User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
রকমারি রিভিউঃ বইঃ রূপ-রূপালী। লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। প্রকাশনীঃ সময়। মূল্যঃ ২৫০ টাকা। পৃষ্ঠাঃ ১৫১। রূপা দেখতে সুন্দর না। তার তিন ভাই-বোনের মধ্যে সে কালো ও মোটা। এজন্য সে মা-বাবার আদর অন্যদের থেকে কম পায়। তার প্রতিটি কাজে তার মা খুঁত খুঁজে পায়। তাকে বুঝতে পারে একমাত্র তাদের বাসার কাজের মেয়ে সুলতানা। কিন্তু রূপা তার নিজের জগৎ নিয়ে থাকে। এই জগতে সে বই পড়ে, তার বন্ধুদের সাথে সায়েন্স প্রজেক্ট করে আর অন্যের সাহায্য করে। কয়েকজন মিলে এক মাদকাসক্ত বন্ধুকে সাহায্য করতে গিয়ে তারা সবাই মিলে কিডন্যাপ হয়। এখন তাদের আর তাদের কষ্টের সায়েন্স প্রজেক্টের কী হবে? জানতে হলে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে।
Was this review helpful to you?
or
রূপ-রূপালী জাফর ইকবাল এর একটি কিশোর উপন্যাস। এই উপন্যাসটি রূপালী নামের একটি মেয়েকে নিয়ে কেন্দ্র করে গরে তুলছে। রূপালী অনেক কষ্টএর মধ্যে দিয়ে বর হয়েছে। কিন্তু সে সব বাধা অতিক্রম করে নিজের জীবনের সফল হয়েছে। সে বিজ্ঞানে তার অনেক দখতা দেখিয়েছে। অনেক কস্ত করে ও জীবনের সফল হয়া যায় তা দেখানো হয়ে।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই ।
Was this review helpful to you?
or
'Rup-Rupali' is a book about a lonely girl who is abused by her mother and her teenage life. One can call this a successor of 'Ami Topu', a previous masterpiece by the author. But that is an exaggeration. Rup-rupali is a good book, overall. It teaches everyone a thing or two while being an enjoyable adolescence novel.
Was this review helpful to you?
or
রূপারা তিন ভাইবোন। আর তিন ভাইবোনের মধ্যে রূপা দেখতে একটু কালো আর মোটা। রূপার বড় বোন তিয়াশা আর ছোট ভাই মিঠুন। তিয়াশা পড়োশোনায় খুব ভালো, দেখতেও সুন্দর, সবসময় পড়ার বই নিয়ে থাকে। কিন্তু রূপা পাঠ্যবই থেকে বাইরের বই পড়তে বেশি পচ্ছন্দ। আর এই কাজটা রূপার মা একদমই পচ্ছন্দ করে না। মায়ের অপচ্ছন্দের কাজ করে আর দেখতেও সুন্দর না এমনসব বিচিত্র কারণেই রূপাকে তার বাবা-মা অপচ্ছন্দ করে। শুধু রূপাদের বাসায় যে মেয়েটা কাজ করে সুলতানা সেই রূপাকে অনেক পচ্ছন্দ করে। রূপা প্রায় সময়ই মন খারাপ করে স্কুলে যায়, চুপচাপ বসে থাকে। তাদের ক্লাসের এক ছেলে যে কি না কবি নামে পরিচিত রাজু তাকে আমেরিকান চকলেটের প্যাকেট দিয়ে মন ভালো করে দেয়। রূপার সাথে মিম্মি নামে আরেকজন মেয়ে পড়ে। যার কাজ হলো কোন কথা শুনার পর ফুলিয়ে ফাপিয়ে আরো বড় করে সবার কাছে বলে বেড়ানো। এই মিম্মির মাধ্যমেই রূপা জানতে পারে তাদের আরেক বন্ধু সোহেলের বাবা-মায়ের ডিভোরর্স হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রথম দিকে কেউ গুরুত্ব না দিলেও এক সময় সবাই আবিষ্কার করে, সোহেল ছেলেটা দিনদিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। কারো সাথে মিশে না, স্কুলেও আসে না ঠিক মতো, সবসময় চুপচাপ থাকে। কিন্তু কেন? এদিকে আবার রূপাদেরকে বিজ্ঞান ম্যাডাম ক্লাসে প্রজেক্ট তৈরী করতে দেয়। রূপারা তাদের গ্রুপে সোহেলকেও রাখে। কিন্তু সোহেলের প্রতিদিন অনুপস্থিতি দেখে সবাই ঠিক করে সোহেলের বাসায় যাবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারে এক ভয়ানক তথ্য। সোহলে ড্রাগ এডিক্টেড। সবাই মিলে ঠিক করে তাকে এই পথ থেকে ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু তারা বুঝতে পারে নি সোহেলকে ভালো পথে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে যাচ্ছে ভয়ানক এক বিপদে। নিজেদের অজান্তেই বড় এক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছে তারা। এসব ঝামেলার মাঝেই একদিন রূপার চোখে পড়ে বাসার কাজের মেয়ে সুলতানার পিঠে মারের চিহ্ন। রূপার বুঝতে বাকি থাকে না কেন এমন হলো। এছাড়াও রূপা প্রায় রাতেই সুলতানার কান্না শোনে। যে মানুষটা তাকে এত বেশি ভালবাসে, এই বাসার যে মানুষটা সবসময় তার ভালো চায় তার কষ্ট সহ্য হয় না রূপার। চিন্তা করে এখান থেকে পালাতে সাহায্য করবে সুলতানাকে। তবে কাজটা সহজ না। রূপা কি পারবে সুলতানাকে মুক্তি দিতে এই নরকের যন্ত্রণা থেকে? আবার সোহেলকে ফিরিয়ে আনতে হবে আলোর পথে। এত এত ঝামেলা কি করে সামাল দিবে রূপা? সে কি সফল হবে?
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ রুপ রুপালি লেখকঃজাফর ইকবাল প্রকাশনীঃসময় প্রকাশনী ধরনঃশিশু কিশোর উপন্যাস মূল্যঃ২৫০ টাকা( রকমারি মূল্যঃ১৮৮ টাকা) . রূপ-রূপালি রূপা আর তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব এর গল্প। গল্পটিতে আমাদের চেনা জগতের কিছু পরিচিত ঘটনার মধ্য দিয়ে সমাজের কিছু নির্মম বাস্তবতাকে তুলে ধরা হয়েছে। বাঙ্গালির বিনোদনের জায়গাটাতে "হিন্দী সিরিয়ালের"আগ্রাসনের চিত্রের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের চিত্রটাকেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া কিশোরদের মাদকাসক্তির বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে সোহেল নামের রূপার এক বন্ধুর ঘটনার মধ্য দিয়ে, যে পারিবারিক অশান্তির কারণে নিজেকে মানসিক অশান্তির হাত থেকে বাচানোর জন্য 'ড্রাগের'আশ্রয় নেয়। নিজের পরিবারের সদস্যদের অবহেলায় আর অজ্ঞতায় এবং মাদকের সহজপ্রাপ্যতার সুযোগে সে নেশার অন্ধকার জগৎ এর দিকে পা বাড়ায় আর হয়ে যায় মাদকাসক্ত। . #কাহিনী_সংক্ষেপঃকোন এক অদ্ভুত কারণে ওর মা বাবা ওকে দেখতে পারে না।কেন,তা রূপা জানে না।ও শুধু জানে,ও দেখতে কালো,একটু মোটা।ওর আব্বু-আম্মুর আদর সোহাগের পুরোটাই অন্য দুই ভাইবোন মিঠুন আর তিয়াশার জন্য বরাদ্দ।রূপা ওর মা-বাবার কাছে একটা সমস্যা ছাড়া আর কিছু না,কিন্তু সমস্যাটা কী,সেটা রূপা নিজেও জানে না!! . স্কুলে যাওয়ার সময় রূপার মেজাজ খারাপ থাকলে চুপচাপ থাকে,ক্লাসের কবি রাজু এটা জানতো।তাই ও রূপাকে একটা আমেরিকান চকোলেটের প্যাকেট দিয়ে দিল,রূপার মন এক নিমেষেই ভালো হয়ে গেল। মিম্মির কাজ সবার গোপন কথা ফুলিয়ে ফাপিয়ে সবাইকে বলে বেড়ানো।তাই মিম্মি যখন ওদের সহপাঠী সোহেলের মা-বাবার ডিভোর্স হওয়ার কথা বলেছিল রূপা তখন বেশি গুরুত্ব দেয় নাই,কিন্তু ওদের চেনাপরিচিত সোহেল এমন হয়ে যাচ্ছে কেন??সোহেল যখন ক্লাসে আসা বন্ধ করে দিল তখন রূপা আর বসে থাকতে পারল না,বন্ধুদের নিয়ে উঠেপড়ে লাগল সোহেলের রহস্য উদঘাটনে ।কিন্তু সেই রহস্য যে কত ভয়ন্কর সেটা ওরা কল্পনাও করতে পারেনি! রূপা এক সময় জানতে পারে যে সোহেল ড্রাগ অ্যাডিক্টেড। ওদিকে রূপাদের ক্লাসের নতুন বিজ্ঞান ম্যাডাম তাদেরকে বিজ্ঞানের প্রজেক্ট করতে বলেন। রূপারা তাদের গ্রুপে সোহেলকে নেয় কিন্তু সোহেল স্কুলেই আসে না। তাই রূপা গ্রুপের অন্যদেরকে জানায় সোহেলের ব্যাপারে এবং সবাই মিলে চেষ্টা করে সোহেলকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে তারা নিজেরাও মাদক চক্রান্তের সাথে জড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায় তারা সকলে অপহৃত হয়।কেমন করে তারা এই অপহরণকারীদের হাত নিজেদের বাঁচাবে? তা পড়লেই বুঝবেন। রূপাদের বাড়ির গৃহকর্মী সুলতানা রূপাকে ডাকে "রূফ-রূফালী"।রূপা কখনও রাগ করে না,কারণ সারা বাড়ির মাঝে এই একজনই রূপাকে ভালোবাসে।সুলতানার পিঠে মারের দাগ দেখে চমকে উঠলো রূপা,মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো সুলতানাকে এই নরক থেকে বের করবে ও।কিন্তু সামনে বাঁধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রূপার মা।রূপা কি পারবে সেই পাহাড়সম বাধা টপকাতে?? . #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ জাফর ইকবাল স্যার বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যের সমকালীন লেখকদের মাঝে অগ্রগণ্য।আর রুপ রুপালি ও তার অন্যতম একটি শিশু কিশোর উপন্যাস। রূপ-রূপালী এই সাদামাটা রূপা, তার বন্ধু-বান্ধব এবং তার নিজস্ব জগতের গল্প। গল্পটা মমতার, ভালোবাসার এবং অন্য আলোর।সুন্দর একটা বই। পড়ে দেখতে পারেন। হাপি রিডিং.....
Was this review helpful to you?
or
রূপার শৈশব আর দশটা মেয়ের থেকে আলাদা।কোন এক অদ্ভুত কারণে ওর মা বাবা ওকে দেখতে পারে না।কেন,তা রূপা জানে না।ও শুধু জানে,ও দেখতে কালো,একটু মোটা।ওর আব্বু-আম্মুর আদর সোহাগের পুরোটাই অন্য দুই ভাইবোন মিঠুন আর তিয়াশার জন্য বরাদ্দ।রূপা ওর মা-বাবার কাছে একটা সমস্যা ছাড়া আর কিছু না,কিন্তু সমস্যাটা কী,সেটা রূপা নিজেও জানে না!! . স্কুলে যাওয়ার সময় রূপার মেজাজ খারাপ থাকলে চুপচাপ থাকে,ক্লাসের কবি রাজু এটা জানতো।তাই ও রূপাকে একটা আমেরিকান চকোলেটের প্যাকেট দিয়ে দিল,রূপার মন এক নিমেষেই ভালো হয়ে গেল।খারাপ মন ভালো করার জন্য পরিবার না,একটা ভালো বন্ধুই যথেষ্ট!! . মিম্মির কাজ সবার গোপন কথা ফুলিয়ে ফাপিয়ে সবাইকে বলে বেড়ানো।তাই মিম্মি যখন ওদের সহপাঠী সোহেলের মা-বাবার ডিভোর্স হওয়ার কথা বলেছিল রূপা তখন বেশি গুরুত্ব দেয় নাই,কিন্তু ওদের চেনাপরিচিত সোহেল এমন হয়ে যাচ্ছে কেন??সোহেল যখন ক্লাসে আসা বন্ধ করে দিল তখন রূপা আর বসে থাকতে পারল না,বন্ধুদের নিয়ে উঠেপড়ে লাগল সোহেলের রহস্য উদঘাটনে ।কিন্তু সেই রহস্য যে কত ভয়ন্কর সেটা কি ওরা কল্পনাও করতে পেরেছিল!! . রূপাদের বাড়ির গৃহকর্মী সুলতানা রূপাকে ডাকে "রূফ-রূফালী"।রূপা কখনও রাগ করে না,কারণ সারা বাড়ির মাঝে এই একজনই রূপাকে ভালোবাসে।সুলতানার পিঠে মারের দাগ দেখে চমকে উঠলো রূপা,মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো সুলতানাকে এই নরক থেকে বের করবে ও।কিন্তু সামনে বাঁধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রূপার মা।রূপা কি পারবে সেই পাহাড়সম বাধা টপকাতে?? . সোহেলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিশাল মাফিয়া চক্রের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়লো রূপা,রাজু,মিম্মি, সঞ্জয় ।সব বিপদ যখন শেষ মনে হলো.....তখনও ওরা জানতে পারলো না,বিপদের সবে শুরু!!এতসব বিপদ কাটিয়ে রূপা কি বাঁচাতে পেরেছিল সোহেলকে??জানতে হলে পড়ে ফেলুন মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের লেখা দুর্দান্ত উপন্যাস রূপ-রূপালী। . পাঠ প্রতিক্রিয়া: এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র রূপাকে লেখক যে প্লটে গড়ে তুলেছেন,তা এককথায় অভূতপূর্ব।কালো হলেই তথাকথিত কুৎসিতের তকমা লাগিয়ে এ দেশে মেয়েদের যে মানসিক নির্যাতন করা হয়,তাও আবার স্বয়ং নিজের মা-বাবার কাছে থেকে.....এটা উপন্যাসটিতে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পারিবারিক সমস্যাগুলো কিভাবে একটা ছেলেকে বিপথে পা বাড়াতে বাধ্য করে সোহেলকে দিয়ে লেখক সেটা বলতে চেয়েছেন,আবার সুলতানার চরিত্রের মাধ্যমে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন,এই দেশে একজন গৃহকর্মীকে কী পরিমাণ নির্যাতনের শিকার হতে হয় তথাকথিত ভদ্র সমাজের কাছে থেকে। অসাধারণ এই বইটিতে লেখক রূপার জয়গান গেয়েছেন,রূপাদের জয়গান গেয়েছেন।প্রমাণ করে দিয়েছেন শত বাঁধার মুখেও রূপার মতো মেয়েরা হারে না,হারতে জানে না!!
Was this review helpful to you?
or
রুপা খুব ভালো করে জানে কেউ আদর দিয়ে তার মাথা খায়নি। তাদের তিন ভাইবোনের মাঝে সে কালো এবং একটু মোটা। তার চেহারাটাও এমন কিছু আহামরি না, চোখে ভারী চশমা থাকার কারনে চোখগুলো দেখায় ছোট ছোট। সেই ছোট থেকে সে লক্ষ করেছে আব্বু আম্মুর আদর সোহাগ তার বড় বোন তিয়াশা আর ছোট ভাই মিঠুনের জন্যে। তার জন্যে কখনোই কিছু ছিল না। রুপ-রুপালী এই সাদামাটা রুপা, তার বন্ধু-বান্ধব এবং তার নিজস্ব জগতের গল্প। গল্পটা মমতার,ভালোবাসার এবং অন্য এক আলোর।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদ এক সাক্ষাৎকারে তাঁর অনুজ মুহম্মদ জাফর ইকবালের রচনা সম্পর্কে বলেছিলেন, জাফর ইকবালের লেখায় যেমন শিশু-কিশোরদের প্রতি প্রবল আন্তরিকতা আছে, তেমনি ঈশপের গল্পের আদলে তাঁর লেখার ভিতর উপদেশ প্রদানের একটা প্রয়াসও আছে। হুমায়ুন আহমেদের এই কথাটি সর্বৈব সত্য। তবে মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখনীকে ঠিক উপদেশমূলক বলার বদলে বলা যায়, তিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে সুকৌশলে কিছু সুচিন্তিত পরামর্শ ও বার্তা তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে চান। সাধারণত ফিকশনধর্মী রচনায় আমরা শুধু গল্পের কাহিনী আর তার গাঁথুনির দিকটিকে প্রাধান্য দেই। কিন্তু মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখায় তার অন্তর্নিহিত অর্থ এবং ভাবও একটা বড় ভূমিকা পালন করে। যেমন 'রূপ রূপালী' উপন্যাসেও লেখক একাধিক বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছেন। উপন্যাসের মূল থিম হয়ত রূপা নামের মেয়েটির জীবন যেখানে একে একে আসে পরিবারের সদস্যদের সাথে তার সম্পর্ক আর স্কুলে বন্ধুদের মধ্যে তার অবস্থানের বিষয়টি। তবে এই মূল থিমটিকে অনেক বেশি নগণ্য মনে হয় যখন কাহিনীর বাঁকে বাঁকে লেখক নতুন নতুন একেকটা টপিকের অবতারণা ঘটান। সমসাময়িক অনেক বিষয়েই লেখক তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে। যেমনঃ বাবা-মায়ের সম্পর্কের অবনতি সন্তানদের উপর কিরকম বিরূপ প্রভাব ফেলে, হতাশাগ্রস্ত টিনেজাররা কিভাবে মনের দুঃখ ও একাকীত্ব ঘোচাতে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে, মাদক ব্যবসায়ীরা কিভাবে নিজেদের ব্যবসার স্বার্থে তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়, আমাদের সমাজে নিম্নবিত্ত মেয়ে যারা মানুষের বাসায় কাজের লোক হিসেবে কাজ করে তাদের অবস্থান ও সামান্য পরিচর্যা পেলে তারাও কিভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে আত্মনির্ভরশীল হয়ে একটি মহীরুহে পরিণত হতে পারে ইত্যাদি। সচেতনতামূলক এসব বার্তার পাশাপাশি কিছু শিক্ষামূলক বার্তাও আমরা এই উপন্যাস থেকে পেয়েছি। যেমনঃ পুঁথিগত বিদ্যা অপেক্ষা হাতে কলমে অর্জিত বিদ্যা শিক্ষার্থীদের কিভাবে বিদ্যার্জনে উৎসাহিত করে ও তারা সঠিক শিক্ষা লাভ করতে পারে, পরিবারে ছোট বড় সকলের সাম্য ও সহাবস্থান কিভাবে সেই পরিবারকে আক্ষরিক অর্থেই সুখি করে তুলতে পারে, তরুণ প্রজন্ম কিভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেকোন বিপদকে রুখে দিতে পারে ও এ কাজে ব্যবহারিক শিক্ষা তাদের কতটা সাহায্য করে ইত্যাদি। বর্তমান সমাজের কিছু নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারেও লেখক উল্লেখ করেছেন। যেমনঃ আজকালকার দিনে বড়রা বিদেশী সিরিয়ালের প্রতি কতটা আসক্ত হয়ে পড়েছে কিংবা কিভাবে তারা বিজ্ঞান শিক্ষাকে বিলাসিতা ও বড়লোকদের বিষয় বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে সেটার প্রতিফলন লেখক ঘটিয়েছেন রূপার বাবা-মায়ের চরিত্রের মাধ্যমে। লেখক এই উপন্যাসে রাজুর (রূপার স্কুলের বন্ধু) বড় বোনের চরিত্রকে কাজে লাগিয়ে দারুণভাবে তুলে ধরেছেন মাদকের ব্যবহার, এর ক্ষতিকর দিক এবং কিভাবে মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আবার উপন্যাসের শেষের দিকে তুলে ধরা হয়েছে কিভাবে আপাতদৃষ্টিতে একটা ছোট ব্যাপারও অনেক বড় হয়ে উঠতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি সৌরশক্তির ব্যবহারের উপকারিতার উল্লেখ করেছেন। সাধারণ চোখে সূর্যের আলোকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার খুবই সাদামাটা ও হাস্যকর থিওরি মনে হলেও বাস্তবে সেটা যে আর্থিকভাবে কতটা লাভজনক হয়ে উঠতে পারে সেটি লেখক দেখিয়েছেন সরাসরি গাণিতিক হিসাবের মাধ্যমে। এবার এই উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে কিছু বলা যাক। আগেই বলেছি, কেন্দ্রীয় চরিত্র হল রূপা। সে দেখতে খুব একটা আকর্ষনীয় না এবং আপাতদৃষ্টিতে তার কোন এক্সট্রা অর্ডিনারি প্রতিভা নাই বলে মনে হয়। সেজন্য পরিবারে তাকে প্রায়ই নিগৃহীত হতে হয়। সব ব্যাপারে তার মা তাকে নেগলেক্ট। বাড়িতে রূপার বন্ধু শুধু সুলতানা নামের কাজের মেয়েটি যে কিনা রূপার মায়ের থেকে সমানভাবে নিগ্রহের শিকার হয়। অন্যদিকে স্কুলে রূপার আছে একদম বিচিত্র স্বভাবের একদল বন্ধু। তাদের একজন সোহেল যার বাবা-মায়ের সদ্য ডিভোর্স হয়েছে। তারপর থেকে সোহেল কেমন যেন অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। রূপা জানতে পারে সে ড্রাগ অ্যাডিক্টেড। ওদিকে রূপাদের ক্লাসের নতুন বিজ্ঞান ম্যাডাম তাদেরকে বিজ্ঞানের প্রজেক্ট করতে বলেন। রূপারা তাদের গ্রুপে সোহেলকে নেয় কিন্তু সোহেল স্কুলেই আসে না। তাই রূপা গ্রুপের অন্যদেরকে জানায় সোহেলের ব্যাপারে এবং সবাই মিলে চেষ্টা করে সোহেলকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে তারা নিজেরাও মাদক চক্রান্তের সাথে জড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায় তারা সকলে অপহৃত হয়। তখন নিজেদের বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানের প্রজেক্টের যথাযথ প্রয়োগ করে তারা মাদকচক্রের সাথে জড়িতদের আস্তানা থেকে পালাতে ও তাদেরকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিতে সক্ষম হয়। এসবের এক ফাঁকে রূপা সাহায্য করেছে সুলতানাকে গার্মেন্টসের কাজে ঢুকে সম্মানের জীবনে প্রবেশ করতে। পরবর্তিতে রূপা ও তার বন্ধুরা তাদের নতুন এক যুগান্তকারী আইডিয়ার মাধ্যমে বিজ্ঞান প্রজেক্টেও জয়লাভ করে। শেষটা হয় খুবই মধুর। রূপা জীবনে প্রথমবার তার মায়ের খুব কাছাকাছি আসে। সবমিলিয়ে দারুণ একটা কিশোর উপন্যাস। উপন্যাসের মূল থিমটা পুরনো হলেও নতুন নতুন অনেক বিষয়বস্তুর সংযোজনে মুহম্মদ জাফর ইকবাল সেই পুরনো থিমকে কাজে লাগিয়েই একেবারে ব্র্যান্ড নিউ একটা কাহিনী তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন। আমার বিশ্বাস সব পাঠকেরই উপন্যাসটি ভাল লাগবে।
Was this review helpful to you?
or
রূপ-রূপালি রূপা আর তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব এর গল্প। গল্পটিতে আমাদের চেনা জগতের কিছু পরিচিত ঘটনার মধ্য দিয়ে সমাজের কিছু নির্মম বাস্তবতাকে তুলে ধরা হয়েছে। বাঙ্গালির বিনোদনের জায়গাটাতে 'হিন্দী সিরিয়ালের' আগ্রাসনের চিত্রের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের চিত্রটাকেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া কিশোরদের মাদকাসক্তির বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে সোহেল নামের রূপার এক বন্ধুর ঘটনার মধ্য দিয়ে, যে পারিবারিক অশান্তির কারণে নিজেকে মানসিক অশান্তির হাত থেকে বাচানোর জন্য 'ড্রাগের' আশ্রয় নেয়। নিজের পরিবারের সদস্যদের অবহেলায় আর অজ্ঞতায় এবং মাদকের সহজপ্রাপ্যতার সুযোগে সে নেশার অন্ধকার জগৎ এর দিকে পা বাড়ায় আর হয়ে যায় মাদকাসক্ত। রূপা ও তার বন্ধুরা তাকে এই ভয়াবহ নেশার কবল থেকে উদ্ধার করে এবং ড্রাগ ডিলারদের ধরিয়ে দেয়। রূপার বড় বোন তিয়াশা চরিত্রটির মধ্য দিয়ে বর্তমান সময়ের মুখস্থ ভিত্তিক পুথিগত বিদ্যাকে উৎসাহিত করার চিত্রটি তুলে ধরা হয়েছে। বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং পুথিগত বিদ্যার কারণে তিয়াশা যেমন বরাবরই বাবা-মা আর শিক্ষকদের কাছে প্রশংসিত এবং সমাদৃত, তেমনি অন্যদিকে রূপা অবহেলিত। তবুও এই সাদামাটা রূপা চরিত্রটিতে আছে মমত্ববোধ আর ভালোবাসা। সে তাদের কাজের মেয়ে সুলতানাকে তার নিজের পরিবারের অত্যাচার থেকে রক্ষা করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেয় এবং একটি সুন্দর জীবনের সন্ধান দেয়। এরকম আরও অনেক ছোট ছোট ঘটনা আছে যা বইটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। সবশেষে এইটুকু বলতে পারি যে 'রূপ-রূপালি' ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের একটি অসাধারণ কিশোর উপন্যাস যেখানে পাঠক পাবে বন্ধুত্ব, মমত্ববোধ ও এডভেঞ্চার এর স্বাদ।
Was this review helpful to you?
or
বইটি পড়ার আগে বেশ ভালো হবে বলে আমার ধারণা ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পড়ার পর বুঝলাম বইটির কাহিনী খুবই 'predictable'. কিছু বাচ্চার মোটামুটি দুঃসাহসিক একটা অভিযান। তবে যে জিনিসটি ভালো লেগেছে তা হল নিজেদের মাদকাসক্ত বন্ধুকে ভালো করার চেষ্টা। কিন্তু জাফর ইকবাল স্যার যে মাপের লেখক তার কাছ থেকে আরো শক্তিশালী প্লটের ভালো একটি গল্প আশা করেছিলাম।
Was this review helpful to you?
or
বইটার গল্পটার বিষয়বস্তু প্রথমে ভালো লেগেছিল, কিন্তু ঘটনার প্রবাহে স্তিমিত ভাব পরে স্পষ্ট। জাফর ইকবাল স্যারের লেখা "আমি তপু" বইটার ছাপ এখানে খুবই স্পষ্ট। আর ঘটনায় দেখা যায় রূপ- রূপালীর মা তাকে স্নেহ করে না, সে বাসার সবার মাঝে একটু কালো। শিশুতোষ একটা গল্পে মা-র এ ধরণের আচরণের বর্ণনা স্বভাবতই একজন শিশুকে প্রভাবিত করতে পারে, সে যদি কালো বর্ণের হয় তবে হীনমন্যতায় ভুগতেই পারে। তবে গল্পে মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে শিশুদের যে সোচ্চার এবং এক বন্ধুকে বাঁচাবার প্রয়াস সত্যিই ভালো লেগেছে। আমার মনে হয় জাফর ইকবাল স্যার বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যের সমকালীন লেখকদের মাঝে অগ্রগণ্য, তাই শিশুতোষ যে কোনো লেখা লেখবার সময় আরো যত্নবান এবং প্রাসঙ্গিকতার প্রসারণটা গোছানো হওয়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
বইটার বিষয়বস্তু প্রথমে ভালো লেগেছিল, কিন্তু জাফর ইকবাল স্যারের লেখা "আমি তপু" বইটার ছাপ এখানে খুবই স্পষ্টরূপ- রূপালীর মা তাকে স্নেহ করে না, সে বাসার সবার মাঝে একটু কালো। তাদের তিন ভাইবোনের মাঝে সে কালো এবং একটু মোটা। তার চেহারাটাও এমন কিছু আহামরি না, চোখে ভারী চশমা থাকার কারনে চোখগুলো দেখায় ছোট ছোট। সেই ছোট থেকে সে লক্ষ করেছে আব্বু আম্মুর আদর সোহাগ তার বড় বোন তিয়াশা আর ছোট ভাই মিঠুনের জন্যে। তার জন্যে কখনোই কিছু ছিল না। রূপ-রূপালি রূপা আর তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব এর গল্প। গল্পটিতে আমাদের চেনা জগতের কিছু পরিচিত ঘটনার মধ্য দিয়ে সমাজের কিছু নির্মম বাস্তবতাকে তুলে ধরা হয়েছে। রূপার বড় বোন তিয়াশা চরিত্রটির মধ্য দিয়ে বর্তমান সময়ের মুখস্থ ভিত্তিক পুথিগত বিদ্যাকে উৎসাহিত করার চিত্রটি তুলে ধরা হয়েছে। বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং পুথিগত বিদ্যার কারণে তিয়াশা যেমন বরাবরই বাবা-মা আর শিক্ষকদের কাছে প্রশংসিত এবং সমাদৃত, তেমনি অন্যদিকে রূপা অবহেলিত। তবুও এই সাদামাটা রূপা চরিত্রটিতে আছে মমত্ববোধ আর ভালোবাসা। সে তাদের কাজের মেয়ে সুলতানাকে তার নিজের পরিবারের অত্যাচার থেকে রক্ষা করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেয় এবং একটি সুন্দর জীবনের সন্ধান দেয়। সোহেল নামের রূপার এক বন্ধুর ঘটনার মধ্য দিয়ে কিশোরদের মাদকাসক্তির বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে, যে পারিবারিক অশান্তির কারণে নিজেকে মানসিক অশান্তির হাত থেকে বাচানোর জন্য 'ড্রাগের' আশ্রয় নেয়। নিজের পরিবারের সদস্যদের অবহেলায় আর অজ্ঞতায় এবং মাদকের সহজপ্রাপ্যতার সুযোগে সে নেশার অন্ধকার জগৎ এর দিকে পা বাড়ায় আর হয়ে যায় মাদকাসক্ত। রূপা ও তার বন্ধুরা তাকে এই ভয়াবহ নেশার কবল থেকে উদ্ধার করে এবং ড্রাগ ডিলারদের ধরিয়ে দেয়। জাফর ইকবাল স্যার বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যের সমকালীন লেখকদের মাঝে অগ্রগণ্য, তাই প্রয়াস সত্যিই ভালো লেগেছে।