User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন জনপ্রিয় ভারতীয় বাঙালী কথাসাহিত্যিক। তিনি মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। "আরণ্যক" উপন্যাসের নামই উপন্যাসের মূল কথা বলে দিচ্ছে। 'সত্যচরণ' চরিত্র দিয়ে উপন্যাসের শুরু যে পড়া লিখা শেষ করে আজকালকার সাধারণ যুবকদের মতোই চাকরীর খোঁজ করছিল বিভিন্ন জায়গায়, এমন সময় হুট করেই তার এক বন্ধু তাকে জঙ্গলে চাকরী দেয়। প্রথমে সে অনেক ভাবছিল কি করে শহরের মানুষ হয়ে জঙ্গলে থাকবে বা কীভাবে তার সময় পার করবে কিন্তু যতই দিন যেতে লাগলো জঙ্গলের প্রতি তার ভালো লাগা গভীর হতে থাকলো। তার সামনে একের পর এক চরিত্র গুলো আসতে থাকে, বন-জঙ্গল এর রহস্য তাকে ঘিরে ধরতে থাকে। কখনো বাঘের ভয়, কখনো বন্যমহিষের সব ভয় এক হয়ে তার এক একটা দিন এক একটা বছর খুব রোমাঞ্চক ভাবে তার কাটতে থাকে। তার ভাগ করে দেয়া জঙ্গলের জমিতে মানুষ গুলো ফসল চাষ করতে থাকে। পাহাড় - নানান রকম গাছ - পশু- পাখি -ঝর্না - পাহাড়ি মানুষ- সেসব মানুষদের কথা- সংস্কৃতি সব কিছুর একার দর্শক হয়ে থাকে সত্যচরণ সে সব মুগ্ধ হয়ে চোখ ভরিয়ে দেখে নিতে থাকে কিন্তু কখনো তাদের সাথে গভীর আরণ্যে ডুবে যেতে পারে না কারণ তার চাকরী শহুরে লোক সামান্য চাকুরীর জন্য সেখানে গিয়েছে, জঙ্গলে তার কোন স্থান নেই। শেষ সময়ে যখন তিনি পেছন ফিরে তাকিয়ে ছিল তখন নিজের অজান্তেই চোখের কোণে অশ্রু এসেছিল কারণ তিনি না চাইতেও প্রকৃতি মাকে খণ্ডে খণ্ডে ভাগ করে এক বীভৎস রূপে সাজিয়ে ফেলেছিল কারণ সেটাই তার চাকুরীর কাজ ছিল। যদিওবা তারও ইচ্ছে হয়েছিল সাঁওতাল রাজকন্যা ভানুমতীকে জীবনসঙ্গী বানিয়ে তাদের সাথেই আরণ্যের গর্ভে ডুব দিতে কিন্তু তিনি পারেনি নিজের গণ্ডী পার হতে, পারেনি অজানা একটা শৃঙ্খল ভাঙতে। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল আমি নিজেই সত্যচরণ হয়ে গেছি , আমি বনে-জঙ্গলে ঘোড়ায় চড়ে বেড়াচ্ছি -পাহাড়ি মানুষদের সাথে কথা বলছি-অবাক চোখে সব দেখছি; বইটা পড়া মুহূর্তের সময় গুলো আমার মুগ্ধতায় কেটেছে, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় খুব সূক্ষ্ম - সুনিপুণ ভাবে উপন্যাসটি রচনা করেছেন কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য কাগজে কলমে বর্ণনা করা বেশ কঠিন কাজ। 'আরণ্যক' বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর রচিত চতুর্থ উপন্যাস। ১৯৩৯ সালে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিহারে তার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে উপন্যাসটি রচনা করেন। উপন্যাস পড়া শেষ করে ভেবেছিলাম-অনেক সুন্দর করে অনেক কথায় অনেক গুছিয়ে একটা প্রতিক্রিয়া লিখবো কিন্তু এখন লিখতে বসে সেসব কিছুই লিখতে ইচ্ছে করছে না কারণ আমি চাচ্ছি যারা এখনো বইটি পড়েনি তারা যেন আমার প্রতিক্রিয়া পড়ে কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বা আমি যা বলেছি সেসবের সত্যতা খোঁজার জন্য হলেও বইটি পড়ে দেখে, আমি চাই সবাই বইটি পড়ুক আমার মতো মুগ্ধ না হোক অন্ততঃ জানুক আরণ্যক নামক উপন্যাসে আরণ্যের ছোঁয়া আছে। শুভ হোক আপনার পাঠ্য কার্যক্রম।
Was this review helpful to you?
or
এই মেঘ, এই সন্ধ্যা, কোলাহলরত শিয়ালের দল, সরস্বতী হ্রদের জলজ পুষ্প, রাজু পাহাড়, জোস্না রাত, শেফালি পুষ্পের শোপ, অরণ্য, ভানুমতী, নির্জন-স্তবদ্ধ বনানী হ্রদ, মহালিখারূপের পাহাড়, রাজা দোবরু পান্না ও তার রাজ্য, ভাদ্র মাসের মকাই, পৌষ মাষের কালাই, বৈশাখ মাসের গম, সেই দরিদ্র গোঁড়-পরিবার পড়তে পড়তে সব যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম। হেমন্তের পাহাড়ি ছাতিম ফুলের সুবাশ যেন মন প্রাণ মাতিয়ে তুলছিল। চোখের সামনে ভেসে উঠছিল, দূরে মিছি নদী উত্তরবাহিনী হইয়া পাহাড়ের নীচে দিয়া ঘুরিয়া যাইতেছে। নওয়াদার দিকে যে অস্পষ্ট পাহাড় শ্রেণী, তারই পিছনে সূর্য অস্তগেল, সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি হাওয়া আরও শীতল হইল। ছাতিম ফুলের সুবাস আরও ঘন হইয়া উঠিল, ছায়া গাঢ় হইয়া নামিল শৈলসানুর বনস্থলীতে, নিম্নের বনাবৃত উপত্যকায় মিছি নদীর পরপারের গন্ড- শৈলমালার গাত্রে। নবনীলনীরদমালার মতই সমুদয় বিশ্বকে অস্তিত্বের অমৃতধারায় সিক্ত করিতেছে - এই বর্ষা-সন্ধ্যা তাঁরই প্রকাশ, এই মুক্ত জীবনানন্দ তাঁরই বাণী, অন্তরের অন্তরে যে বাণী মানুষকে সচেতন করিয়া তোলে। অদ্ভুত বর্ণনা অসাধারণ রচনা..... গ্রামের কথা বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছিল। ভানুমতীর জন্য আমার বেশ মায়া হয়েছে সাহুজী কে ভালো লেগেছে, ভালো লেগেছে কুন্তাকেও।
Was this review helpful to you?
or
এই মেঘ, এই সন্ধ্যা, কোলাহলরত শিয়ালের দল, সরস্বতী হ্রদের জলজ পুষ্প, রাজু পাহাড়, জোস্না রাত, শেফালি পুষ্পের শোপ, অরণ্য, ভানুমতী, নির্জন-স্তবদ্ধ বনানী হ্রদ, মহালিখারূপের পাহাড়, রাজা দোবরু পান্না ও তার রাজ্য, ভাদ্র মাসের মকাই, পৌষ মাষের কালাই, বৈশাখ মাসের গম, সেই দরিদ্র গোঁড়-পরিবার পড়তে পড়তে সব যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম। হেমন্তের পাহাড়ি ছাতিম ফুলের সুবাশ যেন মন প্রাণ মাতিয়ে তুলছিল। চোখের সামনে ভেসে উঠছিল, দূরে মিছি নদী উত্তরবাহিনী হইয়া পাহাড়ের নীচে দিয়া ঘুরিয়া যাইতেছে। নওয়াদার দিকে যে অস্পষ্ট পাহাড় শ্রেণী, তারই পিছনে সূর্য অস্তগেল, সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি হাওয়া আরও শীতল হইল। ছাতিম ফুলের সুবাস আরও ঘন হইয়া উঠিল, ছায়া গাঢ় হইয়া নামিল শৈলসানুর বনস্থলীতে, নিম্নের বনাবৃত উপত্যকায় মিছি নদীর পরপারের গন্ড- শৈলমালার গাত্রে। নবনীলনীরদমালার মতই সমুদয় বিশ্বকে অস্তিত্বের অমৃতধারায় সিক্ত করিতেছে - এই বর্ষা-সন্ধ্যা তাঁরই প্রকাশ, এই মুক্ত জীবনানন্দ তাঁরই বাণী, অন্তরের অন্তরে যে বাণী মানুষকে সচেতন করিয়া তোলে। অদ্ভুত বর্ণনা অসাধারণ রচনা..... গ্রামের কথা বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছিল। ভানুমতীর জন্য আমার বেশ মায়া হয়েছে সাহুজী কে ভালো লেগেছে, ভালো লেগেছে কুন্তাকেও।
Was this review helpful to you?
or
আপনি যদি আমায় প্রশ্ন করেন বাংলা সাহিত্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় বই কোনটা আমি সঙ্গে সঙ্গে বলবো আমার প্রিয় বই বিভূতিভূষণের আরণ্যক…আমার নাগরিক জীবন একদম ভালো লাগে না কারণ আমি গোপনে গোপনে একজন আরণ্যক, হ্যা আমি আরণ্যক, বন্ধুদের আড্ডায় মন বসে না কারণ আমি আরণ্যক, মাঝে মাঝে উদাসীন হয়ে যাই কারণ আমি আরণ্যক, বাস ট্রাকের হর্ন আমার কানে বিষাক্ত তীর হয়ে বিঁধে কারণ ওই একটাই আমি যে আরণ্যক! বোঝাই যাচ্ছে বইটি কতটা আমায় প্রভাবিত করেছে! শুধু তাই না আমি এও বলছি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় আমার প্রিয় লেখক! বইটি পড়লে আপনি চলে যাবেন এক নতুন জগতে, শুধু কালো কালো অক্ষর নয় দেখতে পাবেন চোখ দিয়ে, হ্যা চোখ দিয়ে! দেখতে পাবেন প্রকৃতির অপরূপ শোভা, দেখতে পাবেন জোছনা রাতে গহিন জঙ্গলে সৌন্দর্যের এক অদ্ভুত উৎসব, ভাবছেন এই কি তবে শুধু গাছ পালা আর ঝোড় ঝোপের গল্প! আরে নাহ! আছে কিছু মানুষের গল্প যাদের আপনি কোনোদিনও ওই কোলকাতা-যশোর-কুষ্টিয়ায় খুঁজে পাবেন না, এ হলো জঙ্গলে বসবাসকারী মানুষের বিচিত্র আনন্দ-বেদনার গল্প, কুন্তীর গল্প, ধাতুরিয়ার গল্প, রাজু পাড়ের গল্প… আর ভানুমতি? হ্যা মজার বিষয় হলো আমি উপন্যাসসের একদম শেষে লেখকের উপর ভারি অভিমান করেছিলাম, কেন গল্পের নায়ক সত্যচরণ ভানুমতি কে বিয়ে না করে জঙ্গল ছেড়ে চলে এলো! কেন! আমি সত্যচরণের স্থলে থাকলে কখনোই এই নগরের বিষাক্ত জীবনে ফিরে আসতাম না, ভানুমতিকে বিবাহ করে জঙ্গলেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতাম! আহা আরণ্যক!