User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
১.ম্যানিব্যাগ দেশ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত লুৎফর হাসানের উপন্যাস।লেখক বইয়ের ফ্ল্যাপে লিখেছেন, "জীবন এক আশ্চর্য ভ্রমণকাহিনী। বাঁকে বাঁকে গল্প ছড়ানো থাকে।যে জীবন যুদ্ধের স্বাদ নিয়ে পথ চলে,ভাঙা-গড়ার বাজি ধরে যে জীবন এগিয়ে যায়,সে জীবন বড় বিস্তৃতই।এমন এক জীবন বয়ে চলা নায়ক মজনু।মজনুর যুদ্ধজীবনের উপাখ্যান এক ম্যানিব্যাগে বন্দী।" ২.মজনু ম্যানিব্যাগ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র।নায়ক চরিত্র।তার বয়ে চলা জীবনের গল্প।এ গল্প নদীর মতো, নদীর যেমন অসংখ্য বাঁক থাকে,মজনুর জীবনেও অসংখ্য গল্প।সে গল্পের শুরু তার জন্মের আগেই, তার বাবা হামিদুল ইসলাম ও মা অনন্দিতা সেনের বিয়ের পর থেকে। ম্যানিব্যাগ থেকে অতিদ্রুত যেমন টাকা খরচ হতে থাকে মজনুর জীবনের গল্পগুলোও তেমন দ্রুততায় এগিয়ে যায়।জীবন চালিয়ে নেওয়ার তাগিদে,বেঁচে থাকার তাগিদে,কিছু মানুষের হাসির জন্য,সুখের জন্য তার জীবন বয়ে চলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা। ঘূর্ণিঝড়ে মা-বাবা বোন হারানো ছোট্ট ছেলে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের নবগ্রামে,শৈশব-কৈশর কাটে নবগ্রামেই।তারপর পঞ্চগড়ের পাহাড়বাড়ি,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ৩.ঢাকা শহরে এসে পরিচয় রাত্রির সাথে। রাত্রি উপন্যাসের নায়িকা চরিত্র। বর্তমান সময়ের প্রেমিকা যেমন হয় রাত্রি তেমনই।কিংবা ভিন্নতা আছে।ছন্নছাড়া মজনুকে রাত্রি গড়ে তুলতে যায় নিজের মতো করে।সময়ে অসময়ে প্রয়োজনে মজনুর ম্যানিব্যাগে টাকা গুঁজে দেয়।আবার অল্পকারণে স্বল্পকারণে রাগ করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।রাত্রির মাঝে সন্দেহপ্রবণতা আছে যেমন,তুমুল ভালোবাসায় আগলে রাখার আকাঙ্খাও আছে। ৪.আরও ছোটবড় কিছু চরিত্র এসেছে গল্পের প্রয়োজনে।উপন্যাসে ঘটনা প্রবাহের টানে!মমতাময়ী মা শাহানা ও তার স্বামী রশিদুল সাহেব,উজ্জ্বলভাই,তাহমিনা,পপি,আশা,আয়নাল,ম্লং, আরও অনেকেই। ৫.এই উপন্যাসে শহর ও গ্রামের জীবন বর্ণিত হয়েছে।লেখক মূলত ঢাকা শহরে মজনুর বর্তমান জীবনের গল্প বলতে শুরু করে।এর মাঝে স্মৃতিকাতর মজনুর স্মৃতি রোমন্থনে কিংবা রাত্রির সাথে কথোপকথনে তার ফেলা আসা জীবনের গল্প বলা হয় ম্যানিব্যাগ উপন্যাসে। সবশেষে এ এক সংগ্রামী জীবনেরই উপাখ্যান। যেখানে পদে পদে কষ্ট আছে, গ্লানি আছে,হতাশা আছে, স্বপ্ন আছে।আছে বড় হওয়ার তাড়না। ৬.লুৎফর হাসানের গল্প বলার ধরণ আলাদা,আছে নিজস্বতাও।তবে গল্পে দ্রুততা বেশি।দ্রুততা বলতে গল্প অতিদ্রুত বলে গেছেন। ৭.এই দ্রুত গল্প বলতে বলতে কোনো এক জায়গায় কিংবা স্মৃতিচারণে কোনো এক পরিবেশের বর্ণনা দিয়েছেন।চারপাশের পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন।বইয়ের পাতায় এমন অনেক পরিবেশে পাঠক নিজেকে খুঁজে পাবে মজনুরুপে।এমন করে নিজেকে খুঁজে পাবে ঝিনার নদীর তীরে, কিংবা নবগ্রামে,কিংবা পঞ্চগড়ের সীমান্ত এলাকায় যেখানে পাহাড় দেখে মেঘ ভেবে বিভ্রম হবে।হয়তো কখনও খুঁজে পাবে বুড়িগঙ্গার নৌকায়। ৮.উপন্যাসে অনেক উপমা আছে, যা ভালোলাগায় ছুঁয়ে যাবে। ৯.লেখক জীবনের স্ট্রাগলিংটাই বড় করে দেখিয়েছেন।দেখিয়েছেন দুজন মানব মানবীর প্রেম।ছন্নছাড়া জীবন কিন্তু দায়িত্ব কর্তব্য এড়িয়ে গিয়ে নয়।জীবন থেকে পালিয়ে নয়।বরং জীবনকে খুঁজে পেতেই। ১০.শেষেরদিকে মনে হবে এত তাড়াতাড়ি কেনো গল্পটা শেষ হল!শেষাংশে আবার গল্প বলে গেছেন দ্রুত। মজনু আর রাত্রির স্বপ্ন পূরণের পর হঠাৎ পত্রিকার পাতায় রাত্রিকে নিয়ে এমন নিউজ!অথচ মজনু একেবারে উধাও।এই জায়গাটায় খাপছাড়া লেগেছে।এর ব্যাখ্যা আমার কাছে এমন, মজনু নেই কুলাউড়ায়,মজনু নেই নবগ্রামে।তাহলে মজনু কোথায়?ছন্নছাড়া মানুষই হয়তো এমনই। তাদেরকে জাগতিক সুখ!মোহ!এসব কিছুই ধরতে পারে না।তাই ভালোবাসার মানুষ রাত্রি ঠিকই বুঝে গিয়েছে মজনু কোথায়!তাইতো মজনুর দেয়া ঘাসফুল রঙের শাড়ী পড়ে যাচ্ছেন মজনুর খুঁজে। কিন্তু মজনু কোথায়?থাকুক না কিছু রহস্য!থাকুক না কিছু গোপনীয়তা! ১১.লেখক আমাকে অটোগ্রাফে লিখেছেন,প্রিয় বাকী,"আপনার কাঠখোট্টা সমালোচনা চাই!" আমি সমালোচনা কি করবো? উনার ম্যানিব্যাগ আমার ভালো লেগেছে।সুখপাঠ্য উপন্যাস মানিব্যাগ। শেষকথা আমারা কেউ কেউ কিংবা সবাই সচেতন কিংবা অবচেতন মনে এক একজন মজনু।