User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
?
Was this review helpful to you?
or
#বুক_রিভিউ শাপমোচন ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় শারদীয় দূর্গাপুজা। ঘরে ঘরে উৎসব আর আয়োজনের মহা সমারোহ। কিন্তু মহেন্দ্র ওরফে মহীন কিছুই করতে পারলো না, ঘরে বৌদি, অন্ধ দাদা আর সোনার টুকরো ভাতিজা খোকন। মহীনদের অবস্থা ভালোই ছিল, বাবা ছিলেন বড় ভালো মানুষ, আয় রোজগার ভালোই ছিল দিনকাল ভালোই যেত, বাবার মৃত্যুর পরে দাদা হাল ধরলেন, দাদা দেবেন্দ্রনাথ সংগীত ভালো করতেন তাই দিয়ে ভালো রোজগারও করতেন মহীনকে স্কুলে পড়াশোনা করালেন, কিন্তু কপালের অদৃষ্টে দুচোখের দৃষ্টি হারালেন অবস্থা খারাপ হতে শুরু করল। মহীন অনেক চেস্টা করেও কিছু উপায় খুজে পেলেন না যাতে করে দুমুঠো খেয়ে দিনাতিপাত করা যায়। ভাগ্যের সন্ধানে নবমীর দিন কলকাতায় রওনা হলো মহীন গন্তব্য পিতৃবন্ধু উমেশ ভট্টাচার্যের বাড়ি। উমেশ ভট্টাচার্যের অনেক উপকার করেছেন মহীনের বাবা মৃত্যু শয্যা থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন মহীনের বাবা। তার কাছে যাওয়া কাজ বা চাকরি যেকোনো একটা করে সংসার টাকে সচল রাখা আর তার চেয়ে বড় স্বপ্ন খোকাকে মানুষের মত মানুষ করা। উমেশ ভট্টাচার্যের কাছে কোন দয়া নয়, কারণ মহীনদের বংশ অনেক উচু কারো কাছে দয়া নেয়া এ বংশে নেই। মহীনের মেট্রিকের সময় দাদা অন্ধ হয়ে যায়, তারপর আর পড়তে পারে নি মহীন কিন্তু খোকার কপালেও যেন এরকম না হয়। খোকাকে নিয়েই সকল আশা মহীনের, খোকার জন্যই আদরের খোকাকে ছেড়ে কলকাতায় যাত্রা। ২৪ নং কাঠালবাড়ি লেন সুবিশাল বাড়ি উমেশ বাবুর, গেটের ভিতরে টেনিস কোট, গাড়ি রয়েছে পার্ক করা, বিশাল তিন তলা ভবন, রয়েছে তিন জন দারোয়ান। উমেশ বাবু উন্নতি করেছেন আয় রোজগার করেছেন জীবনে অনেক। গেটের ভিতরে প্রবেশ করে মহীন মনে মনে ভাবতেছিল এই বুঝি দারোয়ান ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল। মহীনের পোশাকের যা অবস্থা তাতে বের করে না দেয়াই অস্বাভাবিক। পরনে রয়েছে জীর্ণ শীর্ণ ধুতি খানি আর পাতলা গেঞ্জি, খালি পায়ে হেটে এসে আর ধুলোবালিতে ভিক্ষুকের চেয়েও অধম দেখাচ্ছিল মহীনকে। প্রবেশ করল মহীন দারোয়ান আটকালেন না, উমেশ বাবুরই সাক্ষাত পেল প্রথমে, উমেশ বাবু জিজ্ঞেস করলেন কার কাছে এসেছো কি চাও। উত্তরে মহীন জানাল, আমি ক্ষেত্রনাথ মুখুর্যের ছেলে মহীন চন্ডীগড় থেকে আসছি বলে গড় প্রনাম করল। উমেশবাবু খুব সাদরে গ্রহণ করলেন মহীন। জানালেন মহীনের পিতা তার কতবড় উপকার করেছিলেন। উমেশবাবুর তিন ছেলে এক মেয়ে অতীন যতীন রতীন আর মাধুরী। বড় ছেলেই এখন ব্যবসা বানিজ্য সবকিছু দেখাশোনা করছেন, বিয়েও দিয়েছেন সতীলক্ষ্মীর সাথে। মেজ ছেলে বিয়ে করেছেন বিলেতি মেমকে। মহীন এ বাড়িতে আসার পর পরই উমেশবাবু ৫০ টাকা পাঠালেন দাদা দেবেন্দ্রনাথ কে আর মহীনের পৌছানোর খবর। দেবেন্দ্রনাথ যখন বুঝতে পারলেন এ টাকা মহীনের রোজগারের টাকা নয় এ টাকা দান করেছেন উমেশবাবু দেবেন্দ্রর মরমে মরে যেতে ইচ্ছে করল। আজ অসহায় হয়ে অন্যের দানের টাকা টা নিতে হচ্ছে তাকে। মহীন উমেশ বাবুর বাড়িতে আড়াই মাস থাকলো কিন্তু তার কোন কাজ বা চাকরি নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। সারাদিনে শুধু একটু টাইপিং শিখছে আর টুকটাক গান সাহিত্যের আসর। আর প্রতিদিন মাধুরীর সাথে গাড়িতে করে বেড়ানো বাইরে ঘুরাঘুরি খাওয়া দাওয়া। এখানে এসে খোকার কথা ভুলেই গেছিলো মহীন যখন মনে পড়ল কিভাবে সে খোকাকে ভুলে থাকল সে নিজেও ভেবে পেল না। না এজীবন তার নয় এভাবে চলবে না। মহীন কেরানীর চাকরি পেল ৬০ টাকা বেতনের। আর একটা সাহিত্য ম্যাগাজিন গল্প লিখে জমা দিল সেখান থেকে পেল ১৫ টাকা। এই টাকা পেয়ে সাথে সাথে মানি অর্ডার করে দিল দাদার নামে সাথে চিঠি।কেননা মহীন জানে যে তার দাদা কতটা অনিচ্ছায় উমেশবাবুর পাঠানো টাকা টা গ্রহন করেছেন। মানি অর্ডার হাতে পেয়ে দেবেন্দ্রনাথ বুঝলেন এবারের টাকা মহীনের রোজগারের টাকা, আনন্দে কেদে ফেললেন দেবেন্দ্র। চাকরি পেয়ে মহীন মেসে উঠলে উমেশবাবুর বাড়ির কেউ কিছু না বললেও সকলে মনক্ষুন্ন হলেন। মেসে প্রতি শনিবার মাধুরী আসে মহীনকে নিয়ে গাড়িতে করে বাইরে যায় কত আড্ডা হয়। আসলে মাধুরী মহীনকে ভালবেসে ফেলেছিল, কিন্তু মহীন যখন তা বুঝতে পারে সে নিজে কে দূরে সরিয়ে নিতে চায়। কিছুতেই এ হতে পারে না মহীনও ভালবেসে ফেলে মাধুরী কে। মহীন মাধুরীকে আঘাত করে দূরে সরিয়ে দেয় কিন্তু মহীন বুঝতে পারে সে আঘাত কতখানি তার নিজের উপরই এসে পড়েছে। মাধরীর বড় বৌদি বুঝতে পারে যে মাধুরী মহীনকে ভালবাসে, তাই তো সে অন্য কাউকেই বিয়ে করতে চায় না। কিন্তু মাধুরীর দাদারা তাকে খুব বেশি কিছু বলে না একটা মাত্র বোন ওর যাতে খুশি তাই করুক। মহীন মাধুরীকে আঘাত করে বদলী নিয়ে মাদ্রাজ শাখায় চলে যায়। মাধুরী তাকে ভুলে যাক, ভালো ঘরে সুবধূ হয়ে সুখের ঘরকন্যা করুক। কত কষ্ট যে মহীন নিজে পাচ্ছিল তা হারে হারে টের পাচ্ছে, মাঝরাতে মাধুরীর দেয়া সেতারখানা বাজিয়ে সুরের ঝংকার তুলে। হটাৎ মহীন মরনব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, ডাক্তার বলেছেন বাড়ি চলে যান শেষ ক'টা দিন আপন জনদের কাছেই কাটান। বাড়ি চলে আসে মহীন, বৌদি অপর্ণা কাদছেন। খোকা কিছুই বুঝতে পারে না, তার কাকা বাড়ি এসেছে এতো খুশির খবর কিন্তু তার মা কেন কাদছেন, বাবাই বা কেন এত নিশ্চুপ হয়ে আছেন। মহীন মারা গেল। মহীনের তিন টা উপন্যাস আর একটা গানের ক্যাসেট বের হয়েছিল। "মন যমুনা" উপন্যাস টি বেশ ভালো সাড়া জাগায় যেটি উৎসর্গ করেছিল মাধুরী ভট্টাচার্য কে। মাধুরী মহীনের বাড়ি আসা মারা যাওয়া কিছুই জানতে পারে নি। মাধুরী বিয়ে করেনি, দমদমার বাগানে গোশালা বানায় সমাজসেবায় আত্ম নিয়োগ করে, সমাজের দুঃখী মানুষের সেবায় নিয়োজিত করে নিজেকে। মাধুরী প্রতি বছর দশমীতে বাড়ির ঠিকানায় নীল কাগজে চিঠি পাঠায় ভালবেসে যায় নিজের মত করে মহীনকে। কলকাতায় পড়াশোনা করে খোকা, নয় বছর পরে খোকা যখন চিঠিদাতা সম্পর্কে জানতে পারে খুজে বের করে মাধুরী দেবিকে, মাধুরী খোকাকে কাছে পেয়ে অনেক আদর করে, মহীন কেমন আছে জিজ্ঞেস করে, মহীনের ছেলে মেয়ে কয়টা ইত্যাদি। খোকা ভেবে পায় না কি করে কাকার মৃত্যু সংবাদ দিবে দেবীকে, যে দেবী তার কাকাকে এত ভালবেসে যাচ্ছে আপনার মত করে তাকে কি করে এ সংবাদ সে দিবে। খোকার চোখে বার বার কান্না এসে পরছিল মাধুরীর বিভিন্ন কথায়। খোকা অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করে সেখান থেকে চলে যায়। অজানায় থাক এ সত্য। পড়ছি..... ( রানী শেবার আংটি -স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড)
Was this review helpful to you?
or
এক সময় মহেন্দ্রদের পরিবার অনেক স্বচ্ছল ছিলো। কিন্তু কালের নিষ্ঠুরতায় আজ তাদের, দিন আনে দিন খায়- অবস্থা। নিজের জন্য ভাবে না মহেন্দ্র কিন্তু একমাত্র ভাইপোর খেতে না পাওয়ার কষ্ট, ভালো করে থাকতে না পাওয়ার কষ্ট মানতে পারেনা সে। দাদা দেবেন্দ্রও বসন্ত রোগে চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন। অনেক চিন্তাভাবনা করে ঠিক হয় মহেন্দ্র শহরে আসবে। উমেশবাবুর কাছে। উমেশবাবু মাহেন্দ্রর বাবা ক্ষেত্রনাথের বন্ধু। মহেন্দ্র এবং দাদা দেবেন্দ্র খুব চিন্তায় ছিলেন উমেশবাবু মহেন্দ্রকে ভালো চোখে দেখেন কিনা কিংবা মহেন্দ্রকে কোন কাজের ব্যবস্থা করে দেন কিনা।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর_২০১৮ উপন্যাসঃশাপমোচন লেখকঃ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় প্রকাশনীঃ দি স্কাই পাবলিশার্স দামঃ ২০০ টাকা ধরনঃ রোমান্টিক উপন্যাস মূল চরিত্রঃমাধুরী এবং মহেন্দ্র বড়লোক বাবার তিন ছেলে আর এক মেয়ে,,, আর ৩ ভাইয়ের আদরের প্রতিচ্ছবি তাদের একমাত্র বোন মাধুরী।। রুপে গুনে বাকপটুতায় যেন আর একটিও নেয়,,, এরকম রমনীর মনে দোলা লাগানোর জন্য না জানি কতো পুরুষের তীব্র চেষ্টা,,, কিন্তু এতো তেজী বুদ্ধিদীপ্ত নারী কি আত্মসমর্পন করে?? নাকি পদে পদে অপদস্থ হতে হয় একে একে সব পুরুষকে!!!! অভাবে পড়লে নাকি নষ্ট হয় মানুষের স্বভাব,, কিন্তু এই কথাটিকে পুরোপরি মিথ্যা প্রমান করে মহেন্দ্রর পরিবার!!! মানুষের আত্মসম্মান বোধ কতো তীব্র হতে পারে তার এক জ্বলন্ত প্রমান মহেন্দ্রর বড় ভাই,, তবে শেষ পর্যন্ত মহেন্দ্র পেড়েছিল কি দাম্ভিকতা বজায় রাখতে নাকি নিজেকে আত্মসমর্পন করে বড় লোকের ঐ বেশভুষোতে!!!!! কিন্তু এরকমই এক গরীব ঘরের ছেলে যদি দোলা লাগায় বড়লোকের কোন মেয়েকে,,কি হয় তার আসল রুপ?? বাস্তবতার কালস্রোতে ডুবে যেতে দিতে হয় কি ভালোবাসা নাকি কালের বিবর্তনে হারিয়ে যায় সেই ভালোবাসা!!! জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে। যখন সবকিছু অনুকুলে থাকে তখনও যদি ভালোবাসার মানুষটাকে আপন করা না যাই তাহলে কি এমন থাকে, সেই বাধ্যবাধকতা!!!! একটা সময় নিজ মেধাগুনেই ভদ্রসমাজে জায়গা করে নেয় মহেন্দ্র,,চলে সাহিত্যর চর্চা,,কিন্তু দিন যতোই যেতে থাকে ততোই নিজেকে গুটিয়ে নেয় মহেন্দ্র,, এ যেন এক মনোস্তাত্বিক দ্বন্দ,,, কিন্তু কেন?? কি ই বা হতে পারে তার উত্তর.??? বইয়ের মাঝে থাকে কিছু চরিত্র,থাকে কিছু উক্তি যা পাঠক হৃদয় কে কখনো হাসায় কখনো কাঁদায়,, আবার কখনও মনের মাঝে খোরাক সৃষ্টি করে। এই বইটি তার অনবদ্য সৃষ্টি। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ বইটি শেষ করে কেঁদেছি অনেক,,, কাহিনি সাদামাটা,, কিন্তু সাদামাটা কাহিনি যখন অসাধারন ভাবে লেখা হয়,, হৃদয় স্পর্শ করে, চোখের কোনে অশ্রু জন্ম নেয়াটাই স্বাভাবিক হয়ে দাড়াই।।কিন্তু মাঝে মাঝে সম্পর্ক গুলোকে নতুন করে চেনার জন্য হলেও এরকম গল্প থাকা দরকার যা শিক্ষা দেয় নতুন করে ভালোবাসার ইচ্ছাকে, বুঝতে শেখায় ভালোবাসার সংজ্ঞা টা আসলেই কেমন হতে পারে!!!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_রিভিউ_প্রতিযোগিতা মাসঃজুলাই পর্বঃ০১ সপ্তাহঃ০৩ বইয়ের নামঃ শাপমোচন লেখকের নামঃ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় ক্যাটাগরিঃ রোমান্টিক উপন্যাস প্রকাশকঃ দি স্কাই পাবলিশার্স। প্রথম প্রকাশঃ ২০১৪খ্রি. প্রচ্ছদঃ মোবারক হোসেন লিটন পৃষ্ঠাঃ ১১১ মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০টাকা(বইয়ের পাতায়) ISBN: 984 8260501 # লেখক পরিচিতিঃ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় (ইংরেজিতে: Flaguni Mukhopadhyay) জন্ম:১৯০৪ সালের ৭ ই মার্চ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা গ্রামে। তার নামে ২০০৭ সালে এই গ্রামের একটি পাড়ার নামকরণ করা হয় 'ফাল্গুনী পল্লি। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা বাঙালি লেখক ,ঔপন্যাসিক ও বঙ্গলক্ষী মাসিকপত্রের সম্পাদক। এটি তার ছদ্মনাম। তার আসল নাম তারাপদ।তার বিখ্যাত উপন্যাস চিতা বহ্নিমানও শাপমোচন, এই দুটি উপন্যাস তার পাঠক সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। ১৯৫৫ সালে শাপমোচন উপন্যাস অবলম্বনে কোলকাতার পরিচালক সুধীর মুখার্জি উত্তম কুমার - সুচিত্রা সেন জুটিকে নিয়ে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।এছাড়া২০০৯ সালে দুর্গা পূজাউপলক্ষ্যে বাংলাদেশীনাট্য নির্মাতাএসএম দুলালএকই নামে একটি টেলিফিল্ম নির্মাণ করেন। আহসান হাবীব নাসিমও মেহবুবা মাহনুর চাঁদনীঅভিনীত টেলিফিল্মটিএনটিভিতে প্রচারিত হয়।গ্রন্থতালিকা; উপন্যাস: চিতা বহ্নিমান, শাপমোচন, আকাশ বনানী জাগে (১৯৪৩) আশার ছলনে ভুলি (১৯৫০) বহ্নিকন্যা (১৯৫১) ভাগীরথী বহে ধীরে (১৯৫১) মন ওময়ূরী (১৯৫২) জলে জাগে ঢেউ(১৯৫৪) মীরার বধূয়া (১৯৫৬) স্বাক্ষর (১৯৫৭) চরণ দিলাম রাঙায়ে (১৯৬৬) বধূ ফুলশয্যার রাত ফাল্গুনী অমনিবাস শ্রেষ্ঠ উপন্যাসসমগ্র কাব্যগ্রন্থ হিঙ্গুল নদীর কূলে (১৯৩৫) কাশবনেরকন্যা (১৯৩৮) মৃত্যু:২৫ এপ্রিল , ১৯৭৫ সাল। #ভূমিকা: 'শাপমোচন ' একটি হৃদয় স্পর্শক প্রেম কাহিনী নিয়ে রচিত রুমান্টিক উপন্যাস। লেখক কাহিনীটি শুরু এবং শেষ করেছেন, অানন্দমুখর এক শারদীয় পূজার মাধ্যমে।কিভাবে একজন নারী প্রেমকে হৃদয়ে ধারন করে সারাজীবন স্বর্গীয় করে রাখতে পারে তারই সুনিপুণ কাহিনী লেখক তুলে ধরেছেন উপন্যাসে। #পাঠ রিভিউ : শারদীয়া পূজা,,,, পূজার অানন্দের ঢেউ চারিদিকে মুখরিত, কিন্তু এত অানন্দের মধ্যেও এক দারিদ্র,রোগে, শোকে জর্জরিত পরিবারের চিত্র ফুটে উঠেছে প্রথমেই ।যেখানে প্রধান চরিত্রে ছিল মহেন্দ্র নামের এক যুবক,তার বড় অন্ধ দাদা দেবেন্দ্র, বৌদি অপর্ণা আর ভ্রাতুষ্পুত্র খোকন সহ চার জনের পরিবার।মহেন্দ্র অর্থনৈতিক ভাবে অনেক হতাশায় ছিল সেটা প্রথমেই ফুটে ওঠে,"বাঙালি মহাপূজার আনন্দে ব্যস্ত আর সে একটা তুচ্ছ মাটির প্রদীপের আলোও জ্বালাতে পারে না" এই উক্তির মাধ্যমে। মহেন্দ্রের দাদা দেবেন্দ্র শিক্ষিত, সংস্কৃত জানা,সঙ্গীত চর্চায় দক্ষ হওয়ার পরও কেন তাদের বেহাল দশা? কিভাবে তিনি অন্ধ হলেন?কিসের অভিশাপে? মহেন্দ্র নিরাশার মাঝে আশা জাগরনে চেষ্টা করে একমাত্র ভ্রাতুষ্পুত্র খোকনের প্রেমকে কেন্দ্র করে,খোকনকে মানুষ করার জন্য অনেক কিছুই করতে সে রাজি তাই সে পা বাড়ায় কলকাতা নামের শহরে।মহেন্দ্র কি পারে তাদের অভাব ঘুচাতে? সে খোকনকে মানুষ করতে কি পারে? শহরে এসে মহেন্দ্রের জীবন ধারার পরিবর্তন হয়, মহেন্দ্রকে তার বাবা ক্ষেত্রনাথের বন্ধু উমেশবাবু, উমেশবাবুর স্ত্রী সহ সকলেই সযত্নে গ্রহন করে এবং উমেশবাবুর ছোট মেয়ে মাধুরীর সাথে ভাল বন্ধুন্ত এবং পরবর্তীতে গড়ে উঠে এক অনিন্দ্য সুন্দর প্রেম কাহিনী। কলকাতার মত নির্মম শহরেও মহেন্দ্র উমেশবাবুকে সরল,দয়ালু, স্নেহী,কৃতজ্ঞ হিসাবে দেখে অনেক অবাক হয়ে যায় যা সে কল্পনাও করতে পারে নাই। মাধুরী আর মহেন্দ্রের মধ্যে অনেক ব্যবধান ছিল, তাই মহেন্দ্র সবসময় নিজেকে সংযত রাখতো,তার দায়িত্বকে স্মরনে রাখতো।তারপরও মাধুরীর কিসের প্রতি মহেন্দ্র মুগ্ধ হতো আর মাধুরীও গ্রামের মহেন্দ্রকে কিভাবে ভালবেসে ফেলে? এখানে মাধুরীর বড় বৌদির রশিক মিষ্টি কথাও তাদের প্রেমের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলে। মহেন্দ্র স্বল্প বিদ্যা অর্জনে সক্ষম হয় দীনতার মধ্যে সে মাত্র ম্যাট্রিক পাশ করে।কিন্তু পরে সে তার মাঝে অভাবনীয় প্রতিভার অস্তিত্ব খুঁজে পায়,সেটা ভবিষ্যৎ জীবনে মহেন্দ্রকে সমৃদ্ধ করে তোলে।সেটা কিভাবে? মাধুরীর বাড়িতে তাদের প্রেমের বিয়ষটা জেনে যায় এবং প্রেমের পূর্নতা পাওয়ার মত পরিস্থিতি থাকা শর্তেয় মহেন্দ্র মাধুরীর কাছ থেকে পালিয়ে যায় কিন্তু কেন? মাধুরী বিয়ের কথা চলে এমন অবস্থায় মহেন্দ্র মাধুরীর কাছ থেকে দূরে অজানায় গা ঢাকা দেয়, এরকম পরিস্থিতি পার করে মাধুরীর কি পরিণতি হয়? মহেন্দ্র কি আবার ফিরে আসে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে বইটি পড়তে হবে...... #ব্যক্তিগত মতামত : কাহিনী প্রেক্ষাপট বিশেষ কিছুই না। প্রেম মানুষের জীবনে অাসলেই স্বর্গীয়,সেই চিত্রই লেখক ৬০/৭০ দশকের অাধুনিক নাগরিক জীবনযাপন এবং তার মাঝে ধীরে ধীরে গড়ে উঠা অনিন্দ্য সুন্দর প্রেম কাহিনী উপন্যাসে সুনিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।কাহিনীর বর্ণনা গুলো অদ্ভুত সুন্দর, পড়ার সময় একটা কল্পনার ঘোরের সৃষ্টি করে সেটা আমাকে খুব মুগ্ধ করে।প্রতিটি চরিত্রের গুন বর্ণনা মুগ্ধতা করেছে,যদিও প্রতিটা চরিত্রে একটা মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব আছে।ভালবাসার এক জটিল উপাখ্যান মনে হয়েছে আমার কাছে।বইটার কিছুু সংস্কার হলে আরও ভাল হতো,তবুও বইটি আমার কাছে সেরা উপন্যাসের একটি। যারা এখনো বইটি পড়েন নাই, তাড়াতাড়ি পড়ে দেখেন,বইটি বাংলা সাহিত্যে অনেক সমৃদ্ধ! কাহিনীর করুণ পরিনতি প্রতিটা চরিত্রের সাথে আপনাকে কাঁদাবে! বইটি বেশ কয়েকবার পড়েও আবার পড়ার মধ্যে কোন বিরুক্তি অাসেনি,আসলেই বইটি সেরা।প্রেমের আসল অস্তিত্ব উপলব্দি করাতে বইটি আপনাকে সাহায্য করবে আমি নিশ্চিত! #বুক রেটিং : ৪.১২ ব্যক্তিগত রেটিং : ৫/৫ আমার কাছে উপন্যাসটি অসাধারন ও সেরাই মনে হয়েছে। রিভিউ লিখেছেনঃ দীপিকা রায়
Was this review helpful to you?
or
গল্পের নায়কের নাম মহেন্দ্র। গ্রামের সহজ- সরল, আত্মসচেতনতাসম্পন্ন সাধারণ এক যুবক। অভাবের কারণে বেশি পড়াশোনা করার সুযোগ হয় নি। কোনরকমে ম্যাট্রিক পর্যন্ত যেতে পেরেছে। বাবা-মা কেউ নেইই সংসারে। থাকার মধ্যে আছে শুধু দাদা দেবেন্দ্র, বউদি অপর্ণা আর এক ভাইপো খোকন। এদের নিয়ে মহেন্দ্রর জগৎ। এক সময় মহেন্দ্রদের পরিবার অনেক স্বচ্ছল ছিলো। কিন্তু কালের নিষ্ঠুরতায় আজ তাদের, দিন আনে দিন খায়- অবস্থা। নিজের জন্য ভাবে না মহেন্দ্র কিন্তু একমাত্র ভাইপোর খেতে না পাওয়ার কষ্ট, ভালো করে থাকতে না পাওয়ার কষ্ট মানতে পারেনা সে। দাদা দেবেন্দ্রও বসন্ত রোগে চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন। অনেক চিন্তাভাবনা করে ঠিক হয় মহেন্দ্র শহরে আসবে। উমেশবাবুর কাছে। উমেশবাবু মাহেন্দ্রর বাবা ক্ষেত্রনাথের বন্ধু। মহেন্দ্র এবং দাদা দেবেন্দ্র খুব চিন্তায় ছিলেন উমেশবাবু মহেন্দ্রকে ভালো চোখে দেখেন কিনা কিংবা মহেন্দ্রকে কোন কাজের ব্যবস্থা করে দেন কিনা। উমেশবাবু মহেন্দ্রকে কাজের ব্যবস্থা শুধু করে দিবেন বলে আশ্বাসই দিলেন না, নিজের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থাও করে দিলেন। শুরু হয় মহেন্দ্রর নতুন জীবনযাপন। এখানে এসেই পরিচয় হয় মাধুরীর সাথে। মাধুরী উমেশবাবুর একমাত্র মেয়ে। তিন ভাইয়ের এক বোন মাধুরী। ভীষণ আদরের। উমেশবাবুর বাড়িতে এই মাধুরীই হয়ে গেল মহেন্দ্রর সবচেয়ে কাছের মানুষ, ভালো বন্ধু। এক সময় মহেন্দ্র আবিষ্কার করলো মাধুরীর প্রতি তার দূর্বলতা। নিজের অবস্থান আর মাধুরীর অবস্থান সকল কিছু বুঝেও মহেন্দ্র দূর্বল হয়ে পড়ে মাধুরীর উপর। এমনকি মাধুরী নিজেও এই গেয়ো ছেলেটাকে ভালবাসতে শুরু করে। মাধুরী জানে বাবা এবং দাদাদের সে যা বলবে তাই হবে। এটা মহেন্দ্র নিজেও জানে। তবুও কোন এক অজ্ঞাত কারণে মহেন্দ্র পালিয়ে যায় মাধুরীর কাছ থেকে। কিন্তু কেন মাধুরী জানে না। অনেক চেষ্টা করেও মহেন্দ্রর খোজঁ আর পায় না মাধুরী। দুজন দুজনকে ভালবাসে তবুও কেন পালিয়ে গেলো মহেন্দ্র? শুধু কি নিজের আর্থিক দৈন্যতা, নিজের অক্ষমতা? নাকি আরো কোন কারণ ছিলো?
Was this review helpful to you?
or
Moinul