User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Dipu Sarkar #রবিজ_রকমারি_বুক_রিভিউ কিছুদিন আগে আমি উদ্ভিদস্বভাব বইটির রিভিউ দিয়েছিলাম। বইটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছিলো। তাই যখন দেখলাম বইটার দ্বিতীয় খন্ড আছে তখন আমি সেই বইটাও কিনে ফেললাম। অবশ্য আগের বইটাতে রঙিন ছবি থাকার কারণে বইটার দাম বেশি ছিলো। সম্ভবত বইয়ের দাম নাগালের মধ্যে রাখার জন্য বইটাতে সাদাকালো ছবি দেয়া হয়েছে। এই বইটাতেও ৫০টা প্রবন্ধ আছে। রিভিউ সংক্ষিপ্ত করার জন্য আমি এরমধ্যে কিছু প্রবন্ধ নিয়ে কথা বলছি। প্রথম প্রবন্ধের বিষয় কালিঝোপ ও মরিয়ম ফুল। এই ঝোপের কবলে অনেক জমি নষ্ট হয়ে গেছে। আবার এই গাছের মাঝে কাঁটা থাকার জন্য পশু খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এর মাঝেও খুঁজে পেয়েছে এক অমূল্য রতন। যেসব অঞ্চল বিষাক্ত ধাতুতে পরিপূর্ণ সেই অঞ্চলকেও বিশুদ্ধ করতে পারে এই ঝোপ। এই ঝোপ সীসা, আর্জেনিক, পারদও শোষণ করে নিতে পারে। আরো কী করা যেতে পারে সেটা না হয় এই প্রবন্ধ পড়েই পাঠক জানবেন। বটগাছের সাথে বাংলা সংস্কৃতির সম্পর্ক অনেক আগে থাকেই আছে। এই বটগাছের একটি জাত বাংলাবট নিয়ে আলোচনা করা আছে ২য় প্রবন্ধে। আমরা যারা টারজান চলচিত্র দেখেছি তারা দেখেছি টারজান গাছের লতাপাতায় ঝুলে এক গাছ থেকে অন্য গাছে চড়ে বেড়ায়। এমন কোন লতা এমন শক্ত হয় সেটা নিয়ে আমাদের অনেকেরই আগ্রহ আছে। সেই আগ্রহ মেটানোর জন্য তেমনি এক লতা সম্পর্কে প্রবন্ধ গভীর অরণ্যে লিয়ানা। অনেক কবিরাজি লোকজন কালো রঙ এর পাথরের মত একটা বস্তু বিক্রি করে। একে শিলাজিৎ বলে। শিলাকে জয় করে বলে বলা হয় শিলাজিৎ। কেন এই নাম জানতে প্রবন্ধটি পড়ে ফেলুন। বইতে উল্লেখিত মাত্র একটি লাইন বলা আবশ্যক মনে করছি। এতে প্রায় ৮৫ রকমের খনিজদ্রব্য, ভিটামিন ও সুষ্প্রাপ্য ফুলরিক অ্যাসিড আছে। বাকি কথা বই থেকে পড়ে ফেলুন। ম্যাকারাঙ্গা নামের একধরণের গাছে প্রচুর পরিমাণে পিঁপড়া ও আঁশপোকা বাস করে। এই বাস করার পেছনে গাছেরও স্বার্থ আছে। এমনি এইসব পোকাদের জন্য গাছ মধুর ব্যবস্থাও করে দেয়। কী এই স্বার্থ জানতে বই থেকে প্রবন্ধটি পড়ুন। ডারউইনের কথার সাথে গাছের শেকড়ের কী মিল আছে সেটা হয়তো অনেকে ভেবে পাবেন না। তাদের আগ্রহ মেটানোর জন্য একটি প্রবন্ধ ডারউইন ও শিকড় সমাচার। অনেক আগে সমুদ্রযাত্রায় স্কার্ভি রোগের প্রকোপে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো। তখন থুজা নামের গাছের পাতা জ্বাল দিয়ে রস খেলে দেখা যেত তারা দ্রুত আরোগ্য লাভ করে। এই থুজা গাছ নিয়ে একটি প্রবন্ধ জীবনবৃক্ষ থুজা। পাথরের স্তুপের মাঝে এমনভাবে মিশে থাকে গাছগুলো যাতে পাথর থেকে গাছগুলোকে আলাদা করা যায় না। এই গাছ সম্পর্কে প্রবন্ধ পাথরপ্রতিম ডুমুরগাঁদা। পাঁচ ধরণের কাঠগোলাপ নিয়ে প্রবন্ধও আছে এই বইতে। শেওড়া গাছ নিয়ে ভুত প্রেত সম্পর্কিত কত কথা আছে। এর পেছনে অবশ্য কারণও আছে। এই শেওড়া গাছ সম্পর্কিত একটি প্রবন্ধ শেওড়া গাছ। কাজুবাদামের নাম আমরা অনেকেই শুনেছি কিন্তু কাজু আপেলের নাম অনেকেই হয়তো শুনিনি। এই কাজু আপেলের মাধ্যমে তৈরি হয় এক ভিন্ন ধরণের পানীয়। যার গন্ধে ও স্বাদে নেশা ধরে যায়। বাকি কথা প্রবন্ধের মাঝেই থাক। সিঁধ কেটে যারা চুরি করে তারাই তো সিঁধেল চোর। আর ফুলের মাঝে যারা প্রবেশ করতে পারে না বরং ফুল ছিদ্র করে সেখান থেকে মধু খায় তারাও একধরণের সিঁধেল চোর। এরসাথে ডারউইনকে যোগ করে লেখা হয়েছে সিঁধেলচুরি ও ডারউইনের ভাষ্য। যাদের শখ হিসেবে বনসাই করার ইচ্ছা আছে তারা পড়তে পারেন প্রবন্ধ বনসাই নির্মাণ। এছাড়াও আরো দুইটি প্রবন্ধ হলো প্রাকৃতিক বনসাই ও নাগরিক বনসাই। ৪৮ ডিগ্রী তাপমাত্রায় যখন সবার প্রাণ যায় যায় অবস্থা তখন সেই অবস্থার মধ্যে যে গাছটি সবুজ সতেজ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার নাম কোনাকার্পাস গাছ। এই সম্পর্কে একটি কথাই বলি বুড়িগঙ্গার মত দূষিত মাটিকে যদি দূষণ থেকে রক্ষা করতে হয় তাহলে এই ধরণের গাছের দরকার। মাংশের সাথে রান্না করার পর অসাধারণ সুস্বাদু হয় যে ফলটি সেটা হলো ফাগা। মরুভূমিতে জন্মানো এই হীরক খন্ডের অনেক দাম। বালির মাঝে একে তো সহজে আলাদা করা যায় তার উপরে মরুভূমিতে ছড়িয়ে আছে ল্যান্ড মাইন। আর বাকি কাহিনী বলব না, পাঠকের মাঝে আগ্রহ তো রাখতে হবে। যারা ফুলগাছ লাগানোর শখ আছে তাদের জন্য কসমস আর জিনিয়া নিয়েও প্রবন্ধ আছে এই বইতে। আমাদের খুব পরিচিত এক ঘাসের নাম দূর্বাঘাস। মাঠের পরিচর্যা কিংবা কোনো স্থান কেটে গেলে এর রস দেয়া হয়। এই ঘাস সম্পর্কে সবার কিছুটা হলেও জানা উচিৎ। মাঝে মাঝে কিছু কাছে সবুজ আর হলুদের সমারোহ দেখা যায় এই গাছগুলোকে আমরা পাতাবাহার নামে জানি। এই গাছ সম্পর্কে কিছুটা জেনে নিলে মন্দ হয় না। ঢেঁকি শাক তো অনেকেই খায় আবার অনেকে ফার্ণ জাতীয় উদ্ভিদ বলতে কেবল ঢেঁকি শাকের উদাহরণ দিয়ে থাকে। তবে একটানা এই শাক খাওয়া নিরপদ না। কারণটা না হয় প্রবন্ধ পড়েই জানবেন। শৈবাল থেকে তেল তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। যা হয়তো ভবিষ্যতের জ্বালানী হবে। অনেকেই গবেষণার জন্য এই বিষয়টা বেছে নিতে পারেন। গবেষণার অবস্থা এখন কেমন জানতে প্রবন্ধটি পড়ুন। হেমলক বা ধুতরা বিষ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই দুই উদ্ভিদ নিয়েও দুইটি প্রবন্ধ লেখা আছে। আসলে ৫০টি প্রবন্ধের সবগুলোই অনেক আকর্ষণীয়। কোনটা রেখে কোনটার বর্ণনা লিখি সেটা নিয়ে ভাবনার পড়েছিলাম। এরমধ্যে কয়েকটা নিয়ে আলোচনা করলাম মাত্র। আশা রাখি এই বইটা যিনি পড়বেন তার মাঝে বৃক্ষ সম্পর্কে জানার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে তুলবে।