User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
"গৌরীপুর জংশন" হুমায়ূন আহমেদের একটি অসাধারণ সৃষ্টি, যা পাঠকদেরকে প্রেক্ষাপটের গভীরতায় প্রবাহিত করে। এই উপন্যাসটি কেবল একটি স্থান নয়, বরং এটি জীবনের অভিজ্ঞতা, সম্পর্ক এবং মানব মননের একটি সুন্দর চিত্র। লেখক তাঁর পরিচিতি এবং চরিত্রগুলোর মধ্যে একটি নৈকট্য সৃষ্টি করেছেন, যা পাঠকদেরকে তাদের অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত করে। হুমায়ূন আহমেদ অতি দক্ষতার সঙ্গে গল্পের মাধ্যমে গৌরীপুরের পরিবেশ, মানুষের স্বপ্ন ও কষ্টগুলোকে তুলে ধরেছেন। তার বর্ণনা এবং ভাষা এতটাই প্রাণবন্ত যে, পাঠকরা মনে করেন তারা সেখানে উপস্থিত এবং চরিত্রগুলোর অনুভূতি তাদের হৃদয়ে বাজে। এই উপন্যাসের মূল নায়ক গৌরীপুর, যা কাহিনীর কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে, একটি অদ্ভুত অথচ অতি পরিচিত জংশন—যেখানে জীবন এবং সম্পর্কের জটিলতা প্রবাহিত হচ্ছে। গৌরীপুরের মাধ্যমে আহমেদ আমাদের সমাজের নানা স্তরের মানুষদের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতাকে প্রাঞ্জলভাবে তুলে ধরেছেন। এটি মানব জীবনের বাস্তবতা এবং সহজাত সম্পর্কের মোড়কে গড়া একটি সঠিক এবং সুন্দর চিত্র। "গৌরীপুর জংশন" কেবল একটি গল্প নয়; এটি একটি অনুভূতি, একটি যাত্রা, যেখানে মানব জীবনের নানা দিকের সুন্দর ও দুঃখের মিলন ঘটে। যারা জীবনের নানান রূপ ও সম্পর্কের সন্ধানে রয়েছেন, তাদের জন্য এই বইটি একটি অপরিহার্য পাঠ্য। হুমায়ূন আহমেদের এই সৃষ্টি বাংলা সাহিত্যে একটি ঐতিহাসিক স্থান দখল করেছে, যা পাঠকদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
Was this review helpful to you?
or
Book is really good. Satisfied to get the book
Was this review helpful to you?
or
জীবনের বাস্তবতাকে নিয়ে লেখা এই বইটি সত্যই অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
বেস্ট
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন স্যারের বই বরাবরই আমার ভালো লাগে। এই বইটি পড়ার পর মনে হচ্ছে বইটা আরেকটু বাড়িয়ে লিখলেই হয়তো ভালো হতো। কৌতুহল রয়ে গেল, জয়নালের কি হলো, বজলু অনুফা আর শাহিদা কোথায় সেটা জানার জন্য। বাস্তবজীবনের কুলি মজুরদের জীবন ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি নিখুঁত ভাবে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ন আহমেদ মানেই❤️
Was this review helpful to you?
or
"Underrated One" of Humayun Ahmed Sir. The way he portrayed the daily life of people who live in a train station, their sorrow & sufferings, their uplook toward others is just mind blowing. There are some lines which really can touch you emotionally. Why this book is not that much discussed within Humayun lovers is still beyond my understanding. Almost a must read book l wanna say. Happy Reading!
Was this review helpful to you?
or
ছোট বই, তবে পড়াই যায়। বইয়ে একটু slang language এর ব্যবহার বেশি?। তবে পড়ে ভালো লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
onnorokom ekti golpo<3
Was this review helpful to you?
or
Good
Was this review helpful to you?
or
Bhalo.
Was this review helpful to you?
or
khub sundor akta Boi... story ta khub Sundor....apnara chaila nita paran....??
Was this review helpful to you?
or
always love Humayun Ahmed's book
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদ এর বই নিয়া বলমু--- সেই সেই--
Was this review helpful to you?
or
valo
Was this review helpful to you?
or
valo :-)
Was this review helpful to you?
or
Not very interesting
Was this review helpful to you?
or
?
Was this review helpful to you?
or
আমার পছন্দের উপন্যাসের একটি
Was this review helpful to you?
or
ছোট একটা উপন্যাস তবে বাস্তবতা সম্বলিত, যে একদমই একঘেয়েমি লাগবেনা।
Was this review helpful to you?
or
মোটামুটি ভালোই..
Was this review helpful to you?
or
গল্পটা অসাধারণ, হুমায়ুন আহমেদের অন্যতম সেরা উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
sromojibi srenir golpo , great
Was this review helpful to you?
or
Amazing book.
Was this review helpful to you?
or
oshadharon ekti boi.Humayun ahmed sir er onoboddo likhagulir moddhe ekti.tobe rokomaarir service niye ektu dissatisfied. tader delivery companir kaaj khubi unprofessional.ei bishoye sotorkota thaka dorkaar.
Was this review helpful to you?
or
✌️❤️❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
ভালো লাগলো বইটি পড়ে
Was this review helpful to you?
or
awesome book
Was this review helpful to you?
or
Thanks a lot.
Was this review helpful to you?
or
ok
Was this review helpful to you?
or
quality onek valo delivery Tara Tari paisi thanks rokomari
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম স্থান দখল করে আছেন। একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এ মানুষটিকে বলা হয় বাংলা সায়েন্স ফিকশনের পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বেশ সমাদৃত। বাদ যায়নি গীতিকার কিংবা চিত্রশিল্পীর পরিচয়ও। সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল। অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ সফলতা এবং তুমুল জনপ্রিয়তা।
Was this review helpful to you?
or
Onek valo lagse book ta
Was this review helpful to you?
or
valoi
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ ভালো ছিলো
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
চমৎকার একটি বই❤
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের "গৌরীপুর জংশন" উপন্যাসটি একটি ছোট রেল স্টেশনকে কেন্দ্র করে রচিত। তিনি তার স্বভাবসূলভ রসিকতা আর বাস্তবতার নিরিখে স্টেশনের মানুষের প্রক্রিত রুপটাই এই উপন্যাসে তুলে ধরেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে তিনি আমাদের প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ বলেই। গৌরীপুর জংশন বইটিকে আমরা উপন্যাস বলেই জানি, বাট এটাকে আমি বড় একটি গল্পই বলতে চাই। অর্থাৎ একই বইয়ে পাঠক বড় গল্প এবং উপন্যাস দুইটারই স্বাদ পাচ্ছেন।
Was this review helpful to you?
or
বইঃ গৌরীপুর জংশন লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ প্রকাশনাঃ কাকলী প্রকাশনী হতে প্রকাশিত । মূল্যঃ ৯০ টাকা একটি জংশনে থাকা কর্মচারী, শ্রমিকের মতো মানুষদের নিত্য কথা নিয়ে বইটি সাজানো। তারা কি রকম পারিশ্রমিক পায় কিংবা তারা তাদের জীবিকা কীভাবে অর্জন করে এবং তাদের নানা ধরনের অনৈতিক কাজগুলো র বর্ননা উঠে এসেছে বইটিতে। এই বইটির নামকরন করেছেন বিখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুন।
Was this review helpful to you?
or
Oshadharon ekti book humayun ahmed sir er sobgula boi e oshadraron
Was this review helpful to you?
or
একটা বড় স্টেশন।একটা ছোট ছেলে।একজন গল্পের নায়ক যার কীনা পায়ে সমস্যা।এগুলি কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আরো কয়েকটি চরিত্র ও জীবন। জংশনের পরিত্যক্ত গাড়ি গুলির মধ্যে কুলি কপোতদের বসবাস আরো কত কী?মূলত এ গল্পে স্টেশনে পড়ে থাকা মানুষগুলোর জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে।জীবন চালাতে তাদের কত যুদ্বে করতে হয় তা ফুটে তুলেছেন হূমায়ূন আহমেদ কোমল হাতে।
Was this review helpful to you?
or
গৌরীপুর জংশন হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম একটা মাস্টারপিস। মাস্টারপিস বলার কারণ গল্পটি মূলত একটি রেল স্টেশনের ছোট ছোট সাধারণ গল্প নিয়ে লেখা যা হয়তো আমরা প্রতিনিয়তই কমবেশি দেখেও এড়িয়ে যাই ৷ লেখক সেই সাধারণ জিনিষগুলোকেই লিখেছেন অসাধারণ ভঙ্গিমায়। বলা যায় সাধারণত হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য বইয়ের চেয়ে এই বইটি একেবারে ব্যতিক্রম। লেখক স্টেশনকে ঘিরে সমাজের নিচুতলার মানুষদের কথা তুলে ধরেছেন উপন্যাসটিতে। উপন্যাস বলাটা আসলে ঠিক হচ্ছে কিনা জানিনা। কারণ বইটি একদম ছোট একটি বই। উপন্যাসের মতো বিস্তৃত পটভূমি বা চরিত্রের বর্ণনা নেই বইটিতে। তবে উপন্যাস বা বড় গল্প যাই বলি না কেন স্বার্থক একটি বই বলতেই হবে। পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে বইটি শেষ করে ভালো লাগা বা মন্দ লাগার অনুভূতি হয়তো হবে না। তবে কিছু বই আছে একদমে পড়া যায় এবং পড়া শেষে বইয়ের চরিত্রগুলোর জন্য একটা দীর্ঘশ্বাস আসে। ঠিক সেইরকম একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
স্টেশনে জীবন পার করে দেয়া লোকেদের জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার এক যাত্রার নাম গৌরীপুর জংশন। '৮০ এর দশকের প্রছন্ন একটা স্বাদ সাথে লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর সাবলীল ও সুন্দর লেখার মাধ্যমে অত্যন্ত সুপাঠ্য বই হিসেবে মনের কোনে গেঁথে আছে গৌরীপুর জংশন। আশা করি সবাই পড়ে দেখবেন।
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
very interesting book. i like it very much. thank rokomari for give me this book at such a moment.
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ।লিখে বোঝানো কঠিন!!
Was this review helpful to you?
or
গৌরীপুর জংশন হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম একটা মাস্টারপিস। মাস্টারপিস বলার কারণ গল্পটি মূলত একটি রেল স্টেশনের ছোট ছোট সাধারণ গল্প নিয়ে লেখা যা হয়তো আমরা প্রতিনিয়তই কমবেশি দেখেও এড়িয়ে যাই ৷ লেখক সেই সাধারণ জিনিষগুলোকেই লিখেছেন অসাধারণ ভঙ্গিমায়। বলা যায় সাধারণত হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য বইয়ের চেয়ে এই বইটি একেবারে ব্যতিক্রম। লেখক স্টেশনকে ঘিরে সমাজের নিচুতলার মানুষদের কথা তুলে ধরেছেন উপন্যাসটিতে। উপন্যাস বলাটা আসলে ঠিক হচ্ছে কিনা জানিনা। কারণ বইটি একদম ছোট একটি বই। উপন্যাসের মতো বিস্তৃত পটভূমি বা চরিত্রের বর্ণনা নেই বইটিতে। তবে উপন্যাস বা বড় গল্প যাই বলি না কেন স্বার্থক একটি বই বলতেই হবে।পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে বইটি শেষ করে ভালো লাগা বা মন্দ লাগার অনুভূতি হয়তো হবে না। তবে কিছু বই আছে একদমে পড়া যায় এবং পড়া শেষে বইয়ের চরিত্রগুলোর জন্য একটা দীর্ঘশ্বাস আসে। ঠিক সেইরকম একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
'গৌরীপুর জংশন' হুমায়ুন আহমেদ এর এক অনবদ্য উপন্যাস। একটা ছোট রেল স্টেশনকে ঘিরে উপন্যাসটি লেখা হয়েছে। স্টেশনের মানুষের জীবন, তাদের সুখ, দুঃখ, আনন্দ বেদনা সব আছে বইটিতে। গল্পের প্রধান চরিত্রএর নাম জয়নাল। পেশায় একজন কুলি ছিল। কিন্তু মধ্যবয়সী জয়নাল কুলির পেশা ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু পরে আছে স্টেশনে। স্টেশন তার জন্য বাড়ি। জয়নাল চরিত্র একটু অন্যরকম। গল্প যতো সামনের দিকে এগিয়ে যায় ততোই তার স্বার্থ পর দিক গুলো সামনে আসে। তবে হ্যা অনাথ বজলুর প্রতি তার টান, ভালবাসা যেন স্বার্থপর জয়নালের মধ্যেও ভালমানুষ আছে সেটাই জানান দেয়। 'গৌরিপুর জংশন' বইটিতে নিম্ম বিত্তদের জীবন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। মাত্র ৯০ টাকার বইটি আপনাকে অন্যরকম একটা ফিলিংস দিবে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের এই উপন্যাসটি ছোট্ট একটি রেল স্টেশন গৌরীপুর জংশন কি নিয়ে আর্বতিত। প্রত্যহিক জীবনের যাপিত ঘটনাগুলোই এই উপন্যাসের উপজীব্য। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র স্টেশনে কুলি জয়নাল। চালের বস্তার ভার সইতে না পেরে তার কোমর ভেঙেছে। এখন সে কুলির কাজ করতে পারে না কিন্তু স্টেশনও ছাড়তে পারে না কারণ যাওয়ার মত জায়গা নেই তার। অনুফা রমজান,বজলু উপন্যাসের কয়েকটি চরিত্র যাদেরকে ঘিরে জয়নালের প্রাত্যহিক জীবন আবর্তিত হচ্ছে।
Was this review helpful to you?
or
রিভিউ: গৌরীপুর জাংশন লেখক: হুমায়ুন আহমেদ স্টেশনে বসবাসরত শ্রমিকদের জীবনকাহিনীই হলো এই গল্পের মূল প্রতিপাদ্য। গল্পের প্রধান চরিত্র গৌরীপুর স্টেশনে "কুলি" শ্রেণির অন্যতম এক শ্রমিক জয়নাল। যেই বাবার হাত ধরে এই স্টেশনে বসবাস,সেই বাবার মৃত্যুর পর থেকে বহু বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করে সে। নিজের ভরনপোষণের জন্য দূর্নীতিরও আশ্রয় নিয়েছে সে। সমাজে এই শ্রেণির মানুষদের জীবনসংগ্রামের কথাই প্রতীকী চরিত্র জয়নালের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। পরিশেষে অন্যের করা দূর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের এক নিষ্ঠুর পরিণতির শিকার হতে হয় জয়নালকে। জয়নালের মতোই এরকম অসংখ্য শ্রমিকের অনিশ্চিত জীবনযাপনের মাধ্যমেই প্রতিনিয়ত প্রভাবিত হয় রেলস্টেশনগামী যাত্রীদের যাত্রাপথ।
Was this review helpful to you?
or
Humayun Ahmed er "Gouripur junction" uponnas ti te chomotkar vabe fute uthese rail station e thaka doridro manush gular jibon kahini. Uponnastir kendrio choritro Joynal. Se moddho boyosko akjon Kuli. Bojlur proti tar onek maya. Mal babu r signal man Romjan er sathe Joynal er khub vab. Matro 42 page er boiti ak nissash e pore sesh korar moto. Gouripur Junction er Joynal k jante portei hobe boiti. Valo lagbe asha kori.
Was this review helpful to you?
or
বই : গৌরীপুর জংশন। লেখক : হুমায়ূন আহমেদ। প্রকাশনী : কাকলী। প্রকাশকাল : ১৯৯৫। মুদ্রিত মুল্য : ৯০ টাকা। পৃষ্টা : ৪২। #পাঠ_আলোচনা নন্দিত কথাসাহিত্যিক, গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের আশির দশকের মাঝামাঝি তে রচিত গৌরীপুর জংশন। গল্পের পটভূমি হলো এক ছোট গ্রামের রেল স্টেশন কে কেন্দ্র করে। স্টেশনে বসবারকারী ভাসমান ছিন্নমূল মানুষ ও তাদের জীবন জীবীকার গল্প। যেখানে একজন মানুষ কে কুলির খাতায় নাম তুলতেও লেনদেন করেই নাম লিখাতে হয়। রোজগারের অর্ধেক ভাগ অন্যকে দিয়ে দিতে হয়। গল্পে জয়নাল একটি বর্ণীল চরিত্র। যেমন এক দিকে সে প্রচন্ড সার্থপর,চাটুকার। অন্য দিকে তার মনের গহীনে লুকিয়ে আছে স্নেহ মায়া প্রেম। ভদ্রলোক কে সে বেকায়দায় ফেলতে পছন্দ করে,মজা পায়। জীবন সংগ্রমে চলার পথ যাকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলেছে। তবুও সে নিজেই যেখানে খেতে পায় না, সেখানে অনাথ শিশু বজলুকে ঠাই দিয়েছে নিজের আশ্রয়ে। সে নিজে পঙ্গু হলেও ধূর্ততায় পটু। আগে সে এমন ছিল না। তার এই পঙ্গুত্ব তাকে চোর বানিয়েছে। মালবাবু ও সিগন্যাল ম্যান রমজান জয়নাল কে বিপদে নানা ভাবে সাহায্য করেছেন। জয়নাল এদের যথেষ্ট খাতির করে, তাই সে তাদের জন্য কিছু করতে চায়। সাহায্য করতে চায় তার এককালের বউ অনুফা কেও। কিন্তু সে কি বা করতে পারে? তার সামর্থ্য ই বা কি? এমন নানা অপারগতা অসহায়ত্ব আর নানা ঘাত প্রতিঘাত নিয়েই এগিয়ে চলে গৌরীপুর জংশনের গল্প। উপন্যাস হলেও এটা ছোট গল্পের আদলে রচিত যেনো এক বড় গল্পই । এত ছোট গল্প যে কাহিনী সংক্ষেপ লিখাও ভারী মুশকিল। মিসির আলি, হিমু, শুভ্রর মত শক্তিশালী অন্যান্য চরিত্রের ভীরে জয়নাল যেন হারিয়েই গেছে। আসুন জানি "গৌরীপুর জংশন" এর জয়নাল কে। উন্মোচন করি কথার জাদুকরের আর এক অমর সৃষ্টি কে। ???বই হোক ভালোবাসার প্রতীক???
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ : গৌরীপুর জংশন
Was this review helpful to you?
or
স্টেশনের নাম "গৌরীপুর জংশন"। দেশের অন্য স্টেশনগুলার মতোই ব্যস্তবহুল একটি স্টেশনে। স্টেশনে থাকা মানুষগুলোকে নিয়েই লেখা এই বই। তাদের প্রতিদিনের জীবনযাপনের সেই চিত্রই লেখক তার লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন। সেই মানুষগুলার সংগ্রামী জীবন, বেচেঁ থাকার গল্পই উঠে এসেছে এই লেখায়। এই গল্পের প্রধান চরিত্র কুলি জয়নাল। জয়নাল এই স্টেশনে প্রথম পা রাখে তার বাবা এবং ছোট বোনকে নিয়ে। বাবা একদিন জয়নাল আর তার ছোট বোনকে রেখে পরপারে চলে যায়। তার পরের বছর ছোট বোনটাও চলে যায়। স্টেশন মাস্টারের বাসায় কাজ করতো বোনটা। এখন জয়নাল একা! না না ভুল বললাম। এতোদিন একা ছিলো। কিন্তু এখন তার সাথে বজলু নামেরর এক ছেলে এসে জুটেছে। বাবা-মা নেই। জয়নালই এখন ছেলেটির অভিভাবক। প্রথম কয়দিন ছেলেটিকে বিরক্ত লাগলেও কেমন একটা মায়া পরে যায় ছেলেটির উপর। তাই এখন নিজের কাছেই রাখে বজলুকে। জয়নাল এক সময় মালামাল টানতে পারতো প্রচুর। এখন আর পারে না। এক এক্সিডেন্টে কোমরে ব্যাথা পায়, পা অচল হয়ে যায়। এখন চুরি-চামারি করে, স্টেশনের লোকদের টাকা মেরে পেট চালায় জয়নাল। এই জয়নালের আর বজলুর জীবনকাহিনী নিয়েই লেখা এই গল্প। এছাড়াও আছে জয়নালের স্ত্রী অনুফার কথা, কুলিদের সর্দার হাশেমের কথা, পয়েন্টসম্যান রমজানের কথা, স্টেশনের মালবাবুসহ অনেকের কথা। কি এক অদ্ভূত তাদের জীবন চলার পথ! সেই কথাই উঠে এসেছে এই গল্পে!
Was this review helpful to you?
or
Not a good read but still it's Humayun Ahmed.
Was this review helpful to you?
or
নামঃ গৌরীপুর জংশন লেখকঃহুমায়ূন আহমেদ ধরণঃ সমকালীন উপন্যাস প্রকাশনী: কাকলী প্রকাশনী মূল্যঃ৯০ ৳ ভূমিকাঃ " আমি আমার গ্রন্থের নামকরণে অনেকবার কবিদের কাছে হাত পেতেছি। এবার হাত পাতবার আগেই নাম পেয়ে গেলাম। কবি নির্মলেন্দু গুন পান্ডুলিপি পড়ে নাম দিলেন- গৌরীপুর জংশন। তাঁকে ধন্যবাদ।" হুমায়ূন আহমেদ ৭-৫-৯০ শহীদুল্লাহ হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নব্বই দশকে রচিত এই উপন্যাসের কাহিনীর বুনন প্রণীত হয়েছে নিম্নবিত্ত সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে।লেখক উপন্যাসের স্থান নির্ধারণ করেছেন গৌরীপুরের এক রেলস্টেশন এবং ছোট ছোট চরিত্রের মাধ্যমে কাহিনী তৈরী করেছেন। মূল চরিত্র চল্লিশ বছরের কুলি জয়নাল, যে এক দুর্ঘটনায় প্রায় পঙ্গু হয়ে যায়।তার দিন চলে যাত্রীদের মালামাল চুরি করে।একদিন দশ বস্তা চিনি চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয় জয়নালের কাছের মানুষ মালবাবু,ফেরারী হয়ে যায় কুলি সর্দার হাশেম,দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয় লাইনম্যান রমজান।ঠিক কি কারণে জয়নালের চেনা মানুষগুলোর এই বদল?জয়নালের জীবনে দেহপসারিনী অনুফার ভূমিকা কি?জয়নালকে ঘিরে পতঙ্গের ওড়াউড়ি বলতে লেখক কি বুঝিয়েছেন? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ হুমায়ুন আহমেদ-এর এই উপন্যাসটা তাঁর অন্য সব উপন্যাসের মতো নয়।মজার ব্যাপার হচ্ছে এই উপন্যাসে কোনো সরাসরি নারী চরিত্র নেই,যা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আশ্চর্যের বিষয় বড় গল্পের মোড়কে লেখা এই উপন্যাস খুব কম পাঠকই পড়েছেন,অথচ "গৌরীপুর জংশন"-এর মতো বাস্তবধর্মী উপন্যাস যাতে অতিমাত্রায় বর্ণনা নেই,অথবা মনে দাগ কেটে যাওয়া ব্যাপার লেখকের খুব কম রচনাই আছে। তাই আমার মতে এর রেটিং-৩.৫/৫
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ গৌরীপুর জংশন বইয়ের ধরণঃ সমকালীন উপন্যাস লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ প্রকাশনীঃ কাকলী প্রকাশনী প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ পৃষ্ঠাঃ ৫১ মূল্যঃ ৮১ টাকা সার-সংক্ষেপঃ গৌরীপুর জংশন। একটি স্টেশন। যেখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসে। যেখান থেকে কেউ রওনা দেয় তাদের গন্তব্যের দিকে। কেউ গন্তব্যে ফিরে আসে। কেউবা গন্তব্যহীনভাবে থেকে যায় প্লাটফর্মেই। গল্পটা সেই সব মানুষেরই সুখ, দুঃখ, হাসি, আনন্দ নিয়ে। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ "-ইস্কুলে যাইতে মন চায়? -জী -মন চাইলেই তো হয় না ব্যাটা। ভাইগ্যের ব্যাপার। ভাইগ্যে থাকলে হয়। না হলে হয় না..." গৌরীপুর জংশন লেখক হুমায়ুন আহমেদের নব্বই দশকের উপন্যাস। গল্পটা শুরু হয় জয়নাল আর তাঁর সাথে থাকা ছোট্ট একটি ছেলে বজলুকে নিয়ে। এরা দুজনই গৌরীপুর জংশনে থাকে। স্টেশনেই থাকে, সেখানেই ঘুমায়। বাড়ি ঘর নেই। নেই কোন ভালো জামা কাপড়ও। শীতের রাতে চটের বস্তা গায়ে দিয়ে ঘুমায় তারা। জয়নাল আগে কুলি ছিল। কাজ করত এই স্টেশনে। একবার এক চালের বস্তা পিঠে পড়ে তাঁর একটি পা অচল হয়ে যায়। তখন থেকে সে বেকার। অন্যদিকে বজলুও একটি ঘরছাড়া ছেলে। জয়নালকে দেখার পর থেকেই সে তার পিছে পিছে ঘুরে বেড়ায়। গৌরীপুর জংশন লেখক হুমায়ুন আহমেদের একটি ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস। তাঁর অন্যান্য উপন্যাস থেকে এটি বেশ আলাদা। আমাদের মত দরিদ্র দেশের প্রতিটি রেল স্টেশনের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে এই বইয়ে। একটি স্টেশনে ঘটে যাওয়া প্রতিদিনের ছোট ছোট ও খুব সাধারণ ঘটনাগুলো লেখক আকর্ষনীয় করে তুলেছেন তাঁর অসাধারণ লেখনীর মাধ্যমে। তবে এই গল্পটি অনেকের কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। কারণ গল্পটি অন্যান্য গল্পের মত পরিষ্কার না। এন্টারটেইনিং ও না। গৌরীপুর জংশন লেখক হুমায়ুন আহমেদের অন্যতম পরিপক্ক লেখা। গল্পটি প্রথম প্রথম অনেকের কাছেই হয়ত সাদামাটা মনে হবে। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় গল্পের গভীরতা অনেক বেশি। আমাদের চোখের সামনে নিয়মিত ঘটে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা যা আমরা কখনও দেখলেও লক্ষ্য করি না। অথচ লেখক সেই ছোট ছোট ঘটনাগুলোকেই নিয়ে এসেছেন তাঁর এই উপন্যাসে। তাই পাঠকদের উদ্দেশ্যে আমার একটি ছোট্ট অনুরোধ,"গৌরীপুর জংশন" বইটি পড়ার পর ২ মিনিট বইটি নিয়ে ভাববেন। কথা দিচ্ছি আপনি মানতে বাধ্য হবেন এটি লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর অন্যতম মাস্টারপিস! :) এছাড়া বইটির বাইন্ডিং, কাগজের মান ভালো। তবে প্রচ্ছদটা আরেকটু ভালো হলে ভালো হত। আকর্ষনীয় ব্যাপারটা কম মনে হয়েছে। সব শেষে বলতে চাই, যারা যারা এখনও পড়েন নি, শীঘ্রই পড়ে ফেলুন। নাহলে অসাধারণ একটি বই মিস করবেন! :) নিচে লিঙ্ক দিয়ে দিলাম... ;) https://www.rokomari.com/book/1238/গৌরীপুর-জংশন রেটিংঃ ৪/৫
Was this review helpful to you?
or
জয়নাল স্টেশনের এক কুলি। সম্প্রতি কোমরে বস্তা পড়ে তার পা অচল । চেয়ে-চিন্তে বা ছোটখাটো চুরি-বাটপারি করে এখন তার দিন কাটে। আগে তেজি শরীর ছিল। বিস্তর মাল বইত। বাইরে অন্য কাজও করেছে। অল্প কিছুদিনের সংসারজীবনের অভিজ্ঞতাও আছে তার ঝুলিতে। এখন সেসব শুধুই স্মৃতি। আমাদের পরিচিত কাহিনির জগৎ আসলে ভদ্রলোকদের জগৎ। হয় ভদ্রলোকের কাহিনি, নয়তো ভদ্রলোকের দৃষ্টিতে দেখা ছোটলোকের কেচ্ছা। ছোটলোকের কাহিনি বলার ক্ষেত্রে লেখকের অভিজ্ঞতার বর্ণাঢ্যতা এবং সহানুভূতি আমাদের বিস্ময় জাগাতে পারে। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহু রচনায় এ বস্তুর দেখা মেলে। কোনো বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির জিম্মায় নিখাদ বাস্তববাদী বয়ানেও গরিব মানুষের গল্প বলা যায়। জয়নালের কথকতা প্রকাশ করেছেন লেখকের নিজের বয়ানে। এটা হুমায়ূনের একধরনের সমঝোতা—পাঠকের জন্য বর্ণনাকে অপেক্ষাকৃত আরামদায়ক করে নেওয়া। কিন্তু এ সারল্য তারল্যকে প্রশ্রয় দেয়নি। লেখক বর্ণনাটা করেছেন, কিন্তু কোথাও সবজান্তা লেখকসত্তার সুবিধাটা নেননি। জয়নালের নিচু অবস্থান থেকে, পাশ থেকে ঘটনাগুলো বর্ণিত হয়েছে। লেখকের অবস্থান বা ওপর থেকে নয়; জয়নালের অনুপস্থিতিতেও নয়। যেমন চুরির ঘটনার পর স্টেশনে পুলিশ আসে। চুরি করেছে এ অঞ্চলের বিখ্যাত ঠগ ইয়াদ আলি। ঘটনাটা বর্ণনা করেছেন লেখক। বলেছেন : ‘এই ভীড় এবং হট্টগোলের মাঝে ইয়াদ আলির সাগরেদ কনের দু’টি স্যুটকেস নামিয়ে ফেলল। নামাল সবার চোখের সামনে কেউ তা দেখলও না। জয়নাল শুধু বলল, ব্যাটা। সাবাস।’ জীবনের অভিজ্ঞতার কারণেই জয়নালের দৃষ্টিভঙ্গিতে একটা ঔদার্য এসেছে। এ ঔদার্য আসলে লেখক হুমায়ূনেরই বৈশিষ্ট্য। ভালো-মন্দের প্রচলিত-প্রতিষ্ঠিত ছকে তিনি কথা সাজান না। চরিত্র বা ঘটনাকে নিজের কবজায় এনে একস্বরী করে ফেলেন না। জয়নালের মধ্যে তিনি নিরীহ ভালো মানুষ আবিষ্কার করেননি; আবার ধূর্ত শয়তানরূপেও তাকে দেখেননি। জয়নাল সব-অর্থেই সীমিত জীবন যাপন করে। তাকে ছেড়ে গিয়ে অনুফা যে অন্য একজনকে বিয়ে করেছে, সেখানেও টিকতে না পেরে তার ঠাঁই হয়েছে পাড়ায়—তার জন্য সে অনুফার প্রতি কোনো ধরনের বিরাগ পোষণ করে না। নিজের অক্ষমতাকে সে মেনে নেয়।/ বাংলা সাহিত্যে অন্যতম প্রাণপুরুষ কালজয়ী লেখক হুমায়ূন আহমেদ তার লেখনিতে গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনের বাস্তব চিত্র তোলে ধরে লিখেছিলেন ‘গৌরীপুর জংশন’ উপন্যাসটি। নন্দিত এই লেখক নিজবাড়ি কেন্দুয়া কিংবা মামাবাড়ি মোহনগঞ্জ যাওয়ার পথে গৌরীপুর জংশন স্টেশন হয়ে যেতেন। এক সময় এই অঞ্চলের রাস্তাঘাট তেমন উন্নত ছিল না। রেলই ছিল প্রধান বাহন। আর সেই সুবাদে নন্দিত এই কথাসাহিত্যক গৌরীপুর স্টেশনে রাত্রি যাপন করতে গিয়ে গৌরীপুরের স্মৃতিকে ধরে রেখে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের কিছু চিত্র তুলে ধরে রচনা করেন ‘গৌরীপুর জংশন’ উপন্যাসটি।
Was this review helpful to you?
or
জয়নাল শীতের রাতে ষ্টেশনই ঘুমায়। একসময় সে কুলি ছিল। তিন মোনি একটা বস্তা তার পিঠে পরে সে অচল হয়ে যায়। এখন তার একটা পা শুকিয়ে গেছে। বজলু নামের ৮/৯ বছরের এক টোকাই জয়নালের পিছনে ঘুর ঘুর করে। বজলুর চাচা তাকে এই ইস্টিশনে ফেলে রেখে গেছে। ইস্টিশানের মালবাবুর মুখ খুব খারাপ, গালি না দিয়ে কথাই বলেন না। কিন্তু মনটা খুব ভালো। কোমরে চালের বস্তা পরে যখন জয়নাল বিছানায় তখন এই মালবাবুর ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ কিনে দিয়ে জয়নালকে বাঁচিয়েছেন। ইয়াদ আলী ঠগবাজ লোক। ট্রেনে ট্রেনে বড় ধরনের ঠগবাজি করাই তার কাজ। একবার ট্রেনের বরযাত্রীদের সাথে থাকা অলংকার কৌশলে হাতিয়ে নেয় ইয়াদ আলীর দল। পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায় সব কুলিদের। ধরা পরে কুলিদের সরদার মোবারক। তিন দিন পরে সবাই ছাড়া পায়, কিন্তু মোবারক ছাড়াপায় সাত দিন পরে। পুলিশ তাকে এমন মার মারে যে সে আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। ইস্টিশনের নতুন সরদার হয় মোবারকেরই শাগরেদ হাশেম, এর জন্য সে মোবারককে খুন করে। লাইন-ম্যানের রমজান, লোকে ডাকে পাগলা রমজান। কিছুটা উলটাপালটা চিন্তা করে, বশিষ্ঠ উলটা চিন্তাবিদ। জয়নাল তাকে একটা চিন্তার কথা বলে- “সমস্ত প্রাণীর লেজ আছে, কিন্তু মানুষের লেজ নাই কেন?” এটা নিয়েই সে চিন্তা করতে থাকে। অনুফা জয়নালের প্রাক্তন স্ত্রী। জয়নাল অসুস্থ হওয়ার পরে যখন তার কোন ইনকাম ছিল না তখন বাধ্য হয়েই অনুফা একজন রিক্সাওলাকে বিয়ে করে। তারপর সে আবার বিয়ে করে একজন কাঠমিস্ত্রিকে। কিন্তু সেখানেও সে থাকতে পারল না। সব শেষে এখন বাজারু হয়েছে। তবুও জয়নাল মাঝে মাঝে অনুফার সাথে দেখা করতে যায়। একবার গিয়ে দেখে অনুফার ঘরে ছোটফুলি নামের আরেকটি মেয়ে রয়েছে। অনুফা চলে গেছে ঢাকায়। জয়নালকে ট্রেনের একজন মহিলা পানি আনার জন্য দুটি সুন্দর ফ্লাক্স দেয়, সে সেগুলি নিয়ে পালিয়ে যায়। সেগুলি বিক্রয় করে অনেকগুলি টাকা পায়। টাকা হাতে আসতেই সে নানা ভাবে সেই টাকা খরচ করতে শুরু করে। যতক্ষণ হাতে টাকা থাকতে ততক্ষণই সে রাজা, মনটা থাকে উদার। হঠাত করেই ট্রেনের ওয়াগন লুট করে কারা যেন দশ বস্তা চিনি নিয়ে গেছে। পুলিশ এসে মালবাবু সহ আর ৫জন কুলিকে ধরে নিয়ে যায়। পুলিশ হাশেমকেও খুঁজছে। রমজানের ধারনা লুট করেছে হাশেম, লুটের সাথে সাথে আরেকটা খুনও করেছে। এভাবেই সমস্ত গল্পটা আবর্তিত হয় একটি ট্রেন ইস্টেশানকে কেন্দ্র করে।
Was this review helpful to you?
or
বেশ চমৎকার ভাবে কেন্দ্রীয় চরিত্র জয়নালকে বেশ কিছু শিক্ষণীয় ঘটনার মধ্যে দিয়ে লেখক অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। একইসাথে একাধিক মজাদার শব্দচয়ন পাঠকহৃদয়কে নিঃসন্দেহে হাসাবে। কিছু কিছু ঘটনার ভেতরের ঘটনা যা রহস্যের জন্ম দিবে। বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে লেখা একটি বই। সবার পড়া উচিৎ বলে মনে করি।
Was this review helpful to you?
or
ব্যতিক্রমী সুন্দর একটি গল্প। গল্পের মাঝে খুব সুন্দর সাবলীল একটা জীবন কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে আর তাছাড়া গল্পের মাঝে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর নিজস্বতায় কিছু লাইন এর মধ্যে দিয়ে জীবনের কিছু দিক স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই বইটি মুগ্ধ করার মতো।জ্ঞ্যানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বইটি যথেষ্ট উপযোগী।শুধু এই বিষয়ের ছাত্র না, সবাই এই বইটি সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে।শিখতেও পারবে অনেক কিছু।বইটি পড়ার পর ভালো লাগা কাজ করবেই।অনেক চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি।আমি সবাইকে রেফার করবো বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
গৌড়িপুর জংশন এর মধ্যে মোহনগঞ্জের কথা উল্লেখ করা আছে মনে হচ্ছে আমার বাড়ি তাই বইটাতে মোহনগঞ্জ লেখা দেখি আমি অনেকটাই আনন্দিত হই আর বইটাতে একদম নিজের ভাষা তে সব কিছু লেখা ঠিক যেন মনে হচ্ছিল গরিপুর ও ময়মনসিংহের লোকের কথা বলছিল কেমন যেন চোখের সামনে সবকিছু দেখতে পেলাম
Was this review helpful to you?
or
রেল স্টেশন, আশ্চর্য এক জায়গা। এক একটি স্টেশন এক একটি গল্প লিখে যায়। কত তার কথা, কত তার গল্প যেন ফুরোয় না। এই জায়গা টাকে ঘিরেই কিছু মানুষ বেঁচে থাকে, তাদের জগৎ টা এই স্টেশন এর গন্ডি টুকু তেই সীমাবদ্ধ। রেল গাড়ি চলবে মানেই তাদের পেটে ভাত জুটবে। এভাবেই স্টিশনের প্রাণ এই রেল গাড়ি কে নিয়েই একেক টি স্টিশনের গল্প গড়ে ওঠে। সেভাবেই গৌরীপুর জংশনের জয়নালের জীবনের এক ঝলক লেখক তার উপন্যাসে ফুটিয়ে তুলেছেন। আর দশ টা পাষাণ, হৃদয়হীন মানুষ গুলোর মত হয়তো সে না, একটু ভিন্ন প্রকৃতির এক মানব। এক রাতে জয়নালের কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকার দৃশ্য দিয়েই শুরু এই উপন্যাসের। জয়নাল যে একটু ভিন্ন তার পরিচয় আস্তে আস্তেই ফুটে ওঠে তার জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা মানুষ গুলোর মধ্য থেকেই। দারিদ্র সীমার সর্বনিম্ন স্তরে বাস করেও তার মনটা রাজা শব্দের মত ধনী।
Was this review helpful to you?
or
Could've been deeper & more complex, expectations were high as Gauripur is my native village, but somehow got disappointed
Was this review helpful to you?
or
Boiti pore khrp lage nei Railway station er bivinno ojana golpo. Hae bastobota kothin ei golpe ta futiye tola hyeche. Kintu Humayun Sir er onno boi er tulonay je khub sundor boi ta ami bolbo na. Railway station er bastobota ta ami ei boi porar age bujhi nei. Bola jay boi ta amr valo legeche abr valo o lage nei. Tai rating krle ami 3point dibo....
Was this review helpful to you?
or
ai boiti amar favourite acti boi. ai boi ami rokomari.com teke kine kub anondito. ai boi ti humayun ahmed sir ar darun acti boi. tai apni caile boiti porte paren
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস “গৌরীপুর জংশন” আশির দশকের একেবারে শেষ ভাগে রচিত। উপন্যাসের পটভূমি একটি ছোট রেল স্টেশন। স্টেশন-জীবনের প্রতিদিনকার বাস্তবতাই এ উপন্যাসের নায়ক। ছোট ছোট নানা ঘটনা উপন্যাসটির রচনাকালের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলেছে দারুণ। ভালোবাসা, মায়া, দুঃখ-কষ্টের সাথে শঠতা, দুর্নীতি, বিশ্বাসঘাতকতা মিলে গৌরীপুর স্টেশনের পাত্রপাত্রীরা এমন এক বাস্তবতা তৈরি করেছে যা মধ্যবিত্ত বাঙালির বাস্তবতার সাথে মেলে না। গল্পগুলো চেনা মনে হতে পারে, কিন্তু পুরো পরিস্থিতি এবং পরিবেশ মিলেমিশে এর চরিত্রগুলো ভিন্ন এক জগত নির্মাণ করেছে যা তাদের জন্য স্বাভাবিক। “গৌরীপুর জংশন” মধ্যবিত্তের চোখের সামনে থাকা ভিন্ন এক জগত এবং অন্য এক বাস্তবতার পর্দা উন্মোচন করেছে। হুমায়ূন আহমেদ বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া বিরল গোত্রের লেখকের একজন। তাঁর প্রায় সকল বই-ই বহুল পঠিত, তবু “গৌরীপুর জংশন” নিয়ে হুমায়ূন-প্রেমীদের মধ্যে চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায় না। অনেকের কাছে এটি অপঠিতই থেকে গেছে। ব্যাপারটি বিস্ময়কর, কারণ হুমায়ূন আহমেদ রচিত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর একটি “গৌরীপুর জংশন”। এ উপন্যাস নিয়ে পাঠকদের আপাত নীরবতা এটাই নির্দেশ করছে যে, এই উপন্যাসটি চিরায়ত হুমায়ূনীয় ফর্মুলায় রচিত হয় নি। এই উপন্যাসে নেই হিমুর মতো রহস্যময় চরিত্র, কিংবা মিসির আলী সিরিজের মতো আকর্ষণীয় রহস্য। এই উপন্যাসে কেবলই একটি নিভৃত স্টেশনের বসবাসরত নিম্নবিত্তের আটপৌরে জীবন উঠে এসেছে, যা অধিকাংশ মধ্যবিত্ত পাঠকের অচেনা। “গৌরীপুর জংশন”এর প্রধান চরিত্র জয়নাল। সে গৌরীপুর স্টেশনে বসবাসরত মধ্যবয়সী কুলী, যার যৌবন বিগত এবং ‘এখন যার দশা কোমর-ভাঙা কুকুরের মতো’। চালের বস্তা কোমরে পড়ে কোমর চেঙে যাওয়ার পর কুলীর জীবন ত্যাগ করেছে, কিন্তু স্টেশন ত্যাগ করে নি; কারণ কোথায়ই বা যাবে সে। জয়নাল বর্ণিল একটি চরিত্র। স্টেশনের অন্য সব চরিত্রের মতোই স্বার্থপরতা তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদ্যমান, কিন্তু অনাথ শিশু বজলুর জন্য দয়াময় একটি মনের দেখা পাই আমরা। বজলুকে নিজের সাথে রাখে, খাওয়ায়, জীবনে চলার জন্য নানা উপদেশ দেয়। মালবাবু আর সিগনাল-ম্যান রমজানের সাথে তার বেশ খাতির। নানান সময়ে তারা জয়নালকে নানানভাবে সাহায্য করেছে, জয়নাল এ সত্যটা কখনো ভুলতে পারে না, তাদের জন্য কিছু করার চিন্তা সবসময় তাকে ঘিরে থাকে। জয়নালের চরিত্রে অসদগূণগুলো তার নানা কর্মকাণ্ডে প্রকাশ পায়। স্টেশনের পুরনো সর্দার মোবারককে নিগৃহীত হতে দেখে আনন্দ পায়, পুলিশকে মোবারকের নাম বলে দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। কুলী-গিরি ছাড়ার পর মূলত চুরি করে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে নিয়েছে সে। ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকে চুরি করা ছাড়াও স্টেশনের মালবাবুর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ফেরত দেয় না সে। হুমায়ূন আহমেদ মূলত একজন নিম্নবিত্ত ছিঁচকে চোরের চরিত্র এঁকেছেন যার আছে এক আর্দ্র মন। “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাসটি লিখিত হয়েছে তৃতীয় পুরুষে। যদিও পুরো গল্প এগিয়েছে জয়নালের দৃষ্টিকোণ থেকে। এটা ইন্টারেস্টিং। কখনো কখনো তৃতীয় পুরুষ থেকে লাফ দিয়ে প্রথম পুরুষে চলে এসেছেন লেখক। এই রচনাকৌশল ছাড়াও উপন্যাসের ভাষার কাজ পর্যবেক্ষণ করার মতো। হুমায়ূন আহমেদের স্বভাবসুলভ হিউমারে পূর্ণ বর্ণনারীতি তো আছেই, সাথে আছে আঞ্চলিক ভাষার দারুণ সংমিশ্রণ। নিম্নবিত্তের মনোজগৎ নিয়ে পর্যবেক্ষণের উল্লেখযোগ্য উপাদান আছে আলোচ্য উপন্যাসে। মধ্য ও উচ্চবিত্তের চরিত্র নিয়ে জয়নালের দর্শন বেশ চমকপ্রদ। তার ভাষায় ওরা ‘ভদ্রলোক’। আমি মনে করি, ভদ্রলোকদের দয়ার উপরে সর্বদা নির্ভর করছে তার আর্থিক অবস্থা, এটা সে কখনো ভুলতে পারে বলেই মনে মনে তাদেরকে আক্রমণ করে আনন্দ খুঁজে পায়। কখনো কখনো সামনাসামনি অপমান করেও বেশ শ্লাঘা অনুভব করে জয়নাল। ভদ্রলোক বিপদে জয়নালের বড় ভালো লাগে। তার ভাষায়, ‘ভদ্রলোক বিপদের পড়ে চোখ বড়ো করে যখন এদিক ওদিক চায়,ফটাফট ইংরেজিতে কথা বলে তখন মজাই লাগে’। হুমায়ূন আহমদের প্রায় সকল পাঠকই মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তের কাতারে পড়বে, জয়নালের ভাষায় যারা ‘ভদ্রলোক’। নিম্নবিত্ত এক কুলী তার শ্রেণী সম্পর্কে কী ভাবছে তা জেনে একজন মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তের মনে কেমন অনুরণন সৃষ্টি হয় তা চিন্তাভাবনার বিষয় বটে। “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাস হিসেবে মুদ্রিত হলেও এটি মূলত একটি বড় গল্পের চরিত্র ধারণ করে। কারণ এই রচনায় উপন্যাসের বিস্তৃত পটভূমির উপস্থিতি নেই। “গৌরীপুর জংশন” লেখা হয়েছে মাত্র ৪২ পৃষ্ঠায়। এতো ছোট পরিসরে উপন্যাসের বিস্তৃত পটভূমি এবং চরিত্রের উপস্থিতি কোনোভাবেই বর্ণনা করা সম্ভব না। এর মধ্যে গল্পের প্রথম বারো পৃষ্ঠা ব্যবহৃত হয়েছে পটভূমি ও পরিবেশের বর্ণনা এবং চরিত্র উপস্থাপনে। তাছাড়া একটি আদর্শ উপন্যাসে বিভিন্ন ঘটনা ও পরিপার্শ্বের চাপে চরিত্রের যে বিবর্তন ঘটে, তাও “গৌরীপুর জংশন”এ উপস্থিত। তাই আমার মতানুসারে, “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাসের মোড়কে একটি সফল বড় গল্প। সার্থক বড় গল্পের অসম্পূ
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুনের লেখা এ বইয়ের মধ্যদিয়ে ফূটে উঠেছে এক অংশ শ্রমিক সম্প্রদায়ের জীবিকার উপজীব্য বিষয়। আলোচ্য উপন্যাসে হুমায়ুনের সাম্যবাদী মানসিকতার পরিচয় ফুটে উঠেছে। মানুষ নিজের জন্য বাজিও ধরে কিন্তু নিরন্ন অসহায়কে তারা সামর্থ্য থাকার পরও তাদের পারিশ্রমিক দিতে চায় না। মানুষের চেয়ে বড় কিছু যে আর হতে পারে না হুমায়ুনও সে কথাই বলে।
Was this review helpful to you?
or
স্টেশনে বসবাসরত শ্রমিকদের জীবনকাহিনীই হলো এই গল্পের মূল প্রতিপাদ্য। গল্পের প্রধান চরিত্র গৌরীপুর স্টেশনে "কুলি" শ্রেণির অন্যতম এক শ্রমিক জয়নাল। যেই বাবার হাত ধরে এই স্টেশনে বসবাস,সেই বাবার মৃত্যুর পর থেকে বহু বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করে সে। নিজের ভরনপোষণের জন্য দূর্নীতিরও আশ্রয় নিয়েছে সে। সমাজে এই শ্রেণির মানুষদের জীবনসংগ্রামের কথাই প্রতীকী চরিত্র জয়নালের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। পরিশেষে অন্যের করা দূর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের এক নিষ্ঠুর পরিণতির শিকার হতে হয় জয়নালকে। জয়নালের মতোই এরকম অসংখ্য শ্রমিকের অনিশ্চিত জীবনযাপনের মাধ্যমেই প্রতিনিয়ত প্রভাবিত হয় রেলস্টেশনগামী যাত্রীদের যাত্রাপথ।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস “গৌরীপুর জংশন” আশির দশকের একেবারে শেষ ভাগে রচিত। উপন্যাসের পটভূমি একটি ছোট রেল স্টেশন। স্টেশন-জীবনের প্রতিদিনকার বাস্তবতাই এ উপন্যাসের নায়ক। ছোট ছোট নানা ঘটনা উপন্যাসটির রচনাকালের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলেছে দারুণ। ভালোবাসা, মায়া, দুঃখ-কষ্টের সাথে শঠতা, দুর্নীতি, বিশ্বাসঘাতকতা মিলে গৌরীপুর স্টেশনের পাত্রপাত্রীরা এমন এক বাস্তবতা তৈরি করেছে যা মধ্যবিত্ত বাঙালির বাস্তবতার সাথে মেলে না। গল্পগুলো চেনা মনে হতে পারে, কিন্তু পুরো পরিস্থিতি এবং পরিবেশ মিলেমিশে এর চরিত্রগুলো ভিন্ন এক জগত নির্মাণ করেছে যা তাদের জন্য স্বাভাবিক। “গৌরীপুর জংশন” মধ্যবিত্তের চোখের সামনে থাকা ভিন্ন এক জগত এবং অন্য এক বাস্তবতার পর্দা উন্মোচন করেছে। হুমায়ূন আহমেদ বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া বিরল গোত্রের লেখকের একজন। তাঁর প্রায় সকল বই-ই বহুল পঠিত, তবু “গৌরীপুর জংশন” নিয়ে হুমায়ূন-প্রেমীদের মধ্যে চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায় না। অনেকের কাছে এটি অপঠিতই থেকে গেছে। ব্যাপারটি বিস্ময়কর, কারণ হুমায়ূন আহমেদ রচিত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর একটি “গৌরীপুর জংশন”। এ উপন্যাস নিয়ে পাঠকদের আপাত নীরবতা এটাই নির্দেশ করছে যে, এই উপন্যাসটি চিরায়ত হুমায়ূনীয় ফর্মুলায় রচিত হয় নি। এই উপন্যাসে নেই হিমুর মতো রহস্যময় চরিত্র, কিংবা মিসির আলী সিরিজের মতো আকর্ষণীয় রহস্য। এই উপন্যাসে কেবলই একটি নিভৃত স্টেশনের বসবাসরত নিম্নবিত্তের আটপৌরে জীবন উঠে এসেছে, যা অধিকাংশ মধ্যবিত্ত পাঠকের অচেনা। “গৌরীপুর জংশন”এর প্রধান চরিত্র জয়নাল। সে গৌরীপুর স্টেশনে বসবাসরত মধ্যবয়সী কুলী, যার যৌবন বিগত এবং ‘এখন যার দশা কোমর-ভাঙা কুকুরের মতো’। চালের বস্তা কোমরে পড়ে কোমর চেঙে যাওয়ার পর কুলীর জীবন ত্যাগ করেছে, কিন্তু স্টেশন ত্যাগ করে নি; কারণ কোথায়ই বা যাবে সে। জয়নাল বর্ণিল একটি চরিত্র। স্টেশনের অন্য সব চরিত্রের মতোই স্বার্থপরতা তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদ্যমান, কিন্তু অনাথ শিশু বজলুর জন্য দয়াময় একটি মনের দেখা পাই আমরা। বজলুকে নিজের সাথে রাখে, খাওয়ায়, জীবনে চলার জন্য নানা উপদেশ দেয়। মালবাবু আর সিগনাল-ম্যান রমজানের সাথে তার বেশ খাতির। নানান সময়ে তারা জয়নালকে নানানভাবে সাহায্য করেছে, জয়নাল এ সত্যটা কখনো ভুলতে পারে না, তাদের জন্য কিছু করার চিন্তা সবসময় তাকে ঘিরে থাকে। জয়নালের চরিত্রে অসদগূণগুলো তার নানা কর্মকাণ্ডে প্রকাশ পায়। স্টেশনের পুরনো সর্দার মোবারককে নিগৃহীত হতে দেখে আনন্দ পায়, পুলিশকে মোবারকের নাম বলে দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। কুলী-গিরি ছাড়ার পর মূলত চুরি করে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে নিয়েছে সে। ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকে চুরি করা ছাড়াও স্টেশনের মালবাবুর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ফেরত দেয় না সে। হুমায়ূন আহমেদ মূলত একজন নিম্নবিত্ত ছিঁচকে চোরের চরিত্র এঁকেছেন যার আছে এক আর্দ্র মন। “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাসটি লিখিত হয়েছে তৃতীয় পুরুষে। যদিও পুরো গল্প এগিয়েছে জয়নালের দৃষ্টিকোণ থেকে। এটা ইন্টারেস্টিং। কখনো কখনো তৃতীয় পুরুষ থেকে লাফ দিয়ে প্রথম পুরুষে চলে এসেছেন লেখক। এই রচনাকৌশল ছাড়াও উপন্যাসের ভাষার কাজ পর্যবেক্ষণ করার মতো। হুমায়ূন আহমেদের স্বভাবসুলভ হিউমারে পূর্ণ বর্ণনারীতি তো আছেই, সাথে আছে আঞ্চলিক ভাষার দারুণ সংমিশ্রণ। নিম্নবিত্তের মনোজগৎ নিয়ে পর্যবেক্ষণের উল্লেখযোগ্য উপাদান আছে আলোচ্য উপন্যাসে। মধ্য ও উচ্চবিত্তের চরিত্র নিয়ে জয়নালের দর্শন বেশ চমকপ্রদ। তার ভাষায় ওরা ‘ভদ্রলোক’। আমি মনে করি, ভদ্রলোকদের দয়ার উপরে সর্বদা নির্ভর করছে তার আর্থিক অবস্থা, এটা সে কখনো ভুলতে পারে বলেই মনে মনে তাদেরকে আক্রমণ করে আনন্দ খুঁজে পায়। কখনো কখনো সামনাসামনি অপমান করেও বেশ শ্লাঘা অনুভব করে জয়নাল। ভদ্রলোক বিপদে জয়নালের বড় ভালো লাগে। তার ভাষায়, ‘ভদ্রলোক বিপদের পড়ে চোখ বড়ো করে যখন এদিক ওদিক চায়,ফটাফট ইংরেজিতে কথা বলে তখন মজাই লাগে’। হুমায়ূন আহমদের প্রায় সকল পাঠকই মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তের কাতারে পড়বে, জয়নালের ভাষায় যারা ‘ভদ্রলোক’। নিম্নবিত্ত এক কুলী তার শ্রেণী সম্পর্কে কী ভাবছে তা জেনে একজন মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তের মনে কেমন অনুরণন সৃষ্টি হয় তা চিন্তাভাবনার বিষয় বটে। “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাস হিসেবে মুদ্রিত হলেও এটি মূলত একটি বড় গল্পের চরিত্র ধারণ করে। কারণ এই রচনায় উপন্যাসের বিস্তৃত পটভূমির উপস্থিতি নেই। “গৌরীপুর জংশন” লেখা হয়েছে মাত্র ৪২ পৃষ্ঠায়। এতো ছোট পরিসরে উপন্যাসের বিস্তৃত পটভূমি এবং চরিত্রের উপস্থিতি কোনোভাবেই বর্ণনা করা সম্ভব না। এর মধ্যে গল্পের প্রথম বারো পৃষ্ঠা ব্যবহৃত হয়েছে পটভূমি ও পরিবেশের বর্ণনা এবং চরিত্র উপস্থাপনে। তাছাড়া একটি আদর্শ উপন্যাসে বিভিন্ন ঘটনা ও পরিপার্শ্বের চাপে চরিত্রের যে বিবর্তন ঘটে, তাও “গৌরীপুর জংশন”এ উপস্থিত। তাই আমার মতানুসারে, “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাসের মোড়কে একটি সফল বড় গল্প। সার্থক বড় গল্পের অসম্পূর্ণতা, হাহাকারকে ধারণ করেই এর সমাপ্তি ঘটেছে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস “গৌরীপুর জংশন” আশির দশকের একেবারে শেষ ভাগে রচিত। উপন্যাসের পটভূমি একটি ছোট রেল স্টেশন। স্টেশন-জীবনের প্রতিদিনকার বাস্তবতাই এ উপন্যাসের নায়ক। ছোট ছোট নানা ঘটনা উপন্যাসটির রচনাকালের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলেছে দারুণ। ভালোবাসা, মায়া, দুঃখ-কষ্টের সাথে শঠতা, দুর্নীতি, বিশ্বাসঘাতকতা মিলে গৌরীপুর স্টেশনের পাত্রপাত্রীরা এমন এক বাস্তবতা তৈরি করেছে যা মধ্যবিত্ত বাঙালির বাস্তবতার সাথে মেলে না। গল্পগুলো চেনা মনে হতে পারে, কিন্তু পুরো পরিস্থিতি এবং পরিবেশ মিলেমিশে এর চরিত্রগুলো ভিন্ন এক জগত নির্মাণ করেছে যা তাদের জন্য স্বাভাবিক। “গৌরীপুর জংশন” মধ্যবিত্তের চোখের সামনে থাকা ভিন্ন এক জগত এবং অন্য এক বাস্তবতার পর্দা উন্মোচন করেছে। হুমায়ূন আহমেদ বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া বিরল গোত্রের লেখকের একজন। তাঁর প্রায় সকল বই-ই বহুল পঠিত, তবু “গৌরীপুর জংশন” নিয়ে হুমায়ূন-প্রেমীদের মধ্যে চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায় না। অনেকের কাছে এটি অপঠিতই থেকে গেছে। ব্যাপারটি বিস্ময়কর, কারণ হুমায়ূন আহমেদ রচিত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর একটি “গৌরীপুর জংশন”। এ উপন্যাস নিয়ে পাঠকদের আপাত নীরবতা এটাই নির্দেশ করছে যে, এই উপন্যাসটি চিরায়ত হুমায়ূনীয় ফর্মুলায় রচিত হয় নি। এই উপন্যাসে নেই হিমুর মতো রহস্যময় চরিত্র, কিংবা মিসির আলী সিরিজের মতো আকর্ষণীয় রহস্য। এই উপন্যাসে কেবলই একটি নিভৃত স্টেশনের বসবাসরত নিম্নবিত্তের আটপৌরে জীবন উঠে এসেছে, যা অধিকাংশ মধ্যবিত্ত পাঠকের অচেনা। “গৌরীপুর জংশন”এর প্রধান চরিত্র জয়নাল। সে গৌরীপুর স্টেশনে বসবাসরত মধ্যবয়সী কুলী, যার যৌবন বিগত এবং ‘এখন যার দশা কোমর-ভাঙা কুকুরের মতো’। চালের বস্তা কোমরে পড়ে কোমর চেঙে যাওয়ার পর কুলীর জীবন ত্যাগ করেছে, কিন্তু স্টেশন ত্যাগ করে নি; কারণ কোথায়ই বা যাবে সে। জয়নাল বর্ণিল একটি চরিত্র। স্টেশনের অন্য সব চরিত্রের মতোই স্বার্থপরতা তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদ্যমান, কিন্তু অনাথ শিশু বজলুর জন্য দয়াময় একটি মনের দেখা পাই আমরা। বজলুকে নিজের সাথে রাখে, খাওয়ায়, জীবনে চলার জন্য নানা উপদেশ দেয়। মালবাবু আর সিগনাল-ম্যান রমজানের সাথে তার বেশ খাতির। নানান সময়ে তারা জয়নালকে নানানভাবে সাহায্য করেছে, জয়নাল এ সত্যটা কখনো ভুলতে পারে না, তাদের জন্য কিছু করার চিন্তা সবসময় তাকে ঘিরে থাকে। জয়নালের চরিত্রে অসদগূণগুলো তার নানা কর্মকাণ্ডে প্রকাশ পায়। স্টেশনের পুরনো সর্দার মোবারককে নিগৃহীত হতে দেখে আনন্দ পায়, পুলিশকে মোবারকের নাম বলে দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। কুলী-গিরি ছাড়ার পর মূলত চুরি করে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে নিয়েছে সে। ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকে চুরি করা ছাড়াও স্টেশনের মালবাবুর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ফেরত দেয় না সে। হুমায়ূন আহমেদ মূলত একজন নিম্নবিত্ত ছিঁচকে চোরের চরিত্র এঁকেছেন যার আছে এক আর্দ্র মন। “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাসটি লিখিত হয়েছে তৃতীয় পুরুষে। যদিও পুরো গল্প এগিয়েছে জয়নালের দৃষ্টিকোণ থেকে। এটা ইন্টারেস্টিং। কখনো কখনো তৃতীয় পুরুষ থেকে লাফ দিয়ে প্রথম পুরুষে চলে এসেছেন লেখক। এই রচনাকৌশল ছাড়াও উপন্যাসের ভাষার কাজ পর্যবেক্ষণ করার মতো। হুমায়ূন আহমেদের স্বভাবসুলভ হিউমারে পূর্ণ বর্ণনারীতি তো আছেই, সাথে আছে আঞ্চলিক ভাষার দারুণ সংমিশ্রণ। নিম্নবিত্তের মনোজগৎ নিয়ে পর্যবেক্ষণের উল্লেখযোগ্য উপাদান আছে আলোচ্য উপন্যাসে। মধ্য ও উচ্চবিত্তের চরিত্র নিয়ে জয়নালের দর্শন বেশ চমকপ্রদ। তার ভাষায় ওরা ‘ভদ্রলোক’। আমি মনে করি, ভদ্রলোকদের দয়ার উপরে সর্বদা নির্ভর করছে তার আর্থিক অবস্থা, এটা সে কখনো ভুলতে পারে বলেই মনে মনে তাদেরকে আক্রমণ করে আনন্দ খুঁজে পায়। কখনো কখনো সামনাসামনি অপমান করেও বেশ শ্লাঘা অনুভব করে জয়নাল। ভদ্রলোক বিপদে জয়নালের বড় ভালো লাগে। তার ভাষায়, ‘ভদ্রলোক বিপদের পড়ে চোখ বড়ো করে যখন এদিক ওদিক চায়,ফটাফট ইংরেজিতে কথা বলে তখন মজাই লাগে’। হুমায়ূন আহমদের প্রায় সকল পাঠকই মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তের কাতারে পড়বে, জয়নালের ভাষায় যারা ‘ভদ্রলোক’। নিম্নবিত্ত এক কুলী তার শ্রেণী সম্পর্কে কী ভাবছে তা জেনে একজন মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তের মনে কেমন অনুরণন সৃষ্টি হয় তা চিন্তাভাবনার বিষয় বটে। “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাস হিসেবে মুদ্রিত হলেও এটি মূলত একটি বড় গল্পের চরিত্র ধারণ করে। কারণ এই রচনায় উপন্যাসের বিস্তৃত পটভূমির উপস্থিতি নেই। “গৌরীপুর জংশন” লেখা হয়েছে মাত্র ৪২ পৃষ্ঠায়। এতো ছোট পরিসরে উপন্যাসের বিস্তৃত পটভূমি এবং চরিত্রের উপস্থিতি কোনোভাবেই বর্ণনা করা সম্ভব না। এর মধ্যে গল্পের প্রথম বারো পৃষ্ঠা ব্যবহৃত হয়েছে পটভূমি ও পরিবেশের বর্ণনা এবং চরিত্র উপস্থাপনে। তাছাড়া একটি আদর্শ উপন্যাসে বিভিন্ন ঘটনা ও পরিপার্শ্বের চাপে চরিত্রের যে বিবর্তন ঘটে, তাও “গৌরীপুর জংশন”এ উপস্থিত। তাই আমার মতানুসারে, “গৌরীপুর জংশন” উপন্যাসের মোড়কে একটি সফল বড় গল্প। সার্থক বড় গল্পের অসম্পূর্ণতা, হাহাকারকে ধারণ করেই এর সমাপ্তি ঘটেছে।