User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
গল্পের নায়ক অ্যান্থনি ওয়াইল্ডিং। ত্রিশ বছর বয়সী দীর্ঘদেহী সুদর্শন এক সৈনিক অ্যান্থনি ওয়াইল্ডিং। অ্যান্থনির সাহস এবং দৃঢ়তার কারণে আড়ালে তাকে লোকে ডাকে "ওয়াইল্ড ওয়াইল্ডিং"। সপ্তদশ শতকের ইংল্যান্ড।রাজা ১ম চার্লস এর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেছেন ২য় চার্লস। এদিকে ক্যাথলিক রাজা ২য় চার্লসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন প্রটেস্ট্যান্ট পক্ষের নেতা ডিউক অভ মনোমাথ। মনোমাথের একনিষ্ঠ সহযোগী অ্যান্থনি ওয়াইল্ডিং। রুথ ওয়েস্টমাকট - সুন্দরী, ব্যক্তিত্বমনা এক নারী। নিজের আত্মসম্মান যার কাছে যক্ষের ধনের মত। সেই সাথে তার আরেক যক্ষের ধন তার ভাই রিচার্ড ওয়েস্টমাকট। নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে হলেও ভাইকে আগলে রাখাই রুথের স্বভাব। বাবা মারা যাওয়ার সময় ভাইয়ের সমস্ত দায়িত্ব দিয়ে যায় রুথের হাতে। আর তাইতো রুথ সেই দায়িত্ব পালন করে চলে সবসময়। অ্যান্থনি ওয়াইল্ডিং এই দায়িত্ববান, আত্মসম্মানী মেয়েটাকে ভালবাসে। তাকে নিজের জীবনসঙ্গীর মর্যাদা দিতে চায়। কিন্তু রুথ ওয়েস্টমাকট প্রথম দিকে অ্যান্থনির প্রতি আকৃষ্ট থাকলেও অ্যান্থনির সম্পর্কে নানা গুজবের কারণে ধীরে ধীরে বিরূপ হয়ে ওঠে তার মন। আর রুথের এই বিরূপ মনে আরো ঘি ঢালে তার নিজের ভাই রিচার্ড ওয়েস্টমাকট। রিচার্ড জানে সব সম্পত্তি রুথের হাতে। অ্যান্থনির মত ব্যক্তিত্ববান স্বামী যদি রুথের হয় তবে ওর সব অন্যায় কাজের সমাপ্তি ঘটবে। হাতছাড়া হবে সম্পদ। তোষামোদেও কোন কাজ হবেনা। আর তাই অ্যান্থনির বিরুদ্ধে রুথের মন বিষিয়ে তুলতে উঠেপড়ে লাগে সে, হাতিয়ার হিসেবে নেয় সত্য-মিথ্যা নানা রটনা। আর এই কাজে তার সহযোগী রোল্যান্ড ব্লেক নামের ক্ষমতা ও অর্থলোভী এক পুরুষ। যে কিনা রুথকে পটিয়ে বিয়ে করে সমস্ত সম্পদ এর মালিক হতে চায়। রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি,যুদ্ধ শুরু হবে যে কোন সময়। এমন অবস্থায় অ্যান্থনি কীভাবে রুথকে নিজের করে পেতে পারে? রুথের প্রতি তার ভালবাসা প্রমাণের জন্য কী করবে অ্যান্থনি? রিচার্ড আর রোল্যান্ড ব্লেকের সমস্ত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অ্যান্থনি কোন সরঞ্জাম নিয়ে লড়বে? তার তো একমাত্র হাতিয়ার ভালবাসা। ভালবাসার সাথে অসামান্য দায়িত্ববোধ এর লড়াই এই বই। বলতে গেলে এটি এক নিখাঁদ প্রেমের গল্প। সচরাচর রোমান্টিক উপন্যাস আমি একেবারেই গিলতে পারিনা। এই বই পড়তে গিয়ে প্রথম দিকে অ্যান্থনির সব আচরণ আর কার্যকলাপ আমার অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছিলো। কিন্তু পরে এসে দেখলাম, ভালবাসার জন্য সবকিছু উৎসর্গ করার জন্য যে পরিমাণ প্রেম থাকা দরকার অ্যান্থনি তার মূর্ত প্রতীক। যেখানে জীবন সংশয় জেনেও সে রুথের কথা ভেবেছে। জোর করে আদায় করতে যায়নি রুথের প্রেম। ভালবেসেছে একতরফা। যুদ্ধের ব্যাপারে ডিউক অভ মনোমাথের বারবার ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ দেখে প্রচন্ড বিরক্ত লেগেছে। শাহেদ ভাইয়ের অনুবাদ পড়ে খুব আরাম পাই। এখানেও তাই হয়েছে। একেবারে ঝরঝরে। কোন অতিরিক্ত বর্ণনা নেই। বাক্যের প্যাঁচ নেই। প্রচ্ছদ যেন রুথ,অ্যান্থনি আর ব্লেকের ত্রি-লড়াই এর প্রতিচ্ছবি। যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে কুটিলতা আর হঠকারিতার উদাহরণ পাওয়া যায় এই বইয়ে। সামান্য ভুল সিদ্ধান্তের জন্য কত ক্ষতি হয় তার দেখা পাওয়া যায়। সর্বোপরি যুদ্ধের ময়দানে জীবন হাতের মুঠোয় নিয়েও ভালবাসার জন্য ত্যাগ এবং স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মানুষ এর বেঈমানি - এই দুই এর মিশ্রণে বইটি ভালো লেগেছে। এমন প্রেমের দেখা বাস্তবে না মিললেও বইয়ের পাতায় চোখ বুলাতে ভালোই লাগে। প্রিয় লাইন- "পায়ে পা বাধিয়ে ঝগড়া লাগানোর চেষ্টা করার পরেও যদি কেউ পাত্তা না দেয়, তাহলে তার চেয়ে বড় অপমান আর কি আছে?"
Was this review helpful to you?
or
গল্পের পটভূমি সপ্তদশ শতকের ইংল্যাণ্ড। সে সময়ে ইংল্যাণ্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুব একটা ভালো ছিলো না। পরপর কয়েকটি গৃহযুদ্ধ, রাজা প্রথম চার্লসের মৃত্যু, দ্বিতীয় চার্লসের নির্বাসন প্রভৃত মিলিয়ে একটি গোঁজামিল অবস্থা। এই গল্পের পটভূমি মূলত ক্যাথলিক রাজা দ্বিতীয় চার্লসের বিরুদ্ধে প্রটেস্ট্যাণ্ট পক্ষের নেতা ডিউক অভ মনমাথের বিদ্রোহ। এমন একটা সময় যখন সবাই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুদ্ধ শুরু হবে যেকোনো সময়। গল্পের নায়ক অ্যান্থনি ওয়াইল্ডিং মনমাথের সহযোগী ও সমর্থক। সুদর্শন ও সাহসী যুবক এই ওয়াইল্ডিং। কিন্তু ভালোবাসার মানুষ রুথ ওয়েস্টমাকটের কাছে সে ব্যার্থ। রুথও কি অ্যান্থনিকে ভালোবাসতো না! বাসতো। কিন্তু সমাজে অ্যান্থনির নামে প্রচলিত কিছু গুজব ও নারী মনের সন্দেহের কারনে ধীরেধীরে অ্যান্থনির প্রতি ঘৃণা তৈরি হয় তার মনে। কিন্তু অ্যান্থনি নিপাট ভদ্রলোক। একই সাথে বীর ও সাহসীও বটে। কিন্তু ভালোবাসা কি জোর করে পাওয়া যায়? রুথের ভাই রিচার্ডের সাথে ডুয়েল লড়তে গিয়েও রুথের অনুরোধে ডুয়েল থেকে সরে আসে অ্যান্থনি। আর যাদের ডুয়েল সম্পর্কে ধারনা আছে তারা নিশ্চয়ই জানেন যে, ডুয়েলে না গিয়ে হার মানা কতটা অসম্মানের কাজ ছিলো সেই সমাজে। এদিকে আবার আছে রুথের বর্তমান পাণিপ্রার্থী স্যার রোনাল্ড ব্লেক। যেহেতু ব্লেক ও রুথের মধ্যে একমাত্র বাধা অ্যান্থনি, সেহেতু সব সময় অ্যান্থনি কে সরিয়া দেওয়ার একেকটা ফন্দি আটতে থাকে ব্লেক। অ্যান্থনি-রুথ-ব্লেক থাকুক, ওদিকে বেজে উঠছে যুদ্ধের দামামা। কে জিতবে? অ্যান্থনির একদিকে ভালোবাসা অপরদিকে দায়িত্ববোধ। রুথের একদিকে ভালোবাসা অপরদিকে দোটানা। এক যুদ্ধের মধ্যে আরেক যুদ্ধ চলছে অ্যান্থনি, রুথ আর ব্লেকের মধ্যে। লেখকের অনেক বইয়ের অনুবাদ থাকলেও লেখক সম্পর্কে কোনো তথ্য পেলাম না অনলাইনে। আর যদি অনুবাদকের কথা বলতে হয় তাহলে বলবো সেবার অনুবাদ নতুন করে কিছু বলার নাই। তাছাড়া শাহেদ জামানের অনুবাদের অনেক প্রশংসা শুনেছি। এবারই প্রথম পড়লাম। সেবা থেকে এটা ওনার প্রথম অনুবাদ সম্ভবতঃ। সব মিলিয়ে প্যাকেজটা দারুন!