User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
?বুক রিভিউ ? বইয়ের নাম :- দ্য ডেভিল অ্যান্ড মিস প্রিম লেখক :- পাওলো কোয়েলহো অনুবাদ :- মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ ধরন :- মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস প্রকাশনী :- আদী প্রকাশন প্রচ্ছদ :- রাজিবুর রহমান রোমেল পৃষ্ঠা সংখ্যা :- ১৫৭ মুদ্রিত মূল্য :- ২৫০ টাকা ?ভূমিকা :- সৃষ্টির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চলমান- আলোর সাথে অন্ধকারের, ভালোর সাথে খারাপের, শুভর সাথে অশুভের, ঈশ্বরের সাথে শয়তানের লড়াই। মানব সভ্যতা ধ্বংসের আগ পর্যন্ত তা চলতেই থাকবে এই লড়াই। প্রতিটি মানুষ দুটো ভিন্ন এবং বিপরীতধর্মী স্বত্তা- ভালো এবং খারাপ নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। আর সবার ভেতরেই চলতে থাকে শুভ আর অশুভের লড়াই। কিন্তু সে-ই ভালো মানুষ হিসেবে পরিগণিত হয়, যে তার খারাপ স্বত্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অর্থাৎ ভালো মানুষ হওয়াটা পুরোপুরি নির্ভর করে নিজের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ আর ইচ্ছা শক্তির উপর। আর মানুষের ভেতরে প্রতিনিয়ত চলতে থাকা এই শুভ অশুভের লড়াই নিয়েই বিশিষ্ট সাহিত্যিক 'পাওলো কোয়েলহো' রচনা করেছেন "দ্য ডেভিল অ্যান্ড মিস প্রিম"। ? ফ্ল্যাপ থেকে :- কে এই রহস্যময় আগন্তুক, যে নষ্ট করেছে ছোট্ট গ্রাম ভিসকোসের শান্তি? কেনই বা বুড়ি বার্টা ওকে দেখছে 'শয়তানকে পাশে নিয়ে হাঁটতে?' আগন্তুক কেন বীভৎস এক প্রস্তাব দিচ্ছে ভিসকোসের অধিবাসীদের? আর কেনই বা শান্তাল প্রিম ভয়ে সত্যটা লুকাচ্ছে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে? শুভ আর অশুভ, ঈশ্বর আর শয়তানের মাঝে চলতে থাকা নিরন্তর যুদ্ধের ঘুঁটিতে পরিণত হয়েছে ভিসকোসের সবাই। একমাত্র অভ্যন্তরীণ প্রবল শক্তির সাহায্যেই বাঁচতে পারবে তারা। বেছে নিতে পারবে সামনে থাকা দুটি পথের মাঝে যথার্থটিকে! ❤️পাঠ প্রতিক্রিয়া :- 'পাওলো কোয়েলহো' এর লেখা পড়তে শুরু করলাম "দ্য ডেভিল অ্যান্ড মিস প্রিম" দিয়েই। লেখকের অনেক কয়টা বই কেনা থাকলেও বিভিন্ন কারণে পড়া হয়নি এতোদিন। লেখকের লেখার ধার, গল্প বলার ভঙ্গি, চরিত্রায়ন সবকিছু অন্য লেভেলের। সেই সাথে তার নিজস্ব দর্শন একজন পাঠককে অনেক কিছুই ভাবতে বাধ্য করবে। এই বইতে মানুষের ভেতরে চলতে থাকা শুভ অশুভের লড়াইকে যেভাবে লেখক তুলে ধরছেন তা এককথায় অসাধারণ। ২৮১জন মানুষ নিয়ে ছোট একটা গ্রাম ভিসকোস। গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি, ভেড়ার লোম সংগ্রহ করা আর শিকার। ছোট এই গ্রামের প্রতিটি মানুষ পরস্পরকে চেনে, সবাই সৎ, শান্ত প্রকৃতির, পরস্পরকে সহায়তা করে শান্তিতেই বসবাস করে সবাই। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন গ্রামে আগমন ঘটে এক আগন্তকের, আর সেই সাথে প্রবেশ করে শয়তান। শুরু হয় শুভর সাথে অশুভের লড়াই। লোভের সাথে ভয়ের। বদলে যেতে শুরু করে গ্রামের মানুষ, তাদের ভেতর শুরু হয় ভালো আর খারাপের যুদ্ধ। যুদ্ধ শুরু হয় মানুষের ভেতরে থাকা আলোর সাথে অন্ধকারের। মানুষের ভেতরে চলতে থাকা এই দ্বৈত স্বত্তার লড়াইকে লেখক তার বইতে খুব সুন্দর করে তুলে ধরছেন। সেই সাথে এটাও দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে অশুভকে পরাজিত করে শুভ জয়লাভ করতে পারে। "অশুভ কখনোই শুভ কিছুর জন্ম দিতে পারে না",,,,,। অনুবাদক মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ ভাইয়ের অনুবাদ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। একদম সাবলীল অনুবাদ। ছোট ছোট টাইপিং মিস্টেক ছিল অনেক জায়গায়, এই মিস্টেক গুলো না থাকলে সোনায় সোহাগা হতো,,,, রাজিবুর রহমান রোমেল এর করা প্রচ্ছদটা দারুন, গল্পের মতোই এক ধরনের দ্বৈত আবহ তৈরি করে। সবশেষে বলে রাখি, "দ্য ডেভিল অ্যান্ড মিস প্রিম" পাওলো কোয়েলহো এর লেখা 'অ্যান্ড অন দ্য সেভেন্থ ডে' বই ত্রয়ীর শেষ খন্ড। আগের বই দুটি হলো- "বাই দ্য রিভার পিদরা আই স্যাট ডাউন অ্যান্ড ওয়েপ্ট" এবং "ভেরোনিকা ডিসাইডস টু ভাই"। তবে এই বই ট্রিলজির অংশ হলেও আগের দুটো না পড়া থাকলেও কোন সমস্যা হবে না। তাই পড়ে ফেলতে পারেন নিশ্চিন্তে। ঘরে থাকুন, বেশি বেশি বই পড়ুন❤️❤️ Stay Home, Be Safe❤️❤️ বই হোক সব সময়ের সঙ্গী ❤️❤️ Happy Reading ❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
ভিসকোস একটি ছোট্ট গ্রাম,, শান্তি, সহমর্মিতা সহনসীলতা যে গ্রামের ধর্ম,,,এখনে হটাৎ আগমন ঘটে এক আগন্তুক এর, এই গ্রামেরই এক মেয়ে বার এ কাজ করে শান্তাল প্রিম, আটদশ জন মেয়ের মত তারও স্বপ্ন তার ভালোবাসা পাওয়া,, এমনি এক সময়ে এক আগন্তুক এসে গ্রামটাকে এলোমেলো করে তুলে,, প্রশ্ন ছুরে তুলে শুভ এবং অশুভ এর, কেই বা এই আগন্তুক যে বিনাস করে করেছে ভিসকোসের মত এমন একটি গ্রামের শান্তি, কেনই বা বুড়ি বার্টা তাকে দেখেছিল শয়তানের পাশদিয়ে হাটতে, কিন্তু কিভাবে দেখল,কেই বা আগন্তক বীভৎস এক প্রস্তাব করল গ্রাম বাসির কাছে,কেন শান্তাল প্রিম ভয়ে সত্যটা লুকাচ্ছিল,, শুভ আর অশুভ, ঈশ্বর আর শয়তানের মধ্য থাকা এই যুদ্ধের খুঁটিতে পরিনত হয়েছিল গ্রামবাসি সাবাই,,, শেষ পর্যন্ত তারা কি করেছিল,, আগন্তুক এর প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল? শান্তাল প্রিম কি পেরেছিল ভিসকোস কে রক্ষা করতে?? জানতে হলে পড়ুন বইটি। বরাবরের মত পাওলো কোয়েলহো এর মানে অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
What is bad or what is good? Is there anything bad or good? What if it is only the viewing point of one picture, Bad and good is the two names of same thing, The devil tests miss prim in this book,What is happened in last? bad wins or good? If you want to know the difference between good and bad, You have to read this book.
Was this review helpful to you?
or
পাওলো কোয়েলহোর অনবদ্য এক সৃষ্টি, সাথে অনুবাদও বেশ সাবলীল, তবে শেষটা (পাওলো কোয়েলহো বই হিসেবে) অারেকটু ভাল হওয়া উচিত ছিল...!
Was this review helpful to you?
or
"ইশ্বরের নরক যেমন মানবজাতির প্রতি তার ভালোবাসায়, তেমনি প্রতিটা মানুষের নরক তার পরিবারের প্রতি ভালোবাসায়"। মানুষ। ইশ্বর কর্তৃক সৃষ্ট এক বিরাট রহস্য। এই পৃথিবীকে দেয়া হয়েছে মানবজাতির জন্য জীবনযাপনের জন্য। মানুষ এই পৃথিবীর বুকে নিজের জন্য আশ্রয়স্থল বানায়। নিজের জীবিকার জন্য চাষাবাদ করে। অতঃপর একদিন সে মানুষটার জীবনে ভালোবাসা আসে। নতুন মানুষের উপস্থিতি তাকে আনন্দ দেয়। নতুনভাবে বাচতে শেখায়। এরপর একদিন তারা বিশ্বাসের বলে একসাথে বসবাস শুরু করে। এত শুভ'র মাঝে একদিন অশুভের কালো ছায়া নামে তাদের মাঝে। শয়তানের প্ররোচনায় তাদের বিশ্বাসে ভাঙ্গন ধরে। অবিশ্বাসে তারা নিজেদের দোষত্রুটি গুলোকে আকাশসম করে দেখে। ঈর্ষা, ঘৃণায় তারা প্রতিশোধ নেয়ার কথা চিন্তা করে। অন্যের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখা তথা ক্ষমতা লোভের সন্ধানে প্রতিশোধের প্রেরণায় তারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে খুনের সিদ্ধান্তে অটুট থাকে। অথচ ভুলে যায় কিছুদিন আগেও এই মানুষটাকেই বিশ্বাস করে খুলে বলেছিলো মনের কথা। দিয়েছিলো মনের গহীনে অনেক উচুতে সম্মান। শুভ আর অশুভের মাঝে পার্থক্য তারা ভুলে যায়। ক্ষমতার লোভ তাদের দেখার দৃষ্টিকে অশুভের ছায়ায় ঢেকে ফেলে। "কাউকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে, তাকে ভয় দেখানোটাই যথেষ্ট"। মানবজাতির জন্মের সময়ই তার ভাগ্যে শাশ্বত বিভাজনের শিকার হবার কথা লেখা আছে। তাই, পূর্ব পুরুষদের মতো আমরাও নানা সন্দেহ, নানা ধরনের দ্বিধায় জর্জরিত। পাওলো কোয়েলহোর 'অ্যান্ড অন দ্য সেভেন্থ ডে' বই ত্রয়ীর তৃতীয় খন্ড দ্য ডেভিল অ্যান্ড মিস প্রিম বইটির কথাই বলছিলাম। জীবন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেই। পেছনে ফিরে দেখার সময় সুযোগ, কোনটাই মিলবে না সহজে। নিয়তিকে মেনে নেব কি নেব না, তা ঠিক করার জন্য কেবল এক সপ্তাহই যথেষ্ট। "শুভ বলে কিছু নেই। ভয়ের অগণিত চেহারার একটি হচ্ছে পূণ্য"। কাহিনীপ্রসঙ্গ : ভিস্কোস। প্রাচীনতা আর আদিমতায় বিশ্বাসী শান্তিময় এক গ্রাম। মাত্র ২৮১ জনের মানুষের বসবাস আহাব আর সেল্টদের প্রাচীন এই গ্রামে। সূর্যোদয় দেখে কর্মজীবনে যাওয়া আর সূর্যাস্ত দেখে ঘরে ফিরে শান্তি করা এই গ্রামের নিত্যনৈমিত্তিক জীবনযাপন। তবে ব্যতিক্রম শুধুমাত্র বুড়ি বার্টা। পনের বছর ধরে নিজের ঘরের দুয়ারে বসে ভিস্কোসের পথে পা রাখা পর্যটক আর আগন্তুকদের লক্ষ্য করাই তার একমাত্র কাজ। মাঝে মাঝে আপনমনে কথা বলা যদিও বুড়ি বার্টার মতে পনের বছর আগে মারা যাওয়া তার স্বামীর সাথেই সে কথা বলে। এই পনের বছর ধরে ঘরের দুয়ারে বসা বুড়ি বার্টা একদিন এক আগন্তুককে আসতে দেখে ভিস্কোসের পথে। আগন্তুকের পা ভিস্কোস গ্রামে পড়ামাত্রই আকাশে অন্ধকারের রাজত্ব বিস্তার হয়। বুড়ি বার্টা ভয় পেয়ে যায়। এই পনের বছর ধরে এই ঘরের দুয়ারে বসে যেন এই আগন্তুকের আসার অপেক্ষায়ই ছিলো সে তাই ভাবে মনে মনে। বুড়ি বার্টা উপলদ্ধি করে শান্তিময় ভিস্কোসে অশান্তি নিয়ে এসেছে এই আগন্তুক। বুড়ি বার্টা শয়তানকে প্রত্যক্ষভাবে হাটতে দেখে আগন্তুকের পাশেপাশে। প্রাচীন এই গ্রামের ধ্বংসের সময় হয়ে এসেছে বুড়ি বার্টা আপনমনে তাই বিড়বিড় করে। আগন্তুক গ্রামের একটু নির্জন পথে যেখানে পাহাড়ের পাদদেশে জঙ্গলের মতো জায়গাটা আছে সেখানে যেয়ে ব্যাগ থেকে বের করে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে এগারোটি সোনার বার থেকে একটি সেই গর্তে রেখে আবার মাটি ভর্তি করে দেয়। একটু দূরেই অবশিষ্ট দশটি সোনার বার একইভাবে রেখে দেয়। ফেরার পথে আগন্তুকের দেখা হয় গ্রামের হোটেলে কাজ করা মিস শান্তাল প্রিম এর সাথে। আগন্তুক স্বেচ্ছায় তাকে নিয়ে যেয়ে সোনার বার গুলা দেখায়। সাথে এও জানায় এই বারগুলা ভিস্কোসের লোকদের হবে। শান্তাল বুঝতে পারে এক একটি স্বর্ণ বার থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ভিস্কোসের গ্রামবাসীই না বরংচ তাদের নাতি-নাতনিও স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন পার করে দিতে পারবে। কিন্তু আগন্তুক সাথে একটি শর্ত রাখে আর তা হলো এই বার গুলা তখনই গ্রামবাসীর হবে যখন গ্রামের কেউ একজন খুন হবে। অর্থাৎ এই বার গুলোর জন্য কাউকে বাছাই করে গ্রামবাসীর দ্বারা খুন হতে হবে তবেই এই বারগুলা গ্রামবাসীর হবে। কিন্তু যদি কেউ এই খুনে রাজি না হয় তাহলে এই স্বর্ণ বারগুলা মিস শান্তাল প্রিম এর হবে। শান্তাল প্রিমের সারাজীবনের স্বপ্ন হাতছানি দিচ্ছে তাকে। এই ভিস্কোস, এই হোটেলের চাকুরী ছেড়ে সে বহুদূরে চলে যেতে চায় শান্তিতে নিজের জীবনকে উপভোগ করতে। এমনকি ছুটিতে বেড়াতে আসা শহরের লোকগুলোকে দেখলে শান্তালের ঈর্ষা জাগে খুব। তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না শান্তাল। দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর করে, তিন রাত দুঃস্বপ্নে অতিবাহিত করে অবশেষে মিস শান্তাল একদিন রাতে হোটেলে সবাই উপস্থিত থাকা অবস্থায় আগন্তুকের পুরো ঘটনাটা জানায়। আগন্তুক নিজেও সেসব কথা শুনে। প্রথম প্রথম কেউ বিশ্বাস করতে না চাইলেও গ্রামবাসী শান্তালের কথাগুলো বিশ্বাস করে যখন শান্তাল জানায় সে নিজ চোখে সোনার বারগুলা দেখেছে। দুঃস্বপ্নের ছায়া ভর করে ভিস্কোসের গ্রামবাসীদের উপর। শুভ আর অশুভের দ্বন্দ্বে রাতের ঘুম হারিয়ে যায় গ্রামবাসীর। অবশেষে একদিন গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে যাজক, মেয়র, মেয়রের স্ত্রী, কামার আর ভূস্বামী সমেত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তারা গ্রামের উন্নতির কথা, গ্রামের ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে এই গ্রামের কাউকে খুন করবে না তবে উৎসর্গ করবে। আর সিদ্ধান্তে এও জানানো হয় বুড়ি ডাইনী খ্যাত বার্টা ই হবে তাদের উৎসর্গ ভিস্কোসের জন্য। অশুভ ছায়ায় ঢেকে যায় ভিস্কোসের আকাশ, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে গ্রামবাসী তাড়িত হয় শয়তানের দেখানো পথে, ইশ্বরের পথ ভুলে যায় ঐ ইশ্বরেরই প্রচারক যাজক, ভিস্কোসের ধ্বংস দেখতে পায় বুড়ি বার্টা। সাথে ঘরের দুয়ারে বসে এও দেখে তাকে উৎসর্গ করতে গ্রামবাসী চলে এসেছে তাকে নিয়ে যেতে। কে এই আগন্তুক..? কিইবা তার উদ্দেশ্য..? কেন সে এমন একটি শর্ত জুড়ে দিলো যাতে একটি নিরপরাধ মানুষের খুন হতে হবে..? আর সে কেনইবা ভিস্কোসের মতো এত সুন্দর একটি গ্রামকে বেছে নিলো...? পুরো গ্রামবাসী থাকতে কেন সে মিস শান্তাল প্রিমকে বেছে নিয়েছিলো..? আর কেনই বা শান্তাল প্রিম ভয়ে সত্যটা প্রথমে লুকালেও পরে গ্রামবাসীকে তা জানিয়েছিলো..? বুড়ি বার্টার কি হয়েছিলো..? ভিস্কোসের গ্রামবাসীদের কি পরিণতি হয়েছিলো..? শুভ আর অশুভ, ইশ্বর আর শয়তানের মাঝে চলতে থাকা নিরন্তর এই যুদ্ধের ভয়াবহতা আর পরিণাম কি হয়েছিলো..? কেউ কি এসেছিলো ভিস্কোসে শয়তানকে প্রতিহত করতে ইশ্বরের দূত হয়ে..? এসব কিছু জানতে হলে ঠান্ডা মাথায় মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে মাত্র ১৫৭ পৃষ্ঠার পাওলো কোয়েলহো রচিত দ্য ডেভিল অ্যান্ড মিস প্রিম বইটি। লেখকপ্রসঙ্গ : প্রথাবিরোধী আর প্রচলিত গন্ডির বাইরে থাকা স্বভাবসিদ্ধ পাওলো কোয়েলহো'র জীবনটা এতটাও সহজ ছিলো না। চিরচেনা সমাজ আর বিশ্বজগত সম্পর্কে তার আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি, মতবাদ আর দর্শন আছে যা আর আট দশটা মানুষের চাইতে অনেকটাই আলাদা। এইসব প্রথাবিরুদ্ধ আর অস্বাভাবিক আচরণ এবং লেখালেখির ভুত মাথায় চাপাতে তাকে পরিবার থেকে দু দুবার মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপরের জীবনগুলোও ছিলো কষ্টের আর সেই ভাগ্য যা কোয়েলহোকে কখনোই সাহায্য করে নি। কিন্তু তাই বলে থেমে থাকেনি কোয়েলহো। লেখাপড়ায় বেশীদূর আগাতে না পারলেও জীবন বাস্তবতায় অনেকখানি এগিয়েছেন তিনি। ভবঘুরে জীবনকে বেছে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো আর ইউরোপের পথেঘাটে। ৫০০ মাইলেরও বেশী পথ হেটে জীবনকে বাস্তবতাকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তাই হয়তো তার লেখায় ফুটে উঠে জীবনের বাস্তবিক দর্শনের কথা। আজ সে ব্রাজিলিয়ান অন্যতম সাহিত্যিক যার বই বিশ্ব বেস্ট সেলারের মর্যাদা পেয়েছে। আধ্যাত্মিকতা বাস্তবতা আর জীবনচর্চা তার লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। অনুবাদপ্রসঙ্গ : মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ। এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় অনুবাদক পাঠককুলে। এম.বি.বি.এস. করে লেখালেখিটা বেছে নেন শখের বসে। তার করা এই অনুবাদটা ভালো ছিলো। শব্দ চয়ন আর শব্দের বুনন ভালো ছিলো। সহজ, সাবলীলতা বজায় রেখেই অনুবাদটা করেছেন তিনি। তবে শব্দগত ভুল আর প্রিন্টিং মিসটেক চোখে পড়েছে যদিও প্রকাশকের এই দিকে নজর দেয়া উচিত ছিলো তবুও অনুবাদককেই অভিযোগ করবো কেননা অনুবাদটা তার আর আমি তার পাঠক। এছাড়া বাদ বাকি পুরো অনুবাদ শুধু অসম্ভব ভালোই না পাঠযোগ্য খুব ভালো আর সমৃদ্ধ একটি অনুবাদ। অনুবাদকের নিজের লেখা মৌলিক থ্রিলার 'চন্দ্রাহত' এই বছরের মানে ২০১৮ সালের বইমেলাতে আদী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। পড়তে পারেন কেননা যে অনুবাদটা খুব ভালো করতে পারে তার নিজের লেখাটা অবশ্যই আরো ভালো করেছে বা করবে বলেই আশা রাখি। ভালো লাগা কিছু কথা : # "নিখুঁত কোন জায়গাতেও দীর্ঘদিন কাটানোটা বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে হোক তা স্বর্গ"। # "গ্রামে যারা বাস করে তাদের কাছে দূষিত শহরের আকাশও এক দর্শনীয় আকর্ষণ"। # "স্বপ্ন পূরণের পথে কেবল দুটো জিনিস বাধা দেয় আমাদের : এগুলোকে অসম্ভব বলে ধরে নেয়া। আর নয়তো ওই অসম্ভব স্বপ্নগুলোকে কোন বিশেষ আর অকল্পনীয় পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হতে দেখে"। # "নিজের 'ভালো' এর উপর বিশ্বাস রাখাটা অনেক সোজা। কিন্তু অন্যদের সাথে নিজের অধিকার নিয়ে লড়াই করা বড় কঠিন"। # "এমনকি ইশ্বরের জন্যও আছে এক নরক। আর তা হলো, মানবজাতির প্রতি তার ভালোবাসা"। # "প্রতিটা মানুষের নিয়তি ঠিক করা। সবাইকেই দুঃখের মুখোমুখি হতেই হয়, আর একে এড়াবার কোন উপায় বা ক্ষমতা মানুষের নেই"। # "একাকীত্বের ভয়, অশুভকে নিজের ভেতরে ডেকে আনার ভয়, লোক নিন্দার ভয়, ইশ্বরের বিচারের ভয়, শাস্তির ভয়, চেষ্টা করে ব্যর্থ হবার ভয়, আবার সফল হয়ে লোকের ঈর্ষার বস্তুর হবার ভয়ও আছে। ভয় ভয় আর ভয়। জীবনটাই যেন দখল করে আছে ভয়"। # "মানুষ তার সেরাটা অর্জন করতে চাইলে, তার সবচেয়ে খারাপটাকে আলিঙ্গন করতেই হবে"। # "পানি- না তার গন্ধ আছে, আর না স্বাদ। কিন্তু দুনিয়ায় এর চাইতে দামী আর কিছুই নেই"। পাওলো কোয়েলহো। যার প্রতিটা গল্প উপন্যাসে থাকে এক একটি বাস্তবিক জীবনাদর্শ। যেখানে আপনি খুঁজে পাবেন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাচেতনা, দর্শন, ধর্মভাবনা সহ আরো অনেক কিছু। যা আপনাকে জীবনের প্রতি পরতে পরতে ভাবাতে বাধ্য করবে। একটু হলেও আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলাতে বাধ্য করবে। জীবনকে নতুনরুপে চেনাতে সাহায্য করবে। আর আপনাকে প্রেরণা, উৎসাহ আর সফলতার পথে ধাবিত করার মূলমন্ত্র শোনাবে। তাই জীবনমুখী বাস্তবিক আদর্শ সম্বলিত এই বইটি পড়তে পারেন আশা করি আশাহত হবেন না। হ্যাপি রিডিং।
Was this review helpful to you?
or
বার্টা জানতো সে আসবে, তারই অপেক্ষায় বছরের পর বছর তাকিয়ে ছিল দিগন্তের দিকে, ওই পাহাড় চূড়ায়, যেমন গ্রীষ্মের দিনে, ঠিক তেমনি হাড় কাঁপানো শীতেও, এবং অবশেষে দেখা গেলো তাকে, অবশেষে ভিস্কোসে নেমে এলো শয়তান, তার চেহারায় নেই কোন শুভ লক্ষন। । ভিস্কোস, আধুনিক পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের ধারে গড়ে উঠে শত বছরের এক নগরী, যেখানে রয়েছে তাঁদের নিজস্ব সভ্যতা, যেখানে সকলেই সকলকে বিশ্বাস করে, সবার বিপদে সবাই এগিয়ে আসে, যাদের মাঝে কোন লোভ নেই, পুরো শহরে মাত্র ২০০এর উপর কিছু লোকের বসবাস। যেখানে সবচেয়ে কম বয়সী যার নাম মিস প্রিম বা শান্তাল, এতীম, মা বাবা হারানো, যে কিনা কাজ করে শহরের একমাত্র পানশালা এবং বহিরাগতদের জন্য একমাত্র বোর্ডিং'এ। যে শহরে আছে একটি মাত্র গির্জা, একজন ফাদার,একজন মেয়র, ল্যান্ডলেডি, ব্ল্যাকস্মিথ, আছে রাখাল, কৃষক, এবং শহরের সবচেয়ে বেশি বয়স্ক অধিবাসী বার্টা। এ শহরে কোন শিশু নেই, নেই কোন খেলার মাঠ, প্রতি গ্রীষ্মে ছুটে আসে শিকারিরা এ শহরে, এবং অবাক হয় এ শহরের শান্তি আর একতা দেখে। তেমনি এক বহিরাগতের আগমন ঘটে ভিস্কোসে, এবং বরাবরের মতোই ল্যান্ডলেডির একমাত্র পানশালা এবং বোর্ডিং হাউজে উঠেন। অদ্ভুত, শিকারের সময় ছাড়া শীতের সিজনে এ শহরে কেউ আসেনা, কিন্তু এই নতুন বহিরাগত কে? কেনইবা এ অসময়ে এখানে আসলো? এ কান ও কান করে পুরো শহরে খবর ছড়িয়ে পড়লো। বহিরাগত লোকটি গেলো মিস প্রিমের কাছে, তাকে ডাকল এবং কিছু দেখাতে চাইলো, আর সে জন্য তাকে নিয়ে গেলো পাহাড়ের উপর যেখানে Y এর মতো একটি জায়গা রয়েছে, লোকটি মিস প্রিমকে দেখাল ১১টি স্বর্ণের বার, এবং বলল, এই স্বর্ণ গুলো এই শহরকে আমি দিতে চাই, যেগুলো দিয়ে এই শহরের কয়েক প্রজন্ম তাঁদের জীবনকে করতে পারবে প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ, তবে শর্ত একটাই, তারা একটি অপরাধ করতে হবে, এবং সেটি হচ্ছে "খুন", আগামি সাত দিনে কেউ যদি খুন হয় এ শহরে, তবেই এই স্বর্ণ আমি এই শহরকে দিয়ে যাবো। কি করবে মিস প্রিম? সে কি লোকটিকে সাহায্য করবে? নাকি নিজেই রাতের আঁধারে এসে স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যাবে? শহরবাসী কি রাজি হয়েছিলো? রাজি হয়ে থাকলে কাকেই বা খুন করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো? আর এই খেলার পেছনে কি উদ্দেশ্য বহিরাগত লোকটির? শেষ পর্যন্ত কে জিতবে? মানুষের ভালো দিক? নাকি খারাপ দিক? ------------------------------------- যারা যারা পাওলো কোয়েলহোর লেখার সাথে পরিচিত, তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন তিনি গল্পের ছলে পাঠককে নিয়ে যান গভীর জীবনবোধ আর মনুষ্য চরিত্রের অতলে, যেখানে আমাদের দৃষ্টি যায়না, যা আমরা দেখেও দেখিনা, বুঝেও বুঝিনা। এই বইটিও তার থেকে ব্যতিক্রম নয়, এই বইয়ের মূল ভাষ্য হচ্ছে যে মানুষের দুইটি মুখোশ, একটি ভালো আর আরেকটি খারাপ। আর ভালো কিংবা খারাপ দুটো চরিত্রই মানুষের নিজেদের ইচ্ছের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, লোভ লালসা মানুষকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে তার একটি প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে এই বইতে। ফুটে উঠেছে মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, গভীর জীবনবোধ আর জীবনদর্শন, যেটি পাওলো ছাড়া বর্তমান সময়ে খুব কম লেখকি পারেন সুখপাঠ্য করে ফুটিয়ে তুলতে। লেখকের গল্পের ছলে বলা গভীর জীবনবোধের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি লাইন আপনার মস্তিষ্ক এবং হৃদয়কে আন্দোলিত করতে সক্ষম, বদলে যাবে দৃষ্টিভঙ্গি। বইটি পড়তে এক মুহূর্তও বিরক্ত লাগেনি, বরং কি হবে শেষে, সে আকর্ষণে টেনে গেছি শেষ পর্যন্ত। ------------------------------------------- বইটির ক্ষেত্রে একটি কাকতালীয় ব্যপার ঘটেছে, প্রথমে মূল ইংরেজি বইটি পড়েছিলাম, পড়া অবস্থাতেই দেখি একদিন অনুবাদক ফুয়াদ আল ফিদাহ বইটি অনুবাদ করছেন। এবং অনুবাদটি আবার পড়লাম। পাওলো কয়েলহো'র বইয়ের অনুবাদের ক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে, অ্যালকেমিস্ট আর আলেফ পড়তে গিয়ে বুঝেছি, জীবনবোধ আর আধ্যাত্মিকতা বইয়ের মূল উপজীব্য হবার কারনে তাঁর বইয়ের অনুবাদ যথাযথ ভাব বজায় রেখে সাবলীল ভাবে করাটা বেশ কষ্ট সাধ্য, কারন একটু এদিক সেদিক হলেই অনুবাদ একদম কাটখোট্টা হয়ে যায়, এই বইটি গিফট করবো বলে কিনবো ভাবছিলাম, তাই আবার পড়া এবং ভয়ে ছিলাম, কেমন হবে অনুবাদ? শুধুএটুকু বলি, পাওলো কোয়েলহোর যতগুলো অনুবাদ পড়েছি তার মধ্যে এই একটি মনে হয়েছে মূল লেখকের লেখার যে ভাব, সেটি অক্ষুণ্ণ, এবং সাবলীল। দর্শন আর জীবনবোধ কাটখোট্টা লাগেনি, তাই বলতেই হচ্ছে যে ফুয়াদ আল ফিদাহ দারুন কাজ দেখিয়েছেন এবং অনুবাদে তাঁর মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। মূল ইংরেজি বইটি আগেই পড়া থাকায় সুবিধা হয়েছে অনুবাদের মান যাচাই করা। আর প্রচ্ছদ? এক কথায় দুর্দান্ত। বইটি পড়লেই বুঝবেন কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রচ্ছদ। মূল বই রেটিংঃ ৪.৫/৫ অনুবাদঃ ৪.৯/৫