User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
শ্যামল চন্দ্র নাথ নেরুদার বক্তব্য অনুসারে বলতে হয়, 'কবিতা সব কিছু বলে; যা তোমার খুশি, তবে দেখতে হবে তা যেন সাদা পাতার চেয়ে উৎকৃষ্ট হয়।' কবির কবিতায় তার নিজস্ব স্বাধীনতার শেষ নেই। ঠিক তেমনি শব্দ গঠন, বাক্য নির্মাণ, ছন্দ, অন্তমিল, নান্দনিকতা, যথার্থতা কবিতার এক অনন্য গুণ। বছরের পর বছর ধরে তা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করতে পারেন যে, হয়তো একদিন কবিতা কেউ পড়বে না। আবৃত্তির কথা মনে করলে সব ভিত্তিহীন মনে হয়। এটা ধ্রুবতারার মতো সত্য যে, কবিতা পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকবে। এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। কবি ও কবিতা বিষয়ে আদোনিস যেমন বলেন : 'আমি এমন এক ভাষায় কবিতা লিখি, যা আমাকে নির্বাসনে পাঠায়। কবি হওয়ার মানে দাঁড়ায়, আমি ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছি কবিতা, কিন্তু আদৌ কিছুই লিখিনি। কবিতা লেখা এমন এক কাজ যার শুরুও নেই, শেষও নেই। এ হলো শুরু করার প্রতিশ্রুতি, বিরতিহীন এক শুরুর প্রতিশ্রুতি।' কবিতা নিয়ম ভাঙে নতুন নিয়ম খুঁজে বের করে। আর কবি এর মাঝে সম্পর্ক বিচারের কারিগর। সমস্ত সৃষ্টির সঙ্গে কবিতা গড়ে তোলে মেলবন্ধন। বাঙ্ময় যখন নীরবতা, কথা যখন ভাষাহারা, যখন দিনের কাজের ত্রুটিতে রাতের ভাষা বাঁধা হয় না, তখন বিবরণের ব্যাকুলতা কবিতায় রূপ নেয়। ওই বিবরণের কিছু পাতা উড়ে গেছে গোলাপে, কিছু শরতের কাশে। পাখির গান উড়িয়ে নিয়ে গেছে তার কিছু। সেই গল্প লুটে নিয়ে যায় কিছু বাগানের মালী, কিছু বা ব্যাধ। কবিতা মানুষের জীবন আর প্রতিষ্ঠানে যা কিছু অর্থহীন হয়ে গেছে তাকে নিষ্কাশিত করে। কবি হানিফ রাশেদিনের কথা বলছি। তিনি তার 'নিকাশের দায় রেখে' কবিতা গ্রন্থে বৃত্ত ভাঙার নিয়ম খুঁজে যান। বৃত্তের বাহিরে কবিতায় তিনি লেখেন_ 'গাঢ় অন্ধকার ভেদ করে প্রতিটি রাত্রি হেঁটে যাই আমি সমস্ত জঞ্জাল ও অন্ধকার_ পিছনে ফেলে এই পৃথিবী সুন্দর এক পৃথিবীর পথে; যেখানে চোখ ধাঁধিয়ে যায় না ভিন্ন ভিন্ন রঙে, সহস্র রঙের ভিতর একটি রঙ সৌন্দর্য।' কবি সৌন্দর্যের পূজারি। নতুন আশা, নতুন প্রাণ সঞ্চার করতে চান হানিফ রাশেদিন। আবার স্বপ্ন মাথা নোয়াতে জানে না কবিতায় তিনি বলেন_ 'কারো ভিতর আমরা হৃৎপি- দেখতে পাই না, মগজ দেখতে পাই না, কবিতা দেখতে পাই না; যে-দিকেই তাকাই চারিদিকে অন্ধকার না তাকালেও দেখতে পাই অন্ধকারের রাজত্ব।' এখানে চারিদিকে অন্ধকারের ছায়া দেখতে পান। যা কবিকে ব্যথিত করে। হতাশ করে। শেষে বলে ওঠেন, 'স্বপ্ন মাথা নোয়াতে জানে না, স্বপ্ন তো আলো; অন্ধকার দেয়াল তার পথ রুখতে পারে না।' শত হতাশার মাঝেও আশা বা স্বপ্ন নতুন পথ দেখাবে। অন্ধকার কেটে যাবে এই প্রত্যাশা কবির। স্বপ্নই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। স্বপ্ন না থাকলে মানব জীবন হয়ে যেত স্থবির। তার কবিতায় সমাজের অসংগতি, মানুষের মূল্যবোধের যে পরিবর্তন ঘটেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। আর কাল'কে ধরাই তো কবির কাজ সে কাজ তিনি করে যাচ্ছেন অতি নীরবে। কবিতার মাধ্যমে। সার্বিক সংজ্ঞায়ন এবং এই কবির কবিতা কবিতার ধারায় মেলবন্ধন সৃষ্টি করবে এটাই।