User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Dipu Sarkar . #রবিজ_রকমারি_বুক_রিভিউ_কন্টেস্ট . সম্ভবত এখন খুব কম মানুষ পাওয়া যাবে যাদের হাতে স্মার্ট ফোন নেই। মাঝে মাঝে ভাবি এই স্মার্টফোন আমাদের স্মার্ট না বানিয়ে আনস্মার্ট বানিয়ে ফেলছে। মনে হতে পারে কেন আমি এই কথা বলছি ? আসলে যখন আমি গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যের লেখা আমার দেখা পোকামাকড় পড়ছিলাম তখন ভাবছিলাম আমরা আসলেই কীভাবে প্রকৃতি দেখতে হয় সেটাই ভুলে যাচ্ছি। আচ্ছা অনেক বড় ভুমিকা দেয়া হয়ে গেছে এবার রিভিউ দেয়া শুরু করি। বইয়ের প্রথম অধ্যায়টা গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যের লেখা নয়। প্রথম অধ্যায় তিনি যে একজন উপক্ষিত বিজ্ঞানী সেটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আসলেই উনি অনেক উপেক্ষিত তা না হলে এতবছর পর মুনির হাসান স্যারের “গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য : শরিয়তপুরের উপেক্ষিত প্রকৃতি বিজ্ঞানী” প্রবন্ধ পড়ার পর ওনার সম্পর্কে জানতে পারি। এই রিভিউ পড়ার আগে যদি কেউ গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যের নাম না শুনে থাকেন তাহলে স্যারের এই ব্লগটা দেখে আসবেন। এবার প্রবন্ধগুলো সম্পর্কে কথা বলা যাক লাল-পিঁপড়ের জীবনের ইতিহাস – গাছে থাকা লাল পিঁপড়েদের কথা এখানে জানা যাবে। বইয়ের ভাষায় প্রচলিত নাম নালসো পিঁপড়ে কিন্তু আমার গ্রামের বাড়িতে একে ডাইয়া পিঁপড়া বলে জানতাম। আকৃতিতে বড় হলেও ছোট ছোট লাল পিঁপড়েকে এরা খুব ভয় পায়। এদের বাসা তৈরি ও লড়াই জীবন প্রকৃতি নিয়ে জানা যাবে। আর এদের সাথে ছোট পিঁপড়েদের লড়াইয়ের একটা চিত্রও পাওয়া যাবে। বিষ-পিঁপড়েদের জীবন কাহিনী – এদের জীবন ধারণ সম্পর্কে পর্যালোচনা করতে কত খড়কুটা পোহাতে হয়েছে তার কিছুটা নমুনা জানা যাবে। যেখানে বেশিরভাগ গবেষক এদের রানী পিঁপড়ে খুঁজতে খুঁজতে হয়রাণ তখন তিনি দেখালেন অনেক কর্মী পিঁপড়েই ডিম দিয়ে থাকে। সহজে কৃত্রিম বাসায় থাকতে না চাওয়া এই পিঁপড়ের দলকে কীভাবে পোষ মানিয়েছিলেন তার কিছুটা ধারণাও পাওয়া যাবে। শ্রমিক পিঁপড়ার জন্ম-রহস্য – বিভিন্ন প্রকারের পিঁপড়ের শ্রমিকদের জীবন কর্ম পর্যালোচনা করতে গিয়ে শেষমেশ বার বার ব্যর্থ হচ্ছিলেন। কেননা বেশিরভাগ পিপড়েই মাটির নিচে বসবাস করে। সেখানেই তার জন্ম ও শেষে মৃত্যু। সবশেষে লাল-পিঁপড়ে পুষতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। এরপরের কাহিনী অনেক চমৎকার। এই শ্রমিক দল পিঁপড়ে কিভাবে আমৃত্যু খাবার সংগ্রহ বা লড়াই করেন বা রানী পিঁপড়ের সেবায় জীবন শেষ করে দেয় তার বর্ণনা পাওয়া যাবে। খুদে-পিঁপড়েদের ব্লিৎসক্রিগ – এখানে খুদে পিঁপড়েদের লড়াই সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জানা যাবে। নালসো পিঁপড়েদের সাথে এদের লড়াইয়ের গল্প শুনলে অবাক হতে হবে। পিঁপড়েদের বুদ্ধি – দুই দল পিঁপড়ের লড়াই করার সময় তাদের যুদ্ধের ক্রিয়া সম্পর্কে জানা যাবে। এছাড়া এক আঠার বোতলের মাঝে একটি আরশোলা মারা গেলে পিঁপড়েরা সেই আঠার হাত থেকে বেঁচে গিয়ে কিভাবে সেই আড়শোলা সংগ্রহ করেছিলো তার বর্ণনাও জানা যাবে। উইপোকার গর্ত থেকে মাটি সরিয়ে কিভাবে নালসো পিঁপড়ে উইপোকা সংগ্রহ করে তার বর্ণনাও পাওয়া যাবে। আরও কী কী আছে সেটা জানতে পড়েই ফেলুন না। পিঁপড়ের লড়াই – দুইদল পিঁপড়ের লড়াই সম্পর্কে এইক্ষেত্রে জানা যাবে। এই অধ্যায় নিয়ে বলার দরকার নাই। কানকোটারির জীবন কথা – এদের সম্পর্কে ছোট দুই একটি কথা জানাই। এই পোকারা ডিম পাড়ার সময় হলে যদি শত্রু আক্রমণ করে তাদের প্রতিরোধ করার জন্য মাটির দস্তানা তৈরি করে। আর পরীক্ষা করে দেখা গেছে এরা নিজের ওজনের ৫৩০ গুণ ভারী জিনিস টানতে পারে। নেউল-পোকার জন্ম রহস্য – সাধারণত বিভিন্ন পোকামাকড় মাকড়শাকে ভয় পায় কিন্তু মাকড়শা আবার এই নেউল-পোকাকে ভয় পায়। কেন পায় ? এই রহস্যের মাঝেই লুকিয়ে আছে নেউল-পোকার জন্ম রহস্য। কুমোরে-পোকার সন্তানরক্ষার কৌশল – পোকার শত্রু পোকা না হলে এত এত পোকামাকড় জন্ম নেয় যে তাদের জন্য আমরা সহজে থাকতেই পারতাম না। একটি পোকাকে হুল ফুটিয়ে মেরে না ফেলে অবস করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু কেন ? রহস্য সমাধানে পড়ুন কুমোর-পোকার সন্তানরক্ষার কৌশল বোলতার জীবন-রহস্য – এখানে লেখকের একটা খবর জানাই, কেবলমাত্র বোলতার জীবন রহস্য খুঁজে বের করার জন্য বাসার মধ্যে তৈরি করেছিলেন বোলতার বাসা। তারপর কী হলো ... পড়ে দেখুন না। শোঁয়াপোকার মৃত্যু-অভিযান ঃ- গোলকধাঁধায় ঘুড়ে মৃত্যু এই কথাটার বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যাবে এই অধ্যায়ে। ভীমরুলের রাহাজানি – বোলতা বনাম ভীমরুল কী হবে ফলাফল ? কেন তাদের মাঝে পরস্পর এই যুদ্ধ থাক না সে কথা সবাই একটু বইটা পড়েই জানুক। রিভিউ এর আকার অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে তাই বইয়ের বাকি অংশের বর্ণনা সংক্ষিপ্ত করছি। বইয়ের শেষ অংশে বাংলায় যেসব মাকড়সা আছে তাদের বর্ণনা দিয়েছেন। যেসব মাকড়সার বর্ণনা দেয়া আছে তা হলো মেছো-মাকড়সা, টিকটিকি-শিকারি মাকড়সা, চামচিকা শিকারি মাকড়সা, নেকড়ে মাকড়সা, বাংলার পিঁপড়ে-অনুকারী মাকড়সা, চামচিকা শিকারি মাকড়সা, প্যারাসুটিস্ট মাকড়সা, গর্তবাসী মাকড়সা, তাঁতি-বৌ মাকড়শা। শেষ করি, এই বইয়ের বেশীরভাগ প্রবন্ধ ১৯৭৫ সালে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত “বাংলার কীটপতঙ্গ” ও “বাংলার মাকড়সা” থেকে নেয়া।