User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Fuad Hasan

      24 May 2022 09:17 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      এক কথায় অনবদ্য

      By Rajon Kabir

      22 Mar 2022 03:20 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমি লেখকের নাম জেনেছিলাম গীতিকার হিসেবে। উনি লেখক হিসাবেও দুর্দান্ত। এই বইটিতে আমেরিকা - ভিয়েতনাম যুদ্ধের ব্যাপারে কিছুটা ধারণা দেয়া আছে। কিভাবে একটি পরাশক্তির দেশ তার নিজের প্রভাব বজায় রাখার জন্য অপচেষ্টা করে গেছে এবং সেই ঢেউয়ে কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনে অসাধারণ জীবন বোধ তৈরি হয়েছে, কিভাবে তা উপায়হীন ভাবে অকল্পিত ভবিষ্যতের দিকে ছুটে গিয়েছে তার সুন্দর উপস্থাপন এই উপন্যাস।

      By Shahin

      26 Dec 2021 07:25 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইটি নিয়ে লিখলে অনেক কথায় লিখা যায়। এক কথায় অসাধারন।

      By Abdul Latif

      21 Sep 2021 06:18 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      Just excellent !

      By Israt Jahan

      14 Sep 2021 06:38 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      i like it..

      By Soliman Hossain Shovon

      10 Jul 2021 09:51 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ...

      By ATIQUL ISLAM

      22 Oct 2020 11:42 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      very nice novel

      By Muntasir

      17 Oct 2020 11:07 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      একটা বই একজন মানুষকে কতটা ছুয়ে যেতে পারে এই বই না পড়লে হয়ত বেপারটা ফিল করতে পারতাম না। অনেক বই পড়ছি, অজস্র সিনেমা/নাটক দেখছি, কতশত চরিত্র চোখের সামনে ভেসে আসে কিন্তু এতোটা কাছে কেউ টানে নিতে পারে নাই। বইটা কি মনে করে কিনছিলাম জানি না, তবে একটা রিভিউ পড়ছিলাম যার প্রথম লাইন এমন ছিলো, "লতিফুল ইসলাম শিবলী নামটা আমরা ভুলেই গিয়েছি"। লেখক লতিফুল ইসলাম শিবলী দেশের খ্যাতনামা গীতিকবি। বৃষ্টি দেখে অনেক কেঁদেছি, হাসতে দেখো গাইতে দেখো, কেউ সুখি নয়, পলাশীর প্রান্তর, কষ্ট পেতে ভালোবাসির মতো অসংখ্যক গান তার হাতেই লিখা। আর 'দারবিশ' উপন্যাসের মধ্য দিয়ে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করল।

      By Mahfuzur

      07 Jul 2020 01:14 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      পুরো গল্পোটা এক বারে পড়েছি,,,, শেসের পাতা গুলো পড়ে কখন যে চোখ দিয়ে পানি পড়ে গেছে নিজেও টের পাইনি। ভাল লেখক পড়ার অনুরোধ থাকল।

      By Tazrian Alam Ayaz

      28 Mar 2020 01:29 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ সেক্স, ড্রাগস অ্যান্ড রক এন রোল! এই তিনটি নিষিদ্ধ শব্দ ছিল ৬০,৭০ আর ৮০'র দশকে আমেরিকান তারুণ্যের আশ্রয়। ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রভাবে তখন টালমাটাল আমেরিকা। ঘরে যুদ্ধ, বাইরে যুদ্ধ। ঘরে নিরস্ত্র যুদ্ধ শান্তিকামী আমেরিকান তরুণদের সাথে, বাইরে সশস্ত্র যুদ্ধ ভিয়েতনামি কমিউনিস্টদের সাথে। সৈন্যের জোগান নিশ্চিত করতে প্রতিটি গ্র‍্যাজুয়েট আমেরিকান তরুণকে বাধ্যতামূলকভাবে ভিয়েতনাম যুদ্ধে রিক্রুট করা হতো। যারা প্রকাশ্যে সরকারি নির্দেশ অমান্য করত, তাদের স্থান হতো কারাগারে। এ অসহ্য অন্যায় থেকে বাঁচতে অনেকেই পালিয়ে যেত সীমান্ত পেরিয়ে কানাডা কিংবা মেক্সিকোতে। তখন আমেরিকান সরকারের এ ঘোরতর অন্যায়ের বিরুদ্ধে অহিংস শান্তিবাদী আন্দোলনে নামে আমেরিকান তরুণরা। যাদের আন্দোলনের অস্ত্র ছিল সেক্স, ড্রাগস অ্যান্ড রক এন রোল। এদের বলা হতো 'হিপ্পি'। প্রায় ৬ কোটি হিপ্পি আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় যাযাবর জীবন কাটাতে লাগল। এই দলে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে কবি-সাহিত্যিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবধি ছিলেন। প্রচলিত কালচারের বিরুদ্ধে 'অ্যান্টি কালচার'কে প্রমোট করার মাধ্যমে তারা সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখায়। ছোট চুল রাখা ভদ্রতা বলে পরিচিত, তাই তারা কাঁধ অবধি চুল রাখত; বৈধ যৌনতা ছিল অপ্রকাশ্য, তাই তারা সেটাকে প্রকাশ্য ও অবাধ যৌনতায় পরিণত করল; সমকামিতা ছিল ঘৃণ্য, তাই তারা সমকামিতাকে ফ্যাশন হিসেবে উপস্থাপন করল। মিউজিকে নিয়ে আসলো নতুন নতুন সব জনরা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এত কিছুর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল, একটি শান্তিবাদী ও মানবতাবাদী আমেরিকা গঠনের ইচ্ছা। ঠিক এমন সময়ে ঢাকা থেকে প্রেমিকার কাছে প্রতারণার শিকার এক অভিমানী বাঙালি যুবক জামশেদ চলে যায় হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী বলে খ্যাত সানফ্রান্সিসকোতে, মেডিকেলে পড়তে। সেখানে গিয়ে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে ঘটনাক্রমে, প্রেমে পড়ে মেলিনি নামের এক আমেরিকান কমিউনিস্ট তরুণীর - যাকে রাশিয়ান স্পাই ভেবে খুঁজছে এফবিআই। শুরু হয় জামশেদ-মেলিনির রোমহর্ষক ফেরারি জীবন। এই ঘটনার বহু বছর পরে, বৃদ্ধ বয়সে জামশেদ আবার ঢাকায় ফেরে - যাকে সে বলত 'সিটি অব মিউজিক'। আমেরিকার চাকচিক্যের জীবন ছেড়ে ঢাকায় ফিরে রোদেলা নামের এক তরুণীর সাথে পরিচয় হয় তার - যার মননশীলতা তৈরি হয়েছিল সেই সময়ের রক এন রোল মিউজিক শুনে। জীবনের সাথে জুড়ে যায় অদ্ভুত সব গল্প, মিশ্র এক আখ্যান! এই আখ্যান লেখা হয়েছে গোটা 'দারবিশ' জুড়ে। লতিফুল ইসলাম শিবলীর লেখা যারা পড়েছেন, তারা জানেন তার লেখার ধরন সমসাময়িক যেকোনো লেখকের চেয়ে আলাদা। বেশিরভাগ লেখকের লেখায় যেখানে স্থান পায় শুধুই নরনারীর প্রেম, ফ্যান্টাসি-থ্রিলার ধরনের সমস্যা আর ভোগবাদের জয়গান - সেখানে শিবলীর লেখায় স্থান পায় ব্যাপক আধ্যাত্মিক চিন্তাধারা। ইসলামের সুফিবাদী ব্যাখ্যার সাথে যারা পরিচিত, তারা উনার লেখা পড়ে পরিতৃপ্ত হবেন। এই লেখায় নেই অযথা ন্যাকামি কিংবা ফ্যান্টাসির উত্তেজনা; তবে আছে ইতিহাসের আড়াল হয়ে যাওয়া বিভিন্ন অধ্যায়ের ভেতরকার নির্যাস শুষে নিয়ে বাঙালি এক যুবকের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পৌঁছে যাওয়ার গল্প। এ গল্পে প্রেম আছে, দ্রোহ আছে, ইতিহাস আছে, ধর্ম আছে, আছে নরনারীর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণও। প্রতিটি চরিত্রে পাঠক খুঁজে পাবেন নিজেকে, কিংবা আশেপাশের কাউকে না কাউকে। এমন চমৎকার ঔপন্যাসিকের স্বাদ যারা নেননি এখনো, তারা আর দেরি করবেন না! (শেষে একটা প্রশ্ন রেখে যাওয়া যেতে পারে। এই যে আমেরিকান হিপ্পিরা, তারা শান্তিবাদী ও মানবতাবাদী আমেরিকা গঠনের জন্য সমাজে অ্যান্টি কালচার প্রমোট করল, তারা কি শেষ অবধি পেরেছিল অমন আমেরিকা গড়তে? উত্তর হচ্ছে - না, তারা পারেনি। বরং আমেরিকান সমাজব্যবস্থা হয়েছে ভঙ্গুর, পারিবারিক বন্ধন হয়েছে পারমাণবিক ভ্যান ডার ওয়ালস বন্ধনের চেয়েও দুর্বল। তাদের বিপ্লব তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনি। কল্যাণের পথ একটাই। সেটা ঐশ্বরিক পথ। এর বাইরে অন্য যত পথেই কল্যাণের সন্ধান করা হোক না কেন, তা সফল হয় না। পৃথিবীতে এমন দৃষ্টান্ত ভুরি ভুরি।) বই: দারবিশ লেখা: লতিফুল ইসলাম শিবলী প্রকাশনা: নালন্দা পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১১০ মুদ্রিত মূল্য: ৩০০ টাকা রেটিং: ৯/১০

      By maruf morshed

      19 Feb 2020 09:37 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দারবিশ লতিফুল ইসলাম শিবলী সাধারন উপন্যাসের আবরণে অসাধারণ উপন্যাস. আগে পড়ে একজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে পড়তে বসেছিলাম পড়তে বসে আর ছেড়ে উঠতে পারিনি. রোদেলার বিশ্বাসের দোলাচল সঞ্জুর পাগলামি আর দারবিশের জামশেদ সব মিলিয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে এক অনন্যসাধারণ কাহিনী। যদি বাংলাদেশের হত, কোন অঞ্চলে হতো, তবে কেমন হতো! গ্রামে গঞ্জের ভালোবাসার গল্প শুনি, কিন্তু সেই যখন ভিয়েতনামের যুদ্ধের সময় চলে যেতে হয়, চলে যেতে হয় সে সময় তরুণরা কিভাবে ভিয়েতনামের যুদ্ধের বিরুদ্ধে ত্যাগ করেছিল, কিভাবে এলাকা থেকে এলাকা ঘুরে বেড়াতো হিপ্পিরা আর তার সাথে এক ভালোবাসার কাহিনী পড়তে মন্দ লাগে না। হয়তো আমেরিকানদের কাছে পরিচিত আমাদের কাছে!!" কি ঘটেছিল দারবিশের, রোদেলা কিভাবে সাথে জড়িয়ে গেল? উত্তর দিতে চাইলে অনেক বড় হয়ে যাবে। তবে বলতে হয় কাহিনীটা ছোট। সমরেশ মজুমদার কালবেলাতে আমাদেরকে সেই সময়কার বিপ্লবের কথা বলে গিয়েছেন তিনি আমাদের অনেক বড় উপন্যাসটিতে ব্যাপিত রেখেছিলেন পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা।অনেকটা কিন্তু সেরকমই। তাই দিন শেষ এবার আক্ষেপ থেকেই যায়। যতক্ষণ পড়েছি। পড়েই গিয়েছি। শুভকামনা লেখক এর জন্য

      By Dr. Asif Shufian Arnab

      26 Jan 2020 12:20 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      দেশের প্রখ্যাত গীতিকার ও সুরকার লতিফুল ইসলাম শিবলীর প্রথম উপন্যাস এটি। সত্যি বলতে এতটা ভালো লাগবে আশা করিনি।পাঠকের বইটি পড়ে ভালো লাগবে।

      By Mitu

      16 Jan 2020 05:29 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ষাট ,সত্তর দশকের আমেরিকা যখন ভিয়েতনাম নামের সাথে শীতল যুদ্ধে টালমাটাল সেই সময় ঢাকা থেকে এক অভিমানী যুবক ডাক্তারি পড়তে পাড়ি জন্মায় সানফ্রান্সিসকোতে। সেই সানফ্রান্সিসকো যাকে হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী বলা হত। ঢাকা থেকে যাওয়া এই তরুণ তারা আমেরিকান বন্ধুদের সাথে ভিয়েতনাম যুদ্ধ আন্দোলন শুরু করে। সেখানে পরিচয় মেলেনি নামের এক নারীর সাথে। পরিচয় থেকে ভালোবাসা। কিন্তু এই মেলিনিকে এফবিআই রাশিয়ান স্পাই ভেবে হন্য হয়ে খুঁজতে থাকে। তাই তারা আমেরিকা থেকে মেক্সিকো তে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় ঘটে যায় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা...... তারা এই যুবকের বয়স 70 বছর হয় তখন সে ফিরে আসে তারা কাছে মিউজিক অফ সিটি খ্যাত ঢাকাতে। সেখানে পরিচয় এক তরুণীর সাথে। সে তরুণীও 30 বছরের যুবক সেই হিপ্পির প্রেমে পড়ে যায়। তারপর... জানতে হলে পড়তে হবে লতিফুল ইসলাম শিবলীর দারবিশ।

      By Rizal Fathoni Kabir

      30 Dec 2019 12:06 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      এক মদ্যপ যুবকের আবেগের আবেশে দরবেশ শব্দটির অপভ্রংশ হিসেবে উপন্যাসের নাম দারবিশ-এর উৎপত্তি। গুলশানের অভিজাত বাসায় বর্তমান সময়ের এক তরুণীর সহসা চাকরিপ্রাপ্তির মাধ্যমে উপন্যাসের সূচনা। গল্পের মূল পটভূমি দেশীয় হলেও, বেশিরভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে আমেরিকান এক অস্থির সময়ের বর্ণনা। প্রেমের প্রেক্ষাপটে উঠে এসেছে পৃথিবীর বৃহত্তম পুঁজিবাদী সমাজের কালো এক অধ্যায়, যার মূল্য দিতে হয়েছে অগুণিত মানুষকে। লতিফুল ইসলাম শিবলী বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান গীতিকার। তার সুরেলা ভাষার ছাপ পাওয়া গেছে লেখায় বারবার। প্রথমদিকে কোনো এক জায়গায় 'হাসিশেষের নীরবতা' পড়ে মনের অজান্তেই পরিচিত গানের ছন্দ বেজে উঠেছে গল্পের মাঝে। ভালবাসা, সততার চারিত্রিক শক্তিতে বলীয়ান উপন্যাসের প্রধান চরিত্রকে বেশ সুগঠিতভাবেই গড়ে তুলেছেন লেখক। দেশ থেকে আমেরিকায় পাড়ি জমানো, ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে ফেলা তরুণকে বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত পার করে ফিরিয়ে এনেছেন নিজের দেশে। গল্পের শেষের দিকের বর্ণনাগুলো বেশ ভাল। বর্ডারের কাছে সম্মুখসমরের মত যেই দৃশ্যগুলোর অবতারণা করেছেন, তার জন্য লেখককে যথেষ্ট সময় নিয়েই লিখতে হয়েছে আমি নিশ্চিত। লেখনী বেশ মাধুর্যময়, আরেকটু সাবলীল হলেই নির্দ্বিধায় পাঁচ তারকা দিয়ে দিতাম।

      By Tamim Siam

      23 Dec 2019 05:32 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      এটি কোন সাধারণ বই নয়, এটি একটি জাদুকরি বই। লতিফুল ইসলাম শিবলী আশি-নব্বই দশকে যেমন তার লিখা গান দিয়ে একদল যুবক-কে মাতিয়েছে। ঠিক তেমন এখন এই বই দিয়ে কেড়ে নিচ্ছে পাঠকের মন। দারবিশ একটি বই যে বই শিখিয়েছে ভালোবাসতে, শিখিয়েছে বিশ্বাস করতে। এই বইয়ের গল্প সম্পর্কে বলার ভাষা আমার নেই। বইটি যেনো আমার জীবনসঙ্গী, মন খারাপের রাতগুলোতে বইটিই যেনো আমার একমাত্র শান্তনা। যতোবার পড়ি ততোবারই ভালো লাগে। এই বই প্রতি ভালোবাসে কখনো শেষ হবে না। এই বইয়ের জন্য অবশ্যই শিবলী ভাই একটি ধন্যবাদ পান। জী ধন্যবাদ

      By Prantik Shanto

      21 Sep 2019 11:30 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      রিভিউঃ- দারবিশ লেখকঃ- লতিফুল ইসলাম শিবলী প্রচ্ছদঃ- সোহেল আনাম মূল্যঃ- ৩০০ টাকা পৃষ্ঠাঃ- ১১০ প্রকাশনীঃ- নালন্দা কাহিনী সংক্ষেপঃ সময়টা ষাট, সত্তর, আশি এই তিন দশক জুড়ে। প্রেমে ব্যার্থ এক অভিমানী তরুন জামশেদ ঢাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিল আমেরিকার সানফ্রানসিসকোতে। মনের মাঝে আফরোজা নামের এক তরুণীকে বসিয়ে ডাক্তার হবার উদ্দেশ্যে। এমনি এক সময় তখন, যখন আমেরিকার ঘরে যুদ্ধ বাইরে যুদ্ধ! ভিয়েতনাম আর শীতল যুদ্ধে আমেরিকার অবস্থা দিগ্বিদিক। আর এরকম একটা সময় সেই যুবক পা রেখেছিলো সানফ্রানসিসকোতে। আর এটা সেই সানফ্রানসিসকো যাকে বলা হতো 'এন্টি কালচার' আর হিপ্পি আন্দোলনের রাঝধানী। হিপ্পি দের এই আন্দোলন ছিলো পুঁজিবাদ আর ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতার এক শান্তি পূর্ন আন্দোলন। জীবনের প্রতি হতাশ জামশেদ জুড়ে যায় সেই লম্বাচুলো হিপ্পিদের সাথে। পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেয় সে। নিজেকে নতুন রূপে একজন বিশ্বনাগরিক হিসেবে আবিষ্কার করে। আর কঠিন চোখে পর্যবেক্ষন করতে থাকে সেই অস্থির সময়ের সবকিছু। এই অস্থির সময়ের মাঝেও প্রেম আসে জামশেদের জীবনে। প্রখর রাজনীতি সচেতন এক খাঁটি দেশপ্রেমিক নারী মেলেনির প্রেম। মেলেনিকে ভালোবেসে ফেলে জামশেদ। তার আদর্শে উদ্ভুত হয়ে একসাথে কাজ করতে থাকে। কিন্তু এমনি সময়ে মেলেনিকে রাশিয়ান চর সন্দেহে কালো তালিকা ভুক্ত করে এফবিআই। মেলেনির পেছনে উঠে পরে লাগে তারা। জামশেদের সাথে শুরু হয় মেলেনির পলাতক জীবন। লম্বাচুলো হিপ্পিদের মাঝে মিশে পালাতে থাকে ওরা। মেলেনিকে সাথে নিয়ে টেক্সাস থেকে মেক্সিকো ঢুকার পথে ঘটে যায় এক চরম বিপর্যয়! যা জামশেদের থেকে কেড়ে নিয়ে যায় অনেক কিছু…! কি হয়েছিলো তখন? অনেক গুলো বছর পর জামশেদ ফিরে আসে তার প্রিয় "সিটি অব মিউজিক" ঢাকাতে। দেখা পায় রোদেলা নামের এক মেয়ের। এই সময়ের মাঝেও যার মন তৈরি হয়েছিলো এলভিস প্রসলী, বিটলস, বব ডিলান, জিমি হ্যান্ড্রিজ, জিম মরিস্ন, লেড জেপলিন, পিঙ্ক ফ্লয়েড, ইউ-টু আর নির্ভানা শুনে শুনে। তাকেই তার জীবনের যুদ্ধ আর প্রেমের সেই রোমাঞ্চকর গল্প শোনায়। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ গল্পটা সময়ের। গল্পটা চির তরুণ জামশেদের, গল্পটা মেলিনির কিংবা রোদেলার।গল্পটা ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিদ্রোহী বিট আর লম্বাচুলো হিপ্পিদের। আর এই সবকিছু ছাপিয়ে গল্পটা ভালোবাসার। পুরো বই জুড়েই লেখক বলেছেন ভালোবাসার গল্প। বলেছেন, ভালোবাসতে হলে সবটা দিয়েই ভালোবাসতে হয়। অন্যায় করলে ক্ষমা করতে হয়। বলেছেন, হৃদয়ের দখল নেয়া রাজ্য দখলেরও চেয়েও কঠিন! দারবিশ বইটিতে লেখক ৬০, ৭০ দশকের আমেরিকার সমাজ, রাজনীতি, হিপ্পি ও তাদের গানবাজনার কথাও বলেছেন। পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বর্তমান সময়ে হারিয়ে যাওয়া "সিটি অব মিউজিক" এর সাথে। সিটি অব মিউজিক ঢাকা! যা আমার কাছে ছিলো অচেনা। কিন্তু লেখকের বাস্তবধর্মী বর্ননায় আবিষ্কার করেছি সেই হারিয়ে যাওয়া ঢাকার। যেথায় ফাঁকা রাস্তায় সাঁই সাঁই করে উড়ে চলা রিকশার বেলগুলো পিয়ানোর মতো টুংটাং বাজতো। তার সাথে মিশে যেতো মুয়াজ্জিনের মিষ্টি মধুর গলার আজানের ধ্বনি! এই বইটা যেনো আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো সেইসব দিনগুলোতে। আমি কল্পনা করে নিতে পারছিলাম। উপলব্ধি করতে পারছিলাম সবকিছু। জামশেদ,মেলিনি,রোদেলা, রঞ্জু উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হলেও এই বইয়ের প্রাণ হলো জামশেদ চরিত্রটা। লেখক "জামশেদ" চরিত্রটা এমন ভাবে প্রকাশ করেছেন যেখানে তার ব্যাক্তিত্ব বারবার শুধু মুগ্ধই করে গেছেন। লেখক জামশেদ চরিত্রের মধ্যদিয়েই দারবিশের স্বরুপ এনেছেন। মেলিনি চরিত্রটাও অসম্ভব ভালো লেগেছে। দেশের প্রতি মেলিনির এতো ভালোবাসাও মুগ্ধ করেছে অনেক। লেখক চাইলেই বইটাকে আরো অনেক বড় করতে পারতো। কিন্তু লেখক তার শব্দশৈলী ক্ষমতা ব্যবহার করে খুব অল্পকথায় সবকিছু দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। যা খুব ভালো লেগেছে। বইটির প্রচ্ছদ, বাঁধাই, কাগজের মান ও লেখার মান ছিলো অসম্ভব রকমের ভালো। ১১০ পেইজের একটা বইয়ের মূল্য ৩০০ টাকা দেখে প্রথমে নাক সিঁটকালেও বইটা পড়ে শেষ করে আর আমার আফসোস নেই। বাঁধাই আর কাগজের মান দেখেই মনে হয়েছে, দাম ঠিকই আছে। সবশেষে বলবো অসাধারণ একটা বই। একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে বইটা শেষ করেছি।পড়ে দেখতে পারেন,ভালো লাগবে আশা করি।

      By Shahariar Sajol

      20 Jul 2019 07:35 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুলাই 'সিটি অব মিউজিক' খ্যাত ঢাকা শহরের হাজার হাজার গ্রান্ড পিয়ানো বাদকেরা তাদের সুরের মূর্ছনায় মুগ্ধ করে রাখে পুরো শহর। পিয়ানোর সুর আর শতশত গায়কের কণ্ঠ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় দিবানিশি। ষাট, সত্তর এবং আশির দশকে ঢাকার রাস্তায় রাজত্ব করে হাজার হাজার রিকশা। রিকশার বেল পিয়ানোর মতো টুংটাং ছন্দ তোলে। বেলের ছন্দের সাথে মসজিদের শহর ঢাকার হাজারো মাইকে দিনে পাঁচবার মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি মিলে অপার্থিব এক জগতের সৃষ্টি করে। সেই সময়ে ভালোবাসা হারিয়ে অভিমানী যুবক জামশেদ ঢাকা থেকে আমেরিকার সানফ্রানসিসকোতে পাড়ি জমায় ডাক্তারি পড়তে। সানফ্রানসিসকো তখন হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও দেশের অভ্যন্তরীণ শীতল যুদ্ধের কারণে আমেরিকার অবস্থা টালমাটাল। নিজেকে বিশ্বনাগরিক রূপে আবিষ্কার করে জামশেদ হিপ্পিদের আন্দোলনে যোগ দেয়। হিপ্পিদের এন্টি কালচার আন্দোলন ছিল পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে, ভিয়েতনামে সংঘটিত অনৈতিক যুদ্ধের বিরুদ্ধে। আন্দোলনের মাঝে জামশেদের সাথে পরিচয় হয় মেলিনি নামের এক তরুণীর। যে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং যুদ্ধ বিরোধী। মেলিনির মানবতা বোধ জামশেদকে মুগ্ধ করে। তার আদর্শ তাকে অন্যরূপে আকর্ষণ করে। জামশেদ যেনো তার হারানো ভালোবাসা ফিরে পায়। যুদ্ধ বিরোধী হওয়ার দরুণ মেলিনিকে রাশিয়ান স্পাই হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করে এফবিআই। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়। শুরু হয় মেলিনির পলাতক জীবন। যে জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছে জামশেদ। অনেকবছর বাদে 'সিটি অব মিউজিক' ঢাকায় ফিরে জামশেদ সেই যুদ্ধ, প্রেম আর রোমাঞ্চকর গল্প বলেছে রোদেলাকে। 'জেল থেকে বলছি', 'তুমি আমার প্রথম সকাল', 'হাসতে দেখো গাইতে দেখো' গান গুলোর মতোন আরো অনেক জনপ্রিয় গানের গীতিকার লতিফুল ইসলাম শিবলী'র প্রথম উপন্যাস 'দারবিশ'। কবি, গীতিকার, নাট্যকারসহ বহুল পরিচয়ে পরিচিত শিবলী ঔপন্যাসিক হিসেবে প্রথম উপন্যাসেই তিনি পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। 'দারবিশ' উপন্যাসের কাহিনি দুটো সময়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। বর্তমান এই সময়ের সাথে অতীতের সংমিশ্রণ। আর এই দুই সময়ের মাঝে কয়েক প্রজন্মের এক দারুণ মেলবন্ধনের দেখা মিলবে সমগ্র উপন্যাস জুড়ে। জামশেদ, মেলিনি, রোদেলা, রঞ্জু উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। এছাড়াও আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছে। চরিত্র গুলোর মাঝে আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে থাকবে জামশেদ নামের চরিত্রটি। কিছু মানুষের ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হতে হয়, সেই ব্যক্তিত্ব নিজের মাঝে ধারণ করতে ইচ্ছে হয়। তেমনই এক চরিত্র জামশেদ। লেখক জামশেদ চরিত্রটিকে অত্যন্ত যত্নসহকারে উপন্যাসে ফুটিয়ে তুলেছেন। তার মধ্য দিয়ে যেনো কয়েক প্রজন্মের রূপরেখা বয়ে গেছে। জামশেদ এর মাধ্যমে 'দারবিশ' নামকরণের স্বরূপ সাধিত হয়েছে। এই সময়ের শহর ঢাকা রূপান্তরিত হয়েছে বসবাসের অযোগ্য নগরী হিসেবে। মানুষ পরিস্থিতির চাপে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু একসময় ঢাকা ছিল 'সিটি অব মিউজিক'। যার সৌন্দর্য্যে যেকেউ মুগ্ধ হতো। এমনই এক ঢাকার রূপ লেখক তুলে ধরেছেন। ষাট, সত্তর এবং আশির দশকে যাদের বেড়ে ওঠা তারা কিছু সময়ের জন্য নস্টালজিক হয়ে যাবেন। বর্তমান প্রজন্মের মনে অন্যরকম আলোড়ন সৃষ্টি করবে, আবিষ্কার করবে ঢাকার ভিন্ন এক রূপ। কাহিনিতে একটা বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে আমেরিকার বিভিন্ন জায়গার বর্ণনা ও ইতিহাস। সেসব স্থানের বর্ণনা ও ইতিহাস লেখক এতো সুনিঁপুন ভাবে তার কলমের কালিতে তুলে ধরেছেন তা জীবন্ত রূপে পাঠকের মানসপটে ধরা দেবে। এখানেই তো লেখকের সার্থকতা। বইটিতে যতিচিহ্নের ব্যবহারে আরো সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল। আশাকরি লেখক ও প্রকাশক মহল বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখবেন। 'দারবিশ' প্রকাশের সাথে সাথেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে যা এখনো বর্তমান। 'দারবিশ' যেকোনো শ্রেণীর পাঠককে অন্যরকম এক আবেশের মধ্য দিয়ে ধাবিত করবে। বই থেকে প্রিয় একটি লাইন দিয়ে শেষ করছি, "দেশ দখলের চেয়ে হৃদয় দখল করা অনেক কঠিন।"

      By Adrita Mehzabin

      30 Jun 2019 09:08 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ♦দারবিশ - The Saint দারবিশ কি শুধু মানুষ পোষাকেই হয়! অন্তর থেকে কি কিছু নয়! মেক্সিকো বর্ডারে ইউ এস আর্মির হাতে ধরা পড়েছে এক বাংলাদেশি যুবক। গুলি লেগেছে পায়ে। তার সাথে পাওয়া গেছে দশ দশটি এম ফোর কারবাইন, যা ইউ এস আর্মি বেস থেকে চুরি হয়েছে। চুরির সিণ্ডিকেটটা ধরতে হলে তাকে বাঁচাতেই হবে। যুবকটির বিরুদ্ধে আর একটা গুরুতর অভিযোগ আছে। সে একজন রাশান স্পাই কে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। জেল হয়ে যায় যুবকটির , কিন্তু কেনো? ছেলেটি কেনো নিজেকে বাঁচাতে চায় নি? তাহলে কি সে নিজের জীবন বাজি রেখে অন্যকে বাঁচাতে চেয়েছিলো? সাত বছরের জেল জীবনে কেউ তাকে দেখতে আসেনি। পাঠায়নি কেউ একটা চিঠি। অথচ ছেলেটি অপেক্ষায় থাকতো এক নারীর। কল্পনায় দেখতো এক ফুটফুটে শিশু সন্তান নিয়ে টেক্সাসের হাই সিকিউরিটি প্রিজন সেলে এক কোমলমতি নারী দাঁড়িয়ে আছে। নাম তার "মেলিনি। " আমেরিকায় পড়তে আসা বাঙ্গালী যুবকটির সাত সাতটি বছর ভয়ঙ্কর সব দাগী আসামিদের সাথে সময় কাটাতে হয়েছে। শুধু সেই মেয়েটির কথা ভেবে ভেবে। জেলেই পরিচয় ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার ভিত্তরির সাথে। রাতে ঘুম ভাঙলেই ছেলেটি দেখতো তার দিকে শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভিত্তরি গিটার বাজাচ্ছে। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি ভিত্তরিকে লিভিং স্টোন এর পলুনস্কাই ইউনিট প্রিজনে নেয়ার আগে তার গিটারটি দিয়ে গিয়েছিলো জামসেদ কে। এই গিটার তার কান্না, লুকানো দীর্ঘশ্বাস, না দেখা সন্তানের মুখ, জেলে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তের স্বান্তনা। জামসেদ কে? জামসেদ হচ্ছে সেই ছেলেটি যে জেল থেকে বেরিয়ে পুরো ডালাস শহরের ক্যাসিনো মালিকদের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিলো একরাতে। চল্লিশ পার্সেন্ট পার্টনারশিপে শুরু হয় তার পথ চলা। পাঁচ বছরে তিনটি ক্যাসিনোর মালিক। যুবক একদিন পৌঢ় হয়। ফিরে আসে প্রিয় ঢাকা শহরে। সাথে বিলিয়ন ডলার। অথচ সে পার্ট টাইম জব করে এক মিউজিক ক্যাফে তে। একদিন সে পার্সোনাল সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগ দেয় "রোদেলা" নামের এক মেয়েকে। বাজি ধরে রোদেলার সাথে জামসেদ। "চা না কফি!" চাকরি হয় রোদেলার। একসময় রোদেলা বুঝতে পারে জামসেদ যে আঙুল দিয়ে গিটার বাজায় সেটা আসলে আঙ্গুল না জামসেদের হৃদয়। রোদেলা কি ভালবেসে ফেলে আজকের পৌঢ় জামসেদ কে? হয়তো হ্যা হয়তো না। আসলে মানব জীবনের সবচে বড় ট্রাজেডি, মানুষ জীবনের এই স্বল্প সময়ের বেশির ভাগ টুকুই নষ্ট করে নিজেকে শাস্তি দিয়ে। একদিন রোদেলা অফিস কাম বাসায় এসে শোনে জামসেদ এখানে নেই। হঠাৎ একদিন কেয়ার টেকার টুটুলের ফোন পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে আসে রোদেলা। কি চমক এখানে অপেক্ষা করছে তার জন্য? আমার কথা - জামসেদ আমার খুব প্রিয় চরিত্র। আমি "অমানুষ" বইয়ের জামসেদ এর কথা বলছি। যার দায়িত্ব ছিলো ইতালির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছোট্ট মেয়ে এ্যানি কে রক্ষা করার। ১৩ বছর বয়স থেকে আজ পর্যন্ত আমার প্রিয় পুরুষ চরিত্র জামসেদ। অবাক হয়ে লক্ষ করলাম আমি দারবিশ এর জামসেদ এর জন্যেও ঠিক ততটুকু টান অনুভব করছি। আমার খুব ইচ্ছে করছে বলি "জামস সুখী হতে হলে ক্ষমা করো আর ভুলে যাও। " দারবিশ জামসেদ আমাকে নতুন করে অনেক কিছু ভাবতে শিখিয়েছে। সত্যিই তো বিপদের মাঝে যে বন্ধুত্ব হয় সেই বন্ধুত্ব হয় অনেক গভীর। দারবিশের চোখ দিয়ে আমিও এখন থেকে খুঁজে ফিরবো "মেলিনি" কে। যে কাঁটাতারের বেড়া পার হবার আগ মুহূর্তে বলে গিয়েছিলো। "জামসেদ, আমি তোমার সন্তানের মা হতে চলেছি। " প্রিয় লাইন - #বিশ্বাস_অনেক_দামি_জিনিস_এর _জন্য_অনেক_মূল্য_দিতে_হয় ♥দারবিশ ♥লতিফুল ইসলাম শিবলী

      By রোদসী জান্নাত

      23 May 2019 11:13 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      সেক্স ড্রাগস অ্যান্ড রক এন রোল- তিনটি নিষিদ্ধ শব্দ ছিল আমেরিকান হতাশাগ্রস্থ তারুণ্যের আশ্রয়।সময়টা ছিল ৬০,৭০ আর ৮০ দশকের।যখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ আর শীতল যুদ্ধে আমেরিকার অবস্থা দিগ্বিদিক। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ঢাকার অভিমানী এক যুবক সানফ্রানসিসকোতে ঠিক সেই সময়ে ডাক্তারি পড়তে পাড়ি জমায়।সানফ্রানসিসকোকে তখন বলা হতো হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী।'এন্টি কালচার' সেই অভিমানী যুবক একপর্যায়ে বিশ্বনাগরিকে পরিণত হয়। কীভাবে? হঠাৎ রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমী এক নারী,মেলেনির প্রেমে পড়ে যুবকটি।যুদ্ধবিরোধী অথচ দেশপ্রেমী মেয়েটিকে রাশিয়ান স্পাই মনে করে এফবিআই হন্য হয়ে খুঁজছে।মেয়েটির পলাতক জীবনে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে পড়ে যুবকটি।যুবকটির জীবনে হঠাৎ চরম বিপর্যয় নেমে আসে। কী সেই বিপর্যয়? প্রায় ৭০ বছর পর তরুণ যুবক তার নিজের 'সিটি অব মিউজিক' শহর অর্থাৎ ঢাকাতে ফেরে।পরিচয় হয় এক তরুণীর সাথে। তরুণীর প্রেমিক আবার এই পরিচয়ে সন্তুষ্ট না একেবারেই..... কেন? মাত্র ১১০ পৃষ্ঠার মলাটবদ্ধ বইটার আনাচে-কানাচে টুইস্ট ভরপুর। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া: জার্নিতে আমি বই পড়ি নাহলে খুব বোরিং লাগে।সকাল ১১:২০ এ আমার ট্রেন। বাসা থেকে ঢাকায় ফিরতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি নয়টা বেজে পাঁচ মিনিট।বইটার আর ২০ টা পৃষ্ঠা বাকি। আম্মু ব্যাগপ্যাক গোছানোর তাড়া দিচ্ছে বারবার। আমার সাথে আরো বই থাকায় চাচ্ছি বাসা থেকেই শেষ করে বইটা রেখে যাব।আর কাহিনী আমাকে এতটা মুগ্ধ করেছে যে, এখন আমি বইটা ছেড়ে একেবারেই উঠতে পারব না। আম্মু আর পাঁচ মিনিট বলে বলে বইটা শেষ করেছি। তাহলে ভাবুন বইটি আমাকে কতটা আকৃষ্ট করেছিল! দারবিশ পড়ার আগেই লেখকের 'দখল' বইটা পড়েছিলাম। দখল কতটুকু হৃদয় দখল করেছিল জানি না তবে, দারবিশ যে এত বেশি হৃদয়ের সাথে জড়িয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। লেখকের কবিতার দুটো লাইন আমার খুব পছন্দ, "মাথার উপর যে শূন্যতা তার নাম আকাশ,বুকের ভিতর যে শূন্যতা তার নাম দীর্ঘশ্বাস " এরকম কিছুই। বইটা পড়ে যেন বুকের গহীনে শূন্যতা অনুভব করলাম। বইটা প্রেমের। বইটা প্রেমিকের।আসলে, বইটা সবার। বই:দারবিশ লেখক:লতিফুল ইসলাম শিবলী প্রকাশনী:নালন্দা প্রচ্ছদ:সোহেল আনাম পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১০ মলাট মূল্য:৩০০৳ ব্যক্তিগত রেটিং: ৯/১০

      By Nilufar Islam

      13 Dec 2018 09:18 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      লতিফুল ইসলাম শিবলীর এক অনন্য অসাধারণ সৃষ্টি দারবিশ। সেক্স, ড্রাগস আর রক এন্ড রোল এই তিনটি নিষিদ্ধ শব্দ ছিল ৬০, ৭০ আর ৮০ দশকের হতাশাগ্রস্ত আমেরিকান তারুণ্যের আশ্রয়। যখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ আর শীতল যুদ্ধে অস্থির টালমাটাল আমেরিকা, সেই সময় অভিমানী এক তরুণ ঢাকা থেকে চলে গিয়েছিল আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে ডাক্তারি পড়তে। এটা সেই সানফ্রান্সিসকো যাকে বলা হয় এন্টি কালচার বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। ৬০ মিলিয়ন লম্বা চুলের হিপ্পি যখন আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে, যখন আমেরিকার ঘরে যুদ্ধ, বাইরে যুদ্ধ ঠিক তখনি ছেলেটির জীবনে প্রেম হয়ে আসে মেলিনি নামের প্রখর রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমিক এক আমেরিকান নারী। যাকে রাশিয়ান স্পাই মনে করে হন্যে হয়ে খুঁজছে এফবিআই। এরপর শুরু হল তাঁদের পলাতক জীবন। মেলিনিকে নিয়ে টেক্সাস থেকে চোরাই পথে মেক্সিকো ঢোকার সময় ছেলেটির জীবনে ঘটে এক চরম বিপর্যয়! প্রায় ৭০ বছর বয়স নিয়ে এই তরুণ আবার ঢাকায় ফেরে, তার ফেলে যাওয়া সেই রোমান্টিক ঢাকা যাকে সে নাম দিয়ে ছিল সিটি অফ মিউজিক। পরিচয় হয় এক তরুণীর সাথে। মেয়েটি অদ্ভুত ভাবে লোকটির ৩০ বছর বয়সের সেই লম্বা চুলের হিপ্পির প্রেমে পরে যায়। সমস্যাটা শুরু হয় তখনি... আমার পড়া সেরা বই একটি, আমি অভিভূত!

      By Nahid

      12 Mar 2018 05:30 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      “ছয়টি তারে লুকিয়ে আছে ছয় রকমের কষ্ট আমার” – উপন্যাসটি পড়ার সময় বারবার জেম্‌সের এই গানটি মনে পড়ছিল। পরে মনে পড়লো গানটির গীতিকারও লেখক স্বয়ং। মনে হয় গিটারের তারগুলো জামশেদের কষ্ট প্রকাশের জন্যই প্রস্তুত। জামশেদ এমন এক মানুষ যে অপ্রাপ্তির মাঝেই প্রাপ্তি খুঁজে গিয়েছেন। জেলখানায় আশায় আশায় বুক বেঁধেছেন নিজের ঔরসজাত সন্তান আর তার মাকে দেখতে পাবেন বলে। ছাড়া পাবার পর ১০০ মার্কিন ডলার পকেটে নিয়ে খুঁজতে বেড়িয়েছেন তাদের। পরে মিলিয়ন ডলারের মালিক হন। পুরো মেক্সিকো চষে ফেলেছেন লস জিতাসের লোকেদের দিয়ে। ফলাফল ক্যান্সার - স্টেজ ফোর। থ্যাংক্স ভিত্তরি ফিলামেন্তে, জ্যামিকে গিটারটি দেবার জন্য। না হলে ওর কষ্ট আরও বহুগুণে বেড়ে যেত। #হ্যাপি_রিডিং

      By Tultul Zabin

      20 Nov 2017 03:11 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      'দারবিশ' বইটি লতিফুল ইসলাম শিবলী এর লেখা একটি বই । লেখক লতিফুল ইসলাম শিবলী অভিনয়ের উপর এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স শেষে গ্রুপথিয়েটার নাট্যচক্রের সঙ্গে মঞ্চনাটকে কাজ করতে করতেই ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকেন শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমে।অভিভাবকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে একদল গানপাগল তরুণ ব্যান্ড সংগীতের মাধ্যমে বাংলা গানের ধারায় যে-পরিবর্তন এনেছে, শিবলী তাদেরই অন্যতম। যুগযন্ত্রণার ক্ষ্যাপামো মজ্জাগত বলেই প্রথা ভাঙার যুদ্ধে শিবলী হয়ে ওঠেন আপাদমস্তক 'রক'। আধুনিক জীবনযন্ত্রণাগ্রস্ত তারুণ্যের ভাষাকে শিবলী উপস্থাপন করেছেন অত্যন্ত সহজসরল 'রক' এর ভাষায়। তাঁর সাফল্য এখানেই । তাই অল্প সময়ের মধ্যেই শিবলী পরিণত হয়েছেন এদেশের ব্যান্ড সংগীতজগতের কিংবদন্তি গীতিকবিতে । তার লেখা অসংখ্য গান আমাদের দেশের ব্যান্ড সঙ্গিত করে করেছেন সমৃদ্ধ । এখনো অনেকের মুখে মুখে চলছে তার লেখা গান। তার লেখা দারবিশ বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । বইটি প্রকাশিত হয় নালন্দা প্রকাশনী থেকে এবং এর প্রকাশক রেদওয়ানুর রহমান জুয়েল । প্রচ্ছদ করেছেন সোহেল আনাম । প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এক অভিমানী তরুন ঢাকা থেকে চলে গিয়েছিলো আমেরিকার সানফ্রানসিসকোতে।উদ্দেশ্য ডাক্তার হওয়া।এটা সেই সানফ্রানসিসকো যাকে বলা হত 'এন্টি কালচার' বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী।সেই সময়ে ভিয়েতনামের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে আমেরিকা ছিলো পুরোই উত্তপ্ত।লম্বাচুলের হিপ্পিরা তখন আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন নিয়ে।সেই আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেই বাংলাদেশি তরুনও সেই অংশগ্রহণ করে।সেই সময়ে সে নিজেকে একজন বিশ্বনাগরিক ভাবতে শুরু করে।এমনি এক সময়ে যখন আমেরিকার ঘরে যুদ্ধ,বাইরে যুদ্ধ ঠিক তখনি ছেলেটি এমন এক মেয়ের সাথে দেখা হয়,যাকে রাশিয়ান স্পাই মনে করে হন্য হয়ে খুঁজছে এফবিআই।মেয়েটির মতাদর্শ মুগ্ধ করে ছেলেটিকে।বারবার প্রেমে পড়ে যায় মেলেনি নামক এই যুদ্ধবিরোধী,প্রখর রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমিক মেয়েটির। তার সময়ের প্রয়োজনে পালিয়ে যায় । তারা কি শেষ পর্যন্ত পেরেছিল তাদের মনের মত জীবন পেতে ? জানতে হলে পড়তে হবে অসাধারন এ বইটি । সকলের নিকটই ভালো লাগবে বইটি তা নির্দিধায় বলা যায় ।

      By Mahmud siddiqui

      07 Aug 2017 05:19 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দারবিশ বা সেইন্ট মানে কী? সাধু, বৈরাগী, সন্ন্যাসী না অন্যকিছু? শাব্দিক অর্থে একে অনেকভাবেই ব্যক্ত করা যায়। কিন্তু, সত্তুর বছর বয়সী রহস্যময় জ্ঞানবৃদ্ধ মোহাম্মদ জামশেদকে কি এর কোনোটাতে আবদ্ধ করে ব্যক্ত করা যায়? লতিফুল ইসলাম শিবলীর দারবিশ উপন্যাস পড়া পাঠকের কাছে এ এক কঠিন প্রশ্ন। দারবিশ আগাগোড়া একটি জীবনবোধ ও প্রেমের উপন্যাস। এর সূচনা রোদেলা নামের পড়ুয়া, বুদ্ধিমান ও সচেতন তরুণীকে দিয়ে হলেও উপন্যাসের মূল নায়ক মোহাম্মদ জামশেদ, ষাটের দশকে তার প্রেমিকা মেলিনি এবং সর্বোপরি একটি জীবনবোধ। মোহাম্মদ জামশেদ একজন তীক্ষ্ণ ও সুক্ষ্মদর্শী জীবনবোধের অধিকারী ব্যক্তি। যে ঢাকা তার সাধারণ অধিবাসীদের কাছে দূষিত এক প্রাচীন শহর, জামশেদের কাছে তা সিটি অফ মিউজিক। হাজারো রিকশার টুংটাং শব্দ একেকটি গ্র‍্যান্ড পিয়ানো, রিকশার ঘর্মাক্ত চালক একেকজন পিয়ানোবাদক। আর পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসা আজান সেই পিয়ানোর লিরিক এন্ড টিউন। এক আধ্যাত্মিক মিউজিকের শহর ঢাকা। জামশেদের প্রিয় সিটি অফ মিউজিক। কোনো এক গাঢ় অভিমানে প্রিয় সেই সিটি অফ মিউজিক ছেড়ে জামশেদ পাড়ি জমায় আমেরিকার সানফ্রানসিসকোতে। সেই সানফ্রানসিসকো, যাকে বলা হত এন্টি কালচার বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। সময়টা তখন আমেরিকা-ভিয়েতনাম যুদ্ধের ভয়াবহ কাল। হাজার হাজার আমেরিকান ভিয়েতনামযুদ্ধে অকাতরে প্রাণ দিচ্ছে। তরুন-তরুণীরা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে। পুঁজিবাদ আর সমাজতন্ত্র নামক দুই মতবাদের আগ্রাসী লড়াইয়ে অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে দু'দেশের সৈন্যরা। সেই যুদ্ধের বিরুদ্ধে আমেরিকান তরুণ-তরুণীরা যে এন্টি কালচারের আন্দোলন শুরু করেছিল সেটাই হিপ্পি আন্দোলন। সেক্স, ড্রাগস এন্ড রক এন রোল—এই তিনটি শব্দই ছিল ৬০, ৭০, আর ৮০ দশকের হতাশাগ্রস্ত আমেরিকান তারুণ্যের আশ্রয়। ৬০ মিলিয়ন লম্বা চুলের হিপ্পিদের শান্তি-আন্দোলনে যোগ দিয়ে জামশেদের পরিচয় হয় মেলিনি নামের তুখোড় রাজনীতিসচেতন দেশপ্রেমিক এক তরুণীর সাথে, তারপর প্রেম। অথচ মেলিনিকে রাশান স্পাই সন্দেহে খুঁজছে এফবিআই। শুরু হয় উভয়ের এডভেঞ্চার আর পলাতক জীবন। এই আন্দোলন জামশেদকে পরিণত করে বিশ্ব নাগরিকে। এই এডভেঞ্চার আর পলাতক জীবনেই ঘটে এক চরম বিপর্যয়। এর অনেক বছর পর জামশেদের বয়স যখন সত্তুর, তখন সে আবার ফিরে আসে তার প্রিয় সিটি অফ মিউজিক ঢাকায়। ঢাকায় ফেরার পরেই দারবিশের রহস্যময় জীবনে পার্সোনাল সেক্রেটারি হিসেবে আগমন ঘটে রোদেলার। কী সেই রহস্য? সেই রহস্য উন্মোচিত হয়েছে উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠার আগে। পাঠকের জন্য তা রেখে দিই। সেই অহিংস হিপ্পি আন্দোলন এবং তার পূর্ববর্তী বর্ণনা পুরোটাই এক চমৎকার জীবনবোধে পরিপূর্ণ। গল্পের সূচনা থেকে হিপ্পি আন্দোলনে প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত লেখক লতিফুল ইসলাম শিবলী চমৎকারভাবে দারবিশকে দিয়ে জীবনবোধের কথা বলিয়েছেন। চোখে আঙুল দিয়ে জীবনকে বুঝাতে চেয়েছেন; বুঝাতে চেয়েছেন—একটি জীবন কত মূল্যবান। দেখিয়েছেন—জীবন বিশ্বাস ও ভালোবাসা; এদু'টির সমন্বয়। বিশ্বাস ও ভালোবাসাবিহীন জীবন অস্থিরতা ও অস্বস্তিকর জীবন। অনেক আগে এক বড়ভাই আমাকে বলেছিলেন—কবিরা যখন গল্প বলে তখন তা হয়ে ওঠে এক ঘোরলাগা মহাকাব্য; জীবন হয়ে ওঠে কাব্যের বিষয়বস্তু। দারবিশ পড়তে গিয়ে সেই কথাটাই আমার বারবার মনে হয়েছে। লেখক একজন গীতিকবি, তার সার্থকতা ধরে রেখে পুরো উপন্যাসে তিনি একটা ঘোরলাগা আবহ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। আমার মতো খুঁতখুঁতে পাঠককেও সেই ঘোরে আচ্ছন্ন হতে হয়েছে। গল্পের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গেলে বলতে হয়—সবগুলো চরিত্রই তিনি নিপুণভাবে নির্মাণ করেছেন। তবে মেলিনিকে সাথে নিয়ে পলাতক সময়কার কিছু বর্ণনা অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘায়ন মনে হয়েছে। কারণ, ওই সময়কার বর্ণনা জামশেদ কথোপকথন আকারে রোদেলাকে বলছিল। পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে লেখক এই বিষয়টা মনে না রেখে বর্ণনাত্মকভাবে লিখেছেন, যা কারো সাথে কথোপকথনের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক। তাছাড়া ওই বর্ণনায় কিছু অকারণ যৌনতাও ছিল, যা গল্পের সাথে অতটা প্রাসঙ্গিক নয় এবং মেয়ের বয়সী একটা মেয়ের সাথে অকপটে বলার মতোও নয়। তবে এই বইটাতে যেই ব্যাপারটা ভালো লেগেছে তা হলো—মুদ্রণপ্রমাদ ও বানানভুলের স্বল্পতা। দু'চারটে মুদ্রণপ্রমাদ থাকলেও বানানভুল চোখে পড়েছে একটি; ছোঁড়া। (বইয়ের সবকটি চন্দ্রবিন্দুবিয়োগে লেখা হয়েছে।) নতুন বইগুলোর যাচ্ছেতাই বানানভুল আর মুদ্রণপ্রমাদের ভিড়ে এই বইটি ব্যতিক্রম। সর্বশেষ, একজন পাঠক হিসেবে মুগ্ধ ও সন্তুষ্ট। এবং একজন ফিলোসফার লতিফুল ইসলাম শিবলীর পরিচয় পেয়ে তৃপ্ত; যিনি সস্তা গল্পের বাজারে চমৎকার শক্তিমান একজন লেখক। বইটা শেষ করার পর থেকে একটা হাহাকার কাজ করছে। মাথায় ঘুরছে— মাথার উপরে যে শূন্যতা তার নাম আকাশ বুকের ভেতর যে শূন্যতা তার নাম দীর্ঘশ্বাস! #পাঠপ্রতিক্রিয়া #দারবিশ

      By Rasedul Islam

      04 Aug 2017 10:45 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      কৈশোরে তিন গোয়েন্দা পড়ে আমেরিকা নিয়ে যেই ভালবাসাটা তৈরি হয়েছিল, সেটা একেবারেই চলে গিয়েছে এই যৌবনে এসে। দেশটার যুদ্ধপ্রিয়তা আর ট্রাম্পের মত নেতাদের দেখতে দেখতে আমার মোহ তো গেছেই, সাথে গেছে আমেরিকা ভ্রমণের সারা জীবনের লালিত স্বপ্ন। কিন্তু দারবিশ পড়ে আবার ইচ্ছেটা তীব্রভাবে ফেরত আসলো। মুগ্ধতার মধ্য দিয়ে মোটামুটি এক টানে শেষ করলাম পুরো বই। ভালো লেগেছে জামশেদের ঢাকাকে 'সিটি অব মিউজিক' নামকরণের কারণটা। হিপ্পিদের সাথে সফরের বর্ণনাও উপভোগ করেছি, যদিও ওদের মত কোন ধরণের নেশা করার স্বভাব আমার কোনকালেই নেই। আর অনুভব করেছি জীবনে একজন মেলিনির অভাব। "ভালবাসা আর বিশ্বাসহীন জীবন মাঝিবিহীন নৌকার মত" - জামশেদের কথাটা আমি অক্ষরে অক্ষরে বুঝতে পারি নিজের জীবন থেকেই। তবে একথাও ঠিক যে জীবনে মেলিনি না থাকলে কোন ভয়, পিছুটানও থাকে না। কাউকেই পরোয়া করে চলতে হয়না তার, যার কোন কিছু হারানোর ভয় নেই। গীতিকবি হিসেবে আমাদের সবার মন কেড়ে নেবার পর এবার লেখক হিসেবেও মুগ্ধ করলেন শিবলী ভাই। তার লেখা "আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি" গানটা শুনে কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি। এইবেলা জামশেদ আর মেলিনির কথা ভাবতে ভাবতে আর সেটার সাথে নিজের জীবন মিলিয়ে দেখতে দেখতে আবারো কিছু ঘুমহীন রাত কাটাবার কাল এল। অনেক অনেক ভালবাসা ও শুভকামনা লেখকের জন্য। নতুন বইয়ের প্রতীক্ষায় থাকবো।

      By Riaz Faride

      31 Jul 2017 08:50 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অবশেষে বইটা হাতে পেলাম গত সপ্তাহেই। অসাধারণ একটা বই। রয়ে সয়ে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও পড়া শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে আর থামতে পারি নি। ভিত্তরির দেয়া গিটারে তোলা সুর হয়তো এমনি মুগ্ধকর ছিল। সেকাল থেকে একালে চলে এসে আবারও ফিরে যাওয়া আর মেলিনির চোখ দিয়ে রোদেলার পুরনো "জ্যামি" কে খুঁজে পাওয়া ছিল অসাধারণ। ভিয়েতনামের যুদ্ধে অংশ না নেওয়ার পক্ষে মেলিনির শক্ত অবস্থান পড়তে পড়তে মনে পরল Green Day এর 21 Guns গানটার কথা, যেটা patriotism নিয়ে গাওয়া, কিন্তু সমালোচকেরা "anti-war" তকমা লাগাতে ভুল করে নি যেমনটি মেলিনির বেলায় হয়েছিল। জামশেদের চরিত্রতা বাস্তবে দুর্লভ হলেও কল্পনাতে রাখতে দোষের কি? ইতিহাস আর দর্শনের মিশ্রণে এই কাহিনী আর চরিত্রগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া বা উপলব্ধি করার মত অনেক কিছুই আছে। বইটা পড়ে মনে হল যে মানুষকে পড়া আর বুঝা জটিল হলেও অসম্ভব না, আর কোন কিছু বা কাউকে ধারণ করতে গেলে তাকে সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করাটা অনেক প্রয়োজন। অনেক ধন্যবাদ শিবলি ভাই কে এমন একটা গল্প উপহার দেওয়ার জন্য।

      By Sharmin Akter Rinky

      01 Jun 2021 07:33 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ফালতু বই

      By Kazi Asifuzzaman

      16 May 2017 08:27 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_ব‌ইপোকা_প্রকাশনা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ দারবিশ বইয়ের ধরণঃ উপন্যাস বইয়ের লেখকঃ লতিফুল ইসলাম শিবলী প্রচ্ছদঃ সোহেল আনাম প্রকাশকালঃ অমর একুশে বইমেলা ২০১৭ প্রকাশনীঃ নালন্দা পৃষ্ঠাঃ ১১০ মূদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫ টাকা (রকমারি) সার-সংক্ষেপঃ বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা আছে অনেক কিছু। রিভিউ লেখার সময় সার-সংক্ষেপ হিসেবে সাধারণত আমি সেগুলোকেই তুলে ধরি। তবে এবার সেই নিয়মের ব্যতিক্রম করছি। আলোচ্য উপন্যাসটি শুরু হয় রোদেলা কে নিয়ে। রোদেলা সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। বিনয়ী, সুন্দরী, বুদ্ধিমতি ও স্বাধীনচেতা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়েই সন্ধান শুরু করে চাকরীর। পেয়েও যায়। একজন পারসোনাল সেক্রেটারির কাজ। সেই সেক্রেটারি হতে হবে একজন ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধের। নাম মোহাম্মদ জামশেদ। তবে এই বৃদ্ধ যেন তেন লোক নন। বরং অসম্ভব বিচক্ষণ, অমায়িক ও প্রচুর জীবনীশক্তি সম্পন্ন মানুষ তিনি। রহস্যময় তাঁর চলাফেরা, বাচনভঙ্গি। তাই প্রথম প্রথম কিছুটা অদ্ভুতই লাগে তাকে রোদেলার। আর সেই ব্যাপারটি আরো ঘনীভূত হয় চাকরীর প্রথম ইন্টারভিউয়ের দিনেই। কিছু অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্নের উত্তর দিয়েই রোদেলা পেয়ে যায় ৫০ হাজার টাকা বেতনের চাকরিটি। তারপর একদিন রোদেলাকে খুলে বলেন তাঁর জীবনের কিছু সময়ের কথা। এমন কথা যা শুনে যেকোন মানুষই চমকে উঠবে। কি সেই কথা? জানতে হলে পড়তে হবে পুরো বইটি! পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ “এইখানে এই তরুর তলে তোমার আমার কৌতুহলে যেক’টি দিন কাটিয়ে যাব প্রিয়ে সঙ্গে রবে শূরার পাত্র অল্পকিছু আহার মাত্র আরেকখানি ছন্দ-মধুর কাব্য হাতে নিয়ে...” মির্জা গালিবের এই কবিতাটি আমার খুব পছন্দের। পড়লেই জীবনটাকে খুব সহজ বলে মনে হয়। মনে হয়, জীবনযাপন করতে আসলেই বোধহয় কিছুই লাগে না। প্রিয় পাঠক, আপনি কি দারবিশ বা সেইন্ট শব্দের মানে জানেন? কি হয় মানে? সাধু, তাই না? আচ্ছা এবার বলুন তো, সাধু মানে কি? জানি, অনেকেই হয়ত বলবেন যে জীবনে কোন খারাপ কাজ করেনি, সেই সাধু। হ্যাঁ। কথাটা এক অর্থে ঠিক। তবে আসল সাধু কারা জানেন? যারা জীবনের আসল অর্থ বোঝার চেষ্টা করেন। জীবনটিকে তারা অন্যদের থেকে ভিন্ন ও ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। যার কাছে জীবন মানেই ভালোবাসা, প্রেম। হিংসা, বিদ্বেষ তারা এড়িয়ে চলেন। এবার আসি আলোচ্য উপন্যাসে। “দারবিশ” উপন্যাস নিয়ে এই রিভিউটি লেখার আগে আমি অনেকক্ষণ চুপ করে বসেছিলাম। কেন? কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম না যে এটিকে আমি কোনধরণের উপন্যাস বলবো। প্রেমের উপন্যাস? নাকি ঐতিহাসিক উপন্যাস? নাকি এডভেঞ্চার উপন্যাস? নাকি অন্যকিছু? আসলে উপন্যাস হিসেবে “দারবিশ”এ আছে অনেক কিছু। আছে ইতিহাস, আছে সমাজ, আছে রাজনীতি, আছে এডভেঞ্চার, আছে প্রেম। আবার এই সবকিছু ছাপিয়ে আছে এক গভীর জীবনবোধ। লেখক লতিফুল ইসলাম শিবলী ভাইয়ের প্রথম মৌলিক উপন্যাস এই “দারবিশ”। এর আগে তাঁর বেশ কিছু কবিতা ও গবেষণামূলক বই প্রকাশ হয়েছে। তবে শিবলী ভাইকে এদেশের মানুষ সাহিত্যিক হিসেবে কম, বরং গীতিকার হিসেবেই বেশি চেনে। ব্যান্ড দল এলআরবি’র “আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি”, জেমস’এর “জেল থেকে বলছি”, বিখ্যাত গান “তুমি আমার প্রথম সকাল”সহ অনেক জনপ্রিয় গানের গীতিকার তিনি। আলোচ্য দারবিশ উপন্যাসটি লেখকের প্রথম উপন্যাস হলেও, তিনি বেশ ভালোই কাজ দেখিয়েছেন। গল্পের কনসেপ্টটা অতটাও আলাদা না হলেও, লেখনীর ধরণটা অন্যদের থেকে বেশ আলাদা। তাছাড়া বেশ ম্যাচুরড লেখনী। কাঁচা হাতের কাজ বলে মনে হয়নি তেমন। বইটির আরো একটি মজার দিক হলো, লেখক যেহেতু ব্যান্ড সংগীতের সাথে জড়িত তাই গল্পেও বারবার তুলে এনেছেন মিউজিকের কথা। রক এন্ড রোলের কথা। তৎকালীন আমেরিকা’র জীবন ও হিপ্পিদের কথা। এছাড়া লেখক বইটিতে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু উপমা এনেছেন। যেমন ঢাকা শহরকে তিনি বলেছেন, “সিটি অফ মিউজিক”! গল্প বলার সময় এনেছেন কিছু কাব্যিক ভঙ্গিও যা পাঠককে দিবে এক অন্য রকমের প্রশান্তির অনুভূতি। তবে কোন বইই নিখুঁত হয়না। তাই বইটি পড়ার সময় কিছু সূক্ষ্ণ ভুল চোখে পড়েছে। যেমন, বিরামচিহ্নের ব্যাবহার। বইটিকে উক্তি (“”) চিহ্নের ব্যাবহারে সমস্যা ছিল। লেখক লেখাগুলো বেশ ঢালাওভাবে লিখেছেন। তাই কাহিনীর বর্ণনা ও চরিত্রের সংলাপ আলাদা করতে বেশ কস্ট হয়। এছাড়া অনেক সংলাপের প্রথমে শুরুর উক্তি চিহ্ন ছিল। কিন্তু শেষে ছিল না। এছাড়া গল্পের দৃশ্যপট বর্ণনায় একটু সমস্যা ছিল। এত দ্রুত ঘটনা প্রবাহ হয়েছে যে পাঠক হিসেবে একটু সমস্যা হয়েছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে সাজাতে। তবে এই দুটি সমস্যা ছাড়া আর কোন সমস্যা তেমন চোখে পড়েনি। বইয়ের বাঁধাই, কাগজের মান ও ছাপা ছিল দেখার মত। মোটা অফসেট পেপারে লেখাগুলো যেন ঝকঝক করছিল। বইয়ের প্রচ্ছদটিও অনেক সুন্দর ও ভিন্ন। দেখতে খুব আকর্ষনীয়। প্রচ্ছদশিল্পীকে ধন্যবাদ জানাই এত চমৎকার একটি প্রচ্ছদ বানানোর জন্য। সবশেষে বলতে চাই, যদিও আলোচ্য উপন্যাসে উঠে এসেছে ৬০, ৭০ দশকের আমেরিকা’র সমাজ, রাজনীতি, হিপ্পি ও তাদের গানবাজনার কথা। কিন্তু সেগুলোকে ছাপিয়ে উঠে এসেছে অনেককিছু। প্রেম, ভালোবাসা, জীবন, সংগ্রাম, ভাগ্য এবং সফলতার গল্প। এখানের উল্লেখিত স্থান সত্য, ইতিহাস সত্য, কাল্পনিক শুধু এর চরিত্রগুলো। তাই সুপ্রিয় পাঠক, বইটি পড়ে দেখুন। কথা দিচ্ছি, ভালো লাগবে। ধন্যবাদ! হ্যাপি রিডিং! রেটিংঃ ৪.৫/৫

      By Hosneara Yeasmin Ami

      10 Apr 2017 08:47 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      ঢাকা সিটি অব মিউজিক যে শহরে হাজার হাজার গ্র্যান্ড পিয়ানো নিয়ে বাদকেরা শহর জুড়ে ঘুরে ঘুরে দিনরাত পিয়ানো বাজায়। আর শুধু পিয়ানো না, তার সাথে শতশত গায়কও কোরাসে কন্ঠ মেলায়। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? এটা সেই সময়ের কথা যখন ঢাকার রাস্তায় হাজার হাজার রিকশা চলত। আর রিকশার বেলগুলো পিয়ানোর মত টুংটাং করে বাজত। আর তার সাথে দিনে পাঁচবার মুয়াজ্জিনের কন্ঠ যখন মিলে যেত তখন এই শহরটা হয়ে যেত সিটি অব মিউজিক। এটা সেই সময়ের কথা যখন টগবগে তরুণ জামশেদ আমেরিকা পাড়ি জমিয়েছিল। আমেরিকা তখন উদ্দাম। বিদ্রোহী বিট জেনারেশন আর লম্বাচুলো হিপিরা শাষন করছে আমেরিকান তারুণ্য। আর তাদের অনুসরণ করছে পুরো বিশ্বের তরুণ প্রজন্ম। সেই সময় আমেরিকান কলেজ ক্যাম্পাসগুলো উত্তপ্ত হয়ে ছিল ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে। এ রকম এক পরিবেশে জামশেদের দেখা হয় মেলিনির সাথে। স্প্যানিশ আমেরিকান মেডিক্যাল স্টুডেন্ট মেলিনি ছিল ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি আন্দোলনের নিবেদিত কর্মী। প্রেমে পড়ল জামশেদ। মেলিনিকে ভালবেসে মেলেনির আদর্শে উদ্ভুত হয়ে একসাথে কাজ করতে লাগল। এমনি সময়ে রাশিয়ান স্পাই সন্দেহে মেলিনির পেছনে লাগে এফবিআই। শুরু হয় তাদের পলাতক জীবন। লম্বাচুলো হিপিদের সাথে মিশে পালায় তারা। মেলিনিকে নিয়ে টেক্সাস থেকে চোরাই পথে মেক্সিকো ঢোকার পথে ঘটে যায় চরম বিপর্যয়। প্রায় 70 বছর পর সে ফিরে আসে আবার সিটি অব মিউজিক, ঢাকায়। এসে দেখা পায় রোদেলার। এই সময়ে জন্মেও যার মন তৈরি হয়েছিল এলভিস প্রিসলি, বিটলস আর নির্ভানার সুরে সুরে। অদ্ভুতভাবে সে সেই লম্বাচুলো হিপির প্রেমে পড়ে যায়। এই গল্প এই সময়ের। এই গল্প জামশেদের। এই গল্প রোদেলা আর সন্জুর। প্রথমে ভাবতে পারিনি এই বইয়ের রিভিউ আমি লিখতে পারব। কয়েকবার চেষ্টা করে পিছিয়ে এসেছি। এইবার সাহস করে দু'লাইন লিখেই ফেললাম। আমি এই সময়ের মানুষ। সিটি অব মিউজিকের কিছুটা আমার দেখা। সেই স্মৃতিকে কেউ এত সুন্দর করে উপস্থাপন করবে এটা কখনো কল্পনাতেও আসেনি। ফাকা রাস্তায় সাই সাই করে উড়ে চলা রিকশা তার সাথে মিস্টি মধুর টুংটাং বেল এখনকার কেও একমাত্র হরতাল ছাড়া অনুভব করতে পারবে বলে মনে হয় না। এই বইটা যেন আমাকে সেই দিনগুলোতে নিয়ে গিয়েছিল। রক ব্যান্ড আর উদ্দাম যাযাবর জীবন কিছুটা হলেও যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছিল। ভেসে গিয়েছিলাম আমিও চির তরুণ জামশেদের বর্ণিল বর্ণনায়। আর বইয়ের মান নিয়ে তো কোন প্রশ্ন করার অবকাশ রাখেননি লেখক প্রকাশক। অসম্ভব সুন্দর প্রচ্ছদ, ভালো মানের কাগজ, বাধাই, সবকিছুই অনেক মানসম্মত। বইটা শুরু করার আগে প্রায় মিনিট দশেক হাতে নিয়ে বসে ছিলাম। এত সুন্দর বইটা।।।

      By Md. Fuad Al Fidah

      05 Mar 2017 05:16 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      দারবিশ বইটা নিয়ে আমার পরিচিত জনদের মাঝে প্রথম উচ্ছ্বাস দেখি রাফির মাঝে। অবশ্য ও পাঠক হিসাবে উচ্চমানের। এখানে লেখনি, ওখানে নায়িকা, সেখানে ঘটনা আর অমুকখানে সমাপ্তি দেখেই সে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে। তাই পাত্তা দেইনি বেশি। পাত্তা দেইনি সাজিদ ভাইয়ের উচ্ছ্বাসকেও। বইটা অনেকটা জোর করেই ধরিয়ে দেয়া হয় আমাকে, কৃতিত্ব রাফির। সত্যি বলতে কি, প্রথম ওয়ান থার্ড পড়ে আমার মনে হচ্ছিল, এই সময়টুকু বেহুদা যাচ্ছে। অতি নাটকীয় চরিত্র, ততধিক নাটকীয় সংলাপ আর ঘটনার স্থবিরতা পড়ে মনে হচ্ছিল, বর্তমান যুগের অন্যান্য সেলিব্রেটির মতো এক সেলিব্রেটির বই পড়ছি। যিনি যোগ্যতা না, জনপ্রিয়তা দিয়ে উপরে ওঠেন। হায় খোদা, কত্ত বড় ভুল! অনেকদিন ফেলে রেখেছিলাম মাঝখানে। কয়েকদিন পর পরীক্ষা। কিন্তু হাতে থাকা বইগুলো অনেক বড় আর মোটা বলে, ধরতেও ভয় লাগছিল। সত্যি বলতে, একমাত্র চিকন বলেই বইটা হাতে নিয়েছিলাম। নিয়ে যে ছিলাম, এজন্য নিজেকে নিজেরই বাহবা দিতে মন চাচ্ছে। ঘটনা একবার শুরু হবার পর (মানে আনুমানিক সকাল দশ ঘটিকায়) এক দৌড়ে চলে গেল কয়েকটা ঘন্টা। যে চরিত্রগুলোকে মনে হচ্ছিল নাটকীয়, সেগুলোই হয়ে গেল আটপৌরে (ঠিক আটপৌরে না, সীমান্তে গোলাগুলি আটপৌরে লোকেরা করে না। তবে আশা করি বুঝতে পারছেন)। যে সংলাপ গুলোকে সিনেমার স্ক্রিপ্ট থেকে তোলা মনে হচ্ছিল, সে গুলোয় লাগল মানবীয় ছাপ, হয়ে উঠল জীবনবোধ থেকে উৎসারিত! জামশেদ-সঞ্জু-রোদেলা। প্রথম জনকে মনে হচ্ছিল অবাস্তব। যে যুগে সবাই আদর্শ বিক্রি করে খায়, সে যুগে আদর্শ আকড়ে ধরে বাঁচতে চাওয়া মানুষকে কেন যেন শুধু সন্দেহ হয়। সঞ্জু তো ওভারগ্রোন চাইল্ড, কিন্তু সত্যি বলতে গেলে-কোন ছেলেটা আর প্রেমিকার ব্যাপারে এমন না? আর রোদেলা-বাংগালি সমাজে এমন মেয়ে অসম্ভব। যারা আছে, তাদের চাকরির দরকার হয় না। কিন্তু এমন মেয়েই কি শিক্ষা ব্যবস্থার জন্ম দেয়া উচিত না? যে নিজের বিশ্বাসকে আকড়ে ধরবে শত প্রতিকূলতায়। তবে মেলেনি চরিত্রটা আমাকে সবচেয়ে বেশি ছুঁয়ে গিয়েছে। কেন? তার উত্তর তোলা থাক। পৃথিবীতে খারাপ মানুষ অনেক আছে, খারাপ বাবা একটাও নেই-সম্ভবত হুমায়ুন আহমেদ লিখেছিলেন। বইয়ের চরিত্রগুলোও তো লেখকের সন্তান, তাই না? উপন্যাসে বাবা-মেয়ে থাকতে পারে, কিন্তু লেখকের কাছে দুজনেই সম্ভবত সন্তান। সন্তানের ভালোর জন্য অনেক কিছু করতে হয় বাবাকে, যা আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় কাঠিণ্য আর রুক্ষতা। চরিত্রের উন্নয়নের জন্যও তাই লেখককে অনেক কিছুই করাতে হয়, যা কিন্তু আসলে অতি দরকারী। জামশেদের জীবনটাও তেমনি অগণিত আপাত রুক্ষ কিছু ঘটনার শিকার। যা না হলে হয়তো জামশেদ থাকত জামশেদ হয়েই, দারবিশ হতো না। আমি পাঠক হিসেবে নিম্নমানের। আমার দরকার এখানে খুনাখুনি, ওখানে মারামারি, সেখানে কাটাকাটি। এধরণের বই আমি পড়ি, কিন্তু খুব কমই ভালো লাগে। যাস্ট পাতা উল্টে যাই। শেষের দিকে এসে এই বইয়ের পাতা উল্টাতে মন চায়নি, শেষ হয় যায় যদি? খুঁতখুঁতে মানুষ আমি, তাই সব খানেই ভালো লাগার পাশাপাশি মন্দ লাগা থাকে। দারবিশেও আছে। তবে ৯৯% শতাংশ ভালো লাগার জোয়ারে, ১ শতাংশ মন্দ লাগা নাহয় কুটোর মতো ভেসে যাক! একটু খানি কাকতাল, খানিকটা নাটকীয়তা আর অনেকখানি না পাওয়ার আখ্যান হয়ে থাক দারবিশ।

      By Riasat Hasan (Jyoti)

      04 Mar 2017 02:25 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      বই সর্ম্পকে মতামতঃ বইয়ের নামঃ দারবিশ। লেখকঃ লতিফুল ইসলাম শিবলী। ------------------------------------------ “৬০ মিলিয়ন লম্বা চুলের হিপ্পি যখন আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে, যখন আমেরিকার ঘরে যুদ্ধ, বাইরে যুদ্ধ, ঠিক তখন ছেলেটির জীবনে প্রেম হয়ে আসে মেলিনি নামের প্রখর রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমিক এক আমেরিকান নারী। যাকে রাশিয়ান স্পাই মনে করে হন্যে হয়ে খুঁজছে এফবিআই। এরপর শুরু হলো তাঁদের পলাতক জীবন। মেলিনিকে নিয়ে ট্রেক্সাস থেকে চোরাই পথে মেক্সিকো ঢোকার সময় ছেলেটির জীবনে ঘটে এক চরম বিপর্যয়... "৭০ বছর বয়স নিয়ে সেই তরুন আবার ঢাকায় ফেরে, তাঁর ফেলে যাওয়া সেই রোমান্টিক ঢাকা, যাকে সে নাম দিয়েছিল “দ্য সিটি অফ মিউজিক”। পরিচয় হয় এক তরুণীর সাথে, যে তরুণীর মননশীলতা তৈরী হয়েছিল সেই সময়ের এলভিস প্রিসলী, বিটলস, বব ডিলান, জিমি হ্যাড্রিক্স, জিম মরিসন, লেড জেপলিন, পিঙ্ক ফ্লয়েড, ইউ-টু আর নির্ভানা শুনে।” এবারের বইমেলায় বই কিনতে যেয়ে অনেকটা হ্যাপা পোহাতে হয়েছে। কার বই কিনবো। ভালো মানের সাহিত্য পড়ে যেখানে অভ্যাস, সেখানে হুমায়ুন আহমেদের পরে সেরকম ভালো লেখক-সাহিত্যিক পাওয়া কঠিন। নবীন অনেকেই লিখছেন কিন্তু সেখানে কাহিনীর দেখা মেলেনা, মেলে শুধু সুতো বাঁধা কিছু অক্ষরের বিন্যাস। আর যাঁরা আছেন প্রতিষ্ঠিতদের মধ্যে, গতবছর তাঁদের দু-একটা নতুন লেখা বই কিনে শুধু হতাশাই বোধ করেছি। এবার তাই বসেছিলাম বই সম্পর্কে আগেভাগে জেনে নিয়ে তারপর ব্ই কিনবো। সাহায্য নিয়েছি রকমারী.কম - এর। সেখানে বইগুলোর কাহিনীর কিছু অংশ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখান থেকেই খুঁজতে যেয়ে পেয়েছিলাম “দারবিশ” বইটির নাম। কিংবদন্তী গীতিকবি এবং কথাসাহিত্যিক লতিফুল ইসলাম শিবলী’র প্রথম উপন্যাস। যার মূল স্লোগানে লেখা আছে “দেশ দখলের চেয়ে হৃদয় দখল করা অনেক কঠিন” *** অনেকের মনে প্রশ্ন আসবে উনি কে এবং কেন কিংবদন্তী গীতিকবি হলেন? ৯০ এর দশকের যাঁরা আছেন, তারা ওনাকে খুব ভালোভাবে চিনবেন ওনার লেখা বিখ্যাত কিছু গানের জন্য, যেমনঃ জেল থেকে বলছি, তুমি আমার প্রথম সকাল, আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি, কেউ সুখি নয়, হাসতে দেখো গাইতে দেখো, হাজার বর্ষারাত, পলাশীর প্রান্তর, প্রিয় আকাশী.... ৯০ দশক জুড়ে এসকল গান সহ তিনি লিখেছেন তিন-চারশো গান। তিনি লিখেছেন নাটক “তোমার চোখে দেখি” এবং রাজকুমারী - প্রচারিত হয়েছিল বিটিভি-তে। রাজকুমারী নাটকে অভিনয় করেছেন মির্জা গালিব চরিত্রে। নিজস্ব কাহিনী, সংলাপ এবং চিত্রনাট্যে নির্মীত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “পদ্ম পাতার জল (২০১৫)”। দু-চোখ মেলে যদি জগৎকে পরিপূর্ণ রুপে দেখা হয় তবে মিলে যায় লেখার শক্তি। স্বভাবজাত বোহেমিয়ান লেখক লতিফুল ইসলাম শিবলী জীবনের অনেকটা সময় ঘুরে বেড়িয়েছেন ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তরে। লেখার ক্ষেত্রে এই ভ্রমণ লেখককে অনেকটা সহায়তা করেছে। লিখে ফেলেছেন একজন দারবিশ - এর কথা যিনি শুধু ভালোবাসার জন্যই, ভালোবাসা পাওয়ার জন্য; ভালোবাসা দেয়ার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। পাঁচ খুনের আসামীর কাছ থেকে পাওয়া গিটার দিয়ে বের করে এনেছেন নিজের মনের অতৃপ্ততার বা না পাওয়ার সুর। জেল খেটেছেন। বাজি ধরেছেন এবং জিতেছেন ক্রমাগত। শেষমেষ নিজের জীবনের বাজিতে হেরে , নীভৃতে নিয়েছেন বিদায়। চির তরুণ জামশেদ এর গল্প, মেলিনির গল্প কিংবা রোদেলার। *** কোন গল্প পড়ে যদি পাঠকের মনে দাগ কাঁটা যায় তবে তাতেই একজন লেখকের সার্থকতা। প্রথম উপন্যাস হিসেবে আমার দৃষ্টিতে লেখক লতিফুল ইসলাম শিবলী সাথর্ক হয়েছেন। তাঁর লেখার প্রতি ভালোলাগা জন্মাতে পেরেছেন। আর আমরা জাতি হিসেবে তো অনেকটা বেশি অনুভূতিপ্রবণ, সেখানেও তিনি মনের মাঝে অনুভূতির জন্ম দেয়াতেও সার্থক হয়েছেন। আমার পক্ষ থেকে ওনার জন্যে শুভকামনা এবং আশা করছি উনি এরকম আরো ভালো লেখা আমাদের উপহার দেবেন। রিয়াসাত হাসান জ্যোতি... ০৪.০৩.২০১৭

      By Wasim Iftekhar

      25 Feb 2017 07:03 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ভিয়েতকং যুদ্ধে আমেরিকানরা গো-হারা হেরেছিল। “আমেরিকানরা হেরেছিল” এভাবে বলা বোধকরি বড় ধরনের অন্যায়। বলা উচিৎ আমেরিকান সৈনিক ও সরকার হেরে গিয়েছিল যেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। আমেরিকান বাহিনীর শক্তি সামর্থ বিবেচনাতে নিলে অবশ্য কোন ভাবেই বলা যাবেনা যে আমেরিকানরা কোন যুদ্ধ হারতে পারে। এবং বাস্তবতা হচ্ছে ভিয়েতনাম যুদ্ধে প্রায় প্রতিটি লড়ায়ে জিতার পরেও আমেরিকানরা যুদ্ধে হেরে গিয়েছিল। লিও তলস্টয়ের ওয়ার এন্ড পিসের কথা আমরা প্রায় সবাই জানি। অনেকেই হয়তো পড়েনি তবুও নাম শুনলেই মাথার ভেতর দুই বৈপরীত্য ঠিকি ভেসে ওঠে। একদিকে যখন গনগনে সূর্য অন্যদিকে তখন চকচকে পূর্নীমা। না, #দারবিশ কে মোটেও ওয়ার এন্ড পিসের সাথে তুলনা করছি না। কিন্তু এটুকু তো নির্দ্বিধাতে বলা যায় ওয়ার এন্ড পিস যেমন ৪০০ বছরের রাশান ইতিহাসের সাক্ষী , তেমনি #দারবিশ রূপের জামশেদ ২০ বছর ব্যাপী চলামান ভিয়েতনাম যুদ্ধ , রক্ত, আশা, রাজনীতি আর স্বপ্নের সাক্ষী। গৃহত্যাগী জামশেদের অন্য ভুবন, আমেরিকান উদ্যামতার তিন তাঁরা রক এন্ড রোল, সেক্স, ড্রাগস সাথে অস্ত্রের ঝনঝনানি , এসবের ভেতরে গভীর থেকে উঠে আসা জীবনবোধই যেন মানুষ জামশেদের প্রতিচ্ছবি। সেই উদ্যাম জীবনকে শুধুমাত্র জীবনের উচ্ছলতা, উচ্ছন্যে যাওয়া বলে যারা ভাবেন, নিশ্চিত তাঁদের চোখের সামনে অন্য প্রান্তের গল্পটাকে সামনে নিয়ে এসেছেন লতিফুল ইসলাম শিবলী ভাই। ৯০ এর দশকে নিজ জীবন থেকে উৎসারিত যে মায়াবী বিপ্লবের স্বপ্ন , তাঁরই অতলান্তিকের ওপারের বাস্তব ভার্সন #দারবিশ। বইটির কাভার ফ্লিপে স্পষ্ট করেই লেখা আছে স্থান সত্য , কাল সত্য, ইতিহাস সত্য। বাউন্ডুলে জীবনের অন্তর্নিহিত আকাংখা, উড়াধুরা বেশবাসের পেছনে মহাকল্যানের কামনা, দ্বিধাহীন, প্রশ্নহীন, লোভহীন যে বোধ, জিপসি জীবনের ছুটে চলা, স্বাধীনতার সবটুকু স্বাদ চেটেপুটে উপভোগ করা সেই সমাজের পরম প্রকাশ হিপ্পি। বয়সের সাথে একটা সময় গুটিয়ে যেতে হয়, তাতে কি মানবতা প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা স্তিমিত হয়ে যায় ? ভালোবাসার নির্জাস হারিয়ে যায় কোনদিন? সেই সব প্রশ্নের উত্তর লেখা আছে দারবিশের জীবনে। “এই বাড়ির একটা নিজস্ব গন্ধ রয়েছে। সেটা কেমন রোদেলা বোঝাতে পারবেনা” — যখন এই লাইন টাতে আসি যেন চোখের সামনে সেই আভিজাত্য ভেসে ওঠে, সেই গন্ধ আমাকেও পাগল করে। হিপ্পি জীবনের রক এন্ড রোল, সেক্স, ড্রাগস আর ভালোবাসার কাঙ্গাল জামসেদের জাইগাতে নিজেকে কল্পনা করার লোভ কেই বা ছাড়তে চাই? জামসেদের চরিত্রে এসেই আপনার/আমার সাথে মিসে গেছে সব বাঁধা ব্যাবধান। মিউজিক, গিটারের বিষ্ফরিত গ্রেনেড, নিয়ম ভাঙ্গার নিয়ম, সিস্টেমের বিরুদ্ধে যেয়ে সামাজিকতার পরোয়া না করে নতুন সিস্টেম গড়া, ভালোলাগা, ভালোবাসা, নেশা, কোমরে গুঁজা পিস্তল এই স্বপ্ন গুলো সমগ্র জীবনে একবারের জন্যও দেখেনি এমন তরুণ, কিশোর কোথাও খুজে পাওয়া যাবে কি? প্রিয়তমা মেলিনিকে গর্ভের সন্তান সহ হারিয়ে ফেলা জামশেদ, প্রতিষ্ঠার সমস্ত কিছুর সন্ধান পেলেও তাঁর হৃদয়ের অপূর্নতার সন্ধান কেউ দিতে পারেনি। রোদেলা তো একজন তরুণী মাত্র, পৃথিবীর সমস্ত তরুণীই এমন একজন জামশেদের মোহতে আচ্ছন্ন হতে বাধ্য। আচ্ছা কে এই জামশেদ? খোদ লতিফুল ইসলাম শিবলী ভায়ের কাঠামোতে জামশেদ লুকিয়ে নেই তো? পেশী বহুল লোহা পিটানো শরীর, গীটারের সুর, ৯০ এর মিছিল, অস্ত্র আগুন আর শয়ে শয়ে লেখা সব গীতি কবিতা ! উত্তর পেতে দারবিশের পাতা উলটে দেখতেই হবে। আপাতত আমি দ্বিতীয়বারের মত পড়তে শুরু করলাম।

      By m tarik

      23 Feb 2017 10:20 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      The main character Jasmhed is Darbish himself, bohemian, loving heart, intelligent, running away from the worldly affairs, looking for love, brave, spiritual, music loving, god fearing, nostalgic, story teller, who lives in a dream also at the same time knowing the real world consequence. The author makes the good chemistry between Rodela and Jamsed, there is a romantic tense between them, an infatuation. Author Shibli takes them in a dream journey, then tells us the worldly affairs through Sanju who is Rodela's husband, a real world problem most people face, there is also solution and that is belief and love and this is the main theme. Jasmhed tells the story of america in 60s, where he finds love and solution for world peace, realized it was fake, because what we know, repetition of Vietnam, we know Satan plays the both cards, Jamsed got the touch maybe he didn't realize it fully, similarly he finds peace in late night azan, without crying to his maker who called him. there is twist and turns in the story, he finds love in unexpected place such as in Rodela, love is universal without any type of boundary, but they both understands the boundary for they are responsible and caring. the description of america, Jamsed in USA is boring maybe because I am unfamiliar to the culture, sometime unrealistic, his becoming rich was not dramatic enough, I thought it is not so easy , but it is possible, the family affairs between Rodela and Sanju is real and truthfully described, the ending brings tears which states love is universal at the same time it is belief and trust which is above all more important than anything else. the author selects beautiful words, writes well of the affairs of human emotions of love anger betrayal, hopeless infatuation and spirituality. has mysterious beginning and a heart touching satisfying ending. it is a positive book, and philosophic, has teaching for a common problem of this age, how Jamshed found his love in Rodela is amazingly surprising, the name Darbish of the book is also dramatic, and goes well with the book, the author Shibli is part of Jamshed. the binding, book cover and paper quality is excellent, I give this book 3.5 out of 5 stars.

      By himu

      15 Feb 2017 09:30 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ঢাকা থেকে আমেরিকা হয়ে মেকক্সিকো তার পর.......... না ফেরার দেশে, মাঝখানে আমাদের দিয়ে গেল ভালবাসা নামক এক বিশাল মহা সুমুদ্র, দারবিশ বেচে থাকল আমাদের মাঝে, হুমায়ুন স্যার মিসির আলির জন্ম দিয়ে আমাকে পাগল করছিলেন, সব সেস লতিফুল ইসলাম শিবলি ভাই করলেন দারবিশ দিয়ে, আশা করব দারবিশ সিরিজ আকারে চলবে......... ভালবাসি Latiful Islam Shibli ভাই দারবিশ যখন মরে গেল, অঝরে চোখের পানি নামতে শুরু করল, বাস এর ভেতর ছিলাম সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে, কেমন একটা নিরাবতা কেও একজন জিগাল কি হইছে হা মাও করে কেঁদে বললাম দারবিশ মারা গেছে, তারা হয়ত মনে করছে দারবিশ আমার কোন কাছের মানুশ, হা দারবিশ আমার খুব কাছের মানুষ খুব অল্প সমায়েই কাছের হয়ে উঠেছে, সত্য কথা দারবিশ মরেনি দারবিশ তার মেলেনির কাছে গেছে,............

      By Taherina Rini

      10 Feb 2017 11:04 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আদর্শের নাম দিয়ে তুমি যদি কারো স্বাধীনতা হরণ করো, কারো দেশ দখল করো, কারো সম্পদ লুট করো তবে সেটা অবশ্যই আদর্শবাদ নয়। আদর্শ সেই শক্তির নাম যেটা দিয়ে তুমি আমার সাথে কথা বলবে, বিতর্ক করবে, আমার ভুলগুলো তোমার আদর্শিক বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সুধরে দেবে। আর দিন শেষে আমি ভালোবেসে তোমাকে গ্রহণ করতে পারি অথবা বাতিল করে দিতে পারি। দেশ দখলের চেয়ে হৃদয় দখল করা অনেক কঠিন। -দারবিশ শেষের কথা টা ছুয়ে গেছে আমাকে.....আমি পড়তে শুরু করেছিলাম ...কখন আমার হৃদয় দখল করে নিয়েছে "দারবিশ " ..অনেক দিন পর প্রেম. বিরহ..যুদ্ধ ..আদর্শ..সব মিলিয়ে অসাধারণ এক উপন্যাস পড়ার সুযোগ হল.. পাঠক নিজেকে উপন্যাসে বর্নিত সে কালে অনায়াসে কল্পনা করতে পারে..এত জীবন্ত বর্ননা..অসাধারণ কবি লতিফুল ইসলাম শিবলীর অসাধারন উপন্যাস *দারবিশ*.

      By Enamur

      13 Feb 2017 01:56 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      আমি ৯০ এর বালক, শিবলী ভাইয়ের প্রতি মুগ্ধতা সেই প্রথম যৌবন থেকেই, কেমন করে জানি আমি এই ভদ্রলোকের ফেসবুক বন্ধুতালিকায় জাগা পেয়ে গেছি। তার লেখা প্রথম উপন্যাস দারবিশ বের হবে ১৭'র বইমেলায়, যেদিন থেকে এই খবরটা পেয়েছি সেদিন থেকেই আকন্ঠ পিপাসা নিয়ে অপেক্ষা করেছি। খুলনায় অফিসে বসে বাইপোষ্টে আসা বইটা হাতে পেলাম বিকেলে, অফিসে শেষ করে বাসায় এসে ছেলেটা ঘুমান পর্যন্ত সময় দিয়ে বইটি খুলতে খুলতে বেজে গেল প্রায় এগারটা ..., ঝামেলা হয়ে গেল বইটা খোলার পর থেকেই, কিছুতেই আর বন্ধ করতে পারি না, পরদিন অফিসে অনেক কাজ, রাত করে ঘুমালে অফিস করতে অনেক কষ্ট হয় ... , কিন্তু হলে হোক করে চলতে থাকল ... না চলে কোন উপায় নেই, লেখক তখন আমাকে বাংলাদেশ থেকে সোজা নিয়ে ফেলেছেন ষাট সত্তুরের দশকের হিপ্পিদের আমেরিকায়, সুনীল গাঙ্গুলির অর্ধেক জীবন বইটিতে পড়েছিলাম অ্যাালেন গিন্সবার্গের সাথে তার বন্ধুত্বের কথা, কলকাতা আর আমেরিকায় তাদের একসাথে কাটান কিছু সময়ের কথা, জেনেছিলাম সেই সময়ের আমেরিকা সম্পর্কিত কিছু বিষয়, সেই আমেরিকান সময়টাই ঠিক যেন আরও প্রবলতার সাথে আরও বেশি জীবিত হয়ে ধরা দিল আমার মানস পটে। জামশেদ আর মেলেনির অপুর্ব প্রেমের সুবাস নিতে নিতে রোদেলার সাথে সাথে আমিও মিশে গেলাম জামশেদ নামের দারবিশের পবিত্রতায়। ভালবাসা আর ভালবাসার সম্পর্ক নিয়ে এক নতুন জীবন বোধের স্বাদ পেল মন। জটিল জীবনের দুর্বোধ্য অঙ্ক কে, যে সাবলীল ভাষায় সরলীকরণ করেছেন লেখক তা এক কথায় অনবদ্য। আটপৌরে তুমি আমির প্রেমের গল্প না হয়েও পুরো উপন্যাসটাতেই এক অদ্ভুত মায়া আর প্রেম মাখান রয়েছে । জ্যামি আর মেলেনির সাথে পুরো সময়টাই ঘুরেছি যেন নিশ্বাস নেয়া দূরত্বে। জ্যামির আর মেলেনির প্রেম স্পষ্ট ভাবে যেন অনুভূত হয়েছে আমার হৃদয়েও। অন্যদিকে রোদেলার সাথে সাথে আমার মনেও নাড়া দিয়েছে দারবিশের ব্যাক্তিত্ব। রোদেলা আর দারবিশের এক সাথে কাটান সময় বিশেষ করে গলফ্‌ কোর্সের সবুজ ঘাসের উপরে হাঁটার রোমাঞ্চকর মুহুর্ত গুলো মন ছুঁয়ে গেছে। আর সত্যি বলতে কি এই উপন্যাস পড়ে আমার মনে হয়েছে ভালবাসার মানেই আমার এতদিন জানা ছিল না, যেটা এখন জেনেছি। এই উপন্যাস যেন আমার জীবন বোধকে এক নতুন ভাষায় সংজ্ঞায়িত করল। এমন সুন্দর একটি উপহারের জন্য লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ।

      By Admin Hossain Badhon

      10 Feb 2017 12:51 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      প্রিয়, লতিফুল ইসলাম শিবলী ভাইয়ের লিখা এই 'দারবিশ' উপন্যাস - রূপ-রূপালী,মেধা-বুদ্ধি, ভালোবাসা-মমতার এক অসাধারন সংমিশ্রনে লিখা। প্রিয় গীতিকবির এই 'দারবিশ' ভাললাগার মাঝে ছুয়ে যায় আমার হৃদয়কে এবং উপন্যাসের গভীরতার গভীর থেকে গভীরে নিয়েছিল আমাকে। সবমিলিয়ে একটা কথাই বলতে পারি, ‘দারবিশ' একটি সত্যিকারের মাস্টারপিস। লেখকের লেখকজীবনের সেরা লেখা তো বটেই, ভবিষ্যতেও তার যোগ্যতার মাপকাঠি হয়ে থাকবে দারবিশ উপন্যাস। এবং Latiful Islam Shibli ভাইকে আমি মুলত গান লিখার জাদুকর হিসেবে চিনি খুব কাছ থেকে। প্রিয় জেমস ও আইয়ুব বাচ্চু ভাইও গেয়েছেন শিবলী ভাইয়ের লিখা অনেক গান, তার মধ্যে আমার পছন্দের উল্লেখযোগ্য কিছু গানঃ 'জেল থেকে বলছি,নাটোর ষ্টেশন,মান্নান মিয়ার তিতাস মলম,কতটা কাঙ্গাল আমি,জোসি প্রেম,নীল আকাশ,পেশাদার খুনি,প্রানের শহর,জঙ্গলে ভালোবাসা,পলাশীর প্রান্তর,প্রিয় আকাশী,আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি, কেউ সুখি নয়, হাসতে দেখো গাইতে দেখো,তুমি আমার প্রথম সকাল' শিবলী ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত আমি। -আদমীন হোসেন বাঁধন বিবিএ, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ

      By Duke John

      10 Feb 2017 12:26 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অনেক বইয়ের শুরুতেই ডিসক্লেইমার দেয়া থাকে: এই বইয়ের প্রতিটি ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক। জীবিত বা মৃত ব্যক্তি বা বাস্তব ঘটনার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। দারবিশ-এর ফ্ল্যাপে লেখক জানিয়ে দিচ্ছেন: এই উপন্যাসের স্থান সত্য, কাল সত্য, ইতিহাস সত্য, কাল্পনিক শুধু এর চরিত্রগুলো। ইণ্টারেস্টিং, তা-ই না? আসলেই তা-ই। সেক্স, ড্রাগস আর রক এন রোল। উনিশ শ’ ষাট, সত্তুর আর আশির দশকের হতাশাগ্রস্ত আমেরিকান তারুণ্যের নিষিদ্ধ আশ্রয় ছিল এই তিনটি জিনিস। ভিয়েতনাম যুদ্ধ আর কোল্ড ওঅরে অস্থির, টালমাটাল তখন আমেরিকা। অভিমানী এক তরুণ ডাক্তারি পড়তে ঢাকা থেকে পাড়ি জমাল মার্কিন মুলুকে। অ্যাণ্টি-কালচার বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী সান ফ্রান্সিসকোতে যুদ্ধবিরোধী শান্তি আন্দোলনে শরিক হয়ে যুবকটি আবিষ্কার করে পুঁজিবাদের গভীর সঙ্কট আর বীভৎস রক্তাক্ত ক্ষতগুলো। দুই আদর্শবাদের ধারক দুই পরাশক্তির লড়াইয়ের ভিতর দিয়ে বেরিয়ে আসা অন্ধকার রাজনীতি বিশ্ব-নাগরিকে পরিণত করে তরুণটিকে। এরকম একটা সময়ে ছেলেটির জীবনে প্রেম হয়ে আসে মেলিনি নামের প্রখর রাজনীতি-সচেতন দেশপ্রেমিক এক মার্কিন নারী, যাকে রাশান স্পাই মনে করে হন্যে হয়ে খুঁজছে এফবিআই। শুরু হয় তাদের ফেরারি জীবন। প্রেমিকাকে নিয়ে টেক্সাস থেকে চোরাই পথে মেক্সিকো ঢোকার সময় চরম বিপর্যয় নেমে আসে ওদের জীবনে... সত্তুর বছর বয়সে আবার ঢাকায় ফেরে সেই তরুণ। পরিচয় হয় এক তরুণীর সঙ্গে। সমস্যার শুরু তখনই... সংক্ষেপে এই হলো দারবিশ-এর কাহিনি-বিন্যাস। ভাবছেন, স্পয়লার দিয়ে দিয়েছি? মোটেই না। গতিময় এ উপন্যাসটির পরতে-পরতে গায়ে কাঁটা দেয়া রোমাঞ্চ, যার শুরুটা একদম প্রথম লাইন থেকেই। আর প্রথম পরিচ্ছেদ থেকেই শুরু হয়েছে একের পর এক ধাক্কা। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া উপমা উপন্যাসটির অবশ্য-উল্লেখ্য আরেকটি বৈশিষ্ট্য। ‘কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্যাফেটা পরিণত হয়ে গেল আন্দালুসিয়ান উপত্যকার কোনও সরাইখানায়’-এর মতো মুগ্ধতা-জাগানিয়া অজস্র লাইনের ছড়াছড়ি গোটা উপন্যাস জুড়ে। পড়তে-পড়তে অনিবার্য এক প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে হয়তো আপনাকে: স্বয়ং লেখকই দারবিশ কি না। আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি। লতিফুল ইসলাম শিবলীকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। মাঝে-মাঝেই ভাবি আমি, বাংলাদেশ কি জানে, সে কোন্ কিংবদন্তিকে বুকে ধারণ করে আছে? এই মানুষটিকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা নিশ্চয়ই কথাটা মানবেন।

      By Farid Farabi

      05 Feb 2017 09:20 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      বইমেলা থেকে ফিরে রাতে ঘুমানোর আগে অভ্যাসবশত প্রথমদিনের সংগ্রহের বইগুলো দেখছিলাম। ইদানিং নানা ব্যস্ততার ফাকে বইপড়ার চাইতে মুভি দেখেই বেশি সময় কাটে। তবু প্রিয় গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী’র প্রথম উপন্যাস ‘দারবিশ’ হাতে নিয়ে ভাবলাম ঘুমানোর আগে কিছুটা চেখে দেখা যাক! কিন্তু চেখে দেখে আর রাখা হয় নাই। পুরো উপন্যাস শেষ করে যখন রাখলাম তখন মোটামুটি ভোর হয়ে এসেছে। বহুবছর পর এমন মোহগ্রস্থ হয়ে কোন বই পড়লাম। কবি’র ‘প্যারিসের চিঠি’ কবিতার মতই ঘোর লাগানীয়া তাঁর প্রথম উপন্যাস। নালন্দার প্রকাশক জুয়েল ভাই যেমন বলছিলেন সব কবিদের পক্ষে উপন্যাস লিখে ফেলাটা এতো সহজ না। তবে লতিফুল ইসলাম শিবলীর মত এতো সব্যসাচী তো সবাই হতে পারেনা। তিনি যেখানে হাত দেন সেখানেই সোনা ফলে। পাঠকরা যারা লেখক সম্পর্কে জানেননা বইটি পড়া শুরু করার আগে পেছনের ফ্ল্যাপে লেখক পরিচিতিটা একটু পড়ে নিতে হবে। লতিফুল ইসলাম শিবিলী এই সময়ের এক জীবন্ত কিংবদন্তী। তবু পর্দার আড়ালে থাকতেই তিনি বেশি ভালোবাসেন। ৯০’এর দশকে জড়িত ছিলেন নাটক, গান, মডেলিং এমনকি রাজপথের আন্দোলনে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কর্মী ছিলেন তিনি। তবে এসব ছাপিয়ে তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন গীতিকবি। ৯০’ দশকের ব্যান্ড সঙ্গীতের বিপ্লবের পেছনের অন্যতম কারিগর তিনি। এককথায় জেমস, আইয়ুব বাচ্চু, সোলস থেকে শুরু করে সেসময়ের বেশিরভাগ বিখ্যাত ব্যান্ডের জনপ্রিয় গানের গীতিকার তিনি। যেমন ‘জেল থেকে বলছি’ ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’ কিংবা ‘তুমি আমার প্রথম সকাল’। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি স্বভাবজাত বোহেমিয়ান। প্রিয় বিষয় পলিটিক্স, হিস্ট্রি, পেইন্টিংসকে আরো জানতে ঘুরে বেড়িয়েছেন ইউরোপের পথে প্রান্তরে। সজল নামে লেখকের এক ভক্ত ফেইসবুকে লিখেছেন 'দারবিশ' হাতে নিয়ে নতুন বইয়ের চাইতে সেই নব্বইয়ে প্লাস্টিক মোড়কে আবৃত একদম আনকোরা নতুন ক্যাসেটের কাভারের যেই গন্ধ তিনি বেশি পেয়েছেন। আমিও অনেকটা সেরকমই নস্টালজিক আর জাদুকরী সময়টাকে খুঁজে পেয়েছি বইটা হাতে নিয়ে। সত্তর আশি দশকের অভিমানী এক তরুনের ঢাকার শান শওকত রেখে ডাক্তারী পড়তে আমেরিকায় চলে যাওয়া। যুদ্ধে উম্মাতাল অস্থির আমেরিকায় এক সময় পড়ালেখা ছেড়ে সে সহপাঠীদের সাথে ভিয়েতনাম বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পরে। জাতীয়তা ভুলে একসময় নিজেকে আবিস্কার করে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে। সমমনা এক আমেরিকান তরুনীর সাথে তাঁর প্রেম এবং নানা ঘটনা পরিক্রমায় ৭০ বছর বয়সে তাঁর ঢাকা ফিরে আসা। এসব নিয়েই দারবিশের গল্প। ‘দারবিশ’এর সব চেয়ে বড় বিষয় চিন্তালোকে ভিজ্যুয়ালাইজেশন। পড়তে পড়তেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই সত্তর আশির দশকের ঢাকা। যে শহরকে লেখক দেখিয়েছেন ‘সিটি অব মিউজিক’ হিসেবে যেখানে রিকশার টুংটাং পিয়ানোর সাথে মুয়াজ্জিনের কন্ঠের আজান মিলেমিশে তৈরি হতো অদ্ভুত কম্পোজিশন। কালের বিবর্তনে এই শহরের বদলে যাওয়া, প্রেম, বিচ্ছেদ বেদনা, অভিমানের গল্প উঠে এসেছে সেখানে। সেই ঢাকা থেকেই তিনি পাঠককে আবার নিয়ে গ্যাছেন ৬০ মিলিয়ন হিপ্পিদের ঘুরে বেড়ানো সেই ভিয়েতনাম যুদ্ধকালীন অস্থির ‘সেক্স ড্রাগস এন্ড রক এন রোল’ সংস্কৃতির আমেরিকায়। পাঠককে সম্পৃক্ত করেছেন বিপ্লবের সাথে, বিভিন্ন মাফিয়া গ্যাংয়ের সাথে, হিপ্পিদের সাথে। পড়তে পড়তে চোখের সামনে ভেসে উঠছিলো মেক্সিকো সীমান্তবর্তী কলোরাডোর পাইন রেডউড আর ম্যাপেল গাছের আকাশ ছুতে যাওয়া রহস্যময় অপার্থিব আলোর জঙ্গলের ভেতর দিয়ে একদল হিপ্পির ঘুরে বেড়ানো। নিজেকেও যেন মনে হচ্ছিলো সেই প্রথাবিরোধী বিপ্লবী হিপ্পিদের দলের একজন বলে। এটাই মুলত লেখকের স্বার্থকতা। পাঠককে লেখার গভীরে নিয়ে নিজের মত দেখতে অভ্যস্ত করা। লেখক শিবলী সেই কাজটা করেছেন অত্যন্ত সূচারুভাবে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বর্বরতা, যুবকদের আমেরিকা ছেড়ে পালানো, মাদক চোরাকারবারী লস জিতাসের মত বিভিন্ন মাফিয়ার কথা, ডালাসের ক্যাসিনো ব্যবসাসহ তৎকালীন আমেরিকার আরো নানা বিষয় উঠে এসেছে নানা প্রসঙ্গে। গল্পের অন্যান্য চরিত্রগুলো যেমন রোদেলা, সঞ্জু, টুটুলের সাথেও পাঠকের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন অদ্ভুতভাবে। রোদেলা যেমন শিল্পমনা তাঁর প্রেমিক সঞ্জু তেমনই একগুয়ে যে শিল্প সংস্কৃতির ধার ধারেনা। টুটুলের চরিত্রটা কিছুটা রহস্যাবৃতই করে রেখেছেন লেখক। যন্ত্রণাদায়ক সুন্দর জীবনের যন্ত্রণা আর সুন্দরের আলাদা করার মাঝেই জীবনের উপভোগের মূলমন্ত্র। উপন্যাসের মূল চরিত্র জামশেদের ‘ইউ হ্যাভ ফেইথ অন মি’ ডায়লগের মধ্য দিয়ে আধ্যাত্মিকতার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে নানা পর্বে। লেখকের প্রথম উপন্যাস বলেই হয়তো একটু তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে গল্প। আশা করি নানা পরিচয়ের মাঝে তাঁর কথাসাহিত্যিক পরিচয়টিও স্থায়িত্ব লাভ করবে। ফরিদ ফারাবী ০৫০২২০১৭

      By Md. Shahadat Hossain

      03 Feb 2017 07:12 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      লতিফুল ইসলাম শিবলী, ৯০দশকের লিজেন্ড গীতিকবিকে এবার পাওয়া গেল কথা সাহিত্যে। এই ফেব্রুয়ারির বই মেলার প্রথম দিন থেকেই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান নালন্দা‘র স্টল নং ৩৭৩-৩৭৬এ মিলবে গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী’র প্রথম উপন্যাস – ‘দারবিশ’। যদিও তার লেখা কয়েকটি গানের শিরোনাম পড়লেই তাকে কেউ কেউ চিনে ফেলতে পারে, জেল থেকে বলছি, তুমি আমার প্রথম সকাল, আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি, কেউ সুখি নয়, হাসতে দেখো গাইতে দেখো, হাজার বর্ষারাত, পলাশীর প্রান্তর, প্রিয় আকাশী...৯০ দশক জুড়ে লিখেছেন এমন তিন চারশো গান। পুরো একটা জেনারেশনের দৈনন্দিন দুঃখ সুখের ডাইরি হয়ে আছে শিবলীর গান । আধুনিক তারুণ্যের ভাষাকে তিনি তার গীতিকবিতায় এঁকেছেন অত্যন্ত সহজসরল 'রক' এর ভাষায়। তাই অল্প সময়ের মধ্যেই শিবলী পরিণত হয়েছেন এদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের কিংবদন্তি গীতিকবিতে। তিন দশকের চমৎকার প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছে এই উপন্যাস। সেক্স ড্রাগস এন্ড রক এন রোল – এই তিনটি নিষিদ্ধ শব্দ ছিলো ষাট সত্তর আর আশি দশকের হতাশাগ্রস্থ আমেরিকান তারুণ্যের আশ্রয়। যখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ আর শীতল যুদ্ধে অস্থির টালমাটাল আমেরিকা। সেই সময়ে অভিমানী এক তরুণ ঢাকা থেকে চলে গিয়েছিলো আমেরিকার সান-ফ্রান্সিসকোতে ডাক্তারি পড়তে। এটা সেই সান-ফ্রান্সিসকো যাকে বলা হত ‘এন্টি কালচার’ বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। সহপাঠীদের সাথে ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী শান্তি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে করতেই তার চোখে পড়ছিল পুজিবাদের গভীর সংকট আর বীভৎস রক্তাত্ত ক্ষত গুলো। দুই আদর্শবাদের ধারক দুই পরাশক্তির লড়াইয়ের ভেতর দিয়ে বের হয়ে আসা অন্ধকার রাজনীতি সেই তরুণকে পরিণত করেছিল বিশ্বনাগরিক। ৬০মিলিয়ন লম্বা চুলের হিপ্পি যখন আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে, যখন আমেরিকার ঘরে যুদ্ধ বাহিরে যুদ্ধ, ঠিক তখন ছেলেটির জীবনে প্রেম হয়ে আসে মেলিনি নামের প্রখর রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমিক এক আমেরিকান নারী। যাকে রাশিয়ান স্পাই মনে করে হন্যে হয়ে খুঁজছে এফবিআই। এরপর শুরু হল তাদের পলাতক জীবন। মেলিনি কে নিয়ে টেক্সাস থেকে চোরাই পথে মেক্সিকো ঢোকার সময় ছেলেটির জীবনে ঘটে এক চরম বিপর্যয়...... প্রায় ৭০ বছর বয়স নিয়ে সেই তরুণ আবার ঢাকায় ফেরে, তার ফেলে যাওয়া সেই রোমান্টিক ঢাকা যাকে সে নাম দিয়েছিলো ‘সিটি অব মিউজিক’।পরিচয় হয় এক তরুণীর সাথে, যে তরুণীর মননশীলতা তৈরি হয়েছিল সেই সময়ের এলভিস প্রেসলী, বিটলস, বব ডিলা্ন, জিমি হ্যান্ড্রিক্স, জিম মরিস্ন, লেড জেপলিন, পিঙ্ক ফ্লয়েড, ইউ-টু আর নির্ভানা শুনে শুনে।মেয়েটি অদ্ভুত ভাবে লোকটির ৩০ বছর বয়সের সেই লম্বা চুলের হিপ্পির প্রেমে পরে যায়। সমস্যাটা শুরু হয় তখনই...... শিবলীর মতে এই উপন্যাসের স্থান সত্য, কাল সত্য, ইতিহাস সত্য, কাল্পনিক শুধু এর চরিত্রগুলো। ভিন্ন স্বাদের এই উপন্যাস টি আমার দারুন লেগেছে, লেখক আর তার বইটির জন্য শুভকামনা।

      By Md Idris Ali

      03 May 2023 11:42 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      দারবিশ থেকে-"ভালবাসা মানে কোনো নারীকে সম্পুর্ণ নিজের করে পাওয়া,তাই অধিকাংশ সফল প্রেমিক প্রেমিকার জানে না যে তারা আসলে ব্যার্থ।" এভাবে এই গল্পের নায়ক সম্পুর্ণরূপে ভালবাসতে গিয়ে প্রেমিক জীবনেই সন্তানের বাবা হয়। আবার তার প্রেমিকা মেলিনি উলঙ্গ হয়ে সাতার কাটে সবার সামনে। এভাবে অবাধ যৌনতাকে পবিত্র ভালবাসা হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে এখানে। তাই একটু যাচাই করে বইটি কিনুন।

      By Tanjima

      27 Apr 2017 10:57 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      অসাধারণ একটি বই, ভিয়েতনামের সাথে আমেরিকার যুদ্ধের সমসাময়িক চিত্র খুব সুন্দর ভাবে দুইজন ভিনদেশি মানুষের আবেগ দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে, লেখক এর দেয়া উপমা গুলিও সুন্দর যেমন city of music :)

      By কাজী তানিয়া

      21 Mar 2017 10:55 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এক অভিমানী তরুন ঢাকা থেকে চলে গিয়েছিলো আমেরিকার সানফ্রানসিসকোতে।উদ্দেশ্য ডাক্তার হওয়া।এটা সেই সানফ্রানসিসকো যাকে বলা হত 'এন্টি কালচার' বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। সেই সময়ে ভিয়েতনামের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে আমেরিকা ছিলো পুরোই উত্তপ্ত।লম্বাচুলের হিপ্পিরা তখন আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন নিয়ে।সেই আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেই বাংলাদেশি তরুনও সেই অংশগ্রহণ করে।সেই সময়ে সে নিজেকে একজন বিশ্বনাগরিক ভাবতে শুরু করে। এমনি এক সময়ে যখন আমেরিকার ঘরে যুদ্ধ,বাইরে যুদ্ধ ঠিক তখনি ছেলেটি এমন এক মেয়ের সাথে দেখা হয়,যাকে রাশিয়ান স্পাই মনে করে হন্য হয়ে খুঁজছে এফবিআই।মেয়েটির মতাদর্শ মুগ্ধ করে ছেলেটিকে।বারবার প্রেমে পড়ে যায় মেলেনি নামক এই যুদ্ধবিরোধী,প্রখর রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমিক মেয়েটির। সময়ের প্রয়োজনে পলাতক হয় তারা,,,, শেষ পর্যন্ত কি তারা জয়ী হতে পেরেছিলো? #ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়াঃব্যক্তি,আদর্শ,নীতিবোধ এইসব কিছুর উর্ধেই ভালোবাসার অবস্থান।দারবিশ শুধু আমাকে মুগ্ধ ই করেনি জীবন টা কে বুঝতে শিখিয়েছে।গল্পের এক পর্যায়ে লেখক ঢাকা city of music বলে আখ্যায়িত করেছেন।এবং এর কারন হিসেবে যে ব্যাখ্যা টা দিয়েছেন তা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।নতুন করে ঢাকা শহর কে আবিষ্কার করেছি।আশা করি আমার মত সবার ই ভালো লাগবে।

    • Was this review helpful to you?

      or

      বইটা মনোযোগ দিয়েই পড়লাম । ভাল লেগেছে।খুঁটিনাটি দিকগুলোও ভাল ভাবে কভার করা হয়েছে, শুধু দুটো পয়েন্ট - ১। একটা সংশোধন , ৪৩ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় স্তবকে বলা হয়েছে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব, ওটা সম্ভবত আর্মি গলফ ক্লাব হবে, আগে তাই উল্লেখ করা হয়েছিল। ২। একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি, ৮৯ ও ৯০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ব্রাশ ফায়ার, আসলে ব্রাশ ফায়ার বলতে কিছু নেই। যে কোন অটোমেটিক অস্ত্র থেকে দু রকমের ফায়ার হয়, একটা হলো শর্ট বার্স্ট আর আরেকটা লং বার্স্ট । এক্ষেত্রে সম্ভবত লং বার্স্ট ফায়ার'কেই বোঝানো হয়েছে। ধন্যবাদ।

      By Raju Norul

      05 May 2017 08:41 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      ‘লতিফুল ইসলাম শিবলী’ নামটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। বইটা আমি কিনেছি ‘দারবিশ’ নামটা দেখে আর পরিচিত বেশ কয়েকজনের কেনা বইয়ের তালিকায় বইটার উপস্থিতি দেখে, যাদেরকে আমি খুবই উচ্চ মানের পাঠক হিসাবে গণ্য করি! যারা ষাট এর দশকে বড় হয়েছে, তারা স্বয়ং এমেরিকায় ভিয়েতনামবিরোধী যুদ্ধের বিরুদ্ধে ৬০ মিলিয়ন তরুনের দেশব্যাপি অহিংস বিপ্লব দেখেছে, যেখানে হিপ্পিরা জটাধারী চুল আর এ্যান্টিকালচারের (অবাধ সেক্স, ড্রাগস, রক এন রোল) শ্লোগান দিয়ে দেশব্যাপি ঘুরে বেড়িয়েছে। ভারত দেখেছে একদল স্বপ্নবান যুবকের বিপ্লব প্রতিষ্ঠার ‘ব্যর্থ’ চেষ্টা, শেষে শুধু নকশাল হবার অপরাধে অঘোরে প্রাণ দিতে হয়েছে অজস্র মেধাবী যুবককে! ৭০ এর দশকে বেড়ে উঠা যুবকেরা এই কারণে নিজেদেরকে সৌভাগ্যবান মনে করে যে, তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দেখেছে, একটা দেশের জন্ম দেখেছে আর দেখেছে রাজনীতির উত্থান-পতন। আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছি, আমাদের গর্বের জায়গা দুটো, গণতন্ত্রের উত্থান আর ব্যান্ড সংগীতের বিপ্লব! যদিও তার বহু আগে ব্যান্ড সংগীত দুনিয়াব্যাপি তরুনদের হৃদয় দখল করে নিয়েছে। আমাদের এখানে এসেছে বেশ পরে... দিন নেই, রাত নেই আমরা আইয়ুব বাচ্চু, জেমস, হাসান, আজম খান শুনি! তার সঙ্গে একটু সিনিয়র হয়ে যাওয়া সোলস, রেঁনেসা শুনি। বিশ্বাস হয় কীনা জানি না, বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীত শুনেও আমাদের রক্ত টগবগ করতো! আমরা সকাল-বিকাল ‘সুস্মিতার সবুজ ওড়না’র প্রেমে পড়তাম, আর ‘কষ্ট পেতে ভালবাসতাম’! যেসব গীতিকার এসব অসাধারণ সব গান আমাদের সামনে হাজির করতেন, তাদের একজন লতিফুল ইসলাম শিবলী! মনে আছে তার লেখা ‘জেল থেকে বলছি’, ‘তুমি আমার প্রথম সকাল’, ‘হাজার বর্ষারাত’ অথবা ‘আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি’র কথা? বইয়ের ফ্ল্যাপে যখন এসব তথ্য দেখলাম, আমি খানিকটা নড়েচড়ে বসলাম! নিজের অজ্ঞতার জন্যে হাসি পাচ্ছিল খুব! সেই প্রিয় গীতিকারের উপন্যাস হাতে আসলে আরও একবার রক্ত টগবগ করে উঠবে- সে তো অবশ্যম্ভাবী! যাই হোক, ‘দারবিশ’ উপন্যাস প্রসঙ্গে আসি... সেক্স, ড্রাগস এন্ড রক এন রোল– এই তিনটি নিষিদ্ধ শব্দ ছিলো ষাট, সত্তর আর আশি দশকের হতাশাগ্রস্থ আমেরিকান তারুণ্যের আশ্রয়। যখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ আর শীতল যুদ্ধে অস্থির টালমাটাল আমেরিকা, সেই সময়ে অভিমানী এক তরুণ ঢাকা থেকে চলে গিয়েছিলো আমেরিকার সান-ফ্রান্সিসকোতে ডাক্তারি পড়তে। এটা সেই সান-ফ্রান্সিসকো যাকে বলা হত ‘এন্টি কালচার’ বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। জামশেদ নামের বাংলাদেশী সেই তরুনও হিপ্পিদের দলে ভিড়ে যায়, যার চোখে কোন স্বপ্ন নেই, অথচ বুকে আফরোজা নামের এক নারীর ভালবাসা। ভিয়েতনাম বিরোধী শান্তি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে করতেই তার চোখে পড়ছিল পুঁজিবাদের গভীর অসঙ্গতি! সেই আন্দোলনেই পরিচয় হয় প্রখর বুদ্ধিমতি আর রাজনীতি সচেতন মেলিনি নামের এক তরুনীর সাথে! তারপর প্রেম এবং রাশিয়ার চর উপাধি পাওয়ার ‘অপরাধে’ পালিয়ে বেড়ানো। চোরাই পথে মেক্সিকো পালানোর সময় জামশেদ ধরা পড়ে যায়, মেলিনি পালাতে পারে বটে তবে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় না। সাত বছর জেল খেটে ফিরে আসে জামশেদ! কিন্তু তার হৃদয়জুড়ে শুধুই মেলিনি। টেক্সাসের পথে পথে, মেক্সিকোর সীমান্তে খুঁজে বেড়ায় মেলিনিকে! কিন্তু সেই স্থির, স্বচ্ছ নদীর জলও ফিরিয়ে দেয় জামশেদকে... এই সাত বছর জুয়া খেলে কাটায় জামশেদ আর রোজগার করে প্রচুর টাকা! এই গল্প জামশেদ তারই সেক্রেটারি, রোদেলা নামের এক তরুনীকে বলতে থাকে, যার সন্জু নামের একটা বয়ফ্রেন্ড আছে এবং যাকে জামশেদ তার অপূর্ণ স্বপ্নের পূর্ণতার কারিগর বলে মনে করে! ওদিকে রোদেলার সাথে জামশেদের সম্পর্কটা আসলে কী - এই ভেবেই সন্জু তার জীবনটা প্রায় শেষ করে দিতে যাচ্ছে! বইটা পড়তে গিয়ে শিবলী’র সাথে আমিও যেন টেক্সাসের পথে পথে হাঁটছি, মনে হয় সান ফ্র্যান্সিসকোর হিপ্পিদের আমিও একজন, বারিধারার পুরনো একটা বাড়ির আমিও সদস্য। একেবারে তরতাজা গল্প। বাংলাদেশের অংশটুকু সিনেমাটিক মনে হয়, বাকিটা নতুন! সারা বই জুড়ে লেখক ভালবাসার গল্প বলেছেন। বলেছেন, ভালবাসলে গোটাটা বাসতে। হৃদয়ের দখল নেয়া রাজ্য দখলেরও চেয়েও কঠিন! বলেছেন, ভাল থাকতে হলে ক্ষমা করে দিতে হবে আর ভুলে যেতে হবে, তা না হলে বেঁচে থাকাটাই নরকতূল্য হয়ে যায়। লেখক নিজে একজন গীতিকবি বলেই সম্ভবত: গোটা বইয়ে কাব্যের একটা সংশ্লেষ পাওয়া যায়! স্বত:স্ফুর্ত গল্প বলার ঢং, টানটান উত্তেজনা...দারুণ লাগে! নালন্দা থেকে বের হওয়া, ১১০ পৃষ্ঠার বইটার দাম ৩০০ টাকা। দামটা একটু বেশিই! তবে বইটা পড়ার পর সেটা আর মনে থাকে না। পড়ে দেখতে পারেন!

      By jami jahan

      13 Jun 2017 01:04 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      #রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-দারবিশ লেখক-লতিফুল ইসলাম শিবলী ধরন-উপন্যাস পৃষ্ঠা-১১০ মূল্য-৩০০ প্রকাশনী-নালন্দা লতিফুল ইসলাম শিবলী বাংলাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও সংঙ্গীত শিল্পী। বাংলাদেশে ৯০ দশকে ব্যান্ড গানের ক্ষেত্রে অন্যতম গীতিকবি হিসেবেও পরিচিত তিনি।একেবারে প্রথমে এতোটুকু পরিচয়ই ছিলো আমার কাছে। এরপর জেনেছি তিনি নাটকও লিখেছেন। গীতিকার পরিচয়ের বাইরে তিনি কবি, গায়ক, লেখক এবং অভিনেতাও। নাটক লেখার পাশাপাশি লিখেছেন চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য । আবার নিজের লেখা নাটকেও তিনি অভিনয় করেছেন। তার লেখা জেমসের কন্ঠে "আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি" এই গানটা এখনো মোস্ট ফেবারিটের একটা। যাই হোক, দারবিশ দিয়ে আমি তার লেখক পরিচয়ও পেলাম। দারবিশ-কে আমি প্রেমের উপন্যাস ক্যাটাগরিতেই মনোনীত করতে পারি। তার কারন, গল্পটা ভালবাসার। পুরো বইয়ে তিনি ভালবাসার গল্প বলেছেন। ভালোবাসাকে পুষতে হয়, অন্যায় করলে ক্ষমার চোখে দেখতে হয়। ভালোর সাথে মন্দের দখলদারি নিয়ে পুরোটাকেই ভালোবাসতে হয়। আার ভালোবাসাকে জীবন দিতে হয় শ্বাস দিয়ে দিয়ে। না হলে যে, জীবনটাই বিষবাষ্প হয়ে যায়। গল্পের কথা যদি বলি, এটা তখন কার গল্প যখন আমেরিকান হতাশ তরুণদের আশ্রয় ছিলো তিনটি নিষিদ্ধ শব্দ -সেক্স, ড্রাগস, ও রক এন রোল। সময়টা পুরো ষাট, সত্তর, আশি এই তিন দশক জুড়ে। তখন কার সময়ে জামশেদ নামে এক তরুণ ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছিলো আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে, ডাক্তারি পড়ার উদ্দ্যেশে। পিছনে ফেলে যাচ্ছিলো আফরোজা নামে এক মেয়ের ভালবাসা। সে সময়ের আমেরিকা ভিয়েতনাম যুদ্ধে অস্থির। যেখানে জামশেদ পাড়ি জমিয়েছিলো সে সানফ্রান্সিসকো ছিলো তখন হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। জীবনের প্রতি উদাসীন তরুণ জামশেদ ভিড়ে এই হিপ্পিদের সাথে। স্টাডিজের পাশাপাশি ভিয়েতনামা যুদ্ধের বিরোধীতা করে শান্তির আন্দোলনে অংশ নেয় সে । আর তাতে গভীর চোখে পর্যবেক্ষণ করে অনেক কিছু। ঠিক সে সময়ে জামশেদের জীবনে ঘটে যায় আরেকটি রোমাঞ্চ কাহিনী। যুদ্ধের উত্তাল এর মাঝে তার জীবনে আসে মেলিনি নামে এক আমেরিকান নারী। সে ছিলো প্রখর রাজনীতি সচেতন একজন খাটি দেশপ্রেমিক। কিন্তু তাকে মার্ক করা হয় , একজন রাশিয়ান স্পাই হিসেব। একারনে সে সময় এফবিআই এর হাত থেকে বাঁচতে পলাতক হয়ে থাকে তারা। একটা সময় ঝুঁকি নিয়ে টেক্সাস থেকে মেক্সিকো চোরাই পথে পালাতে গিয়ে, জামশেদ জীবন থেকে হারিয়ে ফেলে অনেক গুলো বছর। ততোদিনে সে বৃদ্ধ। ফিরে আসে ফেলে যাওয়া তার "সিটি অব মিউজিক" ঢাকাতে। আর এখানে দেখা হয় রোদেলা নামের একটি মেয়ে। যার সঞ্জু নামে এক ছেলেবন্ধু আছে। তার পছন্দ, সেই এলভিস প্রসলী, বিটলস, বব ডিলান, জিমি হ্যান্ড্রিজ, জিম মরিস্ন, লেড জেপলিন, পিঙ্ক ফ্লয়েড, ইউ-টু আর নির্ভানা। এরপরই কাহিনীর মোড় ঘুরে আসে অন্য দিকে। গল্প বয়ে যায় জামশেদ, রোদেলা আর সঞ্জুকে ঘিরে। আমি বইটি হাতে নেয়ার পরেই জেনে গেলাম , আমি যা পড়ছি তার প্রতিটি অংশ সত্য। শুধু মাত্র চরিত্র গুলো লেখকের কল্পনা। সে মুহূর্তের অনুভূতি অপ্রকাশ্য! এরপরই পৃষ্ঠা উল্টাতে থাকলাম, একেবারে শেষ পৃষ্ঠা। ১১০ পৃষ্ঠার একটা পাতলা বই এর ইন্ডিং জানতে আমার এক দুপর-ই যথেষ্ট। দেখা যাক কি হয়। কিন্তু পড়ে শেষ করার পরও মোহ থেকে বেড় হতে পারিনি ঠিক অনেক গুলো ঘন্টা। মগজের একেবারে ভেতরে পৌছে গিয়ে আচ্ছন্ন করে রেখেছিলো আমাকে এই দারবিশ। আমি যে তাকে সত্যিই উপলবদ্ধি করছিলাম। এমন কি সব গুলো সময়ও! সেই সানফ্রান্সিসকো, টেক্সাস, বারিধারার পুরনো বাড়ি, সিট অব মিউজিকের ঢাকা- সব কিছু। লেখক জামশেদ চরিত্রটাকে এমন ভাবে প্রকাশ করেছেন যেখানে তার মোহে আকৃষ্ট হতেই হয়। বই যখন শেষ হতে কয়েক পাতা বাকি তখন থেকেই পাতা উল্টাতে কিপ্টামি শুরু হয়ে গিয়েছিলো আমার। তার কারন চোখের কোন থেকে দারবিশ কে সরিয়ে ফেলার ভয়। গতিময় এই উপন্যাসের মাঝে মাঝে লেখক দিয়েছে অসাধারণ রোমাঞ্চ। আমি আমার চোখে দেখি, জামশেদ মেলিনি, রোদেলা, সঞ্জু। একই সাথে আদর্শ আর যুদ্ধ, তার উপর প্রেম একই সাথে মিলে মিশে পুরো যেন মোয়া! লেখকের লেখায় বিভিন্ন উপমা যেন লেখার গতিকে আরো তরান্বিত করে। আর লেখকের স্বার্থকতা ঠিক তখনি যখন পাঠক তার লেখার সময় বা স্থানে নিজেকে ভাবতে পারে। সে সময়ের একজন মনে হয় তখন নিজেকে। আর এই অনুভূতি পাঠক মনে তিনি জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। লেখকের প্রথম উপন্যাস, সেটা যেন তিনি পাঠক কে বুঝতেই দেন নি। এক কথায় দারবিশ আমাকে মুগ্ধ করেছে আর শেষ দিকে দারবিশ যেন পাঠকের অপূর্ণতার অংশ হয়ে প্রকাশ হয়। বইয়ের প্রচ্ছদ নিয়ে বললে , প্রচ্ছদ এবং বইয়ের পৃষ্ঠা বা এর বাধাই বেশ সুন্দর। তবে দামের দিকে তাকালে এটা কিছু বেশিই মনে হয়। কিন্তু প্রচ্ছদ দেখেই কেমন জানি শান্তি শান্তি লাগে। তার উপর বই শেষ করার পর, মনের ক্লেশ পুরোটাই দূর হয়ে যাওয়ার কথা। রেটিং৪/৫ রকমারি লিংক-https://www.rokomari.com/book/127671/দারবিশ

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!