User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
হাঁসুলী বাঁকের উপকথায় তারাশঙ্কর কৌমসমাজের গোষ্ঠীজীবনকে বিষয়ভুক্ত করেছেন। উপন্যাসটিতে রয়েছে সমান্তরাল দু'টি কাহিনী স্রোত। একটি-বাঁশবাঁদি গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কোপাই নদীর বিখ্যাত হাঁসুলী বাঁকের কাহার সম্প্রদায়ের জীবন সংহতির অনিবার্য ভাঙন, কৃষি নির্ভর জীবনের ক্রমাবসান এবং বাঁশবন- ঘেরা উপকথার হাঁসুলী বাঁকের বিরান প্রান্তরে পরিণত হওয়ার কথকতা। তারাশঙ্কর দেখাতে চেয়েছেন হাঁসুলী বাঁকের গোষ্ঠী জীবনের বিনাশের ইতিহাস অর্থাৎ মূল্যবোধের বিপর্যয় এবং পরিণতিতে কাহার সম্প্রদায়ে স্বগ্রাম থেকে উচ্ছেদ হওয়ার প্রসঙ্গ। উপন্যাসে দেখি, যুদ্ধের দামামাই নগদ অর্থ উপার্জনের প্রলোভনে আকৃষ্ট করে কাহারদেরকে দিনমজুরে পরিণত করেছে, যুদ্ধের রসদ যোগানোর অনিবার্যতায় নিশ্চিহ্ন হয়েছে বাঁশবাঁদির বাঁশবন। ফলত, স্বভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়েছে কাহারকুল; বুর্জোয়া ধনতান্ত্রিক সমাজের অজগরতুল্য জঠরের আকর্ষণে বাস্তুহারা- সংস্কৃতিহারা কৃষক কাহার রূপান্তরিত হয়েছে যন্ত্রকলের শ্রমদাসে।
Was this review helpful to you?
or
‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ তারাশঙ্করের প্রথম ধারার শেষ পর্বের মহাকাব্যিক উপন্যাস। এই উপন্যাসে তারাশঙ্কর ভূমি নির্ভর আভিজাত্য বোধে জারিত জীবন ব্যবস্থার মাঝে বিত্ত-মর্যাদা-সচেতন অর্থদৃপ্ত অহমিকার অনুষঙ্গ উপস্থাপন করেছেন। ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’র একটা অনুষঙ্গ তাঁর নিজের জীবন কাহিনীরই যেন প্রতিচ্ছবি। উচ্চকোটির জীবন আর নিম্নকোটির জীবনযাত্রার সংঘাত এই উপন্যাসে ব্যক্ত হয়েছে। ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ উপন্যাসে তারাশঙ্কর কৌম সমাজের গোষ্ঠী জীবনকে বিষয়ভুক্ত করেছেন। উপন্যাসটিতে রয়েছে সমান্তরাল দুটি কাহিনী। বাঁশবাদি গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কোপাই নদীর বিখ্যাত হাঁসুলি বাঁকের কাহার সম্প্রদায়ের সুসংহত জীবনের পতন, কৃষি নির্ভর জীবনের পরিসমাপ্তি ও কাঁশবন ঘেরা উপকথার হাঁসুলি বাঁক বিরানভূমি পরিণত হওয়ার কাহিনী ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা।’কাহার সম্প্রদায়ের উচ্ছেদ ও বুর্জোয়া ধনতান্ত্রিক সমাজের যন্ত্রকলে তাদের দাসে পরিণত হবার কাহিনী ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা।’ তারাশঙ্করের ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের অন্তর্দ্বন্দ্ব এই উপন্যাস লিখতে তাঁকে সাহায্য করেছিল বলে ভাবলে বেশি ভাবা হয় না। ১৯১৪ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে তারাশঙ্কর বয়ঃসন্ধিক্ষণ পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করছেন সবেমাত্র। ওই সময় তারাশঙ্করের মনের উপর যুদ্ধের প্রভাব পড়েছিল। তিনি লক্ষ্য করেছিলেন রাঢ় অঞ্চলের গ্রাম্য জীবনেও জীবন-জীবিকায় পরিবর্তনের সূচনা দেখা দিয়েছে। ওই সময় বাঙালিরা কয়লা খনির ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই লাভপুরের ক্ষয়িষ্ণু জমিদারির আওতা থেকে বের হয়ে কয়লাখনির ব্যবসায় নিজেদের নিয়োজিত করছেন। তাদের এলাকার একটা জমিদারও এ ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করে। ওই পরিবারে তারাশঙ্কর বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’য় রাঢ় অঞ্চলের গ্রাম্য জীবনের আর্থ-সামাজিক দ্বন্দ্ব সংঘাতের কাহিনীই তারাশঙ্কর তুলে ধরেছেন কাহিনী নির্ভর কাব্যিক গদ্যে।সত্যিই ভাল লাগার মত একটি উপন্যাস।পাঠক মিস করবেন না এমন একটি সুন্দর উপন্যাস পড়া থেকে আপনার ভাললাগার খোঁড়াক কিছুটা হলেও মিটবে এই উপন্যাসটি পড়ে।
Was this review helpful to you?
or
কোপাই নদী যেখানে হাঁসুলী গহনার মতো বাঁক নিয়েছে, সেখানেই কাহারদের গ্রাম বাঁশবাঁদি। গ্রামে দুধরনের কাহারদের বাস। আটপৌরে কাহার আর বেহারা কাহার। আটপৌরে কাহাররা একসময় জমিদার, নীলকরদের লাঠিয়াল ছিল। পরবর্তীতে তারা চুরি-ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে। আর বেহারা কাহারদের পূর্বপুরুষগণ পালকি বাহক ছিলো। বর্তমানে তারা পাশের ভদ্রলোকদের গ্রাম জাঙলের বাবুদের জমি চাষাবাদ করে জীবিকানির্বাহ করে। পাশাপাশি সুযোগ পেলেই পুরানো পেশা পালকিবাহক গিরিও টুকটাক করে থাকে। কাহারদের মাতব্বরের নাম বনওয়ারী। মাতব্বর বনওয়ারী চায় কাহাররা তাদের পূর্বপুরুষদের পেশা পালকিবাহকগিরি এবং জমিচাষাবাদই করুক। সে চায় কাহাররা তাদের পুরাতন সব সংস্কার আর রীতি-নীতি মেনে চলুক। কিন্তু, করালী নামের এক বিদ্রোহী কাহার তরুণ বনওয়ারীর জন্য মূর্তিমান দুঃস্বপ্নরূপে আবির্ভূত হয়। করালী কাহারদের পুরাতন পেশাকে জলাঞ্জলি দিয়ে চন্ননপুরের কারখানাতে চাকরি নেয়। বনওয়ারীরদৃষ্টিতে করালীর এহেন কর্ম জাত যাওয়ার সমতূল্য। আবার আধুনিকমনা করালী কাহারদের সংস্কার-কুসংস্কার গুলোকে পাত্তা দিতে চায়না। করালী আত্মসম্মানের সাথে বাচতে চায়। সেকোন অন্যায়-অবিচার কেই মুখবুজে সহ্য করে না। করালী চায় কাহাররা বাবুদের গোলামি বাদ দিয়ে তার মতো কল-কারখানায় চাকরি করুক, একটু স্বচ্ছলতার মুখ দেখুক, সত্যিকারের মানুষের মতো বাচুক। বাঁশবাঁদির তরুণ কাহাররা করালীর ভক্ত, অনুসারী। কিন্তু, মাতব্বর বনওয়ারী এবং প্রবীণ কাহারগণ করালীর ঘোর বিরোধী। তাহলে, শেষ পর্যন্ত কে জয়ী হবে? বনওয়ারী নাকি করালী? পুরাতন সংস্কার-কুসংস্কার, রীতি-নীতি নাকি আধুনিক চিন্তা-চেতনা আর তারুণ্য? তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'হাঁসুলীবাঁকের উপকথা'য় একটি ক্ষীয়মাণ জনগোষ্ঠীর জীবনসংগ্রাম আর প্রাত্যহিক সুখ- দুঃখের গল্প উঠে এসেছে। লেখক তাঁর এই বিখ্যাত উপন্যাসে পুরাতনের সাথে নতুন, বার্ধক্যের সাথে তারুণ্যের আর প্রাচীন ধ্যানধারণার সাথে আধুনিক চিন্তা-চেতনার সেই চিরন্তন লড়াইকে উপস্থাপন করেছেন। বাংলা সাহিত্যের উপন্যাস ধারার এই রত্নটি একটি অবশ্যপাঠ্য ক্লাসিক....
Was this review helpful to you?
or
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর হাসুলী বাঁকের উপকথা প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ সালে। এই উপন্যাসের সুত্রে আমরা বাংলা উপন্যাসের আলাদা মানচিত্রে। আলাদা ভুগোলে গিয়ে প্রবেশ করি। এই উপন্যাসে উঠে এসেছে লোকায়িত জগতের অতলে লুকিয়ে থাকা এক আদিম সমাজচিত্র। কোপাই নদীর বৃত্তাকার ধরনের বাঁক, নারীদের গলার অলংকার হাঁসুলীর অনুরূপ নেই বাঁকে নিবিড় নিশ্ছিদ্র বাঁশবন, বেতবন। সূর্যের আলো সেখানে প্রবেশ করার মতো পথ পায়না। বাঁশবাদির কাহারদের বসবাস এখানে। লৌকিক দেবতা অপদেবতার নির্দেশে কাহারদের সমাজ পরিচালিত হয়। মানুষের সমস্ত আচরণকে এখানে নিয়ন্ত্রন করে কুসংস্কার , লোকবিশ্বাস, রীতি ,প্রথা ,করন কারন মতো কঠোর অনুশাসন।তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজবিজ্ঞানীর মতো রাঢ় অঞ্চলের এই প্রান্তবাশী ,অন্ত্যজ , অস্পৃশ্য সমাজের চবি অঙ্কন করেছেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর হাসুলী বাঁকের উপকথা অন্যতম প্রধান সৃষ্টি। বনোয়ারী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর শ্রেষ্ঠ কল্পনা চরিত্র গুলোর মধ্যে অন্যতম। করালির সর্প নিধন থেকে বনোয়ারী এক গোষ্ঠীগত পাপ চেতনার দ্বারা অধিকৃত হয়েছে। এ উপন্যাসে সাপ আর নদী দুই প্রতীক ।একটি হল যুগ যুগান্তর ধরে জমে থাকা কাহারদের বহিরজীবন অ অন্ত্রজীবন এর অন্ধকার এর গতির প্রতীক ।আর একটি হলও এই অচলতার মাঝখানে গতির প্রতীক। আঞ্চলিক প্টভুমির জ্ঞান, ভুমি ব্যবস্থার এবং গ্রামীন আরথনীতিক সঠিক চিত্র অঙ্কন ইত্যাদি এই উপন্যাসের সার্বিক পরিবেশকে জমাট করে তুলেছে। তা এত জমাট যে এই উপন্যাসের কোনটি থেকে কোনটি কে আলাদা করা যায়না। বনোয়ারী কাহার পাড়ার মোড়ল ।কাহারপারার ভবিশ্যত করালি তার হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে চায় বলেই তাদের দ্বন্দ্ব । কাহার পাড়ার বটগাছে যখন কুড়ুলের ঘা পড়ে তখন বনোয়ারী ইতিহাসের অনিবার্যটার কাছেই বিদ্ধস্ত হ্য।অথচ ইতিহাসের এই অনিবারযতা অদেইস্টবাদ নয়। যদিও অদৃষ্ট যেমন অপ্রতিরোধ্য তেমনি হাসুলী বাঁকের উপকথা এয় কাহার পল্লীতে ইতিহাসের অনুপ্রবেশ ও তেমনি অপ্রতিরোধ্য