User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বই : হৃদয়নদী। লেখক : হরিশংকর জলদাস। মূল্য : ২৭০ টাকা। পৃষ্ঠা : ১৪৪। প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা। প্রকাশনী : অবসর। আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, শুধাইল না কেহ। সে তো এল না, যারে সঁপিলাম এই প্রাণ মন দেহ। কবি গুরু কি ভেবে উপরের চরণ যুগল লিখেছিলেন আমার তা জানা নেই। তবে হয়ত প্রতিটা মানুষের হৃদয় জুড়েই থাকে এক নিরব নদী। যা বয়ে চলে নিশ্চুপ নিরবধি। যার উপর আমাদের নিজের কোনো দখল থাকে না। থাকে না সেই নদীকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা। সে নদী তার কথামালার ঢেউ তুলে ছুটে চলে অন্য কোনো হৃদয়মোহনার খোঁজে। হরিশংকর জলদাস তেমনই এক মানবী ও তার হৃদয়নদী তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে। চলুন পাঠক, ঘুরে আসি সেই মানবীর হৃদয়নদীর পাড় থেকে। জানার চেষ্টা করি সেই স্রোতস্বিনীর প্রবাহের গতিপ্রকৃতি। #কাহিনী_সংক্ষেপ গল্পের শুরুতেই দেখা যায়, পারভীন আক্তার বিছানা ছেড়ে হোটেলের বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। সেন্টমার্টিনের ব্লু মেরিনের তিনতলা এই হোটেল থেকে খুব সহজের চোখে পড়ে বঙ্গোপসাগরের নীলজল রাশি। পারভীন তার দৃষ্টি সীমার মধ্যে প্রকৃতির স্নিগ্ধ মায়াময় রূপ দেখ বিক্ষিপ্ত মনকে বশে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে। একটা সরকারী কলেজে অধ্যাপনা করে পারভীন, বিভাগীয় প্রধান। সেই কলেজের সকল শিক্ষক পরিবার-পরিজন নিয়ে বছরে একবার বেরিয়ে পড়েন ঘোরার জন্য। এবার তারা এসেছেন সেন্টমার্টিনে। উঠেছেন ব্লু মেরিন হোটেলে। পারভীন-দম্পতিও এসেছেন এই সফরে। তাদের দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় ছেলে বউ নিয়ে আলাদা থাকে নিজ কর্মস্থলে, মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে, আর ছোট ছেলে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে। স্বামী ফরহাদ বছর খানেক হয় রিটায়ার্ড করেছেন। রগচটা স্বভাবের না হলেও অফিসের বড়সাহেব হবার কারণে বা স্ত্রীর প্রতিক্ষণের চাপাচাপিতে তার মধ্যে এক ধরনের রুক্ষ মেজাজ জায়গা করে নিয়েছে। চাকরি গেলেও তার তিরিক্ষি মেজাজ রিটায়ার হবার পরেও রয়ে গেছে। যার প্রয়োগ সে অধীনস্থদের উপর করে থাকে কারণে অকারণে বা সামান্য কারণে। আপাত দৃষ্টিতে দেখতে সুখী পরিবার বলেই মনে হয়। আদতে কি তারা সুখী? গেল ক'বছর পারভীন ফরহাদের মধ্যে শারীরিক অক্ষমতা লক্ষ করেছেন। পারভীনের আহবানে ফরহাদ তেমন সাড়া দিতে পারে না। তাই হয়ত দুইজনের মধ্যে একধরনের দূরত্ব সৃষ্টি করে এক অদৃশ্যমান দেয়াল তুলেছেন ফরহাদ। পারভীন যখন গভীর আবেগে কথা বলতে আসে ফরহাদ তখন বই নিয়ে বসে থাকে অথবা তার শখের বাগান পরিচর্যা করতে যায়। বা অন্য কোনো বাহানা করে বসে। নিজেকে পারভীনের কাছ থেকে দূরে রাখতেই যেনো এই প্রয়াস। আর কাল রাতের ব্যাপারটায় পারভীন ভীষণ চোট খেয়েছে মনে। শুধু কি এই কারণেই দুইজনের মধ্য তৈরি হচ্ছে এই অদৃশ্য দেয়াল? নাকি আরো কোনো কারণ রয়েছে তার পেছনে? স্বামীর অক্ষমতায় গভীর রাতে কেনইবা নিখিলেশ হানা দেয় পারভীনের হৃদয়নদীতে? কেন এত আক্ষেপ তার নিখিলেশের জন্য? কিন্তু তাদের দুইজনের মধ্যে তো ভালোবাসার কমতি নেই! প্রিয় কন্যা হেমলতা ভালোবেসে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতিত হয়। বাপের বাড়িতেও ফিরে আসার পথ থাকে না লতার। মেয়ের সংসার যখন ভাঙ্গে ভাঙ্গে প্রায় পারভীন-ফরহাদ একে অপরকে শক্ত হাতে আগলে রাখে,ভরসা দেয়, সাহস যোগায়। মুখ ফুটে বলার আগেই স্ত্রীর অন্তরজ্বালা টের পায় স্বামী! মেয়ের দুঃখে গভীর বেদনা পারভীনের ভেতর বাহির ছিঁড়েখুঁড়ে খায়। ভীড়ের মাঝেও নিঃসঙ্গতা বোধ তাড়িয়ে বেড়ায় পারভীনকে। সেই একাকীত্ব বোধই কি কাছে নিয়ে আসে নিখিলেশকে!? #মতামত আমি এই প্রথম লেখকের বই পড়ছি। অনেক শুনেছি হরিশংকর জলদাসের লেখার কথা আজ পড়া হলো। প্রথমেই বলি ভালো লাগার কথা! আমি টানা পড়ে শেষ করেছি বইটা। চরিত্র চিত্রণে লেখকের জুরি নেই! মধ্যবয়সী দৃঢ়চেতা, আত্মমর্যাদাশীল এক নারী চরিত্র পারভীন আপনাকে মুগ্ধ করবে। ফরহাদের ভুল ত্রুটিপূর্ণ চরিত্রের মাধুর্য তৃপ্তি দেবে পাঠককে। কাজের মেয়ে মৈরমের ছোট চরিত্রটাও আপনাকে হাসাবে প্রাণখোলা হাসি। লেখার গভীরতা আর ঝলমলে সরলতা বইয়ের শেষ অবধি চুম্বকের ন্যায় ধরে রাখবে পাঠককে। এইবার আসি খারাপ লাগার দিকে। বইটাতে এডাল্টনেস প্রকাশের ভাষাটা একটু যেনো বেশিই তীব্র ছিল। যদিও খুবই ভদ্রভাবে লেখক তা উপস্থাপন করেছেন। বিশেষত প্রথম দিকের বর্ণনাতে। অন্যান্য পাঠকের নিকট হয়ত খুব স্বাভাবিক লাগবে ব্যাপারটা। কিন্তু যেহেতু আমি প্যানপ্যানে উপন্যাস এড়িয়ে চলি, এই কারণেই আমার হয়ত বিষয়টা ভালো লাগেনি। আর নাসিক্যকেশের যে গা ঘিনঘিনে বর্ণনা দিয়েছেন! ইয়া আল্লাহ্! আমার গা গুলাচ্ছিল পড়ার সময়। তবে এতেই কিন্তু লেখকের সার্থকতা! তার লেখা তার পাঠককে আলোড়িত করেছে। এই টুকুন বাদ দিলে বাদবাকি পুরোটা বই ছিল চমৎকার সুখপাঠ্য। বই হোক ভালোবাসার প্রতীক।
Was this review helpful to you?
or
হরিশংকর জলদাসের লেখা ‘হৃদয়নদী' উপন্যাসটি। এর আগে তিনি নির্যাতিত, গ্রামের অশিক্ষিত, প্রান্ত মানুষদের নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু লেখা। এবার তিনি আগের লেখা থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষিত মানুষের কাহিনী নিয়ে রচনা করেছেন উক্ত উপন্যাসটি। শিক্ষিত একটি পরিবার, কর্মজীবী শিক্ষিত এক নারীর সংসারের কাহিনীকে কেন্দ্র করে এগিয়ে গিয়েছে এই উপন্যাসটি। আর্থিক ভাবে স্বচ্ছ, শিক্ষিত পরিপূর্ণ একটি সংসার। কোন কিছুর অভাব নেই, এমন সব পরিবারকে সুখী পরিবার বলে থাকি আমরা। কিন্তু এমন সব পরিবারই কি সুখী পরিবার হয়? বাইরে থেকে দেখে এমন পরিবারগুলোকে আমরা সবাই সুখী পরিবার বলি কিন্তু এমন পরিবার গুলোতেও দুঃখ বেদনা হতাশা পাওয়া না পাওয়া থাকতে পারে। এই গল্পের মূল চরিত্র একজন মধ্যবয়সী রমণী। মূলত তাকে ঘিরেই গল্পের কাহিনী এগিয়ে চলে। হরশংকর জলদাস এর জন্ম ১৯৫৫ সালে চট্রগ্রামের পতেঙ্গায় ।তাঁর বাবা যুধিষ্ঠির জলদাস পেশায় ছিলেন জেলে। বংশের প্রথম শিক্ষিত বানাবার স্বপ্ন দেখেন এবং যুধিষ্ঠির তিনি তাকে স্কুলে পাঠান। শৈশবে পরিবারের অভাব মেটাতে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন বর্তমানে বাংলার অধ্যাপক ড. হরিশংকর জলদাস। তিনি বাংলাদেশের একজন ঔপন্যাসিক। তিনি একাধিক উপন্যাস লিখেছেন। জেলেজীবনের উপর তিনি উচ্চতর গবেষণা করেছেন এবং লিখেছেন একাধিক বই। তাঁর লেখায় মূলত প্রাধান্য পেয়েছে জেলেজীবন এবং তাদের সংগ্রামের গল্প। তিনি অধ্যাপনার কাজে ছিলেন, পরে বিভিন্ন সমস্যার কারনে সেই কাজ ছেড়ে হাতে কলম তুলে নেন এবং একে একে লিখে ফেলেন কয়েকটি অসাধারন বই । তিনি সবসময় দলিত মানুষদের নিয়ে লেখালেখি করেন । তিনি নিজেও প্রান্তিক সমাজের মানুষ, অসাধারন নিজস্ব ভাষা দিয়ে তিনি তার কথাসাহিত্যের জগত তৈরী করেছেন । সাহিত্যকর্মের জন্য পেয়েছেন আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য ইত্যাদি । কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন ২০১২ সালে।
Was this review helpful to you?
or
হরিশংকর জলদাস এর আগে লিখেছেন জেলেদের নিয়ে , বেশ্যাদের নিয়ে , মেথরদের নিয়ে ।চোর বাটপার লুচ্চা এই ধরনের বিভিন্ন লেখা তিনি তার আগের বইগুলোতে লিখেছেন । এবার সে একটু আলাদা ধরনের লেখা লিখেছেন। হৃদয়নদী বইটি তে তিনি উপস্থাপন করেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী পারভীন আক্তার কে । তিনি বইটি তে পারভীন আকতার এর আন্তর্জীবন আর বর্হিজীবন নিয়ে লিখেছেন , তিনি একটি সরকারী কলেজের অধ্যাপক । স্বামী পুত্র কন্যা নিয়ে তার সুখের সংসার বলে চালিয়ে দেওয়া যায় । কিন্তু সমস্যা একটাই , সে একটি কঠিন সমস্যায় ভুগে , নিশীথে অক্ষম স্বামীর পাশে শুয়ে শুয়ে সে চিন্তা করে আরেকজন কে । তার প্রেমিক নিখিলেশ এর সাথে সে তার জীবনের সুখ দুঃখ ভোগ করে নিতে চায় । এইরকম সমস্যার পরে সে আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয় । আমাদের জীবনে যা এখন ঘটেই যাচ্ছে । অসাধারন এ উপন্যাস টি পাঠক দের নিকট ভালো লাগবে ।হৃদয়নদী’ হরিশংকর জলদাসের লেখা একটি বই । হরশংকর জলদাস এর জন্ম ১৯৫৫ সালে চট্রগ্রামের পতেঙ্গায় । তিনি অধ্যাপনার কাজে ছিলে, পরে বিভিন্ন সমস্যার কারনে সেই কাজ ছেড়ে হাতে কলম তুলে নেন এবং একে একে লিখে ফেলেন কয়েকটি অসাধারন বই । তিনি সবসময় দলিত মানুষদের নিয়ে লেখালেখি করেন । তিনি নিজেও প্রান্তিক সমাজের মানুষ, অসাধারন নিজস্ব ভাষা দিয়ে তিনি তার কথাসাহিত্যের জগত তৈরী করেছেন । সাহিত্যকর্মের জন্য পেয়েছেন আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য ইত্যাদি । কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন ২০১২ সালে । হৃদয়নদী বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । বইটি প্রকাশিত হয় অবসর প্রকাশনা সংস্থা থেকে এবং এর প্রকাশক এফ রহমান । প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা ।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-হৃদয়নদী লেখক-হরিশংকর জলদাস ধরন- উপন্যাস পৃষ্ঠা-১৪৪ মূল্য-২৭০ প্রকাশ-২০১৭ প্রচ্ছদ-সব্যসাচী হাজরা অবসর প্রকাশনা হৃদয়নদী! হৃদয়ের তরঙ্গ! হৃদয়ের ঢেউ! যে নদীতে ভেসে যায় সুখ, দুঃখ, না পাওয়ার হতাশা। জীবন চলে বহতা নদীর মতো। স্রোতের টানে নিয়ে ফেরে সব জঞ্জাল । পারভীন আক্তার , একটি সরকারি কলেজের অধ্যাপিকা। দুই পুত্র আর এক কন্যা সন্তান। স্বামী ফরহাদ কিছু দিন হলো চাকরি থেকো অবসর নিয়েছেন। কিছু দিন আগে ছেলের বিয়ের করিয়েছেন। মেয়েকও বিয়ে দিয়েছেন।মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন না বলে, বলা যায় মেয়ে নিজের পছন্দে বিয়ে করে নিয়েছে । যাই হোক, সবাই সুখে আছে এটাই বড় পাওয়া। পরিপূর্ন সুখী একটি পরিবার বলা যায় পারভীনের সংসারকে।আসলে কি সত্যিই তাই! এই ভালো থাকার আবরণে কতোই না ক্ষত ঘোরাফেরা করে! প্রায়শই তা চোখে পড়লেও, না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে যান তিনি। স্বামী হিসেবে ফরহাদ খুব ভালো। কিন্তু বদরাগী আর পরিস্থিতি মেইন্টেইন করে চলতে পারে না। যাকে অসামাজিক বলা চলে। কিন্তু তিনি খুব নরম মনের মানুষ। তিনি নিজেকে বা অন্য কাউকেই অপরাধী ভাবতে পারে না খুব বেশি সময়। সব থেকে বড় কথা, তিনি পারভীনকে খুব ভালোবাসেন। সত্যিই কি তেমনটাই? এর মাঝে গোপন কিছু নেই তো! আর পারভীন! তিনি কতটা ভালো থাকেন, এই হঠাৎ চড়ে উঠা মানুষটার সাথে! থাকে হয়তো ভালোই। স্বামীর পাশে শুয়ে লালন করে অন্য একটা মুখ। রাত বাড়ার সাথে সাথে স্পষ্ট হয় সে মুখ। সে মুখের কাছে বাড়ে তার আবদার। পারভীন আর ফরহাদের মেয়ের নাম হেমলতা। প্রেম করে বিয়ে করেছে বলে পারভীন আর ফরহাদ কিছুটা রুষ্ট হলেও মানিয়ে নিয়েছে। অথচ স্বামী স্ত্রী কক্সবাজার থেকে ট্যুর করে ফিরে এসে মেয়ে হেমলতাকে দেখেন ছিন্নভিন্ন, লেপটানো অবস্থায়! কি হয়েছে পুতুলের মতো হেমার! গভীর বেদনায় পারভীনের অন্তর কুকড়ে যায়। অস্পষ্ট হয়ে যায় সামনের চিত্র! সব কিছুর মধ্য থেকেও সে যেন অথৈ সাগরে পরে যায়। চেষ্টাতেও সে দাড়াতে পারে নি! হাটু ভেঙ্গে বসে যায়! কঠিন থেকে কঠিনতর সে সময়। যার প্রাচীর ভাঙ্গবার মতো সামর্থ আজ পারভীনের নেই। হৃদয়নদী পাঠককে রুক্ষ-রূঢ় মধ্যবিত্ত জীবনের মুখোমুখি দাড় করাবে। একটা মধ্যবিত্ত পরিবারে একজন মহিলা তার অবস্থান থেকে কতোটা দৃঢ়, কতোটা সংযমী হতে পারে সে চরিত্র ফুটে উঠে পারভীন চরিত্রের মাঝে। লেখক তাকে মধ্যবিত্ত পরিবারের নারী চরিত্রের কেন্দ্রবিন্দু করে গড়ে তুলেন। বইয়ের উৎসর্গ পত্রে যার নাম, তিনি হলেন হুমায়ূন আহমেদ এর বোন সুফিয়া হায়দার। একদা সুফিয়া হায়দারের অভিযোগে, হরিশংকর জলদাস এই পারভীন চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেন। এর আগে তিনি লিখেছেন, জেলেদের নিয়ে, বেশ্যাদের নিয়ে, মেথরদের নিয়ে। চোর, বাটপাড়, লুচ্চা , কসবি, কোটনা আর সমাজের দরিদ্র, প্রান্তজন তাঁর কথাসাহিত্যের কুশীলব হয়েছে বারবার। অথচ এই গল্পটা ছিল এই সব চরিত্রের একেবারে ভিন্ন। এই গল্পে যাকে নিয়ে গল্প ফাঁদলেন, তিনি হলেন এক মধ্যবয়েসী রমনী। যে কিনা পঞ্চাশ ক্রস করে চলছে। তিনি এই নারী চরিত্রের বহির্জগত আর অন্তরজগতকে তুলে ধরছেন কালো কালিতে। তাকে ঘিরে গল্পে ফুটিয়ে তুলেছেন মধ্যবিত্ত আর উচ্চবিত্তদের অবস্থান। যোগ সাজোশ সব কিছুতে। এই গল্পের মূল সূর এখানেই, যেখানে থাকে মধ্যবিত্তের দায়বদ্ধতা। গল্পে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কিছু কথা হয়েছে, বুঝতে পারছি না তা কতোটা যৌক্তিক। প্রচ্ছদ সুন্দর হয়েছে। তবে মধ্যবিত্তদের গল্পের টোনটা বোধহয় আরো সুন্দর হওয়ার কথা ছিলো। হরিশংকর জলদাস, নোনাজলের ডুবসাঁতারে যার জন্ম। প্রান্তবাসী পিতার ঘামঝরা শ্রমের টাকায় তাঁর পড়াশোনা। অপমানে লিখতে আসা। ডক্টরাল থিসিস 'নদী ভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্ত জনজীবন' - এ আত্মানুসন্ধান। লিখেছেন বিভিন্ন উপন্যাস।২০১২ সালে কথাসহিত্যিকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। রেটিং-৫/৫ রকমারি লিংক https://www.rokomari.com/book/125099/হৃদয়নদী
Was this review helpful to you?
or
চলনসই বই। তবে অন্যকে পড়তে বলার মত বই নয়। লেখকের আগের বইগুলি সমাজের নানা শ্রেনীকে নিয়ে ছিল, যেগুলির ভিতরের অনেক কথাই আমার অজানা ছিল বলে-পুলকিত হয়ে ভেবেছি, আরে এও সম্ভব। কিন্তু মধ্যবিত্ত এক শিক্ষক পারভীন কে আবর্তিত এই উপন্যাস আমাকে তেমন কিছু দেয়নি। দিনশেষে মনে হয়েছে, মধ্যবিত্তের জীবন নিয়ে আরও ভালো উপন্যাস হচ্ছে, হবে। বরঞ্চ লেখক যদি আগের মত নানা কুঠির নানা জাতের উপন্যাস তুলে ধরে আনতে পারেন-সেটাই ভাল।
Was this review helpful to you?
or
‘হৃদয়নদী’ হরিশংকর জলদাসের লেখা একটি বই । হরশংকর জলদাস এর জন্ম ১৯৫৫ সালে চট্রগ্রামের পতেঙ্গায় । তিনি অধ্যাপনার কাজে ছিলে, পরে বিভিন্ন সমস্যার কারনে সেই কাজ ছেড়ে হাতে কলম তুলে নেন এবং একে একে লিখে ফেলেন কয়েকটি অসাধারন বই । তিনি সবসময় দলিত মানুষদের নিয়ে লেখালেখি করেন । তিনি নিজেও প্রান্তিক সমাজের মানুষ, অসাধারন নিজস্ব ভাষা দিয়ে তিনি তার কথাসাহিত্যের জগত তৈরী করেছেন । সাহিত্যকর্মের জন্য পেয়েছেন আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য ইত্যাদি । কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন ২০১২ সালে । হৃদয়নদী বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । বইটি প্রকাশিত হয় অবসর প্রকাশনা সংস্থা থেকে এবং এর প্রকাশক এফ রহমান । প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা । হরিশংকর জলদাস এর আগে লিখেছেন জেলেদের নিয়ে , বেশ্যাদের নিয়ে , মেথরদের নিয়ে ।চোর বাটপার লুচ্চা এই ধরনের বিভিন্ন লেখা তিনি তার আগের বইগুলোতে লিখেছেন । এবার সে একটু আলাদা ধরনের লেখা লিখেছেন। হৃদয়নদী বইটি তে তিনি উপস্থাপন করেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী পারভীন আক্তার কে । তিনি বইটি তে পারভীন আকতার এর আন্তর্জীবন আর বর্হিজীবন নিয়ে লিখেছেন , তিনি একটি সরকারী কলেজের অধ্যাপক । স্বামী পুত্র কন্যা নিয়ে তার সুখের সংসার বলে চালিয়ে দেওয়া যায় । কিন্তু সমস্যা একটাই , সে একটি কঠিন সমস্যায় ভুগে , নিশীথে অক্ষম স্বামীর পাশে শুয়ে শুয়ে সে চিন্তা করে আরেকজন কে । তার প্রেমিক নিখিলেশ এর সাথে সে তার জীবনের সুখ দুঃখ ভোগ করে নিতে চায় । এইরকম সমস্যার পরে সে আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয় । আমাদের জীবনে যা এখন ঘটেই যাচ্ছে । অসাধারন এ উপন্যাস টি পাঠক দের নিকট ভালো লাগবে ।