User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
গুরুচরণবাবু মাত্র ষাট টাকা বেতনের ব্যাঙ্কের কেরানী, কিন্তু সংসারে তার মানুষ কম নয় ৷ গুরুচরণবাবু নিজে, তাঁর স্ত্রী, পাঁচটি কন্যা সন্তান এবং ললিতা ৷ গুরুচরণবাবু সম্পর্কে ললিতার মামা হন, নিজের মেয়েদের চাইতেও বোধকরি মাতৃ-পিতৃহারা ললিতাকেই বেশি ভালবাসেন ৷ ললিতার তেরো বছর বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় তার বিয়ে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই ৷ তাই ললিতার বিয়ের জন্যই পাত্র খুঁজে দিতে বলেন শেখরকে ৷ শেখরের বয়স পঁচিশ-ছাব্বিশ ৷ ললিতাদের বাড়ির পাশেই থাকে, দু'বাড়ির মাঝে সম্পর্ক বেশ ভাল ৷ শেখরের বাবার কাছেই গুরুচরণবাবু বাড়ি বন্দক রেখে টাকা নিয়েছেন ৷ শেখরের বাবা স্বভাবে ভাল মানুষ না হলেও শেখর হয়েছে তার মা, ভুবনেশ্বরীর মত ৷ অসাধারণ একজন মহিলা ৷ আর শেখরের কাছেও তার মা-ই সবচেয়ে গর্বের বস্তু ছিল ৷ কিন্তু শেখর কী করে ললিতার জন্য বর খুঁজবে, যেখানে সে নিজেই ললিতাকে অন্য দৃষ্টিতে দেখে ৷ পাড়াপ্রতিবেশী কিংবা বাড়ির আর পাঁচটা মানুষের চোখেও ললিতা শেখরের বোনের মত, সবসময় 'শেখরদা, শেখরদা' বলেই ডাকে, তার সব কাজ গুছিয়ে দেয়, খেয়াল রাখে আর শেখরও ললিতার প্রায় সকল আবদারই পূরণ করে ৷ কিন্তু ললিতা যে শেখরের কাছে আসলে কী, সে কেবল শেখরই জানে ৷ ললিতা নিজেও এ ব্যাপারে অবগত নয় ৷ শরৎবাবুর ভাষায়- "সে যে শেখরের বিশেষ স্নেহের পাত্রী তাহা সবাই জানিত, শুধু সেই স্নেহ যে এখন কোথায় উঠিয়াছে তাহাই কেউ জানিত না, ললিতাও না৷" তাই ললিতার সইয়ের মামা গিরীনবাবুর সাথে ললিতাদের সখ্যতার আভাস পেয়ে মা'কে নিয়ে হাওয়াবদলে যাওয়ার পূর্বেই ললিতার গলায় মালা দিয়ে শেখর এক প্রকার এই দিকটায় বাঁধ দিয়ে যায় ৷ পাছে ললিতাকে হারাতে না হয় ৷ কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে যে খবরটি এল তাতে তার সব আশাই বোধহয় এবার ব্যর্থ হতে চলল, কেননা গুরুচরণ বাবু ব্রাক্ষ্ম হয়েছেন ৷ আর জাত চলে যাওয়া মেয়েকে কি আর তার বাবা বাড়ির পুত্রবধূ মানবেন? নাকি তার মা রাজি হবে? গুরুচরণবাবুও চান গিরীনের সাথেই ললিতার বিয়েটা হোক ৷ ওর মত ভাল ছেলে আর হয় না ৷ কিন্তু ললিতা কী চায়? মামার ইচ্ছের কথা ভেবে বিয়েতে রাজি হয়ে যাবে সে? শেখরই বা এখন কী করবে? ললিতাকে কি তবে হারাতে হল তার?
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর পরিণীতা বইটা পরার ইচ্ছাটা বেশি হল মুভিটা দেখার পর।...কিন্তু মুভি ও বই এর মধ্যে অনেক কিছুই পার্থক্য আছে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কলকাতার পটভূমিতে রচিত হয়েছে উপন্যাসটিইএখানে ললিতা আসলে এক ১৩ বছর বয়সী মেয়ে।এবং শেখর ও গিরিন ২৪ বছর বয়সী যুবক।ছোটবেলা থেকেই ললিতা নিজেকে শেখর এর হিতকারী,সবচাইতে ভাল বন্ধু ও অভিভাবক ভাবত।একসময় উভয়ে উভয়ের প্রেম এ পরে।কিন্তু শেখর ছিল এক আত্মম্ভরি,অহংবাদী ও ভিতু যুবক যার সাহস ছিলনা তার বাবার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর।যাই হোক,সমস্যা শুরু হল শেখর এর উচ্চাকাঙ্ক্ষী পিতা ও ললিতার দরিদ্র ও আদর্শবাদী মামার মধ্যে।এবং এই সময়ে আগমন ঘটল গিরিন এর জা ব্যাপারটাকে আরও জটিল করে তুলল।গিরিন ছিল এক অবিবাহিত যুবক যে দুঃসময়ে ললিতাদের পাশে এসে দাঁড়াল এবং তাদে্র বিভিন্নভাবে সাহায্য করল।কিন্তু একসময় সে ললিতা এর প্রতি দুর্বল হয়ে পরল।এদিকে ধীরে ধীরে ললিতা ও শেখর এর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যা শুরু হল।দুজনের মধ্যে অনাখাঙ্খিত দূরত্ব চলে এল।অনেক বছর পর আবার দুজনের দেখা হল।অপ্রত্যাশিত ভাবে কাহিনী মোড় নিল এক নতুন কাহিনীতে...।ললিতা ও সেখর এর প্রেম কি পরিণীতি পেল।।নাকি পেলনা...নাকি গিরিন চলে এল দুজনের মধ্যে আজীবন এর জন্যে... এখানে একটি বিষয় লক্ষনীয় যে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর অধিকাংশ প্রেমের উপন্যাসএর মত এই উপন্যাস এও নায়িকা অনেক নির্দোষ,পবিত্র ও প্রেমময় এবং নিঃশর্তভাবে অপেক্ষা করে তাদের প্রেমিক এর জন্যে।একই সাথে তারা প্রেমিকা ও তাদের অভিভাবক।অন্যদিকে তারা এম্ন পুরুষ এর প্রেমে পরে যারা ভিতু,অহংকারী,আত্মভিমানী এবং মেরুদণ্ডহীন যারা ভালবাসে কিন্তু ভালবাসা এর জন্যে সমাজের পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ভয় পায়।তারা তাদের পুরুষত্বের দাবী নিয়ে প্রেমিকাকে অপমান অথবা কষ্ট দিতেই শুধু পারে।যেমন শেখর তার পিতার মৃত্যুর পর ললিতা কে স্বীকার করতে পারে তার আগে নয়... কি দুখজনক।অথবা এটাই নিয়তি যে তারা এমন পুরুষকে ভালবাসবে।।এই বাস্তবতাটাই বারবার চলে এসেছে মহান কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর উপন্যাসএ।।