোটিভ এগুলো নিয়ে ভাবলেও কানায়ে মিনাতো ভেবেছে ডার্ক সাইটগুলো নিয়ে, ভেবেছে সাইকোলজিক্যাল মাইন্ড ক্রাইম নিয়ে, ভেবেছে সাইকোলজিক্যাল রিভেঞ্জ নিয়ে আর তার জন্যই এই বইটা থৃলার সাহিত্যে একটু আলাদা আর ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। পড়ে ফেলুন আশাহত হবেন না।
Was this review helpful to you?
or
ভাল অনুবাদ ।
Was this review helpful to you?
or
স্কুল শিক্ষিকা মরিগুচির মেয়ে মানামি দুর্ঘনটনায় সুইমিংপুলে ডুবে মারা গেল। কিন্তু মরিগুচি জানে তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে, এও জানে যে খুনি তার ছাত্রদেরই একজন। কিন্তু মানামিকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে? মিস. মরিগুচিই বা কিভাবে নিজের ছাত্রের প্রতি প্রতিশোধ নিবে? জানতে পরে ফেলুন ‘কনফেশনস’। ব্যাক্তিগত রিভিউ: আমি প্রথমে পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। থ্রিলার ধর্মী কিছুই নেই। কিন্তু পরে জানতে পারলাম জাপানিজ থ্রিলারের এটাই নিয়ম, মোটামুটি বোরিংভাবে শুরু হয়ে হঠাৎ চমক সৃষ্টি করে।
Was this review helpful to you?
or
কনফেশন্সকে জাপানের গান গার্ল হিসেবে কল্পনা করুন..নৈতিকতা এবং ন্যায় বিচারের একটি দুর্দান্ত গল্প, স্কুল শিক্ষক মরিগুচির একমাত্র মেয়ে মানামি স্কুলের সুইমিংপুলে ডুবে মারা গেলে সবাই এটাকে নিছক একটি দুর্ঘটনা হিসেবেই ধরে নেয়। কিন্তু আসলেই কি তাই, নাকি কেউ মেয়েটাকে খুন করেছে? যদি করে থাকে তাহলে কে বা কারা? আর কেনই বা এরকম একটি খুন সংঘটিত হলো? মরিগুচির পক্ষে কি মানামির মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করে প্রতিশোধ নেয়া সম্ভব হবে? যদি সম্ভব হয় তবে সেটা কিভাবে? যাই হােক না কেন, ঘটনা প্রবাহ এমনভাবে এগোতে থাকে যে, কেউই কনফেশন না। করে পারা পায় না। সারাবিশ্বে প্রশংসিত হওয়া আরেকটি জাপানি থুলার কনফেশন্স পড়তে গিয়ে আপনাদের একাধিকবার অপ্ৰস্তুত অবস্থায় পড়তে হবে।
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার প্রচ্ছদ ও বানান ভুল না থাকার কারণে প্রকাশক, প্রচ্ছদ শিল্পীকে ধন্যবাদ। সাবলীল অনুবাদ। পড়ে আরাম পেয়েছি। কাহিণীর সার সংক্ষেপ নাই বা বললাম। বই সম্পর্কে বলি। মনস্তাত্তিক থ্রিলার। সাধারন ভাবে শুরু হয়ে কাহিনী এগিয়ে যাবার সাথে সাথে আগ্রহ, উত্তেজনা দুইটায় বৃদ্ধি পেয়েছে। লেখকের লেখার ধরন খুবই ভালো। জাপানের পটভূমিতে লেখা হলেও শিশু কিশোরদের মনের যে আচরণ বর্ণনা করা হয়েছে তা আজ আমাদের সমাজেও দেখা যায়। আমার অনুরোধ থাকবে বইটা পড়ার জন্য। বই, বইয়ের মূল লেখক, অনুবাদক সবাই সর্বোচ্চ রেটিং পাবার অধিকার রাখেন।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই- কনফেশন্স লেখক-কানায়ে মিনাতো অনুবাদ-কৌশিক জামান ধরণ-থ্রিলার পৃষ্ঠা-১৯২ মূল্য-২০০ প্রথম প্রকাশ- অগাস্ট ২০১৭ প্রকাশনী-বাতিঘর প্রচ্ছদ- ডিলান রেটিং-৫/৫ অনুবাদ রেটিং-৫/৫ বইয়ের শুরু স্কুল শিক্ষিকা মরিগুচির ক্লাসের বাচ্চাদের সাথে গল্প বলা দিয়ে। সত্যি বলতে বিষয়টা খেঁজুরে গল্প নয়। কিছুদিন আগে মরিগুচির একমাত্র মেয়ে মানামি এই স্কুলের সুইমিংপুলে ডুবে মারা গেলে সবাই এটাকেকে নিছক একটি দূর্ঘটনা হিসেবেই ধরে নেয়।পত্রিকা গুলোও স্বাভাবিক দূর্ঘটনায় মৃত্যু বলে ছেপে দেয়। অথচ মরিগুচি একসময় বুঝতে পারেন তার কন্যার এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাহলে! স্বাভাবিক মৃত্যু যদি না হয়, অবশ্যই এটা একটা খুন! তবে এই বাচ্চা একটা মেয়ের সাথে কার কি রকম শত্রুতা ছিলো যে, সে কিনা মৃত্যুটাই তার শাস্তি হিসেবে বেছে নিলো! যাই হোক, মরিগুচি যখন বুঝতে পারলেন তার মেয়ে খুন হয়েছে, তখন তিনি খুনিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করলেন এবং পেয়েও গেলেন একসময়। একজন মায়ের পক্ষে তার একমাত্র সন্তান হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টা ভয়াবহ বলা চলে। সে অবস্থায় তিনি যখন শিউর হলেন খুনি কে বা কারা তখন কি তিনি তাদের ছেড়ে দিবেন? নাহ, তা কখনই না। শাস্তি তো তাদের পেতেই হবে। আর এই শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া করলেন তিনি একেবারে ভিন্ন উপায়ে! মরিগুচি তার ছাত্রদের মাঝে সেই গল্পটাই বললেন, কিভাবে তার মানিক রতন মানামিকে হারিয়েছেন, কে বা কারা করেছে সেই কাজ আর তাদের জন্য তিনি কি শাস্তির বিধান রেখেছেন। মরিগুচির সেই ভয়াবহ বীভৎস শাস্তি প্রক্রিয়া কি হতে পারে তা কল্পনার অতীত। এই ব্যপারে জানতে পাঠক কে কনফেসন্স এর পাতা উল্টে যেতে হবে প্রথম থেকে শেষ অবধি। পুরো বইটা বেশ কয়েকটা ভাগে বিভক্ত। প্রতিটা ভাগে আলাদা আলাদা ব্যক্তির স্বাকারোক্তি বলা যায়। প্রথম থেকে দেখলে বেশ স্বাভাবিক ভাবে মরিগুচির কথা বলা দিয়ে শুরু, এবং একের পর একেক জনের বক্তব্য। এবং তা এমন ভাবে বর্ণিত যাতে করে অন্য চরিত্রগুলো কে স্পষ্ট ভাবে চেনা যাচ্ছিলো। যেহেতু মরিগুচি একজন শিক্ষক এবং তার মেয়েকে যারা খুন করেছে তারা মরিগুচির ছাত্র, এক দৃষ্টিতে দেখতে গেলে তিনি মহান হতে পারতেন। কিন্তু একজন মায়ের দৃষ্টিকোন থেকে দেখার ফলে এটা কখনই সম্ভব নয়। তার জন্য খুনির শাস্তি অবধারিত। এখানে এসে আমি নিজেও প্রস্তুত থেকেছি খুনিদের শাস্তি যতোটা কঠিন হবে ততটাই পরিতৃপ্তি পাবো বই শেষ করে। কিন্তু যখন আলাদা আলাদা করে যার যার নিজের বক্তব্য গুলো পড়ছিলাম, তখন কিছুটা শীতলতা এবং তাদের আসন্ন বিপদের কথা ভেবে শংকিত ছিলাম। এই মুহূর্তে মস্তিষ্কের এক পার্ট বলছিলো, তাদের শাস্তি হোক, আরেক পার্ট বলছিলো এতোটা কঠোর না হলে হয় না! এই দুল্যমান অবস্থা নিয়ে পৃষ্ঠা গুলো উল্টে যাওয়া একজন পাঠকের জন্য কতো টা বিপদের তা যিনি সেই অবস্থায় অসীন একমাত্র তিনিই টের পাবেন। বইয়ের শেষ পাতাটা পর্যন্ত গিয়েছি শুধু মাত্র এর পরে কি হলো এতটুকু জানার জন্য। কিন্তু অবাক করা ব্যপার হলো যেখানে লেখক সমাপ্তি টেনেছেন। সমাপ্ত লেখার পরও আমার এই জানার আকাঙ্ক্ষা কমলো না! কনফেশন্স আগাগোড়া একটা থ্রিলার কিন্তু থ্রিলারের আমেজ ভয়াবহ আকারে ধরা পরবে শেষের বেশ কয়েকটা পাতায়। আরো একটা বিষয় চোখে লাগার মতো, তা হলো আপনি প্রথম কয়েক পাতায় খুন হয়ে যাওয়ার সবটুকু রহস্য মরিগুচির বক্তব্যে জেনে যাবেন। তবুও কেন এই মার্ডারমিস্ট্রি আপনাকে শেষ করতে হবে? করতে হবে কারন, এই বইয়ের পুরো থ্রিলিংটা খুনে নয়, খুনের পর প্রতিশোধে। এক কন্যাহারা মায়ের প্রতিশোধের গল্প। যাতে আছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আরো কিছু গল্প। লেখকের এটাই আমার পড়া প্রথম বই। তবুও বলা যায়, যে কারন উপস্থাপন করে অনুবাদক বইটা অনুবাদ করেছেন। আমি যেন সত্যি সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি। বিষয়টা হচ্ছে এমন, আগের সময় গুলোতে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করতে মা বাবার এত শ্রম দিতে হতো না। তাদের প্রতি এতো দেখভাল বা সতর্ক থাকতে হতো না। সারাদিন দুষ্টুমীর পর পড়াশোনা ঠিক থাকলে সাতখুন মাফ। হয়ত দুচারটা কিল চড় থাপ্পর গিলতে হয়েছে। তার বেশি নয়। কিন্তু দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে বাচ্চাদের মানুষ করা ঠিক ততটাই কঠিন হচ্ছে। আর এটার জন্যই বাবা মায়েরা সন্তানের চারপাশে বেড়ি লাগাচ্ছেন। কোথায়, কখন কি করছে পুরো ২৪ ঘন্টা তাদের উপর নজর রাখছেন। তবুও ছেলেমেয়েরা সব থেকে বেশি বিপথগামী হচ্ছে। এবং তাদের সে অপরাধের সাথে যুক্ত হওয়ার অভিনব যে কারন বা কৌশল তা সত্যিই বেশ ভীতিকর! আর বইটা পড়ার পর পাঠকও একমত হবেন এই ব্যপারে যে, এখানকার বাচ্চাদের মাঝে "হিরো হওয়ায় এখন আর কোনরূপ কৃতিত্ব নেই পুরো কৃতিত্ব ভিলেন হওয়ার মাঝে!" যা বেশ ভয়ংকরও বটে! কনফেশন্স পড়ে এই ভয়টা আপনাকে আরো বেশি ঝাঁকিয়ে ধরবে। কানায়ে মিনাতো কে বলা হয়, "কুইন অব ইয়ামিসু"। এটা হলো থ্রিলারের একটা ধারা যেখানে মানব-প্রকৃতির অন্ধকার দিকটা তুলে ধরা হয়। আর এই ধারার উপন্যাস "কনফেশন্স"। এটা তার প্রথম উপন্যাস হলেও জাপানে বেস্ট সেলারের মর্যাদা পায়। পশ্চিমে এর নাম দেয়া হয় "গন গার্ল অব জাপান"। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই বইটিকে ২০১৪ সালে সেরা দশটি থ্রিলার উপন্যাসের তালিকায় স্থান দেয়। কনফেশন্সকে "অ্যালেক্স মারউড" বলেন, 'জাপানের কিশোরদের উচ্ছন্নে যাওয়ার একটি ডার্ক, ডিস্টপিক গল্প।' এই বই পড়ার পর যাকে কৃতজ্ঞতার সাথে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা হয় তিনি হলেন "কৌশিক জামান"। নরওয়েজিয়ান উড পড়ার পরেই আমি বেশ ভক্ত বনে গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি যে সেই ধারা আরো বেশি উন্নতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, তা কনফেশন্স পাঠকেরা নিসংন্দেহে স্বীকার করবেন। ভাষা একেবারে সরল, সহজ করে লিখেছেন তিনি। আমার মনে হয়েছে প্রতিটা শব্দকে তিনি ঠিক ঠিক জায়গায় ঠিক রেখে বেশ সাবলীলতার সাথে অনুবাদ করেছেন! আর তাই কঠিন বা কোন প্রকার কাট্টাকোট্টা প্রকৃতির অসামাঞ্জস্য মনে হয়নি কোথাও! প্রচ্ছদটা দেখে প্রথম প্রথম একটা গম্ভীরতা কাজ করবে। কিন্তু শেষ করার পর আমি নিশ্চিত, গল্পের সাথে পাঠক এর বিরাট মিল পেয়ে যাবেন। তাতে করে প্রচ্ছদটাও আপনার কাছে হয়ে উঠবে অর্থবহ! সবশেষে, বইয়ের ভাষায় 'সারাবিশ্বে প্রশংসিত হওয়া আরেকটি জাপানি থ্রিলার 'কনফেশন্স' পাঠককে ভিন্ন ধর্মী সাসপেন্সের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে।" আপনাকেও সে ব্যপারে আহ্বান জানালাম। রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/149673/কনফেশন্স?ref=srbr_pg0_p0