User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২ মাস:জুলাই সপ্তাহ:৪র্থ পর্ব:২ বইয়ের নাম:জলের ক্যানভাস লেখিকা:সুরাইয়া বাকের প্রকাশনী: বলাকা প্রকাশন পৃষ্টা নম্বর:৪৮ মূল্য:৭৫ টাকা 'জলের ক্যানভাস' সুরাইয়া বাকেরের প্রথম গল্পগ্রন্থ।প্রেম,বিচ্ছেদ,সম্পর্কের টানাপোড়েন গল্পের প্রধান বিষয়।নারীদের ক্ষমতায়ন,নারী মুক্তির প্রাবল্য গল্পে ধারণ করেন তিনি।বইয়ে মোট ৭ টি গল্প রয়েছে।প্রথম গল্পের নামনুসারের গ্রন্থের নামকরণ করা হয় 'জলের ক্যানভাস'।গল্পগুলোর সারসংক্ষেপ নিচে দেয়া হলো: ১.জলের ক্যানভাস:সমুদ্রের বীচে ধুমকেতুর মতো অাবার এতকাল পর দেখা হয় অাহেলী ও অরণ্যের।স্মৃতি কাতর হয় অাহেলী। বিজয় দিবসের সাংকৃতিক সন্ধ্যা,একুশের প্রভাতফেরী,বৈশাখের সব কিছুতেই অাহেলী অার অারণ্য একজোড়া রঙিন প্রজাপতি ছিলো।অাস্তে অাস্তে বন্ধুত্ব প্রগাঢ় হয়।অনুভূতিতে রঙ লাগে।পলকা হাওয়ার কাঁপন জাগায় বুকে।নির্ঘুম রাতের প্রহর দীর্ঘতর হয়।পরস্পর কাছে অাসে,কিন্তু বলা হয় না কিছু।কাছাকাছি অাসা,কত হাসি,কত গান,কত মান অভিমান তবু দু'জনের একজনও মুখ ফুটে বলতে পারে নি 'ভালোবাসি'। স্তব্ধ চরাচর।কোথাও কেউ নেই।অাছে শুধু অাহেলী অার অরণ্য।না পাওয়ার বেদনায়,শোকে ম্যুহমান। ২.বেদনার বেনোজল: বইয়ের দোকানে দেখা হয় শ্যামা অার অমিতের।মুহূর্তে মনে পড়ে সেই দিনগুলির কথা শ্যামার।সাহিত্য অার সঙ্গীতের প্রতি দু'জনের রুচিগত মিলের কারণেই গড়ে উঠেছিল সম্পর্ক এবং পরিণতি বিয়ে।বিয়ের দুই বছর পর থেকেই ধীরে ধীরে অমিত বদলে গেলো।কিছুতেই অার মেলে না শ্যামার সাথে।ভালোবাসা হারিয়ে যায়।পরিচিত অনেকেই দেখেছে বিভিন্ন ফাস্টফুডের দোকানে পার্ক রেস্তোরায় নির্জনে অমিতকে।সাথে একজন দীর্ঘাঙ্গ কেশবতী।তারপরই শ্যামার একা পথ চলা।কেমন অাছে তাদের ভালোবাসার ফসল ধ্রুব।কতদিন দেখা হয় না ছেলেটার সাথে।কত নিষ্ঠুরভাবে অমিত সেদিন ধ্রুবকে কেড়ে নিয়েছিলো। ৩.বেদনার নীলে:সোহানের সাথে সংসারটা টিকিয়ে রাখার সব ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবার পর অহনা ধ্রুব'র হাত ধরে বেরিয়ে এসেছিল।ধ্রুব'র হাত শক্ত করে ধরে রেখে ভেবেছিল বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।কিন্তু সেই ধ্রুব একটা মেয়েকে নিয়ে বিরোধের জের ধরে মাকে ছেড়ে চলে যেতে চাই।সকালবেলা কাজের মেয়েটা খুঁজতে এসে থমকে দাঁড়ায়।শিশির ভেজা অহনার নিথর দেহ পড়ে অাছে ব্যালকনিতে। ৪.ভালোবাসা কারে কয়?:শশী রুদ্রের দেখা অনেক দিন পর।দুজনেই বন্ধু ছিলো।তবে রুদ্র শশীকে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে চেয়েছিল।কিন্তু শশীর কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।শশী ভালোবাসলো এমন একজনকে যাকে শশী নিজেও ভাল জানতো না।সৌমকে ভালোবাসা,বিয়ে করা সবই ছিলো ভুল।সেই ভুলের মাশুল শশীকে পদে পদে দিতে হয়েছে।না হলে জীবনটা অাজ অন্য রকম হতো।অাগের সেই শশী অার এখনকার শশীকে মিলাতে পারে না রুদ্র। ৫.হীরকদ্যুতি:মাথা উঁচু করেই শতাব্দী শ্বাশতের ঘর থেকে বের হয়ে এসেছিল।এরপর অার পিছু ফিরে দেখে নি।নিরন্তর সংগ্রাম শুধুই এগিয়ে চলা।পোড় খাওয়া জীবনের সঙ্গে চরম যুদ্ধ।একটা প্রবঞ্চকের কাছে নিজের ব্যক্তিত্বকে বিসর্জন দিতে রাজি হয় নি।স্বত্ত্ব হারাতেও রাজি হয় নি।তাই তো রিমঝিমকে চিনিয়ে এনেছিল মাতৃত্বের অধিকারে। শাশ্বত অসুস্থ। চরম এবং ঘাতক ব্যাধি বুকে নিয়ে শুয়ে অাছে ক্লিনিকের বেডে,রিমঝিমকে দেখতে চেয়েছে।রিমঝিম কি যাবে দূরে থাকা পিতাকে দেখতে? ৬.দুঃখের দহন:মুনীয়াকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে অামরিকায় অারেকটা বিয়ে করে রাতুল।মুনিয়ার ঘরের দু'মেয়ে ঝিলিক অার চমককে অামেরিকায় নিয়ে যাবেন রাতুল।ঝিলিক চমক যাওয়ার জন্য এক পায়ের উপর খাড়া।মুনীয়ার দু'চোখ জলে ভরে উঠে। ঠিক ৫/৬ মাস পর ঝিলিক চমক চলে গেল।যাওয়ার সময় দু'জন খুব কাঁদছিল।অখণ্ড নীরবতায় দাঁড়িয়ে থাকে মুনীয়া।চোখ দুটি থেকে সকল জল কে যেন চুষে নিয়ে গেছে।একটুুু কাঁদতে পারলে ভালো হত।অপার শূণ্যতা অার একাকীত্বের যন্তণা নিয়ে দাঁঁড়িয়ে থাকেড় মুনীয়া। ৭.ক্ষয়িষ্ণু চাঁদ: অামেরিকা থেকে ক্যান্সার অাক্রান্ত দেখতে অাসে দ্রোহি।মায়ের মুখের দিকে চেয়ে থাকে দ্রোহী।রোগক্লিষ্ট,শীর্ণকায়া ক্ষয়িষ্ণু চাঁদের মতো।৮ বৎসরের ব্যবধানে কত বদলে গেছে মা।শীর্ণকায়া ফ্যাকাশে এই রমণীকে মনে হয় যেন দ্রোহি চেনে না।অথচ মা ছিলেন বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী বর্ণাঢ্য প্রজাপতি।সদাচঞ্চল,কর্মব্যস্ত।একটা ডায়েরীতে লেখা থাকে সন্তানের প্রতি মায়ের সব অাকুতি।দ্রোহি সেটা অাবিষ্কার করে..... পাঠ প্রতিক্রিয়া: বইটাতে মূলত নারী জাতির শূণ্যতারই গল্প রচিত হয়েছে।কখনো ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে,কখনো স্বামী হারিয়ে,কখনো সন্তান হারিয়ে নারীরা নিঃসঙ্গ একাকী বোধ করে।প্রথম গল্প গ্রন্থ হিসেবে অসাধারণ লিখেছেন।অামার খুবই ভালো লেগেছে।অামার ব্যক্তিগত রেটিং ৯.৫/১০। রিভিউ লিখছেনঃ যায়েদ আল মাহমুদ