User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
২১ বছর বয়সে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনা করেন ' দিবারাত্রির কাব্য' উপন্যাসটি।বাংলা উপন্যাস তথা কথাসাহিত্যের ইতিহাসে মানিক বন্দোপাধ্যায় এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তার প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী জুড়ে মানবিক মূল্যবোধের চরম সংকটময় মূহুর্তে বাংলা কথা-সাহিত্যে যে কয়েকজন লেখকের হাতে সাহিত্যজগতে নতুন এক বৈপ্লবিক ধারা সূচিত হয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। তার রচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল মধ্যবিত্ত সমাজের কৃত্রিমতা, শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম, নিয়তিবাদ ইত্যাদি। ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ও মার্কসীয় শ্রেণীসংগ্রাম তত্ত্ব দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তার রচনায় ফুটে উঠেছে। জীবনের অতি ক্ষুদ্র পরিসরে তিনি রচনা করেন বিয়াল্লিশটি উপন্যাস ও দুই শতাধিক ছোটোগল্প। আর বিয়াল্লিশটি উপন্যাসের মধ্যে এই "দিবারাত্রির কাব্য" উপন্যাসটি একটি। "দিবারাত্রির কাব্য" এই উপন্যাসটি "জয় প্রকাশন" হতে প্রকাশিত হয়েছে।কাব্যধর্মী এই উপন্যাসটি যথাক্রমে দিনের কবিতা, রাতের কবিতা ও দিবারাত্রির কাব্য এই তিন ভাগে বিভক্ত।প্রত্যেক অংশের শুরুতে আছে কবিতা। যা সংশ্লিষ্ট অংশকে বিশ্লেষণে অনেকটাই সহজ করে দেয়। "দিবারাত্রির কাব্য" উপন্যাসের উপজীব্য প্রেম। স্বভাবতই এর ভাষা কাব্যসুসষমামন্ডিত। হেরম্ব, সুপ্রিয়া, আনন্দ, অনাথ, মালতী প্রভৃতি চরিত্রগুলোর রুগ্নতা, বিকারগ্রস্ততা ও অসুস্থতা যেন ওদের মধ্যে এক ধরনের অস্বাভাবিকতা আরোপ করেছে। "দিবারাত্রির কাব্য" উপন্যাসটিকে কখনো বিকৃত প্রেমকাহিনী বলা যাবে না। মানুষ মূলত এইরকমই - যৌনতা নিয়ে তাদের লুকোচুরি, ফাজলামোর শেষ নেই। এ গল্পের চৈতন্যপ্রবাহ যেমন চমৎকার তারচেয়ে বড় কথা নারীর অর্ন্তজ্বালা, হাহাকার, না- পাওয়ার বেদনা অতি আবশ্যকীয়ভাবে উঠে এসেছে এই উপন্যাসের পরতে পরতে।মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অসাধারণ উপন্যাসের সংস্করণ এই "দিবারাত্রির কাব্য" বইটি।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা অক্টোবর রিভিউ -৫ বাংলা উপন্যাস তথা কথাসাহিত্যের ইতিহাসে মানিক বন্দোপাধ্যায় এক অবিস্মরণীয় নাম। তাঁর উপন্যাসের ক্ষেত্রটি আরো বৈচিত্র্যময় ও ঐশ্বর্যমন্ডিত। মানিক সব সময়ই মাটির পৃথিবীতে ' জীবনের বন্যা'র চিত্রাঙ্কনে আগ্রহী। তিনি মানবচরিত্রের জটিল মনস্তাত্ত্বিক ও বহুগামিতাকে বিশ্লেষণে সচেষ্ট ছিলেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে মানিক রচনা করেন ' দিবারাত্রির কাব্য' উপন্যাসটি। কাব্যধর্মী এই উপন্যাসটি যথাক্রমে দিনের কবিতা, রাতের কবিতা ও দিবারাত্রির কাব্য এই তিন ভাগে বিভক্ত। প্রত্যেক অংশের শুরুতে আছে কবিতা। যা সংশ্লিষ্ট অংশকে বিশ্লেষণে অনেকটাই সাহায্য করে। প্রথম অংশ ' দিনের কবিতা' অংশে লেখক ইংরেজির অধ্যাপক হেরম্ব ও রূপাইকুড়ার দারোগা অশোকের স্ত্রী সুপ্রিয়ার বিক্ষিপ্ত মনের কথা বিশ্লেষণ করেছেন। বিপত্নীক হেরম্ব একদিন রূপাইকুড়ায় বিগত প্রেমিকা সুপ্রিয়ার কাছে যায়। দুজনের কথোপকথনে জানা যায়, হেরম্বের স্ত্রী উমা আত্মহত্যা করেছেন। ৫ বছর পূর্বে হেরম্ব সুপ্রিয়ার বিয়ে দেয় অশোকের সাথে। সুপ্রিয়া- অশোকের দাম্পত্য জীবনে সুখ ছিল কিনা তা স্পষ্ট না হলেও শান্তি ছিল। সুপ্রিয়ার সংসারে বাহ্যিক সৌন্দর্য আছে। এখানে হেরম্ব যে কদিন থেকেছে তার পুরো সময়টা কেটেছে স্মৃতিকথায়। স্মৃতিকথার মালায় প্রকাশিত হয়েছে নির্লিপ্ত, নিরাসক্ত হেরম্ব, সুপ্রিয়ার অন্তগূড় প্রেম ও অন্তর্বেদনা। উপন্যাসের ২য় অংশ ' রাতের কবিতা'। এখানে মালতী ও অনাথের কন্যা আনন্দকে নিয়ে হেরম্বের নতুন কবিতা শুরু। মন্দিরের ভেতরে স্থূল আবহাওয়ায়, শিথিল শিক্ষায় যুবতী হয়েছে আনন্দ। আনন্দের মাতা- পিতা হেরম্বের পূর্বপরিচিত। মালতী পরিবারের আপত্তি অগ্রাহ্য করে অনাথের সাথে গৃহত্যাগ করেছিল। কিন্তু তাদের দাম্পত্য জীবনে অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্ব প্রবল রূপ পায়। আনন্দ মন্দিরে নৃত্য করে। হেরম্ব অনাসক্ত ও বিপত্নীক পুরুষ হয়েও আনন্দকে হ্রদয়ের গভীরে আবিষ্কার করে। একসময় অসম প্রেম অর্ন্তমাধুর্যে বিকশিত হয়। 'দিবারাত্রির কাব্য' উপন্যাসের শেষাংশ। এই অংশে আনব্দ ও হেরম্বের মাঝে ঈর্ষান্বিত হয়ে উপস্থিত হয় সুপ্রিয়া, সাথে রুগ্ন স্বামী অশোকও। ঘটনার পরিক্রমায় অশোক ছাদ থেকে ফেলে দিতে চায় সুপ্রিয়াকে। সুপ্রিয়ার দ্বন্দ্ব আনন্দের সাথে। অশোক অপমান করে হেরম্বকে। কাহিনীর জটিলতায় অনাথ স্ত্রী মালতীকে ফেলে পালিয়ে যায়। মালতী চলে যায় গোঁসাইয়ের আশ্রয়ে। সবশেষে আগুন জ্বালিয়ে নৃত্য করতে করতে আত্মহত্যা করে আনন্দ। উপন্যাসের কাহিনী এই তিন অংশে বিভক্ত। প্রথম দুই অংশে বিক্ষিপ্ততা থাকলেও শেষাংশে এসে তা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। এই উপন্যাসের উপজীব্য প্রেম। স্বভাবতই এর ভাষা কাব্যসুসষমামন্ডিত। হেরম্ব, সুপ্রিয়া, আনন্দ, অনাথ, মালতী প্রভৃতি চরিত্রগুলোর রুগ্নতা, বিকারগ্রস্ততা ও অসুস্থতা যেন ওদের মধ্যে এক ধরনের অস্বাভাবিকতা আরোপ করেছে। এই উপন্যাসটিকে কখনো বিকৃত প্রেমকাহিনী বলা যাবে না। মানুষ মূলত এইরকমই - যৌনতা নিয়ে তাদের লুকোচুরি, ফাজলামোর শেষ নেই। এ গল্পের চৈতন্যপ্রবাহ যেমন চমৎকার তারচেয়ে বড় কথা নারীর অর্ন্তজ্বালা, হাহাকার, না- পাওয়ার বেদনা অতি আবশ্যকীয়ভাবে উঠে এসেছে এই উপন্যাসের পরতে পরতে। #বইয়ের_নাম: দিবারাত্রির কাব্য লেখক : মানিক বন্দোপাধ্যায়