User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Very good quality and delivery was also fast
Was this review helpful to you?
or
'' ভালোবাসা কি কেবল একটি অনুভূতি, নাকি এটি আত্মার মুক্তির পথ?'' "The Forty Rules of Love" (ভালোবাসার চল্লিশটি নিয়ম) হলো তুর্কী লেখিকা এলিফ শাফাকের, শাহেদ জামান (অনুবাদক) লেখা একটি বিখ্যাত উপন্যাস, যা ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি শুধু একটি প্রেমের গল্প নয়; বরং এটি সুফিবাদ, আধ্যাত্মিকতা, আত্ম-উপলব্ধি এবং ভালোবাসার গভীর তাৎপর্য নিয়ে লেখা একটি দার্শনিক উপাখ্যান। বইটিতে প্রধানত দুটি সমান্তরাল কাহিনি রয়েছে—একটি বর্তমান সময়ের, যেখানে এলা রুবিনস্টেইনের জীবনচক্র পরিবর্তিত হয়, এবং অন্যটি ত্রয়োদশ শতাব্দীর, যেখানে রুমি ও শামস তাবরিজের আধ্যাত্মিক বন্ধুত্ব ফুটে ওঠে। ?কাহানি সংক্ষেপ: একদিকে, এলা রুবিনস্টেইন একজন মধ্যবয়সী আমেরিকান গৃহিণী, যিনি তার বিবাহিত জীবনে একঘেয়েমি অনুভব করেন। তার স্বামী ও সন্তান থাকলেও তিনি নিজের জীবনে এক ধরনের শূন্যতা অনুভব করেন। একদিন, তিনি "Sweet Blasphemy" (মিষ্টি নাস্তিকতা) নামে একটি পান্ডুলিপি পড়তে শুরু করেন, যা ১৩শ শতাব্দীর বিখ্যাত সুফি কবি জালাল উদ্দিন রুমি এবং তার আত্মার পথপ্রদর্শক শামস তাবরিজের গল্প নিয়ে লেখা। এলা বইটি পড়তে পড়তে এক নতুন জগতে প্রবেশ করেন এবং বইটির লেখক আজিজ জাহারাকে ইমেইল পাঠান। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে কথোপকথন বাড়তে থাকে, এবং এলার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। আজিজ তাকে শেখায় যে ভালোবাসা, আত্ম-উপলব্ধি, এবং জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে পাওয়ার জন্য আমাদের অন্তরকে মুক্ত করতে হবে।এই চিঠিপত্রের মাধ্যমে এলা উপলব্ধি করেন যে তিনি তার জীবনে পরিবর্তন চান। অবশেষে, তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত নেন—তার পুরনো জীবন ছেড়ে নতুন এক জীবনের পথে পা বাড়ান। অন্যদিকে, ১৩শ শতাব্দীতে পারস্যের বিখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত জালাল উদ্দিন রুমি একজন প্রচলিত ধর্মীয় গুরু ছিলেন, যিনি বই পড়ানো ও ধর্মীয় অনুশীলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন। তার জীবন একঘেয়েমি ও গোঁড়ামিতে আবদ্ধ ছিল। কিন্তু একদিন, রহস্যময় সুফি দরবেশ শামস তাবরিজ তার জীবনে প্রবেশ করেন। শামস তাবরিজের মূল লক্ষ্য ছিল প্রকৃত ভালোবাসা ও আধ্যাত্মিকতার শক্তি সম্পর্কে রুমিকে শিক্ষা দেওয়া। তিনি রুমিকে বলেন, ঈশ্বরের ভালোবাসা কেবল বাহ্যিক উপাসনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা আত্মার গভীরে অনুভব করতে হয়। তাদের বন্ধুত্ব ও আধ্যাত্মিক যাত্রা রুমির জীবনে এক বিপ্লব ঘটায়—তিনি শুধু একজন ধর্মীয় নেতা নন, বরং একজন মহান সুফি কবিতে রূপান্তরিত হন। তবে, সমাজের রক্ষণশীল অংশ এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারেনি। শামসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়, এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিহত হন। শামসের মৃত্যুতে রুমি গভীর বেদনায় পড়ে যান, কিন্তু এই শোক থেকেই তিনি সৃষ্টি করেন তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ "মাসনাভি", যা আজও সুফিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। ?মূল ভাবনাগুলোর বিস্তারিত বিশ্লেষণ- ১. ভালোবাসার আধ্যাত্মিকতা (The Spirituality of Love) উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দু হলো "ভালোবাসা"। তবে এটি শুধুমাত্র রোমান্টিক ভালোবাসা নয়, বরং ঈশ্বরের প্রতি, নিজের প্রতি, এবং সমগ্র সৃষ্টির প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসার একটি গভীর রূপ। শামস তাবরিজের শিক্ষা অনুসারে, ভালোবাসা কেবল দুটি ব্যক্তির মধ্যকার সম্পর্ক নয়, বরং এটি আত্মার শুদ্ধি ও আত্ম-উন্নতির পথ।ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক: শামস বলেন, "যদি তুমি সত্যিকারের ভালোবাসতে চাও, তবে ঈশ্বরকে আগে ভালোবাসতে শেখো।" ২. আত্ম-উপলব্ধি ও পরিবর্তন (Self-Discovery and Transformation) এলা রুবিনস্টেইন চরিত্রের মাধ্যমে লেখিকা দেখিয়েছেন, কীভাবে একজন মানুষ তার জীবনের অর্থ ও উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে পারে। প্রথমদিকে, এলা ছিলেন একজন গৃহিণী, যিনি তার বিবাহিত জীবনে অসুখী এবং জীবনে নতুন কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অনুভব করেন।Sweet Blasphemy (শামস-রুমি সম্পর্ক নিয়ে লেখা বইটি) পড়ার পর, তিনি উপলব্ধি করেন যে, জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য ও অর্থ খুঁজে পেতে হলে আমাদের পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।আত্ম-উপলব্ধির একটি প্রধান শর্ত হলো নিজেকে চেনা ও গ্রহণ করা।শামসের শিক্ষা অনুযায়ী, যদি আমরা নিজেকে জানার চেষ্টা না করি, তবে আমরা কখনো সত্যিকারের সুখী হতে পারব না।এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই এলা তার একঘেয়ে জীবন থেকে বেরিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে জীবনকে দেখার চেষ্টা করেন। ৩. সুফিবাদ ও ইসলামের আধ্যাত্মিক দিক (Sufism and Islamic Mysticism) উপন্যাসটি সুফিবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে, যেখানে ইসলামের আধ্যাত্মিক রূপ দেখানো হয়েছে। সুফিবাদে বিশ্বাস করা হয় যে, ধর্মীয় নিয়ম-কানুনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আত্মার পরিশুদ্ধি ও আল্লাহর সাথে আত্মিক সংযোগ স্থাপন। সুফিবাদের একটি মূলনীতি: তাসাউফ বা আধ্যাত্মিক অনুশীলন: নিজেকে পবিত্র করা ও মনের ভেতরকার অহংকার ধ্বংস করা। ৪. জীবনের অর্থ ও আত্মার মুক্তি (The Meaning of Life and Liberation of the Soul) বইটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জীবনের প্রকৃত অর্থের অনুসন্ধান। রুমি প্রথমদিকে একজন সাধারণ ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন, যিনি কেবল ধর্মীয় বই পড়াতেন। কিন্তু শামসের সাথে দেখা হওয়ার পর, তিনি উপলব্ধি করেন যে, জীবনের অর্থ কেবল বই পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি অনুভব করার এবং নিজের ভেতরে খুঁজে পাওয়ার বিষয়। শামসের শিক্ষাগুলোর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, '' আমাদের উচিত বাহ্যিক নিয়মের চেয়ে আধ্যাত্মিক মুক্তির দিকে মনোযোগ দেওয়া। '' '' আত্মার মুক্তি আসে যখন আমরা অহংকার, ভয় ও দ্বিধা পরিত্যাগ করি।'' '' ভালোবাসা ও উপলব্ধিই আমাদের প্রকৃত মুক্তির পথ দেখাতে পারে।'' '' রুমি যখন তার ঐতিহ্যগত ধর্মীয় অনুশীলন থেকে সুফিবাদের গভীর প্রেম ও দর্শনের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন, তখন তিনি সত্যিকারের আধ্যাত্মিক মুক্তি খুঁজে পান। '' ৫. সংস্কৃতি, ধর্ম ও বিশ্বাসের সীমা অতিক্রম করা (Crossing Cultural and Religious Boundaries) এলিফ শাফাক উপন্যাসে দেখিয়েছেন, কিভাবে ভালোবাসা ও আধ্যাত্মিকতা মানুষের মধ্যে তৈরি করা কৃত্রিম সীমারেখা ভেঙে দেয়। '' শামস ছিলেন একজন দার্শনিক এবং বিদ্রোহী সুফি, যিনি প্রচলিত ধর্মীয় ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে গিয়ে ঈশ্বরের প্রকৃত সত্য খোঁজার পক্ষে ছিলেন।'' '' এলা একজন পশ্চিমা নারী, যিনি রুমির আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করে তার নিজের জীবন সম্পর্কে নতুন উপলব্ধি লাভ করেন।'' '' রুমি তার সমাজের প্রচলিত বিশ্বাস ভেঙে শামসের শিক্ষাকে গ্রহণ করেন, যা সমাজের রক্ষণশীল অংশের বিরোধিতার কারণ হয়। '' ? পাঠপ্রতিক্রিয়া: এলিফ শাফাকের The Forty Rules of Love কেবল একটি উপন্যাস নয়, এটি এক গভীর আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক যাত্রা, যা পাঠককে আত্ম-উপলব্ধির নতুন দিগন্তে নিয়ে যায়। গল্পটি একাধারে প্রাচীন সুফিবাদ ও আধুনিক জীবনের মধ্যে এক গভীর সংযোগ স্থাপন করে। শামস তাবরিজ ও জালাল উদ্দিন রুমির সম্পর্কের মাধ্যমে ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ ও আধ্যাত্মিকতার শক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অপরদিকে, এলা রুবিনস্টেইনের গল্প আমাদের শেখায় যে জীবনকে নতুন করে বুঝতে এবং পরিবর্তনকে গ্রহণ করতে সাহস প্রয়োজন। উপন্যাসটি বিশেষভাবে মুগ্ধ করে তার গভীর দার্শনিক চিন্তাভাবনার জন্য। শামসের চল্লিশটি নিয়ম কেবল চরিত্রদের জীবনে পরিবর্তন আনে না, বরং পাঠকের মনেও এক অন্তর্দৃষ্টি সৃষ্টি করে। তবে, কিছু পাঠকের কাছে এলার চরিত্র পরিবর্তন কিছুটা দ্রুত মনে হতে পারে, এবং অনেকে হয়তো শামসের শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রযোজ্য কিনা তা নিয়ে সংশয় অনুভব করতে পারেন। তবুও, এটি এমন একটি উপন্যাস, যা বারবার পড়ার মতো—প্রত্যেকবার নতুন এক উপলব্ধি এনে দেয়। এলিফ শাফাকের "The Forty Rules of Love" বইয়ে শামস তাবরিজের ভালোবাসার চল্লিশটি নিয়ম উল্লেখ করা হয়েছে, যা আধ্যাত্মিকতা, আত্ম-উপলব্ধি ও ঈশ্বরের প্রেমের ওপর ভিত্তি করে গঠিত। এর মধ্যে কিছু জনপ্রিয় নিয়ম নিচে দেওয়া হলো— ১. "আমরা যা কিছু ভালোবাসি, তাই হয়ে উঠি।" ২. "ভালোবাসা কোনো শর্ত মানে না। এটি সীমাহীন এবং স্বাধীন।" ৩. "তোমার হৃদয় যা ভালোবাসে, সেটিই তোমাকে তোমার গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।" ৪. "একটি সত্যের সন্ধানে বের হলে, পুরো বিশ্ব তোমার পথপ্রদর্শক হয়ে উঠবে।" ৫. "অন্যকে বিচার করো না, কারণ তুমি তাদের জীবনের গল্প জানো না।" ৬. "ধর্ম কেবলমাত্র নিয়ম-কানুন নয়; এটি ভালোবাসার গভীরতা দিয়ে মাপা হয়।" ৭. "জীবনের প্রতিটি ঘটনা একটি উদ্দেশ্য নিয়ে ঘটে।" ৮. "নিজের অহংকারকে ধ্বংস করো, তাহলেই তুমি সত্যের পথে এগিয়ে যেতে পারবে।" ৯. "এই পৃথিবী একটি আয়নার মতো—যা কিছু তুমি করো, তা তোমার কাছে ফিরে আসবে।" ১০. "ভালোবাসার শক্তি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তি।" সর্বোপরি, The Forty Rules of Love এমন একটি সাহিত্যকর্ম, যা ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ, আত্ম-উন্নয়ন, ও আধ্যাত্মিকতার পথ অনুসন্ধানে সহায়তা করে। এটি শুধু হৃদয়কে স্পর্শ করে না, বরং আত্মাকেও আলোড়িত করে, আমাদের ভাবায়— ভালোবাসা কি কেবল আকাঙ্ক্ষা, নাকি এটি এক পরম সত্যের সন্ধান বিঃ দ্রঃ - সুফিবাদ পড়তে ও জানতে যারা পছন্দ করেন এটা তাদের জন্য সুপাঠ্য, ইসলামিক দৃষ্টিতে কেউ বিচার করতে যাবেন না
Was this review helpful to you?
or
wow!!! what e book..onubad o valo, khub valo likhsen lekhika..
Was this review helpful to you?
or
”পৃথিবীতে যত বড় বড় সংঘাত, তার বেশীরভাগেরই উৎপত্তি হয়েছে ভাষাগত সমস্যা এবং সামান্য ভুল বুঝাবুঝি থেকে। কারও মুখের কথায় কখনো আস্থা রাখা উচিত নয়, যেহেতু খুব কম মানুষই কথা দিয়ে কথা রাখবার মত দৃঢ় চিত্তের অধিকারী হয়। যারা তা নয়, তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার কষ্টের ভেতর দিয়ে যাবার ক্ষমতা রাখে না। ভালবাসার বৃত্তের মাঝে যখন তুমি পা রাখবে, তখন ভাষা বলে যে বস্তুকে আমরা জানি, তা মূল্যহীন ও অদরকারী হয়ে পড়বে। যাকে কথায় প্রকাশ করা যায় না, নিরবতার মাঝ দিয়েই তাকে সবচাইতে ভালো করে বোঝা যায়। অথচ আফসোস, নিরবতার ভাষা বোঝার ক্ষমতাও সকলের থাকে না।” - ’দ্য ফরটি রুলস অব লাভ’ বই থেকে উদ্বৃত। কিছুদিন আগে ফেসবুক থেকে বিদায় নিয়ে বইয়ের প্রেমে ডুব দেবার চেষ্টা করেছিলাম, সে সময় এই বইটি পড়ে শেষ করেছি। মজার ব্যাপার হলো, যে-ই আমাকে দেখেছে এই বইটি পড়তে, নাম দেখে ভেবেছে এটা বুঝি নারী-পুরুষের প্রচলিত প্রেমের উপাখ্যান। কিন্তু সত্যিটা হল, বইটি সুফিজম নিয়ে লেখা। এর আদ্যোপান্ত সুফি দর্শন দিয়ে মোড়ানো। মুসলিম বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় এবং সবচাইতে আধ্যাত্নিক কবি মাওলানা রুমি প্রায় মাঝ বয়স পর্যন্তও কবিতা এবং সুফিবাদ মোটেও পছন্দ করতেন না, এই তথ্য হয়তো অনেকেই জানেন না। এরপরে হঠাৎ করেই একদিন নাটকীয়ভাবে তাঁর সাথে পরিচয় হয় রহস্যময় এক ভবঘুরে দরবেশ ”শামস তাবরীযি”’র সাথে। যে দরবেশ ছিলেন অতীন্দ্রিয় ও প্রচন্ড আধ্যাত্নিক সব ক্ষমতার অধিকারী। শাসসের সাথে দেখা হবার পর থেকেই রুমি আমূল বদলে যেতে শুরু করেন। যে মানুষটা কবিতা পছন্দ করতেন না, সেই মানুষটা হয়ে পড়েন পৃথিবী বিখ্যাত কবি। (৪০ বছর বয়সে পৌছেঁ প্রিয় মানুষটাকে আজীবনের জন্য হারানোর একবুক হাহাকার নিয়ে রুমি একের পর এক কবিতা লিখতে শুরু করেন, যে কবিতাগুলোই তাঁকে পরবর্তীতে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দেয়। অথচ খ্যাতিকে পুরোপুরি জলাঞ্জলি দিয়েই সে কবিতা লিখতে বসেছিলো। খ্যাতিকে সে কোনদিনও বিন্দুমাত্রও তোয়াক্কা করেননি।) যে মানুষটা সুফিবাদ মারাত্নক অপছন্দ করতেন, সেই মানুষটাই নিজেই হয়ে উঠেন সুফিবাদের মূর্ত প্রতিক। এই আমূল বদলটা ঠিক কিভাবে হয়, সেটাই এই বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য। শামসের ইউনিকনেস হল, দরবেশ বলতে আমরা যেমন সর্বসংহা, সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করা, চুপচাপ থাকা, নিরীহ-গোবেচারা সত্তাকে বুঝি, উনি তেমন ছিলেন না। তিনি বরং উল্টাটা ছিলেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে শামস বের হয়ে যান বাসা থেকে, জন্ম থেকেই তিনি আধ্যাত্নিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত পুরুষ ছিলেন। এরপরের ৪০ টা বছর ধরে পৃথিবীর পথে পথে ঘুরে সে তার নিজস্ব ৪০ টা ফিলোসফি তৈরী করেন। সেগুলোই বইয়ের পরতে পরতে ব্যাখা করা হয়েছে বিভিন্ন ঘটনাবলির ধারাবাহিকতায়। এছাড়াও অসংখ্য কোটেশন দিয়ে এটি ভর্তি, ভাবছি প্রতিদিনই কোন না কোন পছন্দের কোটেশন ওয়ালে পাবলিশ করবো। এই বইয়ের আরেকটি দিক হচ্ছে, এটি আধুনিক সময়ের একটি দম্পত্তির ঘটনাও সমান্তরাল ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যার সাথে বইয়ের তার্কিশ লেখিকা “এলিফ শাফাক” রুমি-শামসের প্রেমের যোগসূত্র দেখিয়েছেন। বইটি প্রকাশ হয়েছে ২০০৯ সালে। যদিও আমি শামস-রুমির গল্পে এতটাই আচ্ছন্ন ছিলাম যে হুটহাট যে এলা-জাহারার গল্পটা চলে আসতো, তখন খবই বিরক্ত লাগতো, মনে হয় পড়ায় যেন একটা অনাকাংখিত ছেদ পড়লো। তবু সব মিলিয়ে এতটাই ভাল লেগেছিল যে ৪০০ পাতার এই বইটি বলতে গেলে এক বসায় শেষ করে ফেলেছি, আমার কাছে মনে হচ্ছিলো আমি একটা দুর্দান্ত সিনেমা দেখছি যেন...দৃশ্যগুলো এতটাই জীবন্ত ছিল যে চোখের সামনে সব দেখতে পাচ্ছিলাম সিনেমার মত করে... কিছু কিছু জাগায় হু হু করে কেঁদেছি...কারণ মনে হচ্ছিলো কথাগুলো আর কাউকে না, আমাকে বলা হচ্ছিলো, আমার নাম সম্বোধন করে, আমার কানের কাছে ফিসফিস করে... so much customized...So much personal ছিলো সে কথাগুলো...!! ”আমি তোমাকে কামনা করি খাদ্য ও পানীয়ের চাইতেও বেশী। আমার কায়া, আমার ইন্দ্রিয়, আমার আত্না তোমার স্বাদ পেতে ক্ষুধার্ত থাকে তোমার উপস্থিতি আমি আমার আত্নার ভেতর অনুভব করি যদিও তুমি আরো অনেকের, তবু আমি অপেক্ষা করি নিভৃতে, নিরব অথচ প্রবল অনুরাগে যদি তোমার ইশারার দেখা পাই, কিংবা যদি তোমার নজরের একটুখানি পাওয়া যায়...” - রুমি। কোনিয়া।
Was this review helpful to you?
or
#আড্ডাখানায়_রকমারি #রিভিউ_২০২৩ বই : দ্য ফরটি রুলস অফ লাভ( এ নভেল অফ রুমি) লেখক: এলিফ শাফাক অনুবাদ: শাহেদ জামান প্রকাশনী : রোদেলা প্রকাশনী সমগ্র বিশ্ব জুড়ে ভালোবাসা কি শুধু মাত্র মানুষের জন্যই? সৃষ্টিকর্তার প্রতি কি আমাদের ভালোবাসা নেই? অথচ সব ভালোবাসা তো তারই প্রাপ্য তাই না? কিন্তু আমরা কি সে মাহাত্ম্যপূর্ণ ভালোবাসা দিয়েছি? সুফি সাধকরা বলেন, কোরআনের গোপন রহস্য লুকিয়ে আছে সূরা আল ফাতিহার মাঝে আর আল ফাতিহার গোপন রহস্য রয়েছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কথাটির মাঝে আর বিসমিল্লাহ'র রহস্য 'বা' অক্ষরের মাঝে। সেই অক্ষরের নিচে রয়েছে একটি ফোটা বা বিন্দু... আর সেই বিন্দুই ধারন করেছে সমগ্র মহাবিশ্বকে......! "দ্য ফরটি রুলস অফ লাভ" বইয়ের নামটি শুনে বা বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে অনেকেই ভাবতে পারে যে এইটা হয়তো কোনো রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প। কিন্তু তেমন কিছুই না, এইটা মুলত একটা আধ্যাত্মিক ভালোবাসার উপন্যাস বলা যায়। টার্কিশ লেখিকা এলিফ শাফাক এই বইটাতে এক ধরনের ম্যাজিক ঘটিয়ে দিয়েছে বলা যায় । এলিফ শাফাক তার এই বইয়ে দুই সেঞ্চুরির দুইটা কাহিনি প্যারালালি ভাবে লিখেছেন অসম্ভাব্য ভাবে । এক দিকে বিংশ শতাব্দীতে ম্যাসাচুসেটসের নর্দাম্পনে বসবাসকারী এলা রুবিনস্টাইন অন্যদিকে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে যেখানে জালাল উদ্দীন রুমি তার আধ্যাত্মিক পরামর্শদাতা ভবঘুরে দরবেশ শামস তাবরিজির দেখা পান। ⚠️ [বই সারসংক্ষেপ] ⏩ বইটি শুরু হয় এলা নামক এক মাঝ বয়সী ভদ্র মহিলাকে দিয়ে। এলা রুবিনস্টাইনের বয়স চল্লিশ, তার তিনজন ছেলে মেয়ে আছে, তার স্বামী একজন ডেন্টিস্ট, খুবই ভালোবাসাপূর্ন একজন মানুষ এবং ধনী ব্যক্তি বলা যায় । সংসার জীবনের ২০ বছর পরে হঠাৎ এলা রুবিনস্টাইন খেয়াল করলেন তার জীবনে স্বামী সন্তান সবই আছে, কিন্তু তার জীবনে ভালোবাসা নামক জিনিসটা নেই। কিন্তু যে কেউ এলাকে দেখে মনে করতে পারে যে সে খুব সুখী টাইপের একটা মানুষ। কিন্তু আসলে ভেতর থেকে তেমন কিছুই নেই! এক সময় এলা বুঝতে পারে তার দাম্পত্যজীবনে খুব একটা সুখ নেই। তাই সে একঘেয়েমী থেকে বাঁচতে এক লিটারেলি এজেন্টের অধীনে পাঠক হিসেবে কাজ নেয় । তাকে একটা বই দেওয়া হয় সেই এজেন্সি থেকে এবং এই বইটা পড়ে বইয়ের তাকে একটা উপর রিপোর্ট করতে। প্রথম যে পাণ্ডুলিপি তার হাতে এলো তার নাম "মধুর অবিশ্বাস, বইটার লেখকের নাম আজিজ জাহারা!! আর এই বইটাই হলো বিখ্যাত মাওলানা "জালাল উদ্দিন রুমির" গল্প!! এলা সম্পর্ক দিয়ে যখন "দ্য ফরটি রুলস অফ লাভ" বইটা শুরু করা হয় তখন এলার ব্যক্তিত্বভাব সম্পুর্ন স্পষ্ট ভাবে দেখানো হয় এবং দেখানো হয় এলা একজন খুবই লজিক্যাল মাইন্ডের মানুষ এবং সে সব সময় সোজাসাপটা চিন্তা করতে পছন্দ করে। [এলা পড়তে শুরু করলো...... থার্টিন সেঞ্চুরির গল্প] ⚠️ [ মধুর অবিশ্বাস ] ⏩ ভবঘুরে এক দরবেশ তাবরিজের অধিবাসী শামস, একজন বিচরণকারী দরবেশ এবং অতি সুক্ষ্ম একজন সুফি। বহু আগেই নিজের ঘর ছেড়ে দেশের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ঘুরে ঘুরে মানুষের সাথে মিশে, সৃষ্টিকর্তার প্রতি ধ্যানে মনোনীবাস হয়ে প্রেমের নিয়ম তৈরি করেছেন যা তিনি তার সহকর্মী প্রত্যেক সুফি উৎসাহীদেরকে প্রদান করে থাকেন। এক সময় তিনি তার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়ার কারণে সে তার নিজের মৃত্যুর পূর্বাভাস পেয়ে যায় কোন এক স্বপ্নে, যে কেউ একজন তাকে ছুড়িঘাত করে মেরে কুয়োর পানিতে ফেলে দিয়েছে । এর পর থেকে সে তার সমস্ত জ্ঞান তার সমতুল্য কাউকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যে কিনা তার মতো প্রাণবন্ত এবং তার জ্ঞানের প্রেমে পড়বে। শামস তাবরিজি তিনি তার জ্ঞান সমতুল্য কাউকে খুঁজে বের করার জন্য বাগদাদের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত সমস্ত পথ ভ্রমণ করেন, একটা দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরে বাগদাদের এক আশ্রম প্রধান "বাবা জামানের" উছিলায় সে তার সমস্ত জ্ঞান দিতে পারার মত তার সমতুল্য একজনকে খুজে পায়। যার অবস্থান দূর দেশ কোনিয়ায় আর সেই মানুষটাই হচ্ছে জালাল উদ্দিন রুমি! ⏩ আজকে আমরা যেই জালাল উদ্দিন রুমিকে চিনি সেই কবি রুমির কবি হয়ে উঠার পেছনে সবটুকু অবদান ছিলো এই সুফি দরবেশ সামস অব তাবরিজির। সুফি সামস তাবরিজের সাথে যখন রুমির দেখা হয় রুমি তখনও বিখ্যাত থাকে মাওলানা হিসেবে। সামস তাবরিজ যখন রুমির জীবনের সাথে যংযুক্ত হয় তখন তার মাধ্যমে রুমি কিভাবে বদলাতে শুরু করে এবং বদলাতে যাওয়ার কারনে তখন তার যেই পরিমান খ্যাতি ছিলো সেইটার উপর কি পরিমান বিস্তার ভাবে খারাপ প্রভাব ফেলে তা বই পড়লে জানতে পারবে পাঠক। আবার সামস তাবরিজি তার সমস্ত জ্ঞান রুমিকে প্রদানের সময়, তিনিও অন্যান্য লোকেদের বিশেষ করে রুমির পরিবারের কাছ থেকে ঘৃণা এবং অনেক বেশি হতাশার সম্মুখীন কিভাবে হন তাও জানতে পারবে পাঠক । সমস্ত প্রতিকূলতা এবং বিপদ সত্ত্বেও, সামস তাবরিজি রুমিকে কিভাবে আলো ও ভালবাসার পথ দেখান সেইটার সাদৃশ্যও দেখা যায়। ⏩ "এক সময় দেখা যায়"এলা" যখন রুমির ও সামস এর গল্পের বইটি পড়া শুরু করে এবং গল্পের গভীরে চলে যায় তখন আচমকাই সে এক পর্যায়ে এই বইয়ের লেখক আজিজ জাহারার ব্যাপারে জানতে খুব আগ্রহ বোধ করে এবং এক পর্যায়ে তাদের ইমেইল এর মাধ্যমে যোগাযোগ, টুকটাক কথা বার্তাও হতে থাকে! এলা তার সমস্ত কিছু ধীরে ধীরে আজিজ জাহারার সাথে শেয়ার করতে থাকে এবং এক সময় দেখা যায় এলা রীতিমতো এই লেখকের প্রেমে পড়ে যায়। ⏩ একদিকে হলো এলা রুবিনস্টাইনের টুয়েন্টি সেঞ্চুরির গল্প অন্য দিকে দুই সুফিবাদ রুমি এবং সামস তাবরিজের থার্টিন সেঞ্চুরির গল্প! মানে লেখক একটা বইয়ের ভেতর দুইটা বই ঢুকিয়ে দিয়েছে ! ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং না!! এক সাথে দুই সেঞ্চুরির দুইটা গল্প। একদিকে পাঠক দুই সুফি দরবেশ এর গল্প পড়বে আবার এই দিকে এলা রুবিনস্টাইনকেও দেখবে। এই দুইটা গল্পকে এলিফ শাফাক এতো সুন্দর করে লিখেছেন তা বলার বাহিরে অবিশ্বাস্য। ⏩ "মধুর অবিশ্বাস" বই পড়ার এক পর্যায়ে এলা বুঝতে পারে জালাল উদ্দিন রুমি ও তার জীবনের মধ্যে খুব বেশি একটা পার্থক্য নেই বললেই চলে। রুমির জীবন পরিবর্তন করতে ও তাকে অশান্তি থেকে মুক্তি দিতে যেমন সামস তাবরিজি তার জীবনে বিচরন করেছে তেমনি এলার জীবনেও তাকে মুক্তি দিতে বিচরন করেছে আজিজ জাহারা! কিন্তু এর শেষ পরিনতি কি? ⚠️[পাঠ প্রতিক্রিয়া] ⏩ "দ্য ফরটি রুলস অফ লাভ বইটি মুলত প্রেম, ধর্ম এবং সুফিবাদের ঘিরে একটি দার্শনিক ও একই সাথে আনন্দদায়ক বই বলা যায়। এই উপন্যাসটি দুটি সমান্তরাল আখ্যান নিয়ে গঠিত যা শামস তাবরিজের প্রেমের নিয়ম থেকে শুরু করে তার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব থেকে তার ভালবাসা এবং সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি অঘাত বিশ্বাস সবকিছুই ছিল মুগ্ধকর। প্রেমের এই চল্লিশটি নিয়ম ইসলামের মতই, যা শামস দাবি করে, প্রেমের ধর্ম। এই নিয়মগুলি অনুসরণ করে, তিনি পরামর্শ দেন রুমিকে এবং এবং সকল মানুষকে যেনো সবাই সৃষ্টিকর্তার কাছাকাছি আসতে পারে। রুমির সাথে সামস এর কঠিন এক মুহুর্তে দেখা হওয়া। অসাধারণ এক সঙ্গীকে পেয়ে রুমি এক সাধারণ ধর্মযাজক থেকে পরিনত হওয়া একনিষ্ঠ সাধক, বিদগ্ধ কবি এবং প্রেমিকে । ধর্মীয় বিভেধ আর সংঘর্ষে জড়িয়ে থাকা যুগে তিনি কিভাবে প্রচার করেছিলেন সারা পৃথিবীর মাঝে একাত্মতার কথা এবং কিভাবে সকল ধর্মের মানুষের জন্য খুলে দিয়েছিলেন নিজের মনের সকল দরজা তা এই বই পড়লে পাঠক জানতে পারবে। প্রেমের ৪০টি নীতি যেটা সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে ৪০টি পর্যবেক্ষণ যা রহসবাদী সুফি সামস তাবরিজির এর দ্বারা প্রস্তাবিত হয় রুমির নিকট! অন্যদিকে সমসাময়িক গল্প এলা রুবিনস্টাইনের জীবনেও এর ব্যাপক ভাবে প্রভাব পড়ে। ⏩ এই বইয়ের প্রত্যেকটা চরিত্র সেফল ন্যারেটিভ বলা চলে । বইয়ের প্রত্যেকটা ক্যারেক্টার যখন কথা বলে তখন সে নিজেই কথা বলছে এমন মনে হবে। যেই ক্যারেক্টার এর কথা পড়া হবে তখন মনে হবে ওইটা আমি নিজেই কথা বলছি বা পড়ছি। এই বইয়ের বেশ অনেক গুলো চরিত্র দেখানো হয়েছে। বইয়ে থাকা প্রত্যেকটা মেইন চরিত্র যেমন শামস, রুমির চরিত্র মুগ্ধ করবে তেমনই সাইড ক্যারেক্টার হিসেবে যেমন,একজন পতিতালয়ের মেয়ে, একজন কুষ্ঠরোগী, একজন মাতাল, একজন ধর্মান্ধ, রুমির পুত্র, স্ত্রী কেরি এবং কন্যা কিমায়া সহ আর বেশ কিছু সাইড ক্যারেক্টার এর গল্প গুলোও অনেক বেশি মুগ্ধ করবে। তাই বলবো প্রত্যেকেরই এই বইটা পড়া উচিত। ⏩ [বইয়ে ভালো লাগার কিছু কথা] ✅ স্রষ্টা হচ্ছেন এক দক্ষ ঘড়ি নির্মাতা। তার হিসাব এতই সূক্ষ্ম যে পৃথিবীর প্রতিটি ঘটনায় তাদের নির্ধারিত সময়ে ঘটে, এক মুহূর্ত আগেও নয় এক মুহূর্ত পরেও নয়। প্রতিটি মানুষ প্রতিটি প্রাণীর জন্যই এই ঘড়ির হিসাব নিখুঁত। প্রত্যেকের জন্যই সময় আসে ভালোবাসার, এবং সময় আসে মৃত্যুর। ✅ ভালোবাসার সবাইকেই স্পর্শ করে এমনকি যারা ভালবাসাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। ‘রোমান্টিক’ শব্দ টা যাদের কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় তারাও ভালোবাসার কাছে হার মানে। ✅ ‘তাকে খুঁজে নাও, যে তোমার আয়না স্বরূপ’। ✅ একাকীত্ব এবং নির্জনতা এক জিনিস নয়। মানুষ যখন একাকী থাকে, তখন সহজেই ভাবতে পারে যে সে সঠিক পথে রয়েছে, অথচ তার ধারণা ভুল । নির্জনতাই আমাদের জন্য উত্তম, কারণ তাতে একাকী বোধ না করেই একা হওয়া যায় । কিন্তু এক সময় এমন একজন মানুষকে খুঁজে নিতেই হয়, যে তোমার আয়না হতে পারে। মনে রাখবে, কেবল অন্য এক মানুষের হৃদয়ের মাঝেই মানুষ নিজেকে এবং তার মধ্যকার সৃষ্টিকর্তাকে দেখতে পারে । ✅"এই মহাবিশ্বের সবার মাঝে, সব কিছুর মাঝে সৃষ্টিকর্তার পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়, কারণ তিনি কোনো মসজিদ, সিনাগগ বা গীর্জায় সীমাবদ্ধ নন। কিন্তু তারপরেও যদি জানতে ইচ্ছে করে যে কোথায় তার বাস, তাহলে সেই প্রশ্নের জবাবে একটি কথাই বলা যায় : সত্যিকার প্রেমিকের হৃদয়। স্রষ্টাকে একবার দেখার পর কেউ বেঁচে থাকেনি এটা যেমন সত্যি, তেমনি তার দর্শন পাওয়ার পর কেউ মৃত্যুবরণ করেনি এটাও সত্যি। তাকে যে খুঁজে পায়, অনন্তকালের জন্য সে তার মাঝে বিলীন হয়ে যায়।' ⚠️ [অনুবাদক] ⏩ অনুবাদক শাহেদ জামান ভাই উনি চমৎকার সব শব্দ দিয়ে বইটি অনুবাদ করেছে। এক কথায় অসাধারণ। ইংরেজি বইটা যেমন ঠিক তেমন শব্দ শৈলি ব্যবহার করেছেন। কোন রকমের বানান ভুলও নেই। ⏩ ব্যক্তিগত মতামত : রেটিং ৫/৫ । না হলে নিজের কাছেই নিজেরই বার বার অনুশোচনা বোধ হবে!
Was this review helpful to you?
or
দ্য ফরটি রুলস অফ লাইফ, এলিফ শাফাক এর লেখা অনবদ্য এক বই। ত্রয়োদশ এবং একবিংশ শতাব্দীর দুটি গল্পের সমান্তরাল লেখনী বইটিকে করেছে প্রাণবন্ত। জীবনের টানাপোড়েনে বেঁচে থাকা এক নারীর জীবন কিভাবে পাল্টে যাবে যখন সে ত্রয়োদশ শতাব্দীর আদলে লেখা একটি বই, মধুর অবিশ্বাস এবং তার লেখকের ছোঁয়া পাবে। লেখকের লেখনী সবসময়ের মতো সমাদৃত পাঠক মহলে
Was this review helpful to you?
or
সুফীবাদ ভালভাবে বোঝার জন্য এই উপন্যাসটি খুব ভাল হবে।
Was this review helpful to you?
or
Superb
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
Shera Shera!
Was this review helpful to you?
or
প্রিয় অনুবাদক শাহেদ জামানের সেরা একটি কাজ। অসাধারণ বই, অসাধারণ অনুবাদ!
Was this review helpful to you?
or
বই : দ্য ফরটি রুলস্ অফ লাভ মূল : এলিফ শাফাক অনুবাদ: শাহেদ জামান পৃষ্ঠা সংখ্যা:৪০০ রেটিং : ৯/১০ ভালোবাসা কি? ভালোবাসার প্রকারভেদই বা কত প্রকার হতে পারে! ভালবাসাকে পাবার জন্য মানুষ কিভাবে উতলা হতে পারে? ভালোবাসার সাথে কী সম্পর্ক (মাটি ,পানি ,আগুন, শূন্যতা) এর।মানুষের প্রতি অপর মানুষের ভালোবাসা কীভাবে শিকড় থেকে শিকড়ে খোদাপ্রেমে পৌঁছে যায় তা আমরা দেখতে পাই মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি (রহ.) এর জীবন ও লেখনীতে। মানুষের প্রধান কেন্দ্র হচ্ছে তার মন বা অন্তর। এই অন্তর যখন নানা খারাপ কাজের মাধ্যমে দূষিত বা কলুষিত হয়ে পড়ে, তখন তাকে শুদ্ধ করার, সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার যে পন্থা – তাকে ইসলামী পরিভাষায় বলা হয় "ইসলাহ"। আর ইসলাহ্ সংক্রান্ত জ্ঞানই হলো তাসাউউফ। তাসাউফের ক্রমধারা নবী-রাসুলগণের সময় থেকেই বাহিত, যা নতুন কোন বিষয় নয়। আর এই ধারাতেই বিশাল অবদান মাওলানা রুমি ও শামস ই তাবরিজির। এই মুহূর্তে তুরস্কের সবচেয়ে জনপ্রিয় নারী লেখক বলা হয় এলিফ শাফাককে। জনপ্রিয় এই লেখিকা মূলত ফিকশন ধাঁচের লেখা লিখলেও "দ্য ফরটি রুলস্ অফ লাভ" বা ভালোবাসার চল্লিশ নীতি বইটিতে তিনি সুফি বাদশাহ্ রুমি ও শামস ই তাবরিজির মধ্যকার ভালোবাসার মাধ্যমে ঐশ্বরিক প্রেমের সুধা লাভের পথ ফুটিয়ে তুলেছেন। আর এই সবকিছুর পটভূমি হিসেবে ব্যবহার করেছেন একটি উপন্যাসকে যার মূল চরিত্র- মধ্যবয়সী নারী, এলা রুবিনস্টাইন ও তার জীবনে হঠাৎ আসা একটি পান্ডুলিপি "sweet blasphemy" বা "মধুর অবিশ্বাস"। এলা রুবিনস্টাইন। বয়স 40। স্বামী-সন্তান সবই আছে, কিন্তু ভালোবাসা নেই। আর তাই সুখ নেই দাম্পত্য জীবনে। একঘেয়েমি থেকে বাঁচতে এক লিটারেরি এজেন্টের অধীনে পাঠক হিসেবে কাজ নিল সে। প্রথম যে পান্ডুলিপি হাতে এলো তার নাম "মধুর অবিশ্বাস", লেখক এর নাম আজিজ যাহারা। প্রথমে সে বেশ অনীহার সাথে পড়তে শুরু করলেও ধীরে ধীরে ডুবে যেতে থাকলো কাহিনীতে। জানতে পারল কিভাবে রুমির জীবন বদলে গিয়েছিল ভবঘুরে দরবেশ শামস তাবরিজির স্পর্শে। পরিচিত হলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভালোবাসার অদৃশ্য নিয়মের সাথে, যার কাছে সব ধর্ম, সব মানুষ একই সমান। এক সময় আবিষ্কার করল রুমির এবং তার জীবনের গল্পে কোন পার্থক্য নেই। রুমির জীবনে যেমন এসেছিলেন শামস, তেমনি তার জীবনে এসেছে জাহারা। তাকে মুক্তি দিতে.......... স্বাভাবিক ভাবে চলে আসা নর্দাম্পটনের এই ইহুদী পরিবারে কী এমন পরিবর্তন আনলো এই পান্ডুলিপি যা এলার এতোদিনের সংসারের প্রতি বিতৃষ্ণা এনে তাকে মুক্তির আলো দেখালো!! বইটিতে বিশুদ্ধতম অন্তরের চল্লিশটি গোপন নীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা ধাপে ধাপে গল্পের আকারে এগিয়ে গিয়ে পাঠক মনে গভীর অনুনাদ তুলতে সক্ষম। কীভাবে একজন সাধারণ ইসলামী বক্তা-গবেষক থেকে তাসাউউফে্র আলোয় আলোকিত হয়ে পাল্টে গেল ত্রয়োদশ শতাব্দীর এই মহা সাধকের জীবন আর তার রেশ ধরে পাল্টে গেল একবিংশ শতাব্দীর এক মধ্যবয়সী ইহুদী নারীর জীবন। এই বইয়ের ঘটনা প্রবাহ বর্ণনার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে আত্মকহন। সাধারণত আমরা দেখতে পাই, একটি উপন্যাসের ঔপন্যাসিক নিজে বা কোন একটি নির্দিষ্ট চরিত্র আত্মকহন এর মাধ্যমে ঘটনা এগিয়ে নেয়। কিন্তু এই বইয়ে অসংখ্য মানুষের জবানিতে এগিয়েছে গল্পের স্রোতধারা। একে একে এসেছে এলা, সোলায়মান নামের মাতাল, বেবার্স নামের প্রহরী, মরুগোলাপ নামের ঘোষিত গণিকা, রুমির স্ত্রী কারা...... সকল চরিত্রই নিজ ভাষায় এগিয়েছে একটি নদীর অববাহিকায় যার নাম শামস্। প্রত্যেকটা গৎবাঁধা চরিত্রের জীবন ওলট-পালট করে ফেলেছে এই সুফী দরবেশ। এই অববাহিকার স্রোত কি শুধু তাদেরকে স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটতেই শেখায়? নাকি শেখায় আরো অনেক কিছু ধারণ করতে? বর্তমানে খুব কম বই আগ্রহ জাগাতে পারলেও, মনের ভিতরে আঁচড় কাটতে পারে না। তবে এই বইটি পড়তে পড়তে আপনি কখন হারিয়ে যাবেন সেই অপার প্রেমের মোহনায় -আঁচও করতে পারবেন না। মূল বইটি তুর্কি এবং ইংরেজি ভাষার হলেও বাংলায় এর ভাবাবেগ অক্ষুণ্ন রাখতে যথেষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন অনুবাদক শাহেদ জামান। তাই একটা বড় ধন্যবাদ তার প্রাপ্য।
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
Great book for great readers.
Was this review helpful to you?
or
A must read book for those who interested about sufism and mystic poet mawlana jalaluddin rumi and his master shams tabrizi. This book trigger me to learn sufism.
Was this review helpful to you?
or
এলিফ শাফাক তাঁর বইয়ে রুমী ও শামসুত তাবরেযীর কথা বলতে গিয়ে যেসব তথ্য বা উপাত্ত উল্লেখ করেছেন তার অধিকাংশই হলো "সুফিইজম"/ সুফিবাদ। যা শুধু ধর্মের আলোকে নয় বরং কমন সেন্সেরও বিপরীত!
Was this review helpful to you?
or
Best Ever. I bought rest of all books of this author.
Was this review helpful to you?
or
গল্পের ভিত্তি যদি বলি, তাহলে গল্পটাকে দুটো ভাগে ভাগ করে, একটা প্যারালাল কল্পনায় এগিয়ে যেতে হবে। গল্পের শুরুটা হয়েছে নর্থথাম্পটন, ম্যাসাচুসেটস্ এর একটা ইহুদি পরিবারের চল্লিশের কাছাকাছি বয়সের একজন নারী চরিত্রের মাধ্যমে, যার নাম এলা রুবিনস্টেইন। সে সংসারের একজন দায়িত্বশীল স্ত্রী/মা হয়েই কাটিয়ে দিয়েছে তার চল্লিশ বছর। মাঝে মাঝেই অপূর্ণতা, রিক্ততাটা যেন হঠাৎ ই ভীড় করে। সে নিজের অজান্তেই খুঁজে একটু ভালোবাসার আশ্রয়। নিজের অপূর্ণতাকে কাছে ভিড়তে না দেয়ার সুবাদেই সে একটা লিটারেরি এজেন্সির সাথে কাজে যুক্ত হলে তাকে 'Sweet Blasphemy' নামের একটা বই দেয়া হয় ম্যান্যুস্ক্রিপ্ট জন্য। লেখক ছিলেন 'Aziz Zahara'... সাংসারিক বাকবিতন্ডায় নিতান্ত অনিচ্ছা নিয়েই বইটা নিয়ে বসে সে। হঠাৎই বইটার প্রতিটি পাতায় যেন সে খুঁজে পেতে থাকে তার প্রতওটা নিঃসঙ্গতার উত্তর। বইটাতে মূলত একজন সুফি-দরবেশ 'Shams of Tabriz' এর কথা বলা আছে, যিনি তাঁর অগাধ জ্ঞানের ভান্ডার দান করে যেতে চান এমন কারো কাছে, যাঁর কাছে তাঁর চিন্তা-চেতনার মূল্য থাকবে। তিনি একজন সুফির কাছে বিখ্যাত পন্ডিত জালালুদ্দিন রুমি সম্পর্কে জানতে পারেন এবং সমরকন্দ থেকে বাগদাদ পৌঁছান। 'কণ্যা' তে শামস্ রুমির দেখা পান... এবং আস্তে আস্তে তাঁদের মধ্যকার পরিচয়, জ্ঞান বিনিময় সব-ই স্পষ্ট হয়ে উঠে বইয়ে। এদিকে শামস্ এর আশ্চর্য জ্ঞানাদর্শ, সুফি ভালোবাসা ও সাহচর্যে ক্রমেই বদলে যেতে থাকেন রুমি, মুগ্ধ হতে থাকেন ক্রমাগত।মতাদর্শে আলাদা হয়ে পড়েন তাঁর পরিবার-পরিজন থেকে। আর এদিকে সারা শহরের মানুষের ঘৃণার পাত্র হয়ে উঠেন শামস্। শামসের 'forty rules of love' এর বর্ণনায় রুমির মতো এদিকে মুগ্ধ হয় আরও একজন, সে হচ্ছে এলা। বইয়ের লেখকের নিরূপম বর্ণনায় নিজের আশ্রয় যেন খু্ঁজে পায় সে বহুদিন পরে৷ ইমেইল করে বসে সে লেখককে। এবং সে শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, এলার কাছে আশ-পাশের সমাজ থেকে সেই লেখকের প্রতি তার ভালোবাসার গুরুত্ব হয়ে উঠে অনেক বেশি। মূলত এলা এবং রুমি, এ দু'জনকেই লেখক সমান্তরালে কল্পনা করে এটাই দেখাতে চেয়েছেন যে, এ দু'জনই যথাক্রমে আযিয এবং শামসের কাছে এমন কিছু পেয়েছিলেন, যেটার মূল উৎস আত্মিক, স্বর্গীয়... পৃথিবী, সমাজ, পরিবার সবকিছুর ঊর্ধ্বে।
Was this review helpful to you?
or
আমি যা বই পড়ছি সব থেকে এই বইটা বেস্ট লাগছে।আর যাদের সুফিবাদ সম্পর্কে জানতে চাই তারা এটা পড়তে পারে।
Was this review helpful to you?
or
ভালোবাসা কি? কাওকে ভালোবাসার জন্য বা কারো ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কেনই বা আমরা এত উতলা হই? এই ভালোবাসার নিয়মই বা কি? আবার এই ভালোবাসার সাথে পঞ্চভূত (মাটি, পানি, বাতাস, আগুন, শুন্যতা) এরই বা কি সম্পর্ক? এমন সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই লেখা হয়েছে The Forty Rules of Love বা ভালোবাসার চল্লিশটি নীতি। মূলত সুফিবাদের উপর ভিত্তি করে লেখা এই বইটি দুটি ভিন্ন সময়ের মানুষদের নিয়ে লেখা, গল্পের শুরুতে দেখা যায় এলা রুবিস্টাইন নামের একজন গৃহিণীকে। যার জীবনে কোন কিছুর অভাব নেই শুধুমাত্র ভালোবাসা নামক বস্তুটি ছাড়া। তাই প্রাত্যহিক জীবনের একঘেয়েমি থেকে বাঁচতে এক লিটারেরি এজেন্টের কাছে পান্ডুলিপি পড়ার কাজ নেয় সে। প্রথম কাজ হিসেবে তার কাছে যে পান্ডুলিপিটি আসে তার নাম sweet blasphemy বা মধুর অবিশ্বাস। যে পান্ডুলিপিতে বর্ণনা করা আছে মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (তের শতকের প্রখ্যাত মুসলিম কবি, আইনজ্ঞ, ইসলামি ব্যক্তিত্ব, ধর্মতাত্ত্বিক, অতীন্দ্রিবাদী এবং সুফী) এবং শামস তাবরিজির(নামকরা সুফি ব্যাক্তিত্ব এবং মাওলানা জালাল উদ্দিনের শিক্ষক) জীবনের অবিশ্বাস্য সব কথা। কিভাবে শামস তাবরিজির সংস্পর্শে চিরতরে বদলে গেছে মাওলানা রুমির জীবন। যে পান্ডুলিপিতে লেখক বর্ণনা করার চেষ্টা করেছেন শামস তাবরিজির ভালোবাসার ৪০ টি নিয়মের কথা। উল্লেখিত ৪০ টি নীতির মাঝে অল্প কয়েকটাই ভালোভাবে অনুধাবন করতে পেড়েছি, যতটুকু বুঝেছি ভালোবাসার পরিধি ব্যাপক। সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি আমাদের সবার মাঝেই বিদ্যমান, কিন্তু তাকে অনুধাবন করতে হলে প্রয়োজন বিশুদ্ধ মন বা হৃদয়ের। কিন্তু সেই বিশুদ্ধ হৃদয়ের জন্য অন্তরে জমে থাকা ঘৃনা এবং বিদ্বেষ দূর করে একমাত্র ভালোবাসাই পারে সেই মনকে পরিশুদ্ধ করতে, এক কথায় পুরো বই জুড়েই ভালোবাসা দ্বারা অন্তরের পরিশুদ্ধতার মাধ্যমে কিভাবে সৃষ্টিকর্তাকে কাছে পাওয়া যায় তার কথা বলা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
আবেগ আর বিবেক! বড়ই আশ্চর্যজনক দুটি জিনিস একটির সম্পর্ক মাথার সাথে তো দ্বিতীয়টির সম্পর্ক হলো হৃদয়ের সাথে। আর যখন এদুটির সীমান্ত বন্ধন একজুট হয়ে যায় তখন মানুষ! প্রকৃত মানুষ রুপে রুপান্তরিত হয়। শুধু আবেগ-- মানুষকে অনেক বাস্তবতা অনুধাবন করা থেকে বিরত রাখে আর শুধু বিবেক-- মানব ইতিহাসকে নিন্দিত করে তুলে। তাই মুক্ত চিন্তা আর যুক্ত চিন্তা যাইহোক না কেন সেটি তখনই সফলতা লাভ করে যখন এ'দুটি অজানা দিক কে মানুষ নিজের ভিতরে সমন্বয় করে ধারন করে। সফলতা আর বিফলতা এগুলো আপেক্ষিক বিষয় (তবে সব ক্ষেত্রে নয়), মন-মস্তিষ্কে যখন যেটা সেট করা হয় সেটিই প্রকৃত ভালো-মন্দ রুপে চলে আসতে থাকে। কেউ আছে যে, দৈনিক ৫০০ টাকা করলেই নিজেকে সফল মনে করে আর কেউ ৫০,০০০ আয় করলেও নিজেকে ছোট মনে করে। যাইহোক তো এই হলো সফলতা আর বিফলতার সবে মাত্র পরিচয়। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস আছে এমন, যেগুলো শুধু ধর্মের আলোকে নয় বরং সর্ব-মহলে; সর্ব-জননে তা নিন্দিত, কিংবা প্রসংশিত। যেমন- কারো মান-অভিমান তুচ্ছ করা, অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যা করা, অনুরুপ ভালো দিক যেমন- কারো উপকার করা, বিপদে সাহায্য করা, অন্যের ভালো কিছু কামনা করা ইত্যাদি। এবার আসা যাক আসল কথায়, যদি বলা হয় যে, মন আর মস্তিষ্কের মধ্যে প্রধান কোনটি? তাহলে হয়তোবা অনেকের উত্তর হবে 'মন', জ্বি! আসলেই তাই। মন হলো পুরা দেহের রাজা, কিন্তু আমি যদি প্রশ্ন করি যে, তাহলে কেন এই মনকে মস্তিষ্কের নিচে রাখা হলো....? মন নামক এই প্রধান জিনিসকে কেন মাথায় রাখা হলো না...? এর উত্তর আপনারাই দিবেন, আপনাদের হাতে সেটি ন্যাস্ত করলাম। কিন্তু কখনো কখনো মানুষের এই প্রাধান কেন্দ্র অন্তরও নষ্ট হয়ে যায় পরিবেশের কারণে কিংবা ব্যক্তিগত কু-অভ্যাসের কারণে। আর অন্তর নষ্ট হয়ে গেলে মানুষের কাছে খারাপ জিনিসগুলোও তখন ভালো লাগতে শুরু করে। এমন কি বিবেকও তখন বাঁধা দেয়ার পরিবর্তে আরো সেই কাজে প্ররোচিত করতে থাকে। তো সেই অন্তর কে আবার সঠিক পথে আনার স্বার্থে যে কাজটা অবলম্বন করা হয় ইসলামিক পরিভাষায় সেটিকে “ইসলাহ/তাযকিয়া” বলে আর এই ইসলাহ বা তাযকিয়ার পন্থাকে এক কথায় তাসাউওফ ( তাসাও উফ ) বলে। মাওলানা রুমী ও শামসুত তাবরেযী রাহ. তারা এই তাসাউওফ কাজে নিয়জিত ছিলেন। বলে রাখা ভালো, এটি নতুন কিছু নয়, বরং নবী থেকে তাসাওউফের এই সুশীতল ধারা চলে আসছে। নবীকে প্রধানত চারটি কাজের দায়িত্ব বিষেশভাবে দেয়া হয়েছিলো, (এক) তিলাওয়াত করা। (দুই) এর তথ্যাবলী বিশ্লেষণ করা। (তিন) প্রকৃত প্রজ্ঞা শিক্ষা দেয়া। (চার) আত্মসংশোধন/ ইসলাহ করা। তো এই চতুর্থটা হলো তাসাউফ কিংবা আমাদের ভাষায় অস্পষ্ট আকারে বললে ”সুফিবাদ” বলা যাবে। কিন্তু এই যে ''অস্পষ্ট আকার'' উল্লেখ করলাম...? হুম আসলে তাই, ইসলামের এই ইসলাহ নামক কাজকে ‘সুফিবাদ’ হিসেবে চালিয়ে দিলে সেটি অবশ্যই ভুল হবে, মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো হবে। যেমমটি ছড়ানো হয়েছে এলিফ শাফাকের আলোচিত বইতে। আমি যে কারণে এই বইয়ের সমালোচনা করতে চাই সেটি হলো এই "সুফিবাদ তত্ত্ব", "বিকৃত ইতিহাস" ও তথ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে "ভুল উপস্থাপনা" নিয়ে। যেগুলো এলিফ শাফাক তার বইয়ের মধ্যে অত্যান্ত নিন্দনীয় ভাবে (জেনে হোক বা না জেনে) উল্লেখ করেছেন। এলিট শাফাক তিনি তার বই "ট্যা ফরটি রুলস অফ লাভ"এ যেসব কথাগুলো বলেছেন, বিষেশত সুফিবাদের যে কথাগুলো, এবং এটিকে কেন্দ্র করে ইসলামের যে ইতিহাস রটনা করেছেন সেটি অবশ্যই সংশোধনীয়। আর অনুবাদক শাহেদ জামান স্যার! তিনিও যদি এই বিষয়ে কিছু টিকা স্বরুপ উল্লেখ করে পাঠক মহলকে সতর্ক করতেন তাহলেও যথেষ্ট ছিলো। কিন্তু তিনি হুবহু কোনোরকম বাধা-বিপত্তি ছাড়া অনবরত অনুবাদ করে গেছেন ! ‘আমি’ গ্রন্থাগার কিংবা অনুবাদকের নিন্দা করছি না, বরং বইটি লিখতে গিয়ে যেসব বিচ্যুতির শিকার হয়েছেন তারা, আমি সেই সব কথা স্পষ্ট করতে চাচ্ছি যেন পাঠকমহলের মাঝে বিভ্রান্তি না ছড়ায়। আমার কথায় আপনারা যদি একমত হতে না পারেন, তাহলে তা খন্ডন করতে পারেন কিন্তু খন্ডনটা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত আর রেফারেন্স এর আলোকে হতে হবে। তো বইয়ের সমালোচনা শুরু করার আগে ভূমিকা স্বরুপ কিছু কথা উপরে উল্লেখ করেছি এবং আগামী পর্বে আর একটি ভূমিকা উল্লেখ করবো এরপর ইনশাআল্লাহ! ধারাবাহিক এই বইয়ের কিছু অনাকাঙিত দিক নিয়ে আলোচনা করা হবে, যেটি না বললেই নয়।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা ভালোবাসার কোনো নাম হয় না কোনো সংঙ্গা হয় না ভালোবাসা হলো ভালোবাসা, বিশুদ্ধ ও খাঁটি ভালোবাসা। ভালোবাসা হলো জীবনের জন্য পানির স্বরূপ। আর যে ভালোবাসে তার সত্তায় জ্বলে উঠে আগুন। আর আগুন যখন পানিকে ভালোবাসে , তখন এমনকি এই অসীম মহাবিশ্বের গতিও বদলে যায় । ভালোবাসাকে ধারণ করতে হয় হৃদয় দিয়ে । মন দিয়ে করলে হয়তো আবেগ দ্বারাই কেবল চালিত হবে কেবল । কিন্তু ভালোবাসাকে যদি হৃদয় দিয়ে ধারণ করা যায় তাহলে? এ নভেল অফ রুমিকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে এলিফ শাফাকের দ্য ফরটি রুলস অভ লাভ। বই তো সবাই কম বেশী পড়েই থাকি। কিন্তু কয়টা বই আঁচড় কেটে যায় মনের খাতায়। সুফী সাধকরা বলেন, কোরআনের গোপন রহস্য লুকিয়ে আছে সূরা আল-ফাতিহার মাঝে, আর আল-ফাতিহার গোপন রহস্য লুকিয়ে আছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কথাটির মাঝে, আর বিসমিল্লাহ-র রহস্য রয়েছে 'বা' অক্ষরের মাঝে। সেই অক্ষরের মাঝে রয়েছে একটি ফোটা বা বিন্দু.... আর সেই বিন্দু ধারণ করেছে গোটা মহাবিশ্বকে... ‘বা’ হরফটি কিন্তু নিছক কোনো হরফ নয় এই বইয়ের ক্ষেত্রে। পুরোটা বই জুড়ে ‘বা’ এর রেশ খুজে পাবেন পুরো বইটা জুড়েই। এলা। নর্দামস্পটনের এক গৃহিনী। যার জীবন ছিলো গৎবাঁধা। পুকুরে আটকে থাকা স্থির জলের মতো। স্বামী তিন সন্তান আর গৎবাঁধা জীবনের ছকে বেঁধে ফেলেছিলো নিজেকে। কিন্তু সেই পুকুরের পানিতে ঢিল হিসেবে ছলাৎ করে পুকুরের পানিকে উলট পালট করে ফেলে একটি নাম শামস। যে মানুষটা ভালোবাসার চেয়ে দ্বায়িত্ববোধকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে এলা সেই মানুষটার জীবনে কি ঘটে গেল হুট করে ? অসংখ্য মানুষের জবানীতে এগিয়েছে গল্পের স্রোতধারা। একে একে এসেছে এলা, সুলায়মন নামের এক মাতাল , বেবার্স নামের এক প্রহরী , মরূগোলাপ নামে ঘোষিত এক গণিকা, কারা আর ...... আরো অনেকের জীবন গল্পের স্রোতধারা এসে মিশেছে এই নদী অববাহিকার মাঝে। বইয়ের ভেতর থাকা প্রত্যেকটি চরিত্রই আবদ্ধ হ্রদের মতো ছিল। তাহলে প্রত্যেকটা চরিত্রকে আন্দোলিত করে ফেলে একটি মাত্র চরিত্র। দরবেশ শামস। যার কারণে ওলট পালট হয়ে যায়। প্রত্যেকটা গৎবাঁধা চরিত্রের জীবনপ্রবাহকে ওলট পালট করে ফেলে এই সুফী দরবেশ। এই স্রোতের বিপরীতে বহমান জীবন প্রবাহ কি তাদের জীবনকে শুধু মাত্র স্রোতের বিপরীতেই সাঁতরাতে শেখায় ? নাকি অন্য কিছুকেও ধারণ করতে শেখায়? ফরটি রুলস অভ লাভ। ভালোবাসার চল্লিশটি নীতি। এই নীতিকে শুধু নীতি হিসেবে রাখেনকি লেখিকা অদৃশ্য বাঁধন জুড়ে দিয়েছেন অনেক চরিত্রের সাথে। বেঁধেছেন এক অমোঘ নিয়তির প্রতিবিধানে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অদৃশ্য সুতো বেঁধে রেখেছিলো , এলা থেকে শামস পর্যন্ত সবাইকে । ভালোবাসাকে ধারণ করতে শিখিয়েছেন শামসের মাধ্যমে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বই পড়া হলেও বইটাকে ধারণ হয়ে উঠে না আর। সব বই আচড় কাটতে পারে না। কিন্তু ভালোবাসার এই চল্লিশ নীতি একেবারে বসে গিয়েছে মনের ভেতর। কিছু কিছু দৃশ্যপট চোখে ভেসে উঠে বইটি পড়ার সময়। প্রত্যেকটা চরিত্রকে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে মহিয়ান করার প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ রূপে সফল হয়েছেন লেখক। অনুবাদকের কথা নতুন করে কি বলবো। যেন দিন কে দিন নিজেকে ছাড়ানোর শপথ নিয়েই মাঠে নেমেছেন। পড়তে গিয়ে মনে থাকেনি মৌলিক পড়ছি নাকি অনুবাদ। দ্য টুয়েন্টিয়েথ ওয়াইফ, দ্য ফিস্ট অফ রোজেস পড়ার পরই অনুবাদক তার জাত চিনিয়েছেন।অনুবাদ কর্মে তার আর নতুন করে কিছু বলার নেই। এগিয়ে যান বহুদূর এই শুভকামনাতেই । এক নজরে বইঃফরটি রুলস অভ লাভ জনরাঃ লেখকঃএলিফ শাফাক অনুবাদকঃ শাহেদ জামান প্রকাশনীঃরোদেলা প্রকাশনী পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ৪০০ মুদ্রিত মুল্যঃ৪৬০ টাকা রেটিং ৫/৫(মুল কাহিনী আর অনুবাদ দুটোতেই) রকমারী লিংক https://www.rokomari.com/book/127408/%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AB%E0%A6%B0%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%B8-%E0%A6%85%E0%A6%AB-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AD
Was this review helpful to you?
or
দ্য ফরটি রুলস অফ লাভ’ এলিফ শাফাক এর লেখা একটি অসাধারন উপন্যাস । এলিফ শাফাক এর জন্ম ১০৭১ সালে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গে । তিনি তুরষ্কের অন্যতম জনপ্রিয় লেখিকা । তার লেখালেখির স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি পেয়েছেন নানা পুরষ্কার । তার লেখা বইসমুহ ত্রিশ টির ও বেশী ভাষায় অনুদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে । এই পর্যন্ত তার লেখা দশ টি বই বের হয়েছে ,যার মধ্যে সাতটি উপন্যাস । তুর্কি ও ইংরেজী দুই ভাষাতেই তিনি লেখালেখি করেন । এই জন্য তার লেখা গ্রন্থগুলো প্রাচ্যের প্রাচীনতার সাথে পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির মিশ্রনে তৈরী । তার লেখা অসাধারন এ বইটি বাংলা ভাষায় অনুদিত হয়ে প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের একুশে বইমেলায় । বইটি প্রকাশিত হয় রোদেলা প্রকাশনী থেকে এবং এর প্রকাশক রিয়াজ খান । প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন অনন্ত আকাশ । লেখিকা এই বইটি তে লিখেছেন সম্পুর্ন আলাদা দুইটি সময়ের কাহিনী । একটি গল্প সমসাময়িক , আরেকটি গল্পের পটভুমি ত্রেয়োদশ শতাব্দীর , যখন বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক রুমী তার আত্মীক পথপ্রদর্শক রহস্যময় দরবেশ শামস তাবরীজির দেখা পান । এই দুই সময়ের গল্প দুইটি কে লেখিকা সাবলিল ভাবে একত্রিত করে প্রকাশ তৈরি করেছেন ভালোবাসার এক চিরন্তন উপাখ্যান । গল্পের চরিত্র এলা রুবিনস্টাইন , তার বয়স চল্লিশ , স্বামী আছে সবই আছে কিন্তু দাম্পত্যজীবনে সুখ নেই । একঘেয়েমী জীবনের থেকে বাচার জন্য তিনি এক লিটারেরি এজেন্টের অধীনে পাঠক হিসেবে কাজ নেন । তার কাছে প্রথমেই আসে একটি পান্ডুলিপি , সেটি পড়ে সে ডুবে জেতে থাকে বইটির মধ্যে , সে জানতে পারে কিভাবে রুমীর জীবন বদলে গিয়েছিল । তিনি আবিষ্কার করেন যে বইয়ের কাহিনীর সাথে তার জীবনের কোন পার্থক্য নেই । এভাবেই রচিত হয়েছে বইটির গল্প । অসাধারন এ উপন্যাসটি পড়লে সকলেরই বেশ অসাধারন লাগবে ।