User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
গল্পটা শুরু হয়েছে চিত্রাকে দিয়ে। চিত্রা একা একা ট্রেনে ভ্রমণ করছে। সেই ভ্রমণের কিছুক্ষণ সময় নিয়েই এই উপন্যাস। তবে গল্পটা কেবল চিত্রাকে ঘিরেই এমনটা নয়। একই ট্রেনে সস্ত্রীক ভ্রমণ করছে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। মাকে নিয়ে ভ্রমণ করছে আশরাফ, সে পেশায় একজন ডাক্তার। চিত্রার সাথে একই কেবিনে পরিচয় ঘটেছে আন্তর্জাতিক সম্মান পাওয়া একজন গণিতবিদের। ট্রেনে আছেন একজন মাওলানাও, গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে রওনা দিয়েছেন তিনি। মোট কথা, সমাজের ভিন্ন ভিন্ন স্তরের মানুষদেরকে ভিন্ন ভিন্ন (বলতে গেলে, নেতিবাচক) পরিস্থিতে এনে এক করেছেন লেখক। জীবিত এ মানুষদের পাশাপাশি একজন মৃতও আছে ট্রেনে। স্বজনরা তার লাশ নিয়ে রওনা হয়েছে গন্তব্যে। চরিত্রগুলোকে এক এক পরিস্থিতিতে ফেলে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ভিন্ন কিছু বার্তা দেয়া হয়েছে। বার্তাগুলো লেখক আলাদা করে বলেননি, পাঠক আপনাআপনিই বুঝতে পারবে। পড়া শুরু করলে ট্রেনের বেগেই শেষ হয়ে যাবে বইটি। হুমায়ূন আহমেদের একটা সাধারণ বিষয় হচ্ছে, তিনি অনেক উপন্যাসেই সমাপ্তিটা পাঠকের উপর ছেড়ে দেন। এক্ষেত্রেও তিনি এমনটাই করছিলেন, পরে আবার কী মনে করে পাঠককে সরাসরি ইঙ্গিত দিয়েই শেষ করলেন। • ব্যাক্তিগত রেটিং: ০৯/১০ • বই: কিছুক্ষণ • লেখক: হুমায়ূন আহমেদ • প্রকাশনী: আফসার ব্রাদার্স • প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ • পৃষ্ঠা: ৮৮ • মুদ্রিত মূল্য: ১৭৫ টাকা ~ ইয়াসির আল সাইফ
Was this review helpful to you?
or
The book absolutely awesome. What book by Humayun Ahmed sir. Thanks Sir ?. Mind-blowing man
Was this review helpful to you?
or
Best . I will give it 10 stars if there was
Was this review helpful to you?
or
সাহিত্যের যে কোন শাখার মধ্যে ছোটগল্প লিখা সবচে কঠিন ,ছোটগল্পের সবচে বড় তারকা এডগার এলান পো এর মতে একটি ছোটগল্পের প্রতিটি শব্দ কাহিনীতে ভূমিকা রাখবে,কাজেই অর্থহীন বাক্য বা চরিত্র আনা যাবেনা।কিন্তু এই ছোটগল্পে (বা উপন্যাসিকা তে)প্রচুর অর্থহীন চরিত্র আর শব্দের সমাহার ছিল।কোন মূল ন্যারেটিভ না থাকায় জগাখিচুড়ি মনে হয়েছে।আর গল্প শেষ করতে অবাস্তব ও অযৌক্তিক কিছু ঘটনা আনা হয়ছে। স্ট্রং ন্যারেটিভ হুমায়ুন আহমেদ এর কোন বই এই থাকেনা,কিন্তু এই বইয়ের ঘটনাপ্রবাহ পুরোই অর্থহীন মনে হয়েছে,আর কোন মূল কাহিনী ই নেই।দয়া করে বইটি পড়ে সময় নষ্ট করবেন না।
Was this review helpful to you?
or
কিছু কিছু্ উপন্যাস থাকে যেগুলো লেখা হয় কয়েক ঘন্টার ঘটনাকে নিয়ে। কিছুক্ষণ উপন্যাসটা ঠিক সেই রকম প্রেক্ষাপটে রচিত। যদি আপনি প্রচ্ছদ ভালো করে লক্ষ্যে করেন তাহলে কাহীনি আন্দাজ করতে পারবেন। হ্যা ট্রেন ভ্রমণ নিয়ে কাহীনি। এই ট্রেনে মোট যাত্রী ৬৪৯ জন। এসব যাত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী, ধার্মিক, ডাক্তার, ক্ষমতাধর ব্যাক্তি নিয়েই আজকের কাহীনি। তবে আজ যে গল্পের নায়িকা যে কিন্তু খুবই সাধারন। নাম চিত্রা। চিত্রা যে কামরায় উঠেছে সেখানে আর একজন বুড়ো উঠেছে। চিত্রা জানতো না এই বুড়োর আসল পরিচয়, তাই অন্য কামড়ায় চলে গিয়ে পড়ে মহা বিপদে। অন্য যে কামড়ায় যায় চিত্রা সেখানকার একজন মাথা খারাপ মহিলা তার ডাক্তার ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছিল আশ্চর্যের বিষয় মহিলা চিত্রাকে বৌমা বলে ডাকছে। ট্রেনে একজন মন্ত্রীআছে। তারা বেড়াতে যাচ্ছে এবং ট্রেনের দায়িত্বে থাকা লোক গুলোর প্রতি যখন খারাপ আচরন করছিল তখন উপর থেকে জানানো হয় মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে তাকে বরখাস্ত করে দেয়া হয়েছে। ভয়ে মন্ত্রীর পরিবার ট্রেন থামিয়ে পালিয়ে যায়। তবে পালিয়ে যাওয়ার পরেই ঘটে মারাত্বক এক কাহিনী। অপরদিকে যে ধার্মিক লোক যাচ্ছে তেনারা স্ত্রীর বাচ্চা হবে। কিন্তু ট্রেনে কোন মেয়ে ডাক্তার নেই। আর মাওলানা চায়না কোন ছেলে ডাক্তার তার স্ত্রীর কাছে যাক। কিন্তু তার স্ত্রী প্রায় মরমর অবস্থায় চলে গেছে। প্রত্যেক এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা, শেষের দিকে এক বিন্দুতে মিলিত হয়। তবে এসব ঘটনায় আমার সবচেয়ে ভালো লাগে এক মহিলাকে যার সন্তান মারা গেছে এবং তার সেই মৃত সন্তান আজ ট্রেনেই যাচ্ছে। তো এভাবেই এগোয় কাহীনি, আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে। আশাকরি আপনাদের ও লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
মেয়েটাকে যা সিদ্ধান্ত নেবার এখনই নিতে হবে। ট্রেন কিছুক্ষণের মধ্যে ছেড়ে দিবে। একটুপর আর নেমে যাওয়া যাবে না। কোন কুলিকে ডাকবে না কি ব্যাগ নামিয়ে দেবার জন্য, বুঝতে পারছিলো না। হঠাৎ ট্রেনটা ছেড়ে দিলো। চিত্রা অবাক হয়ে দেখলো দুজনের যে কামরায় তার সিট, সেখানে অদ্ভুত দর্শনের একজন কুৎসিত বুড়ো ভদ্রলোক বসে আছেন। সে রুমে ঢুকবে কি না বুঝতে পারলো না। মাওলানা কি তার স্ত্রীর প্রসবের জন্য কোন একজন লেডি ডাক্তার খুঁজে পাবেন? /লেখক পরিচয়: হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। তাঁর সৃষ্ট হিমু এবং মিসির আলি ও শুভ্র চরিত্রগুলি বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীও তাঁর সৃষ্টিকর্মের অন্তর্গত। ধরা হয় বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর জনপ্রিয়তা তিনি শুরু করেন। কৃত্রিমভাবে লাইভ সাপোর্টে রাখার পর ১৯ জুলাই ২০১২ তারিখে হুমায়ূন আহমেদ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর ফলে বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক শূন্যতার সৃষ্টি হয়।
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৩ মাস: আগস্ট সপ্তাহ: তৃতীয় পর্ব: ৩ বইয়ের নাম: কিছুক্ষণ লেখক: হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী: আফসার ব্রাদার্স পৃষ্ঠা: ৮৮ মলাট মূল্য: ১৫০ টাকা লেখক পরিচিতি: বই পড়েন কিন্তু বাংলাদেশী পাঠক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদকে চিনবেন না এমন পাঠক খুঁজে পাওয়া কঠিন।সেই লেখক হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই, ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচিত্রনির্মাতা। তার জনপ্রিয়তার মাত্রাই তাকে করেছে অনন্য।তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় তিন শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। #কাহিনীর_পূর্বের_কাহিনী ট্রেন দেখেলেই লেখক হুমায়ূনের ট্রেনে চড়তে ইচ্ছে করতো।এই ব্যস্ত নগরীর জীবন, জ্যামের মধ্যে গাড়ির মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা একরকম বন্দিদশায় প্রতিপন্ন হতো। আর সেই ইচ্ছে থেকেই এই গল্পের সূত্রপাত।মজার না? গল্পের নামটিও কিন্তু ধার করা। না, না। আমি বলছি না। স্বয়ং লেখক বলছেন। তা কার থেকে ধার করা শুনবেন না? বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। যাকে আমরা বনফুল বলেই চিনি। তার কাছ থেকেই এই 'কিচ্ছুক্ষন' নামের উপন্যাসের উৎপত্তি। #কাহিনী_সংক্ষেপ: কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন ছাড়বে। অনেক চিন্তা ভাবনার মধ্যে দিয়ে শেষ পর্যন্ত চিত্রা ট্রেনে উঠলো। ট্রেনে উঠার পর নিজের সিটটাতে বসতেই পারলোনা একেরপর এক নানান কর্মকান্ড শুরু। সব ঝক্কিঝামেলা শেষ হলে নিজের কামরায় ঢুকতেই এক অদ্ভুত দর্শন লুঙ্গি পরিহিত লোককে দেখেই চিত্রার মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম।কিছুইতেই সে এই লোকের সাথে সারা রাস্তা ট্রেনে যেতেই রাজি নয়। এক্ষুনি কামরা বদলানো দরকার। চিত্রার বান্ধবীর পরিচিত এমপি, তার উপরে পরিচিত এই রেলের প্রধানগণ।সেই সুবাদে বদলানো যেতেই পারে কামরা। তবে যে কামরা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল সেটিও হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম আর ঝামেলাপূর্ণ। কারণ ট্রেনে একটা লাশ যাচ্ছে। আর খালি পাওয়া সেই বগির পাশেই সেই লাশ রাখা। শোনার পর থেকেই চিত্রার গা গোলাচ্ছে। এদিকে চিত্রাকে তার বান্ধবী ঘন ঘন ফোন করেই যাচ্ছে, এতে সে একটু নয়, বরং মহা বিরক্ত। কিছুক্ষণপর এক ভদ্রলোকের সাথে পরামর্শ করে ট্রেনের কর্তৃপক্ষ সমাধান করেছেন কে কিভাবে, কোন কামরায় যাচ্ছেন। ট্রেন দুলে দুলে চলেছে।.....দিনাজপুর যাচ্ছে চিত্রা। মা-বাধাহীন অনাথ চিত্রা যাচ্ছে বিবাহ বসতে। এই ব্যাপারটি সে জানে। সে ও জানে তার আত্মীয়রা জানে সে এই ব্যাপারে কিছু না জেনেই যাচ্ছে। ভাগ্যের লিখনে ট্রেনের মধ্যে এক অপিরিচিত আগুন্তকের সাথে চিত্রার মিষ্টি পরিচয় কি কোনো বার্তা বহন করে? নাকি জীবনের কিছুক্ষন স্মৃতি হয়ে রবে সারাটি জীবন? #পাঠ_পর্যালোচনা: কয়েক ঘন্টার সময়ের এক টুকরো গল্পই এই উপন্যাসের প্রতিপাদ্য বিষয়। কিন্তু এই সময়ের মাঝে মানুষের নানান রূপের, মনের, আঙ্গিক ও বাহ্যিক প্রতিক্রিয়ার বর্ণনা রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে দেখলে আমরা মানুষকে বাইরে থেকেই বিবেচনা করি। কিন্তু মনের মানুষ তার বহিরাগত আকর্ষণ থেকে সম্পূর্ণই আলাদা। এই ট্রেনে মোট যাত্রী ৬৪৯ জন। এসব যাত্রীদের মধ্যে রয়েছে জ্ঞানী, ধার্মিক, সাধারণ রমণী, মা, ক্ষমতাচুত্যু মন্ত্রী, ডাক্তার, ক্ষমতাধর ব্যাক্তি সকলেই আছে। তাদের চারিত্রিক দৃষ্টিকোণ যেমন আলাদা, তাদের পছন্দের গল্পটিও আলাদা। মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সবাই এক সূত্রে গাঁথা পড়েছেন। মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব নিয়ে খেলা লেখকের প্রাচীন এক খেলা। এই উপন্যাসটিও তার ব্যতিক্রম নয়। মানুষের মনের ভেতরের তোলপাড় করা রূপ একটা সাধারণ ঘটনার মাধ্যমে তিনি অকপটেই তুলে ধরেছেন। এখানে কোনোরূপ জটিল কোনো লেখা নেই। সব সাধারণভাবেই ঘটে চলেছে। তবু জীবন যেমন নতুন করে প্রাণ পায় আরেকটি মানুষের ছোঁয়ায়, তেমনি নতুন প্রাণ ঝরে যাওয়ার ঘটনাও এখানে হাহাকার এনে দেবে। কিন্তু অসম্ভব গুণদর্শনেই লেখক শেষটাতে কি এক অনুভূতি রেখেছেন পাঠক নিজেকেও খুব সুখী সুখী অনুভব করবেন। ট্রেনেই কাহিনী শুরু আর ট্রেনেই শেষ। কিন্তু জীবনের বাঁকে বাঁকে ঘুরে ফিরেই যেন আবার শান্তির নীড়ে আপনাকে বসিয়েই লেখকের পরিতৃপ্তি। আমার রেটিং: ৫/৫ ( রেটিং আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত হলেও আমার মনে হয় এই উপন্যাসের সব পাঠকই আমার মতোই রেটিং দেবেন পুরোটা পড়বার পর। ) রিভিউ লিখেছেনঃ রুপন্তি শারমিন
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের ভূমিকায় লেখক লিখেছেন, ছোটবেলায় চোখের সামনে দিয়ে ট্রেন যেতে দেখে তিনি মনে মনে ভাবতেন ট্রেনের যাত্রীরা কতই না সুখী। তাই তিনিও 'কিছুক্ষণ' এর মাধ্যমে এমন একটা গল্প বলতে চেয়েছেন যার শুরু একটি ট্রেনের কামড়ায় এবং শেষও সেখানে। ৮০ পৃষ্ঠার ছোট্ট এই উপন্যাসিকার মাধ্যমে লেখক তাঁর ছোটবেলার চিন্তাকেই বাস্তবায়িত করেছেন। অর্থাৎ গল্পের শেষে সকলেই সুখী, অনেক অনেক সুখী। তবে কাহিনীর শুরুটা কিন্তু বেশ জটিল ছিল। ট্রেনযাত্রীরা অর্থাৎ এই উপন্যাসিকার চরিত্ররা নানা শ্রেণি, নানা পেশা আর নানা স্বভাবের মানুষ। তাদের মধ্যে মিল শুধু একটাই। বিচিত্র সব কারণে তারা সকলেই ভীষণ অসুখী। চিত্রা নামের মেয়েটি অসুখী কারণ সে ট্রেনে তাঁর পছন্দমত বার্থ পায়নি। এক মাওলানার স্ত্রী, তিনি সন্তানসম্ভবা, যেকোন সময়ে তিনি সন্তান প্রসব করতে পারেন। মাওলানা, যিনি চান তার স্ত্রীর প্রসবের সময় যেন একজন লেডি ডাক্তার থাকে কিন্তু তিনি লেডি ডাক্তার পাচ্ছেন না। এক ডাক্তার যে কিনা তার মায়ের জ্বালায় অতিষ্ঠ। ডাক্তারের মা, যার ডাক্তার ছেলে তার মুখের ওপর শুধু বড় বড় কথাই বলে নাই বরং ট্রেনে বসে মদ্যপানও করে ফেলেছে। আছেন এক মন্ত্রী, যিনি খবর পেয়েছেন যে তিনি মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। ট্রেনে আরেক মা আছে যিনি তার সন্তানের মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছে। মোটামুটি সবাই এখানে অসুখী। শুধু বিশ্ববিখ্যাত এক অংকের প্রফেসর আছেন, যিনি সুখীও নন অসুখীও নন। তো, এদের নিয়েই কাহিনী। একটা সময়ে এসে বিভিন্ন মজার ঘটনার অবতারণা হবে যার ফলে ক্রমেই কাহিনী ইন্টারেস্টিং হতে থাকবে। একটা প্রেমকাহিনীর দেখা মিলবে, একটা শিশুর পৃথিবীতে আসার মত অতিবাস্তব ঘটনা ঘটবে আবার এক হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি নতুন করে যেন তার প্রাণ ফিরে পাবেন। এই সবকিছুই হবে স্রেফ একটা ট্রেন জার্নিতেই। আর সেই একটা ট্রেন জার্নিতেই এত সব চমকপ্রদ ঘটনা ঘটবে যে সেই ট্রেনে বলতে গেলে কেউই আর অসুখী থাকবে না। লেখকের ছেলেবেলার স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটবে খুবই ভালো লাগার একটা সমাপ্তির মাধ্যমে। হুমায়ুন আহমেদের অধিকাংশ উপন্যাসই শেষ হয় ছোট গল্পের মত করে। কাহিনী শেষ হয়েও যেন হয় না। কিন্তু 'কিছুক্ষণ' উপন্যাসটা সেদিক থেকে একেবারেই আলাদা এবং স্বকীয় মহিমায় সমুজ্জ্বল। লেখক হয়ত এই উদ্দেশ্য নিয়েই 'কিছুক্ষণ' লিখেছিলেন যাতে কিছুক্ষণের কিছু ঘটনার বর্ণনায় রচিত এই লেখা পাঠককে কিছুক্ষণের জন্য অন্য রকম ভালো লাগার জগতে নিয়ে যেতে পারে। এবং আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে, লেখকের লেখনীর উদ্দেশ্য সর্বোতভাবে সফল হয়েছে। 'কিছুক্ষণ' পড়ার পর পাঠকের চোখ যেমন ভালো লাগার অশ্রুতে সিক্ত হবে তেমনি তার মুখও হয়ে উঠবে হাস্যোজ্জ্বল।
Was this review helpful to you?
or
ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে। চিত্রা ট্রেন থেকে নেমে যাবে কিনা এটা নিয়ে দুটানার মধ্যে আছে। বড় মামা খবর দিয়েছেন তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। মৃত্যুর আগে তিনি চিত্রাকে প্রতিষ্ঠিত দেখে যেতে চান। চিত্রা ভালোভাবেই বুঝতে পারছে পুরুষদের চোখে মেয়েদের প্রতিষ্ঠিত হওয়া মানে বিয়ে হওয়া। চিত্রার বান্ধবি লিলি তার মামাকে বলে একটা সিঙ্গেল স্লিপিংকারের টিকিট নিয়ে দিয়েছেন। লিলির মামা রেলের বড় অফিসার। লিলি বলেছিল একটা কেবিন চিত্রার একার জন্য ব্যবস্থা করা কোনও বেপারই না। চিত্রা ওর কেবিনে ঢুকেই দেখল এক লোক লুঙ্গী পরে শুয়ে শুয়ে সিগারেট খাচ্ছে আর কাশছে। লুঙ্গী হাটুর উপর উঠে আছে। বিশ্রী লোমযুক্ত তার সরু সরু পা দেখা যাচ্ছে। এরকম একটা লোকের সাথে এক কেবিনে যাওয়া অসম্ভব। এই ট্রেনেই সেলুন কারে করে স্বপরিবারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যাচ্ছেন। তার একমাত্র শালির বিয়ে উপলক্ষে ব্যান্ডদল নিয়ে গান বাজনা করতে করতে গ্রামের বাড়ি যাওয়া। হঠাৎ তিনি খবর পেলেন তার মন্ত্রীত্ব চলে গেছে। তারপর তার সাথে ঘটতে থাকল আপত্তিকর ঘটনা। একটা কেবিন নিয়ে ডাক্তার আশহাব তার মাকে নিয়ে যাচ্ছেন। তার মায়ের কিছুটা মানসিক সমস্যা আছে। তিনি হঠাৎ হঠাৎ অপরিচিত মেয়েকে নিজের বউমা মনে করেন। এই মুহূর্তে তিনি চিত্রাকে বউমা বলে ডাকছেন। ডাক্তার সাহেব চিত্রার দূরবস্থার কথা জানতে পেরে বলেছিলেন চিত্রা তার মায়ের সাথে থাকতে পারে। আর ডাক্তার থাকবে ঐ বুড়োর সাথে। ডাক্তারের মায়ের সাথে থাকতে রাজি হওয়াই চিত্রার জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। ট্রেনে একজন মাওলানাও আছেন। তিনি তার গর্ভবতী স্ত্রী নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছেন। মাঝরাস্তায় স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে তিনি মহিলা ডাক্তারের খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু ট্রেনে একটাই মাত্র ডাক্তার এবং সে পুরুষ। মাওলানার মনোভাব এমন যে স্ত্রী যদি মরেও যায় তাও তিনি পুরুষ ডাক্তার দেখাবেন না। পরে ওই বুড়োর লজিক এবং চিত্রার জেদের কাছে তার হার মানতে হয়। চিত্রা অবশ্য পরে ঐ লুঙ্গী পরা বুড়োর পরিচয় জানতে পেরেছে। উনার নাম আব্দুর রশিদ। উনি একজন ম্যাথ জায়ান্ট। পৃথীবির দশজন গণিতবিদের মধ্যে তিনি ৮ নাম্বার। একুশবছর পর তিনি দেশে এসেছেন। এই ট্রেনে একটি ফুটফুটে বাচ্চার জন্ম হল। একটা প্রণয়ের সূচনা হল। আপনারা নিশ্চয় ধরতে পেরেছেন কার সাথে কার প্রণয় হয়েছে? ধরতে না পারলে আমার মত আপনিও ঐ ট্রেনে উঠে পড়ুন। আর হ্যাঁ ভালো কথা। এই ট্রেনে একটা ডেডবডিও যাচ্ছে। নিজ দায়িত্বে ট্রেনে উঠবেন। ব্যাক্তিগত মতামতঃ পুরো গল্পটাই ট্রেনে। একটা চলন্ত ট্রেনে কিছু মজার ঘটনা। আমার ভালো লেগেছে বলেই আপনাদেরও ট্রেনে উঠতে বলছি।
Was this review helpful to you?
or
এই উপন্যাসটার মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে চিত্রা নামের এক মেয়ের ট্রেন যাত্রা আর সেই যাত্রায় কিছু মানুষের সাথে তার কথাবার্তা হওয়া,পরিচিতি হওয়া।প্রথমেই তার পরিচয় হয় এক বুড়োর সাথে যাকে প্রথমে তার কাছে চরম বিরক্তিকর লাগলেও পরে ভালো লাগে।দ্বিতীয় যার সাথে দেখা হয় তিনি এক যুবক ডাক্তার।যিনি তার মাকে নিয়ে বিদেশ যাচ্ছেন এবং ওই মহিলার কথা বার্তায় কিছু পাগলামি ভাব আছে।চিত্রা ওই মহিলার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে এবং একটা পর্যায়ে ওই মহিলা চিত্রাকে তার পুত্রবধু ভাবতে শুরু করে।যেটা শুনে সে আর ওই কামরায় থাকতে পারে না।সে উনার সাথে কথা বলতে অন্য কামরায় যায় আর তার মার এই সমস্যাটার কথা বলে।এভাবেই ঘটনা এগোতে থাকে। অন্যদিকে এক মন্ত্রী তার পরিবার নিয়ে ওই ট্রেনেই একটা ছোটখাটো পার্টির আয়োজন করে।একটা ফোনের মাধ্যমে উনি জানতে পারেন যে তার মন্ত্রীত্ব চলে গেছে। বইটাতে রাজনীতির কিছু ছোটখাট বিষয় ধরা পড়েছে।এক মৌলানা তার গর্ভবতী স্ত্রীসহ ট্রেনে উঠে যার একটু পর পর প্রসব বেদনা শুরু হয়। কিছু ইসলামিক ধ্যান-ধারণার বর্ণনা করা হয়েছে।বিশ্ববিখ্যাত এক অংকের প্রফেসরের কথা বলা হয়েছে।এই একটা ট্রেন জার্নিতেই সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের আচার আচরণকে তুলে ধরা হয়েছে।বইটা পড়া শুরু করলে আসলেই মনে হয় যেন কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রেন যাত্রাটি শেষ হয় এবং শেষ হওয়ার সাথে একটা ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করে
Was this review helpful to you?
or
কিচ্ছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন ছেড়ে দিবে, চিত্রা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা সে কি ট্রেন থেকে নেমে যাবে কিনা।সে যখন সিদ্ধান্ত নিল নেমে যাবে সেই মুহুর্তে একজন মাওলানা তার স্ত্রী কে নিয়ে ট্রেনে উঠলেন।মাওলানার স্ত্রী গর্ভবতী। ওনাদের জন্যে চিত্রার আর ট্রেন থেকে নামা হল না। চিত্রারর এখন কাঁদোকাঁদো অবস্থা। তার প্রধান সমস্যা হচ্ছে তার ক্যাবিন এ তার একা যাওয়ার কথা কিন্তু সেখানে লুঙ্গি হাটু পর্যন্ত উঠিয়ে বসে ক্রমাগত সিগারেট খাচ্ছেন একজন বুড়ো লোক। একজন এটেন্ডেন্ট চিত্রার দিকে এগিয়ে এসে বলল মেডাম কোন সমস্যা? চিত্রা তাকে জিজ্ঞেস করলো আর কোন ক্যাবিন এ সিট পাওয়া যাবে কি না? তখন ই এটেন্ডেন্ট এর কাছে জানতে পারলো যে একটা সিট আছে কিন্তু সেই ক্যাবিন এ একটা লাশ ও তার মা যাচ্ছে। চিত্রা লাগেজ রাখতে গিয়ে বুড়োটার সাথে দু একটা কথায় বিরক্ত হয়ে বেড়িয়ে আসে।নিশ্চয় ট্রেনে বুফে কার আছে???তবে সেখানে বসে চা খেতে খেতে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা যায়। বুফে কারে চা নেই কফি আছে।চিত্রার কফির কড়া গন্ধ পছন্দ না তাও সে এক কাপ কফি কিনে বসে পড়লো। চিত্রার মামা তাকে বিয়ে দিবেন বলে ডেকেছেন দিনাজপুর। তার বাবা মা অনেক আগেই মারা গেছে। মামা বিয়ের কথা সরাসরি বলেন নি। বলেছেন আমি চলে যাওয়ার আগে তোমাকে সেটেল্ড দেখতে চাই। মেয়েদের সেটেল্ড হওয়া মানেই বিয়ে করা। এই বুফে কারেই একটু পর একজন ডাক্তার ছেলের সাথে পরিচয় হবে চিত্রার।জানতে পারবে ওই বুড়ো কোন সাধারণ বুড়ো না।একজন মানুষিক রুগী মা তাকে নিজের ছেলের বউ মনে করবেন।এ ট্রেনেই মাওলানার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠবে। ট্রেনে একজন মন্ত্রী আছেন সে তার শুভাকাঙ্ক্ষী কারা তা জান্তে পাড়বেন। মানুষ এর জীবন এ কিছুক্ষণ এর মধ্যে সব বদলে যেতে পারে, তাই বুঝবে এই ট্রেনের মানুষ গুলো। আমার কিছু কথা ও পাঠ প্রতিক্রিয়া : আমি পিডিএফ খুব একটা পড়িনা আসলে পড়তে পারিনা। কাল আমার অর্ধ অঙ্গ এর কাছে একটা নতুন সফটওয়ার (bluelight filter) সন্ধান পেয়ে সফটওয়ার টির সাথে এই বই টির পিডিএফ টাও নিয়ে নিলাম। পিডিএফ টা ওপেন করেই বই টা সম্পর্কের প্রথম তথ্য গুলো দেখার পড়েই যেটা চোখে পড়লো তা আমাকে কিছুটা আবেগি করে দিলো। "বই পোকাদের আড্ডাখানা এর সৌজন্যে নির্মিত "। গ্রুপ টির এডমিন ছাড়াও গ্রুপ এর একজন মেম্বার আমি তাই গ্রুপ টির প্রত্যেকটি ছোট বড় সাফল্য আমাকে উৎফুল্ল করে। এবার আসি পাঠ প্রতিক্রিয়ায়, বই টা হাতে নিয়েছি তখন রাত ২ টা বাজে। বই টা পড়তে শুরু করেছিলাম যে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যাবো। কিন্তু বই টা এতো ভালো লাগছিল পড়তে যে, ১ ঘন্টায় বই টা শেষ করে মনে হচ্ছিল আরেক টা বই হাতে নেই স্যার এর। অনেক লম্বা একটা রিডার্স ব্লক থেকে উঠে প্রথম স্যার এর বই টাই আমাকে আঁকড়ে ধরলো। ট্রেন নিয়ে এতো সুন্দর মজার এবং শিক্ষণীয় একটা গল্প লেখা সম্ভব??? বই টা না পড়লে হুমায়ূন স্যার এর লেখা একটা অতি সাধারণ কিন্তু সুন্দর বই মিস করে যাবেন। বই টা শেষ করেই প্রথম যেটা মনে হয়েছে সে টা হল স্যার আর লিখবেন না। আর কোন নতুন লেখা আমাদের অবাক করবেনা। শেষ হইয়াও হইলো না শেষ হুমায়ূন স্যার আমাদের কাছে।