User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
very nice book
Was this review helpful to you?
or
সমাজের নিচু স্তরের মানুষের ভাব বিনিময়ের যে ভিন্ন একটি ভাষা রয়েছে লেখক সেদিকে দৃষ্টিপাত করেছেন এই গল্পে।তিনি ভিখু ও পাঁচীর মধ্যেকার আলাপের একটা ক্ষণ এভাবে বর্ননা করেছেন,"ওদের স্তরে না গেলে সে আলাপকে কেহ আলাপ বলিয়া চিনিতে পারিবে না।মনে হইবে পরস্পরকে তাহারা যেন গাল দিতেছে।"বসির ও পাঁচীর গল্পকেও এভাবেই বর্ননা করেছেন,"বাঁশের খাটে পাশাপাশি শুইয়া তাহাদের কাটা কাটা কদর্য ভাষায় গল্প করিতে করিতে তাহারা ঘুমাইয়া পড়ে।" আমরা যাদের মানুষ বলে স্বীকার করতে চাই না তাদেরও মানবীয় গুণাবলি রয়েছে।তারাও পরস্পরকে ভালবাসতে জানে।পাঁচীর পায়ে হাটু থেকে নিচ পর্যন্ত থকথকে ঘা।ঘা থেকে বের হয় প্রতিনিয়ত পচা দুর্গন্ধ। তবুও বসির পাঁচীকে ছেড়ে যায় না আবার ভিখুও তাকে চায়।লেখকের বর্ননায়,"তাহাদের নীড়,তাহাদের শয্যা ও তাহাদের দেহ হইতে একটা ভাপসা পচা দুর্গন্ধ উঠিয়া খড়ের চালের ফুটা দিয়া বাহিরের বাতাসে মিশিতে থাকে।ঘুমের ঘোরে বসির নাক ডাকায়।পাঁচী বিড়বিড় করিয়া থাকে।" এভাবেই লেখক মানিক বন্দোপাধ্যায় তার "প্রাগৈতিহাসিক" গল্পে সমাজের উপেক্ষিত একটা গোষ্ঠীর যাদের কথা আমরা ভাববার সময় পাই না,প্রয়োজন বোধ করি না তাদের জীবনধারনের গল্প সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
Was this review helpful to you?
or
ছোট গল্প সংকলন হিসেবে চমৎকার বই। প্রত্যোক গল্পের চরিত্রগুলো নিজেদেরকে মানিকের লেখনীতে ফুটিয়ে তুলেছে যথার্থভাবে। প্রাগৈতিহাসিকে যেমন মানব চরিত্রের যুগপৎ নিষ্ঠুরতা ও প্রেমময়তা প্রতিভাসিত হয়েছে তেমনি চোর গল্পে একজন চোরেরও যে নারীর প্রতি মোহমুগ্ধময় ভালোবাসা থাকতে পারে তা স্পষ্টভাষিত হয়েছে। যাত্রা গল্পের যৌতুক প্রথা, ফাঁসি গল্পের মানব মনের পারস্পরিক মমত্ববোধ সংকলনটিকে প্রকৃত মাধুর্য দিয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই - প্রাগৈতিহাসিক লেখক - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জনরা - গল্পগ্রন্থ। প্রকাশনী - বিভাস প্রথম প্রকাশ - ১৯৩৭ পৃষ্ঠা - ১১২ মূল্য - ১২৩/- রেটিং - ৫/৫ *************** প্রপিতামহ রামনিধির বাস ছিল বাংলাদেশের বিক্রমপুরের শিমুলিয়া গ্রামে। পিতা হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা নীরদাসুন্দরীর ঘরে তার জন্ম ১৯০৮ সালের ২৯ মে। উজ্জল কালো বর্ণ আর সুন্দর মুখের জন্য প্রথমেই তার নাম হয় কালোমানিক। পরে ডাকনামটাই হয় মানিক। পুরো নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন দুরন্ত, বেপরোয়া আর ভবঘুরে। বাবার চাকরিসূত্রে বদলি সেই স্বভাব উস্কে দিয়েছে আরো বেশি। ছিলেন মেধাবী। ১৯২৮ সালে প্রথম বিভাগে আই.সি.এস উত্তীর্ণ হন। সে বছরেই বাজি ধরে লিখে ফেলেন বিখ্যাত ছোটগল্প 'অতসীমামী।' কর্মজীবনে যুক্ত ছিলেন একাধিক পত্রিকায়। বারবার বদলেছেন জীবনের ছক। পত্রিকা, রেডিও ছেড়ে করেছিলেন প্রকাশনা ব্যবসাও। সাফল্য আসেনি। ১৯৫১ সাল নাগাদ লেখক শারীরিক ভাবে যেমন ভেঙ্গে পড়েন। ঘিরে ধরে দারিদ্র্য। যকৃতের রোগ, রক্ত আমাশয়, মৃগীরোগ সবমিলিয়ে তিনি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। ১৯৫৬ সালের ৩ ডিসেম্বর পরপারে পাড়ি জমান অনন্য এই লেখক। ..... প্রাগৈতিহাসিক - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২য় গল্পগ্রন্থ 'প্রাগৈতিহাসিক।' ১ম প্রকাশিত হয় গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এন্ড সন্স থেকে। ২২৪ পৃষ্ঠার বইয়ে গল্প ছিল ১০ টি। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত ২য় মুদ্রণে 'মাটির সাকী' গল্পটি বাদ দেয়া হয়। বর্তমানে ৯ গল্পের গল্পগ্রন্থটিই প্রচলিত। ...... গল্পসমূহ - ১. প্রাগৈতিহাসিক - ২য় গল্পগ্রন্থের শিরোনাম গল্প। গল্প লিখলেন নতুন ভাবে। মানুষের আদিম চিন্তাধারা আর জৈবিক তাড়নার নানা দিক দিয়ে সাজালেন নতুন বইকে। প্রাগৈতিহাসিক এর কেন্দ্রীয় চরিত্র ভিখু। পেশায় ডাকাত। কাঁধে বর্শার খোঁচা নিয়ে পালাবার মাধ্যমে গল্পের শুরু। কিন্তু সে হার মানেনা। পলাতক সময়ে তার মন মানসিকতা নিয়ে লেখা ছিল, 'মরিবে না। সে কিছুতেই মরিবে না। বনের পশু যে অবস্থায় বাঁচে না, সে অবস্থায়, মানুষ সে বাঁচিবে।' বাঁচার তাগিদে সে ভিখারি হয়। সহজেই কাঁধের ক্ষত দেখিয়ে আদায় করে পয়সা। কিন্তু সেও মানুষ। তারও আছে অন্য সবার মত একটা মন। যে মনটা ভালবেসে ফেলে পাঁচীকে। পাঁচী ভালবাসে বসির মিঞাকে। তাদের একটি সংসার আছে। কিন্তু ভিখুর শরীরে মিশে আছে নির্মমতা। সে পেতে চায় পাঁচীকে। কি করবে ভিখু? ভালবাসার জন্য আবার কি নামবে হারানো পথে? ২. চোর - ডাকাত ভিখুর পর এবার চোর মধুঘোষের গল্প। মধু ঘোষ। সে হয়ত চোর। তবে সেও নিমগ্ন থাকে সুন্দরের প্রতি। অলস লোকটা সুন্দর মুখচ্ছবির জন্য দুইশ টাকা পণে বিয়ে করে কাদুকে। ঝুঁকি ছিল টাকা উপার্জনের পথে তবে সে তার তোয়াক্কা করেনি। তাদের মধ্যে ভালবাসা ছিল, আবেগ ছিল। কিন্তু কিছু যেন ছিল না। রাখাল মিত্রের বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে সেই সত্যের সামনে পড়ে মধু ঘোষ। রাখাল মিত্রের পুত্র পান্নালালকে নৌকায় দেখে সে খুশি হয়েছিল কিন্তু সেই খুশি টেকেনি। কেন টেকেনি? জানার জন্য পড়তে হবে 'চোর' গল্পটা। ৩. যাত্রা - সবকিছু ঠিকঠাক। কৃষকপিতা তার কন্যা ইন্দুর জন্য সব করেছেন। আজ বিয়ে ইন্দু চলে যাবে তার বাবার বাড়ি ছেড়ে। তার সামনে বিশাল পণ। পণপ্রথার কুফল আর কুসংস্কার কতটা প্রভাবিত করে একজন নারীকে তারই বাস্তবচিত্র এই গল্প। ইন্দুর যাত্রা শুরু হতেই হোঁচট খায় পণের প্রভাবে। আবার সেই পণই মুক্ত করতে আসে ইন্দুকে... যাত্রা গল্পের যাত্রায় পাঠক হারাবেন সেই অন্ধকার সময়ে। ৪. ফাঁসি - গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যুর আদেশ হয়েছে ভদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত সন্তান গণপতির। আইনের মাধ্যমে গণপতি মুক্তি পায় অপবাদ থেকে। বীরের মতই তার ফিরে আসা। স্ত্রী রমা পায় বাঁচার নতুন আশা। স্বামীকে নিয়ে অন্য জায়গায় সে চলে যেতে চায়। কিন্তু গণপতি তাতে রাজি নয়। এদিকে রমা অস্থির সমাজের বাঁকা চোখ নিয়ে। সবার অবজ্ঞা আর তাচ্ছিল্য নিয়ে সে ভীত। একরাতেই সে নিয়ে ফেলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। কে সফল এই দ্বন্দে? রমা, গণপতি? নাকি এই সমাজ? ৫. প্রকৃতি - দশ বছর পর ফিরে আসে অমৃত। যার যাত্রা ছিল থার্ড ক্লাস বগিতে। সে ফিরেছে ফার্স্ট ক্লাসে। বড়লোক হয়েই ফিরেছে সে তবে সে এখনো ঘৃণা করে বড়লোকদের। কিন্তু সত্যিই কি বড়লোকদের ঘৃণা করে? নাকি দারিদ্রতা এড়িয়ে যেতে চায়? অর্থের পরিবর্তন চেয়েছে সে। নিজের না.... তবু কথা রয়ে যায়। এ দ্বন্দ অর্থের আর সমাজের না। এ দ্বন্দ মানবিক প্রকৃতির। ৬. ভূমিকম্প - মনোবিশ্লেষণী গল্প ভূমিকম্প। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র প্রসন্ন। চাকরির চেষ্টায় মাদ্রাজ ঘুরে আসার পর থেকে যার মাঝে বিচিত্র সব উপসর্গ দেখা যায়। পোষাক চুরির ভয়ে তার বিনিদ্র রাত যায়। নিদ্রাহীনতায় কেটে যায় তার সময়। আবার কখনো পত্রিকায় উত্তর না মেলাবার ক্রোধে সে ফেটে পড়ে। রাতে সে স্বপ্ন দেখে। ভয়াবহ স্বপ্ন। একসময় সে একাকী বোধ করতে থাকে। বিয়ে করতে চায়। বড়বাবুর মেয়ে বউ হয়ে আসে তার জীবনে। তবে তাকে সে বিপদ ভাবতে থাকে। কিন্তু বাসররাত কিভাবে যাবে তার? নতুনের আহ্বানে? নাকি অতীতের চিন্তায়? ৭. অন্ধ - বিপত্নীক সনাতন একসময় বাধ্য হয় তার মেয়ে আর জামাতাকে স্বপরিবারে নিজের বাড়িতে ঠাঁই দিতে। তার স্ত্রী মারা যায় দোতলা বাড়ি নির্মাণের জন্য অলঙ্কার বিক্রির শোকে। একসময় সনাতন পাপবোধে জর্জর হয়ে মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়ে। বরণ করে নিতে হয় অন্ধজীবন। কিন্তু মেয়ের সংসার এসে পড়ায় সে নিজের এক দার্শনিক মনের সাথে পরিচিত হয়। সে প্রশ্ন করে 'এ জগতে অন্ধ নয় কে?' কিন্তু 'অন্ধ তো শুধু অন্ধ নয়।' তাহলে কি? উত্তরটা লেখক রেখে দিয়েছেন পাঠকের জন্য। ৮. চাকরি - বাল্যবন্ধু জয়গোপালের খুঁজে দেয়া চাকরিতে জীবন দারুণ যাচ্ছে মহেন্দ্রজিৎ এর। সাথে পেয়েছে চাকরিদাতার কন্যাকে। সেই সাথে গাড়িও আছে মহেন্দ্রর জীবনে। সেই গাড়ি নিয়ে প্রকৃতির কাছে মহেন্দ্র আর তার স্ত্রী শোভারানী। পথে দূর্ঘটনার শিকার.... সামনে তার জীবনযুদ্ধে হার মানা বন্ধু জয়গোপাল। কি হয় তাদের মাঝে? অর্থ কি ব্যবধান গড়ে দিবে বন্ধুত্বে? লেখকের এই গল্পে বৈষম্যযুক্ত সমাজ এক অনন্য সত্যের সামনে থেমে আছে। সেই সত্যের উত্তর হয়ত সবার জানা। হয়ত কেউ জানেনা। ৯. মাথার রহস্য - পতিতপাবন সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। পারিবারিক জীবন যার বড়ই দুর্দশাপন্ন। বেকার পুত্রের বিয়ে, কলেজে পড়া অন্য সন্তান, বিবাহ উপযোগী কন্যা, আর স্ত্রী। সেই সাথে হঠাৎ দুহাজার টাকা হারানো। সবমিলিয়ে এক বিচ্ছিরি অবস্থা। সেই বিচ্ছিরি অবস্থায় সে খানিক পাগল। কি ঘটে তারপর? লেখক উদঘাটন করেছেন তার মনোরহস্য। কিসে আঘাত পেয়ে পতিতপাবনের এই দশা। আর যাদব? সেইই বা কেন এমন? ...... ছোটগল্পকার হিসেবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অনন্য এক সম্পদ। মনস্তাত্ত্বিক দিকের বিভিন্ন দিক নিয়ে তার প্রাগৈতিহাসিক বাংলা সাহিত্যের সব পাঠকের জন্যই এক অনন্য উপহার।
Was this review helpful to you?
or
প্রথম দিকের কয়েক গল্প অসাধারণ। বিশেষ করে প্রাগৈতিহাসিক গল্পটি তুলনাহীন। বাকিগুলা Average