User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
Beat Book
Was this review helpful to you?
or
মহিলাদের জন্য খুব সুন্দর একটা বই
Was this review helpful to you?
or
রাসূল (সা.) প্রথম সহধর্মিণী আম্মাজান খাদিজা (রা.) ছিলেন রাসূল (সা.) সবচেয়ে কঠিন মুহুর্তের সঙ্গী। যিনি নবুয়ত প্রাপ্তির পর নারীদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন। লেখক বইটিতে হযরত খাদিজা (রা.) এর জীবনীকে খুব সহজবোধ্য ভাষায় ফুটিয় তুলেছেন।
Was this review helpful to you?
or
boi tar cover page r brightness app r theke different ..app r cover page amr beshi pocondo hycilo .
Was this review helpful to you?
or
ধন্যবাদ রকমারির সকল মেম্বার কে
Was this review helpful to you?
or
কারো ব্যক্তি জীবনী পড়তে গিয়ে আমাদের প্রায় সবারই কমন যেই এক সমস্যা তাহলো—একঘেয়েমি চলে আসে। তবে কিছু কিছু বই হয় এর বিপরীত। তাঁতে থাকে উপন্যাসের রসদ, সাহিত্যের পাঠ, সিরাত শিক্ষার পাথেয় কিংবা তার থেকেও বেশি কিছু। যা পড়লে অন্তর পুলকিত আর উদ্ভাসিত হয়। তাছাড়া সাহাবায়ে কিরাম রাদিআল্লাহু আনহুমদের সম্পর্কে জানার আগ্রহও বাড়ে। ঠিক তেমনই একটা বই ‘মহীয়সী খাদিজা রা.।’ এক সংগ্রামি নারী সাহাবার জীবন অ্যাখান!
Was this review helpful to you?
or
?
Was this review helpful to you?
or
আলহামদুলিল্লাহ্ বইটি খুবই অসাধারণ। এই বইয়ের মধ্যে বর্তনান মুসলিমাদের জন্য রয়েছে অনেক শিক্ষা।বইটা পড়ার পর আমার শুধু মনে হয়েছে যেন আমি সেই সময় উপস্থিত ছিলাম।এতো সুন্দর করে লিখা।
Was this review helpful to you?
or
Onk sundor and poripati 1ti boi, porar jonno best. prottekta meyer uchit ei boita 1bar holeo pora. jajakallahu khairan
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
বইটা যে পড়বে তার জীবনে বড় পরিবর্তন আসবে ইন শা আল্লাহ
Was this review helpful to you?
or
awesome
Was this review helpful to you?
or
Good Book
Was this review helpful to you?
or
Masallah valo service
Was this review helpful to you?
or
খুবই ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
পড়লাম "গল্পে আঁকা মহীয়সী খাদিজা"। অনুভব করলাম তাঁরা একে অন্যকে কতটা ভালোবাসতেন। কতখানি ভালোবাসা ছিলো বুড়ি মা'টার হৃদয়ে! কতটা ভালোবাসতেন খাদিজা রা. মুহাম্মদকে (স.), মুহাম্মদ (স.)খাদিজাকে। এমন ভালোবাসা আর কী আসবে পৃথিবীতে? কখনোই না! কস্মিনকালেও সম্ভব না!!
Was this review helpful to you?
or
Alhamdulillah.valo
Was this review helpful to you?
or
আয়িশাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, “যখনই আল্লাহর রসূল ﷺ খাদিজার রাযি. নাম উল্লেখ করতেন, তার প্রশংসা করতেন। তার প্রশংসা করা এবং আল্লাহর কাছে দু’আ করার ব্যাপারে কখনোই তিনি যেন ক্লান্ত হতেন না।” - তাবারানী (৩১৯/১৬) মুহাম্মদ(সাঃ) এঁর রিসালতের দায়িত্ব বুঝে সেই লক্ষ্য অর্জনে যারা তাঁর পাশে সংযুক্ত হয়েছিলেন তাঁদের সর্বপ্রথম ছিলেন উদারচিত্ত, প্রজ্ঞার গুণে গুণান্বিত, প্রভাব ও বিত্তে প্রতিষ্ঠিত, তাঁরই সহধর্মীনী, উভয় জগতের আলো, কাল-কিয়ামত পর্যন্ত মু’মিনদের প্রেম-ভালবাসা, আবেগ ও শ্রদ্ধায় সিক্ত এই মহীয়সী, হজরত খাদিজা (রাঃ), যার জান ও মাল নিবেদিত ছিল এই ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায়। রাসুল সাঃ এর এই প্রিয় স্ত্রী নিয়ে প্রত্যেক মুসলিম মুসলিমাহর জানা দরকার, অনুসরণ করা দরকার। বই - গল্পে আঁকা মহীয়সী খাদিজা লেখক - আবদুস সালাম আল আশরী , মুহাম্মাদ আবদুল গণী হাসান
Was this review helpful to you?
or
খাদিজা (রাঃ) - এই নামের সাথে আমার প্রথম পরিচয় পাঠ্যবইয়ের পাতায়। ইসলাম ধর্ম বইয়েই প্রথম জেনেছিলাম, আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) এর প্রথম স্ত্রী খাদিজা (রাঃ)। রাসূল (সাঃ) এর চেয়ে বয়সে ১৫ বছরের বড় নারী খাদিজা কেন এবং কীভাবে নবীজি (সাঃ) এর স্ত্রী হবার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন সে ব্যাপারে ধারণা ছিলো ভাসাভাসা,অস্পষ্ট। কিন্তু আমি যখন " গল্পে আঁকা মহীয়সী খাদিজা (রাঃ)" কিতাবখানা পড়ছিলাম এক অদ্ভুত মিষ্টি মুগ্ধতা আর ভালোলাগার ঘোরে আবদ্ধ হচ্ছিলাম। বারেবারে মনের মাঝে এই কথাই তোলপাড় করছিলো, কেন খাদিজা নন? খাদিজা নয় তো আর কে? আর কে পারতেন খাদিজার মত করে রাসূল (সাঃ) এর সহযাত্রী হতে? মক্কায় কি ছিলো কোন নারী খাদিজার মত সর্ব আদর্শে আদর্শিত? না, ছিলো না। খাদিজা এক এবং অমর। আকাশের ধ্রুবতারার চেয়েও হাজারগুণ জ্বলজ্বলে খাদিজা (রাঃ) এর জীবনদ্যুতি। এই বইয়ে খাদিজা (রাঃ) এর সেই আলোকিত জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এই মহীয়সী নারীর একদিনের দিনলিপিই যেখানে অদ্ভুত শুদ্ধতায় ঘেরা,সেখানে তাঁর জীবনকে পুরোপুরিভাবে,পরিপূর্ণভাবে বইয়ের পাতায় তুলে ধরা কি আদৌ সম্ভব? আমার মনে হয়, সম্ভব না। তবুও খাদিজা (রাঃ) এর জীবনের বাঁক এবং প্রধান ঘটনাগুলো কলমের কালিতে রূপায়িত হয়েছে বইয়ের পাতায়। কিশোরী খাদিজা এর চপলতা,স্নিগ্ধতা, দানশীলতা থেকে শুরু করে আল্লাহ্র পথে লড়াই করতে করতে একমাত্র মৃত্যুর কাছে হার মানা এই মহীয়সী নারীর জীবনকাহিনীর রূপরেখার সন্ধান মেলে এই বইয়ে। বইটি মোট তেইশটি ছোট ছোট অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রতিটি অধ্যায়ের শিরোনাম কাহিনীর ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। এক অধ্যায় পড়ার পর কোন এক অদৃশ্য চুম্বক আকর্ষণে পরের অধ্যায়ে ভেসে যেতে হয়। আর প্রতিটি অধ্যায় পড়ার পর আমার ভেতরটায় কাঁপন লাগছিলো। এমনও হয়? এমন হতে পারে? না,অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলিনি একবিন্দু। বরং চিরাচরিত বিশ্বাসের ভীতকে নতুনভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। নিম্নে কয়েকটি অধ্যায়ের সারকথা তুলে ধরলাম। তেইশ অধ্যায়ের প্রথম অধ্যায়ের নাম "ঘরের শোভা"। ছোট প্রারম্ভিক এই অধ্যায়েই খাদিজা (রাঃ) এর চারিত্রিক মাহাত্ম্য এর পরিচয় পাওয়া যায়। দানশীল,উদার আর স্নিগ্ধতার দর্পণ রূপী খাদিজা। যে কারণে পিতা খোআইলিদ নিজের কন্যার গুণে মুগ্ধ হয়ে ভাবেন,কন্যা সন্তান ঘরের শোভা। তবে কেন অন্যরা মেয়েদের দেখতে পারে না? কেন এই নিষ্ঠুরতা? খোআইলিদ কন্যা খাদিজা যেন প্রস্ফুটিত ফুল। যার সুবাসে খোআইলিদের গৃহ জান্নাতের একটি টুকরো হয়ে উঠে। আরেকটি ভয়াবহ অধ্যায় ষষ্ঠ অধ্যায়। নাম " শোকের উপর শোক,আড়ালে তার কী হাসে?"। এই অধ্যায়ে এসে স্তব্ধ হয়ে যেতে হয়। আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামান্য দুঃখ-কষ্টেই আমরা কতোটা ভেঙ্গে পড়ি! অথচ খাদিজা (রাঃ) পরপর দুইবার বিধবা হলেন,সেই সাথে হারালেন প্রিয়তম বাবাকে। তবে কি ভেঙ্গে পড়লেন খাদিজা? টুকরো টুকরো হয়ে গেল তাঁর মন? না! খাদিজা মচকালেন না,ভেঙ্গে পড়লেন না। তিনি নতুন করে জীবনের হাল ধরলেন। সন্তানের মুখ চেয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন। ব্যবসার হাল ধরলেন। আল্লাহ্র ফয়সালা মেনে নিলেন সর্বান্তকরণে। অথচ আমরা কত সহজেই বিশ্বাস হারাই,হতাশ হই! আল্লাহ্র উপর অভিমান করি,আল্লাহ্ তা'আলার ফয়সালার উপর প্রশ্ন তুলি-কেন এমন হলো? আমরা সবুর করি না। আল্লাহ্ নিশ্চয় কঠিনের পর সহজ রাখেন। খাদিজা (রাঃ) এই বিশ্বাসেই এগিয়ে যান দৃপ্ত ভঙ্গিতে। সপ্তম অধ্যায় এর নাম শিরোনাম "আশা"। এখানে এসে খাদিজার এক নতুন রূপের দেখা মিলে। সুদক্ষ এবং বুদ্ধিমতী খাদিজা। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তরতর করে উপরে উঠে যায় মক্কার অনেক ক্ষমতাশীল পুরুষ ব্যবসায়ীকে পেছনে ফেলে। কিন্তু একজন নারী হয়ে খাদিজার জন্য এ পথ কি অনুকূলে ছিলো? মোটেও না! আজও যেমন বলা হয় নারীরা কেন পুরুষের কর্ম করবে,নারী কেন ঘর রেখে পুরুষের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়বে? তখনও,খাদিজা (রাঃ) এর সময়েও ঠিক এমনি ভাবেই প্রশ্নবাণে,নিন্দা,হিংসা আর সমালোচনায় খাদিজাকে দমন করতে অগ্রসর ছিলো অনেকেই। কিন্তু তিনি নত হননি। তিনি বিশ্বাস করতেন,নারী ইচ্ছে করলে,সংকল্পে স্থির থাকলে সেও দক্ষতা আর পারদর্শিতা দিয়ে দুর্গম পথ পাড়ি দিতে পারে। এরপরের অধ্যায়গুলোতে ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে ফুটে উঠেছে নতুন করে বিবাহে আবদ্ধ না হওয়ার দৃঢ় সংকল্পে স্থির খাদিজার মনের পরিবর্তন, খাদিজার স্বপ্নসূর্যের দেখা পাওয়া,খাদিজার ব্যবসায় মুহাম্মদ এর সংশ্লিষ্টতা,মুখোমুখি দেখা,তাঁদের বিবাহ, খাদিজা-মুহাম্মদ এর মধুর দাম্পত্য। মুহাম্মদ এর নবুয়ত লাভ,ইসলাম প্রচারে সকল বাঁধা,কষ্ট,দুঃখ,অত্যাচার এর মাঝেও ডানা মেলে কীভাবে খাদিজা (রাঃ) প্রিয় নবীজি ( সাঃ) কে রক্ষা করেছেন,আগলে রেখেছেন তার চিত্র চোখে ভেসে উঠে। আল্লাহ্ পথে লড়াইয়ে প্রিয় রাসূল (সাঃ) কে তিনি সাহস যুগিয়েছেন,সান্ত্বনা দিয়েছেন,অভয় দিয়েছেন,পাশে থেকেছেন। ইসলামের প্রচারে তিনি উৎসর্গ করেছেন তার বিপুল ধন-সম্পদ,বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। স্নেহময়ী খাদিজা, সত্যের পথে অবিচল, ন্যায়ের পথে স্থির,দৃঢ় প্রতিজ্ঞ খাদিজা। এক জীবনে সমস্ত মানবিক আচরণে পরিপূর্ণ খাদিজা। যার মৃত্যুতে নবীজি (সাঃ) এর অন্তরে সৃষ্ট ফাঁকা স্থান আর কখনোই পূরণ হয়নি। মহীয়সী খাদিজা (রাঃ) সকল নারী জাতির আদর্শ। গল্প,উপন্যাসের বই পড়া হলেও ইসলামী বই পড়া হয়ে ওঠেনি আজ অবধি। এই বইটি হলো আমার পড়া প্রথম ইসলামী বই। শুরুটা হলো অতি চমৎকার এক বইয়ের মাধ্যমে। আলহামদুলিল্লাহ্! এ ধারা অব্যাহত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। যদিও আমার তেমন অভিজ্ঞতা নেই,তবুও মনে হয়েছে ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভী এর বাংলা রূপায়ণ ভীষণ সুন্দর আর সাবলীল! কী দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাপারগুলো, উপযুক্ত উপমার ব্যবহারে এমন জীবন্তভাবে কাহিনীর দৃশ্যায়ন করেছেন যে মনে হয়েছে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। রাহনুমা প্রকাশনীর সাথে পূর্ব পরিচয় নেই। কিন্তু প্রথম পরিচয়েই এত সুন্দর বাঁধাই আর পৃষ্ঠার কারণে মুগ্ধতা তৈরি হয়েছে। পরিশেষে বলবো,সব উপমা দিয়েও যাঁর গুণাবলীর পরিপূর্ণ প্রকাশ সম্ভব নয় সেই মহীয়সী খাদিজা (রাঃ) এর গুণের সাথে পরিচিত হবার জন্য হলেও বইটি পড়া উচিত। গল্প,উপন্যাসের চরিত্রের করুণ পরিণতিতে চোখ ভিজেছে বহুবার,কিন্তু মহীয়সী খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী পড়ার সময় চোখ বেয়ে দরদর করে যে অশ্রুধারা নেমেছে তার মহিমা আর গুরুত্ব অবর্ণনাতীত। থ্রিলার গল্প না পড়েও যে শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যায়, মহীয়সী খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী গ্রন্থটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ। ভেতরে কাঁপন ধরিয়ে দেয়া, অদ্ভুত শীতল এক আমেজ সৃষ্টিকারী কিতাবটি পড়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ রইলো।
Was this review helpful to you?
or
কখনো কি এমনটি হয়েছে আপনার? - একবার বই পড়ে শেষ করবার সাথে সাথেই আরেকবার পড়ার জন্য মন ছটফট করেছে? - ২য়বার পড়েছেন এই ভেবে যে বইটা আপনাকে আলোকিত করবে, শিখবেন অনেক কিছু? - বই পড়ছেন আর অনুভব করছেন একটা অন্যরকম মুগ্ধতা? - বই পড়ছেন আর নীরবে কাঁদছেন এবং এই কান্না বইয়ের শেষ অবধি ছিলো? - বই পড়ছেন আর গায়ের লোম এই ভেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলো যে, কিভাবে সম্ভব একটা মানুষের পক্ষ্যে এত্তটা ধৈর্যশীল, এতোটা পরোপকারী, সৎ হওয়া ! - বই পড়ছেন আর বইয়ের প্রতিটি লাইন আপনাকে শিহরিত করছে? - বই পড়ছেন আর বইয়ের প্রতিটি লাইন থেকে ইন্সপায়ার্ড হচ্ছেন? - বই পড়ছেন আর দায়িত্ববোধ বাড়ছে আপনার ভালোবাসার মানুষের প্রতি? - বই পড়ছেন আর নবীর প্রতি আপনার ভালোবাসা, আবেগ জ্যামিতিক হারে বাড়ছে? - বই পড়ছেন আর ভাবছেন, হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকলেই মানুষ অহংকারী না হয়ে এতটা সহজ সরল হয় কিভাবে? - বই পড়ছেন আর ভাবছেন কিভাবে একজন মানুষ তার স্বামীকে সমস্ত বিপদ আপদ থেকে আগলিয়ে রাখতে পারে বেষ্টনীর মতো? খাদিজা ছিলেন আরবের অত্যন্ত সৎ, দয়ালু এবং ধনী ব্যবসায়ী। ২০ বছর বয়সেই দু-দুবার তিনি বিধবা হন। পণ করলেন জীবনে আর কখনো বিয়ে করবেন না, সন্তানদের মুখ চেয়েই কেটে দিবেন বাকিটা জীবন । কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন। একদিন খাদিজা একটা আশ্চর্য স্বপ্ন দেখলেন। অভাবনীয় স্বপ্ন । ঘুমের মধ্যে খাদিজা দেখলেন " আকাশটা অপূর্ব ঝলমলে রক্তাক্ত লালিমা ছড়িয়ে সূর্য উদিত হয়েছে। খাদিজা অবাক বিস্ময়ে দেখলেন, একটু আগে উদয় হওয়া সূর্য ধীরে ধীরে আকাশ থেকে নেমে আসছে। তারপর আস্তে আস্তে সেই মিষ্টি দীপ্তিময় সূর্যটা তার গৃহে এসে ঢুকে পড়ল। তারপর গৃহ থেকে বের হয়ে আশপাশ, মক্কা নগরী, তারপর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। " স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে খাদিজা, চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবনে নফল এর কাছে গেলেন। ওয়ারাকা শুনে চিৎকার করে উঠলেন। খাদিজাকে বললেন " অনেক মুবারক খাব , তোমার বিয়ে হতে যাচ্ছে।" ওয়ারাকার এমন অদ্ভুত কথা শুনে খাদিজা যেন আকাশ থেকে পড়লেন। ওয়ারাকাকে বললেন " তুমি আমার সাথে ঠাট্টা করছো? তুমি তো ভালো করেই জানো বিয়ে-শাদীতে আমার একদমই ইচ্ছা নেই। মনে হয় তুমি ভুল বুঝছো। তুমি আরেকটু সময় নাও তারপর আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলো। " ওয়ারাকা আবার বললেন "খাদিজা আমি বলছি তোমার বিয়ে হবে, হবেই । আমি কোনো ঠাট্টা করছি না। তোমার বিয়ে হবে সেই সূর্যের সাথে। যে সূর্য অন্ধকার দূর করে পৃথিবীকে আলোয় আলোয় ভরে দেবে। বিভ্রান্ত ও দিশেহারা মানুষকে সঠিক পথের দিকে আহ্বান করবে। তুমি এমন একজন মানুষকে বিয়ে করবে যে কোন সাধারন মানুষ নন । আরও পরিষ্কার করে বলবো? তোমার ভবিষ্যৎ স্বামী হবেন একজন নবী। " খাদিজা ভাবতে লাগলেন, কে এই সূর্য যার সাথে আমার বিয়ে হবে? আল্লাহ খাদিজা স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিলেন, বয়স যখন চল্লিশ, নবীজির সাথে তার বিয়ে হলো। নবুয়তের প্রথম দিকের কথা, আল্লাহর রাসূলের কাছে সূরা আলাকের [৯৬] কিছু আয়াত নাজিল হলো । "পড় তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট বাঁধা রক্ত থেকে । পড় তোমার রব খুব দয়ালু। মানুষকে জ্ঞান দান করেছেন কলমের সাহায্যে। মানুষকে জানিয়েছেন সে কথা যা সে জানত না।" হঠাৎ জিবরীল এর আগমনে নবীজি ভীষণ ভয় পেলেন, ভীষণ ভয়। উনি কাঁপতে লাগলেন। বাড়িতে এসে খাদিজাকে বললেন আমাকে চাদর দিয়ে আবৃত করে দাও। খাদিজা অভয় দিয়ে বললেন, "আপনি এত ভয় পাচ্ছেন কেন? আল্লার কসম, আল্লাহ আপনাকে অসম্মানিত করবেন না, কিছুতেই না। আল্লাহ আপনাকে অপদস্থ করতে পারেন না। আপনি তো এমন একজন, যিনি আত্মীয়দের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখেন। বিপদ্গ্রস্থকে সাহায্য করেন। আপনি তো শ্রেষ্ঠ অতিথিবৎসল। যেখানে সত্য সেখানে আপনি। সুতরাং আপনার কোন বিপদ হতে পারে না। আপনি যা কিছু দেখেছেন ভালই দেখেছেন। " তারপর নবীজির কাছে সূরা-মুদাসসির [৭৪] এর কিছু আয়াত নাজিল হলো। আল্লাহ তাকে দ্রুত ধর্ম প্রচার করতে বলেছেন। আল্লাহ বলেছেন " হে চাদরাবৃত উঠে পড়ুন এবং মানুষকে সতর্ক করুন। আপন প্রতিপালকের মহাত্ম ঘোষণা করুন। নিজের পরিধেয় বস্ত্র পবিত্র করুন। গুনাহ থেকে বেঁচে থাকুন। বেশি পাওয়ার আশায় কাউকে কিছু দেবেন না। আপন প্রতিপালকের সন্তুষ্টির জন্য সবর করুন।" নবীজি খাদিজাকে বললেন, "হে খাদিজা, আমার সম্প্রদায় কি গোমরাহী থেকে ফিরে আসবে? জুলুম-নিপীড়ন কি ওরা ছাড়তে পারবে? খাদিজা! আমার তো মনে হচ্ছে ওরা মাকে মানবে না, আমাদের কথা শুনবে না, উল্টো রুখে দাঁড়াবে। জানিনা, কোথায় গিয়ে ঠেকবে আমাদের জিহাদ সংগ্রাম!" আবারো খাদিজা তাকে অভয় দিয়ে বললেন: " ওয়ালী রব্বিকা ফাসবির! আপনার রব আপনাকে যা আদেশ করেছেন তা নির্ভয়ে পালন করে যান। সেই বুক থেকে বাতিলকে বের করা তো একটু শক্ত হবেই, যে বুকের বাতিল ছড়িয়ে দিয়েছে শাখা-প্রশাখা, বিছিয়েছে শক্ত শিকড়! আপনার রবের কসম!, যিনি আপনাকে নবী করে পাঠিয়েছেন, তিনি আপনার সাথে থাকবেন , থাকবেন ই। সব সময় আপনাকে সাহায্য করবেন। " তারপর খাদিজা উচ্চকণ্ঠে আনন্দ প্লাবিত হয়ে ঘোষণা করলেন: "হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনাকে মানলাম, আপনাকে রসূল হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাস করলাম। আশহাদু আন্নাকা রসূলুল্লাহ । আমি আপনাকে সব দিয়ে দিলাম। আল্লাহ জন্য আমার সম্পদ ও প্রাচুর্য দিয়ে দিলাম। সব আপনার হাতে তুলে দিলাম। সত্যের পথে এসব যেভাবে চান সেভাবে খরচ করুন। অকাতরে বিলিয়ে দিন। আমার এখন কিছুই নেই, শুধু আপনি আমার! আমার সবকিছু আপনার !" খাদিজার এই বিরচিত মহা ঘোষণায় আল্লাহর-রসুলের চেহারা খুশিতে ঝলমল করে উঠল! আল্লাহর রাসূল দাওয়াত এর কাছে বেরিয়ে পড়লেন। এদিকে খাদিজা আর বসে থাকতে পারলেন না শুরু করে দিলেন দাওয়াতের কাজ। প্রথমেই একত্রিত করলেন প্রিয় সখি বান্ধবী ও সহচরীদের বিশ্বস্ত দাসীদের। উনাদের শুনালেন প্রিয় স্বামীর নবী হওয়ার সুসংবাদ। সবাই বিমুগ্ধ চিত্তে উৎকর্ণ হয়ে শুনলো সুসংবাদ । তারপর আপন গৃহে ফিরে গিয়ে বললো স্বামীদের আত্মীয়দের পরিচিতদের। এভাবে দ্রুত এ খবরটি ছড়িয়ে পড়ল মক্কায়। মুখে মুখে আলোচিত হতে লাগলো। অনেকেই বিশ্বাস করল না বরং ঠান্ডা বিদ্রুপের হাসি হাসলো। মাঝখানে কিছুদিন ওহী এলো না। রাসুলের দুশ্চিন্তাও কাটল না। কিন্তু খাদিজা ছিলেন গভীর আস্থাশীল! তিনিই রাসেলের পাশে দাঁড়ালেন, কখনো দিচ্ছেন সান্তনা , কখনো শোনাচ্ছেন অভয়বাণী। রাসুলের দুশ্চিন্তার মাত্রা যখন একটু বেড়ে যেত তখন বলতেন " হে আল্লাহর রাসূল, দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কি আছে! সংকটের পাশেই তো সমাধান! কঠিনের আড়ালেই তো সহজ! নিশ্চয়ই এ বিরতির মাঝে লুকিয়ে আছে কোন হিকমত ও রহস্য! " সান্তনার পাশাপাশি খাদিজা আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন যেন তড়িৎ দুশ্চিন্তা কেটে যায়। হঠাৎ খাদিজা লক্ষ্য করলেন প্রিয় নবীর শরীরটা কেঁপে কেঁপে উঠছে । কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে। নবীজির দিকে গভীর মমতায় উৎকণ্ঠাভরে তাকিয়ে রইলেন। নবীজি মৃদু হেসে এইমাত্র নাযিল হওয়া ওহী [সূরা দুহা : ৯৩] খাদিজাকে শুনাতে লাগলেন। আল্লাহ বলেছেন, " শপথ পূর্বাহ্নের। শপথ রাত্রির যখন তা নিঝুম হয়। তোমার রব তোমাকে ত্যাগ করেননি। তোমার প্রতি বিরূপ হননি। নিশ্চয়ই পরকাল তোমার জন্য ইহকাল থেকে উত্তম। তোমার পালনকর্তা সত্বরই তোমাকে দান করবেন , তখন তুমি হবে সন্তুষ্ট। তিনি কি পাননি তোমাকে এতিমরুপে? তখন দিয়েছেন আশ্রয়। তিনি পেয়েছেন তোমাকে পথহারা। তখন দেখিয়েছেন পথ। তোমাকে পেয়েছেন নিঃস্ব অসহায়। দূর করেছেন তোমার অভাব। সুতরাং তুমি এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না। আর যে সওয়াল করে, ভিক্ষা চায় তাকে ধমক দিও না। প্রকাশ করে যাও তোমার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা। " খাদিজার মনে আনন্দ আর ধরে না। নবীজির মুখের হাসি তার মুখের হাসিকে আলোকিত করলো। খাদিজা মিস্টি করে হাসলেন, এ সূরায় তো আছে তার প্রতি ইশারাও! তিনি প্রিয় আল-আমিন এর পাশে দাঁড়িয়েছেন, আল্লাহ তা পছন্দ করেছেন। এটিকে নেয়ামত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আল আমীনের জন্য, খাদিজার জন্য! প্রতিটি মুসলমানের নিচের প্রশ্ন গুলো একবার হলেও মনের মধ্যে উঁকি দিয়েছে জীবনের কোন একটা সময়ে। - নবীজির প্রথম স্ত্রী কে? - প্রথম মুসলমান কে? - প্রথম ওযু শিখেছেন কে? - নবীজির সাথে প্রথম নামাজ পড়েছেন কে? - সর্বপ্রথম কে নবীজির দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন? - কে সবার আগে তার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন? - কাফির-মুশরিকদের ঠাট্টা বিদ্রুপের ঝড় কে মোকাবিলা করেছিলেন প্রথমে? - নবীজি ছিলেন অভাবী , প্রথম কে তার অভাব দূর করিয়েছেন? - নবীজি যখন বিপদ গ্রস্থ কে প্রথম তাকে সান্ত্বনার বাণী দিয়েছেন? ... সবগুলো উত্তরই খাদিজা (রাযী:), আলহামদুলিল্লাহ। খাদিজার বয়স যখন ৬৫, আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসী করলেন, চিরবিদায় নিলেন নবীজির জীবন থেকে। এর অনেক দিন পর আল্লাহর রাসূল সাওদা বিনতে যামআকে বিয়ে করলেন। কিন্তু তিনিও আল্লাহর রাসূলের মন থেকে খাদিজার স্মৃতি ভুলিয়ে দিতে পারলেন না। আল্লাহর রাসূল সবসময় খাদিজাকে স্মরণ করতেন - তার ত্যাগ ও কুরবানী কে - তার সান্ত্বনা ও মিষ্টি হাসি কে - তার স্নেহ ভরা উক্তি ও কথামালাকে - তার দরদ ভরা অপার দান ও আকাশ উদার সাহায্যকে। আল্লাহ রাসুল ঘর থেকে বের হওয়ার সময় খাদিজাকে স্মরণ করতেন, খাদিজার প্রশংসা করতেন। তার জন্য দু'আ করতেন। এজন্যে পরবর্তীতে তার স্ত্রী অভিমানভরে বলেছিলেন " তিনি তো এক বুড়ি ই ছিলেন। আল্লাহ তো এখন আপনাকে তার বদলে আরও উত্তম স্ত্রী দান করেছেন।" আল্লাহর রাসূল একথায় প্রচন্ড অসুন্তুষ্ট হলেন। উচ্চ কণ্ঠে বললেন: " না, আল্লাহর কসম না! তারচেয়ে ভালো কোনো স্ত্রী আল্লাহ আমাকে দান করেননি। যখন মানুষ আমাকে অস্বীকার করেছিল, তখন তিনি ঈমান এনেছিলেন। যখন মানুষ আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল, তখন তিনি আমাকে সত্যায়ন করেছিলেন। যখন মানুষের কাছে আমি বঞ্চিত হচ্ছিলাম, তখন তিনি আমাকে সম্পদ সহযোগিতা জুগিয়েছিলেন। তার গর্ভে আমার সন্তান জন্মলাভ করেছে, অন্য কারো গর্ভে নয়!" আমরা দেখতে পাই খাদিজা অসীম ধৈর্য নিয়ে নবীজির পাশে সবসময় দাঁড়িয়েছিলেন। তাই আমাদের উচিত কুরআন এবং সিরাত পড়ার পর পরই খাদিজা সমন্ধে জানা । একটা বড় ধন্যবাদ অবশ্যই লেখকের প্রাপ্য। তিনি এত আবেগ দিয়ে বইটি লিখেছেন যে আপনাকে শুধু পড়তেই ইচ্ছা করবে, একবার নয় দুবার নয় শতবার। লেখকের সার্থকতা তো এখানেই যে, পাঠক তার বইটি বারবার পড়বে ! আজকের সমাজে আশঙ্কাজনকভাবে ডিভোর্সের হার বেড়েছে। কেনো? কারণ আমরা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য যতটা মরিয়া, ঠিক ততটাই দায়িত্বের ব্যাপারে উদাসীন । আমরা শুধু অধিকারের কথা বলি আর কর্তব্যকে এড়িয়ে চলি। অথচ খাদিজার জীবনী পড়লে আমরা জানতে পারি উনি দায়িত্ব এবং কর্তব্যের ব্যাপারে কতটা সচেতন ছিলেন ! প্রতিটি বিপদের মুহূর্তে নবীজীকে সান্ত্বনার বাণী শুনিয়েছেন , কি অপার ধৈর্য নিয়ে নবীজির পাশে ছিলেন ঢাল স্বরূপ ! কোন আল্লাহর বান্দি যদি চায় তার জীবন রাঙিয়ে নিতে, আমি বলবো উনি যেন একটিবার হলেও খাদিজার জীবনী পড়ে নেয়। ইসস... সব মেয়ে যদি খাদিজার মত হতো, তাহলে প্রতি ঘরে ঘরে একজন সাহাবা, তাবে-তাবেঈনদের মতো আল্লাহ্ ওয়ালা মানুষ জন্ম নিতো !