User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
#sorone_mohanayok_book_review_2021 বঙ্গবন্ধু নানা বর্ণে নানা রেখায় : বঙ্গবন্ধু অস্থিতে মজ্জায় বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক জীবন-কর্মের বিচিত্র সব আখ্যানকে একটি মোড়কে গেঁথে ফেলার যে চমৎকার প্রয়াস; তা-ই গুণী ব্যক্তিত্ব শামসুজ্জামান খানের সুযোগ্য সম্পাদনায় প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছে ❝বঙ্গবন্ধু : নানা বর্ণে নানা রেখায়❞ সংকলনের প্রতিটি পৃষ্ঠায়। দুই পর্বে বিন্যস্ত এ সংকলনে ঠাঁই পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনের বর্ণিল কথকতা। বঙ্গবন্ধু এখানে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সকল ধারায়- কবিতায়, গানে, স্মৃতিতে। শব্দের মালা পাশাপাশি বসে লেখা হয়েছে গল্প কিংবা প্রবন্ধ, প্রিয় জাতির পিতা রয়েছেন যার পুরোটা জুড়ে। প্রথম পর্বের নাম, জীবনকথা ও মূল্যায়ন। এই পর্বে বেবী মওদুদ কিংবা মুনতাসীর মামুনের মতো অগ্রজের দৃষ্টিতে মূল্যায়ন ঘটেছে বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবনকথার। ❝শেখ মুজিবের ছেলেবেলা❞ রচনায় চোখ বোলালে খুঁজে পাওয়া যায় শৈশবের কাঁচামিঠা ঘ্রাণ। মাঘ মাসের কনকনে হাওয়া যেন ধাক্কা মারে সজোরে। তারপর সচকিত হলে কোথাও হতে উদয় হয় এক টুকরো বঙ্গবন্ধু! খোকার মোড়কে সেদিনের বঙ্গবন্ধুর প্রাণ কাঁপত না শীতের হিমবাহে। আর্তকে পরম মমতায় অঙ্গের চাদর পরিয়ে রোদের উষ্ণতা জড়িয়ে নিতেন তিনি। দুই আত্মজার ❝স্মৃতিচারণ❞ বইয়ের অন্যতম মর্মস্পর্শী রচনা, করুণাধারা বয়ে চলে যার প্রত্যেকটি বাঁকে। পিতৃহত্যার ভয়াবহতায় ক্ষোভের আগুন ধিকিধিকি জ্বলে। শিহরণ জাগে মনে, এতখানি নিষ্ঠুর মানুষ কীভাবে হতে পারে? ছোট্ট রাসেলের পবিত্র মুখের দিকে চেয়ে কেঁপে ওঠেনি ঘাতকের নিকৃষ্ট হাত? ❝ঘরে ফিরা আইসো বন্ধু পাইতা থুইছি পিঁড়া, জলপান যে করতে দেব ইরি ধানের চিড়া।❞ আহা! এমন মধুর সুরে ডাকলে বন্ধু কি না এসে পারে? পিঁড়ি পেতে ইরি ধানের চিড়া প্রস্তুত যার আগমনের অপেক্ষায়, তিনিই তো সারা বাংলাদেশের বন্ধু। বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণায় বঙ্গবন্ধু এভাবেই আমন্ত্রিত হয়েছেন যুগে যুগে। রফিকুল হকের ছেলেভুলানো ছড়ায় মহান নেতা যেন একেবারে ঘরের মানুষ! তাই তো রফিকুন নবী কিংবা লুৎফর রহমান লিটনের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের রচনায় ❝বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণায় বঙ্গবন্ধু❞ হয়ে উঠেছে আলোচিত বইয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সংযুক্তি। নিঃসন্দেহে বইয়ের গ্রহণযোগ্যতার মাত্রা বহুলাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে সেই ❝ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ❞। স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করা কাঙ্ক্ষিত বজ্রকণ্ঠ বাণী যেন আজও নতুন করে বাঁচার রসদ জুগিয়ে চলে। ❝ইতিহাসের কালো অধ্যায়❞ নেড়েচেড়ে দেখার সময় বুকের ভেতর গজিয়ে ওঠে প্রশ্নবোধক চিহ্ন, তখন উপায়ান্তর না দেখে কথাশিল্পী সেলিনা হোসেনের মতো করে বলতে ইচ্ছে করে ❝প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারিনি❞। মূলত জীবনকথার পর্যালোচনামূলক গাঁথায় বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিকতা সম্পর্কে টের পাওয়া যায় ভীষণ জোরালোভাবে। নানা বর্ণে নানা রেখায় পাতায় পাতায় যেন ছড়িয়ে পড়ে স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত এক নেতার সংগ্রামী চিন্তাধারার আভাস। প্রথম পর্বের মূল্যায়ন কিংবা স্মৃতিকাতরতায় হৃদয়ের আকাশে কালো মেঘ জমলে ছড়া-কবিতা-গানের পসরা নিয়ে হাজির হয় সংকলনের দ্বিতীয় ও সর্বশেষ পর্ব। প্রখ্যাত গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের ❝দুটি গান❞ গেয়ে উঠতে পারলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচার মতোই স্বস্তি পাওয়া যায় তখন। প্রকৃত অর্থেই সংকলনে অন্তর্ভুক্ত কবিতাগুলো প্রাণে জাগায় নব উন্মাদনার স্ফূরণ- বঙ্গবন্ধুচর্চা পরম মমতায় লেপ্টে থাকে সেখানেও। সংকলনের শেষাংশে বঙ্গবন্ধুর জীবনপঞ্জির সংযোজন এনে দেয় একটি উল্লেখযোগ্য সমাপ্তি। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর বাসভবনের এ গৌরবময় অভিযাত্রা ভেসে ওঠে একদম চোখের সামনে। প্রকাশকালের দিক দিয়ে কাঁচা হলেও মানের পরিমাপকে সেরা একটি সংকলনের নাম, ❝বঙ্গবন্ধু : নানা বর্ণে নানা রেখায়❞। এক ঝাঁক জোনাকি যেন আলো নিয়ে বসে আছে। পাতার ভাঁজে লুকিয়ে থাকা জ্ঞানের এই আলো ছড়িয়ে পড়ুক দেশব্যাপী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হোক সকল স্তরের মানুষ। [ একনজরে বইয়ের তথ্য ] • বইয়ের নাম - বঙ্গবন্ধু : নানা বর্ণে নানা রেখায় • বইয়ের সম্পাদক - শামসুজ্জামান খান • প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের নাম - বাংলা একাডেমি • প্রথম প্রকাশ - মার্চ ২০১৬ • মুদ্রিত মূল্য - ৩০০ টাকা • রিভিউ লিখেছেন : নবনীতা প্রামানিক
Was this review helpful to you?
or
’বঙ্গবন্ধু নানা বর্ণে নানা রেখায়’ বইটি দুই পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্ব ‘জীবনকথা ও মূল্যায়ন’ এবং দ্বিতীয় পর্বে ‘গান-কবিতা-গল্প’। প্রথম পর্ব থেকে তাঁর কলেজ জীবনের সময়কার কিছু স্মৃতিকথা – “কলেজ জীবনে তিনি ছাত্র সংসদের শীর্ষ নেতা ছিলেন। ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি এখানে সক্রিয় ছিলেন হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণ আন্দোলনের মতো বহুতর আন্দোলনে। শুধু তাই নয়, ১৯৪৬ সালে হিন্দু- মুসলমান ভয়াবহ দাঙ্গা প্রতিরোধেও তাঁর অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত উপমহাদেশ দু'ভাগে বিভক্ত হয়। একটি ভাগের নাম হয় ভারত, অন্যটির নাম পাকিস্তান। পাকিস্তানের অংশে গড়ে উঠে আজকের বাংলাদেশ, তখনকার পূর্ব পাকিস্তান। ১৯৪৭ সালে কোলকাতার শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবনের পাট চুকিয়ে ঢাকায় এসে ভর্তি হন তিনি এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালেই তিনি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন এবং এই অপরাধে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এর পরে পরেই (১৯৪৮) তিনি গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পুরোটা সময় জুড়েই তিনি জেলে আটকে থাকেন। কেননা পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল মুসলিম লীগ সরকার ভেবেছিল, চলমান ভাষা আন্দোলনের সময় শেখ মুজিব বাইরে থাকলে সেই আন্দোলন ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। কিন্তু জেলে বন্দি থাকা অবস্থাতেও শেখ মুজিব ওই আন্দোলনে নানাভাবে সাহায্য করেন। আন্দোলনকে কীভাবে বেগবান করা যায় সে ব্যাপারে নির্দেশ পাঠান। ১৯৪৯ সালে "আওয়ামী মুসলিম লীগ" থেকে "মুসলিম" শব্দটি বাদ দিয়ে একে একটি আসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে সংগঠিত করা হয়। "আওয়ামী লীগ" নামে গঠিত এই দলের তিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এদিকে পাকিস্তান হওয়ার পর থেকেই মুসলিম লীগের অত্যাচার, অবিচার ও শোষণ-শাসনের মাত্রা চরমে পৌঁছতে থাকে। শেখ মুজিব এর প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠতে থাকেন। পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, তারা কতোটা ভয় পেতেন শেখ মুজিবকে।”