User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বইটি অসাধারণ। বইটির ডেলিভারি অতি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেলারকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Was this review helpful to you?
or
খুব ভালো লাগলো। অনেক দিন পর হুমায়ুন আহমেদ এর বই পড়লাম।
Was this review helpful to you?
or
humayun ahmed er boi niye beshi kisu bolar nei. sholpo porishore best theme 1971
Was this review helpful to you?
or
খুব সাধারন আর সাদামাটা একটা বই। বাচ্চাদের এই বই পড়া থেকে একটু বিরত থাকা উচিত কারন কিছু বিব্রতকর লেখাও আছে বইটিতে। মুক্তিযুদ্ধের গল্প হলেও বইটি খুবই ছোট এবং শেষের অংশটি পুরোপুরি শেষ হলে হয়ত আরও ভাল লাগতো।
Was this review helpful to you?
or
“আজি এ নিশিথে তোমারে পড়িছে মনে হৃদয়ে যাতনা উঠিছে জাগিয়া ক্ষণে ক্ষণে, তুমি সুন্দর চেয়ে থাকি তাই কল্পলোকের চোখে ভালবাসা ছাড়া নাই কিছু আর মোর মরুময় বুকে।” হুমায়ূন আহমেদ
Was this review helpful to you?
or
পুরো গল্পের প্রেক্ষাপট মুক্তিযুদ্ধের সময়,১৯৭১ নামেই সেটা প্রকাশ পেয়ছে। বইটা পড়ার জন্য খুবই আগ্রহী ছিলাম। সেটা স্বার্থক হলো। হুমায়ুন আহমেদের লিখায় আলাদা করে কিছু বলার নেই
Was this review helpful to you?
or
excited
Was this review helpful to you?
or
বইটার কথা রেডিও তে শুনে রকমারি তে অডার করে দিলাম। বইটা পড়ে ভালো লাগলো।
Was this review helpful to you?
or
This book wasn't that good as I expected.
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটি পড়ে মনে হচ্ছে , অনেক তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল। আরেকটু বড় পরিসরে যদি লেখক কাহিনীটাকে সাজাতেন তাহলে হয়ত আরও ডিটেইলে একাত্তরকে উপস্থাপন করা যেত।একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে লেখা হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসসমূহের মধ্যে '১৯৭১' কখনোই অন্যতম সেরা নয়। তারপরও লেখক এই উপন্যাসের মাধ্যমে একাত্তরে সাধারণ বাঙালীর অবস্থান এবং হানাদারদের নিষ্ঠুরতাকে কিছুটা হলেও বইয়ের পাতায় নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছেন। নীলগঞ্জ গ্রামের পটভূমিতে একাত্তরের কিছু খন্ডচিত্র তুলে ধরেছেন লেখক। সেসব খন্ডচিত্রকে একত্রিত করে পাঠকের পক্ষে সম্ভব হবে একাত্তর সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা লাভ করা।
Was this review helpful to you?
or
২০১৯ সালে বসে ১৯৭১ সালকে প্রতক্ষ্য করে আসলাম।দেখে আসলাম মিলিটারিদের পৈচাশিক কর্মকাণ্ড। ইচ্ছে করছিলে বইয়ের পাতা থেকে মিলটারির মেজর এজাজ আহমেদকে বের করে গুলি করে ফেলি। প্রথম দিকে রফিকের প্রতিও প্রচন্ড ঘৃণা জন্মেছে, মনে হয়েছে এটার খুলি টাও উড়ায় দেওয়া উচিত। কিন্তু আবার শেষে দিকে তাকেই ভালোবেসে ফেলেছি। শেষ দিকে এসে মনে হলো সব মুক্তিযোদ্ধা রা গুলি হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে নি, কেউ কেউ হয়তো মিলিটারিকে সঙ্গ দিয়েও যুদ্ধ করেছে। তবে উপন্যাসটিকে অনেক ছোট মনে হলো, শুরু হতে হতেই কেমন জানি শেষ হয়ে গেলো। আরেকটু বড় পরিসরে লিখলে ভালো হতো! (মেজর সাহেব বললেন- রফিক, তুমি কি বেঁচে থাকতে চাও? রফিক শান্ত স্বরে বলল - চাই মেজর সাহেব। সবাই বেঁচে থাকতে চায়। আপনি নিজেও চান। চান না? মেজর সাহেব চুপ করে রইলেন। রফিক তীক্ষ্ণস্বরে বলল - মেজর সাহেব, আমার কিন্তু মনে হয় না আপনি জীবিত ফিরে যাবেন এ দেশ থেকে)!
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১ হুমায়ুন আহমেদ হুমায়ুন আহমেদ এক জাদুর নাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের আলোচনা শুনে এখন হুমায়ুন আহমেদ কে আরো গভীর ভাবে পড়তে শুরু করেছি। এই উপন্যাসের প্রথমেই ধরেন। মীর আলি চরিত্র দিয়েই যার শুরু। রাতের আধারে সেই অন্ধ মানুষের চোখেও যখন মিলিটারির সেই শব্দ, সেই নির্মহতা উঠে আসল। এই রুপকি সাধারণ লেখক অনেক উপমা দিয়েও তুলে ধরতে পারবেন না। সেই স্নিগ্ধ ভোরের মাঝে সেই খবর বুকে হিম এনে দেয়। মিলিটারি প্রবেশের পরেই বুঝতে পারলাম যে, এখন একটার পর একটা গুলি চলবে, হয়তো তাঁর নির্মমতায়, বা সেই চরিত্রের দিকে আমাদের মন টানবে। কিন্তু হল উলটো, পুরো উপন্যাসে তিনি আমাদের মনকে নিয়ে গেলেন আর্মি অফিসারের দিক দিয়ে। জোসনা জননীর গল্পে যেখানে গুলি খাবার সময় আমি সেই মৃত মায়ের কথা, মেয়ের কথা স্মরন করেছি। এখানে লেখক ব্যস্ত রেখেছেন অদ্ভুত রসিকতায়। আজিজ মাস্টার, জয়নাল, মনা যেন তারই ফল। আমরা কেউ জানিনা আজিজ মাস্টার কি তখন মালার কথা মনে করছিল কিনা, আমরা জানি আজিজ মাস্টার কে উলংগ করে তাঁর কবিতার নায়িকার কাছে নিয়ে যাবার প্ল্যান করা হচ্ছিল। কেন জানি হড়হড় করে পড়ে গিয়েছি। একটুবারো মন খারাপ হয়নি। বেজে উঠেনি বুকের মাঝে কোন গান। স্পয়লার দিয়ে দেয়া যেতে পারে। কিন্তু সব অগোচরে লক্ষ্য করা, কলকাঠি নাড়া, রফিক যখন পানির মাঝে, বুকে আগুন পেতে নেয়। বলতে থাকে মেজর কে যে আপনিও বেচে ফিরতে পারবেন না, তখন বলেন ভেসে উঠেনি বুকের মাঝে কোন গান। দেশপ্রেম জাগ্রত হয়নি। মন খারাপ হয়নি রফিকের জন্য। মন্দির সোপান তলে কত প্রাণ হলো বলিদান, লেখা আছে অশ্রুজলে৷ লেখক হিসেবে হুমায়ুন আহমেদ তাই জাদুকর থেকে কম জাননি। পাঠককদের বর্ননার পরিপাশ দিয়ে মন নিয়ে খেলা করেছেন। খুব স্বল্প বর্ননায় যে বিশদ যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিত তিনি তুলে ধরেছেন তা বিশদ গবেষনার অবকাশ রাখে। গল্পের আলোচনায় একে উপন্যাস না বলে ছোট উপন্যাস ও বলা যেতে পারে। তবে মুক্তিযুদ্ধের এই মাসে, হুমায়ুন আহমেদ এর এই স্বল্প আলোচিত বইটি হতে পারে-অন্যতম পাঠের অংশ।
Was this review helpful to you?
or
"১৯৭১" বইটি হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখা একটি জনপ্রিয় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস। এখানে বাঙালিদের উপর পাকিস্তানি মিলিটারির নির্মম অত্যাচার, নির্যাতনের ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে।নীলগঞ্জ গ্রামে মিলিটারি এলে অনেককে তারা হত্যা করে।এখানে একজন বাঙালি রাজাকারের বাঙালির প্রতি মমত্ববোধও প্রকাশ পেয়েছে। বইটি পড়ে অনেক ভালো লাগল।মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক এই বইটি সবারই পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
১৯৭১ আমার পড়া হুমায়ুন আহমেদের সেরা বইগুলোর একটি। একজন ক র্নেল তার বাঙালি সহকারী কে নিয়ে সেনা সমেত এক্টি গ্রামের স্কুল দখল করে।কাহিনিটি গড়ে উঠেছে সেই স্কুলের হেডমাস্টার ও আশেপাশের অন্যান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে।বইটি পড়া শুরু করলে সত্যি সত্যি ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করে না।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস সব সময়ই ভাল লাগে। তিনি যুদ্ধের ইতিহাসের চেয়ে ঐ সময়কার মানুষদের মনস্তাত্বিক দিক এবং তাদের জীবনযাত্রা, অসহায়ত্ব তার নিজস্ব স্টাইলে তুলে ধরেন যা সত্যিই ভাল লাগার মত। ১৯৭১ হয়তো তার সেরা উপন্যাস নয় তবে অবশ্যই তার ভক্তদের ভাল লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
নীলগঞ্জ গ্রাম! অল্প কিছু বসত বাড়ি নিয়ে গ্রাম। শান্ত শিষ্ট । কিন্তু গ্রামটা একদিন মিলিটারির করালগ্রাসে পড়ে । গ্রামে মিলিটারীদের আগমন প্রথম বুঝতে পারে মীর আলী, বৃদ্ধ, চোখে তেমন দেখে না। এক রাতে তারা এসে স্কুলে ক্যাম্প করে। তারা বনেদি, এদেশের ভাষা বুঝে না। এসব সব বিবেচনা করে গ্রামবাসী তাদের স্কুলের হেডমাস্টার আজিজকে পাঠায় কথা বলতে। আজিজ মাস্টার নিজেকে কবি ভাবে। কবিতার কেন্দ্রে এক রমনী, মোতালেব মিয়ার মেয়ে। মিলিটারিরা তাকে বলে সব তথ্য দিলে তাকে সেই মেয়ের বন্দোবস্ত করে দিবে। তাছাড়া গ্রামে আছে দনী নিলু সেন, জয়নাল মিয়া। ওদিকে কৈবর্ত পাড়াতে কয়েকটা কৈবর্ত পরিবারের বাস। তাদের মাঝে ওই ঝগড়া টগড়া হয় আরকি। গ্রামের একপাশে আছে একটা ঘন জঙ্গল। সেখানে বৃষ্টির দিনে পুরো উলঙ্গ হয়ে যেতে দেখা যায় পাগল নিজামকে। এসবের মাঝে শেষ পর্যন্ত শুরু হয় এক ভীবষ্যত হত্যাকান্ড। মেজর সাহেব আর মেজরকে গাইড করে নিয়ে যায় বাঙালি রফিক। গল্পটা হঠাৎ করেই এবড়োথেবড়ো পথে চলতে থাকে। একেই হয়ত বলে যুদ্ধ। আর একেই হয়ত বলে গ্রাম। টপাটপ লাশ পড়তে থাকে হিন্দুদের, আজিজ মাস্টার আর ইমামকে হতে হয় চরম হেনস্তা। গল্পটা কি এরকমই? নাকি আরো কিছু লুকিয়ে ১৯৭১ এর ভেতরে। যা সংখ্যার চেয়ে বেশি অনুভুতিতে নাড়া দেয়। তবে কি....... #প্রতিক্রিয়া আহমদ ছফার "ওঙ্কার" বইটা পড়েছেন? মাত্র ২৮ পেইজের বইটাতে যে আবেগ দেখানো হয়েছে স্বয়ং রবীন্দ্র শরতের দ্বারা সেটা সম্ভব হত না বোধহয়। এই বইটাতে আমি ওঙ্কারের সেই অনুভুতিটার একটা বিস্তৃত অনুভুতি পেয়েছি। দেশপ্রেম ছোট একটা ঘটনাে ভেতরে এতো সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তোলা বেশ দুরুহ একটা কাজ। হুমায়ূন আহমেদ! তিনি নিজেই নিজের জন্য একটা বিশেষণ। অসাধারণ লেখনী দিয়ে পাঠককে মুগ্ধ করে রাখতে পেরেছেন তিনি । এখনো পারেন। বইটাও সেরকম। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কম লেখা হয়েছে? তার কতটা সমৃদ্ধ তা ভাবার বিষয়। বইটা খুব ছোট। ছোট বাক্যবিন্যাসে এক অমিয় অনুভবের জগত তৈরি হয়েছে বই জুড়ে । গল্পের প্রবাহ খুব বেশি রকমের ভালো। কাভারটা সুন্দর। বাইন্ডিং ভালোই। গল্পের সবচেয়ে ভালো লেগেছে চরিত্রগুলো। হুমায়ূন আহমেদের অনেকগুলো বই এর মত এটাও চরিত্রনির্ভর। চরিত্রগুলোতে বেশ স্নেহের সাথে একটা রুক্ষতা দেখা যায়। চরিত্রের দ্বৈততা খুব উপভোগ করার মত। চিরায়ত হুমায়ূন স্টাইলে লেখা বইটার ফিনিসিং খুবই সুন্দর ছিল। আমার মতে বর্তমান লেখকরা আসলে ঠিক কতটুকুতে গিয়ে থামতে হবে তা জানেন না। হুমায়ূন আহমেদ ঠিক এই জিনিসটাতে অতিদক্ষ। তাই তাকে এতো ভালো লাগে। যাহোক, আমি প্রায় সাত বছর কিশোরগঞ্জে ছিলাম। নীলগঞ্জ সেখান থেকে খুব দুরে না। আফসোস আমি সেখানে যেতে পারি নি। অবশ্য যেতে না পারায় একদিকে ভালোই হল। উনার গল্প শোনে যে বর্ণনা পেয়েছি বাস্তবে তার থেকে ভিন্ন হলে খুব খারাপ লাগত। যাহোক, যখন হুমায়ূন আহমেদ ময়মনসিংহ, নীলগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ নিয়ে লেখেন তখন একটা আলাদা গর্ব হয়। মনে হয় হ্যাঁ! আমার এলাকা!
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা 'যে রাঁধতে জানে সে চুলও বাধতে জানে' এ কথাটি আরেকবার প্রমাণিত হলো হুমায়ূন স্যারের "১৯৭১" বইটার মাধ্যমে। যিনি মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করবার জন্যে বেছে নিয়েছেন 'জোছনা ও জননীর গল্প'র মতো বিশাল প্লট, তিনিই '১৯৭১'র মতো ছোট্ট পরিসরে কি নিপুণ দক্ষতায়ই না তুলে এনেছেন একখণ্ড মুক্তিযুদ্ধকে!!! গ্রামের নাম নীলগঞ্জ। পহেলা মে। উনিশশো একাত্তর। ক্ষুদ্র সৈন্যবাহিনীর অধিনায়ক একজন মেজর-- এজাজ আহমেদ। কাবুল মিলিটারি একাডেমীর একজন কৃতি ক্যাডেট। বাড়ি পেশোয়ারের এক অখ্যাত গ্রামে। তার গায়ের নাম-- রেশোবা। মিলিটারিরর পোশাকেও তাকে রাজপুত্রের মতো লাগে। কিন্তু সুন্দর মুখের আড়ালে কি পরিমান নিষ্ঠুরতা লুকিয়ে থাকতে পারে তা কি চিন্তা করা যায়!!! হ্যা, '১৯৭১' নীলগঞ্জ নামের এক অজপাড়া গাঁয়ের গল্প। সেই সময়ের মানুষদের মনোজগতে কি পরিমান চাপ ফেলেছিল তা সহজেই এখানে বুঝা যায়। মুসলমানরা নিজেদের মন কে সান্তনা দিচ্ছে এভাবে, পাক হানাদাররা আমাদের মারবেনা কারন ওরাও মুসলিম। ওরা শুধু হিন্দুদের ক্ষতি করবে। অথচ এই হিন্দুদের সাথেই তারা বড় হয়েছে। আবার মৃত্যুর ভয়ে অপমানিত হয়ে, নিজের আত্মসম্মান ফিরে পাওয়ার গল্প যেমন আছে এখানে তেমনি একজন রাজাকারের জাতীয়তা বোধের জন্মের গল্প। এমনি সুন্দর ভাবে ছোট্ট পরিসরে হুমায়ূন আহমেদ তুলে ধরেছেন একখন্ড মুক্তিযুদ্ধকে। ♦ ভালবাসা খুব অদ্ভুত বিষয় তাই না? সেটা প্রেমিকার প্রতিই হোক আর দেশের প্রতিই হোক! মৃত্যুর মতো ভয়াবহ ব্যাপারকে যে বিষয়টা অবলীলায় তুচ্ছ করতে পারে তা হলো ভালবাসা। আর দুটি ভালবাসাই এক মলাটে আবদ্ধ হয়েছে ১৯৭১ এ। ♦ হুমায়ূন আহমেদের যে কিছু বই পাঠক অপরিচিত তার মধ্যে ১৯৭১ অন্যতম মনে হয়। তবে নিঃসন্দেহে এটি হুমায়ূন আহমেদের সেরা বইগুলোর মাঝে একটি । ♦ পাকিস্তানি হানাদারদের দৃষ্টিভঙ্গি কতটা নিষ্ঠুর ছিল তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ মিলবে এই মেজরের চরিত্রের মাধ্যমে। আমাদের তার কি পরিমান নিচে নিয়ে কল্পনা করতো!!! এটা ঐতিহাসিক বই না, ইতিহাস আশ্রিত বই। সময় স্থানের কিছু অসংগতি থাকা সত্ত্বেও এক পশলা ৭১ এ ভিজতে চাইলে হুমায়ূল আহমেদের ১৯৭১ এর চাইতে বেস্ট অপশন বোধয় খুব কম। অবশ্যই সংগ্রহে রাখার মতো এবং হুমায়ূন প্রেমীদের জন্য মাস্টরিড বই
Was this review helpful to you?
or
ভালো বই ।এটি অনেকটাই হুমায়ূন আহমেদের একটি অপরিচিত বই হলেও , নিঃসন্দেহে হুমায়ূন আহমেদের সেরা বইগুলোর মাঝে একটি । হুমায়ূন প্রেমীদের জন্য অবশ্য পাঠ্য একটি বই । অতি সংক্ষিপ্ত পরিসরে মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রামীণ লোকজন ও মিলিটারীদের মানসিক চিন্তা ও ভয় তুলে ধরা হয়েছে । তবে উপন্যাসটি শেষ করার পর মনে হল , উপন্যাসটি আরেকটু বড় হলে লেখক বোধহয় আরো কিছু বাস্তবতা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন ।
Was this review helpful to you?
or
এককথায় অসাধারণ
Was this review helpful to you?
or
nice book
Was this review helpful to you?
or
ek kothay baje ekta boi
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
nice!!!
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃ১৯৭১ লেখকের নামঃহুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃআফসার ব্রাদার্স মূল্যঃ১১০ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে লেখা হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসসমূহের মধ্যে '১৯৭১' কখনোই অন্যতম সেরা একটি উপন্যাস। লেখক এই উপন্যাসের মাধ্যমে একাত্তরের সাধারণ বাঙালীর অবস্থান এবং হানাদারদের নিষ্ঠুরতাকে কিছুটা হলেও বইয়ের পাতায় নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছেন।নীলগঞ্জ গ্রামের পটভূমিতে একাত্তরের কিছু খন্ডচিত্র তুলে ধরেছেন লেখক। সেসব খন্ডচিত্রকে একত্রিত করে পাঠকের পক্ষে সম্ভব হবে একাত্তর সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা লাভ করা।আগুনের পরশমণি আমার সবচেয়ে প্রিয় হুমায়ুন আহমেদের লেখা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস হলেও স্বীকার করতেই হয় উনার লেখা ওয়ান অফ দ্য মোস্ট ডিস্টার্বিং বই আমার কাছে সবসময় ১৯৭১। বইটা আমি ২-৩বারের বেশি পড়ি নাই, কিন্তু আমার প্রতিটা ভয়ানক ঘটনাবলী এখনো মাথায় পরিষ্কার গেঁথে আছে ডায়লগ সহ! হয়তো একারণেই এই বইটা আমার 'প্রিয়' মুক্তিযুদ্ধ বা এমনকি 'প্রিয়' হুমায়ুন আহমেদের বইয়ের তালিকাতেও আসবে না, কারণ এটা সত্যের খুব কাছাকাছি... আর রঙ্গিন কল্পনাবিলাসি পাঠক হিসেবে আমি হয়তো আপনা থেকেই সবসময় চেষ্টা করি ধুলো-ধুসরিত কঠোর বাস্তবতাকে স্বীকার করতে। একটি কথাই বলতে পারি বেস্ট একটি উপন্যাস।
Was this review helpful to you?
or
excellent
Was this review helpful to you?
or
'১৯৭১' সংখ্যাটা শুনলে বাংলার মুক্তিযুদ্ধের কথাই মনে পড়ে। সুতরাং এই সংখ্যাটি যদি কোন উপন্যাসের শিরোনাম হয় তাহলে অবশ্যই সে উপন্যাসের কাহিনীর সাথে মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি যোগাযোগ থাকা বা উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত হওয়ারই কথা। এবং বাস্তবে হুমায়ুন আহমেদের '১৯৭১' উপন্যাসেও হয়েছে ঠিক তা-ই। হুমায়ুন আহমেদের আরও একটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস হল '১৯৭১'। হুমায়ুন আহমেদের সাহিত্য জীবনের প্রথম দিককার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস সমূহের একেকটিতে মুক্তিযুদ্ধের একেকটি ভিন্ন ভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। সামগ্রিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক চিত্র সেগুলোতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। সম্ভবত '১৯৭১'ই হল হুমায়ুন আহমেদের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস যেখানে তিনি মুক্তিযুদ্ধ সংস্লিষ্ট একাধিক দিকে আলোকপাত করতে চেয়েছেন। তবে বলে রাখা জরুরি, উপন্যাসের এক পর্যায়ে এসে লেখক সেটি আর কন্টিনিউ করেন নাই। তাই শেষ পর্যন্ত '১৯৭১' উপন্যাসটিতেও কেবল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কিছু খন্ডচিত্রই ফুটে উঠেছে। এই উপন্যাসের পটভূমি হল নীলগঞ্জ নামের একটি গ্রাম। পাঠকরা নিশ্চয়ই খেয়াল করে থাকবেন, হুমায়ুন আহমেদের একাধিক উপন্যাসে এই নীলগঞ্জ গ্রামের উল্লেখ আছে। এই নীলগঞ্জ গ্রামের নানা শ্রেণি পেশার মানুষই হল এই উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্র। সেসব চরিত্রের মধ্যে আছে বৃদ্ধ মীর আলী, তার ছেলে বদিউজ্জামান, জয়নাল মিয়া, আজিজ মাস্টার, ইমাম সাহেব প্রমুখ। তবে এই উপন্যাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যাবে পাক মিলিটারির মেজর ও তার এক বাঙালি সহকর্মী রফিক। মে মাসের ১ তারিখ নীলগঞ্জ গ্রামে পাক মিলিটারি আসে। মিলিটারি এসে বেশ কিছু হিন্দুকে হত্যা করে। আজিজ মাস্টার, ইমাম সাহেব, জয়নাল মিয়াদের ধরে নিয়ে যায় তাদের থেকে জানার জন্য যে গ্রামের বনে মুক্তিবাহিনী লুকিয়ে আছে কিনা আর থাকলে তারা সংখ্যায় কত। ক্রমশ মিলিটারির মেজরের বন্দিদের উপর নিষ্ঠুরতার চিত্র প্রতীয়মান হতে থাকে কাহিনীতে। যুদ্ধ, বাংলার মানুষ, পাকিস্তান প্রভৃতি বিভিন্ন ইস্যুতে মেজরের নিজস্ব থিওরি প্রকাশিত হতে থাকে যা মূলত একাত্তরে প্রায় সকল পাকিস্তানি হানাদারদেরই নিজস্ব অভিমত ছিল। পাকিস্তানি হানাদারদের দৃষ্টিভঙ্গি কতটা নিষ্ঠুর ছিল তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ মিলবে এই মেজরের চরিত্রের মাধ্যমে। আর এই উপন্যাসের সবচেয়ে রহস্যময় চরিত্র হল রফিক যে কখনো বা নির্বিকারে গ্রামের মানুষদের অত্যাচারিত হওয়া দেখে চলেছে আবার কখনো মেজরের নিষ্ঠুরতার প্রতিবাদ করতে দুঃসাহসী হয়ে উঠছে। এই রফিক চরিত্রটিই কাহিনীর শেষ পর্যায়ে যেভাবে মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে মেজরের মুখোমুখি হয়, সেই ঘটনার মাধ্যমে রূপকভাবে হলেও পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে বাঙালীর বীরত্বপূর্ণ অবস্থানের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। নির্দিষ্ট করে এই উপন্যাসের কাহিনীর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া দুঃসাধ্য। তবে এটুক বলা যায়, নীলগঞ্জ গ্রামের পটভূমিতে একাত্তরের কিছু খন্ডচিত্র তুলে ধরেছেন লেখক। সেসব খন্ডচিত্রকে একত্রিত করে পাঠকের পক্ষে সম্ভব হবে একাত্তর সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা লাভ করা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে লেখা হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসসমূহের মধ্যে '১৯৭১' কখনোই অন্যতম সেরা নয়। তারপরও লেখক এই উপন্যাসের মাধ্যমে একাত্তরে সাধারণ বাঙালীর অবস্থান এবং হানাদারদের নিষ্ঠুরতাকে কিছুটা হলেও বইয়ের পাতায় নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছেন। তবে উপন্যাসটি পড়ে মনে হবে, অনেক তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল। আরেকটু বড় পরিসরে যদি লেখক কাহিনীটাকে সাজাতেন তাহলে হয়ত আরও ডিটেইলে একাত্তরকে উপস্থাপন করা যেত।
Was this review helpful to you?
or
১. হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্মের সংখ্যা বেশ বড়। তিনি দুই শতাধিক গ্রন্থের রচয়িতা হলেও বাঙালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর লেখা সাহিত্যকর্মের সংখ্যা হাতে গোণা। সেই অল্প ক’টি সাহিত্যকর্মের একটি ‘১৯৭১’। বইটির বিপণন করা হয়েছে একটি উপন্যাস হিশেবে, যদিও একে ‘উপন্যাস’এর গোত্রভুক্ত করা যায় কিনা তা নিয়ে আমি নিচে আলোচনা করেছি। হুমায়ূন আহমেদ বিচিত্র বিষয়ে উপন্যাস, গল্প লিখেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ এখনো বাংলাদেশে করা হয় নি; এলিট সাহিত্য-সমালোচকদের কাছে তিনি অপাঙতেয় হয়ে রয়েছেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাসের প্রতি সমালোচকদের বিশেষ মনোযোগ প্রদান অতি-আবশ্যক, কেননা বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার কারণে মানুষ এখনো ইতিহাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিংবা ইতিহাসের ভিন্ন ডিসকোর্সের জন্য প্রস্তুত নয়। হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক আরেকটি বৃহৎ উপন্যাস ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ যেভাবে সাহিত্য-বিশ্লেষকদের মনোযোগ পেয়েছে, অন্যগুলো তেমনিভাবে পায় নি। ২. হুমায়ুন আহমেদ তাঁর ‘১৯৭১’ উপন্যাসের পটভূমি হিশেবে বেছে নিয়েছেন বিচ্ছিন্ন একটি ছোট্ট গ্রাম, নীলগঞ্জকে। ময়মনসিংহ-ভৈরব লাইনের ছোট স্টেশন থেকে প্রায় চল্লিশ মাইল দূরের গ্রাম নীলগঞ্জ, যেখানে যাওয়ার একমাত্র বাহন রিকশা,তাও গ্রীষ্মকালে; বর্ষাকালে কাঁদা ভেঙ্গে হেঁটে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। তৎকালীন জীবনের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন এমন এক নির্জন গ্রাম কেন বেছে নিলেন লেখক- এমন প্রশ্ন মনে জাগতেই পারে। আলোচ্য উপন্যাসে লেখকের মূল আগ্রহ ছিল, গ্রামে মিলিটারি আগমনের ফলে গ্রামের মানুষগুলোর মনো-জাগতিক কম্পন পাঠকের সামনে তুলে ধরা। সে কারণেই হুমায়ূন আহমেদ একটি ছোট গ্রামীণ সমাজ বেছে নিয়েছিলেন। এছাড়া লেখকের বাড়ি ময়মনসিংহ অঞ্চলে হওয়ার কারণে ওখানকার মানুষের সংস্কৃতি, রীতিনীতি, ভাষার সাথে খুব ভালোভাবে পরিচয় আছে তাঁর। ধারণা করি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত উপন্যাসটিতে তিনি তাঁর কমফোর্ট জোনে থাকতে চেয়েছেন। উপন্যাসের বেশ অনেকটুকু জুড়েই লেখক গ্রামের বর্ণনা দিয়েছেন, বেশিরভাগই আশপাশের পরিবেশ নিয়ে। মানুষের জীবিকার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে লিখেছেন, “জমি উর্বর নয় কিংবা এরা ভালো চাষী নয়। ফসল ভালো হয় না। তবে শীতকালে এরা প্রচুর রবিশস্য করে। বর্ষার আগে করে তরমুজ ও বাঙ্গি”। এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পরবর্তীতে অপর একটি স্থানে ফসল সম্পর্কিত আরেকটি তথ্য লেখক দিয়েছেন যা পূর্বে প্রদত্ত তথ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। গল্পের সমস্ত ঘটনা ঘটেছে বৈশাখের একটি দিনে, যেদিন গ্রামে মিলিটারি হানা দেয়। গ্রামবাসীর দৈনন্দিন কাজের বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখক লিখেছেন, “উত্তর বন্দে বোরো ধান পেকে আছে। দক্ষিণ বন্দে আউশ ধান বোনা হবে”। লেখক নিজের দেয়া তথ্য ভুলে গিয়ে অন্য একটি তথ্যের যোগান দিয়েছেন, যা না দিলেও গল্পের কোনো ক্ষতি হতো না। ভুলটুকু হুমায়ূন আহমেদের বাক্যে বাক্যে গল্প তৈরির প্রবণতার কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া আরো একটি ভুল করেছেন লেখক। নীলগঞ্জ হলো প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি গ্রাম যেখানে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে নি। এদিকে বোরো ধান হলো শীতকালে আবাদযোগ্য ধান যার জন্য সেচের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের বেশিভাগ এলাকাতেই বোরো ধানের আবাদ আশির দশকের পূর্বে শুরু হয় নি, কারণ বেশিরভাগ এলাকাই বিদ্যুৎ-বঞ্চিত ছিল। লেখক ইতিহাসের একটি বিশেষ সময় নিয়ে উপন্যাস লিখতে গিয়ে সেকালের পারিপার্শ্বিক অবস্থা পুনঃ-সৃষ্টি করতে গিয়ে কয়েকটি ভুল করেছেন। আরো অসঙ্গতি আছে। নীলগঞ্জে মিলিটারি আসে বৈশাখ মাসে। নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা না হলেও ধারণা করা যায়, ঘটনা ঘটেছে বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে। কেননা লেখকের ভুলক্রমে উল্লেখিত বোরো ধান কাটার সময়টা সাধারণত বৈশাখে শুরুতেই এসে যায়। একাত্তরে বৈশাখ মাস অর্থাৎ এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে শেষ দিকে কিংবা মে মাসের প্রথম দিকে উপন্যাসের নীলগঞ্জে মিলিটারির আগমন ঘটে। ব্যাপারটি ঐতিহাসিক তথ্যের সাথে খাপ খায় না, কারণ সে সময়ে পাকিস্তানি মিলিটারি শুধুমাত্র বড় শহর এবং জেলা শহর-গুলোয় পৌঁছেছিল। নীলগঞ্জের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে তাদের আরো কয়েক মাস লেগে গিয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদ যে তেমন কোনো গবেষণা ছাড়াই উপন্যাস লিখতে বসেছেন তার আরো প্রমাণ পাওয়া যায় এই উপন্যাসে রাজাকার বাহিনীকে যুক্ত করায়। উপন্যাসে মিলিটারিকে সাহায্য করার জন্য রাজাকারদের একটি দল নীলগঞ্জে আসে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রাজাকার বাহিনী সেসময়ে গঠিতই হয় নি। রাজাকার বাহিনী প্রথম গঠিত হয় খুলনায়, মে মাসে। রাজাকার অর্ডিন্যান্স জারি হয় জুন মাসের ১ তারিখ। রাজাকারদের ১৫ দিনের একটি ট্রেনিং-এ অংশ নেয়া ছিল বাধ্যমূলক। অতএব, এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয় যে, এপ্রিল-মে মাসে রাজাকারের একটি বড় দল ময়মনসিংহের নীলগঞ্জে এসে উপস্থিত হবে। হুমায়ূন আহমেদ ঐতিহাসিক টাইমলাইনের প্রতি বিশ্বস্ত থাকেন নি কিংবা থাকার প্রয়োজন বোধ করেন নি। ৩. ‘১৯৭১’ উপন্যাসে বেশ কিছু চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই গ্রামের সাধারণ মানুষ। অন্ধ বুড়ো মীর আলি এবং তার পুত্র ব্যবসায়ী বদিউজ্জামানকে নিয়ে গল্প শুরু হলেও মূল উপাখ্যানে তাদের কোনো অবদান নেই। তাদেরকে মূলত পাঠকের মনোযোগ ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতেই গল্পে আনা হয়েছে। এটি হুমায়ূন আহমেদের একটি রচনাকৌশল; শুরুতে যে চরিত্রের বিকাশে বেশি সময় ব্যয় করা হয় সে চরিত্র গল্পের ফলাফলে কোনো প্রভাব রাখে না। গ্রামবাসীদের মধ্যে আরো দু’টি চরিত্র গল্পের অনেকটা জায়গা দখল করেছে- নীলগঞ্জ স্কুলের শিক্ষক আজিজ মাস্টার এবং মসজিদের ইমাম সাহেব। মিলিটারি গ্রামে প্রবেশ করে প্রথমেই তাদেরকে আটক করে মুক্তিবাহিনী সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। লেখক তাদের মাধ্যমে পাক-মিলিটারির জিজ্ঞাসাবাদের ধরণ তুলে ধরতে চেয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় যে আতঙ্ক এবং জীবননাশের আশঙ্কা মানুষ অনুভব করত, তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। এই উপন্যাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি চরিত্র হলো মেজর এজাজ আহমেদ এবং তার সহযোগী রফিক। মেজর এজাজ আহমেদ মিলিটারির একটি ছোট দল নিয়ে নীলগঞ্জে প্রবেশ করে। তাকে ফিফটি এইটথ ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার হিশেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে। এটি এই উপন্যাসের আরেকটি তথ্যগত ভুল। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান মিলিটারির ফিফটি এইটথ ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের কোনো সৈন্যদল যুদ্ধে কিংবা অভিযানে অংশ নেয় নি। প্রকৃতপক্ষে একাত্তরে পাকিস্তান মিলিটারিতে এই নামের কোনো ব্যাটালিয়নের অস্তিত্ব ছিল না (এবং এখনো নেই)। কাল্পনিক গল্প নিয়ে উপন্যাস লেখার সময় সব ক’টি তথ্যই একেবারে নির্ভুল হতে হবে তার দিব্যি কেউ দেয় নি, কিন্তু নিকট অতীতের একটি উল্লেখযোগ্য সময় নিয়ে লেখার সময় প্রদত্ত তথ্যগুলো ভালোভাবে যাচাই করে নেয়া লেখকের দায়িত্ব। অন্যদিকে রফিকের সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায় না গল্প থেকে। শুধু জানা যায়, সে একজন শিক্ষিত যুবক; তার বাড়ি কোথায় কিংবা পেশা কী তা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয় না। উপন্যাসের শুরুতে তাকে নেহাতই সাধারণ চরিত্র মনে হলেও গল্প যতোই ক্লাইম্যাক্সের দিকে এগুতে থাকে ততোই তার গুরুত্ব বেড়ে যায়। ক্লাইম্যাক্সের মোচড়টা মূলত সে-ই নিয়ে আসে। হেলাফেলা করে তার চরিত্র নির্মাণ করে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর পাঠকদেরকে একটি চমক দিতে চেয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তিনি সফল হয়েছেন। ৪. মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো এলাকায় পাকিস্তানি মিলিটারির আগমনের ফলে এলাকাবাসীর নিস্তরঙ্গ জীবনে যে ঝড় বয়ে যেত তা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন হুমায়ূন আহমেদ। এক্ষেত্রে লেখকের চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা দারুণ কাজে দিয়েছে বলেই ধারণা করি। নীলগঞ্জে মিলিটারি আগমনের খবরে গ্রামবাসীর প্রাথমিক অবিশ্বাস এটাই প্রমাণ করে যে, মিলিটারির আগমন বাঙালির জন্য কতোটা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আতঙ্কজনক ছিল। নীলগঞ্জে মিলিটারি পদার্পণের পরিণতি শুরুতে টের পায় কৈবর্তরা। এরপর আজিজ মাস্টার এবং ইমাম সাহেবকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের ফলশ্রুতিতে গোটা গ্রামে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মিলিটারিরা গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বী নীলু সেনকে মেরে ফেলে রাখে তার বাড়ির সদর দরজায়। এছাড়া আর কোথাও কোনো বাড়িতে হামলা চালায় না মিলিটারি। ব্যাপারটি একটু অদ্ভুত। পাক মিলিটারির অপারেশনের যতো বর্ণনা আজ পর্যন্ত মিলেছে, তাতে গ্রামবাসীর প্রতি এতোটা সদয় থাকার মতো ঘটনা ঘটবার কথা নয়। হুমায়ূন আহমেদ পাকিস্তানি মিলিটারির প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন- এমন মারাত্মক অভিযোগ করা সম্ভব নয়। তবে উপন্যাসের বর্ণনা এমনভাবে দেয়া হয়েছে যেন, তারা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে ঠিক কাজই করেছে। মিলিটারির দলনেতা মেজর এজাজ আহমেদ জানায় যে, মুক্তিবাহিনী তার বন্ধুকে মেরে ফেলেছে, তাই সে গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সন্ধানে এসেছে। এখানে সামান্যভাবে হলেও মেজরের কর্মকাণ্ড জাস্টিফাই করার চেষ্টা দেখতে পাই। উপন্যাসের এক পর্যায়ে মেজর তার সহচর রফিককে বলে, “রফিক, আমরা একটা যুদ্ধের মধ্যে জড়িয়ে পড়েছি। সারভাইভালের প্রশ্ন। এই সময়ে অন্যায় কিছু হবেই। উল্টোটা যদি হতো- ধর বাঙালি সৈন্য আমাদের গ্রামে ঠিক আমাদের মতো অবস্থায় আছে, তখন তারা কী করত? বলো, কী করত তারা? যে অন্যায় আমরা করছি তারা কি সেগুলি করত না?” হুমায়ূন আহমেদ তাঁর গল্পের পাকিস্তানি মেজরকে বুদ্ধিমান, অনুভূতিপ্রবণ ও বিবেক-বোধসম্পন্ন একজন মানুষ হিশেবে চিত্রিত করেছেন, যে নেহাতই পরিস্থিতির শিকার। নিরপেক্ষ কিংবা ভিন্ন কোনো দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পর্যবেক্ষণ করলে ব্যাপারটি খুবই অনন্য। কেননা, একটা যুদ্ধে নির্যাতিত ও পিতাকে হারানো একজন লেখক পাকিস্তানি মিলিটারির একটি চরিত্রকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন- ব্যাপারটি প্রায় অসম্ভব মনে হতে পারে। লেখক যদিও মেজরের চরিত্রে মানবিক আঁচড় দিয়েছেন, কিন্তু বাঙালি সম্পর্কে পশ্চিম পাকিস্তানিদের যে মনোভাব ছিল তা পুরোপুরি ধরে রেখেছেন, সার্থকভাবে। বাঙালিকে নিজেদের চেয়ে নীচু জনগোষ্ঠী ভাবা পাকিস্তানিরা বাঙালিকে কখনোই তাদের সমমর্যাদা দেয় নি- তা তো সবসময়ই প্রমাণিত ছিল। মেজরের কয়েকটি মন্তব্য তাদের মনোভাব চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলে- “তোমরা মাত্র পঁচিশ ভাগ মুসলমান, বাকি পঁচাত্তর ভাগ হিন্দু”, “বাঙালিদের মান অপমান বলে কিছু নেই। একটা কুকুরেরও আত্মসম্মান জ্ঞান থাকে, এদের তাও নেই”। পাকিস্তানি মিলিটারি কর্তৃক বাঙালি নারীদের নির্যাতিত হওয়ার প্রসঙ্গ এই গল্পে উঠে আসে নি। সফদরউল্লাহ’র বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রী ও কন্যাদের দিকে একজন মিলিটারি ও তিনজন রাজাকারের এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ আছে শুধুমাত্র। খুবই পরোক্ষভাবে নির্যাতনের ইঙ্গিত দিয়েছেন লেখক, যা যথেষ্ট নয়। হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অন্যান্য গল্প-উপন্যাসেও পাকিস্তানি মিলিটারি ও রাজাকার কর্তৃক নারী নির্যাতনের প্রসঙ্গটি জোরালোভাবে উঠে আসে নি। হতে পারে তিনি বিষয়টি নিয়ে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না; কিংবা এও হতে পারে যে, তাঁর বইয়ের পাঠকদের বেশিরভাগের বয়স কৈশোরের কোঠায় থাকায় তিনি তাঁর পাঠকদের কুৎসিত বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে অস্বস্তিতে ফেলতে চান নি। ৫. কলেবরের দিক থেকে হুমায়ূন আহমেদের ‘১৯৭১’ উপন্যাসের পর্যায়ে পড়ে না। যদিও উপন্যাস রচনার সার্বজনীন কোনো শব্দ বা পৃষ্ঠাসংখ্যা নির্দিষ্ট করা নেই, তবুও আমার মতে ‘১৯৭১’কে একটি সার্থক বড়ো গল্প গণ্য করা যেতে পারে। উপন্যাসের যে ব্যাপ্তি ও গভীরতা সাধারণত সফল উপন্যাসগুলোয় থাকে, তা এখানে অনুপস্থিত। তবে তাই বলে ‘১৯৭১’ ব্যর্থ রচনা নয়। একাত্তরের অদ্ভুত সময়টা দু’মলাটে বন্দী করা খুব সহজ কাজ নয়- এটা মাথায় রেখেই বলতে হয় হুমায়ূন আহমেদ বেশ খানিকটা সফল হয়েছেন। কিছু ভুল ভ্রান্তি বাদ দিলে, ‘১৯৭১’ কে হুমায়ূন আহমেদের উল্লেখযোগ্য কাজ হিশেবে গণ্য করা যায়। বিশেষ করে আঞ্চলিক ভাষা এই উপন্যাসে অত্যন্ত সু-নিপুণভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রমিত ভাষার সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষার সংমিশ্রণের একটা উদাহরণ এখানে উল্লেখযোগ্য- “নান্দাইল রোড থেকে রুয়াইল বাজার আসতে বেলা পুইয়ে যায়”।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে বইটি আমাদের স্বধীনতা যুদ্ধের উপর লিখা একটি বই। জোছনা ও জননীর গল্পের মত বিশাল আকারের বই না হলে ও বইটিতে অনেক কিছু আছে যা আমাদের নাড়া দেয়। উপন্যাসটি নীলগঞ্জ নামের এক অজপাড়া গাঁয়ের গল্প। ১৯৭১, সেই সময়ের মানুষদের মনোজগতে কি পরিমান চাপ ফেলেছিল তা সহজেই এখানে বোঝা যায়। মুসলমানরা নিজেদের মন কে সান্তনা দিচ্ছে এভাবে, পাক হানাদাররা আমাদের মারবেনা কারন ওরাও মুসলিম। ওরা শুধু হিন্দুদের ক্ষতি করবে। অথচ এই হিন্দুদের সাথেই তারা বড় হয়েছে। আবার মৃত্যুর ভয়ে অপমানিত হয়ে, নিজের আত্মসম্মান ফিরে পাওয়ার গল্প যেমন আছে এখানে তেমনি একজন রাজাকারের জাতীয়তা বোধের জন্মের গল্প এখানে আছে। সব মিলেয়ে সাদামাটা ও ছোট হলেও আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি সম্পুর্ণ চিত্র এখানে ফুটে উঠেছে। তবে আমি মনে করি লেখক এখানে চাইলে লেখাটিতে আরো মাত্রা যোগ করতে পারতেন।